রাহুল শর্মা, ঢাকা

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে এবং অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে, দুটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যে জড়িত। এই চক্রে ছিলেন বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সদস্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতাও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভর্তি-বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফোন করলে প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিল শাখার অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী বলেন, ‘আপনি এগুলো জানার কে? এসব তথ্য কই পান? এ ধরনের প্রশ্ন করার এখতিয়ার আপনার নেই। কোনো তদন্তে অনিয়ম উঠে আসলে মন্ত্রণালয়ে জবাব দেব, আপনাকে না।’ এরপর তিনি মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিলে যাত্রা শুরু করে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পরে বনশ্রী ও মুগদাতেও শাখা খোলা হয়। এই তিনটি শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে শিক্ষার্থী ২৮ হাজারের বেশি। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত শতাধিক।
ভর্তি-সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতি শ্রেণিতে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা রয়েছে। অনুমোদিত আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই, এটা অনিয়ম ও অবৈধ। এ বিষয়ে আইডিয়াল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হবে।
বিদ্যালয়টিতে অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে অন্তত ২০ জন অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও লটারিতে নাম না আসা শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। অবৈধভাবে ভর্তির জন্য কেউ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, কেউ গভর্নিং বডির সদস্যকে মাধ্যম করেছেন।
জানা যায়, প্রতিটি অবৈধ ভর্তিতে গড়ে লেনদেন হয়েছে চার লাখ টাকা। সেই হিসাবে গত ৯ বছরে অবৈধ ভর্তিতে বাণিজ্য হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।
প্রায় ৩ হাজার অবৈধ ভর্তি
ভর্তি-সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখায় মাউশি ও স্কুলের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ২ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধ ভর্তি করা হয়েছে। এসব ভর্তির বেশির ভাগই প্রথম শ্রেণিতে।
২০১৬ সালে বিভিন্ন শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি হয়েছে, ২ হাজার ৩৩৫টি। ওই বছর তিন শাখার বাংলা মাধ্যম ও মতিঝিল শাখার ইংরেজি মাধ্যমে অনুমোদিত আসনসংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৮০। তবে ভর্তি করা হয় ৬ হাজার ১১৫ জনকে। ২০১৪ সালে অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ৬৯ জন, ২০১৫ সালে ৫২ জন, ২০১৭ সালে ৩৫, ২০১৯ সালে ৫৩, ২০২০ সালে ১৫৪, ২০২১ সালে ৭৫ ও ২০২২ সালে ৩২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এগুলো অবৈধ ভর্তি। তবে ২০১৮ সালে অবৈধভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের (মতিঝিল-রমনা-পল্টন) সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অনেক আগে দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’ তিনি গত ৯ বছরে তিন মেয়াদে তিন বছর সভাপতি ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণার কারণে একটি সিন্ডিকেট ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি করেছিল।
ছয় মাস করে এক বছর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
২০১৭ সালের ৪ মে থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধ ভর্তির তথ্যটি পুরোপুরি সত্য নয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এই অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার দায়িত্বকালে বিশেষ কারণে দু-একটি ভর্তি করা হয়ে থাকতে পারে, তবে ঢালাওভাবে হয়নি।’
ভর্তি-বাণিজ্যের হোতারা
অনুসন্ধানে জানা যায়, অবৈধ ভর্তিতে জড়িত ছিল মূলত দুটি সিন্ডিকেট। এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম (২০২২ সালের মার্চে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু)।
অপরটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা শাহান আরা বেগম। অভিযোগ আছে, তাঁর পক্ষে ভর্তি-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রতিষ্ঠানটির উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান। ২০২১ সালের ১ আগস্ট আতিকুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তটি চলছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
দীর্ঘদিন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিতে অনিয়ম হয় মূলত গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার ব্যত্যয় ঘটিয়ে। এসব ভর্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়। এর সঙ্গে গভর্নিং বডির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমি এখন ওই প্রতিষ্ঠানে নেই, এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।’ উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান বলেন, ‘অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যের সঙ্গে আমার জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট। আমি প্রতিষ্ঠানটির কোনো দায়িত্বশীল পদে নেই। আমি কীভাবে ভর্তি-বাণিজ্য করব?’
টিপু হত্যার আসামির জবানবন্দিতে ভর্তি-বাণিজ্য
মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি সুমন শিকদার ওরফে মুসার জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি-বাণিজ্যের বিষয়টি। সম্প্রতি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে টিপু হত্যার নেপথ্য কারণের একটি এই ভর্তি-বাণিজ্যের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘রুফটপ রেস্তোরাঁর বৈঠকে সবাই জাহিদুলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সোহেল শাহরিয়ার বলেন, জিসান ও মানিক মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে যে ১০০ ছাত্র ভর্তির কথা বলেছিলেন, তার কী হলো? তখন মারুফ বলেন, এ নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তবে জাহিদুল এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। জিসান ও মানিককে ভর্তি-বাণিজ্যের ভাগ দিতে হলে তা অন্যদের অংশ থেকে দিতে বলেছেন জাহিদুল।’
অনিয়মের তদন্ত চলছে
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুটি সংস্থা। ভর্তি-বাণিজ্য, ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্নভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জানতে চাইলে ৮ মে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তটি চলমান।
তদন্তকারী আরেক সংস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইডিয়ালে গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যা লঙ্ঘন করে অবৈধ ভর্তির কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভর্তিতে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে এবং অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে, দুটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যে জড়িত। এই চক্রে ছিলেন বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সদস্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতাও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভর্তি-বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফোন করলে প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিল শাখার অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী বলেন, ‘আপনি এগুলো জানার কে? এসব তথ্য কই পান? এ ধরনের প্রশ্ন করার এখতিয়ার আপনার নেই। কোনো তদন্তে অনিয়ম উঠে আসলে মন্ত্রণালয়ে জবাব দেব, আপনাকে না।’ এরপর তিনি মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিলে যাত্রা শুরু করে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পরে বনশ্রী ও মুগদাতেও শাখা খোলা হয়। এই তিনটি শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে শিক্ষার্থী ২৮ হাজারের বেশি। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত শতাধিক।
ভর্তি-সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতি শ্রেণিতে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা রয়েছে। অনুমোদিত আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই, এটা অনিয়ম ও অবৈধ। এ বিষয়ে আইডিয়াল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হবে।
বিদ্যালয়টিতে অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে অন্তত ২০ জন অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও লটারিতে নাম না আসা শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। অবৈধভাবে ভর্তির জন্য কেউ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, কেউ গভর্নিং বডির সদস্যকে মাধ্যম করেছেন।
জানা যায়, প্রতিটি অবৈধ ভর্তিতে গড়ে লেনদেন হয়েছে চার লাখ টাকা। সেই হিসাবে গত ৯ বছরে অবৈধ ভর্তিতে বাণিজ্য হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।
প্রায় ৩ হাজার অবৈধ ভর্তি
ভর্তি-সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখায় মাউশি ও স্কুলের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ২ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধ ভর্তি করা হয়েছে। এসব ভর্তির বেশির ভাগই প্রথম শ্রেণিতে।
২০১৬ সালে বিভিন্ন শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি হয়েছে, ২ হাজার ৩৩৫টি। ওই বছর তিন শাখার বাংলা মাধ্যম ও মতিঝিল শাখার ইংরেজি মাধ্যমে অনুমোদিত আসনসংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৮০। তবে ভর্তি করা হয় ৬ হাজার ১১৫ জনকে। ২০১৪ সালে অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ৬৯ জন, ২০১৫ সালে ৫২ জন, ২০১৭ সালে ৩৫, ২০১৯ সালে ৫৩, ২০২০ সালে ১৫৪, ২০২১ সালে ৭৫ ও ২০২২ সালে ৩২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এগুলো অবৈধ ভর্তি। তবে ২০১৮ সালে অবৈধভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের (মতিঝিল-রমনা-পল্টন) সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অনেক আগে দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’ তিনি গত ৯ বছরে তিন মেয়াদে তিন বছর সভাপতি ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণার কারণে একটি সিন্ডিকেট ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি করেছিল।
ছয় মাস করে এক বছর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
২০১৭ সালের ৪ মে থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধ ভর্তির তথ্যটি পুরোপুরি সত্য নয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এই অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার দায়িত্বকালে বিশেষ কারণে দু-একটি ভর্তি করা হয়ে থাকতে পারে, তবে ঢালাওভাবে হয়নি।’
ভর্তি-বাণিজ্যের হোতারা
অনুসন্ধানে জানা যায়, অবৈধ ভর্তিতে জড়িত ছিল মূলত দুটি সিন্ডিকেট। এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম (২০২২ সালের মার্চে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু)।
অপরটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা শাহান আরা বেগম। অভিযোগ আছে, তাঁর পক্ষে ভর্তি-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রতিষ্ঠানটির উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান। ২০২১ সালের ১ আগস্ট আতিকুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তটি চলছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
দীর্ঘদিন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিতে অনিয়ম হয় মূলত গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার ব্যত্যয় ঘটিয়ে। এসব ভর্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়। এর সঙ্গে গভর্নিং বডির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমি এখন ওই প্রতিষ্ঠানে নেই, এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।’ উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান বলেন, ‘অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যের সঙ্গে আমার জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট। আমি প্রতিষ্ঠানটির কোনো দায়িত্বশীল পদে নেই। আমি কীভাবে ভর্তি-বাণিজ্য করব?’
টিপু হত্যার আসামির জবানবন্দিতে ভর্তি-বাণিজ্য
মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি সুমন শিকদার ওরফে মুসার জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি-বাণিজ্যের বিষয়টি। সম্প্রতি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে টিপু হত্যার নেপথ্য কারণের একটি এই ভর্তি-বাণিজ্যের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘রুফটপ রেস্তোরাঁর বৈঠকে সবাই জাহিদুলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সোহেল শাহরিয়ার বলেন, জিসান ও মানিক মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে যে ১০০ ছাত্র ভর্তির কথা বলেছিলেন, তার কী হলো? তখন মারুফ বলেন, এ নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তবে জাহিদুল এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। জিসান ও মানিককে ভর্তি-বাণিজ্যের ভাগ দিতে হলে তা অন্যদের অংশ থেকে দিতে বলেছেন জাহিদুল।’
অনিয়মের তদন্ত চলছে
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুটি সংস্থা। ভর্তি-বাণিজ্য, ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্নভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জানতে চাইলে ৮ মে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তটি চলমান।
তদন্তকারী আরেক সংস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইডিয়ালে গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যা লঙ্ঘন করে অবৈধ ভর্তির কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভর্তিতে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে এবং অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে, দুটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যে জড়িত। এই চক্রে ছিলেন বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সদস্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতাও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভর্তি-বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফোন করলে প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিল শাখার অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী বলেন, ‘আপনি এগুলো জানার কে? এসব তথ্য কই পান? এ ধরনের প্রশ্ন করার এখতিয়ার আপনার নেই। কোনো তদন্তে অনিয়ম উঠে আসলে মন্ত্রণালয়ে জবাব দেব, আপনাকে না।’ এরপর তিনি মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিলে যাত্রা শুরু করে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পরে বনশ্রী ও মুগদাতেও শাখা খোলা হয়। এই তিনটি শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে শিক্ষার্থী ২৮ হাজারের বেশি। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত শতাধিক।
ভর্তি-সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতি শ্রেণিতে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা রয়েছে। অনুমোদিত আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই, এটা অনিয়ম ও অবৈধ। এ বিষয়ে আইডিয়াল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হবে।
বিদ্যালয়টিতে অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে অন্তত ২০ জন অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও লটারিতে নাম না আসা শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। অবৈধভাবে ভর্তির জন্য কেউ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, কেউ গভর্নিং বডির সদস্যকে মাধ্যম করেছেন।
জানা যায়, প্রতিটি অবৈধ ভর্তিতে গড়ে লেনদেন হয়েছে চার লাখ টাকা। সেই হিসাবে গত ৯ বছরে অবৈধ ভর্তিতে বাণিজ্য হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।
প্রায় ৩ হাজার অবৈধ ভর্তি
ভর্তি-সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখায় মাউশি ও স্কুলের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ২ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধ ভর্তি করা হয়েছে। এসব ভর্তির বেশির ভাগই প্রথম শ্রেণিতে।
২০১৬ সালে বিভিন্ন শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি হয়েছে, ২ হাজার ৩৩৫টি। ওই বছর তিন শাখার বাংলা মাধ্যম ও মতিঝিল শাখার ইংরেজি মাধ্যমে অনুমোদিত আসনসংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৮০। তবে ভর্তি করা হয় ৬ হাজার ১১৫ জনকে। ২০১৪ সালে অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ৬৯ জন, ২০১৫ সালে ৫২ জন, ২০১৭ সালে ৩৫, ২০১৯ সালে ৫৩, ২০২০ সালে ১৫৪, ২০২১ সালে ৭৫ ও ২০২২ সালে ৩২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এগুলো অবৈধ ভর্তি। তবে ২০১৮ সালে অবৈধভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের (মতিঝিল-রমনা-পল্টন) সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অনেক আগে দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’ তিনি গত ৯ বছরে তিন মেয়াদে তিন বছর সভাপতি ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণার কারণে একটি সিন্ডিকেট ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি করেছিল।
ছয় মাস করে এক বছর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
২০১৭ সালের ৪ মে থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধ ভর্তির তথ্যটি পুরোপুরি সত্য নয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এই অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার দায়িত্বকালে বিশেষ কারণে দু-একটি ভর্তি করা হয়ে থাকতে পারে, তবে ঢালাওভাবে হয়নি।’
ভর্তি-বাণিজ্যের হোতারা
অনুসন্ধানে জানা যায়, অবৈধ ভর্তিতে জড়িত ছিল মূলত দুটি সিন্ডিকেট। এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম (২০২২ সালের মার্চে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু)।
অপরটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা শাহান আরা বেগম। অভিযোগ আছে, তাঁর পক্ষে ভর্তি-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রতিষ্ঠানটির উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান। ২০২১ সালের ১ আগস্ট আতিকুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তটি চলছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
দীর্ঘদিন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিতে অনিয়ম হয় মূলত গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার ব্যত্যয় ঘটিয়ে। এসব ভর্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়। এর সঙ্গে গভর্নিং বডির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমি এখন ওই প্রতিষ্ঠানে নেই, এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।’ উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান বলেন, ‘অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যের সঙ্গে আমার জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট। আমি প্রতিষ্ঠানটির কোনো দায়িত্বশীল পদে নেই। আমি কীভাবে ভর্তি-বাণিজ্য করব?’
টিপু হত্যার আসামির জবানবন্দিতে ভর্তি-বাণিজ্য
মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি সুমন শিকদার ওরফে মুসার জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি-বাণিজ্যের বিষয়টি। সম্প্রতি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে টিপু হত্যার নেপথ্য কারণের একটি এই ভর্তি-বাণিজ্যের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘রুফটপ রেস্তোরাঁর বৈঠকে সবাই জাহিদুলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সোহেল শাহরিয়ার বলেন, জিসান ও মানিক মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে যে ১০০ ছাত্র ভর্তির কথা বলেছিলেন, তার কী হলো? তখন মারুফ বলেন, এ নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তবে জাহিদুল এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। জিসান ও মানিককে ভর্তি-বাণিজ্যের ভাগ দিতে হলে তা অন্যদের অংশ থেকে দিতে বলেছেন জাহিদুল।’
অনিয়মের তদন্ত চলছে
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুটি সংস্থা। ভর্তি-বাণিজ্য, ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্নভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জানতে চাইলে ৮ মে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তটি চলমান।
তদন্তকারী আরেক সংস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইডিয়ালে গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যা লঙ্ঘন করে অবৈধ ভর্তির কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভর্তিতে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র ঘেঁটে এবং অভিযোগ অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে, দুটি সিন্ডিকেট এই অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যে জড়িত। এই চক্রে ছিলেন বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সদস্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতাও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভর্তি-বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফোন করলে প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিল শাখার অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী বলেন, ‘আপনি এগুলো জানার কে? এসব তথ্য কই পান? এ ধরনের প্রশ্ন করার এখতিয়ার আপনার নেই। কোনো তদন্তে অনিয়ম উঠে আসলে মন্ত্রণালয়ে জবাব দেব, আপনাকে না।’ এরপর তিনি মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
১৯৬৫ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিলে যাত্রা শুরু করে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পরে বনশ্রী ও মুগদাতেও শাখা খোলা হয়। এই তিনটি শাখায় বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম মিলিয়ে শিক্ষার্থী ২৮ হাজারের বেশি। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাত শতাধিক।
ভর্তি-সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতি শ্রেণিতে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা রয়েছে। অনুমোদিত আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো সুযোগ নেই, এটা অনিয়ম ও অবৈধ। এ বিষয়ে আইডিয়াল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হবে।
বিদ্যালয়টিতে অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে অন্তত ২০ জন অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও লটারিতে নাম না আসা শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। অবৈধভাবে ভর্তির জন্য কেউ প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেউ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, কেউ গভর্নিং বডির সদস্যকে মাধ্যম করেছেন।
জানা যায়, প্রতিটি অবৈধ ভর্তিতে গড়ে লেনদেন হয়েছে চার লাখ টাকা। সেই হিসাবে গত ৯ বছরে অবৈধ ভর্তিতে বাণিজ্য হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি।
প্রায় ৩ হাজার অবৈধ ভর্তি
ভর্তি-সংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখায় মাউশি ও স্কুলের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ২ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধ ভর্তি করা হয়েছে। এসব ভর্তির বেশির ভাগই প্রথম শ্রেণিতে।
২০১৬ সালে বিভিন্ন শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি হয়েছে, ২ হাজার ৩৩৫টি। ওই বছর তিন শাখার বাংলা মাধ্যম ও মতিঝিল শাখার ইংরেজি মাধ্যমে অনুমোদিত আসনসংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭৮০। তবে ভর্তি করা হয় ৬ হাজার ১১৫ জনকে। ২০১৪ সালে অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত ৬৯ জন, ২০১৫ সালে ৫২ জন, ২০১৭ সালে ৩৫, ২০১৯ সালে ৫৩, ২০২০ সালে ১৫৪, ২০২১ সালে ৭৫ ও ২০২২ সালে ৩২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়েছে। এগুলো অবৈধ ভর্তি। তবে ২০১৮ সালে অবৈধভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের (মতিঝিল-রমনা-পল্টন) সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। অবৈধ ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অনেক আগে দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই।’ তিনি গত ৯ বছরে তিন মেয়াদে তিন বছর সভাপতি ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইডিয়াল স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণার কারণে একটি সিন্ডিকেট ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভর্তি করেছিল।
ছয় মাস করে এক বছর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দিন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
২০১৭ সালের ৪ মে থেকে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অবৈধ ভর্তির তথ্যটি পুরোপুরি সত্য নয়। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এই অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার দায়িত্বকালে বিশেষ কারণে দু-একটি ভর্তি করা হয়ে থাকতে পারে, তবে ঢালাওভাবে হয়নি।’
ভর্তি-বাণিজ্যের হোতারা
অনুসন্ধানে জানা যায়, অবৈধ ভর্তিতে জড়িত ছিল মূলত দুটি সিন্ডিকেট। এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম (২০২২ সালের মার্চে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু)।
অপরটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করা শাহান আরা বেগম। অভিযোগ আছে, তাঁর পক্ষে ভর্তি-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রতিষ্ঠানটির উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান। ২০২১ সালের ১ আগস্ট আতিকুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তটি চলছে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
দীর্ঘদিন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিতে অনিয়ম হয় মূলত গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার ব্যত্যয় ঘটিয়ে। এসব ভর্তিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়। এর সঙ্গে গভর্নিং বডির প্রভাবশালী সদস্য ও প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহান আরা বেগম বলেন, ‘আমি এখন ওই প্রতিষ্ঠানে নেই, এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।’ উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান খান বলেন, ‘অবৈধ ভর্তি-বাণিজ্যের সঙ্গে আমার জড়িত থাকার অভিযোগ সত্য নয়। এগুলো মিথ্যা, বানোয়াট। আমি প্রতিষ্ঠানটির কোনো দায়িত্বশীল পদে নেই। আমি কীভাবে ভর্তি-বাণিজ্য করব?’
টিপু হত্যার আসামির জবানবন্দিতে ভর্তি-বাণিজ্য
মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি সুমন শিকদার ওরফে মুসার জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে আইডিয়াল স্কুলে ভর্তি-বাণিজ্যের বিষয়টি। সম্প্রতি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুসারে টিপু হত্যার নেপথ্য কারণের একটি এই ভর্তি-বাণিজ্যের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘রুফটপ রেস্তোরাঁর বৈঠকে সবাই জাহিদুলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সোহেল শাহরিয়ার বলেন, জিসান ও মানিক মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে যে ১০০ ছাত্র ভর্তির কথা বলেছিলেন, তার কী হলো? তখন মারুফ বলেন, এ নিয়ে জাহিদুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তবে জাহিদুল এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। জিসান ও মানিককে ভর্তি-বাণিজ্যের ভাগ দিতে হলে তা অন্যদের অংশ থেকে দিতে বলেছেন জাহিদুল।’
অনিয়মের তদন্ত চলছে
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুটি সংস্থা। ভর্তি-বাণিজ্য, ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্নভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সাবেক অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জানতে চাইলে ৮ মে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তটি চলমান।
তদন্তকারী আরেক সংস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইডিয়ালে গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যা লঙ্ঘন করে অবৈধ ভর্তির কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ হলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভর্তিতে সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
১৬ মে ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
১৬ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
১৬ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২০ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজধানীর খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিলসহ তিনটি শাখায় গত ৯ বছরে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির অনুমোদিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত এসব শিক্ষার্থী ভর্তিতে লেনদেন হয়েছে শতকোটি টাকার বেশি।
১৬ মে ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২০ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২০ দিন আগে