নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবগুলো আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি জানান, মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলেই সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব পাঠানো হয় সরকারের কাছে। আইন মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা চিঠি চালাচালির পর সবশেষ আইন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আরপিওর সংস্কার অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘২৮ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। এ সভায় আমাদের প্রস্তাবগুলো উঠবে। আমরা যা প্রস্তাব করেছি সব আছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেলে সংসদে পাঠানো হবে। সংসদে পাসের সময় ইসির প্রস্তাবনায় সংযোজন বিয়োজন হতে পারে।’
রাশেদা সুলতানা বলেন, আরপিও সংশোধন হলে এটি যুগান্তকারী আইন হবে এবং এতে প্রার্থী, সমর্থক সবার আচরণগত পরিবর্তন হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বিষয় চিহ্নিত করে শাস্তির বিধানের সুপারিশ করেছি। ভোটারদের যেন বাধা না দেওয়া হয় সেই বিষয়টিও রয়েছে। ফলাফলে মেলপ্রেকটিস নজরে আসে সেখানে কিন্তু কমিশন বন্ধ করার ক্ষমতা যেন থাকে সে বিষয়টাও আছে।’
ইসি সূত্র জানায়, বিদ্যমান আরপিওতে যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভোট বাতিলে ইসির ক্ষমতা ও ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান, সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে শাস্তি, দলের সর্বস্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেওয়া, দায়িত্বে অবহেলায় কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, ভোট গণনার বিবরণী প্রার্থী ও তাঁর এজেন্টদের দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত খেলাপি বিল (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি) পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, রাজনৈতিক দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র ৩০ দিনের মধ্যে ইসিতে জমা দেওয়ার বিধান করার প্রস্তাব ইত্যাদি।
আরপিও সংশোধন-সংক্রান্ত খসড়া বিল প্রস্তুত করে গত ৮ আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গত ৪ অক্টোবর ইভিএম-সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে বাস্তবতার নিরিখে কিছু সংশোধনী আনার জন্য খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি না দেখে ইসি ২৭ নভেম্বর ফের চিঠি দিয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চায়। পরে ৩০ নভেম্বর সে চিঠির জবাব দেয় আইন মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে