Ajker Patrika

নৌকায় করে অনিশ্চিত জীবনযাত্রা ছিল অস্কারজয়ী কোয়ানের পরিবারের

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩, ১৬: ৪৮
নৌকায় করে অনিশ্চিত জীবনযাত্রা ছিল অস্কারজয়ী কোয়ানের পরিবারের

অস্কারের ৯৫তম আসরে পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন অভিনেতা কে হুই কোয়ান। ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস’ সিনেমার জন্য প্রথম কোনো ভিয়েতনামী বংশোদ্ভূত অভিনেতা হিসেবে অস্কার জিতলেন তিনি। পুরস্কার জয়ের পর আবেগাপ্লুত কে হুই কোয়ান পেছন ফিরে তাকান। ভিয়েতনাম থেকে হংকংয়ের শরণার্থীশিবির, সেখান থেকে নৌকায় ক্যালিফোর্নিয়া- এক শরণার্থী পরিবারের অনিশ্চিত এক যাত্রা।

কোয়ানের জীবন শুরু হয় একটি নৌকায়। একটি শরণার্থীশিবিরে থেকেছিলেন এক বছর। সেই সময়টি থেকে আজকের অস্কারের মঞ্চে পুরস্কার হাতে দাঁড়ানো–এ যেন নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কোয়ান।

পুরস্কার ঘোষণার পর ৫১ বছর বয়সী এ অভিনেতা অস্কারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘অনেকেই ভাবেন এই ধরনের গল্প শুধু সিনেমাতেই ঘটে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এটা আমার সঙ্গে ঘটছে। এটি একটি আমেরিকান স্বপ্ন।’

নিজের সংগ্রামের দিনগুলো স্মরণ করে কোয়ান বলেন, ‘একটা সময় জীবন আমাকে উদ্বাস্তু বানিয়ে রেখেছিল। আমার মাথার ওপর ছাদ ছিল না। অনিশ্চিত এক জীবন ছিল আমার। কিন্তু আজ আমি বিশ্বাস করি এমন প্রতিকূলতা থেকেই মানুষ অস্কার, অলিম্পিক পদক কিংবা নোবেল পুরস্কারও পেতে পারেন। তাই হাল না ছেড়ে আরও একবার ভাবুন। আমি এই অস্কার আমার স্ত্রী ইকোকে উৎসর্গ করতে চাই। তিনিই আমাকে ২০ বছর ধরে ক্রমাগতভাবে বলে গিয়েছিলেন, একটা দিন আসবেই যেদিন আমি এই ভাবে আপনাদের সামনে অস্কার হাতে দাঁড়িয়ে থাকব। স্বপ্ন দেখলে, তা সত্যি করায় বিশ্বাস করতে হয়। আমি হাল ছেড়েই দিয়েছিলাম প্রায়…’

‘দ্য গুনিজ’ এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন কোয়ানপুরস্কার গ্রহণের পর মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কোয়ান বলেন, ‘আমার মায়ের বয়স ৮৪ বছর। তিনি নিশ্চয়ই বাড়িতে বসে আমাকে দেখছেন। মা, আমি এইমাত্র একটি অস্কার জিতেছি।’ 

 ১৯৭১ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ভিয়েতনামে জন্ম কোয়ানের। ৯ জন ভাই-বোনের বিশাল এক পরিবার নিয়ে ১৯৭৮ সালে কোয়ানের পরিবার পালিয়ে আসে সাইগনে। সেখানে তাঁদের মানবতর জীবন শুরু হয় নৌকায়। কোয়ানরা ছিল চীনা সংখ্যালঘু গোষ্ঠী হোয়া সম্প্রদায়ের। ভিয়েতনামের সংখ্যাগরিষ্ঠরা নিপীড়ন চালায় তাঁদের ওপর। সেই সময় হোয়া সম্প্রদায়ের অনেকেই ভিয়েতনাম থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ছোট-ছোট নৌকোয় ঠাঁই নিয়েছিলেন তারা। সামুদ্রিক ঝড়, জলদস্যুদের আক্রমণের সম্মুখীন হয় সেই সব ছোট নৌকো।

এভাবে পালিয়েই কোয়ানের মা এবং আরও তিন ভাই-বোন মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। কোয়ান, তাঁর বাবা এবং পাঁচ ভাই-বোন পৌঁছেছিলেন হংকংয়ে। ৮ লক্ষ উদ্বাস্তুর মতো তাঁদের পরিবারের পালিয়ে আসাও সফল হয়েছিল সেই সময়। ইউনাইটেড নেশনের হাইকমিশনার ফর রেফিউজিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২ থেকে ৪ লক্ষ উদ্বাস্তু সেই বার সমুদ্রেই মারা গিয়েছিলেন। গোটা এক বছর কোয়ান পরিবার বিভিন্ন রিফিউজি ক্যাম্পে থাকতে শুরু করে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা উদ্বাস্তুদের তাঁদের দেশে ঠাঁই দেওয়ার ঘোষণা দেন। এভাবেই ক্যালিফোর্নিয়ায় ফের মিলিত হয় কোয়ান পরিবার।

কোয়ান অভিনয় জগতে পা রাখেন শিশু শিল্পী হিসেবে। ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য টেম্পল অব ডুম-এর সেই ‘শর্ট রাউন্ড’ চরিত্রে অভিনয় করা ১১ বছরের ছেলেটার কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। যে হ্যারিসন ফোর্ডের সঙ্গী হয়ে অমরেশ পুরীর আস্তানায় ঢুকে অশুভ পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছিল। ১৯৮৪ সালে সিনেমাটির পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রায় ৬০ হাজার ছেলের মধ্য থেকে শর্ট রাউন্ড চরিত্রটির জন্য বেছে নিয়েছিলেন কে হুই কোয়ানকে। সেখান থেকে নির্বাচিত হয়ে পরের বছর ‘দ্য গুনিজ’ এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। আর একটু বড় হতেই আরও বেশি অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে শুরু করেছিলেন কোয়ান। কিন্তু অভিনয়ে কম সময় দিয়ে কোয়ান বহু সিনেমায় স্টান্ট কোরিওগ্রাফার ও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরবর্তীকালে জন এম চু পরিচালিত কমেডি সিনেমা ‘ক্রেজি রিচ এশিয়ান’ থেকে পুনর্বার অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের স্বপ্নের পেছনে ছোটার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

 অস্কার মঞ্চে কোয়ান২০১৮ সালে ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ান্স’ সিনেমায় কাজের প্রস্তাব পেয়ে কোয়ানের জীবনের মোড় ঘোরে যায়। তিনি ভিয়েতনামী বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি যিনি অস্কার জিতেছেন, এবং এই বছর মনোনীত দুজনের মধ্যে একজন-অন্যজন ছিলেন দ্য হোয়েলের হং চাউ, যার পরিবারও ভিয়েতনাম থেকে নৌকায় করে পালিয়েছিল।

এবারের অস্কারে সেরা সিনেমার পুরস্কার জিতে নেয় ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ান্স’। ৯৫ তম অস্কার আসরে সর্বোচ্চ ১১টি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছিল সিনেমাটি। একজন নারীকে কেন্দ্র করে নির্মিত অ্যাডভেঞ্চারধর্মী সিনেমা সব মিলিয়ে এবারের আসরে সাতটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। সেরা সিনেমা ছাড়াও ‘এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ান্স’-এর পরিচালক ড্যানিয়েল কোয়ান ও ড্যানিয়েল শেইনার্ট সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন। সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী মিশেল ইয়ো পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে জমকালো আয়োজনে অস্কারের ৯৫ তম আসরের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। ২৩টি শাখায় পুরস্কার বিতরণের আয়োজন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের সময় গত ১২ মার্চ রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় গত ১৩ মার্চ ভোর ৬ টা)। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছিরেন জিমি কিমেল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঈদে মুক্তি পাবে ‘ট্রাইব্যুনাল’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) আদর আজাদ, মৌসুমী, ইভন ও তানিয়া বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) আদর আজাদ, মৌসুমী, ইভন ও তানিয়া বৃষ্টি। ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতা রায়হান খান ৯ ডিসেম্বর যখন ‘ট্রাইব্যুনাল’ সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছিলেন, সেদিনই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর ক্যারিয়ারের দুই যুগ পূর্ণ হয়েছে। চিত্রগ্রাহক হিসেবে শোবিজে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর নাটক, টিভি অনুষ্ঠান পরিচালনা, চিত্রনাট্য লেখা—বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তবে সিনেমা বানানোর কথা ভাবেননি কখনো। গত ঈদে তানিম নূরের ‘উৎসব’ দেখে বড় পর্দার প্রতি আগ্রহী হন তিনি।

সিনেমা বানানোর ইচ্ছা নতুন হলেও ট্রাইব্যুনাল গল্পটি অনেক বছর ধরে লালন করছেন বলে জানালেন রায়হান খান। একবার ব্যক্তিগত কারণে আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হয়েছিল তাঁকে। সেই আইনজীবীর কাছ থেকে শোনা একটি বাস্তব গল্প অবলম্বনে লেখা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল সিনেমার চিত্রনাট্য। চট্টগ্রামে এক নারীকে তার স্বামী কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। ২৬ জন সাক্ষী এবং একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল সেই মামলায়। পরে আদালতে মামলাটির গতিপথ কীভাবে ঘুরতে থাকে নানা দিকে, সেসব নিয়েই ট্রাইব্যুনালের কাহিনি।

নির্মাতা রায়হান খান বলেন, ‘২০১৭ সালে একবার মোশাররফ করিমকে গল্পটি শুনিয়ে এ নিয়ে একটি ধারাবাহিক নাটক বানানোর কথা বলি। তিনি পরামর্শ দেন, নাটক নয়, গল্পটি নিয়ে সিনেমা বানানোর। পরে বছরের পর বছর কেটে যায়, সিনেমা আর বানানো হয় না। গত বছর উৎসব দেখার পর মনে হয়, আমি সিনেমা করব এবং সেটা ট্রাইব্যুনাল। তারপর চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করি। ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে ফুলফর্ম কোর্ট স্টোরি। প্রতিটি সংলাপ আদালতের ভাষা অনুযায়ী এবং বাংলাদেশের আইনের মধ্যে থেকে লেখা হয়েছে। আইনগত কোনো অসংগতি নেই।’

ট্রাইব্যুনাল সিনেমায় অভিনয় করেছেন মৌসুমী হামিদ, তানিয়া বৃষ্টি, সায়রা আক্তার জাহান, তারিক আনাম খান, আদর আজাদ, রাকিব হোসেন ইভন, সাবেরি আলম, মিলন ভট্টাচার্য, শাহেদ আলী প্রমুখ। একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে।

মৌসুমী হামিদ বলেন, ‘আমার অভিনীত প্রথম সিরিয়াল রায়হান খানের সঙ্গে করা। এরপর একসঙ্গে অনেক কাজ হয়েছে আমাদের। এই সিনেমার গল্প শুনেই রাজি হই। অসাধারণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। মূলত গল্পের কারণেই ট্রাইব্যুনাল সিনেমার প্রতি দর্শক উৎসাহী হবে আশা করি। চিত্রনাট্য এত চমৎকারভাবে লেখা যে প্রতি মুহূর্তে আগ্রহ সৃষ্টি করে।’

রায়হান খান
রায়হান খান

তানিয়া বৃষ্টি বলেন, ‘আমি জেসমিন নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি, পুরো গল্প এই চরিত্রকে কেন্দ্র করে। মনে হয়েছিল, সিনেমায় আবার যদি ব্যাক করতে চাই, সে ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত গল্প। এতে অভিনয়ের জন্য তারিক আনাম খান স্যারের কাছে এক মাস রিহার্সাল করেছি। চরিত্রের কষ্ট বোঝার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েছি। যতটা পেরেছি, পুরোপুরি এফোর্ট দিয়েছি চরিত্রটির জন্য।’

সম্প্রতি অপু বিশ্বাসের সঙ্গে দুই সিনেমায় জুটি বেঁধেছেন আদর আজাদ। এই সিনেমায়ও তিনি থাকছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে।

থিয়েটার দিয়ে অভিনয় শুরু রাকিব হোসেন ইভনের। ‘ইতি চিত্রা’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। এই সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে ইভন বলেন, ‘আমি থিয়েটার করা ছেলে। অভিনয় আমাকে টানে। এই সিনেমার চরিত্রটিতে অভিনয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমি সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। অন্যেরাও বেশ ভালো করেছেন। আশা করছি, সবার চেষ্টায় একটি সুন্দর সিনেমা উপহার দিতে পারব দর্শকদের।’

নির্মাতা রায়হান খান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ৭০ শতাংশ শুটিং শেষ হয়েছে। শিগগির আবার শুটিংয়ে যাবে ট্রাইব্যুনাল টিম। রোজার ঈদে ট্রাইব্যুনাল মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেসবুক পোস্টের গল্প থেকে নাটক, কেন্দ্রীয় চরিত্রে অহনা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
অহনা। ছবি: সংগৃহীত
অহনা। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকের একটি পোস্টের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নাটক নির্মাণ করলেন মহিন খান। নাটকের নাম ‘পতন’। নির্দেশনার পাশাপাশি পতনের চিত্রনাট্য রচনা করেছেন তিনি। নাটকের চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছে এক নারীকে ঘিরে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন অহনা, তার স্বামীর চরিত্রে রাশেদ সীমান্ত।

অহনা এখন আগের মতো নিয়মিত কাজ করছেন না। গল্প, চিত্রনাট্য আর চরিত্র পছন্দ হলে শুটিং করছেন। এই নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মহিনের নির্দেশনায় আগেও বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছি। এই নাটকের গল্প ভাবনা এবং চিত্রনাট্য দারুণ হয়েছে। আমার চরিত্রটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। বেশ উত্থানপতন আছে। চেষ্টা করেছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। আশা করছি, প্রচারে এলে নাটকটি দর্শকের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ মহিনকে আমাকে সুন্দর একটি চরিত্রে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।’

নাটকের গল্প প্রসঙ্গে মহিন খান বলেন, ‘ফেসবুকের একটি পোস্ট থেকে গল্পের ভাবনাটা নিয়েছি। সেই থিম থেকে নিজের মতো করে চিত্রনাট্য লিখেছি। গল্পে দেখা যাবে, স্বামীর সঙ্গে অহনার বেশ সুখের সংসার। একসময় চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেয় অহনা। স্বামী তার আবদার মেনে নেয়। পাঁচ লাখ টাকা ম্যানেজ করে স্ত্রীকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর আচরণ বদলে যায় অহনার। স্বামীর সঙ্গেও সংসার করতে চায় না। গল্প যখন চরম নাটকীয়তায়, এমন সময় হুট করে চাকরি চলে যায় অহনার। দিশেহারা হয়ে পড়ে সে। জীবনের বাস্তবতা বুঝতে পারে সে। অহনা ও রাশেদ সীমান্ত—দুজনেই দারুণ অভিনয় করেছেন। তাঁদের অভিনয়গুণে গল্পটি আরও হৃদয়গ্রাহী হয়েছে।’

নির্মাতা জানিয়েছেন, পতন নাটকটি প্রকাশ করা হবে ইউটিউব চ্যানেলে। শিগগির এর প্রকাশের সময় এবং চ্যানেলের নাম জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করলেন সোনিয়া, জানালেন কেমন আছেন নায়ক

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ইলিয়াস কাঞ্চনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সোনিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানে মেয়ের সঙ্গে আছেন তিনি। গত জুলাই মাসে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডন গেলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় চিত্রনায়িকা রোজিনার। ওই সময় রোজিনা ছিলেন কানাডায়। সেখান থেকে ফিরে গত সেপ্টেম্বর অভিনেতাকে দেখেতে যান তিনি। তখন রোজিনা জানিয়েছিলেন, অসুস্থতার ধঁকলে কিছুটা বিধ্বস্ত দেখালেও কাঞ্চন দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন নিয়মিত। ধীরে ধীরে কথা বলছেন। ব্রেনের সস্যার কারণে মাঝে মাঝে কথা ভুলে যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ব্রেনের স্পর্শকাতর জায়গায় টিউমার হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে সম্পূর্ণ টিউমার সরানো যায়নি। তবে কেমোথেরাপির মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা চলবে।

সম্প্রতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করেছেন বাংলা সিনেমার নব্বই দশকের আরেক জনপ্রিয় নায়িকা সোনিয়া। অনেক বছর হলো স্বামী-সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডে স্থায়ী হয়েছেন সোনিয়া। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা করে তিনি জানিয়েছেন, এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
গত সেপ্টেম্বরে ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখতে যান রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত

ইলিয়াস কাঞ্চনকে দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোনিয়া। নায়কের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্যসহ জানিয়েছেন চিকিৎসার খবর।

স্ট্যাটাসে সোনিয়া লেখেন, ‘ইংল্যান্ডের কর্মব্যস্ত জীবনের কারণে অনেকদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি। যোগাযোগ সবসময় হয়, তবে আজ প্রথম সুযোগ পেলাম তাকে দেখতে যাওয়ার। ভাইয়ার চলমান চিকিৎসায় কিছুদিনের বিরতি ছিল। আগামী সপ্তাহে আবার চিকিৎসা শুরু হবে।’

সোনিয়া জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চন এখন স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছেন। সময় কাটাচ্ছেন স্বজনদের সঙ্গে। তবে শিগগির দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই তাঁর। এ বিষয়ে সোনিয়া লেখেন, ‘ভাইয়া আমার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন। উনার পরিবারের সঙ্গে কাটালাম ভালো সময়। তবে আপাতত বাংলাদেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই তাঁর। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।’

সোনিয়া আরও জানিয়েছেন, ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা বেশ ভালোভাবেই চলছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন নায়ক। পুরো চিকিৎসাপ্রক্রিয়া শেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন অভিনেতা। সোনিয়া অনুরোধ করেছেন, কোনো ধরনের গুজব না ছড়িয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের সুস্থতার জন্য দোয়া করতে।

উল্লেখ্য, ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে ‘ভয়ংকর ৭ দিন’, ‘বিদ্রোহী কন্যা’, ‘বডিগার্ড’, ‘শেষ রক্ষা’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোনিয়া। তবে তাঁর নায়িকা হয়ে কোনো সিনেমায় অভিনয় করা হয়নি তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাজাখস্তানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন নিশো

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত
আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

৮ ডিসেম্বর ছিল অভিনেতা আফরান নিশোর জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবারও তাঁর ভক্তরা দিনটি উদ্‌যাপন করলেন বিশেষ আয়োজনে। তবে ‘দম’ সিনেমার শুটিংয়ে কাজাখস্তানে থাকায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পারবেন না নিশো। শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে নিজের জন্মদিন উদ্‌যাপনে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষ হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। দেশে ফিরেই ভক্তদের আমন্ত্রণে নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির হন নিশো। এদিন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দম সিনেমার পরিচালক রেদওয়ান রনি ও নায়িকা পূজা চেরি। স্বাভাবিকভাবে উঠে আসে দম সিনেমার প্রসঙ্গ। নির্মাতা জানালেন, কতটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুটিং করেছেন তাঁরা। একদিন পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়ে হাত কেটে যায় নিশোর। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ, শুটিং হয়েছে দুর্গম এলাকায়। তবু থেমে যাননি নিশো, আহত অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিং চালিয়ে গেছেন।

দম সিনেমার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিশো বলেন, ‘আমরা সবাই চাই গল্প, চাই পারফরম্যান্স। দম সিনেমার মতো একটি গল্পের দায়িত্ব আমার কাঁধে, এটা আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এটা যদি ঠিকমতো পালন করতে না পারি, তাহলে কীভাবে হবে? আমি জানি, একজন সিনিয়র হিসেবে টিমের স্পিড অনেকটাই আমার ওপর নির্ভর করে। তখন এই হাত কাটা, পা কাটা, সেখানে মেডিকেল সাপোর্ট এল কি এল না, এসব কোনো বিষয় না। এ ছাড়া আমাদের খুব টাইট শিডিউল ছিল। সেখানে ১০ মিনিটের একটা বিরতি মানে শিডিউল ফেল করা। আমি দাবি নিয়ে বলতে পারি, এই সিনেমায় টিমের সবাই যতটা কষ্ট নিয়ে কাজ করেছে, এত কষ্ট কোনো প্রোডাকশনে করতে হয়নি। অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল সেখানে।’

নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজাখস্তানের শুটিং শেষ করেছে দম টিম। নিশো বলেন, ‘বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বটা বেড়ে যায়। এখানে নিজেকে শুধু অভিনেতা হিসেবে ভাবিনি। ভেবেছি, আমিও নির্মাতার একটি অংশ। আমরা যে ওয়েদারে কাজ করেছি, সেখানে ২টার সময় সূর্যের আলো থাকে না। আমরা কখনোই ভাবি নাই, সানলাইট ২টার সময় চলে যায়। এত জটিলতার পরেও আমরা এক দিনও বেশি শুটিং করি নাই। নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করেছি। সিনেমাসংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা আমাদের কথা রেখেছি।’

দম সিনেমার গল্প নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চান না এই অভিনেতা। শুধু জানালেন, বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে এ ধরনের গল্প নিয়ে আগে কাজ হয়নি। তিনি আশা করেন, গল্পটি সবাই উপভোগ করবে এবং সিনেমাটি দেখার পর সবাই গর্ব করবে যে এটি বাংলাদেশের সিনেমা।

কাজাখস্তানে শুটিং শেষে এবার দমের শুটিং হবে দেশে। কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে আবার লাইট, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন অভিনয়শিল্পীরা। নিশো, পূজা চেরির সঙ্গে এতে আরও অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। আগামী বছর রোজার ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে দম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত