Alexa
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বন্দরে দাম বাড়ল কেজিতে ৪ টাকা 

আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩, ১০:১১

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা পেঁয়াজ। ছবি: আজকের পত্রিকা চাষিরা যেন তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পায় তা নিশ্চিত করতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ হচ্ছে পেঁয়াজ আমদানি। এই সিদ্ধান্তে কৃষকেরা খুশি হলেও ক্রেতা-ভোক্তারা অস্বস্তিতে আছেন। অনেকে মনে করছেন, এর ফলে রমজান সামনে রেখে সিন্ডিকেটের হাত ধরে দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। 

এদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের আগের দিন আজ বুধবার বন্দর এলাকায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম দুই থেকে চার টাকা বেড়ে গেছে। হিলি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ গতকাল মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। তবে একদিনের ব্যবধানে আজ বুধবার ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। 

জানা গেছে, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন ও দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকায় গত দুই মাস ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ অনেকাংশে কম। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর এলাকার খোলা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ২৬ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তবে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় পেঁয়াজের দাম অনেকটা বেশি। আজ বুধবার সাতক্ষীরার বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮ টাকায়। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, আর খুচরা ৩৩ থেকে ৩৫ টাকায়। 

যশোরের বেনাপোল এলাকার কৃষক আমিন হোসেন বলেন, ‘যখন দেশি পেঁয়াজ ওঠে, তখন ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকায় আমরা অনেক সময় উৎপাদন খরচ উঠাতে পারি না। আর কদিন বাদে ঘরে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। এর আগে সরকার পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ রাখায় আমরা খুশি।’ 

স্থানীয় ক্রেতা বরকত আলী বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে প্রতিবার যেহেতু রমজানের সময় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেয়, তাই সরকারের বাজার তদারকি জোরদার রাখতে হবে। 

বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শামিম হোসেন বলেন, চাহিদা কম থাকায় এবার রোজার আগে পেঁয়াজ আমদানির চিন্তা নেই। তবে যেহেতু চাহিদার তুলনায় দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয় না, তাই একেবারে আমদানি নিষিদ্ধ না করে কোটা নির্ধারণ করে সীমিত রাখলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকত। 

বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৯ হাজার ৮৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ১৫ মার্চের পর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকবে। যদি নতুন করে কোনো নির্দেশনা না আসে, তাহলে এরপর থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। 

হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি। ছবি: আজকের পত্রিকা হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক সেলিম রেজা ও শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘আমদানির অনুমতি বন্ধ হলে রমজানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে পারে। রমজান আসতে আর কয়েক দিন বাকি। এই সময় দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। ফলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র সরকার বন্ধ করলে দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে।’ 

সেলিম রেজা ও শহীদ উদ্দিন আরও বলেন, বন্দর দিয়ে এখন যে পেঁয়াজ আসছে, এসবের অনুমতি আগে নেওয়া। নতুন করে আমদানির অনুমতিপত্র না দিলে রমজানের মধ্যে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাবে। কিছু ব্যবসায়ী এর সুযোগ নেবে। 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সেরেগুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্রের সময়সীমা ১৫ মার্চ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। নতুন করে অনুমতি দেওয়া না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। সরবরাহ কমে গেলে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হবে। 

হিলি কাঁচা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শুনেছি আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে দাম আবারও বাড়তে পারে। আজ পাইকারি বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।’ 

ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান বলেন, আজ বুধবার ছিল ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির শেষ দিন। আমদানির অনুমতিপত্রের মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশি পেঁয়াজের দামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করেন তিনি। 

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি গোলাম রসুল বলেন, বর্তমানে যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতেও চাষি টিকে থাকতে পারে। কিন্তু প্রতি বছর দেখা যায়, পেঁয়াজ উৎপাদনের মৌসুমেও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তাতে মার খায় স্থানীয় চাষিরা। ভারতীয় পেঁয়াজের তুলনায় বাংলাদেশি পেঁয়াজের খরচও কম। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে যেন চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে সরকারের খেয়াল রাখা উচিত। এই সময়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় যেন অসাধু ব্যবাসায়ীরা ফায়দা লুটতে না পারে।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     

    ছোলা ও ডালের দাম কমতির দিকে

    ছয় মাস বেতন নেই, রেশম কারখানায় উৎপাদন বন্ধ

    আর্জেন্টিনার সঙ্গে এমওইউ: তেল-গম আমদানি, তৈরি পোশাক রপ্তানির সুযোগ

    চিনি আমদানির শুল্ক কমাল সরকার

    খাদ্যপণ্য আমদানি ছাড় সহজ করল সরকার

    সৌদি আরবে সারকারখানা স্থাপন করবে বাংলাদেশ

    মনিরামপুরে মাটির স্তূপে মিলল বাক্সবন্দী গুলি ম্যাগাজিন 

    দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে শুরু তামিমের

    চবিতে ডাইনিংয়ের খাবারের দাম এক লাফে বাড়ল ১০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

    চবিতে ডাইনিংয়ের খাবারের দাম এক লাফে বাড়ল ১০ টাকা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

    বাক্‌স্বাধীনতা ভোগ করে বিএনপি মনগড়া অপপ্রচার করছে: কাদের

    বাউফলে ২ স্কুলছাত্র খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২