Ajker Patrika

ভবনের সামনে অঝোরে কাঁদছিল শিশুটি, বিকেলে উদ্ধার হলো বাবার মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৩, ০২: ৪২
ভবনের সামনে অঝোরে কাঁদছিল শিশুটি, বিকেলে উদ্ধার হলো বাবার মরদেহ

হাজার মানুষের উৎসুক চোখ বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত দুটি ভবনের দিকে। কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না। ক্রাইম সিনের ঘিরে রাখা সীমানার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এসব মানুষের পুরো মনোযোগ ভবন দুটির ভেতরে। এত মানুষের ভেতরে আলাদাভাবে নজর কাড়ে ৯ বছরের এক ফুটফুটে শিশু। সবাই যখন হতবিহ্বল দাঁড়িয়ে তখন এই শিশু দুই হাত তুলে মোনাজাত করছে। মুখে কোনো কথা নেই, যত কথা সব তার মায়াভরা চোখ জোড়ায়। মোনাজাতে কী চাইছে সে? তৎক্ষণাৎ জানা না গেলেও বোঝা গেল, তার ছলছল চোখ দেখে। হয়তো এই ভবনের বিস্ফোরণে সে হারিয়েছে আপনজন। ততক্ষণে তাকে ঘিরে সংবাদকর্মী ও সাধারণ মানুষের হুল্লোড় শুরু হয়ে গেছে। এতে নিবিষ্ট মোনাজাতে ছেদ পড়ে। অনেকেই জানতে চায় কে এই শিশু? কান্না চাপা কণ্ঠে নিজের নাম জানায়, সামিত।

বাবা মোমিন উদ্দিন সুমনের কুইন টাওয়ারে স্যানিটারি পণ্যের ব্যবসা। বিস্ফোরণের আগে তার বাবা এই ভবনে ঢোকেন। তারপর থেকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই বাবাকে ফিরে পেতে সামিতের নীরব মোনাজাত। এসব বলতেই ফুঁপিয়ে কান্না করছিল, পরে তা হেঁচকি কান্নায় রূপ নেয়। তার কান্না সকলকে ছুঁয়ে যায়। এরপরে সামিতসহ তার পরিবারের অন্যদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাড়িতে। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় তার বাবা মোমিন উদ্দিন সুমনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয় ভবনের বেসমেন্ট থেকে। সঙ্গে উদ্ধার হয় তাঁর কর্মচারী রবিনের মরদেহও। 

শোকাবহ এই পরিবেশে সামিতসহ তার পরিবারের আর কারও সঙ্গেই কথা বলার মতো অবস্থা ছিল না। তবে তার বাবার বাল্যবন্ধু মঞ্জুর আহমেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, নিহত সুমন আনিকা স্যানিটারির স্বত্বাধিকারী। তিন ভাই, বাবা-মা, স্ত্রী আর দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। ব্যবসা আর পুরো পরিবার দুই হাতে সামলাত সে। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষ শোকে পাথর হয়ে গেছে। 

গত মঙ্গলবার বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের নর্থ সাউথ রোডের কুইন টাওয়ার ও পাশের ভবনে। সেই বিস্ফোরণে প্রায় ২৪ ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন সুমন। গতকাল বুধবার সকালে ভবন দুটিতে ফায়ার সার্ভিস দ্বিতীয় দফা উদ্ধার কাজ শুরু করে। তার আগে থেকেই আরও তিনটি পরিবারকে তাদের স্বজনদের সন্ধানে অপেক্ষা করতে দেখা যায় সেখানে। তাদের মধ্যে রবিন হোসেন শান্তর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তার মালিক সুমনের সঙ্গে। 

রবিনের ভাই শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা লাশ পেয়েছি। সেটা বুঝিয়ে নিতে ঢাকা মেডিকেলে যাচ্ছি।’ 

নিখোঁজদের মধ্যে মেহেদি হাসান স্বপন ও আব্দুল মালেকের সন্ধান মেলেনি গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড, বারডেমসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করেও তার সন্ধান না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিল স্বজনরা। স্বপনের বোন জামাই গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জীবিত আর পাওয়া যাবে না জানি। হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে আমরা হতাশ হয়ে ভবনের সামনে অপেক্ষা করছি। নিখোঁজ থাকা দুজনের মরদেহ যখন এখান থেকে পাওয়া গেছে। আশা করছি স্বপনকেও এখান থেকে পাওয়া যাবে।’ 

গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা মেডিকেল সূত্রে। বেশির ভাগই প্রাণ হারিয়েছেন আঘাত ও রক্তক্ষরণের কারণে। কারও মুখ, মাথা, বুক ও হাত-পা থেঁতলানো। কারও আবার বিস্ফোরণে ভেঙে আসা কাচ ঢুকেছে গলা দিয়ে। কুইন টাওয়ারের পাশের ভবনে ইউসুফ স্যানিটারির মালিক নুরুল ইসলাম ভূঁইয়াও (৫৫) বিস্ফোরণে প্রাণ হারান। তার মরদেহ দেখে এসে ছোট ভাই তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া (৫৩) স্বজনদের বলেন, ‘ভাইয়েরেতো চেনা যায় না। মুখ পুইড়া ছাই। একটা দাড়িও নাই!’ 

মঙ্গলার বিকেলে বাবার ফোন পেয়ে তার পান-সিগারেটের দোকানে সহায়তা করতে গুলিস্থান যাচ্ছিলেন হৃদয় মিয়া। পথেই বিস্ফোরণের মাঝে পড়েন এবং সেখানেই প্রাণ হারান। মরদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে। সেই মরদেহের বর্ণনা দিয়ে আজকের পত্রিকাকে তার খালু জয়নাল মিয়া বলেন, ‘হৃদয়ের মুখের এক পাশ পুইড়া গেছে। দেখলে ডর লাগে। পুইরা যাওয়া মুখ দেখলে চেনার উপায় নাই।’ 

নিহত অন্যরা হলেন—মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকৃতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস মীর (৬০) এবং আব্দুল হাসিম সিয়াম (৩৫)। সবগুলো মরদেহই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 
 
আহতদের আহাজারি ও চিৎকারে ঢাকা মেডিকেলের পরিবেশ ভারী ছিল ঘটনার দিন রাতে। সেই রাতেই জরুরি বিভাগের বাইরে স্ট্রেচারে গুরুতর আহত জামাল শিকদারকে (৩৫) কাতরাতে দেখা যায়। তার মাথা ও পায়ে থেঁতলে যাওয়া ভয়ানক জখম। জখমে জড়ানো সাদা ব্যান্ডেজ রক্তে লাল। মাথার সিটি স্ক্যান ও পায়ের এক্স-রে করা হয়েছে। তার স্ত্রী মুন্নি বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটু পর পর ব্যথায় তিনি (তার স্বামী) চিৎকার করে উঠছে। আর বাকি সময় দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করছেন। এই ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছে ২০ জন দগ্ধ ও আঘাতের রোগী। তাদের মধ্যে ছয়জন দগ্ধ রোগী আছেন বার্ন ইউনিটে। সংকটাপন্ন ১০ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি আছেন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে। সব মিলিয়ে ঢাকা মেডিকেলের সাধারণ বিভাগ, বার্ন ইউনিট ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন ৩০ জন। 

বার্ন ইনস্টিটিউটে ৯৮ ভাগ দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন মো. মুসা নামে এক ব্যক্তি। এ ছাড়া ৫৫,৮০, ৪০ ও ৫৫ ভাগ দগ্ধ হয়েও অনেকেই ভর্তি আছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। এসব রোগীদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যারা চিকিৎসাধীন আছে তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত না। সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে পারি, যেহেতু সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে তাই আমরা শঙ্কামুক্ত বলতে পারব না।’ 

এ ছাড়া রাজধানী ও সাভারের অন্যান্য হাসপাতালেও অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। অনেকেই আবার হালকা জখম বা আঘাত পেয়ে ঘটনার দিনই ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত