Ajker Patrika

বাংলাদেশের এলএনজির চালান ‘মাঝপথে ঘুরে যাচ্ছে’ ইউরোপে

আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২২, ১৮: ০৪
বাংলাদেশের এলএনজির চালান ‘মাঝপথে ঘুরে যাচ্ছে’ ইউরোপে

উচ্চ চাহিদার কারণে ইউরোপে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম সর্বোচ্চ। আর তাই অন্য দেশের গন্তব্যে থাকা এলএনজির চালান পথ বদলে বেশি লাভজনক ইউরোপের বাজারে যাচ্ছে।

এর ফলে স্পট মার্কেটে এলএনজির চালান কেনায় ইউরোপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটছে বলে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বিশ্ব পণ্যবাজার নিয়ে বুধবার প্রকাশিত ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক’ শীর্ষক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলারের বিপরীতে বিশ্বের অন্য সব মুদ্রার রেকর্ড দরপতনের ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানির সংকট তীব্রতর হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

সরকারের হিসাবে বাংলাদেশের মোট জ্বালানি ব্যবহারের প্রায় ৬২ শতাংশই প্রাকৃতিক গ্যাস, যার মধ্যে ৮ শতাংশ চাহিদা আমদানি করা এলপিজি দিয়ে মেটানো হয়। বাকি ৩৮ শতাংশ জ্বালানি চাহিদার বেশির ভাগটা আমদানি করা তেল দিয়ে মেটানো হয়।

এর বাইরে জ্বালানির উৎস হিসেবে দেশে কয়লার বড় মজুত থাকলেও তার উৎপাদন ও ব্যবহার দুটোই কম। অন্যদিকে তরল গ্যাসের মজুত খুব বেশি না হলেও প্রাপ্ত উৎসের মধ্যে এর উৎপাদন ও ব্যবহারই বেশি।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেলের মতো অন্যান্য বিকল্পের ব্যবহার বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারছে না। তবে জাপান ও কোরিয়ার মতো বড় এলএনজি আমদানিকারকেরা তাদের বেশির ভাগ এলএনজি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কিনে থাকে। এর ফলে স্পট মার্কেটে দাম বাড়লে এরা বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

তবে এ দুটি দেশই প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে সরে গিয়ে জ্বালানি ব্যবহারে বৈচিত্র্য আনতে চায়। এজন্য তারা পরমাণু শক্তি পুনর্ব্যবহারেরও পরিকল্পনা করছে। মেরিন ট্রাফিকের হিসাবে, এখন ৬০টি ট্যাংকার বা বিশ্বের এলএনজি নৌযানের ১০ শতাংশ এখন উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ, ভূমধ্যসাগর, ইবেরিয়ান উপদ্বীপ এলাকায় চলাচল করছে বা নোঙর করে আছে।

 ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় শীতের আগে ইউরোপের জ্বালানির চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। সে কারণে এলএনজি ট্যাংকারগুলো সেদিকে ছুটছে। চাহিদার চেয়ে সংরক্ষণক্ষমতা কম থাকায় সেগুলোকে জলরাশিতেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে সিএনবিসির খবরে বলা হয়েছে।

বৈশ্বিক পণ্যবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশির ভাগ উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে খাদ্য ও জ্বালানির দাম এমনভাবে হুহু করে বাড়ছে যে এসব দেশের চলমান খাদ্য ও জ্বালানির সংকটকে তা তীব্রতর করতে পারে।

আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটির হিসাবে, ঘনিয়ে আসা মন্দার শঙ্কার মধ্যে ডলারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম চূড়ায় উঠেও সম্প্রতি কিছুটা কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডলারে অপরিশোধিত তেল ব্রেন্টের দর প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। তবু আমদানিকারক ও উন্নয়নশীল দেশে মুদ্রার ব্যাপক অবমূল্যায়নের কারণে স্থানীয় মুদ্রায় তেলের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। একইভাবে গমের দামেও ব্যাপক উচ্চমূল্যের মুখোমুখি হয়েছে এসব দেশের ৯০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত জ্বালানি পণ্যের উচ্চমূল্য বাড়িয়েছে খাদ্যের দাম। ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল গড়ে ২০ শতাংশের বেশি, যা বিশ্বে অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি। লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়াসহ অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি গড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে ছিল। তবে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরই একমাত্র অঞ্চল, যেখানে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কম ছিল। এর জন্য চালের দামের স্থিতিশীলতাকে মূল অবদান হিসেবে দেখানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিশ্বব্যাংকের সুষম প্রবৃদ্ধি, অর্থ ও প্রতিষ্ঠান বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট পাবলো সাভেদ্রা এক বিবৃতিতে বলেন, পণ্যের দাম যতটুকু কমেছে, তা হিসাবে ধরেও গত পাঁচ বছরে গড় মূল্য স্তরের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্যের সংকট দীর্ঘায়িত হতে পারে।

‘আর তাই অবাধ খাদ্য সরবরাহ ও সুষম বিতরণ এবং মানুষের প্রকৃত আয়ে সহায়তা বা ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একগুচ্ছ নীতিমালার জরুরি বাস্তবায়ন প্রয়োজন।’

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জ্বালানির দামে বেশ অস্থিরতা ছিল। তবে ধীরে ধীরে দাম কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছরে জ্বালানির দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়লেও ২০২৩ সালে তা প্রায় ১১ শতাংশ কমবে বলে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে এই কমার পরও জ্বালানির দাম গত পাঁচ বছরের চেয়ে গড়ে ৭৫ শতাংশ বেশি থাকবে।

২০২৩ সালে ব্রেন্টের দাম প্রতি ব্যারেল ৯২ ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা পাঁচ বছরের গড় দামের চেয়েও বেশি। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লার দামও কমার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে ২০২৪ সালের মধ্যে অস্ট্রেলীয় কয়লা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বিগত পাঁচ বছরের গড় দামের দ্বিগুণ হবে। একই সঙ্গে ইউরোপীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম প্রায় চার গুণ বেশি হতে পারে।

কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক তৈরির দায়িত্বে থাকা বিশ্বব্যাংকের প্রসপেক্ট গ্রুপ ডিরেক্টর আয়হান কোস বলেন, পণ্যের উচ্চমূল্য এবং ক্রমাগত মুদ্রার অবমূল্যায়ন অনেক দেশকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তবে কয়েক দশকের সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির এই চক্রের লাগাম হাতে রাখতে নতুন বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর নীতি-নির্ধারকদের খুব বেশি কিছু করার নেই বলে তিনি মনে করেন।

আয়হান কোস বলেন, ‘খুব সর্তকতার সঙ্গে মুদ্রা ও আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন করে পরিকল্পনাগুলো সুস্পষ্টভাবে সবার কাছে পৌঁছে দিতে হাবে তাঁদের। পাশাপাশি বৈশ্বিক আর্থিক ও পণ্য বাজারে আরও উচ্চ অস্থির সময় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’

কৃষিপণ্যের দাম আগামী বছর ৫ শতাংশ কমার আশা করা হচ্ছে। আর গমের দাম এ বছর তৃতীয় প্রান্তিকে ২০ শতাংশ কমেও এক বছর আগের চেয়ে ২৪ শতাংশ বেশি।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ইকোনমিস্ট জন ব্যাফেস বলেন, কৃষিপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস কতগুলো ঝুঁকি ওপর নির্ভর করবে। প্রথমত, ইউক্রেন বা রাশিয়া থেকে রপ্তানিতে ব্যাঘাত আবারও বিশ্বব্যাপী শস্য সরবরাহে বাধা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, জ্বালানির দামের চরম বৃদ্ধি শস্য ও ভোজ্যতেলের দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তৃতীয়ত, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফলন কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিল নগদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
সেরা ফিল্ড ফোর্সদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে নগদ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

সারা দেশের সাত হাজার ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সের মধ্য থেকে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য ৭০ জনকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা নগদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘নগদ ফিল্ড চ্যাম্পিয়ন ২০২৫’ নামের এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠান চলাকালে ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ বোনাসের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৭০ জনের নগদ অ্যাকাউন্টে চলে যায় এই অর্থ।

দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া, খাওয়া, হোটেলে অবস্থানসহ অন্য সব খরচ নগদের পক্ষ থেকে বহন করা হয়।

সেরা পারফর্মারদের অভিনন্দন জানিয়ে নগদের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জের মাঝেও বাজারে নগদ একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশে ক্যাশলেস লেনদেনের আরও প্রসার ঘটাতে নগদ ভূমিকা রাখবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা রয়েছে। সুতরাং, যত অপপ্রচারই নগদকে নিয়ে হোক না কেন, সেসবে কান না দিয়ে নগদের সাফল্যের জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

নগদের সেবার প্রসার ঘটাতে এ সময় মোতাছিম বিল্লাহ ডিস্ট্রিবিউটর ফিল্ড ফোর্সদের কাছ থেকে নগদ বিষয়ে পরামর্শ ও সুপারিশ জানতে চান। তাঁদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নগদ প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ের ভেতরই সেবার কলেবর আরও বাড়বে নগদে। ফলে লেনদেনের অঙ্ক যেমন অনেক গুণ বাড়বে, একই সঙ্গে গ্রাহকেরাও অনেক বেশি উপকৃত হবেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, ডাক বিভাগনিযুক্ত নগদের জ্যেষ্ঠ সহযোগী প্রশাসক মো. আবু তালেব, নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সারওয়ার ভূঁইয়া বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, আগামী বছরে বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স, বাংলা কিউআর, সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের জন্য আন্তসংযোগ গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করবে নগদ। ফলে ২০২৬ সাল নগদের সেরা সাফল্যের বছর হবে বলেও মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করল ডিএসই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত
ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক চালু করেছে ডিএসই। ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসেবা আরও সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এই ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. আসিফুর রহমান, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ইনফরমেশন হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদান আরও সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারী ও অন্য অংশীজনদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার দ্রুত ও কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে ডিএসইর সেবার মান আরও গ্রাহকবান্ধব ও স্বচ্ছ হবে।

ডিএসইর এমডি আশা প্রকাশ করেন, এই হেল্প ডেস্ক ডিএসইর বাজার অংশগ্রহণকারীদের আস্থা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সব ধরনের তথ্যের জন্য +৮৮-০২-৪১০৪০১৮৯, ০৯৬৬৬৭০২০৭০ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ট্রাভেল ও ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ড: লিড স্পনসর ‘গ্যালাক্সি’, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

দেশের অন্যতম ভ্রমণ ও পর্যটনবিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি অ্যাওয়ার্ড (BTTHA) ২০২৫’-এর লিড স্পনসর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গ্যালাক্সি গ্রুপ।

একই সঙ্গে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা এই আয়োজনের হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

দেশের ভ্রমণ, পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে একমাত্র স্বীকৃত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট চুক্তিসমূহ স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ মনিটরের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। গ্যালাক্সি গ্রুপের পক্ষে লিড স্পনসর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ। অন্যদিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার পক্ষে হসপিটালিটি পার্টনার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হোটেলটির জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, গ্যালাক্সি ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার সম্পৃক্ততায় অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের মর্যাদা ও পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের ভ্রমণ ও আতিথেয়তা শিল্পে উৎকর্ষতা অর্জন এবং উত্তম চর্চা উৎসাহিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে উদ্ভাবন, সেবার মান এবং টেকসই উন্নয়নকে স্বীকৃতি প্রদানকারী একটি মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তারা গর্বিত।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড ও’ হ্যানলন বিশ্বমানের আতিথেয়তা প্রদানের পাশাপাশি অসাধারণ অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে এমন একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

চলতি বছর ২৫টি ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। শুধু আবেদনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিচারক প্যানেল বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন এবং পাবলিক ভোটিংয়ের ভিত্তিতে বিজয়ীদের চূড়ান্ত করবেন।

এবার নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে দুটি বিশেষ ক্যাটাগরি—সর্বাধিক পর্যটনবান্ধব বিদেশি গন্তব্য, বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। এই দুটি ক্যাটাগরির বিজয়ী সরাসরি পাবলিক ভোটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন ইকোসিস্টেমের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মনিটর ২০২৪ সালে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারের প্রবর্তন করে।

প্রথম আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আরও বৃহৎ পরিসরে এই আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃশ্যমানতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল নজরদারি করবে এনবিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল আরও স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ নামে নতুন একটি সাব-মডিউল চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে প্রতিটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের প্রবেশ, অবস্থানকাল এবং খালি ট্রাকের ফেরত-সংক্রান্ত তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রাথমিকভাবে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসে ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই সাব-মডিউলের পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাক প্রবেশ ও বহির্গমনের তথ্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

নতুন মডিউল চালুর ফলে ভারতীয় প্রতিটি ট্রাকের আগমন ও বহির্গমনের প্রকৃত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এতে ট্রাকের অবস্থানকাল নির্ধারণ, সীমান্ত এলাকায় ট্রাক চলাচল কার্যকরভাবে মনিটরিং এবং রিয়েল-টাইম রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়বে, রাজস্বহানি রোধে সহায়ক হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায় এই ডিজিটাল উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ট্রাক চলাচলের নির্ভুল তথ্য থাকায় শুল্ক ও কর ব্যবস্থাপনায় নজরদারি জোরদার হবে, একই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাও বাড়বে।

খুব শিগগির দেশের সব স্থলবন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ‘ট্রাক মুভমেন্ট’ সাব-মডিউলটি লাইভ অপারেশনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এতে স্থলবন্দরভিত্তিক আমদানি কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আধুনিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত