Ajker Patrika

চার গুণ দামে এলএনজি কিনে ধুঁকছে পেট্রোবাংলা

মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা
চার গুণ দামে এলএনজি কিনে ধুঁকছে পেট্রোবাংলা

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ক্ষেত্রে ‘দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি’ বা লং-টার্ম কন্ট্রাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে একটি অতি পরিচিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতির বড় সুবিধা হলো, বাজারে স্বল্প মেয়াদে দাম ওঠানামা করলেও চুক্তিতে নির্ধারিত দামেই গ্যাস পাবে ক্রেতা। কিন্তু এই সুযোগ হেলায় ফেলে স্পট মার্কেট থেকে চার গুণ বেশি দামে এলএনজি আমদানি করছে পেট্রোবাংলা। বেশি দামে এলএনজি কেনার প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে। ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে ফিরে আসছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। শুধু তা-ই নয়, এলএনজির পেছনে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে গ্যাসের দামও বাড়াতে চায় সরকার।

পেট্রোবাংলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি ৯ দশমিক ২০ মার্কিন ডলারে কিনেছিল পেট্রোবাংলা। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তা কিনতে হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ ডলারে। ইউনিটপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১২ ডলার। 
অন্যদিকে একই সময়ে এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়েছে প্রায় চার গুণ। স্পট মার্কেটে গত বছরের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ গ্যাসের দাম ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেই দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি ইউনিট ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার। আমদানি-নির্ভরতার কারণে এই দামেই এলএনজি কিনতে হয়েছে পেট্রোবাংলাকেও।

গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার জন্য নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শিতা ও পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম একসময় কম থাকায় নীতিনির্ধারকেরা দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তিতে অবহেলা করেছিলেন। স্পট মার্কেটে কম দামে পেলে কেন আমরা বেশি দামে দীর্ঘমেয়াদি টার্মে এলএনজি কিনতে যাব—এমনই ছিল তাঁদের মনোভাব। তাঁরা তখন বুঝতেই পারেননি যে স্পট মার্কেটের কম দাম ক্ষণস্থায়ী। স্পট মার্কেটের দামের ওপর নির্ভর না করতে আমরা বারবার বললেও পেট্রোবাংলা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। এখন তাঁরা এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হওয়া অতিরিক্ত খরচ ওঠাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায়। কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে।’

সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করে স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা যখন এলএনজি সরবরাহের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করি, তখন স্পট মার্কেটের দাম দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি বলেন বা যা-ই বলেন স্পট মার্কেটের দাম বেড়ে আকাশে উঠবে –এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।’

স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল আহসান বলেন, ‘অতীতে অফশোর ও অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা বিভিন্ন সময় টেন্ডার আহ্বান করলেও প্রত্যাশিত সাড়া পাইনি। অনশোরে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’

দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। গ্যাসের জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস খোঁজার পরিবর্তে ঝুঁকছে আমদানিনির্ভর এলএনজির দিকে। এই আমদানিনির্ভরতা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর ভালো ফল বয়ে আনবে না–এমন সতর্কবার্তা শুরু থেকেই দিয়ে এসেছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। 

 ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এলএনজির দাম বাড়ার কারণে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশীয় রপ্তানিমুখী খাতগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে এবং সর্বোপরি জ্বালানি সরবরাহে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’

বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে। বেশি দামে গ্যাস ক্রয় করতে গিয়ে একদিকে সরকারের ওপর ভর্তুকির চাপ বাড়বে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়বে—এমন সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।

বর্তমান পরিস্থিতি তাদের সতর্কবার্তারই প্রতিফলন বলা যায়। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ার কারণে পেট্রোবাংলার অবস্থা এখন চিড়েচেপ্টা। সংস্থাটি একদিকে সরকারের দিক থেকে ভর্তুকির কমানোর চাপে আছে। অন্যদিকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয় করতে হচ্ছে তাদের। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে দেওয়া সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামনের অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়বে। 
স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বাড়ার মধ্যেই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে কাতারের রাসগ্যাস এবং ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল এলএনজি কর্তৃক কার্গো সরবরাহ কমানোর আভাস। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি করেছিল পেট্রোবাংলা।

চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠান দুটি পেট্রোবাংলাকে বছরে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ৬৪ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করার কথা। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৫৩ কার্গো। এর আগে এলএনজির বাজার স্থিতিশীল থাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৮ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছিল তারা।

পেট্রোবাংলা গ্যাসের বড় অংশই সরবরাহ করে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

পেট্রোবাংলা এলএনজি গ্যাস আমদানি শুরু করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করে ২০২১ সাল থেকে। গত বছরের শেষের দিকে করোনা মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় বিশ্ব অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলে এলএনজির দাম চড়তে শুরু করে।

জ্বালানি তেল ও গ্যাসের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডটি ইনসাইটসের মতে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এশিয়ার বাজারে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৬ দশমিক ৩২৬ মার্কিন ডলারে ঠেকে। আর ২০২২ সালের এপ্রিলে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি এমএমবিটিইউ ৫৯ ডলার। স্পট মার্কেট থেকে গ্যাস কেনার কারণে দাম বাড়ার ঘা সইতে হচ্ছে পেট্রোবাংলাকেও।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি ক্রয় 
পেট্রোবাংলা ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার রাসগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ৫৩টি কার্গোতে করে ১৬ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৮ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করে। এতে খরচ পড়ে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে কাতারের রাসগ্যাস থেকে ৩৭টি কার্গোতে করে ১১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৪ এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনা হয়। এতে খরচ পড়ে ১২৮ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ওমানের ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ১৬টি কার্গোতে করে ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৪ এমএমবিটিইউ গ্যাস আমদানি করা হয়। এ জন্য পেট্রোবাংলাকে গুনতে হয় ৪৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার।

স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় 
স্পট মার্কেটে ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য ছিল ১০ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের এপ্রিলে এসে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৯৩ মার্কিন ডলার।

 স্পট মার্কেটে পেট্রোবাংলাকে এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ভিটল এশিয়া, এক্সিলারেট এনার্জি এলপি, এওটি ট্রেডিং এজি এবং টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৩ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করেছে পেট্রোবাংলা। ১৩টি কার্গোতে করে এসব গ্যাস আসে। এতে আমদানি খরচ পড়ে ১৪৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আরও চারটি এলএনজি কার্গো স্পট মার্কেট থেকে ক্রয় করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে পেট্রোবাংলা। সংস্থাটি জানিয়েছে, জুন ও জুলাই মাসে এই চার কার্গো পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

হুমকির মুখে পড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি 
স্পট মার্কেট থেকে বেশি দামে এলএনজি ক্রয়ের কারণে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ইনডিপেনডেন্ট কমোডটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসেসের আইসিআইএস এলএনজি গ্লোবাল সাপ্লাই অ্যান্ড ডিমান্ড আউটলুক-২০২২ প্রতিবেদনে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘২০২২ সালে এই তিন দেশে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজির চাহিদা ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন হবে। কাতারের রাসগ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল চুক্তি অনুযায়ী এলএনজি সরবরাহ করতে না চাওয়ায় বাংলাদেশে গ্যাস-সংকট দেখা দেবে।’

চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত শুক্রবার ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত ‘২০২২ আউটলুক: গ্লোবাল লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস’ রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশে দিন দিন গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর ফলে আমদানি করা গ্যাসের দাম বাড়বে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা 
রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি

রাজস্ব খাতে ব্যাপক সংস্কার এবং সব খাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা (অটোমেশন) চালুর উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বাড়তি তৎপরতা সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। প্রতিমাসে রাজকোষের হিসাবের সঙ্গে মিলিয়ে ঘাটতির ব্যবধান স্পষ্ট হচ্ছে এবং চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় আছে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ১৩.৮৯ শতাংশ।

তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো—রাজস্ব আদায়ে বৃদ্ধি হয়েছে ১৫.১৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধীরগতির কারণে রাজস্ব আদায় প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে সাধারণত আদায় বাড়ে। করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন জোরদার করা এবং ফাঁকি প্রতিরোধে এনবিআর সক্রিয়।

অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্দাভাব, কাঠামোগত দুর্বলতা ও সক্ষমতার অভাব সরাসরি রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তা ছাড়া অর্থবছরের মাঝপথে লক্ষ্যমাত্রা একলাফে ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর কারণে বাস্তবতার সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার ব্যবধান আরও প্রকট হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের জন্য মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। তবে ১০ নভেম্বর বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি তা ৫ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করে। ফলে বাকি সাত মাসে এনবিআরকে ৪ লাখ ৫ হাজার ২৪ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকে। প্রধান কারণ হলো এনবিআরের সক্ষমতার চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। মানবসম্পদ, কারিগরি দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়; পাশাপাশি করদাতা এবং করযোগ্য ব্যক্তির মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে, কর ফাঁকিও প্রচুর। বর্তমান ব্যবসায়িক মন্দা, খরচ বৃদ্ধি, আয় হ্রাস এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ কমে যাওয়াও রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানো, অটোমেশন ও সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করলে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে আদায় বাড়ানো সম্ভব।

সাবেক আমলা ও জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, এনবিআরের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক পদে বড় রদবদলের কারণে কার্যক্রম গোছাতে কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক।

রাজস্ব খাত অনুযায়ী, ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে। প্রথম পাঁচ মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা; ঘাটতি ৩ হাজার ৮১৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৬.১৫ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১.৯৭ শতাংশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আসে আয়কর খাতে। আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৮৮১ কোটি, লক্ষ্যমাত্রা ৫৯ হাজার ৯৯৫ কোটি ২৫ লাখ; ঘাটতি ২০.১৯ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ শতাংশ। কাস্টমস বা শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার ৯৭৯ কোটি ৫৬ লাখ; ঘাটতি ১৫.৯১ শতাংশ, তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৮ শতাংশ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার অপরিহার্য। এনবিআরের মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রক্রিয়ার সরলীকরণ এবং অটোমেশন কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আদালতের রায়ে ইতিহাস গড়লেন ইলন মাস্ক, সম্পদ ছাড়াল ৭০০ বিলিয়ন ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৪
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

পে প্যাকেজ বা বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি মামলার রায়ের পর টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের সম্পদ গত শুক্রবার রাতে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।

ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত বছর আদালত এই সুবিধাগুলো বাতিল করেছিলেন।

২০১৮ সালে মাস্কের যে বেতন প্যাকেজের মূল্য ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটিই গত শুক্রবার ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বহাল করেন। এর দুই বছর আগে নিম্ন আদালত ওই পারিশ্রমিক চুক্তিকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ২০২৪ সালে দেওয়া যে সিদ্ধান্তে বেতনের প্যাকেজটি বাতিল করা হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না এবং মাস্কের প্রতি অন্যায্য ছিল।

এর আগে চলতি সপ্তাহে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শেয়ারবাজারে আসতে পারে—এমন প্রতিবেদনের পর মাস্কের সম্পদ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।

এদিকে গত নভেম্বরে টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা আলাদাভাবে মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি পারিশ্রমিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।

এটি করপোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেতন প্যাকেজ। বিনিয়োগকারীরা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসভিত্তিক এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে মাস্কের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।

ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, মাস্কের বর্তমান সম্পদমূল্য গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের চেয়ে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেশি। ল্যারি পেজ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম (এসএসএস)।

নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানি ও ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য রেগুলেটরি ফাইলিং কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারবে। এতে সময় ও খরচ কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং ট্র্যাকিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্য একই ডিজিটাল গেটওয়ে দিয়ে জমা দেওয়া সম্ভব। ফলে দ্বৈত সাবমিশনের ঝামেলা প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সাবমিশন শুধু সুবিধার বিষয় নয়, এটি বাজার শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি কাঠামোগত পরিবর্তন।

ডিএসই জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যুক্ত করা সহজ হবে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল কমবে এবং তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ ডিজিটালি যাচাইযোগ্য থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হতে যাচ্ছে কক্সবাজার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান।

গভর্নর বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫ শতাংশ খুচরা লেনদেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’

চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এই সভায় গভর্নর চট্টগ্রামকে দেশের ‘অর্থনৈতিক লাইফলাইন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), ভারী শিল্প এবং জ্বালানি অবকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু এই চট্টগ্রাম। সিঙ্গাপুর, দুবাই বা হংকংয়ের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগ শক্তিশালী করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে শিগগিরই ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এটি একটি তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা বাণিজ্যের গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ ছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএমই) এবং কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ও সহজ শর্তে ঋণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন গভর্নর। জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদনশীল খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, ব্যাংকার, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত