মুশতাক হোসেন

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্থ ও জনবলের জোগান দেওয়া, সেটাও সরকারের দায়িত্ব।
কয়েকটি অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। অধিদপ্তরগুলোর মধ্যে রয়েছে: স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, নার্সিং ও ধাত্রীসেবা এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মহাপরিচালক বা সমমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন আরও বেশ কিছু দপ্তর রয়েছে। রোগীর সেবা দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিশেষ বিষয়ভিত্তিক হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক। অপরদিকে নগরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের।
১৯৭৬ সাল থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও এনজিও মালিকানার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবায় যুক্ত হয়। ব্যক্তিমালিকানাধীন আনুষ্ঠানিক খাতে পাশ্চাত্য ও ঐতিহ্যগত (ইউনানি ও আয়ুর্বেদীয়) উভয় ধরনের সেবা রয়েছে। আনুষ্ঠানিক এ খাতে রয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি, ঔষধালয়। অনানুষ্ঠানিক খাতে রয়েছে প্রশিক্ষণবিহীন রোগীর সেবাদানকারীরা। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে নিয়মকানুন মানানোর ব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল। আনুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত শহরাঞ্চলে আর অনানুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত গ্রামাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।
ক্রমান্বয়ে এনজিওগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ‘তৃতীয় খাত’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং তাদের ভূমিকা বাড়ছে। ১৯৯৭ সালে স্বাস্থ্য খাতের মোট খরচের ৬ শতাংশ এনজিওগুলো করত, যা ২০০৭ সালে এসে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। এখন এটা আরও বেড়েছে। সরকারের সঙ্গে এনজিওগুলোর অংশীদারত্ব রয়েছে অর্থায়ন, পরিকল্পনা, সেবা প্রদান, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রগুলোতে। এগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতিতে কাজে লেগেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা অতি মাত্রায় কেন্দ্রীভূত। পরিকল্পনাগুলো করা হয় মন্ত্রণালয় পর্যায়ে। স্থানীয় পর্যায়ে তেমন কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির মধ্যে বিভক্ত। তারা আলাদাভাবে নিজ নিজ মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদনগুলো পাঠায়।
স্বাস্থ্যব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বেশ কতগুলো আইন ও অধ্যাদেশ রয়েছে, যার অনেকগুলো কয়েক দশকের পুরোনো। চিকিৎসক (দন্ত চিকিৎসকসহ) ও নার্সদের নিবন্ধনের জন্য আলাদা পরিষদ (কাউন্সিল) রয়েছে। কিন্তু তদন্ত ও শৃঙ্খলার ব্যাপারে তাদের কর্তৃত্ব দুর্বল।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের সর্বশেষ (২০১২) হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর একজন মানুষ ২৬ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার (১ ডলার=৮০ টাকা, ২০১২ সালে) স্বাস্থ্যের জন্য খরচ করে। তার নিজস্ব পকেট থেকে খরচ হয় ৬৪ শতাংশ, এটা এখন বেড়ে ৭০ শতাংশের বেশি হয়েছে। সরকার নাগরিকদের জন্য খরচ করছে ২৫ শতাংশের কম। প্রতিবছর বাজেটে সরকার যত টাকা বরাদ্দ করে, তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ অব্যয়িত থেকে যায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের অযোগ্যতার কারণে। দুর্নীতির কারণে আরও একটি অংশ অপচয়ের শিকার হয়। সরকারি খরচের বাইরে সামান্য কিছু অংশ (শূন্য দশমিক ২ শতাংশ) বিমার মাধ্যমে সংরক্ষিত হয় আপৎকালে ব্যবহারের জন্য। এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগে করা হচ্ছে। কিছু সামাজিক উদ্যোগে কম খরচে রোগীদের সেবার ব্যবস্থা আছে। কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন বিমা প্রতিষ্ঠান রোগীদের সেবার জন্য ব্যক্তি ও গোষ্ঠীবিমা চালু করেছে। যদিও জনসংখ্যার খুব সামান্য অংশই এর আওতাভুক্ত।
দেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। যতটুকু রোগীর সেবার সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে, তা-ও অনেক ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত ও অসন্তোষজনক। এ ঘাটতির সুযোগে সচ্ছল শ্রেণির চাহিদা মেটাতে ১৯৮০-এর দশক থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা খাতের বিস্তার ঘটতে থাকে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের মুনাফাভিত্তিক ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা কিনতে অসমর্থ। ফলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
বাংলাদেশে সরকারি ব্যবস্থায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর বিস্তৃতি ব্যাপক। তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো স্থাপনা ও মাঠকর্মী রয়েছে। শহরাঞ্চলে বড় বড় সরকারি হাসপাতাল তো রয়েছেই। যদিও বিগত দশকজুড়ে হাসপাতাল ও রোগীর শয্যাসংখ্যার প্রভূত উন্নতি ঘটেছে। কিন্তু জনবলসহ ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও সরবরাহের ঘাটতি প্রায় প্রতিটি স্থাপনাকে সমস্যায় ফেলেছে।
দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ৭৩৯টি হাসপাতাল রয়েছে, সরকারি স্থাপনা রয়েছে ২ হাজার ২৫৮টি, প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ২ হাজার ৩টি (কমিউনিটি ক্লিনিক বাদে), মাধ্যমিক ও তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে ২৫৫টি স্থাপনা। নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৫ হাজার ৩২১টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে ৯ হাজার ৫২৯টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ৫৪ হাজার ৬৬০টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে মোট শয্যাসংখ্যা ৯১ হাজার ৫৩৭টি (২০১৯ সালে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিন)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় কর্মরত মোট জনবল ৭৮ হাজার ৬১৯ জন, তবে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ২৫৪ জন। এ হিসাবে নার্সদের সংখ্যা নেই। ২০২২ সালে সারা দেশে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল নিবন্ধিত এমবিবিএস চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার জন, ২০১৯ সালে বিডিএস চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৮৭৫ জন। ২০১৯ সালে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ হাজার ২০৮ জন। তবে করোনা মোকাবিলাকালে এ সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
২০১৯ সালে চিকিৎসক ও জনসাধারণের অনুপাত ছিল ১: ১৪৮৭, প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যায় ৬ দশমিক ৭৩ জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ছিলেন ১ দশমিক ৫৫ জন। একই সংখ্যক মানুষের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ছিলেন শূন্য দশমিক ৬০ জন, মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের) ছিলেন ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। একই জনসংখ্যা অনুপাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন রোগীর শয্যাসংখ্যা ছিল ৩ দশমিক ৩০টি, নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ছিল ৫ দশমিক ৫৩টি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্রীয় ঔষধ ভান্ডার। হাসপাতালগুলোতে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহে মাঝে মাঝে বিঘ্ন ঘটে। ওষুধের অপচয়ের অভিযোগও পাওয়া যায় কোনো কোনো হাসপাতাল থেকে।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য জনবলের অপ্রতুলতা, প্রযোজ্য স্থানে নির্দিষ্ট দক্ষ জনশক্তির অনুপস্থিতি, জনবলের প্রাপ্যতায় এলাকা বিবেচনায় বৈষম্য ইত্যাদি লেগেই আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টের অনুপাত হওয়া উচিত ১:৩:৫। অথচ বাংলাদেশে রয়েছে এর উল্টো চিত্র। সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে চিকিৎসক (যদিও জনসংখ্যা অনুপাতে তা অনেক পিছিয়ে), আর সবচেয়ে কম সংখ্যায় রয়েছে টেকনোলজিস্ট। অন্যদিকে ৬২ শতাংশ চিকিৎসক কাজ করছেন ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে (২০১৩ সালের হিসাব)। চিকিৎসক, দন্তচিকিৎসক, নার্সদের অধিকাংশ কাজ করছেন শহর-নগরে।
অনানুষ্ঠানিক খাতে এক বিরাটসংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আংশিক প্রশিক্ষিত অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, প্রশিক্ষণবিহীন অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, রয়েছেন আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এবং ধর্মীয় রোগীর সেবক। এরা স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূলধারার অংশ না হলেও দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য, বিশেষ করে দুর্গম ও দূরবর্তী অঞ্চলে এরা প্রধান রোগীসেবক।
বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত মিলিয়েই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় রোগীর সেবা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের দায়িত্ব পালন করে থাকে, এর মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজও রয়েছে। জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, গোদরোগ নির্মূল কর্মসূচি, ম্যালেরিয়া ও পরজীবী রোগনিয়ন্ত্রণ, কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি ইত্যাদি। এসবে সাফল্যও আছে। এ কর্মসূচিগুলোতে জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা করে থাকে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখাগুলো স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজগুলো করে থাকে।
বাংলাদেশের রোগীসেবা ব্যবস্থায় কাঠামোবদ্ধ কোনো রেফারাল ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য অসুখ নিয়ে যে কেউ সরাসরি বড় হাসপাতালে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে চলে যেতে পারেন।
রোগতাত্ত্বিক ও জনমিতিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগসমূহের দ্বিগুণ বোঝা বহন করছে। এর সঙ্গে রয়েছে নব উদ্ভূত ও পুনরায় উদ্ভূত রোগসমূহ। তৈরি পোশাক কারখানা ও কনটেইনার ডিপোতে দুর্ঘটনাগুলো শ্রমিক-কর্মচারীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে এনেছে। নতুন নতুন সমস্যা মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিকেও হালনাগাদ করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে। এ ক্ষেত্রে ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির অবদান রয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকারীরা মোট ওষুধ বিক্রির ৭৫ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে; সে সক্ষমতা আরও বিস্তৃত করে বিদেশে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে। তবে এই ওষুধের বড় অংশ উৎপাদন করে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। সরকারি খাতের বাইরে বিশৃঙ্খল ওষুধের বাজারে প্রায় ৬৪ হাজার অনুমোদিত ফার্মেসি এবং প্রায় ৭০ হাজার অ-অনুমোদিত ফার্মেসি ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই প্রায় সব ওষুধ বিক্রি করে থাকে। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে অতিরিক্ত ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়াটা সাধারণ ঘটনা, যা ওষুধের যুক্তিপূর্ণ ব্যবহারকে বাধার সৃষ্টি করে।
২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়িত করে রোগীদের অতিমাত্রায় অধিক ব্যক্তিগত খরচ অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থনৈতিক কর্মকৌশল (২০১২-৩২) প্রণয়ন করা হয়। সমাজের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণির জন্য বিমা দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম প্রস্তাব করা হয়েছে এ কর্মকৌশলে। ২০ বছর মেয়াদি এ কর্মকৌশল প্রণয়নের পরে ১০ বছর পার হয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। প্রথমে টাঙ্গাইলের ৩টি উপজেলায় এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন শুরু হয়। সম্প্রতি এটি বিস্তৃত হয়েছে টাঙ্গাইলের সব উপজেলায়। আগামী ১০ বছরে সারা দেশে এ সুরক্ষা কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হলে কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। শহর-নগরে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বিরাট চ্যালেঞ্জ।
চ্যালেঞ্জ যা-ই হোক না কেন, তাকে অতিক্রম করতেই হবে। দেশের সব নাগরিকের জন্য প্রাথমিক ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব হবে না। হলেও তা ধরে রাখা যাবে না। কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের দেখিয়েছে যে স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে না পারলে সব স্থবির হয়ে পড়বে। সেটা তো আমরা চাই না। তাই আমাদের এগোতেই হবে।
লেখক: উপদেষ্টা, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্থ ও জনবলের জোগান দেওয়া, সেটাও সরকারের দায়িত্ব।
কয়েকটি অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। অধিদপ্তরগুলোর মধ্যে রয়েছে: স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা, নার্সিং ও ধাত্রীসেবা এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মহাপরিচালক বা সমমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন আরও বেশ কিছু দপ্তর রয়েছে। রোগীর সেবা দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিশেষ বিষয়ভিত্তিক হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক। অপরদিকে নগরাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের।
১৯৭৬ সাল থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও এনজিও মালিকানার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবায় যুক্ত হয়। ব্যক্তিমালিকানাধীন আনুষ্ঠানিক খাতে পাশ্চাত্য ও ঐতিহ্যগত (ইউনানি ও আয়ুর্বেদীয়) উভয় ধরনের সেবা রয়েছে। আনুষ্ঠানিক এ খাতে রয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ল্যাবরেটরি, ঔষধালয়। অনানুষ্ঠানিক খাতে রয়েছে প্রশিক্ষণবিহীন রোগীর সেবাদানকারীরা। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে নিয়মকানুন মানানোর ব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল। আনুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত শহরাঞ্চলে আর অনানুষ্ঠানিক খাতের রোগীর সেবা প্রধানত গ্রামাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত।
ক্রমান্বয়ে এনজিওগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ‘তৃতীয় খাত’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং তাদের ভূমিকা বাড়ছে। ১৯৯৭ সালে স্বাস্থ্য খাতের মোট খরচের ৬ শতাংশ এনজিওগুলো করত, যা ২০০৭ সালে এসে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। এখন এটা আরও বেড়েছে। সরকারের সঙ্গে এনজিওগুলোর অংশীদারত্ব রয়েছে অর্থায়ন, পরিকল্পনা, সেবা প্রদান, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রগুলোতে। এগুলো স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতিতে কাজে লেগেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা অতি মাত্রায় কেন্দ্রীভূত। পরিকল্পনাগুলো করা হয় মন্ত্রণালয় পর্যায়ে। স্থানীয় পর্যায়ে তেমন কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির মধ্যে বিভক্ত। তারা আলাদাভাবে নিজ নিজ মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদনগুলো পাঠায়।
স্বাস্থ্যব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বেশ কতগুলো আইন ও অধ্যাদেশ রয়েছে, যার অনেকগুলো কয়েক দশকের পুরোনো। চিকিৎসক (দন্ত চিকিৎসকসহ) ও নার্সদের নিবন্ধনের জন্য আলাদা পরিষদ (কাউন্সিল) রয়েছে। কিন্তু তদন্ত ও শৃঙ্খলার ব্যাপারে তাদের কর্তৃত্ব দুর্বল।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের সর্বশেষ (২০১২) হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর একজন মানুষ ২৬ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার (১ ডলার=৮০ টাকা, ২০১২ সালে) স্বাস্থ্যের জন্য খরচ করে। তার নিজস্ব পকেট থেকে খরচ হয় ৬৪ শতাংশ, এটা এখন বেড়ে ৭০ শতাংশের বেশি হয়েছে। সরকার নাগরিকদের জন্য খরচ করছে ২৫ শতাংশের কম। প্রতিবছর বাজেটে সরকার যত টাকা বরাদ্দ করে, তার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ অব্যয়িত থেকে যায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের অযোগ্যতার কারণে। দুর্নীতির কারণে আরও একটি অংশ অপচয়ের শিকার হয়। সরকারি খরচের বাইরে সামান্য কিছু অংশ (শূন্য দশমিক ২ শতাংশ) বিমার মাধ্যমে সংরক্ষিত হয় আপৎকালে ব্যবহারের জন্য। এগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগে করা হচ্ছে। কিছু সামাজিক উদ্যোগে কম খরচে রোগীদের সেবার ব্যবস্থা আছে। কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন বিমা প্রতিষ্ঠান রোগীদের সেবার জন্য ব্যক্তি ও গোষ্ঠীবিমা চালু করেছে। যদিও জনসংখ্যার খুব সামান্য অংশই এর আওতাভুক্ত।
দেশের সংবিধান অনুযায়ী সব নাগরিকের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। যতটুকু রোগীর সেবার সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে, তা-ও অনেক ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত ও অসন্তোষজনক। এ ঘাটতির সুযোগে সচ্ছল শ্রেণির চাহিদা মেটাতে ১৯৮০-এর দশক থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা খাতের বিস্তার ঘটতে থাকে। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষ এ ধরনের মুনাফাভিত্তিক ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগীর সেবা কিনতে অসমর্থ। ফলে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
বাংলাদেশে সরকারি ব্যবস্থায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর বিস্তৃতি ব্যাপক। তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মতো স্থাপনা ও মাঠকর্মী রয়েছে। শহরাঞ্চলে বড় বড় সরকারি হাসপাতাল তো রয়েছেই। যদিও বিগত দশকজুড়ে হাসপাতাল ও রোগীর শয্যাসংখ্যার প্রভূত উন্নতি ঘটেছে। কিন্তু জনবলসহ ওষুধ, যন্ত্রপাতি ও সরবরাহের ঘাটতি প্রায় প্রতিটি স্থাপনাকে সমস্যায় ফেলেছে।
দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ৭৩৯টি হাসপাতাল রয়েছে, সরকারি স্থাপনা রয়েছে ২ হাজার ২৫৮টি, প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ২ হাজার ৩টি (কমিউনিটি ক্লিনিক বাদে), মাধ্যমিক ও তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে ২৫৫টি স্থাপনা। নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৫ হাজার ৩২১টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে ৯ হাজার ৫২৯টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ৫৪ হাজার ৬৬০টি, নিবন্ধিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে মোট শয্যাসংখ্যা ৯১ হাজার ৫৩৭টি (২০১৯ সালে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিন)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় কর্মরত মোট জনবল ৭৮ হাজার ৬১৯ জন, তবে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ২৫৪ জন। এ হিসাবে নার্সদের সংখ্যা নেই। ২০২২ সালে সারা দেশে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল নিবন্ধিত এমবিবিএস চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার জন, ২০১৯ সালে বিডিএস চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৮৭৫ জন। ২০১৯ সালে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ হাজার ২০৮ জন। তবে করোনা মোকাবিলাকালে এ সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
২০১৯ সালে চিকিৎসক ও জনসাধারণের অনুপাত ছিল ১: ১৪৮৭, প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যায় ৬ দশমিক ৭৩ জন চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় ছিলেন ১ দশমিক ৫৫ জন। একই সংখ্যক মানুষের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ছিলেন শূন্য দশমিক ৬০ জন, মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের) ছিলেন ২ দশমিক ২৬ শতাংশ। একই জনসংখ্যা অনুপাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন রোগীর শয্যাসংখ্যা ছিল ৩ দশমিক ৩০টি, নিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ছিল ৫ দশমিক ৫৩টি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্রীয় ঔষধ ভান্ডার। হাসপাতালগুলোতে, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহে মাঝে মাঝে বিঘ্ন ঘটে। ওষুধের অপচয়ের অভিযোগও পাওয়া যায় কোনো কোনো হাসপাতাল থেকে।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য জনবলের অপ্রতুলতা, প্রযোজ্য স্থানে নির্দিষ্ট দক্ষ জনশক্তির অনুপস্থিতি, জনবলের প্রাপ্যতায় এলাকা বিবেচনায় বৈষম্য ইত্যাদি লেগেই আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টের অনুপাত হওয়া উচিত ১:৩:৫। অথচ বাংলাদেশে রয়েছে এর উল্টো চিত্র। সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে চিকিৎসক (যদিও জনসংখ্যা অনুপাতে তা অনেক পিছিয়ে), আর সবচেয়ে কম সংখ্যায় রয়েছে টেকনোলজিস্ট। অন্যদিকে ৬২ শতাংশ চিকিৎসক কাজ করছেন ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালগুলোতে (২০১৩ সালের হিসাব)। চিকিৎসক, দন্তচিকিৎসক, নার্সদের অধিকাংশ কাজ করছেন শহর-নগরে।
অনানুষ্ঠানিক খাতে এক বিরাটসংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আংশিক প্রশিক্ষিত অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, প্রশিক্ষণবিহীন অ্যালোপ্যাথিক রোগী সেবাদানকারী, রয়েছেন আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এবং ধর্মীয় রোগীর সেবক। এরা স্বাস্থ্যব্যবস্থার মূলধারার অংশ না হলেও দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য, বিশেষ করে দুর্গম ও দূরবর্তী অঞ্চলে এরা প্রধান রোগীসেবক।
বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত মিলিয়েই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় রোগীর সেবা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের দায়িত্ব পালন করে থাকে, এর মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজও রয়েছে। জনস্বাস্থ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, গোদরোগ নির্মূল কর্মসূচি, ম্যালেরিয়া ও পরজীবী রোগনিয়ন্ত্রণ, কালাজ্বর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি ইত্যাদি। এসবে সাফল্যও আছে। এ কর্মসূচিগুলোতে জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা করে থাকে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখাগুলো স্বাস্থ্য উন্নয়নের কাজগুলো করে থাকে।
বাংলাদেশের রোগীসেবা ব্যবস্থায় কাঠামোবদ্ধ কোনো রেফারাল ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য অসুখ নিয়ে যে কেউ সরাসরি বড় হাসপাতালে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে চলে যেতে পারেন।
রোগতাত্ত্বিক ও জনমিতিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগসমূহের দ্বিগুণ বোঝা বহন করছে। এর সঙ্গে রয়েছে নব উদ্ভূত ও পুনরায় উদ্ভূত রোগসমূহ। তৈরি পোশাক কারখানা ও কনটেইনার ডিপোতে দুর্ঘটনাগুলো শ্রমিক-কর্মচারীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে এনেছে। নতুন নতুন সমস্যা মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিকেও হালনাগাদ করা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেছে। এ ক্ষেত্রে ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির অবদান রয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকারীরা মোট ওষুধ বিক্রির ৭৫ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে; সে সক্ষমতা আরও বিস্তৃত করে বিদেশে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে। তবে এই ওষুধের বড় অংশ উৎপাদন করে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)। সরকারি খাতের বাইরে বিশৃঙ্খল ওষুধের বাজারে প্রায় ৬৪ হাজার অনুমোদিত ফার্মেসি এবং প্রায় ৭০ হাজার অ-অনুমোদিত ফার্মেসি ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই প্রায় সব ওষুধ বিক্রি করে থাকে। ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে অতিরিক্ত ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়াটা সাধারণ ঘটনা, যা ওষুধের যুক্তিপূর্ণ ব্যবহারকে বাধার সৃষ্টি করে।
২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়িত করে রোগীদের অতিমাত্রায় অধিক ব্যক্তিগত খরচ অন্তত অর্ধেকে নামিয়ে আনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা অর্থনৈতিক কর্মকৌশল (২০১২-৩২) প্রণয়ন করা হয়। সমাজের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক শ্রেণির জন্য বিমা দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম প্রস্তাব করা হয়েছে এ কর্মকৌশলে। ২০ বছর মেয়াদি এ কর্মকৌশল প্রণয়নের পরে ১০ বছর পার হয়েছে। কিন্তু অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। প্রথমে টাঙ্গাইলের ৩টি উপজেলায় এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন শুরু হয়। সম্প্রতি এটি বিস্তৃত হয়েছে টাঙ্গাইলের সব উপজেলায়। আগামী ১০ বছরে সারা দেশে এ সুরক্ষা কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হলে কাজের গতি আরও বাড়াতে হবে। শহর-নগরে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বিরাট চ্যালেঞ্জ।
চ্যালেঞ্জ যা-ই হোক না কেন, তাকে অতিক্রম করতেই হবে। দেশের সব নাগরিকের জন্য প্রাথমিক ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব হবে না। হলেও তা ধরে রাখা যাবে না। কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের দেখিয়েছে যে স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে না পারলে সব স্থবির হয়ে পড়বে। সেটা তো আমরা চাই না। তাই আমাদের এগোতেই হবে।
লেখক: উপদেষ্টা, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্
২৮ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্
২৮ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্
২৮ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা হচ্ছে মিশ্র পদ্ধতির। মোটাদাগে চার ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে: সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও উন্নয়ন-সহযোগী গোষ্ঠী। সরকার বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শুধু নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্যই দায়ী নন, সর্বাঙ্গীণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা, যার মধ্যে রয়েছে অর্
২৮ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫