সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্বভারতীয় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে পারবে, এমন ভরসা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। বামপন্থীরা মোটামুটি ছত্রভঙ্গ দশাতে রয়েছেন। বড় রকমের পরিবর্তন প্রত্যাশা করা মোটেই ন্যায়সংগত নয়।
নির্বাচন হয়েছে বেলারুশেও। ছাব্বিশ বছর ধরে যিনি ক্ষমতায় রয়েছেন, আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, তিনি এবারও জিতেছেন বলে দাবি করছেন। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচন হয়নি, একটা প্রহসন হয়েছে মাত্র, ব্যাপক প্রতারণা ও কারচুপি ঘটেছে। মুখের কথা নয় শুধু, প্রবল বিক্ষোভ হয়েছে। বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী, যিনি দাবি করেছেন তিনিই জিতেছেন, তিনি দেশের ভেতর থেকে আন্দোলনের যে নেতৃত্ব দেবেন তা পারেননি, গোপনে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আন্দোলনের পরও কিন্তু লুকাশেঙ্কো অনড় রয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, সেনাবাহিনী তাঁর সঙ্গে আছে।
থাইল্যান্ডে যে নির্বাচন হয় না তা নয়, মাঝে মাঝেই হয়ে থাকে; কিন্তু দেখা যায় যারাই জিতুক, ঘুরেফিরে সেনাবাহিনীর কর্তারাই ক্ষমতায় আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু ঘটেছে ভিন্ন রকমের ঘটনাও। ছাত্ররা নেমে পড়েছিল রাস্তায়। ছাত্ররা অতীতেও একবার প্রবলভাবে নেমেছিল। সেই বিক্ষোভ দমন করেই সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসে।
থাইল্যান্ডে যে বিক্ষোভ কার্যকর হচ্ছে না, সেটা অন্যত্রও সত্য, বিশ্বব্যাপী এখন যে লড়াইটা দেখা দিয়েছে, সেটা আর বুর্জোয়াদের গৃহবিবাদ মাত্র নয়; বুর্জোয়া রাজত্বের চরম প্রকাশের সময়ে যা অনিবার্য, তারই আভাস ফুটে উঠছে সর্বত্র। সেটা গৃহযুদ্ধ।
মিয়ানমারও গৃহযুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে। সেখানেও নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি আগের চেয়েও ভালো ফল করেছিল এবং তাতেই ঘটেছে তাদের এবং ভোটদাতা জনগণের বিপদ। আসল ক্ষমতা সেখানে সেনাবাহিনীর হাতে, ক্ষমতা তারাই দখল করে রেখেছে এবং জবাবদিহির দায়বিহীন ক্ষমতায় থাকলে যা যা করা সম্ভব, সেসবই তারা করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি—সবকিছুতেই অবাধ লুণ্ঠনের রাজত্ব বসিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ওপর গণনির্যাতন, তাদের গৃহে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যাসহ যত রকমের জুলুম কল্পনা করা সম্ভব, সব চালিয়েও শান্ত থাকেনি, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে অস্ত্রের মুখে দেশছাড়া করেছে, দুর্ভাগা মানুষদের জায়গা-জমি ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট যা ছিল সব দখল করে নিয়েছে। একদা বিশ্ববরেণ্য নেত্রী সু চি; তিনি প্রতিবাদ করবেন কি, উল্টো সহযোগিতাই করেছেন। অথচ ওই সেনাবাহিনী তাঁকে বছরের পর বছর আটক করে রেখেছিল, পারলে মেরেই ফেলত। আপসের ফর্মুলায় ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেবেন এবং নির্বাচনের পথে সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবেন, এই ছিল তাঁর আশা। তা সেনাবাহিনী সেটা হতে দেবে কেন? তাদের হাতে বন্দুক আছে, সেটা ব্যবহার করে পুনরায় তারা ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে। সু চিকে আবারও আটক করা হয়েছে। সু চির দল কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারেনি। তারা না পারুক, সাধারণ মানুষ ঠিকই পেরেছে। ওই একই ঘটনা। বুর্জোয়াদের গৃহবিবাদ মীমাংসার কাল শেষ হয়ে এসেছে। সামরিক দুঃশাসনের নিদারুণ শিকার যে সাধারণ মানুষ, লড়াইটা তাদেরই করতে হবে। তারা ভোট দিয়েছে সামরিক বাহিনীর বিপক্ষে; দেখেছে তাতে কাজ হলো না, ভোটে কুলাল না, এবার তাই নেমে এসেছে রাজপথে। কেবল রাজধানীতে নয়, দেশের সব শহরে। এসেছে ছাত্ররা। তারাই অধিক সংগঠিত। মিয়ানমারে ছাত্রবিদ্রোহ আগেও একবার হয়েছিল; সেবার সেনাবাহিনী ভয়াবহ রকমের রক্তপাত ঘটিয়ে তাদের দমন করেছিল। কিন্তু এবার আর সুবিধা করতে পারছে না। কারণ, ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পেশাজীবীরাও। সে দেশের মানুষ আর সেনাশাসন সহ্য করতে সম্মত নয়। এমনটা যে ঘটতে পারে, তা ছিল জেনারেলদের একেবারেই ধারণার বাইরে। কিন্তু অভ্যুত্থান না ঘটিয়ে তাদের পক্ষে কোনো উপায়ও ছিল না; নির্বাচনে বিজয়ী বুর্জোয়ারা তাদের ক্ষমতা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন করছিল। জেনারেলরা তাই একেবারে মরণকামড়ই বসিয়েছে। কিন্তু এটা তারা টের পাচ্ছে যে তাদের প্রতিপক্ষ এখন আর ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বুর্জোয়া রাজনৈতিক দল নয়, প্রতিপক্ষ মিয়ানমারের জনসাধারণ। অস্ত্র হাতে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে বিপদের শঙ্কা আছে। কে জানে শেষ পর্যন্ত পুলিশ হয়তো হুকুম শুনবে না, সেনাসদস্যরাও হয়তো আপনজনদের ওপর ট্যাংক-কামান-বন্দুক ইত্যাদি নিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে রাজি হবে না।
রোহিঙ্গা দমনের সময় যে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা লাখ লাখ অসহায় মানুষের মরণকান্নায় সাড়া তো দেয়ইনি, উল্টো সেনাবাহিনী ঠিক কাজ করছে বলে রাস্তায় বের হয়ে জেনারেলদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছিল, তারাও দেখা গেল এবার জেনারেলদের প্রতি সমর্থন জানাতে নারাজ। সু চি এবং তাঁর বুর্জোয়া সাথিরা না বুঝুক, বিক্ষোভরতরা নিশ্চয়ই টের পাচ্ছে যে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা ও উচ্ছেদ-কাণ্ড সমাপ্ত করে তারা এখন কতটা যে হাত পাকিয়েছে, তারই একটা পরীক্ষা নিজের দেশের মানুষদের ওপর চালানোর পাঁয়তারায় আছে। রাজপথে সেনাবাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ হয়তো নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বেদনাটাও এখন অনুমান করতে পারছে। অভিজ্ঞতার চেয়ে বড় শিক্ষক তো আর হয় না। ছবিতে তো দেখাও গেল হাতে-ধরা প্ল্যাকার্ডগুলোর একটিতে লেখা রয়েছে, ‘রোহিঙ্গা সংকটের জন্য আমরা সত্যি দুঃখিত’।
রোহিঙ্গারা যে অপরাধী নয়, তারা যে মিয়ানমারের নিপীড়িত মানুষদেরই একাংশ এবং দুর্বল বলেই যে জেনারেলদের লেলিয়ে দেওয়া সেনাদের হাতে তারা মার খেয়েছে, এসব সত্য রণসজ্জায় সজ্জিত হন্তারকদের একেবারে সামনাসামনি দেখার পরে সাধারণ মানুষের স্মৃতিতে ভেসে ওঠাটা অসম্ভব নয়। উগ্র জাতীয়তাবাদীদের মৌতাত ভেঙে মানবিকতার এই নাড়াচাড়া দেওয়াটা দৃশ্য হিসেবে সুখকর, ঘটনা হিসেবে আশাপ্রদ। নব্য পুঁজিবাদী চীনের এবং পাকাপোক্ত পুঁজিবাদী রাশিয়ার যে কতটা অধঃপতন ঘটে গেছে, সেটাও সামরিক জান্তার প্রতি ওই দুই দেশের শাসকদের নীরব সমর্থন দেখে মিয়ানমারবাসীর বিলক্ষণ টের পাওয়ার কথা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, কেজেবির সাবেক কর্মচারী ভ্লাদিমির পুতিনও বেশ ‘গণতন্ত্রমনা’ দেখা যাচ্ছে। তিনি নির্বাচন দিয়ে থাকেন; তবে নির্বাচনব্যবস্থাটাকে এতটাই নিখুঁত করে ফেলেছেন যে তাঁর আমৃত্যু নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট থাকতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কমিউনিস্টদের উপস্থিতি যাতে শক্তিশালী না হয় তার ব্যবস্থা অবশ্য আগেই করে রাখা হয়েছে। বুর্জোয়ারা যে দল গঠন করবে এমন সম্ভাবনাও তাঁর গোয়েন্দা বাহিনী প্রায় নির্মূল করে ফেলেছে। তবু প্রতিবাদ কিন্তু হচ্ছে। এক ব্যক্তি, তাঁর কোনো গোছানো দল নেই, সাহস করে তিনি যেই বলেছেন যে আগামী নির্বাচনে তিনি পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন, অমনি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দারা তৎপর হয়ে উঠেছে; বলা তো যায় না লোকেরা না আবার ওই প্রায়-অচেনা ব্যক্তিটির পেছনেই দাঁড়িয়ে যায় কি না। গোয়েন্দারা কোনো ঝুঁকি নেয়নি, লোকটিকে তারা ইহজগৎ থেকেই সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। খাবারে নয়, তাঁর অন্তর্বাসের ভেতরে বিষ মাখিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। লোকটির টেকার কথা ছিল না। হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে ছিল; জার্মান দূতাবাসের লোকেরা বললেন, চিকিৎসার জন্য তাঁকে আমরা আমাদের দেশের হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাই। রুশ দেশের বড় বড় চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত স্বরে বলে উঠলেন, সর্বনাশ! এই রোগীকে তো তাঁর রোগশয্যার বাইরে নেওয়া যাবে না, নাড়াচাড়া করলেই তাঁর প্রাণবায়ু পলাতক হবে। জার্মানরা তবু পীড়াপীড়ি করতে থাকলেন, সংজ্ঞাহীন মৃতপ্রায় ব্যক্তিটির আপনজনেরাও বললেন, আমরা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। লোকটি জার্মানির হাসপাতালে গেলেন এবং কী কঠিন তাঁর প্রাণশক্তি ও অবিচল দক্ষতা জার্মান চিকিৎসকদের যে চিকিৎসায় তিনি সেরে উঠলেন। তবে ফেরত আসার সঙ্গে সঙ্গে, বিমানবন্দরেই তাঁকে আটক করা হলো। যথারীতি মামলা দেওয়া হলো এবং যথাপ্রত্যাশিত স্বাধীন আদালতের সুবিবেচিত রায়ে তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে গেলেন। অনেক লোক প্রতিবাদ করল। শত শত নয়, হাজারে হাজার। এক দিন নয়, অনেক দিন ধরে। কিন্তু তাতে কী হবে? অদম্য ব্যক্তিটি জেলেই আছেন, কারণ, তিনি তাঁর এই ঘোষণায় অনড় রয়েছেন যে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়বেনই। কাজেই তাঁর জন্য আরও অনেক দুর্ভোগ যে অপেক্ষা করছে, এটা নিশ্চিতরূপেই বলা যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এটাই দাঁড়াবে যে পুতিনই জিতবেন। তবে এটা লোকে বুঝবে; যেমনটা অন্য দেশের মানুষেরাও বুঝতে পারছে যে স্বৈরশাসকদের হটাতে গেলে নির্বাচনে আর কুলাবে না, অনিবার্য হচ্ছে অভ্যুত্থান। যার অপর নাম গৃহযুদ্ধ। সেই যুদ্ধেও কিন্তু কাজ হবে না, যুদ্ধটা যদি কেবল ব্যক্তিকে সরানোর জন্যই হয়। প্রয়োজন হবে সামাজিক বিপ্লবের, যে বিপ্লব লেনিন ঘটিয়েছিলেন রাশিয়ায়, মাও সে-তুং চীনে। কিন্তু সেই বিপ্লবের অর্জনও স্থায়ী হবে না যদি না বিপ্লব বিশ্বময় ঘটে। এর বাইরে যা, সেসব কেবলি সংঘর্ষ, অরাজকতা ও মেরুকরণ বৃদ্ধি।
রাশিয়া যে পুরোপুরি পুঁজিবাদী হয়ে গেছে তার প্রমাণ ভেতরে-বাইরে সুন্দরভাবে দৃশ্যমান। ভেতরে চলছে স্বৈরাচার, বিরোধীদের নিষ্পেষণ, দুর্নীতি, পরিবেশদূষণ। বাইরে বিক্রি করছে অস্ত্র; মিয়ানমারের সেনা-শাসকেরা অস্ত্র পাচ্ছে রাশিয়ার কাছ থেকে। শেষমেশ ঘটল ইউক্রেনের ওপর হামলে পড়া। কারণ, ইউক্রেন বশ মানছিল না; পুঁজিবাদে দীক্ষিত হয়ে ইউক্রেনও চাইছিল পুঁজিবাদী দেশগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে ‘উন্নতি’ করবে। যোগ দেবে ন্যাটোতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে এবং বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে আমেরিকার সঙ্গে। মহামতি পুতিনের তাতে ভীষণ রাগ। ইউক্রেন একসময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, ইউক্রেনকে রাশিয়া এখন অনুগত প্রতিবেশী হিসেবে দেখতে চায়, শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলানো তার জন্য বড় অপরাধ; তাতে ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা’ বিঘ্নিত হওয়ারও আশঙ্কা।
লেখক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্বভারতীয় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিতে পারবে, এমন ভরসা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। বামপন্থীরা মোটামুটি ছত্রভঙ্গ দশাতে রয়েছেন। বড় রকমের পরিবর্তন প্রত্যাশা করা মোটেই ন্যায়সংগত নয়।
নির্বাচন হয়েছে বেলারুশেও। ছাব্বিশ বছর ধরে যিনি ক্ষমতায় রয়েছেন, আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, তিনি এবারও জিতেছেন বলে দাবি করছেন। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচন হয়নি, একটা প্রহসন হয়েছে মাত্র, ব্যাপক প্রতারণা ও কারচুপি ঘটেছে। মুখের কথা নয় শুধু, প্রবল বিক্ষোভ হয়েছে। বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী, যিনি দাবি করেছেন তিনিই জিতেছেন, তিনি দেশের ভেতর থেকে আন্দোলনের যে নেতৃত্ব দেবেন তা পারেননি, গোপনে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আন্দোলনের পরও কিন্তু লুকাশেঙ্কো অনড় রয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, সেনাবাহিনী তাঁর সঙ্গে আছে।
থাইল্যান্ডে যে নির্বাচন হয় না তা নয়, মাঝে মাঝেই হয়ে থাকে; কিন্তু দেখা যায় যারাই জিতুক, ঘুরেফিরে সেনাবাহিনীর কর্তারাই ক্ষমতায় আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু ঘটেছে ভিন্ন রকমের ঘটনাও। ছাত্ররা নেমে পড়েছিল রাস্তায়। ছাত্ররা অতীতেও একবার প্রবলভাবে নেমেছিল। সেই বিক্ষোভ দমন করেই সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসে।
থাইল্যান্ডে যে বিক্ষোভ কার্যকর হচ্ছে না, সেটা অন্যত্রও সত্য, বিশ্বব্যাপী এখন যে লড়াইটা দেখা দিয়েছে, সেটা আর বুর্জোয়াদের গৃহবিবাদ মাত্র নয়; বুর্জোয়া রাজত্বের চরম প্রকাশের সময়ে যা অনিবার্য, তারই আভাস ফুটে উঠছে সর্বত্র। সেটা গৃহযুদ্ধ।
মিয়ানমারও গৃহযুদ্ধের দিকেই এগোচ্ছে। সেখানেও নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি আগের চেয়েও ভালো ফল করেছিল এবং তাতেই ঘটেছে তাদের এবং ভোটদাতা জনগণের বিপদ। আসল ক্ষমতা সেখানে সেনাবাহিনীর হাতে, ক্ষমতা তারাই দখল করে রেখেছে এবং জবাবদিহির দায়বিহীন ক্ষমতায় থাকলে যা যা করা সম্ভব, সেসবই তারা করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি—সবকিছুতেই অবাধ লুণ্ঠনের রাজত্ব বসিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ওপর গণনির্যাতন, তাদের গৃহে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যাসহ যত রকমের জুলুম কল্পনা করা সম্ভব, সব চালিয়েও শান্ত থাকেনি, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে অস্ত্রের মুখে দেশছাড়া করেছে, দুর্ভাগা মানুষদের জায়গা-জমি ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট যা ছিল সব দখল করে নিয়েছে। একদা বিশ্ববরেণ্য নেত্রী সু চি; তিনি প্রতিবাদ করবেন কি, উল্টো সহযোগিতাই করেছেন। অথচ ওই সেনাবাহিনী তাঁকে বছরের পর বছর আটক করে রেখেছিল, পারলে মেরেই ফেলত। আপসের ফর্মুলায় ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেবেন এবং নির্বাচনের পথে সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবেন, এই ছিল তাঁর আশা। তা সেনাবাহিনী সেটা হতে দেবে কেন? তাদের হাতে বন্দুক আছে, সেটা ব্যবহার করে পুনরায় তারা ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে। সু চিকে আবারও আটক করা হয়েছে। সু চির দল কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারেনি। তারা না পারুক, সাধারণ মানুষ ঠিকই পেরেছে। ওই একই ঘটনা। বুর্জোয়াদের গৃহবিবাদ মীমাংসার কাল শেষ হয়ে এসেছে। সামরিক দুঃশাসনের নিদারুণ শিকার যে সাধারণ মানুষ, লড়াইটা তাদেরই করতে হবে। তারা ভোট দিয়েছে সামরিক বাহিনীর বিপক্ষে; দেখেছে তাতে কাজ হলো না, ভোটে কুলাল না, এবার তাই নেমে এসেছে রাজপথে। কেবল রাজধানীতে নয়, দেশের সব শহরে। এসেছে ছাত্ররা। তারাই অধিক সংগঠিত। মিয়ানমারে ছাত্রবিদ্রোহ আগেও একবার হয়েছিল; সেবার সেনাবাহিনী ভয়াবহ রকমের রক্তপাত ঘটিয়ে তাদের দমন করেছিল। কিন্তু এবার আর সুবিধা করতে পারছে না। কারণ, ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পেশাজীবীরাও। সে দেশের মানুষ আর সেনাশাসন সহ্য করতে সম্মত নয়। এমনটা যে ঘটতে পারে, তা ছিল জেনারেলদের একেবারেই ধারণার বাইরে। কিন্তু অভ্যুত্থান না ঘটিয়ে তাদের পক্ষে কোনো উপায়ও ছিল না; নির্বাচনে বিজয়ী বুর্জোয়ারা তাদের ক্ষমতা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার আয়োজন করছিল। জেনারেলরা তাই একেবারে মরণকামড়ই বসিয়েছে। কিন্তু এটা তারা টের পাচ্ছে যে তাদের প্রতিপক্ষ এখন আর ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বুর্জোয়া রাজনৈতিক দল নয়, প্রতিপক্ষ মিয়ানমারের জনসাধারণ। অস্ত্র হাতে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে বিপদের শঙ্কা আছে। কে জানে শেষ পর্যন্ত পুলিশ হয়তো হুকুম শুনবে না, সেনাসদস্যরাও হয়তো আপনজনদের ওপর ট্যাংক-কামান-বন্দুক ইত্যাদি নিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে রাজি হবে না।
রোহিঙ্গা দমনের সময় যে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা লাখ লাখ অসহায় মানুষের মরণকান্নায় সাড়া তো দেয়ইনি, উল্টো সেনাবাহিনী ঠিক কাজ করছে বলে রাস্তায় বের হয়ে জেনারেলদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছিল, তারাও দেখা গেল এবার জেনারেলদের প্রতি সমর্থন জানাতে নারাজ। সু চি এবং তাঁর বুর্জোয়া সাথিরা না বুঝুক, বিক্ষোভরতরা নিশ্চয়ই টের পাচ্ছে যে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা ও উচ্ছেদ-কাণ্ড সমাপ্ত করে তারা এখন কতটা যে হাত পাকিয়েছে, তারই একটা পরীক্ষা নিজের দেশের মানুষদের ওপর চালানোর পাঁয়তারায় আছে। রাজপথে সেনাবাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ হয়তো নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বেদনাটাও এখন অনুমান করতে পারছে। অভিজ্ঞতার চেয়ে বড় শিক্ষক তো আর হয় না। ছবিতে তো দেখাও গেল হাতে-ধরা প্ল্যাকার্ডগুলোর একটিতে লেখা রয়েছে, ‘রোহিঙ্গা সংকটের জন্য আমরা সত্যি দুঃখিত’।
রোহিঙ্গারা যে অপরাধী নয়, তারা যে মিয়ানমারের নিপীড়িত মানুষদেরই একাংশ এবং দুর্বল বলেই যে জেনারেলদের লেলিয়ে দেওয়া সেনাদের হাতে তারা মার খেয়েছে, এসব সত্য রণসজ্জায় সজ্জিত হন্তারকদের একেবারে সামনাসামনি দেখার পরে সাধারণ মানুষের স্মৃতিতে ভেসে ওঠাটা অসম্ভব নয়। উগ্র জাতীয়তাবাদীদের মৌতাত ভেঙে মানবিকতার এই নাড়াচাড়া দেওয়াটা দৃশ্য হিসেবে সুখকর, ঘটনা হিসেবে আশাপ্রদ। নব্য পুঁজিবাদী চীনের এবং পাকাপোক্ত পুঁজিবাদী রাশিয়ার যে কতটা অধঃপতন ঘটে গেছে, সেটাও সামরিক জান্তার প্রতি ওই দুই দেশের শাসকদের নীরব সমর্থন দেখে মিয়ানমারবাসীর বিলক্ষণ টের পাওয়ার কথা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, কেজেবির সাবেক কর্মচারী ভ্লাদিমির পুতিনও বেশ ‘গণতন্ত্রমনা’ দেখা যাচ্ছে। তিনি নির্বাচন দিয়ে থাকেন; তবে নির্বাচনব্যবস্থাটাকে এতটাই নিখুঁত করে ফেলেছেন যে তাঁর আমৃত্যু নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট থাকতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কমিউনিস্টদের উপস্থিতি যাতে শক্তিশালী না হয় তার ব্যবস্থা অবশ্য আগেই করে রাখা হয়েছে। বুর্জোয়ারা যে দল গঠন করবে এমন সম্ভাবনাও তাঁর গোয়েন্দা বাহিনী প্রায় নির্মূল করে ফেলেছে। তবু প্রতিবাদ কিন্তু হচ্ছে। এক ব্যক্তি, তাঁর কোনো গোছানো দল নেই, সাহস করে তিনি যেই বলেছেন যে আগামী নির্বাচনে তিনি পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন, অমনি রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দারা তৎপর হয়ে উঠেছে; বলা তো যায় না লোকেরা না আবার ওই প্রায়-অচেনা ব্যক্তিটির পেছনেই দাঁড়িয়ে যায় কি না। গোয়েন্দারা কোনো ঝুঁকি নেয়নি, লোকটিকে তারা ইহজগৎ থেকেই সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। খাবারে নয়, তাঁর অন্তর্বাসের ভেতরে বিষ মাখিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। লোকটির টেকার কথা ছিল না। হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে ছিল; জার্মান দূতাবাসের লোকেরা বললেন, চিকিৎসার জন্য তাঁকে আমরা আমাদের দেশের হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাই। রুশ দেশের বড় বড় চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত স্বরে বলে উঠলেন, সর্বনাশ! এই রোগীকে তো তাঁর রোগশয্যার বাইরে নেওয়া যাবে না, নাড়াচাড়া করলেই তাঁর প্রাণবায়ু পলাতক হবে। জার্মানরা তবু পীড়াপীড়ি করতে থাকলেন, সংজ্ঞাহীন মৃতপ্রায় ব্যক্তিটির আপনজনেরাও বললেন, আমরা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। লোকটি জার্মানির হাসপাতালে গেলেন এবং কী কঠিন তাঁর প্রাণশক্তি ও অবিচল দক্ষতা জার্মান চিকিৎসকদের যে চিকিৎসায় তিনি সেরে উঠলেন। তবে ফেরত আসার সঙ্গে সঙ্গে, বিমানবন্দরেই তাঁকে আটক করা হলো। যথারীতি মামলা দেওয়া হলো এবং যথাপ্রত্যাশিত স্বাধীন আদালতের সুবিবেচিত রায়ে তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে গেলেন। অনেক লোক প্রতিবাদ করল। শত শত নয়, হাজারে হাজার। এক দিন নয়, অনেক দিন ধরে। কিন্তু তাতে কী হবে? অদম্য ব্যক্তিটি জেলেই আছেন, কারণ, তিনি তাঁর এই ঘোষণায় অনড় রয়েছেন যে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়বেনই। কাজেই তাঁর জন্য আরও অনেক দুর্ভোগ যে অপেক্ষা করছে, এটা নিশ্চিতরূপেই বলা যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এটাই দাঁড়াবে যে পুতিনই জিতবেন। তবে এটা লোকে বুঝবে; যেমনটা অন্য দেশের মানুষেরাও বুঝতে পারছে যে স্বৈরশাসকদের হটাতে গেলে নির্বাচনে আর কুলাবে না, অনিবার্য হচ্ছে অভ্যুত্থান। যার অপর নাম গৃহযুদ্ধ। সেই যুদ্ধেও কিন্তু কাজ হবে না, যুদ্ধটা যদি কেবল ব্যক্তিকে সরানোর জন্যই হয়। প্রয়োজন হবে সামাজিক বিপ্লবের, যে বিপ্লব লেনিন ঘটিয়েছিলেন রাশিয়ায়, মাও সে-তুং চীনে। কিন্তু সেই বিপ্লবের অর্জনও স্থায়ী হবে না যদি না বিপ্লব বিশ্বময় ঘটে। এর বাইরে যা, সেসব কেবলি সংঘর্ষ, অরাজকতা ও মেরুকরণ বৃদ্ধি।
রাশিয়া যে পুরোপুরি পুঁজিবাদী হয়ে গেছে তার প্রমাণ ভেতরে-বাইরে সুন্দরভাবে দৃশ্যমান। ভেতরে চলছে স্বৈরাচার, বিরোধীদের নিষ্পেষণ, দুর্নীতি, পরিবেশদূষণ। বাইরে বিক্রি করছে অস্ত্র; মিয়ানমারের সেনা-শাসকেরা অস্ত্র পাচ্ছে রাশিয়ার কাছ থেকে। শেষমেশ ঘটল ইউক্রেনের ওপর হামলে পড়া। কারণ, ইউক্রেন বশ মানছিল না; পুঁজিবাদে দীক্ষিত হয়ে ইউক্রেনও চাইছিল পুঁজিবাদী দেশগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে ‘উন্নতি’ করবে। যোগ দেবে ন্যাটোতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে এবং বন্ধুত্ব গড়ে তুলবে আমেরিকার সঙ্গে। মহামতি পুতিনের তাতে ভীষণ রাগ। ইউক্রেন একসময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল, ইউক্রেনকে রাশিয়া এখন অনুগত প্রতিবেশী হিসেবে দেখতে চায়, শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলানো তার জন্য বড় অপরাধ; তাতে ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা’ বিঘ্নিত হওয়ারও আশঙ্কা।
লেখক: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্ব
১৫ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্ব
১৫ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্ব
১৫ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গণতন্ত্র চাই, কিন্তু আসবে কি? আমাদের নিজেদের কথা থাক, ওই প্রসঙ্গ ওঠাতে গেলে গভীর দুঃখ উথলে ওঠে, অন্য দেশের কথাটাই ভাবতে হয়। ভারতে নির্বাচনে যে গেরুয়াধারী রামভক্তরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদের ভাবসাব কিন্তু মোটেই গণতন্ত্রীদের মতো নয়। সেখানে আবারও নির্বাচন হবে, তাতে বুর্জোয়া দলগুলো যে রামভক্তদের হটিয়ে সর্ব
১৫ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫