মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিয়ত কথা হয়। এ বিষয়ে নীতিপ্রণেতারা বিভিন্ন বক্তব্যে তাঁদের আন্তরিকতার কথা জানান। কিন্তু এত সব আলোচনার পরও নারীর ক্ষমতায়নের পথে বাধাগুলো রয়ে গেছে। করোনা মহামারির সময়ে এই প্রতিবন্ধকতার মাত্রা বেড়েছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, করোনাকালে দেশে বাল্যবিবাহ, পারিবারিক নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এ ছাড়া এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, যার মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যেও অনেক নারী শত বাধা টপকে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে একটা অগ্রগতি হলেও নারী উদ্যোক্তাদের এমনকি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে যৌন হয়রানি উল্লেখযোগ্য। সরকারের নানা সংস্থা নারীর জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করলেও এগুলোর সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ঘর, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সব জায়গায় নারীকে তুলনামূলক বেশি বাধার মুখোমুখি হতে হয়। এই পরিস্থিতি বদলে সত্যিকারের নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বাজেটে নারীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীরা। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত, তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
মালেকা বানু
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
বাজেট যাই হোক না কেন, সেখানে নারীর অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে। করোনাকালে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাজেটে এর প্রতিফলন থাকতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার আছে। কিন্তু এসব সেন্টারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। এসব সেন্টারে নারীরা আরও বেশি হয়রানির শিকার হন। এ ক্ষেত্রে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি এসব সেন্টার কার্যকর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। থানায়-থানায় নারী পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। জেন্ডার সংবেদনশীলতার বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নারীদের জন্য যে এসএমই ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে, তা সবাই পান না। নারীরা যেন সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন, সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। নারীরা যেন কম টাকায় ব্যবসা করতে পারেন, সে বিষয়ে বাজেটে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া বাড়াতে হবে নারী উদ্যোক্তার জন্য বরাদ্দ। আবার কৃষিক্ষেত্রে কিষানিরা যেন কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি পান, সে বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। সরকার থেকে কিষানিদের যে অধিকার প্রাপ্য, তাঁরা তা পান না। কৃষিক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া নারীদের চিকিৎসাসেবার জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নারীর যাতায়াত নিরাপদ করার পাশাপাশি ভোগান্তি কমাতে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নারীদের উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বাজেটে এ বিষয়গুলোর প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আমাদের দেশের নারীরা সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে শোষিত, বঞ্চিত। বাজেটে নারীকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রোকেয়া কবীর
নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ
দেশের জনগণের ৫০ শতাংশ নারী। সে হিসাবে বাজেটে নারীর জন্য প্রয়োজনীয় কী কী বরাদ্দ থাকা দরকার, তা নির্দিষ্ট করা উচিত। এ দেশে নারীদের সব দিক দিয়ে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। সে কারণে বাজেটের কেন্দ্রে নারী বিষয়টি থাকা দরকার। যেসব নারী গৃহে কাজ করেন, তাঁরা সেই পরিশ্রমের মূল্য পাচ্ছেন না। গৃহস্থালির কাজের জন্য নারীর পেনশনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। কিছু দেশে কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারীর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। নারীর অসুখ হলে ডাক্তারের কাছে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সুযোগ অনেকেরই নেই। সে ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকরে সংখ্যা বাড়ানো উচিত বলে মনে করি। এ ছাড়া নারীর শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হন, সেসব ভুক্তভোগী নারীর জন্য থাকার ব্যবস্থা করা দরকার। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর সার্বিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা আছে। তবে নির্যাতনের তুলনায় সেই সংখ্যা অপ্রতুল। এ ক্ষেত্রে নারীর জন্য আইনি সহায়তা, নিরাপত্তার ব্যবস্থাও জোরদার করা প্রয়োজন। প্রতি উপজেলায় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারলেও জেলায় জেলায় ক্রাইসিস সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। প্রশিক্ষণসহ সামগ্রিক বিষয়ে বাজেটে বরাদ্দের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এসব বরাদ্দ কোন খাতে ব্যয় করা হলো, সেটারও মনিটরিং করা প্রয়োজন। খালি বরাদ্দ দিলে তো হবে না, বরাদ্দের সঠিক প্রয়োগও করতে হবে।
এ ছাড়া ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে জনবল বাড়াতে হবে। সেখানে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর সহিংসতার শিকার নারীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে। দেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তাঁদের জন্য জাতীয় কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বা পরিকল্পনা নেই। অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক সংকটের কারণে সম্ভাবনাময় এই খাত উঠে দাঁড়াতে পারছে না। এ কারণে নারী উদ্যোক্তার জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। তবে, নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পেনশন—এ বিষয়গুলোতে বরাদ্দ বেশি থাকা দরকার।
কাবেরী গায়েন
অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২০২০ সালের করোনা পরিস্থিতির পর আর জেন্ডার বাজেট প্রকাশিত হয়নি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জন্য থাকা বরাদ্দ গত বছর কমেছে। তাই এবার নারীর জন্য কোন কোন খাতে কী বরাদ্দ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রথম প্রত্যাশা হলো জেন্ডার বাজেট ফিরিয়ে আনা হোক।
উদাহরণ হিসেবে শুরু করি একটা মেয়েশিশু দিয়ে। করোনার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেয়েশিশু ও কিশোরীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহের হার উদ্বেগজনক। তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাজেট বরাদ্দ চাই। বিশেষ করে যেসব কিশোরীর বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে, তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের বাজেট বরাদ্দের পাশাপাশি সামাজিক পরিসরে সচেতনতা তৈরির জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
এ ছাড়া দেশে শ্রমবাজারে নারীর সংখ্যা কম। করোনাকালে নারীরা আরও বেশি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বাজেটে এসব বেকার নারীর জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে, যেন তাঁরা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে ঘরে বসেই ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারেন। এ ছাড়া করোনাকালে নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তাই বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি, তাঁরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
এ দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণির প্রবীণ নারীরা এই করোনাকালে সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিধবা ভাতা ও দুস্থ নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া জমিতে ছোট ছোট যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে নারীরা যাতে কৃষিকাজ করতে পারেন, সে জন্য পরিবারভিত্তিক কৃষক কার্ড দেওয়া উচিত বলে মনে করি। প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং খাতওয়ারি বাজেট বরাদ্দ ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা। অতীতে দেখা গেছে, বাজেট যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা বাস্তবায়ন হয় না। জেন্ডার বাজেট ফিরিয়ে আনা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে বসবাসরত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নারীর কর্মসংস্থানের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা সরকারের জন্য একটা রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়। ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারীদের জাতিগতভাবে অর্জিত নানা কর্মদক্ষতা রয়েছে। সেই কর্মদক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাজেটে পুঁজি ও প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখলে নারীরা ক্ষমতায়িত হবেন সন্দেহ নেই। মূলধারার জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের যে বাধা রয়েছে, মনস্তাত্ত্বিক সেই বাধা দূর করার জন্য ভাষাগত এবং অন্যান্য কৌশলগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এ বিষয়েও বিশেষ বাজেট বরাদ্দ দরকার বলে মনে করি।
রাষ্ট্র নারীদের জন্য কর্মপরিবেশ তৈরি না করেই তাদের কাজে নামিয়েছে। বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার পথটুকুও নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় কর্মস্থল। ভয় ও সহিংসতার আশঙ্কা নিয়েই নারীরা কাজে যান। কর্মস্থলে যাওয়ার পথ এবং কর্মস্থল নিরাপদ রাখার জন্য সরকারের বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। নারীদের জন্য গণপরিবহনে যাতায়াতব্যবস্থা সুষ্ঠু করার পাশাপাশি রাস্তার হয়রানি এবং যৌন সহিংসতা থেকে রক্ষার বিষয় আমলে এনে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এ জন্য অন্তত দুই স্তরের কর্মপরিকল্পনা জরুরি—প্রথমত, আইনি ও অবকাঠামোগত পরিবর্তন। রাস্তায় গণপরিবহনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, নারীরা এখন জনপরিসর ও কর্মপরিসরে অনেক বেশি দৃশ্যমান। কিন্তু শিশুযত্ন কেন্দ্র তৈরি হয়নি কিংবা হয়নি প্রজনন স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন। এসব একধরনের নারীর প্রতি কাঠামোগত সহিংসতা। সর্বোপরি, নারীর মনস্তত্ত্বে যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষাকাঠামোতে পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই এসব খাতে বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন।
সঙ্গীতা ইমাম
শিক্ষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও সংস্কৃতিকর্মী
এবারের বাজেট আমার মতে গত দুই বছরের বাজেটের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হবে। গত দুই অর্থবছরে সরকারকে বাজেট দিতে হয়েছে করোনা মহামারি মাথায় রেখে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধপরিস্থিতি। সুতরাং স্বভাবতই নারীর অগ্রগতির প্রশ্নটিও অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই অর্থবছরে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে।
বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, নারীর অগ্রযাত্রার পথে তার প্রভাবও কম নয়। ফলে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারকে অনেকগুলো বিষয় আলোচনায় রাখতে হবে বলে মনে করছি। বর্তমানে বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় অংশ স্বাধীন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। তাঁদের ব্যবসার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
প্রতিবছরই বাজেট হয়; কিন্তু ইন্টারনেটের দামের সমন্বয়টা করা হয় না কখনোই। এমনকি সম্প্রতি যে এক বছর মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ করা হলো, তার দামও কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এটি একটি উদাহরণ মাত্র। বর্তমান পরিস্থিতিতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা থাকলে তা ইতিবাচক হবে বলে মনে করি। তবে এই প্রণোদনা যেন প্রান্তিক নারীদের কাছে পৌঁছায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
বাজেটে নারীদের সামাজিক নিরাপত্তার প্রসঙ্গে বলতে চাই, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রথম চারটি মন্ত্রণালয়ের জন্য জেন্ডার বাজেট প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৪৩টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জন্য জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছিল। সে হিসেবে ব্যাপ্তির দিক থেকে একটি বিরাট পরিবর্তন তো আছেই। কিন্তু নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয় তো কেবল বরাদ্দ বৃদ্ধির ওপরই নির্ভর করে না। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আরও কতগুলো সূচকও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তার আওতা কিন্তু বর্তমানে বেড়ে গেছে। সে হিসাবে তার যে গুরুত্ব, সেটা আমরা ঠিকঠাক উপলব্ধি করতে পারছি বলে মনে হয় না।
জাতীয় বাজেট সম্পর্কে জানতে: এখানে ক্লিক করুন
কেবল বরাদ্দ বাড়ালেই সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না, আবার অপ্রতুল অর্থেও সেটা সম্ভব নয়। সুতরাং এ দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। গত দুই অর্থবছরের বাজেটে সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় কিন্তু নারী ও শিশু ছিল না। এদিকে ২০২১ সালের মধ্যেই কিন্তু ১৫ বছরের কম বয়সীদের বাল্যবিবাহ নির্মূলের পরিকল্পনা ছিল সরকারের। সেটা যে সম্ভব হয়নি, তা করোনা-পরবর্তী বিভিন্ন জরিপেই দেখা যাচ্ছে। এসবের নিরিখেই এবারের বাজেটে আশা করছি নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
এই সম্পর্কিত পড়ুন:

নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিনিয়ত কথা হয়। এ বিষয়ে নীতিপ্রণেতারা বিভিন্ন বক্তব্যে তাঁদের আন্তরিকতার কথা জানান। কিন্তু এত সব আলোচনার পরও নারীর ক্ষমতায়নের পথে বাধাগুলো রয়ে গেছে। করোনা মহামারির সময়ে এই প্রতিবন্ধকতার মাত্রা বেড়েছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, করোনাকালে দেশে বাল্যবিবাহ, পারিবারিক নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এ ছাড়া এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, যার মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। এর মধ্যেও অনেক নারী শত বাধা টপকে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এ ক্ষেত্রে একটা অগ্রগতি হলেও নারী উদ্যোক্তাদের এমনকি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে যৌন হয়রানি উল্লেখযোগ্য। সরকারের নানা সংস্থা নারীর জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করলেও এগুলোর সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ঘর, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সব জায়গায় নারীকে তুলনামূলক বেশি বাধার মুখোমুখি হতে হয়। এই পরিস্থিতি বদলে সত্যিকারের নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বাজেটে নারীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীরা। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত, তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
মালেকা বানু
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
বাজেট যাই হোক না কেন, সেখানে নারীর অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে। করোনাকালে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাজেটে এর প্রতিফলন থাকতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার আছে। কিন্তু এসব সেন্টারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। এসব সেন্টারে নারীরা আরও বেশি হয়রানির শিকার হন। এ ক্ষেত্রে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি এসব সেন্টার কার্যকর করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। থানায়-থানায় নারী পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। জেন্ডার সংবেদনশীলতার বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নারীদের জন্য যে এসএমই ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে, তা সবাই পান না। নারীরা যেন সহজ শর্তে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন, সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। নারীরা যেন কম টাকায় ব্যবসা করতে পারেন, সে বিষয়ে বাজেটে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া বাড়াতে হবে নারী উদ্যোক্তার জন্য বরাদ্দ। আবার কৃষিক্ষেত্রে কিষানিরা যেন কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি পান, সে বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। সরকার থেকে কিষানিদের যে অধিকার প্রাপ্য, তাঁরা তা পান না। কৃষিক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া নারীদের চিকিৎসাসেবার জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নারীর যাতায়াত নিরাপদ করার পাশাপাশি ভোগান্তি কমাতে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নারীদের উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বাজেটে এ বিষয়গুলোর প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আমাদের দেশের নারীরা সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে শোষিত, বঞ্চিত। বাজেটে নারীকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রোকেয়া কবীর
নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ
দেশের জনগণের ৫০ শতাংশ নারী। সে হিসাবে বাজেটে নারীর জন্য প্রয়োজনীয় কী কী বরাদ্দ থাকা দরকার, তা নির্দিষ্ট করা উচিত। এ দেশে নারীদের সব দিক দিয়ে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। সে কারণে বাজেটের কেন্দ্রে নারী বিষয়টি থাকা দরকার। যেসব নারী গৃহে কাজ করেন, তাঁরা সেই পরিশ্রমের মূল্য পাচ্ছেন না। গৃহস্থালির কাজের জন্য নারীর পেনশনের ব্যবস্থা থাকা উচিত। কিছু দেশে কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারীর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। নারীর অসুখ হলে ডাক্তারের কাছে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সুযোগ অনেকেরই নেই। সে ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকরে সংখ্যা বাড়ানো উচিত বলে মনে করি। এ ছাড়া নারীর শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
যেসব নারী নির্যাতনের শিকার হন, সেসব ভুক্তভোগী নারীর জন্য থাকার ব্যবস্থা করা দরকার। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর সার্বিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা আছে। তবে নির্যাতনের তুলনায় সেই সংখ্যা অপ্রতুল। এ ক্ষেত্রে নারীর জন্য আইনি সহায়তা, নিরাপত্তার ব্যবস্থাও জোরদার করা প্রয়োজন। প্রতি উপজেলায় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারলেও জেলায় জেলায় ক্রাইসিস সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। প্রশিক্ষণসহ সামগ্রিক বিষয়ে বাজেটে বরাদ্দের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এসব বরাদ্দ কোন খাতে ব্যয় করা হলো, সেটারও মনিটরিং করা প্রয়োজন। খালি বরাদ্দ দিলে তো হবে না, বরাদ্দের সঠিক প্রয়োগও করতে হবে।
এ ছাড়া ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে জনবল বাড়াতে হবে। সেখানে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর সহিংসতার শিকার নারীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে। দেশে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তাঁদের জন্য জাতীয় কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বা পরিকল্পনা নেই। অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক সংকটের কারণে সম্ভাবনাময় এই খাত উঠে দাঁড়াতে পারছে না। এ কারণে নারী উদ্যোক্তার জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। তবে, নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পেনশন—এ বিষয়গুলোতে বরাদ্দ বেশি থাকা দরকার।
কাবেরী গায়েন
অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২০২০ সালের করোনা পরিস্থিতির পর আর জেন্ডার বাজেট প্রকাশিত হয়নি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জন্য থাকা বরাদ্দ গত বছর কমেছে। তাই এবার নারীর জন্য কোন কোন খাতে কী বরাদ্দ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা থেকে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রথম প্রত্যাশা হলো জেন্ডার বাজেট ফিরিয়ে আনা হোক।
উদাহরণ হিসেবে শুরু করি একটা মেয়েশিশু দিয়ে। করোনার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে মেয়েশিশু ও কিশোরীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহের হার উদ্বেগজনক। তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাজেট বরাদ্দ চাই। বিশেষ করে যেসব কিশোরীর বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে, তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের বাজেট বরাদ্দের পাশাপাশি সামাজিক পরিসরে সচেতনতা তৈরির জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
এ ছাড়া দেশে শ্রমবাজারে নারীর সংখ্যা কম। করোনাকালে নারীরা আরও বেশি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বাজেটে এসব বেকার নারীর জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে, যেন তাঁরা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে ঘরে বসেই ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারেন। এ ছাড়া করোনাকালে নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। তাই বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি, তাঁরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।
এ দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণির প্রবীণ নারীরা এই করোনাকালে সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিধবা ভাতা ও দুস্থ নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া জমিতে ছোট ছোট যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে নারীরা যাতে কৃষিকাজ করতে পারেন, সে জন্য পরিবারভিত্তিক কৃষক কার্ড দেওয়া উচিত বলে মনে করি। প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং খাতওয়ারি বাজেট বরাদ্দ ও কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা। অতীতে দেখা গেছে, বাজেট যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা বাস্তবায়ন হয় না। জেন্ডার বাজেট ফিরিয়ে আনা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে বসবাসরত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নারীর কর্মসংস্থানের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা সরকারের জন্য একটা রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার বিষয়। ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারীদের জাতিগতভাবে অর্জিত নানা কর্মদক্ষতা রয়েছে। সেই কর্মদক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাজেটে পুঁজি ও প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখলে নারীরা ক্ষমতায়িত হবেন সন্দেহ নেই। মূলধারার জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের যে বাধা রয়েছে, মনস্তাত্ত্বিক সেই বাধা দূর করার জন্য ভাষাগত এবং অন্যান্য কৌশলগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এ বিষয়েও বিশেষ বাজেট বরাদ্দ দরকার বলে মনে করি।
রাষ্ট্র নারীদের জন্য কর্মপরিবেশ তৈরি না করেই তাদের কাজে নামিয়েছে। বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার পথটুকুও নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় কর্মস্থল। ভয় ও সহিংসতার আশঙ্কা নিয়েই নারীরা কাজে যান। কর্মস্থলে যাওয়ার পথ এবং কর্মস্থল নিরাপদ রাখার জন্য সরকারের বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। নারীদের জন্য গণপরিবহনে যাতায়াতব্যবস্থা সুষ্ঠু করার পাশাপাশি রাস্তার হয়রানি এবং যৌন সহিংসতা থেকে রক্ষার বিষয় আমলে এনে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এ জন্য অন্তত দুই স্তরের কর্মপরিকল্পনা জরুরি—প্রথমত, আইনি ও অবকাঠামোগত পরিবর্তন। রাস্তায় গণপরিবহনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, নারীরা এখন জনপরিসর ও কর্মপরিসরে অনেক বেশি দৃশ্যমান। কিন্তু শিশুযত্ন কেন্দ্র তৈরি হয়নি কিংবা হয়নি প্রজনন স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন। এসব একধরনের নারীর প্রতি কাঠামোগত সহিংসতা। সর্বোপরি, নারীর মনস্তত্ত্বে যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, তার জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষাকাঠামোতে পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই এসব খাতে বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন।
সঙ্গীতা ইমাম
শিক্ষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও সংস্কৃতিকর্মী
এবারের বাজেট আমার মতে গত দুই বছরের বাজেটের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হবে। গত দুই অর্থবছরে সরকারকে বাজেট দিতে হয়েছে করোনা মহামারি মাথায় রেখে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধপরিস্থিতি। সুতরাং স্বভাবতই নারীর অগ্রগতির প্রশ্নটিও অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই অর্থবছরে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে।
বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, নারীর অগ্রযাত্রার পথে তার প্রভাবও কম নয়। ফলে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকারকে অনেকগুলো বিষয় আলোচনায় রাখতে হবে বলে মনে করছি। বর্তমানে বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় অংশ স্বাধীন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন। তাঁদের ব্যবসার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
প্রতিবছরই বাজেট হয়; কিন্তু ইন্টারনেটের দামের সমন্বয়টা করা হয় না কখনোই। এমনকি সম্প্রতি যে এক বছর মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজ করা হলো, তার দামও কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এটি একটি উদাহরণ মাত্র। বর্তমান পরিস্থিতিতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে বিশেষ প্রণোদনা থাকলে তা ইতিবাচক হবে বলে মনে করি। তবে এই প্রণোদনা যেন প্রান্তিক নারীদের কাছে পৌঁছায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
বাজেটে নারীদের সামাজিক নিরাপত্তার প্রসঙ্গে বলতে চাই, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রথম চারটি মন্ত্রণালয়ের জন্য জেন্ডার বাজেট প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৪৩টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জন্য জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছিল। সে হিসেবে ব্যাপ্তির দিক থেকে একটি বিরাট পরিবর্তন তো আছেই। কিন্তু নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয় তো কেবল বরাদ্দ বৃদ্ধির ওপরই নির্ভর করে না। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আরও কতগুলো সূচকও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তার আওতা কিন্তু বর্তমানে বেড়ে গেছে। সে হিসাবে তার যে গুরুত্ব, সেটা আমরা ঠিকঠাক উপলব্ধি করতে পারছি বলে মনে হয় না।
জাতীয় বাজেট সম্পর্কে জানতে: এখানে ক্লিক করুন
কেবল বরাদ্দ বাড়ালেই সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না, আবার অপ্রতুল অর্থেও সেটা সম্ভব নয়। সুতরাং এ দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। গত দুই অর্থবছরের বাজেটে সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় কিন্তু নারী ও শিশু ছিল না। এদিকে ২০২১ সালের মধ্যেই কিন্তু ১৫ বছরের কম বয়সীদের বাল্যবিবাহ নির্মূলের পরিকল্পনা ছিল সরকারের। সেটা যে সম্ভব হয়নি, তা করোনা-পরবর্তী বিভিন্ন জরিপেই দেখা যাচ্ছে। এসবের নিরিখেই এবারের বাজেটে আশা করছি নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
এই সম্পর্কিত পড়ুন:

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। বার্ষিক কার্যক্রম ও সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন সেক্রেটারি জেনারেল এলিন ববি। ট্রেজারার মোহাম্মদ শাহরিয়ার হোসেন খান ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাডমিন) রেজাউল করীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাছেত, ভাইস প্রেসিডেন্ট (একাডেমিক) জয়নাল আবেদীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি (অ্যাডমিন) শরিফুল আনোয়ার, জয়েন্ট সেক্রেটারি (ফিন্যান্স) মো. জারাফাত ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা মাসুদ।
সভা সঞ্চালনা করেন কাউন্সিলর মুহাম্মদ ওমর সিদ্দিক ও মোহাম্মদ হেদায়েতুল হাসান এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মো. আলমগীর। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. মেহেদী হাসান, মো. মোজাহারুল ইসলাম, মো. আসাদ-উজ-জামান, এস এম পারভেজ রানা, মো. ওয়াহিদ মুরাদ, এস এম সাজ্জাদ হোসেন, নিমাই চন্দ্র মণ্ডল, আমিমুল ইহসান, মো. মানিরুল ইসলাম, মো. মারুফ হোসেইন, বায়েজীদ হাসান ভূঞাঁ, মো. তানভিদুল ইসলাম, এস কে হুমায়ন কবীর, মো. মাহফুজ ইসলাম, হাসান আল মনসুর, মোহাম্মদ শফিউদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়া সোসাইটির নিয়মিত সদস্যরাও সভায় অংশ নেন।
সভার আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল—
১. ২০২৩ ও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন ও অনুমোদন।
২. ২০২৫ সালের হিসাব নিরীক্ষার জন্য অডিটর নিয়োগ ও নিরীক্ষা ফি নির্ধারণ।
৩. বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির সংবিধান পরিবর্তন বিষয়ে আলোচনা।
এই সভার মাধ্যমে সোসাইটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
০৯ জুন ২০২২
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেরোকন উদ্দীন, ঢাকা

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম (সার্টিফিকেশন মার্কস উইং) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাইভ বেকারির সংখ্যা এত দ্রুত বাড়ছে যে আমরা এগুলোর হিসাব রাখতে পারছি না। কোনোরকম একটা ট্রেড লাইসেন্স জোগাড় করেই উৎপাদন শুরু করছে এগুলো। আমরা তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এতগুলো প্রতিষ্ঠান তো বন্ধ করে দিতে পারি না। আমাদের লোকবলের সংকট থাকায় যতটা কাজ করার দরকার, তা করতে পারছি না।’
অল্প জায়গায় স্বল্প পুঁজিতে গড়া যায় বলে রাজধানীতে লাইভ বেকারির সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। মুগদা থানাধীন পূর্ব মানিকনগরে ঢোকার মুখ থেকে খালপাড় নতুন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সাড়ে ৮০০ মিটারের মধ্যে ৫টি লাইভ বেকারি দেখা যায়। শুধু মানিকনগর নয়; রাজধানীর কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, মোহাম্মদপুরসহ প্রায় সব এলাকার বাজার, পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে শত শত লাইভ বেকারি।
ছোট একটি দোকানে ওভেন, মিক্সচার মেশিন, ট্রে টেবিল ও কিছু আসবাব বসিয়ে এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে কেক, বিস্কুট, পাউরুটি, পেটিস, টোস্ট, মিষ্টিসহ নানা খাদ্যপণ্য।
ঝিগাতলার সোনালী ব্যাংকসংলগ্ন ‘বেকার্স বে’ লাইভ বেকারি থেকে দুটি চিজ রোল ও একটি চিকেন রোল কিনে ফিরছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পলাশ মাহমুদ। কীভাবে মান যাচাই করবেন, তা জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় খাদ্যপণ্য কিনি স্বাদ দেখে। আর যে চিজ রোল আমি ৪০ টাকায় কিনলাম, এটি ভালো কোনো দোকানে গেলে ৭০-৮০ টাকা লাগবে।’
পূর্ব মানিকনগরের খালিস বেকারির স্বত্বাধিকারী মো. জুবায়ের বলেন, ‘ভালো লাভের আশা দিয়ে আরেক বেকারির মালিক আমারে এই ব্যবসায় নামিয়েছে। কিছু টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছি। দেড় বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কিছু কিছু লাভ হতো। কয়েক মাসের মধ্যে আশপাশে বেকারির সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এখন লোকসানে আছি।’
লাইসেন্স নেই অনেকেরই
প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কারখানা স্থাপন করতে হয়। তারপর নমুনা পণ্য উৎপাদন করে মান সনদের জন্য বিএসটিআইতে জমা দিতে হয়। এর জন্য হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প-নকশা বা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের সত্যায়িত ফটোকপি, ভ্যাট সনদ, প্রিমিসেস লাইসেন্স, কর্মচারীর স্বাস্থ্য সনদ, পণ্যের মোড়কের নকশার কাগজসহ বেশ কিছু নথি দরকার হয়। জানাতে হয় কালার, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ, আর্টিফিশিয়াল সুইটনারসহ পণ্যের উপকরণ। পরীক্ষণের যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার যন্ত্রপাতির তালিকা, কারখানার লে-আউট ও প্রসেস ফ্লো-চার্ট। এরপর পরিদর্শকেরা কারখানা পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হলে মেলে মান সনদ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না। অনেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই ব্যবসায় নেমে পড়েন। কারও কারও তা-ও নেই। মানসনদ নেই সিংহভাগের। কারিগরদের নেই প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ, স্যানিটেশন সনদ।
বুয়েটের উদ্যোগে ২০২১ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৬৭ শতাংশ পাউরুটির নমুনায় নির্ধারিত মানের চেয়ে বেশি পটাশিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। পাউরুটি ফোলাতে এই রাসায়নিকট ব্যবহার হয়। এ ছাড়া বেকারি পণ্যে কাঁচামাল আটার সঙ্গে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাট, কৃত্রিম রং ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহৃত হচ্ছে বলেও ওই গবেষণায় বলা হয়।
রাজধানীতে কতটি লাইভ বেকারি রয়েছে, তার কোনো তথ্য নেই সিটি করপোরেশন, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছেই। বিএসটিআইয়ের তথ্য বলছে, শত শত বেকারির মধ্যে মাত্র ২৭টির মান সনদ রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘এসব ট্রেড লাইসেন্স করপোরেশনের জোনগুলো থেকে দেওয়া হয়। কতটি লাইসেন্স হয়েছে, আমাদের কাছে সে তথ্য নেই।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি শফিকুজ্জামান বলেন, মানহীন এসব পণ্যে সাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। যারা আইন মেনে উৎপাদন করবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। দু-একটি বন্ধ করলে বাকিগুলো ঠিক হয়ে যেত।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
০৯ জুন ২০২২
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯ ঘণ্টা আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেব্যাংক খাত নিয়ে পিআরআইয়ের আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল এবং সুশাসনের ঘাটতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আর্থিক স্থিতিশীলতা নষ্ট ও বিনিয়োগ পরিবেশের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আর এসবের নেপথ্যে শুধু অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাই নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্বল গভর্ন্যান্সও দায়ী। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, এখন সময় এসেছে ধাপে ধাপে সুশাসনভিত্তিক ও আস্থানির্ভর সংস্কারের।
গতকাল রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট কোনো একক কারণে হয়নি। এটি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট, স্থানীয় বাস্তবতা এবং অতীতের অনিয়মের মিলিত ফল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, পরবর্তী সুদহার পরিবর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব দেশের ব্যবসায়িক মডেলকে বদলে দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতও নতুন বাস্তবতায় খাপ খাওয়াতে বাধ্য হয়েছে।
লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা ও পুনর্গঠনে রাজনৈতিক প্রভাব মোকাবিলা এখন অপরিহার্য। অনেক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিদের পুনর্বহাল করা হয়, বিশেষ করে যদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তির পরিবারের সদস্য হন। এতে গভর্ন্যান্স সংকট তীব্র হচ্ছে। তাই খেলাপি ঋণ ও আর্থিক অপরাধের কৌশল বিশ্লেষণে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। মনোবিজ্ঞানী ও আচরণ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পেশাদার প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার ওপরও জোর দেন, যাতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার আচরণগত ও শৃঙ্খলাগত উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আখতার হোসেন সতর্ক করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ঋণ বিতরণ, দুর্বল তদারকি এবং প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের চাপ মিলিয়ে ব্যাংক খাত ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, মূলধন ঘাটতি এবং বড় খেলাপিদের প্রতি নরম মনোভাব সংকটকে আরও গভীর করেছে। এখন সাহসী কাঠামোগত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে পতনের দিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উদীয়মান অর্থনীতিতে একটি ব্যাংকের ধস পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তিনি মূল কারণ হিসেবে ব্যাংকের পর্ষদে অনিয়ম এবং ঋণ প্রদানে অস্বচ্ছতার কথা তুলে ধরেন। দেশের পাঁচটি বড় ব্যাংক এখন সংকটে, আরও ৫-১০টি একই পথে রয়েছে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে ব্যাংকগুলো দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।
পিআরআইয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান প্রতারণাজনিত ও সাধারণ খেলাপি ঋণ আলাদা করে পরিচালনার জন্য একটি পেশাদার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এএমসি) গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি স্ট্রেস টেস্টিং, রিকভারি প্ল্যান, ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং রেজল্যুশন ফান্ডকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
পিআরআই প্রেসিডেন্ট ড. জায়েদী সাত্তার সতর্ক করে বলেন, উন্নত অর্থনীতিতে ‘টু বিগ টু ফেইল’ ধারণা প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক এখন ‘টু টক্সিক টু ফেইল’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ব্যাংকের পতন সামগ্রিক অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ৫ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আর্থিক খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অপরিহার্য।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
০৯ জুন ২০২২
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

সাধারণত শীতের সময় বাজারে আগাম নতুন আলু উঠলে তার দাম কয়েক সপ্তাহ ধরে শতকের ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সবজি বিক্রেতারা কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকা কেজিতে নামাতে বাধ্য হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আরও কমে ছোট আকারের আলুর দাম ৩৫ টাকা কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত মজুতের কারণে পুরোনো আলুর দাম এখন ২৫ টাকার মধ্যেই। তাই বেশি দামের আশায় যাঁরা অপরিপক্ব অবস্থায়ই আগাম আলু বাজারে এনেছেন, তাঁরা হতাশ।
আলুর দাম আশানুরূপ না হলেও সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা নতুন পেঁয়াজের ভালো দাম পাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজির ওপরে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে।
বাজারে আমনের নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। এতে চালের দাম এক-দুই টাকা কমেছে চলতি সপ্তাহে। এ ছাড়া সবজি, ডিম, মুরগিসহ অন্যান্য পণ্যের বাজারেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগাম নতুন আলুর সরবরাহ বেশ বেড়েছে। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু মান অনুসারে ৩৫-৪০ টাকা কেজি আর পুরোনো আলু আগের মতোই ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিন্টু বলেন, নতুন আলুর বিক্রি শুরু হয় ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই দামে মাত্র কয়েক দিন বিক্রি করা গেছে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসে। এ সপ্তাহে আরও কমেছে। এবার আলু বিক্রি করে কৃষক, ব্যবসায়ী কেউ খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি।
বাজারে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে—দেশি নতুন ও পুরোনো এবং আমদানির পেঁয়াজ। বাজারে নতুন আসা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা কেজি। তবে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রেতারা। মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম শুনেছি ১০-১২ রুপিতে নেমেছে। সেই পেঁয়াজ দেশে এনে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা; যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যাঁদের আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের নজরদারিতে রাখা উচিত সরকারের।’
ভোজ্যতেলের দাম গত সপ্তাহেই লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়েছে। বহুল ব্যবহৃত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা লিটার। চিনি, আটা, ময়দা, মসুর ডালসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই।
এদিকে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বিক্রেতারা বলছেন, আমনের দু-একটি জাতের চাল বাজারে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে গুটি স্বর্ণা ও পাইজাম। তাতে অন্য চালের দামও কিছুটা নিম্নমুখী। আমদানির চালের সরবরাহও রয়েছে বাজারে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, শম্পা কাটারি, জিরাশাইল, মিনিকেটসহ সরু চালগুলোর দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭৮ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা।
নতুন চালে গুটি স্বর্ণার দাম নেমেছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২-৫৬ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৬-৬৩ টাকা ছিল।
মানিকনগর বাজারের চাল বিক্রেতা মরিয়ম স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বলেন, ‘চালের সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এতে দাম অনেকটাই কমতির দিকে। এ সপ্তাহে এক-দুই টাকা কমেছে অনেক আইটেমে। আশা করছি, সামনের সপ্তাহে আরও কমবে।’
ভোক্তার স্বস্তি ফিরছে সবজিতেও। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে বরবটি, বেগুন ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। ফুল ও বাঁধাকপির দাম আরও কমেছে। মাঝারি আকারের ফুল ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজারও স্থিতিশীল। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। কমেছে মুরগির মাংসের দাম। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে। আর সোনালি মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৭০ টাকার মধ্যে।
পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে সবজির প্রচুর সরবরাহ থাকলে মুরগি ও ডিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। এ কারণেই দাম কমেছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। এই বাজেটে নারীর জন্য কী থাকছে বা থাকা উচিত তা নিয়ে কথা বলেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন নারী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্টি বৈষ্ণব।
০৯ জুন ২০২২
আইটি পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৩ ও ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর অলিগলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়েছে লাইভ বেকারি নামের তাৎক্ষণিক খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রির দোকান। কিন্তু এগুলোতে মানের বালাই নেই। টাটকা মনে করে ভোক্তা পাউরুটি, বিস্কুট, টোস্ট, কেকসহ যেসব পণ্য কিনে খাচ্ছে, তা স্বাস্থ্যগতভাবে কতটা নিরাপদ, তার কোনো তদারকি নেই।
২ দিন আগে
ব্যাংক খাত এক ভয়ংকর সংকটের মুখে। খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা দেশের অর্থনীতিতে চার ধরনের নেতিবাচক চক্র তৈরি হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, সুদহার ঊর্ধ্বমুখী, বিনিয়োগ কমছে এবং প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়েছে। মূলত আমানত সঠিক বিনিয়োগে রূপান্তর না হওয়া, ঋণখেলাপির পুনর্বহাল...
২ দিন আগে