আবু তাহের খান

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই গত কয়েক দিনে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে ওই সব অঞ্চলের বিপুল পরিমাণ জমির সমুদয় কাঁচা ও আধা পাকা ধান। এর আগে ১৬ এপ্রিল বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা অঞ্চলের বেশ কটি হাওরের কাঁচা ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে এ ধরনের বাঁধ ভাঙার ঘটনা আরও ঘটতে পারে। এ অবস্থায় অবশিষ্ট বাঁধ ও ধান রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষ একত্র হয়ে প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছে এবং ক্ষতির কথা জেনেও খেতের কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এটুকু প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় যে হাওরের ফসল রক্ষার ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চলমান দুর্নীতিপরায়ণ অস্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে ফসল নষ্টের অনুরূপ ঘটনা একই ধারায় আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বৈকি!
১৯৪৬ সালের তেভাগা আন্দোলনের সময়ও আকস্মিক বন্যা থেকে বাঁচানোর জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও কৃষককে তাঁর জমির কাঁচা ধান অসময়ে কেটে ফেলতে হয়েছে। আজ ৭৬ বছর পরও এ দেশের কৃষককে সেই একই কাজ, একই রকম কষ্ট বুকে বেঁধে অবলীলায় করে যেতে হচ্ছে। পার্থক্য শুধু এইটুকু যে আগে ক্ষতি হতো শুধু ধানের, এখন ধানের ক্ষতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতির ক্ষতিও (দুর্নীতির পেছনে ব্যয়িত অর্থ জনগণকেই বাড়তি কর দিয়ে পরিশোধ করতে হয়)। পরাধীন দেশে বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর জন্য কৃষকের পাশে তখন বলতে গেলে আর কেউই ছিল না। এখন তাঁর পাশে ‘সাহায্যে’র হাত নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ প্রকৌশলী, অতিমুনাফালোভী ফাঁকিবাজ ঠিকাদার, জনবিচ্ছিন্ন প্রশাসন, আর ভোটকালের জনপ্রতিনিধি। তাঁরা না থাকলে কৃষক ধান কাটা বা না কাটার বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, যেমনটি তাঁরা অতীতে নিয়েছেন এবং নিয়ে টিকেও থেকেছেন।
কিন্তু এখন অন্যরা এসে তাঁদের সেই স্বাধীনতাটুকুও ছিনিয়ে নিয়েছে। একপক্ষ এসে বলছে, চিন্তা করবেন না, অপেক্ষা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আরেক পক্ষ এসে রীতিমতো মাইকিং করে বলছে, দ্রুত ধান কাটুন, নইলে সর্বনাশ।
এর বাইরেও আছে আরও ভয়ংকর নানা পক্ষ, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এই আতঙ্কের সুযোগে কৃষকের কাছ থেকে দাদনে কম দামে ধান কিনে নেওয়া ফড়িয়ার দল। সব মিলিয়ে ৭৬ বছরের ব্যবধানে আকস্মিক বন্যাকে ঘিরে কৃষকের আতঙ্ক শুধু বাড়েইনি, দিনে দিনে তা আরও জটিল হয়েছে।
এখন আত্মজিজ্ঞাসার জায়গা থেকে যদি প্রশ্ন করা যায়, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ যা যা অর্জন করেছে তার মধ্যে আকস্মিক বন্যার ভয়ে কাঁচা ধান কেটে ফেলার আতঙ্ক দূর করার সফল প্রয়াসটুকু নেই কেন? তাহলে এ সময়ের মধ্যে কার স্বার্থে কী অর্জন করলাম আমরা? স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির কোনো আলোচনায় আমরা কি কখনো এ ভয়াবহ অনর্জনগুলো নিয়ে কথা বলতে আগ্রহবোধ করেছি? যদি তা না করে থাকি, তাহলে সামনের বছরগুলোতেও যে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম বা আকস্মিক ঢলপ্রবণ দেশের অন্যান্য এলাকার কৃষকদের একই আতঙ্ক মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, তাতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরূপ আকস্মিক ঢল বা বন্যার পানি থেকে ফসল বাঁচানোর কি স্থায়ী কোনো উপায় নেই? তাহলে যে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার এক বছরের কম সময়ের ব্যবধানে মানুষ এর প্রতিরোধক টিকা নিতে পারল, সেটি কীভাবে সম্ভব হলো? এক বছরের ব্যবধানে টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হলে ৫০ বছরের ব্যবধানেও কেন হাওরের কৃষকের ফসল রক্ষার স্থায়ী সমাধান বের করা গেল না?
হাওরের ফসল রক্ষার স্থায়ী উপায় হিসেবে যেসব ব্যবস্থার কথা আলোচনায় আছে তার মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট নদীগুলোর উজানের বাংলাদেশ অংশে ব্যাপক মাত্রার খননকাজ চালিয়ে সেসবের পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং বঙ্গোপসাগরমুখী নদীর মাধ্যমে ঢল ও বন্যার পানি সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া। (আমি পানিবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নই বলে এ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞ মতামতদানের এখতিয়ার নেই)। অন্যদিকে সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে যা করা যেতে পারে তা হচ্ছে, হাওরাঞ্চলে পানি রক্ষা বাঁধ নির্মাণের যে রেওয়াজ বর্তমানে চালু আছে, সেগুলোর নির্মাণকাজ যথাসময়ে, অর্থাৎ বন্যা শুরুর অনেক আগেই শুকনো মৌসুমের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলা, যাতে ঢল নামার আগেই ওই সব বাঁধের মাটি স্থায়িত্ব পেতে পারে।
একই সঙ্গে ওই সব নির্মাণকাজকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক উভয় প্রকার দুর্নীতি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। তদুপরি এসব নির্মাণকাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন যাতে উপযুক্ত পেশাদারত্বের ভিত্তিতে ও পর্যাপ্ত গুণগত মানসম্পন্ন হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে, যা বর্তমানে প্রায় নেই বললেই চলে। আর এসব কার্যক্রমের সঙ্গে একেবারে আনুষ্ঠানিকভাবেই কৃষকদের যুক্ত করতে হবে এবং সত্যি কথা বলতে কি, সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সরাসরি অংশগ্রহণ ব্যতীত এ ধরনের কার্যক্রম প্রায় কখনোই সফল হতে পারে না।
এবারে হাওরের ফসল বিশেষত ধানের আবাদ প্রসঙ্গে আসি। সন্দেহ নেই, উচ্চফলনশীল, বন্যাসহনীয়, নোনাপানিতে আবাদযোগ্য, খরাসহনীয়, স্বল্পপরিচর্যাপ্রবণ ইত্যাদি নানা জাতের ফসল ও ফসলের বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের অসামান্য অবদান রয়েছে। তো, তাঁরা কি হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য এমন কোনো ধানজাত উদ্ভাবন করতে পারেন না, যা তাঁদের কাঁচা ধান কেটে ফেলার বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে? তাঁরা কি এমন কোনো ধানবীজের সন্ধান দিতে পারেন না, যা আরও দুই সপ্তাহ আগে রোপণ করে সাত-দশ দিন আগে এর ফসল ঘরে তোলা যায়? কৃষি বিভাগ কি কৃষকদের ধানের বীজ বপন ও চারা লাগানোর কাজটি যথাসময়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদানের কাজটি আরও নিবিড়ভাবে করতে পারে না? রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য অংশীদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কি দাদনদারদের কাছে কম দামে অগ্রিম ফসল বিক্রি করার নিষ্ঠুর প্রথা থেকে হাওরের কৃষকদের মুক্ত করতে এগিয়ে আসতে পারে না?
স্বীকার্য যে, নিয়মিত নদী খনন একটি ব্যয়বহুল কার্যক্রম। কিন্তু দেশের মানুষ যখন বহু অপ্রয়োজনীয় ও ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পের ভিড়ে ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ, তখন কীভাবে মানা যায় যে অর্থের অভাবের কারণেই নদী খননের কাজটি নিয়মিত করা যাচ্ছে না? জনগণের সঙ্গে পরামর্শ না করে বা জনগণকে না জানিয়েই যখন কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হচ্ছে, যে ঋণের অর্থ সুদসহ জনগণকেই পরিশোধ করতে হবে, তখন সেই ঋণ হাওরের ফসল রক্ষার স্থায়ী সমাধানের জন্য নয় কেন? ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি ইউটার্ন নির্মাণ করে দেড় বছরের মধ্যে আবার ভেঙে ফেলারও ব্যবস্থা করেছে এবং এ রকম দৃষ্টান্ত সারা দেশে আরও রয়েছে। তো, এ রকম উদ্দেশ্যমূলক ও সন্দেহজনক প্রকল্পের পেছনে অপ্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় কমিয়ে তার কিছুটা হলেও হাওরের ওই দরিদ্র দুঃখী মানুষদের টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বরাদ্দ করলে রাষ্ট্রের সুবিধাভোগীদের পাতে খুব কি টান পড়বে?
জাতীয় সংসদে কত হালকা ধাঁচের বিষয় নিয়েই তো আলোচনা হয়। সে ক্ষেত্রে হাওরবাসী কৃষকের চিরকালীন এ দুঃখ নিয়ে খানিকটা আলোচনা কি হতে পারে না? দেশের নাগরিক সমাজের (সিভিল সোসাইটি) সদস্যরা কত নানা বিষয়ে তাঁদের মতামত দিচ্ছেন। তাঁরা কি মনে করেন না যে এটিও এমন একটি বিষয় যা নিয়ে কথা বললে হাওরাঞ্চলের লাখ লাখ প্রান্তিক মানুষ উপকৃত হয়? মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সময়ে বহু বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে দেশের নানা শ্রেণি ও পেশার অসহায় সাধারণ মানুষের কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আমরা কি আশা করতে পারি যে হাওরবাসী কৃষকের ফসল রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা কেন একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে করা হবে না, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট সে মর্মে সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি রুল জারি করবেন?
সামনেই সাধারণ নির্বাচন। আমরা কি আশা করতে পারি যে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে জানাবে তারা ক্ষমতায় গেলে হাওরের উন্নয়নে পরবর্তী পাঁচ বছরে কে কী করবে? উপরিউক্ত প্রশ্নের জবাবগুলো কার কাছ থেকে কতটা পাওয়া যাবে, জানি না। তবে এটা নিশ্চিতভাবেই জানি যে হাওরের মানুষ গভীর কষ্টে আছে এবং তাদের সেই গুমোট বাঁধা কষ্ট জমতে জমতে অনেকটাই নিথর পাথরের রূপ ধারণ করে আছে, যেমনটি জমে পাথর হয়ে গেছে তাঁদের ব্যাপারে রাষ্ট্রের বিবেক।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থা, শিল্প মন্ত্রণালয়

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই গত কয়েক দিনে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ডুবে গেছে ওই সব অঞ্চলের বিপুল পরিমাণ জমির সমুদয় কাঁচা ও আধা পাকা ধান। এর আগে ১৬ এপ্রিল বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা অঞ্চলের বেশ কটি হাওরের কাঁচা ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যে এ ধরনের বাঁধ ভাঙার ঘটনা আরও ঘটতে পারে। এ অবস্থায় অবশিষ্ট বাঁধ ও ধান রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষ একত্র হয়ে প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছে এবং ক্ষতির কথা জেনেও খেতের কাঁচা ও আধা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এটুকু প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় যে হাওরের ফসল রক্ষার ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর চলমান দুর্নীতিপরায়ণ অস্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে ফসল নষ্টের অনুরূপ ঘটনা একই ধারায় আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বৈকি!
১৯৪৬ সালের তেভাগা আন্দোলনের সময়ও আকস্মিক বন্যা থেকে বাঁচানোর জন্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও কৃষককে তাঁর জমির কাঁচা ধান অসময়ে কেটে ফেলতে হয়েছে। আজ ৭৬ বছর পরও এ দেশের কৃষককে সেই একই কাজ, একই রকম কষ্ট বুকে বেঁধে অবলীলায় করে যেতে হচ্ছে। পার্থক্য শুধু এইটুকু যে আগে ক্ষতি হতো শুধু ধানের, এখন ধানের ক্ষতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতির ক্ষতিও (দুর্নীতির পেছনে ব্যয়িত অর্থ জনগণকেই বাড়তি কর দিয়ে পরিশোধ করতে হয়)। পরাধীন দেশে বাঁধ দিয়ে পানি আটকানোর জন্য কৃষকের পাশে তখন বলতে গেলে আর কেউই ছিল না। এখন তাঁর পাশে ‘সাহায্যে’র হাত নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ প্রকৌশলী, অতিমুনাফালোভী ফাঁকিবাজ ঠিকাদার, জনবিচ্ছিন্ন প্রশাসন, আর ভোটকালের জনপ্রতিনিধি। তাঁরা না থাকলে কৃষক ধান কাটা বা না কাটার বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, যেমনটি তাঁরা অতীতে নিয়েছেন এবং নিয়ে টিকেও থেকেছেন।
কিন্তু এখন অন্যরা এসে তাঁদের সেই স্বাধীনতাটুকুও ছিনিয়ে নিয়েছে। একপক্ষ এসে বলছে, চিন্তা করবেন না, অপেক্ষা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আরেক পক্ষ এসে রীতিমতো মাইকিং করে বলছে, দ্রুত ধান কাটুন, নইলে সর্বনাশ।
এর বাইরেও আছে আরও ভয়ংকর নানা পক্ষ, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এই আতঙ্কের সুযোগে কৃষকের কাছ থেকে দাদনে কম দামে ধান কিনে নেওয়া ফড়িয়ার দল। সব মিলিয়ে ৭৬ বছরের ব্যবধানে আকস্মিক বন্যাকে ঘিরে কৃষকের আতঙ্ক শুধু বাড়েইনি, দিনে দিনে তা আরও জটিল হয়েছে।
এখন আত্মজিজ্ঞাসার জায়গা থেকে যদি প্রশ্ন করা যায়, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ যা যা অর্জন করেছে তার মধ্যে আকস্মিক বন্যার ভয়ে কাঁচা ধান কেটে ফেলার আতঙ্ক দূর করার সফল প্রয়াসটুকু নেই কেন? তাহলে এ সময়ের মধ্যে কার স্বার্থে কী অর্জন করলাম আমরা? স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির কোনো আলোচনায় আমরা কি কখনো এ ভয়াবহ অনর্জনগুলো নিয়ে কথা বলতে আগ্রহবোধ করেছি? যদি তা না করে থাকি, তাহলে সামনের বছরগুলোতেও যে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম বা আকস্মিক ঢলপ্রবণ দেশের অন্যান্য এলাকার কৃষকদের একই আতঙ্ক মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, তাতে বিন্দুমাত্র কোনো সন্দেহ নেই।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরূপ আকস্মিক ঢল বা বন্যার পানি থেকে ফসল বাঁচানোর কি স্থায়ী কোনো উপায় নেই? তাহলে যে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার এক বছরের কম সময়ের ব্যবধানে মানুষ এর প্রতিরোধক টিকা নিতে পারল, সেটি কীভাবে সম্ভব হলো? এক বছরের ব্যবধানে টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হলে ৫০ বছরের ব্যবধানেও কেন হাওরের কৃষকের ফসল রক্ষার স্থায়ী সমাধান বের করা গেল না?
হাওরের ফসল রক্ষার স্থায়ী উপায় হিসেবে যেসব ব্যবস্থার কথা আলোচনায় আছে তার মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট নদীগুলোর উজানের বাংলাদেশ অংশে ব্যাপক মাত্রার খননকাজ চালিয়ে সেসবের পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং বঙ্গোপসাগরমুখী নদীর মাধ্যমে ঢল ও বন্যার পানি সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া। (আমি পানিবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নই বলে এ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞ মতামতদানের এখতিয়ার নেই)। অন্যদিকে সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে যা করা যেতে পারে তা হচ্ছে, হাওরাঞ্চলে পানি রক্ষা বাঁধ নির্মাণের যে রেওয়াজ বর্তমানে চালু আছে, সেগুলোর নির্মাণকাজ যথাসময়ে, অর্থাৎ বন্যা শুরুর অনেক আগেই শুকনো মৌসুমের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলা, যাতে ঢল নামার আগেই ওই সব বাঁধের মাটি স্থায়িত্ব পেতে পারে।
একই সঙ্গে ওই সব নির্মাণকাজকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক উভয় প্রকার দুর্নীতি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। তদুপরি এসব নির্মাণকাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন যাতে উপযুক্ত পেশাদারত্বের ভিত্তিতে ও পর্যাপ্ত গুণগত মানসম্পন্ন হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে, যা বর্তমানে প্রায় নেই বললেই চলে। আর এসব কার্যক্রমের সঙ্গে একেবারে আনুষ্ঠানিকভাবেই কৃষকদের যুক্ত করতে হবে এবং সত্যি কথা বলতে কি, সংশ্লিষ্ট কৃষকদের সরাসরি অংশগ্রহণ ব্যতীত এ ধরনের কার্যক্রম প্রায় কখনোই সফল হতে পারে না।
এবারে হাওরের ফসল বিশেষত ধানের আবাদ প্রসঙ্গে আসি। সন্দেহ নেই, উচ্চফলনশীল, বন্যাসহনীয়, নোনাপানিতে আবাদযোগ্য, খরাসহনীয়, স্বল্পপরিচর্যাপ্রবণ ইত্যাদি নানা জাতের ফসল ও ফসলের বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের অসামান্য অবদান রয়েছে। তো, তাঁরা কি হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য এমন কোনো ধানজাত উদ্ভাবন করতে পারেন না, যা তাঁদের কাঁচা ধান কেটে ফেলার বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে? তাঁরা কি এমন কোনো ধানবীজের সন্ধান দিতে পারেন না, যা আরও দুই সপ্তাহ আগে রোপণ করে সাত-দশ দিন আগে এর ফসল ঘরে তোলা যায়? কৃষি বিভাগ কি কৃষকদের ধানের বীজ বপন ও চারা লাগানোর কাজটি যথাসময়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদানের কাজটি আরও নিবিড়ভাবে করতে পারে না? রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য অংশীদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কি দাদনদারদের কাছে কম দামে অগ্রিম ফসল বিক্রি করার নিষ্ঠুর প্রথা থেকে হাওরের কৃষকদের মুক্ত করতে এগিয়ে আসতে পারে না?
স্বীকার্য যে, নিয়মিত নদী খনন একটি ব্যয়বহুল কার্যক্রম। কিন্তু দেশের মানুষ যখন বহু অপ্রয়োজনীয় ও ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পের ভিড়ে ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ, তখন কীভাবে মানা যায় যে অর্থের অভাবের কারণেই নদী খননের কাজটি নিয়মিত করা যাচ্ছে না? জনগণের সঙ্গে পরামর্শ না করে বা জনগণকে না জানিয়েই যখন কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হচ্ছে, যে ঋণের অর্থ সুদসহ জনগণকেই পরিশোধ করতে হবে, তখন সেই ঋণ হাওরের ফসল রক্ষার স্থায়ী সমাধানের জন্য নয় কেন? ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি ইউটার্ন নির্মাণ করে দেড় বছরের মধ্যে আবার ভেঙে ফেলারও ব্যবস্থা করেছে এবং এ রকম দৃষ্টান্ত সারা দেশে আরও রয়েছে। তো, এ রকম উদ্দেশ্যমূলক ও সন্দেহজনক প্রকল্পের পেছনে অপ্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় কমিয়ে তার কিছুটা হলেও হাওরের ওই দরিদ্র দুঃখী মানুষদের টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বরাদ্দ করলে রাষ্ট্রের সুবিধাভোগীদের পাতে খুব কি টান পড়বে?
জাতীয় সংসদে কত হালকা ধাঁচের বিষয় নিয়েই তো আলোচনা হয়। সে ক্ষেত্রে হাওরবাসী কৃষকের চিরকালীন এ দুঃখ নিয়ে খানিকটা আলোচনা কি হতে পারে না? দেশের নাগরিক সমাজের (সিভিল সোসাইটি) সদস্যরা কত নানা বিষয়ে তাঁদের মতামত দিচ্ছেন। তাঁরা কি মনে করেন না যে এটিও এমন একটি বিষয় যা নিয়ে কথা বললে হাওরাঞ্চলের লাখ লাখ প্রান্তিক মানুষ উপকৃত হয়? মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সময়ে বহু বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে দেশের নানা শ্রেণি ও পেশার অসহায় সাধারণ মানুষের কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আমরা কি আশা করতে পারি যে হাওরবাসী কৃষকের ফসল রক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা কেন একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে করা হবে না, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট সে মর্মে সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি রুল জারি করবেন?
সামনেই সাধারণ নির্বাচন। আমরা কি আশা করতে পারি যে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে জানাবে তারা ক্ষমতায় গেলে হাওরের উন্নয়নে পরবর্তী পাঁচ বছরে কে কী করবে? উপরিউক্ত প্রশ্নের জবাবগুলো কার কাছ থেকে কতটা পাওয়া যাবে, জানি না। তবে এটা নিশ্চিতভাবেই জানি যে হাওরের মানুষ গভীর কষ্টে আছে এবং তাদের সেই গুমোট বাঁধা কষ্ট জমতে জমতে অনেকটাই নিথর পাথরের রূপ ধারণ করে আছে, যেমনটি জমে পাথর হয়ে গেছে তাঁদের ব্যাপারে রাষ্ট্রের বিবেক।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থা, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই...
২৬ এপ্রিল ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই...
২৬ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই...
২৬ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাজধানীর মানুষ বিশেষত বিত্তবানেরা যখন জৌলুশপূর্ণ কেনাকাটায় ব্যস্ত এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন যখন নানা আঙ্গিকের ইফতার পার্টি আয়োজন নিয়ে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছে, ঠিক তখনই...
২৬ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫