জাহীদ রেজা নূর

কুবান কৃষি ইনস্টিটিউট থেকে প্রস্তুতিপর্ব শেষ করে যখন কুবান কৃষি ইনস্টিটিউটে গেলাম, তখন হোস্টেলে আমার রুমমেট হিসেবে পেলাম রুশ আলেগকে। আলেগের বয়স তখনই ত্রিশ পেরিয়ে। স্কুলশিক্ষক। সুযোগ পেয়ে মাস্টার্স করতে এসেছেন। আমি তাঁকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতাম। তিন সিটের সেই রুমে আরেকজন ছিল ইয়েমেনের করিম। করিমও আমার সঙ্গে কৃষি ইনস্টিটিউটে প্রিপারেটরি শেষ করেছিল।
আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়ত্ত করার সুযোগ হতো।
কোলিয়ার বয়সও বেশি। তবে আলেগের মতো নয়। ওর মাথা থেকে একরাশ সোনালি চুল নেমে এসেছে ঘাড় বেয়ে। খুব লম্বা নয়। আমাদের মতোই। পড়বে আমাদের সঙ্গেই। আমি আর ইয়েমেনের ছেলেটা যে ভাষাতত্ত্ব বিভাগে পড়তাম, কোলিয়াও সেই বিভাগের ছাত্র। আমাদের ক্লাসেই ভর্তি হয়েছে।
কোলিয়া আর্মিতে বাধ্যতামূলক সেবাদানের পর কিছু সময় কাজ করেছে। এর পর ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই ওর বয়সও ত্রিশের কাছাকাছি। তবে সেটা ওকে দেখে বোঝা যায় না। আলেগকে দেখতে বুড়ো বলে মনে হতো। কোলিয়া সে রকম নয়।
কোলিয়া খুব ধীরে ধীরে কথা বলত। কয়েক দিনের মধ্যে কোলিয়া সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় বুঝে ফেললাম। এক. বিধিবদ্ধ পড়াশোনার চেয়ে সাহিত্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ওর। নিজে কবিতা লেখে। বন্ধুদের নিয়ে যে আড্ডা দেয়, তাতে সিগারেটের আগুনের সঙ্গে পুড়তে থাকে পুশকিন, লেরমন্তভ, দস্তয়েভ্স্কিরা। নতুন সময় আসছে, গরবাচেভের নতুন ভাবনা নিয়ে হুলুস্থুল চলছে গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নে। তারও প্রভাব পড়ছে কোলিয়াদের আড্ডায়। দুই. কোলিয়া প্রচণ্ডভাবে সোভিয়েত–বিরোধী। গণতন্ত্রের প্রতি ওর টান প্রচণ্ড। তিন. কোলিয়া খুব গরিব। শুধু কালো রুটি আর চা খেয়েই কাটিয়ে দিতে পারে দিনের পর দিন। আমি যখন বাঙালি রান্না করতাম, তখন কোলিয়াকে খেতে আমন্ত্রণ জানাতাম, কিন্তু খুব কম সময় ও আমার সঙ্গে খেত। ব্যক্তিত্ব ছিল টনটনে।
পরীক্ষার সময় ও আমাকে খুব সাহায্য করত। একেবারে শিশুকে যেভাবে পড়া বোঝায় কোনো ভালো শিক্ষক, কোলিয়াও আমাকে সেভাবেই পড়া বোঝাত।
ও খেত সবচেয়ে সস্তা বেলামোর কানাল সিগারেট। আমি তখন খেতাম বুলগেরিয়ার রদোপি। ওর সিগারেট ফুরিয়ে গেলে মাঝে মাঝে আমার কাছ থেকে সিগারেট চেয়ে খেত।
একদিন আমাদের ক্লাসের রুশ ছেলেরা বসে আমাদের ঘরে আড্ডা মারছে। মাক্সিম, কোশেলিয়েভ, ভিতালি ছিল সে আড্ডায়, মনে পড়ে। ওদের আড্ডার সময় আমি কোনো কথা বললাম না। এর কারণ, আমার তখনো রুশ ভাষায় রুশ দেশের রাজনীতি বা সাহিত্য নিয়ে কথা বলার মতো মুরোদ হয়নি। একা একা সিগারেট খেতাম, মাঝে মাঝে ওদের চা বানিয়ে দিতাম। ওরা কালো রুটি, সসেজ, পেয়াজ পাতা খেত। আমাকেও চা বানিয়ে দিত।
একদিন কোলিয়ে এসে বলল, ‘আমি মনে হয় পড়ালেখা ছেড়ে দিচ্ছি।’
‘কেন তুমি পড়ালেখা ছেড়ে দেবে?’
‘আর বোলো না। কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস ক্লাসে আজ টিচারের সঙ্গে ঝগড়া করেছি।’
‘কেন?’
‘আমি বলেছি, ভাষাতত্ত্ব পড়তে এসেছি, আমি তো কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস জানতে আসিনি। এ কথা শুনে খুব খেপে গেছেন প্রফেসর জানিন। আমাকে হয়তো ভার্সিটি (রুশ ভাষায় ‘য়ুনিভার’) থেকে বের করে দেবে।’
কোলিয়ার শঙ্কা ভিত্তি পেয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই ওকে বিভিন্ন ফোরামে ডাকা হলো। ওর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলো, কেন কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসের প্রতি ওর এত অনীহা। হোস্টেলে ফিরে সে গল্প করত কোলিয়া। প্রথম দিকে বেশ বীরত্বের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টির লোকদের মোকাবিলা করছিল কোলিয়া। কিন্তু যতই সময় যেতে থাকল, বোঝা গেল কোলিয়ার ভাগ্য আসলে তারের ওপর ঝুলছে।
তারপর একদিন, আমি যখন রান্নাঘরে গরুর মাংস রান্না করছি, কোলিয়া একটা সিগারেট মুখে দাঁড়াল। দরজায় হেলাল দিয়ে বলল, ‘রেজা, আজ তোমার সঙ্গে খাব।’
‘অবশ্যই খাবে।’ বললাম আমি।
‘আজ তোমার সঙ্গে শেষবারের মতো খাব।’
‘মানে কী?’
‘আমাকে ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছে। আমার আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না।’
আমি ভেবেছিলাম, কোলিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে দেবে। কিন্তু ১৯৮৮ সালেও কমিউনিস্ট পার্টির যে ক্ষমতা ছিল, সেটা ছিল ভয়াবহ। কোলিয়া তার আগুন থেকে রেহাই পায়নি।
আমার খুব খারাপ লাগল। কোলিয়াকে খুব আপন ভাবতে শুরু করেছিলাম। এর কারণ ছিল। ওর কাছে রুশ ইতিহাস জানতে চাইলে ও খুব সহজ করে তা বোঝাত। যেমন, ও বলত এ রকম, ‘বইয়ে যা লেখা আছে, সেটাই তোমাকে বোঝাচ্ছি। এ দেশে জার ছিল। জাররা ছিল খারাপ। এর পর তাদের বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষেপে উঠল। সাধারণ মানুষ ছিল গরিব। ওরা যখন রাগ করল. তখন ওদের সংগঠিত করল একদল মানুষ। এরা ছিল ভালো। ভালোরা খারাপদের বিরুদ্ধে একাট্টা হলো। বুঝতে পারছ?’
এভাবেই বলত কোলিয়া।
শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকা কোলিয়াকে জিজ্ঞেস করোম, ‘এখন কী করবে?’
‘সেটা জানি না। কোনো একটা কাজ তো খুঁজে নিতে হবে। চলে যাব গ্রামে। তারপর কাজ খুঁজব।’
‘তোমার তো ডিগ্রি নেই। কী কাজ করবে?’
‘আইসক্রিম বিক্রি করব, চিবুরেকি (মাংসের পিঠা) বিক্রি করব। যৌথ খামারে গরু পালব, যখন যা পাব, তাই করব।’
‘আর কবিতা?’
এবার হাসল কোলিয়া। ‘কবিতা তো সাথে সাথে থাকে। ওটা চলবে।’
নিজের জিনিসপত্র নিয়ে কোলিয়া চলে গেল। এর পর আর কোনো দিন ওর সঙ্গে দেখা হয়নি। কোনো চিঠিও লেখেনি ও। প্রথম প্রথম ওর জন্য মন খারাপ হতো। ভাবতাম, কোথায় কী করছে কোলিয়া? এক সময় পড়াশোনার চাপে মন থেকে হারিয়ে গেল কোলিয়া।

কুবান কৃষি ইনস্টিটিউট থেকে প্রস্তুতিপর্ব শেষ করে যখন কুবান কৃষি ইনস্টিটিউটে গেলাম, তখন হোস্টেলে আমার রুমমেট হিসেবে পেলাম রুশ আলেগকে। আলেগের বয়স তখনই ত্রিশ পেরিয়ে। স্কুলশিক্ষক। সুযোগ পেয়ে মাস্টার্স করতে এসেছেন। আমি তাঁকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতাম। তিন সিটের সেই রুমে আরেকজন ছিল ইয়েমেনের করিম। করিমও আমার সঙ্গে কৃষি ইনস্টিটিউটে প্রিপারেটরি শেষ করেছিল।
আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়ত্ত করার সুযোগ হতো।
কোলিয়ার বয়সও বেশি। তবে আলেগের মতো নয়। ওর মাথা থেকে একরাশ সোনালি চুল নেমে এসেছে ঘাড় বেয়ে। খুব লম্বা নয়। আমাদের মতোই। পড়বে আমাদের সঙ্গেই। আমি আর ইয়েমেনের ছেলেটা যে ভাষাতত্ত্ব বিভাগে পড়তাম, কোলিয়াও সেই বিভাগের ছাত্র। আমাদের ক্লাসেই ভর্তি হয়েছে।
কোলিয়া আর্মিতে বাধ্যতামূলক সেবাদানের পর কিছু সময় কাজ করেছে। এর পর ফিরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই ওর বয়সও ত্রিশের কাছাকাছি। তবে সেটা ওকে দেখে বোঝা যায় না। আলেগকে দেখতে বুড়ো বলে মনে হতো। কোলিয়া সে রকম নয়।
কোলিয়া খুব ধীরে ধীরে কথা বলত। কয়েক দিনের মধ্যে কোলিয়া সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় বুঝে ফেললাম। এক. বিধিবদ্ধ পড়াশোনার চেয়ে সাহিত্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ওর। নিজে কবিতা লেখে। বন্ধুদের নিয়ে যে আড্ডা দেয়, তাতে সিগারেটের আগুনের সঙ্গে পুড়তে থাকে পুশকিন, লেরমন্তভ, দস্তয়েভ্স্কিরা। নতুন সময় আসছে, গরবাচেভের নতুন ভাবনা নিয়ে হুলুস্থুল চলছে গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নে। তারও প্রভাব পড়ছে কোলিয়াদের আড্ডায়। দুই. কোলিয়া প্রচণ্ডভাবে সোভিয়েত–বিরোধী। গণতন্ত্রের প্রতি ওর টান প্রচণ্ড। তিন. কোলিয়া খুব গরিব। শুধু কালো রুটি আর চা খেয়েই কাটিয়ে দিতে পারে দিনের পর দিন। আমি যখন বাঙালি রান্না করতাম, তখন কোলিয়াকে খেতে আমন্ত্রণ জানাতাম, কিন্তু খুব কম সময় ও আমার সঙ্গে খেত। ব্যক্তিত্ব ছিল টনটনে।
পরীক্ষার সময় ও আমাকে খুব সাহায্য করত। একেবারে শিশুকে যেভাবে পড়া বোঝায় কোনো ভালো শিক্ষক, কোলিয়াও আমাকে সেভাবেই পড়া বোঝাত।
ও খেত সবচেয়ে সস্তা বেলামোর কানাল সিগারেট। আমি তখন খেতাম বুলগেরিয়ার রদোপি। ওর সিগারেট ফুরিয়ে গেলে মাঝে মাঝে আমার কাছ থেকে সিগারেট চেয়ে খেত।
একদিন আমাদের ক্লাসের রুশ ছেলেরা বসে আমাদের ঘরে আড্ডা মারছে। মাক্সিম, কোশেলিয়েভ, ভিতালি ছিল সে আড্ডায়, মনে পড়ে। ওদের আড্ডার সময় আমি কোনো কথা বললাম না। এর কারণ, আমার তখনো রুশ ভাষায় রুশ দেশের রাজনীতি বা সাহিত্য নিয়ে কথা বলার মতো মুরোদ হয়নি। একা একা সিগারেট খেতাম, মাঝে মাঝে ওদের চা বানিয়ে দিতাম। ওরা কালো রুটি, সসেজ, পেয়াজ পাতা খেত। আমাকেও চা বানিয়ে দিত।
একদিন কোলিয়ে এসে বলল, ‘আমি মনে হয় পড়ালেখা ছেড়ে দিচ্ছি।’
‘কেন তুমি পড়ালেখা ছেড়ে দেবে?’
‘আর বোলো না। কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস ক্লাসে আজ টিচারের সঙ্গে ঝগড়া করেছি।’
‘কেন?’
‘আমি বলেছি, ভাষাতত্ত্ব পড়তে এসেছি, আমি তো কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস জানতে আসিনি। এ কথা শুনে খুব খেপে গেছেন প্রফেসর জানিন। আমাকে হয়তো ভার্সিটি (রুশ ভাষায় ‘য়ুনিভার’) থেকে বের করে দেবে।’
কোলিয়ার শঙ্কা ভিত্তি পেয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই ওকে বিভিন্ন ফোরামে ডাকা হলো। ওর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলো, কেন কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসের প্রতি ওর এত অনীহা। হোস্টেলে ফিরে সে গল্প করত কোলিয়া। প্রথম দিকে বেশ বীরত্বের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টির লোকদের মোকাবিলা করছিল কোলিয়া। কিন্তু যতই সময় যেতে থাকল, বোঝা গেল কোলিয়ার ভাগ্য আসলে তারের ওপর ঝুলছে।
তারপর একদিন, আমি যখন রান্নাঘরে গরুর মাংস রান্না করছি, কোলিয়া একটা সিগারেট মুখে দাঁড়াল। দরজায় হেলাল দিয়ে বলল, ‘রেজা, আজ তোমার সঙ্গে খাব।’
‘অবশ্যই খাবে।’ বললাম আমি।
‘আজ তোমার সঙ্গে শেষবারের মতো খাব।’
‘মানে কী?’
‘আমাকে ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছে। আমার আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না।’
আমি ভেবেছিলাম, কোলিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে দেবে। কিন্তু ১৯৮৮ সালেও কমিউনিস্ট পার্টির যে ক্ষমতা ছিল, সেটা ছিল ভয়াবহ। কোলিয়া তার আগুন থেকে রেহাই পায়নি।
আমার খুব খারাপ লাগল। কোলিয়াকে খুব আপন ভাবতে শুরু করেছিলাম। এর কারণ ছিল। ওর কাছে রুশ ইতিহাস জানতে চাইলে ও খুব সহজ করে তা বোঝাত। যেমন, ও বলত এ রকম, ‘বইয়ে যা লেখা আছে, সেটাই তোমাকে বোঝাচ্ছি। এ দেশে জার ছিল। জাররা ছিল খারাপ। এর পর তাদের বিরুদ্ধে মানুষ ক্ষেপে উঠল। সাধারণ মানুষ ছিল গরিব। ওরা যখন রাগ করল. তখন ওদের সংগঠিত করল একদল মানুষ। এরা ছিল ভালো। ভালোরা খারাপদের বিরুদ্ধে একাট্টা হলো। বুঝতে পারছ?’
এভাবেই বলত কোলিয়া।
শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকা কোলিয়াকে জিজ্ঞেস করোম, ‘এখন কী করবে?’
‘সেটা জানি না। কোনো একটা কাজ তো খুঁজে নিতে হবে। চলে যাব গ্রামে। তারপর কাজ খুঁজব।’
‘তোমার তো ডিগ্রি নেই। কী কাজ করবে?’
‘আইসক্রিম বিক্রি করব, চিবুরেকি (মাংসের পিঠা) বিক্রি করব। যৌথ খামারে গরু পালব, যখন যা পাব, তাই করব।’
‘আর কবিতা?’
এবার হাসল কোলিয়া। ‘কবিতা তো সাথে সাথে থাকে। ওটা চলবে।’
নিজের জিনিসপত্র নিয়ে কোলিয়া চলে গেল। এর পর আর কোনো দিন ওর সঙ্গে দেখা হয়নি। কোনো চিঠিও লেখেনি ও। প্রথম প্রথম ওর জন্য মন খারাপ হতো। ভাবতাম, কোথায় কী করছে কোলিয়া? এক সময় পড়াশোনার চাপে মন থেকে হারিয়ে গেল কোলিয়া।

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২০ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়
২৪ এপ্রিল ২০২২
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়
২৪ এপ্রিল ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২০ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়
২৪ এপ্রিল ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২০ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

আলেগ যখন মাস্টার্স করে ফিরে গেল গেলেনঝিকে, তখন হোস্টেলে আমার ঘরে এল নতুন অতিথি। ওর নাম কোলিয়া। নিকোলাই থেকে কোলিয়া। আমাদের হোস্টেলগুলোর রুম দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিয়ম চালু ছিল। টু–সিটেড রুমে একজন রুশ, একজন বিদেশি, আর থ্রি–সিটেড রুমে দুজন বিদেশি আর একজন রুশ থাকত। তাতে বিদেশিদের পক্ষে রুশ ভাষা দ্রুত আয়
২৪ এপ্রিল ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
২০ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে