Ajker Patrika

৯৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের ওপর নজদারি চলে, কীভাবে করে তারা

৯৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের ওপর নজদারি চলে, কীভাবে করে তারা

ম্যানেজার বা মানবসম্পদ বিভাগের নানা আচরণে যে কোনো কর্মীর ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, অফিস কর্তৃপক্ষ তাঁর ওপর নজরদারি করছে। এমন সন্দেহ কিন্তু অমূলক নয়। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় শতাভাগ করপোরেট প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তির সহায়তায় কর্মীদের ওপর নজরদারি করে। কোভিড মহামারীর আগে এই হার ছিল মাত্র ১০ শতাংশ।

প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের ওপর নজরদারি করতে নানা উপায় অবলম্বন করে। প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতিতে এই কাজটি অনেক সহজ ও সুলভ হয়ে উঠেছে। কর্মীদের কাজকর্মের ওপর নজর রাখার উদ্দেশ্যেই হোক বা তাঁদের অফিসে আসা যাওয়ার হিসাব রাখার উদ্দেশ্যেই হোক— এ নজরদারি এখন প্রায় সবখানে। অনেক প্রতিষ্ঠান সীমা অতিক্রমও করে ফেলছে। কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকাণ্ডে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা যেতে পারে কি না তা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক।

করোনা মহামারিতে কর্মস্থলে গিয়ে কাজ করা যখন অসম্ভব হয়ে পড়ে তখন অনেক প্রতিষ্ঠানই ঘরে থেকে কাজ করার উপায় বেছে নেয়। এ নিয়ে ওই সময় নানা মডেল ভাবা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানই অনেক পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়েছে। তবে, এখন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই কর্মীদের অফিসে ফেরার জন্য চাপ দিচ্ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ইনসাইডারের প্রতিবেদন অনুসারে, অফিসে ফেরার এ তাড়ার মধ্যে কর্মীদের ওপর নজরদারি বাড়ানোরও নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। 

কর্মীদের ওপর নজরদারিতে যেসব উপায় অবলম্বন করছে প্রতিষ্ঠানগুলো—

আইডি কার্ড সোয়াইপ
অনেক প্রতিষ্ঠানেই প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য একটি অপটিক্যাল ডিভাইসে পরিচয়পত্র সোয়াইপ করতে হয়। এ ছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের আইরিস অথবা ফেসিয়াল বায়োমেট্রিক পদ্ধতিও ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে কর্মীদের অফিসে অবস্থান করাকালীন সব তথ্য জমা হয় মানবসম্পদ বিভাগ বা সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপকের কাছে। করোনার পর অফিসে ফেরার নীতি প্রয়োগের শুরু করার ফলে কর্মীদের এ ধরনের এখন কোম্পানিগুলোর কাছে সোনার খনি হয়ে উঠেছে! 

ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যেক বিভাগের কর্মীদের অফিসে উপস্থিতির রেকর্ডে নজর রাখা শুরু করেছে ই–কমার্স জায়ান্ট আমাজন। এমনকি কর্মীরাও তাঁদের এই উপস্থিতি রেকর্ড দেখতে পান। এ রেকর্ডে প্রতি সপ্তাহে তাঁরা কয়দিন অফিসে এসেছেন— এমন আট সপ্তাহের তালিকা পর্যন্ত দেখা যায়। 

যেখানে আগে শুধু নিরাপত্তা ও স্থান সংকুলানের উদ্দেশ্যে গোপনে কর্মীদের যাওয়া–আসার রেকর্ড রাখা হতো। 

আমাজনের মুখপাত্র রব মুনোজ ইনসাইডারকে ই–মেইল বার্তায় বলেন, ‘একটি করপোরেট ভবনে কর্মীরা কয়দিন প্রবেশ করেছেন, এ টুল ব্যবহার করে কর্মী ও ব্যবস্থাপক উভয়েই তার হিসাব দেখতে পান। এ তথ্য ব্যবহার করে কর্মীরা অফিসে আসার বিষয়ে সহকর্মীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা করতে পারবেন।’ 

কোনো কর্মী অফিসে এসে কাজে পর্যাপ্ত সময় দিচ্ছেন কি না তা জানতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বহুজাতিক সংস্থা আইডি সোয়াইপ ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠান জেপি মরগানও একই উপায় অবলম্বন করেছে। 

জেপি মরগানের ড্যাশবোর্ডটি কর্মীদের কর্মদিবসে উপস্থিতির হার নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে সাহায্য করে। 

কি–স্ট্রোক, ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং ওয়েবক্যাম
কর্মীরা তাঁদের ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার কী করছেন, কোম্পানিকে সেটি জানার সুযোগ দেয় টাইম–ট্র্যাকিং সফটওয়্যারগুলো।

কর্মদিবস বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান টাইম ডক্টরের কনটেন্ট মার্কেটিং ম্যানেজার কার্লো বোরজা বলেন, তাঁদের সফটওয়্যার কর্মীদের কর্মক্ষমতা নিয়েও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এ ছাড়া সফটওয়্যারটিতে কর্মীদের অফিসে প্রবেশ করার ও বের হওয়া, বিশ্রাম নেওয়া, ইন্টারনেট ও অ্যাপ ব্যবহারের সময়ের রেকর্ড রাখা হয়। এমনকি টাইম ডক্টরের একটি টুল ব্যবহার করে কর্মীদের ব্যবহৃত ডিভাইসের ডিসপ্লের স্ক্রিনশট ও ভিডিও রেকর্ডিং রাখা যায়।

কার্লো বলেন, ‘আমরা কর্মীদের কর্মক্ষমতা বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বস্তি পেতে সাহায্য করি।’

কিছু কিছু সফটওয়্যার কর্মীদের কি–স্ট্রোকের রেকর্ড অর্থাৎ কি–বোর্ড ব্যবহারের ওপর নজরদারি করতে পারে। এ ছাড়া কর্মীদের অজ্ঞাতসারে তাঁদের ব্যবহৃত ডিভাইসের মাইক্রোফোন ও ওয়েবক্যাম চালু করতেও সক্ষম এসব সফটওয়্যার।

জেপি মরগান আরও বিস্তৃত তথ্য সংগ্রহের জন্য ‘ওয়ার্ক ফোর্স অ্যাক্টিভিটি ডেটা ইউটিলিটি’ নামের একটি সিস্টেম ব্যবহার করে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে কর্মীরা কতক্ষণ জুম কল, ই–মেইল এবং স্প্রেডশিটে (এক্সেল বা এমন অন্য কিছু) সময় ব্যয় করেন তা থেকে শুরু করে তাঁরা কতক্ষণ অফিসের সিটে বসে থাকছেন তা পর্যন্ত জানা যায়। 

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বের ওপর জরিপ চালিয়েছে রেজুমি বিল্ডার ডটকম। তারা দেখেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৯৬ শতাংশ ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানেই কর্মীদের ওপর নজরদারি করার মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে মহামারির আগে এ হার ছিল মাত্র ১০ শতাংশ। 

অফিসে কর্মীদের অবস্থান পর্যবেক্ষণের সেন্সর
কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মীরা অফিসের কোন জায়গায় বেশি সময় কাটান তার ওপরও নজর রাখে। অস্ট্রেলীয় প্রতিষ্ঠান এক্সওয়াই সেন্স এমন সব সেন্সর সরবরাহ করে যা অফিস পর্যবেক্ষণের জন্য ছাদে সেঁটে দেওয়া যায়। এসব সেন্সর অফিসের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত স্থান এবং সবচেয়ে কম ব্যবহৃত স্থান চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। 

এক্সওয়াই সেন্সের সিইও অ্যালেক্স বির্চ বলেন, ‘এ যন্ত্রটি কর্মীদের পরিচয় চিহ্নিত করতে না পারলেও প্রতি জনের বিপরীতে স্ক্রিনে একটি করে ডট দেখায়। এটি কারও ওপর নজরদারির জন্য নয় বরং অফিসের জায়গাগুলো কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা বোঝার জন্য ব্যবহার করা হয়।’ 

পানি শীতলকরণ যন্ত্র
হাই–টেক পানি শীতলকরণ যন্ত্রগুলোতেও কর্মীদের তথ্য জমা হয়। বিভিন্ন স্বাদযুক্ত পানীয় তৈরির যন্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘বেভি’ কর্মীরা কতবার যন্ত্রটি ব্যবহার করেন তার তথ্য সংগ্রহ করে। এ প্রতিষ্ঠানের সহ–প্রতিষ্ঠাতা শান গ্রান্ডি বলেন, তাঁদের মেশিনে সংগৃহীত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখেছেন, মহামারির আগের তুলনায় কর্মীদের ৯টার আগে অফিসে আসার বা ৫টার পরেও অফিসে অবস্থান করার হার বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুগলের নতুন এআই টুল

টি এইচ মাহির 
গুগলের নতুন এআই টুল

গুগল তাদের সফটওয়্যার ও ডিজিটাল সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আরও জোর দিচ্ছে। এরই মধ্যে গুগলের অনেক অ্যাপে এআই যুক্ত হয়েছে। এসব এআই টুলের কাজ আলাদা আলাদা। সম্প্রতি গুগল পরীক্ষামূলকভাবে কিছু নতুন এআই টুল চালু করেছে, যেগুলো এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়নি।

google

ডিসকো

ওয়েব ব্রাউজারের জন্য গুগল সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে নতুন এআই টুল ডিসকো। এই টুল মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং সহজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় একসঙ্গে অনেক ট্যাব খুলতে হয়। এতে কাজ এলোমেলো হয়ে যায়। ডিসকো এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে। এটি একাধিক খোলা ট্যাবকে একসঙ্গে গুছিয়ে কাজ করার সুযোগ দেবে। এমনকি খোলা ট্যাবগুলো থেকে আলাদা ওয়েব অ্যাপও তৈরি করতে পারবে। ডিসকো গুগলের জেমিনি থ্রি এআই দিয়ে পরিচালিত।

এই টুল ট্যাবগুলোকে জেনট্যাবস নামে আলাদা ওয়েব অ্যাপে রূপান্তর করবে। গুগলের মতে, এতে ব্রাউজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও সহজ ও কার্যকর হবে; বিশেষ করে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবীদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে। তবে টুলটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত হয়নি।

ভাইব কোডিং

গুগল তাদের এআই স্টুডিওতে ভাইব কোডিং নামে নতুন একটি সুবিধা যুক্ত করেছে। এই টুলের মাধ্যমে কোডিং না জেনেও অ্যাপ তৈরি করা যাবে। ব্যবহারকারীকে শুধু সাধারণ ভাষায় বলতে হবে, তিনি কোন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে চান। এরপর গুগল এআই স্টুডিও নিজেই সেই ধারণা অনুযায়ী একটি সম্পূর্ণ অ্যাপ তৈরি করে দেবে। এই অ্যাপে থাকবে ডিজাইন, প্রয়োজনীয় ফিচার এবং কোড। ব্যবহারকারী চাইলে পরে কোড পরিবর্তন করতে পারবেন। অ্যাপ তৈরির সময় এআই থেকে বিভিন্ন পরামর্শও পাওয়া যাবে। কোডিং বা প্রযুক্তিগত জটিলতা ছাড়া সহজে অ্যাপ বানানো সম্ভব হবে। এতে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আরও সহজ হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

mixboard

মিক্সবোর্ড

গুগলের জনপ্রিয় এআই টুলগুলোর একটি হলো ন্যানো বানানা। এই টুল ব্যবহার করে প্রতিদিন অনেক এআই ছবি তৈরি করা হচ্ছে। ছবি তৈরির ক্ষেত্রে এটি বেশ কার্যকর একটি টুল। ন্যানো বানানার ওপর ভিত্তি করেই গুগল চালু করেছে নতুন টুল মিক্সবোর্ড। এটি একটি পরীক্ষামূলক এআই-চালিত আইডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে চিন্তা, পরিকল্পনা

ও ধারণাগুলো সহজে সাজিয়ে উপস্থাপন করা যায়। মিক্সবোর্ডে পিডিএফ, ছবি ও ভিডিও আপলোড করা যাবে। এরপর একটি ছোট নির্দেশনা লিখতে হবে। এরপর এআই সেই বিষয় অনুযায়ী একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন কিংবা সাজানো রিপোর্ট তৈরি করে দেবে।

গবেষণা, পরিকল্পনা তৈরি অথবা উপস্থাপনার কাজে এই টুল ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে গুগলের এই নতুন এআই টুল যুক্তরাষ্ট্রে বেটা সংস্করণে চালু রয়েছে।

সূত্র: গুগল ব্লগ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৈদ্যুতিক জাহাজ নির্মাণশিল্পে চীনের আধিপত্য

ফিচার ডেস্ক
বৈদ্যুতিক জাহাজ নির্মাণশিল্পে চীনের আধিপত্য

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে কনটেম্পরারি অ্যাম্পেরেক্স টেকনোলজি (সিএটিএল) এবং গোশন হাই টেক নামের চীনের দুই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে এবার জাহাজ নির্মাণে নামছে। ফলে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ও নতুন শক্তিচালিত জাহাজে বিনিয়োগ বাড়িয়ে চীন বৈশ্বিক জাহাজনির্মাণ শিল্পে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ জোরদার হওয়ার কারণে সমুদ্রের জাহাজেও এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এই পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে চীনের ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

আগামী তিন বছরে সমুদ্রে নামবে বৈদ্যুতিক জাহাজ

বিশ্বের বড় ইভি ব্যাটারি নির্মাতা সিএটিএল জানিয়েছে, তাদের তৈরি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে সমুদ্রে চলাচল শুরু করবে। বর্তমানে বৈশ্বিক ইভি ব্যাটারি বাজারের প্রায় ৩৮ শতাংশ সিএটিএলের দখলে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে জাহাজে ব্যাটারি ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৯০০টি নৌযানে ব্যাটারি সরবরাহ করেছে তারা। তাদের ব্যাটারি সংযুক্ত চীনের প্রথম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্রুজ জাহাজ ‘ইউজিয়ান ৭৭’ চলতি বছরের জুলাই থেকে চালু হয়েছে।

কনটেইনার জাহাজে গোশনের ব্যাটারি

গোশন হাই টেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি ব্যাটারি প্যাক ব্যবহার করে ১৩২টি স্ট্যান্ডার্ড কনটেইনার বহনে সক্ষম একটি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব হয়েছে। ‘পাফার ফিশ ব্লু ০১’ নামের জাহাজটি যৌথভাবে তৈরি করেছে চীনের উহু শিপইয়ার্ড ও সানদিয়ানশুই নিউ এনার্জি টেকনোলজি। জাহাজটি এরই মধ্যে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি থেকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত সনদ পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে চলাচল শুরু করবে।

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা

২০২৩ সালের শেষে বিশ্বের প্রথম ৭০০ কনটেইনার বহনে সক্ষম সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক কনটেইনার জাহাজ সরবরাহ করে চীন। ক্লার্কসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষের দিকে বৈশ্বিক জাহাজ নির্মাণ অর্ডারের ৬৫ শতাংশ ছিল চীনা প্রতিষ্ঠানের দখলে।

গভীর সমুদ্রের এখনো সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ব্যাটারির অতিরিক্ত ওজন, যা জাহাজের ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে চলাচল করার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত চার্জিং অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। তবে আশা করা যাচ্ছে, ২০২৬ সালে চীন এই বাজারে সবার আগে প্রবেশ করবে।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা কতটুক: জেনে নিন বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা কতটুক: জেনে নিন বিশ্বে সর্বাধিক ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড

এক্সপ্রেস-ভিপিএন এবং পোলফিশের সমীক্ষা বলছে, একজন গড়পড়তা মানুষ ছয়টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আরও অবাক করার বিষয় হলো, ৪৩ শতাংশ মানুষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের পাসওয়ার্ড তাঁদের প্রিয়জনেরা সহজে আন্দাজ করে ফেলতে পারবে। ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ তাঁদের প্রথম নাম ব্যবহার করেন, আর প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ তাঁদের পাসওয়ার্ডে পোষা প্রাণীর নাম অথবা জন্মতারিখ জুড়ে দেন। এমনকি ২৬ শতাংশ মানুষ তাঁদের প্রাক্তনের নামও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন। অথচ ৮১ শতাংশ মানুষ বেশ আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের পাসওয়ার্ড খুব নিরাপদ। নর্ডপাসের ২ দশমিক ৫ টেরাবাইট লিক হওয়া ডেটা বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানিয়েছে, বেশির ভাগ পাসওয়ার্ড ভাঙতে ১ সেকেন্ডও লাগে না।

মহাদেশভেদে মানুষের এই পাসওয়ার্ড নির্বাচনের অদ্ভুত খেয়ালগুলো দেখে নেওয়া যাক।

ইউরোপে ফুটবল, আভিজাত্য ও কি-বোর্ডের কারসাজি

ইউরোপীয়দের কাছে কি-বোর্ডের বিন্যাস আর ফুটবলপ্রেমই পাসওয়ার্ডের প্রধান উৎস। যুক্তরাজ্যে জনপ্রিয় পাসওয়ার্ডগুলোর মধ্যে password, ashley এবং ফুটবল ক্লাব liverpool তালিকায় বেশ ওপরের দিকে।

ফ্রান্সে কি-বোর্ড সাজানো থাকে azerty ঢঙে, তাই সেখানে 123456-এর পরেই এর রাজত্ব। পাশাপাশি doudou বা marseille-এর মতো ফরাসি শব্দও জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড হিসেবে। জার্মানিতে passwort এবং dragon শব্দটি দেখা যায় পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে।

ইতালিতে নিজের প্রিয় ফুটবল দলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে Juventus শব্দটি সেখানে পাসওয়ার্ডের তালিকায় চতুর্থ। তবে তারা কিছুটা সৃজনশীলও বটে। অনেকে cambiami ব্যবহার করেন। এর অর্থ আমাকে পরিবর্তন করো।

স্পেনে দেশপ্রেম প্রবল। তাই পাসওয়ার্ড হিসেবে সেখানে España শব্দটি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগালে আবার ফুটবল ক্লাব benfica বা sporting শব্দ দুটি পাসওয়ার্ডের তালিকায় আধিপত্য বিস্তার করে আছে।

উত্তরের দেশগুলোর মধ্যে ডেনমার্কে webhompass বা hejmeddig (হ্যালো ইউ) এবং সুইডেনে hejsan শব্দগুলোর আধিপত্য আছে পাসওয়ার্ড হিসেবে। ফিনল্যান্ডে পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয় শব্দ salasana-এর ইংরেজে অর্থই হলো পাসওয়ার্ড। পোল্যান্ডে দেশপ্রেম ফুটে ওঠে polska শব্দে। এটি সে দেশে পাসওয়ার্ডের শব্দ হিসেবে জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডে পর্তুগিজ অভিবাসীদের প্রভাবে Portugal শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে আছে ১৫ নম্বরে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় michael, বেলজিয়ামে azerty, নেদারল্যান্ডসে welkom01, আয়ারল্যান্ডে liverpool এবং চেক প্রজাতন্ত্রে martin কিংবা veronika-এর মতো সাধারণ শব্দগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবে খুবই জনপ্রিয়।

আমেরিকায় যা গোপন কিন্তু প্রকাশ্য

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাসওয়ার্ডে ব্যবহৃত জনপ্রিয় শব্দ হলো secret। কী অদ্ভুত পরিহাস, যা গোপন করার কথা, তা-ই পাসওয়ার্ড! আমেরিকানরা baseball ও iloveyou শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে ভালোবাসে। কানাডায় আবার জাতীয় খেলা hockey-এর জয়জয়কার। মেক্সিকোতে alejandro বা carlos-এর মতো শব্দ এবং ব্রাজিলে brasil বা rental শব্দ দুটি পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়। চিলিতে তাদের ফুটবল দল colocolo পাসওয়ার্ড হিসেবে জনপ্রিয়, আর কলম্বিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে দেশের নাম Colombia-ই শেষ কথা।

সংখ্যাতত্ত্ব ও সংস্কৃতির প্রভাব এশিয়া এবং ওশেনিয়ায়

এশিয়ায় পাসওয়ার্ড নির্বাচনে সংখ্যাতত্ত্বের প্রভাব স্পষ্ট। জাপানে 123456789 সংখ্যার এই সিরিজ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে।

আর তারা কি-বোর্ড প্যাটার্ন 1qaz2wsx-ও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করে। চীনে জনপ্রিয় wangyut2 আর হংকংয়ে 5201314। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবেগের ছোঁয়া বেশি। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় sayang পাসওয়ার্ডটি বেশ ওপরের দিকে দেখা যায়।

এর অর্থ প্রিয়তম। ফিলিপাইনেও দেখা যায় iloveyou-এর আধিপত্য। থাইল্যান্ডে 221225-এর মতো সংখ্যা বেশ ব্যবহৃত হয় পাসওয়ার্ড হিসেবে।

ভারতে মানুষ সরলতা পছন্দ করে। তাই 123456 বা india123 এবং Indya123-ই মানুষের প্রথম পছন্দ। তুরস্কে এক অদ্ভুত ধরনের ঘটনা দেখা যায়। দেশটিতে ব্রিটিশ ব্যান্ড Anathema এতই জনপ্রিয় যে এটি পাসওয়ার্ডের শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অভিবাসীদের প্রভাবে pakistan শব্দটি পাসওয়ার্ড হিসেবে ১১ নম্বরে রয়েছে। ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ায় পাসওয়ার্ড হিসেবে password শব্দটির ব্যবহারের চল বেশি। এর পাশাপাশি pokemon বা lizottes শব্দ দুটিও পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আফ্রিকায় ভালোবাসার সহজ পাঠ

দক্ষিণ আফ্রিকায় পাসওয়ার্ড হিসেবে মানুষ 123456 এই সংখ্যার সেট থেকে বেরিয়ে কিছুটা রোমান্টিক হয়ে 123love ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।

সূত্র: নর্ডপাস, ইভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

ফিচার ডেস্ক
ভুয়া ওয়েবসাইট চেনার উপায়

ভুয়া ওয়েবসাইটগুলো আসল ওয়েবসাইটের মতো হতে পারে। যদিও ছোট ছোট পার্থক্য থাকে, যেগুলো আপনি একটু খেয়াল করলে চিনতে পারবেন।

ইউআরএল দেখুন

ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে ইউআরএল ঠিকভাবে দেখে নিন। আসল ওয়েবসাইটের ইউআরএল সাধারণত এইচটিটিপিএস দিয়ে শুরু হয়, যেখানে ‘এস’-এর মাধ্যমে জানানো হয় যে সাইটটি নিরাপদ। যদি ইউআরএলে শুধু এইচটিটিপি থাকে, তাহলে সেটা সন্দেহজনক হতে পারে।

ওয়েবসাইটের বানান চেক করুন

একই ধরনের নাম কিংবা বানানে সামান্য পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় সঠিক ওয়েবসাইট চিনতে সমস্যা হয়। তাই ওয়েবসাইটের বিষয়ে সন্দেহ হলে বানান দেখে নিতে পারেন।

লোগো ও ডিজাইন দেখুন

অনেক সময় ভুয়া ওয়েবসাইটগুলো আসল প্রতিষ্ঠানের লোগো ও ডিজাইন হুবহু নকল করে। কিন্তু সেখানে কিছু অসামঞ্জস্য থাকতে পারে। লোগো কিংবা ছবি অস্পষ্ট থাকলে সেটি সন্দেহজনক হতে পারে।

অনলাইন ওয়েবসাইট চেকার ব্যবহার করুন

অনলাইন ওয়েবসাইট চেকারগুলো বেশ সহায়ক। অনেক ওয়েবসাইট, যেমন ভাইরাস টোটাল, গুগল সেফ ব্রাউজিং ইউআরএল ভয়েডের মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন, সাইটটি নিরাপদ কি না। এই চেকারগুলো ওয়েবসাইটের সুরক্ষা যাচাই করার জন্য উপযুক্ত সহায়তা দিয়ে থাকে।

ওয়েবসাইটের রিভিউ এবং রেটিং দেখুন

যদি আপনি কোনো নতুন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন, তাহলে তার রিভিউ এবং রেটিং চেক করুন। এ ছাড়া সামাজিক মিডিয়ায় ওই সাইটের বিষয়ে গ্রাহকেরা কী বলছেন, তা-ও দেখে নিতে পারেন।

সূত্র: ডিজিসার্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত