
বাংলাদেশের মানুষের ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রবেশের শুরুর দিকে ওয়েবে বাংলা লেখা বা বাংলায় কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। ওই সময় ওয়েবসাইটে কোনো বাংলা লেখা ছবি কিংবা পিডিএফ করে দিতে হতো। ই–মেইল করার ক্ষেত্রে বাংলা লেখা একেবারেই অসম্ভব ছিল।
তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার। প্রথম ইউনিকোড বাংলা লেখার সফটওয়্যার এটি। শুধু তা–ই নয়, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে তিনি এটি ছড়িয়ে দিলেন। এ ছাড়া এটি ওপেন সোর্স। অর্থাৎ এর সোর্সকোড উন্মুক্ত। যে কেউ এটির পরিবর্তন ও ডেভেলপমেন্টে অবদান রাখতে পারেন।
অভ্রর জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী। মূলত ইউনিকোড ভিত্তিক হওয়ায় ইন্টারনেটে লেখালেখির সুবিধা আর ফোনেটিক পদ্ধতিতে (কি–বোর্ডে রোমান হরফ লিখে বাংলায় পরিবর্তনের সুবিধা) লেখার সুযোগ—এই দুটি কারণে তরুণ প্রজন্মের কাছে অভ্রর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে কোনো বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার নেই। এখন ব্লগ, ফেসবুকসহ সব সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অভ্র দিয়ে বাংলা লেখা হচ্ছে।
অভ্র তৈরির শুরুর গল্প
আজকের অভ্র কি–বোর্ড নামের সফটওয়্যারটি বিশেষ করে এক ব্যক্তির ১০ বছরের পরিশ্রমের ফল। মেহদী হাসান খান ৯ম শ্রেণি থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিংয়ের বই কিনে ঘরে বসেই প্রোগ্রামিং শিখতেন।
১৯৮৬ সালের ২৩ জুলাই ঢাকায় জন্ম মেহদী হাসান খানের। ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন মেহদী। ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন নটর ডেম কলেজে। ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায় গিয়েছিলেন মেহদী। সেখানে বাংলা ইনোভেশন থ্রু ওপেন সোর্স—বায়োসের স্টলে গিয়ে তাঁর ভাষায় ‘প্রথম খাঁটি বাংলা’ ওয়েবসাইট দেখলেন। ইউনিকোডে বাংলা লেখাও দেখলেন। ইউনিবাংলা নামে তারা পুরো একটা অপারেটিং সিস্টেমও তৈরি করেছিল। অবশ্য সেটি ছিল মূলত লিনাক্স–এরই একটি সংস্করণ। বাসায় ফিরে তাদের ওপেন টাইপ ফন্ট ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করেন। কিন্তু এটি শুধু বাংলা ভাষায় কাস্টমাইজ করা লিনাক্সের জন্য। ক্যারেক্টার চার্টে মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে বাংলা লিখতে হয়। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজের জন্য এই সুবিধা ছিল না।
তখনই মেহদী সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডোজের জন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার বানাবেন। তিনি বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্টটি নিজের কম্পিউটারে ইনস্টল করেন। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা ভিজ্যুয়াল বেসিক ডটনেট দিয়ে লিখে ফেলেন ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার। ফোনেটিক পদ্ধতিও তৈরি করে ফেলেন। সেটি ছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন।
পরে ভারতের একটি বাংলা ফন্ট প্রতিযোগিতায় ই–মেইল করে নিজের বানানো প্রোটোটাইপ পাঠান মেহদী হাসান। তারা জানাল, অ্যাপ্লিকেশনটি ঘন ঘন ক্র্যাশ করেছে।
আবার রাত জেগে প্রোটোটাইপের বাগ সারানোর কাজ করেন মেহদী হাসান। ডটনেট বাদ দিয়ে ক্ল্যাসিক ভিজুয়াল বেসিকে সবগুলো কোড নতুন করে লিখেন মেহদী। পরবর্তীতে আবারও একেবারে নতুন করে কোড লেখা হয় Delphi/Object Pascal–এ। বর্তমানে অভ্র এই ফ্রেমওয়ার্কেই আছে।
মেহদী হাসান ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করেন অভ্র নামের সফটওয়্যারটি। অভিধান ঘেঁটে ‘অভ্র’ শব্দ পছন্দ হয় মেহদীর। অভ্র মানে আকাশ। ইউনিকোডের পাশাপাশি বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, তাই উন্মুক্ত আকাশের প্রতিশব্দ বেছে নেন মেহদী। সবাই যাতে অভ্র ইন্টারনেট থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে পারে, সে জন্য একটি ওয়েবসাইটও প্রকাশ করেন মেহদী। সেটির নাম ওমিক্রনল্যাব ডটকম। মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওমিক্রনিক রূপান্তর’ বই থেকে ওমিক্রন নামটি নিয়েছিলেন তিনি।
অভ্রর প্রথম সংস্করণে লেখার জন্য বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট ছিল। অনেকে কি–বোর্ড মুখস্থ করার ভয়ে রোমান হরফে বাংলা লিখতেন। তাঁদের জন্য সহজে বাংলা টাইপ করতে মেহদী নিজেই বানিয়ে ফেলেন অভ্র ইজি। অনলাইন ফোরামের যুগ সে সময়। তাই ওমিক্রনের ওয়েবসাইটে ফোরাম খোলা হলো। ফোরামে অভ্র’র ব্যবহারকারীরা ফিডব্যাক দিতেন, বাগ রিপোর্ট করতেন, প্রশ্নোত্তর চলতো। পরে অভ্রের সঙ্গে যুক্ত হন—রিফাত উন নবী, তানবিন ইসলাম, শাবাব মুস্তাফা, ওমর ওসমান—আরও পরে সারিম খান। তাঁরা সবাই অভ্রের জন্য কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।
ধীরে ধীরে অভ্রতে যোগ হয় অভ্র ইজি, ন্যাশনাল, প্রভাত, মুনীর অপটিমা, ইউনি বিজয় (২০১১ সাল থেকে এটি নেই) বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট। বর্তমানে অভ্রের ৫.৬. ০ সংস্করণ ওমিক্রনের ওয়েবসাইট থেকে নামানো যায়। এখনো এটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। অভ্রের স্লোগান হলো, ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত।’
অভ্র দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ‘কম্পিউটার টুমোরো’ মেহদীর অভ্রকে নিয়ে ফিচার প্রতিবেদন করে। ম্যাগাজিনটির সেই সংখ্যার সঙ্গে অভ্রের সিডির একটি করে কপি ফ্রি দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে ‘অভ্র কি–বোর্ড পোর্টেবল এডিশন’ বিনা মূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্রের সোর্স কোড উন্মুক্ত, অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই গিটহাব রিপোজিটরি থেকে এর উন্নয়নে অংশ নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ভার্সন ৫–এর পর থেকে অভ্রকে ফ্রিওয়্যার থেকে ওপেন সোর্সে রূপান্তর করা হয় এবং এটি ‘মজিলা পাবলিক লাইসেন্স’ (এমপিএল)–এর অধীনে লাইসেন্সকৃত।
ওপেন সোর্স হওয়ায় অভ্র সফটপিডিয়াতে শতভাগ স্পাইওয়্যার/অ্যাডওয়্যার/ভাইরাস মুক্ত সফটওয়্যার হিসেবে স্বীকৃত। মাইক্রোসফটের অনলাইন সংগ্রহশালায় ইন্ডিক ভাষাগুলোর সমাধানের তালিকায় অভ্র কি–বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভ্র ব্যবহার করে।
এ ছাড়া অভ্রকে বাংলা কি–বোর্ড রিসোর্স হিসেবে ইউনিকোড সংস্থার ওয়েব সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিস বাংলা তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য অভ্র টিমকে ২০১১ সালে ‘বিশেষ অবদান পুরস্কার’ (Special Contribution Award) দেয়।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২৫ সালের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে একুশে পদকের জন্য মেহদী হাসান খানের নাম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
ডা. মেহদী হাসান খান এখন পুরো দস্তুর প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামিং নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা। অবসর ছেলে অর্ক হাসান খানের সঙ্গে।
এক নজরে ‘অভ্র’:
মূল উদ্ভাবক: ডা. মেহদী হাসান খান
উন্নয়নকারী: ওমিক্রনল্যাব
প্রাথমিক সংস্করণ: ২৬ মার্চ ২০০৩
স্থায়ী মুক্তি: ৫.৬. ০ / ২৭ আগস্ট ২০১৯
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: সি++, ডেলফি
অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ এক্স পি, ভিস্তা, ৭, ৮,৮. ১,১০, লিনাক্স, ম্যাক।
প্ল্যাটফর্ম: উইন্ডোজ (অভ্র), লিনাক্স (ibus-avro), ম্যাক ওএস (iAvro), অ্যান্ড্রয়েড (রিদমিক), আইওএস (রিদমিক)।
লাইসেন্স: ওপেন সোর্স, মোজিলা পাবলিক লাইসেন্স।
লে–আউট: প্রভাত, মুনির অপটিমা, অভ্র ইজি (ওমিক্রন ল্যাব প্রকাশিত সহজ একটি লে–আউট), বর্ণনা, জাতীয় (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রকাশিত বাংলা লে–আউট)
মেহদী হাসান খান অভ্র নিয়ে কখনো বাণিজ্যিক চিন্তা করেননি। শখের বসে তৈরি করা অভ্র বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় ব্যবহার করেছে। যার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে নির্বাচন কমিশনের ৫ কোটি টাকার মতো বেঁচে যায়। ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অভ্র এখন ব্যাপক জনপ্রিয়।
অভ্র ও বিজয় দ্বন্দ্ব
কম্পিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। আর শুরুটা হয় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি শহীদ লিপি। দ্রুতই তাঁর অবস্থান দখল করে বিজয়।
বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ মে। আনন্দ কম্পিউটারস কি–বোর্ড উন্মোচন করে ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আনন্দ কম্পিউটারসের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা জব্বার। বিজয় বাংলা কম্পিউটিং প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত ডস ও উইন্ডোজভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের উন্নয়ন করা হয়। আর এ সময় থেকে উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশে সমানভাবে বাংলা ব্যবহার চলতে থাকে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ করতে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ইউনিকোডভিত্তিক সফটওয়্যার হওয়ায় বাংলা কম্পিউটিংয়ে অভ্র শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।
কিন্তু বিজয়ের স্বত্বাধিকারী ও বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার দৈনিক জনকণ্ঠে ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ‘সাইবার যুদ্ধের যুগে প্রথম পা। একুশ শতক’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধের মূল বক্তব্য ছিল ওই সময় সরকারি অনেক ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। তবে লেখার মধ্যে অভ্র কি–বোর্ড, জাতিসংঘের ইউএনডিপি এবং নির্বাচন কমিশনকে টেনে আনেন। অভ্রকে ‘পাইরেটেড সফটওয়্যার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিজয় সফটওয়্যারের পাইরেটেড সংস্করণ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই হ্যাকাররা চরম পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। এ হ্যাকার ও পাইরেটদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির নামও যুক্ত আছে। অভ্র নামক একটি পাইরেটেড বাংলা সফটওয়্যারকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির অবদান সবচেয়ে বেশি।
তাঁর এই লেখার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্র ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। ফেসবুক, ব্লগ ও বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। কিছু কিছু সাইট প্রতিবাদে তাদের ব্যানারও পরিবর্তন করে।
কিন্তু মোস্তাফা জব্বার ক্ষান্ত হননি। তিনি কপিরাইট অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন অভ্র সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রন ল্যাবের প্রধান নির্বাহী মেহদী হাসান খানের বিরুদ্ধে। কপিরাইট অফিস মেহদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে মেহদী হাসান খান ও মোস্তাফা জব্বারের মধ্যে সমঝোতা হয়। অভ্র কি–বোর্ড সফটওয়্যার থেকে ইউনিবিজয় লে–আউট সরিয়ে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ‘বাণিজ্যিক বিজয়’–এর পরিবর্তে বিনা মূল্যে অভ্র ব্যবহার করে। বেঁচে যায় রাষ্ট্রের ৫ কোটি টাকা। অনেকে বলেন, অভ্র একটি ইউনিকোড, বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়া সত্ত্বেও মোস্তাফা জব্বারের এমন আচরণের পেছনে রয়েছে এই প্রকল্প হাতছাড়া হওয়া। নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে বিজয়ের পরিবর্তে অভ্র ব্যবহার করায় প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলেও জনকণ্ঠের ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার।
বিজয়–রিদমিক বিতর্ক
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয় বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। এরপর এই অ্যাপটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মোস্তাফা জব্বার। সেই স্ট্যাটাসে এই জাতীয় অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে গুগলের পক্ষ থেকে রিদমিক এবং ইউনিবিজয় কি–বোর্ডের ডেভেলপারের কাছে পৃথক ই–মেইল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মোস্তাফা জব্বার অ্যাপ দুটির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়েছেন গুগলের কাছে। আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই গুগল যুক্তরাষ্ট্রের DMCA আইন অনুসারে অ্যাপ দুটি অপসারণ করেছে।
পরে নতুন লে–আউট করে প্লেস্টোরে আবারও রিদমিক কি–বোর্ড প্রকাশ করা হয়।
মূলত অভ্রের বিরুদ্ধে কি–বোর্ডের লে–আউট কপি করার অভিযোগ করে থাকেন মোস্তাফা জব্বার। যদিও বিজয়ের কপিরাইট (১৯৮৮) নাকি পেটেন্ট (২০০৮) কোনটি নিয়ে অভিযোগ তা পরিষ্কার করা হয়নি। বিজয়ের পেটেন্ট দাবি করার বিষয়টি দুর্বল কারণ ২০০৮ নাগাদ এমন প্রচুর পেটেন্ট আছে। বিজয়ের লে–আউট কপিরাইটের বিষয়টিও বিতর্কিত। অনেকে মনে করেন, মুনীর লে–আউটের সঙ্গে বিজয়ের পার্থক্য সামান্যই। অথচ একই যুক্তিতে অভ্রতে ইউনিবিজয় কি–বোর্ড যুক্ত করা হয়েছিল, যেটিতে বিজয়ের লে–আউটের কয়েকটি অক্ষর এদিক–সেদিক করা ছিল। এ ছাড়া ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়ায় এর লে–আউট ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।

বাংলাদেশের মানুষের ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রবেশের শুরুর দিকে ওয়েবে বাংলা লেখা বা বাংলায় কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। ওই সময় ওয়েবসাইটে কোনো বাংলা লেখা ছবি কিংবা পিডিএফ করে দিতে হতো। ই–মেইল করার ক্ষেত্রে বাংলা লেখা একেবারেই অসম্ভব ছিল।
তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার। প্রথম ইউনিকোড বাংলা লেখার সফটওয়্যার এটি। শুধু তা–ই নয়, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে তিনি এটি ছড়িয়ে দিলেন। এ ছাড়া এটি ওপেন সোর্স। অর্থাৎ এর সোর্সকোড উন্মুক্ত। যে কেউ এটির পরিবর্তন ও ডেভেলপমেন্টে অবদান রাখতে পারেন।
অভ্রর জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী। মূলত ইউনিকোড ভিত্তিক হওয়ায় ইন্টারনেটে লেখালেখির সুবিধা আর ফোনেটিক পদ্ধতিতে (কি–বোর্ডে রোমান হরফ লিখে বাংলায় পরিবর্তনের সুবিধা) লেখার সুযোগ—এই দুটি কারণে তরুণ প্রজন্মের কাছে অভ্রর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে কোনো বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার নেই। এখন ব্লগ, ফেসবুকসহ সব সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অভ্র দিয়ে বাংলা লেখা হচ্ছে।
অভ্র তৈরির শুরুর গল্প
আজকের অভ্র কি–বোর্ড নামের সফটওয়্যারটি বিশেষ করে এক ব্যক্তির ১০ বছরের পরিশ্রমের ফল। মেহদী হাসান খান ৯ম শ্রেণি থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিংয়ের বই কিনে ঘরে বসেই প্রোগ্রামিং শিখতেন।
১৯৮৬ সালের ২৩ জুলাই ঢাকায় জন্ম মেহদী হাসান খানের। ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন মেহদী। ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন নটর ডেম কলেজে। ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায় গিয়েছিলেন মেহদী। সেখানে বাংলা ইনোভেশন থ্রু ওপেন সোর্স—বায়োসের স্টলে গিয়ে তাঁর ভাষায় ‘প্রথম খাঁটি বাংলা’ ওয়েবসাইট দেখলেন। ইউনিকোডে বাংলা লেখাও দেখলেন। ইউনিবাংলা নামে তারা পুরো একটা অপারেটিং সিস্টেমও তৈরি করেছিল। অবশ্য সেটি ছিল মূলত লিনাক্স–এরই একটি সংস্করণ। বাসায় ফিরে তাদের ওপেন টাইপ ফন্ট ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করেন। কিন্তু এটি শুধু বাংলা ভাষায় কাস্টমাইজ করা লিনাক্সের জন্য। ক্যারেক্টার চার্টে মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে বাংলা লিখতে হয়। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজের জন্য এই সুবিধা ছিল না।
তখনই মেহদী সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডোজের জন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার বানাবেন। তিনি বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্টটি নিজের কম্পিউটারে ইনস্টল করেন। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা ভিজ্যুয়াল বেসিক ডটনেট দিয়ে লিখে ফেলেন ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার। ফোনেটিক পদ্ধতিও তৈরি করে ফেলেন। সেটি ছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন।
পরে ভারতের একটি বাংলা ফন্ট প্রতিযোগিতায় ই–মেইল করে নিজের বানানো প্রোটোটাইপ পাঠান মেহদী হাসান। তারা জানাল, অ্যাপ্লিকেশনটি ঘন ঘন ক্র্যাশ করেছে।
আবার রাত জেগে প্রোটোটাইপের বাগ সারানোর কাজ করেন মেহদী হাসান। ডটনেট বাদ দিয়ে ক্ল্যাসিক ভিজুয়াল বেসিকে সবগুলো কোড নতুন করে লিখেন মেহদী। পরবর্তীতে আবারও একেবারে নতুন করে কোড লেখা হয় Delphi/Object Pascal–এ। বর্তমানে অভ্র এই ফ্রেমওয়ার্কেই আছে।
মেহদী হাসান ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করেন অভ্র নামের সফটওয়্যারটি। অভিধান ঘেঁটে ‘অভ্র’ শব্দ পছন্দ হয় মেহদীর। অভ্র মানে আকাশ। ইউনিকোডের পাশাপাশি বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, তাই উন্মুক্ত আকাশের প্রতিশব্দ বেছে নেন মেহদী। সবাই যাতে অভ্র ইন্টারনেট থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে পারে, সে জন্য একটি ওয়েবসাইটও প্রকাশ করেন মেহদী। সেটির নাম ওমিক্রনল্যাব ডটকম। মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওমিক্রনিক রূপান্তর’ বই থেকে ওমিক্রন নামটি নিয়েছিলেন তিনি।
অভ্রর প্রথম সংস্করণে লেখার জন্য বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট ছিল। অনেকে কি–বোর্ড মুখস্থ করার ভয়ে রোমান হরফে বাংলা লিখতেন। তাঁদের জন্য সহজে বাংলা টাইপ করতে মেহদী নিজেই বানিয়ে ফেলেন অভ্র ইজি। অনলাইন ফোরামের যুগ সে সময়। তাই ওমিক্রনের ওয়েবসাইটে ফোরাম খোলা হলো। ফোরামে অভ্র’র ব্যবহারকারীরা ফিডব্যাক দিতেন, বাগ রিপোর্ট করতেন, প্রশ্নোত্তর চলতো। পরে অভ্রের সঙ্গে যুক্ত হন—রিফাত উন নবী, তানবিন ইসলাম, শাবাব মুস্তাফা, ওমর ওসমান—আরও পরে সারিম খান। তাঁরা সবাই অভ্রের জন্য কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।
ধীরে ধীরে অভ্রতে যোগ হয় অভ্র ইজি, ন্যাশনাল, প্রভাত, মুনীর অপটিমা, ইউনি বিজয় (২০১১ সাল থেকে এটি নেই) বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট। বর্তমানে অভ্রের ৫.৬. ০ সংস্করণ ওমিক্রনের ওয়েবসাইট থেকে নামানো যায়। এখনো এটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। অভ্রের স্লোগান হলো, ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত।’
অভ্র দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ‘কম্পিউটার টুমোরো’ মেহদীর অভ্রকে নিয়ে ফিচার প্রতিবেদন করে। ম্যাগাজিনটির সেই সংখ্যার সঙ্গে অভ্রের সিডির একটি করে কপি ফ্রি দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে ‘অভ্র কি–বোর্ড পোর্টেবল এডিশন’ বিনা মূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্রের সোর্স কোড উন্মুক্ত, অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই গিটহাব রিপোজিটরি থেকে এর উন্নয়নে অংশ নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ভার্সন ৫–এর পর থেকে অভ্রকে ফ্রিওয়্যার থেকে ওপেন সোর্সে রূপান্তর করা হয় এবং এটি ‘মজিলা পাবলিক লাইসেন্স’ (এমপিএল)–এর অধীনে লাইসেন্সকৃত।
ওপেন সোর্স হওয়ায় অভ্র সফটপিডিয়াতে শতভাগ স্পাইওয়্যার/অ্যাডওয়্যার/ভাইরাস মুক্ত সফটওয়্যার হিসেবে স্বীকৃত। মাইক্রোসফটের অনলাইন সংগ্রহশালায় ইন্ডিক ভাষাগুলোর সমাধানের তালিকায় অভ্র কি–বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভ্র ব্যবহার করে।
এ ছাড়া অভ্রকে বাংলা কি–বোর্ড রিসোর্স হিসেবে ইউনিকোড সংস্থার ওয়েব সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিস বাংলা তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য অভ্র টিমকে ২০১১ সালে ‘বিশেষ অবদান পুরস্কার’ (Special Contribution Award) দেয়।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২৫ সালের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে একুশে পদকের জন্য মেহদী হাসান খানের নাম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
ডা. মেহদী হাসান খান এখন পুরো দস্তুর প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামিং নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা। অবসর ছেলে অর্ক হাসান খানের সঙ্গে।
এক নজরে ‘অভ্র’:
মূল উদ্ভাবক: ডা. মেহদী হাসান খান
উন্নয়নকারী: ওমিক্রনল্যাব
প্রাথমিক সংস্করণ: ২৬ মার্চ ২০০৩
স্থায়ী মুক্তি: ৫.৬. ০ / ২৭ আগস্ট ২০১৯
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: সি++, ডেলফি
অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ এক্স পি, ভিস্তা, ৭, ৮,৮. ১,১০, লিনাক্স, ম্যাক।
প্ল্যাটফর্ম: উইন্ডোজ (অভ্র), লিনাক্স (ibus-avro), ম্যাক ওএস (iAvro), অ্যান্ড্রয়েড (রিদমিক), আইওএস (রিদমিক)।
লাইসেন্স: ওপেন সোর্স, মোজিলা পাবলিক লাইসেন্স।
লে–আউট: প্রভাত, মুনির অপটিমা, অভ্র ইজি (ওমিক্রন ল্যাব প্রকাশিত সহজ একটি লে–আউট), বর্ণনা, জাতীয় (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রকাশিত বাংলা লে–আউট)
মেহদী হাসান খান অভ্র নিয়ে কখনো বাণিজ্যিক চিন্তা করেননি। শখের বসে তৈরি করা অভ্র বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় ব্যবহার করেছে। যার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে নির্বাচন কমিশনের ৫ কোটি টাকার মতো বেঁচে যায়। ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অভ্র এখন ব্যাপক জনপ্রিয়।
অভ্র ও বিজয় দ্বন্দ্ব
কম্পিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। আর শুরুটা হয় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি শহীদ লিপি। দ্রুতই তাঁর অবস্থান দখল করে বিজয়।
বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ মে। আনন্দ কম্পিউটারস কি–বোর্ড উন্মোচন করে ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আনন্দ কম্পিউটারসের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা জব্বার। বিজয় বাংলা কম্পিউটিং প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত ডস ও উইন্ডোজভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের উন্নয়ন করা হয়। আর এ সময় থেকে উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশে সমানভাবে বাংলা ব্যবহার চলতে থাকে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ করতে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ইউনিকোডভিত্তিক সফটওয়্যার হওয়ায় বাংলা কম্পিউটিংয়ে অভ্র শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।
কিন্তু বিজয়ের স্বত্বাধিকারী ও বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার দৈনিক জনকণ্ঠে ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ‘সাইবার যুদ্ধের যুগে প্রথম পা। একুশ শতক’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধের মূল বক্তব্য ছিল ওই সময় সরকারি অনেক ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। তবে লেখার মধ্যে অভ্র কি–বোর্ড, জাতিসংঘের ইউএনডিপি এবং নির্বাচন কমিশনকে টেনে আনেন। অভ্রকে ‘পাইরেটেড সফটওয়্যার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিজয় সফটওয়্যারের পাইরেটেড সংস্করণ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই হ্যাকাররা চরম পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। এ হ্যাকার ও পাইরেটদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির নামও যুক্ত আছে। অভ্র নামক একটি পাইরেটেড বাংলা সফটওয়্যারকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির অবদান সবচেয়ে বেশি।
তাঁর এই লেখার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্র ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। ফেসবুক, ব্লগ ও বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। কিছু কিছু সাইট প্রতিবাদে তাদের ব্যানারও পরিবর্তন করে।
কিন্তু মোস্তাফা জব্বার ক্ষান্ত হননি। তিনি কপিরাইট অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন অভ্র সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রন ল্যাবের প্রধান নির্বাহী মেহদী হাসান খানের বিরুদ্ধে। কপিরাইট অফিস মেহদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে মেহদী হাসান খান ও মোস্তাফা জব্বারের মধ্যে সমঝোতা হয়। অভ্র কি–বোর্ড সফটওয়্যার থেকে ইউনিবিজয় লে–আউট সরিয়ে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ‘বাণিজ্যিক বিজয়’–এর পরিবর্তে বিনা মূল্যে অভ্র ব্যবহার করে। বেঁচে যায় রাষ্ট্রের ৫ কোটি টাকা। অনেকে বলেন, অভ্র একটি ইউনিকোড, বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়া সত্ত্বেও মোস্তাফা জব্বারের এমন আচরণের পেছনে রয়েছে এই প্রকল্প হাতছাড়া হওয়া। নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে বিজয়ের পরিবর্তে অভ্র ব্যবহার করায় প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলেও জনকণ্ঠের ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার।
বিজয়–রিদমিক বিতর্ক
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয় বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। এরপর এই অ্যাপটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মোস্তাফা জব্বার। সেই স্ট্যাটাসে এই জাতীয় অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে গুগলের পক্ষ থেকে রিদমিক এবং ইউনিবিজয় কি–বোর্ডের ডেভেলপারের কাছে পৃথক ই–মেইল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মোস্তাফা জব্বার অ্যাপ দুটির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়েছেন গুগলের কাছে। আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই গুগল যুক্তরাষ্ট্রের DMCA আইন অনুসারে অ্যাপ দুটি অপসারণ করেছে।
পরে নতুন লে–আউট করে প্লেস্টোরে আবারও রিদমিক কি–বোর্ড প্রকাশ করা হয়।
মূলত অভ্রের বিরুদ্ধে কি–বোর্ডের লে–আউট কপি করার অভিযোগ করে থাকেন মোস্তাফা জব্বার। যদিও বিজয়ের কপিরাইট (১৯৮৮) নাকি পেটেন্ট (২০০৮) কোনটি নিয়ে অভিযোগ তা পরিষ্কার করা হয়নি। বিজয়ের পেটেন্ট দাবি করার বিষয়টি দুর্বল কারণ ২০০৮ নাগাদ এমন প্রচুর পেটেন্ট আছে। বিজয়ের লে–আউট কপিরাইটের বিষয়টিও বিতর্কিত। অনেকে মনে করেন, মুনীর লে–আউটের সঙ্গে বিজয়ের পার্থক্য সামান্যই। অথচ একই যুক্তিতে অভ্রতে ইউনিবিজয় কি–বোর্ড যুক্ত করা হয়েছিল, যেটিতে বিজয়ের লে–আউটের কয়েকটি অক্ষর এদিক–সেদিক করা ছিল। এ ছাড়া ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়ায় এর লে–আউট ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।

বাংলাদেশের মানুষের ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রবেশের শুরুর দিকে ওয়েবে বাংলা লেখা বা বাংলায় কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। ওই সময় ওয়েবসাইটে কোনো বাংলা লেখা ছবি কিংবা পিডিএফ করে দিতে হতো। ই–মেইল করার ক্ষেত্রে বাংলা লেখা একেবারেই অসম্ভব ছিল।
তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার। প্রথম ইউনিকোড বাংলা লেখার সফটওয়্যার এটি। শুধু তা–ই নয়, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে তিনি এটি ছড়িয়ে দিলেন। এ ছাড়া এটি ওপেন সোর্স। অর্থাৎ এর সোর্সকোড উন্মুক্ত। যে কেউ এটির পরিবর্তন ও ডেভেলপমেন্টে অবদান রাখতে পারেন।
অভ্রর জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী। মূলত ইউনিকোড ভিত্তিক হওয়ায় ইন্টারনেটে লেখালেখির সুবিধা আর ফোনেটিক পদ্ধতিতে (কি–বোর্ডে রোমান হরফ লিখে বাংলায় পরিবর্তনের সুবিধা) লেখার সুযোগ—এই দুটি কারণে তরুণ প্রজন্মের কাছে অভ্রর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে কোনো বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার নেই। এখন ব্লগ, ফেসবুকসহ সব সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অভ্র দিয়ে বাংলা লেখা হচ্ছে।
অভ্র তৈরির শুরুর গল্প
আজকের অভ্র কি–বোর্ড নামের সফটওয়্যারটি বিশেষ করে এক ব্যক্তির ১০ বছরের পরিশ্রমের ফল। মেহদী হাসান খান ৯ম শ্রেণি থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিংয়ের বই কিনে ঘরে বসেই প্রোগ্রামিং শিখতেন।
১৯৮৬ সালের ২৩ জুলাই ঢাকায় জন্ম মেহদী হাসান খানের। ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন মেহদী। ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন নটর ডেম কলেজে। ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায় গিয়েছিলেন মেহদী। সেখানে বাংলা ইনোভেশন থ্রু ওপেন সোর্স—বায়োসের স্টলে গিয়ে তাঁর ভাষায় ‘প্রথম খাঁটি বাংলা’ ওয়েবসাইট দেখলেন। ইউনিকোডে বাংলা লেখাও দেখলেন। ইউনিবাংলা নামে তারা পুরো একটা অপারেটিং সিস্টেমও তৈরি করেছিল। অবশ্য সেটি ছিল মূলত লিনাক্স–এরই একটি সংস্করণ। বাসায় ফিরে তাদের ওপেন টাইপ ফন্ট ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করেন। কিন্তু এটি শুধু বাংলা ভাষায় কাস্টমাইজ করা লিনাক্সের জন্য। ক্যারেক্টার চার্টে মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে বাংলা লিখতে হয়। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজের জন্য এই সুবিধা ছিল না।
তখনই মেহদী সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডোজের জন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার বানাবেন। তিনি বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্টটি নিজের কম্পিউটারে ইনস্টল করেন। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা ভিজ্যুয়াল বেসিক ডটনেট দিয়ে লিখে ফেলেন ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার। ফোনেটিক পদ্ধতিও তৈরি করে ফেলেন। সেটি ছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন।
পরে ভারতের একটি বাংলা ফন্ট প্রতিযোগিতায় ই–মেইল করে নিজের বানানো প্রোটোটাইপ পাঠান মেহদী হাসান। তারা জানাল, অ্যাপ্লিকেশনটি ঘন ঘন ক্র্যাশ করেছে।
আবার রাত জেগে প্রোটোটাইপের বাগ সারানোর কাজ করেন মেহদী হাসান। ডটনেট বাদ দিয়ে ক্ল্যাসিক ভিজুয়াল বেসিকে সবগুলো কোড নতুন করে লিখেন মেহদী। পরবর্তীতে আবারও একেবারে নতুন করে কোড লেখা হয় Delphi/Object Pascal–এ। বর্তমানে অভ্র এই ফ্রেমওয়ার্কেই আছে।
মেহদী হাসান ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করেন অভ্র নামের সফটওয়্যারটি। অভিধান ঘেঁটে ‘অভ্র’ শব্দ পছন্দ হয় মেহদীর। অভ্র মানে আকাশ। ইউনিকোডের পাশাপাশি বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, তাই উন্মুক্ত আকাশের প্রতিশব্দ বেছে নেন মেহদী। সবাই যাতে অভ্র ইন্টারনেট থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে পারে, সে জন্য একটি ওয়েবসাইটও প্রকাশ করেন মেহদী। সেটির নাম ওমিক্রনল্যাব ডটকম। মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওমিক্রনিক রূপান্তর’ বই থেকে ওমিক্রন নামটি নিয়েছিলেন তিনি।
অভ্রর প্রথম সংস্করণে লেখার জন্য বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট ছিল। অনেকে কি–বোর্ড মুখস্থ করার ভয়ে রোমান হরফে বাংলা লিখতেন। তাঁদের জন্য সহজে বাংলা টাইপ করতে মেহদী নিজেই বানিয়ে ফেলেন অভ্র ইজি। অনলাইন ফোরামের যুগ সে সময়। তাই ওমিক্রনের ওয়েবসাইটে ফোরাম খোলা হলো। ফোরামে অভ্র’র ব্যবহারকারীরা ফিডব্যাক দিতেন, বাগ রিপোর্ট করতেন, প্রশ্নোত্তর চলতো। পরে অভ্রের সঙ্গে যুক্ত হন—রিফাত উন নবী, তানবিন ইসলাম, শাবাব মুস্তাফা, ওমর ওসমান—আরও পরে সারিম খান। তাঁরা সবাই অভ্রের জন্য কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।
ধীরে ধীরে অভ্রতে যোগ হয় অভ্র ইজি, ন্যাশনাল, প্রভাত, মুনীর অপটিমা, ইউনি বিজয় (২০১১ সাল থেকে এটি নেই) বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট। বর্তমানে অভ্রের ৫.৬. ০ সংস্করণ ওমিক্রনের ওয়েবসাইট থেকে নামানো যায়। এখনো এটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। অভ্রের স্লোগান হলো, ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত।’
অভ্র দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ‘কম্পিউটার টুমোরো’ মেহদীর অভ্রকে নিয়ে ফিচার প্রতিবেদন করে। ম্যাগাজিনটির সেই সংখ্যার সঙ্গে অভ্রের সিডির একটি করে কপি ফ্রি দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে ‘অভ্র কি–বোর্ড পোর্টেবল এডিশন’ বিনা মূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্রের সোর্স কোড উন্মুক্ত, অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই গিটহাব রিপোজিটরি থেকে এর উন্নয়নে অংশ নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ভার্সন ৫–এর পর থেকে অভ্রকে ফ্রিওয়্যার থেকে ওপেন সোর্সে রূপান্তর করা হয় এবং এটি ‘মজিলা পাবলিক লাইসেন্স’ (এমপিএল)–এর অধীনে লাইসেন্সকৃত।
ওপেন সোর্স হওয়ায় অভ্র সফটপিডিয়াতে শতভাগ স্পাইওয়্যার/অ্যাডওয়্যার/ভাইরাস মুক্ত সফটওয়্যার হিসেবে স্বীকৃত। মাইক্রোসফটের অনলাইন সংগ্রহশালায় ইন্ডিক ভাষাগুলোর সমাধানের তালিকায় অভ্র কি–বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভ্র ব্যবহার করে।
এ ছাড়া অভ্রকে বাংলা কি–বোর্ড রিসোর্স হিসেবে ইউনিকোড সংস্থার ওয়েব সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিস বাংলা তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য অভ্র টিমকে ২০১১ সালে ‘বিশেষ অবদান পুরস্কার’ (Special Contribution Award) দেয়।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২৫ সালের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে একুশে পদকের জন্য মেহদী হাসান খানের নাম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
ডা. মেহদী হাসান খান এখন পুরো দস্তুর প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামিং নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা। অবসর ছেলে অর্ক হাসান খানের সঙ্গে।
এক নজরে ‘অভ্র’:
মূল উদ্ভাবক: ডা. মেহদী হাসান খান
উন্নয়নকারী: ওমিক্রনল্যাব
প্রাথমিক সংস্করণ: ২৬ মার্চ ২০০৩
স্থায়ী মুক্তি: ৫.৬. ০ / ২৭ আগস্ট ২০১৯
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: সি++, ডেলফি
অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ এক্স পি, ভিস্তা, ৭, ৮,৮. ১,১০, লিনাক্স, ম্যাক।
প্ল্যাটফর্ম: উইন্ডোজ (অভ্র), লিনাক্স (ibus-avro), ম্যাক ওএস (iAvro), অ্যান্ড্রয়েড (রিদমিক), আইওএস (রিদমিক)।
লাইসেন্স: ওপেন সোর্স, মোজিলা পাবলিক লাইসেন্স।
লে–আউট: প্রভাত, মুনির অপটিমা, অভ্র ইজি (ওমিক্রন ল্যাব প্রকাশিত সহজ একটি লে–আউট), বর্ণনা, জাতীয় (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রকাশিত বাংলা লে–আউট)
মেহদী হাসান খান অভ্র নিয়ে কখনো বাণিজ্যিক চিন্তা করেননি। শখের বসে তৈরি করা অভ্র বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় ব্যবহার করেছে। যার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে নির্বাচন কমিশনের ৫ কোটি টাকার মতো বেঁচে যায়। ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অভ্র এখন ব্যাপক জনপ্রিয়।
অভ্র ও বিজয় দ্বন্দ্ব
কম্পিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। আর শুরুটা হয় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি শহীদ লিপি। দ্রুতই তাঁর অবস্থান দখল করে বিজয়।
বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ মে। আনন্দ কম্পিউটারস কি–বোর্ড উন্মোচন করে ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আনন্দ কম্পিউটারসের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা জব্বার। বিজয় বাংলা কম্পিউটিং প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত ডস ও উইন্ডোজভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের উন্নয়ন করা হয়। আর এ সময় থেকে উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশে সমানভাবে বাংলা ব্যবহার চলতে থাকে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ করতে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ইউনিকোডভিত্তিক সফটওয়্যার হওয়ায় বাংলা কম্পিউটিংয়ে অভ্র শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।
কিন্তু বিজয়ের স্বত্বাধিকারী ও বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার দৈনিক জনকণ্ঠে ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ‘সাইবার যুদ্ধের যুগে প্রথম পা। একুশ শতক’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধের মূল বক্তব্য ছিল ওই সময় সরকারি অনেক ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। তবে লেখার মধ্যে অভ্র কি–বোর্ড, জাতিসংঘের ইউএনডিপি এবং নির্বাচন কমিশনকে টেনে আনেন। অভ্রকে ‘পাইরেটেড সফটওয়্যার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিজয় সফটওয়্যারের পাইরেটেড সংস্করণ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই হ্যাকাররা চরম পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। এ হ্যাকার ও পাইরেটদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির নামও যুক্ত আছে। অভ্র নামক একটি পাইরেটেড বাংলা সফটওয়্যারকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির অবদান সবচেয়ে বেশি।
তাঁর এই লেখার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্র ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। ফেসবুক, ব্লগ ও বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। কিছু কিছু সাইট প্রতিবাদে তাদের ব্যানারও পরিবর্তন করে।
কিন্তু মোস্তাফা জব্বার ক্ষান্ত হননি। তিনি কপিরাইট অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন অভ্র সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রন ল্যাবের প্রধান নির্বাহী মেহদী হাসান খানের বিরুদ্ধে। কপিরাইট অফিস মেহদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে মেহদী হাসান খান ও মোস্তাফা জব্বারের মধ্যে সমঝোতা হয়। অভ্র কি–বোর্ড সফটওয়্যার থেকে ইউনিবিজয় লে–আউট সরিয়ে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ‘বাণিজ্যিক বিজয়’–এর পরিবর্তে বিনা মূল্যে অভ্র ব্যবহার করে। বেঁচে যায় রাষ্ট্রের ৫ কোটি টাকা। অনেকে বলেন, অভ্র একটি ইউনিকোড, বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়া সত্ত্বেও মোস্তাফা জব্বারের এমন আচরণের পেছনে রয়েছে এই প্রকল্প হাতছাড়া হওয়া। নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে বিজয়ের পরিবর্তে অভ্র ব্যবহার করায় প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলেও জনকণ্ঠের ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার।
বিজয়–রিদমিক বিতর্ক
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয় বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। এরপর এই অ্যাপটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মোস্তাফা জব্বার। সেই স্ট্যাটাসে এই জাতীয় অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে গুগলের পক্ষ থেকে রিদমিক এবং ইউনিবিজয় কি–বোর্ডের ডেভেলপারের কাছে পৃথক ই–মেইল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মোস্তাফা জব্বার অ্যাপ দুটির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়েছেন গুগলের কাছে। আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই গুগল যুক্তরাষ্ট্রের DMCA আইন অনুসারে অ্যাপ দুটি অপসারণ করেছে।
পরে নতুন লে–আউট করে প্লেস্টোরে আবারও রিদমিক কি–বোর্ড প্রকাশ করা হয়।
মূলত অভ্রের বিরুদ্ধে কি–বোর্ডের লে–আউট কপি করার অভিযোগ করে থাকেন মোস্তাফা জব্বার। যদিও বিজয়ের কপিরাইট (১৯৮৮) নাকি পেটেন্ট (২০০৮) কোনটি নিয়ে অভিযোগ তা পরিষ্কার করা হয়নি। বিজয়ের পেটেন্ট দাবি করার বিষয়টি দুর্বল কারণ ২০০৮ নাগাদ এমন প্রচুর পেটেন্ট আছে। বিজয়ের লে–আউট কপিরাইটের বিষয়টিও বিতর্কিত। অনেকে মনে করেন, মুনীর লে–আউটের সঙ্গে বিজয়ের পার্থক্য সামান্যই। অথচ একই যুক্তিতে অভ্রতে ইউনিবিজয় কি–বোর্ড যুক্ত করা হয়েছিল, যেটিতে বিজয়ের লে–আউটের কয়েকটি অক্ষর এদিক–সেদিক করা ছিল। এ ছাড়া ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়ায় এর লে–আউট ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।

বাংলাদেশের মানুষের ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রবেশের শুরুর দিকে ওয়েবে বাংলা লেখা বা বাংলায় কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। ওই সময় ওয়েবসাইটে কোনো বাংলা লেখা ছবি কিংবা পিডিএফ করে দিতে হতো। ই–মেইল করার ক্ষেত্রে বাংলা লেখা একেবারেই অসম্ভব ছিল।
তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার। প্রথম ইউনিকোড বাংলা লেখার সফটওয়্যার এটি। শুধু তা–ই নয়, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে তিনি এটি ছড়িয়ে দিলেন। এ ছাড়া এটি ওপেন সোর্স। অর্থাৎ এর সোর্সকোড উন্মুক্ত। যে কেউ এটির পরিবর্তন ও ডেভেলপমেন্টে অবদান রাখতে পারেন।
অভ্রর জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী। মূলত ইউনিকোড ভিত্তিক হওয়ায় ইন্টারনেটে লেখালেখির সুবিধা আর ফোনেটিক পদ্ধতিতে (কি–বোর্ডে রোমান হরফ লিখে বাংলায় পরিবর্তনের সুবিধা) লেখার সুযোগ—এই দুটি কারণে তরুণ প্রজন্মের কাছে অভ্রর জনপ্রিয়তার ধারেকাছে কোনো বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার নেই। এখন ব্লগ, ফেসবুকসহ সব সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অভ্র দিয়ে বাংলা লেখা হচ্ছে।
অভ্র তৈরির শুরুর গল্প
আজকের অভ্র কি–বোর্ড নামের সফটওয়্যারটি বিশেষ করে এক ব্যক্তির ১০ বছরের পরিশ্রমের ফল। মেহদী হাসান খান ৯ম শ্রেণি থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন। বিভিন্ন প্রোগ্রামিংয়ের বই কিনে ঘরে বসেই প্রোগ্রামিং শিখতেন।
১৯৮৬ সালের ২৩ জুলাই ঢাকায় জন্ম মেহদী হাসান খানের। ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শুরু করেন মেহদী। ২০০১ সালে মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন নটর ডেম কলেজে। ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ভর্তি হন। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায় গিয়েছিলেন মেহদী। সেখানে বাংলা ইনোভেশন থ্রু ওপেন সোর্স—বায়োসের স্টলে গিয়ে তাঁর ভাষায় ‘প্রথম খাঁটি বাংলা’ ওয়েবসাইট দেখলেন। ইউনিকোডে বাংলা লেখাও দেখলেন। ইউনিবাংলা নামে তারা পুরো একটা অপারেটিং সিস্টেমও তৈরি করেছিল। অবশ্য সেটি ছিল মূলত লিনাক্স–এরই একটি সংস্করণ। বাসায় ফিরে তাদের ওপেন টাইপ ফন্ট ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করেন। কিন্তু এটি শুধু বাংলা ভাষায় কাস্টমাইজ করা লিনাক্সের জন্য। ক্যারেক্টার চার্টে মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে বাংলা লিখতে হয়। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজের জন্য এই সুবিধা ছিল না।
তখনই মেহদী সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডোজের জন্য বাংলা লেখার সফটওয়্যার বানাবেন। তিনি বাংলা লিনাক্সের ওই ফন্টটি নিজের কম্পিউটারে ইনস্টল করেন। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা ভিজ্যুয়াল বেসিক ডটনেট দিয়ে লিখে ফেলেন ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার। ফোনেটিক পদ্ধতিও তৈরি করে ফেলেন। সেটি ছিল উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন।
পরে ভারতের একটি বাংলা ফন্ট প্রতিযোগিতায় ই–মেইল করে নিজের বানানো প্রোটোটাইপ পাঠান মেহদী হাসান। তারা জানাল, অ্যাপ্লিকেশনটি ঘন ঘন ক্র্যাশ করেছে।
আবার রাত জেগে প্রোটোটাইপের বাগ সারানোর কাজ করেন মেহদী হাসান। ডটনেট বাদ দিয়ে ক্ল্যাসিক ভিজুয়াল বেসিকে সবগুলো কোড নতুন করে লিখেন মেহদী। পরবর্তীতে আবারও একেবারে নতুন করে কোড লেখা হয় Delphi/Object Pascal–এ। বর্তমানে অভ্র এই ফ্রেমওয়ার্কেই আছে।
মেহদী হাসান ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশ করেন অভ্র নামের সফটওয়্যারটি। অভিধান ঘেঁটে ‘অভ্র’ শব্দ পছন্দ হয় মেহদীর। অভ্র মানে আকাশ। ইউনিকোডের পাশাপাশি বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার, তাই উন্মুক্ত আকাশের প্রতিশব্দ বেছে নেন মেহদী। সবাই যাতে অভ্র ইন্টারনেট থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে পারে, সে জন্য একটি ওয়েবসাইটও প্রকাশ করেন মেহদী। সেটির নাম ওমিক্রনল্যাব ডটকম। মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওমিক্রনিক রূপান্তর’ বই থেকে ওমিক্রন নামটি নিয়েছিলেন তিনি।
অভ্রর প্রথম সংস্করণে লেখার জন্য বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট ছিল। অনেকে কি–বোর্ড মুখস্থ করার ভয়ে রোমান হরফে বাংলা লিখতেন। তাঁদের জন্য সহজে বাংলা টাইপ করতে মেহদী নিজেই বানিয়ে ফেলেন অভ্র ইজি। অনলাইন ফোরামের যুগ সে সময়। তাই ওমিক্রনের ওয়েবসাইটে ফোরাম খোলা হলো। ফোরামে অভ্র’র ব্যবহারকারীরা ফিডব্যাক দিতেন, বাগ রিপোর্ট করতেন, প্রশ্নোত্তর চলতো। পরে অভ্রের সঙ্গে যুক্ত হন—রিফাত উন নবী, তানবিন ইসলাম, শাবাব মুস্তাফা, ওমর ওসমান—আরও পরে সারিম খান। তাঁরা সবাই অভ্রের জন্য কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে।
ধীরে ধীরে অভ্রতে যোগ হয় অভ্র ইজি, ন্যাশনাল, প্রভাত, মুনীর অপটিমা, ইউনি বিজয় (২০১১ সাল থেকে এটি নেই) বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট। বর্তমানে অভ্রের ৫.৬. ০ সংস্করণ ওমিক্রনের ওয়েবসাইট থেকে নামানো যায়। এখনো এটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। অভ্রের স্লোগান হলো, ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত।’
অভ্র দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময়ের জনপ্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ‘কম্পিউটার টুমোরো’ মেহদীর অভ্রকে নিয়ে ফিচার প্রতিবেদন করে। ম্যাগাজিনটির সেই সংখ্যার সঙ্গে অভ্রের সিডির একটি করে কপি ফ্রি দেওয়া হয়।
২০০৭ সালে ‘অভ্র কি–বোর্ড পোর্টেবল এডিশন’ বিনা মূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্রের সোর্স কোড উন্মুক্ত, অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই গিটহাব রিপোজিটরি থেকে এর উন্নয়নে অংশ নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ভার্সন ৫–এর পর থেকে অভ্রকে ফ্রিওয়্যার থেকে ওপেন সোর্সে রূপান্তর করা হয় এবং এটি ‘মজিলা পাবলিক লাইসেন্স’ (এমপিএল)–এর অধীনে লাইসেন্সকৃত।
ওপেন সোর্স হওয়ায় অভ্র সফটপিডিয়াতে শতভাগ স্পাইওয়্যার/অ্যাডওয়্যার/ভাইরাস মুক্ত সফটওয়্যার হিসেবে স্বীকৃত। মাইক্রোসফটের অনলাইন সংগ্রহশালায় ইন্ডিক ভাষাগুলোর সমাধানের তালিকায় অভ্র কি–বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অভ্র ব্যবহার করে।
এ ছাড়া অভ্রকে বাংলা কি–বোর্ড রিসোর্স হিসেবে ইউনিকোড সংস্থার ওয়েব সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা বেসিস বাংলা তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য অভ্র টিমকে ২০১১ সালে ‘বিশেষ অবদান পুরস্কার’ (Special Contribution Award) দেয়।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০২৫ সালের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে একুশে পদকের জন্য মেহদী হাসান খানের নাম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
ডা. মেহদী হাসান খান এখন পুরো দস্তুর প্রোগ্রামার। প্রোগ্রামিং নিয়েই তাঁর ব্যস্ততা। অবসর ছেলে অর্ক হাসান খানের সঙ্গে।
এক নজরে ‘অভ্র’:
মূল উদ্ভাবক: ডা. মেহদী হাসান খান
উন্নয়নকারী: ওমিক্রনল্যাব
প্রাথমিক সংস্করণ: ২৬ মার্চ ২০০৩
স্থায়ী মুক্তি: ৫.৬. ০ / ২৭ আগস্ট ২০১৯
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ: সি++, ডেলফি
অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ এক্স পি, ভিস্তা, ৭, ৮,৮. ১,১০, লিনাক্স, ম্যাক।
প্ল্যাটফর্ম: উইন্ডোজ (অভ্র), লিনাক্স (ibus-avro), ম্যাক ওএস (iAvro), অ্যান্ড্রয়েড (রিদমিক), আইওএস (রিদমিক)।
লাইসেন্স: ওপেন সোর্স, মোজিলা পাবলিক লাইসেন্স।
লে–আউট: প্রভাত, মুনির অপটিমা, অভ্র ইজি (ওমিক্রন ল্যাব প্রকাশিত সহজ একটি লে–আউট), বর্ণনা, জাতীয় (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল প্রকাশিত বাংলা লে–আউট)
মেহদী হাসান খান অভ্র নিয়ে কখনো বাণিজ্যিক চিন্তা করেননি। শখের বসে তৈরি করা অভ্র বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থায় ব্যবহার করেছে। যার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে নির্বাচন কমিশনের ৫ কোটি টাকার মতো বেঁচে যায়। ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে অভ্র এখন ব্যাপক জনপ্রিয়।
অভ্র ও বিজয় দ্বন্দ্ব
কম্পিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। আর শুরুটা হয় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে বেশি দূর এগোতে পারেনি শহীদ লিপি। দ্রুতই তাঁর অবস্থান দখল করে বিজয়।
বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ মে। আনন্দ কম্পিউটারস কি–বোর্ড উন্মোচন করে ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর। আনন্দ কম্পিউটারসের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা জব্বার। বিজয় বাংলা কম্পিউটিং প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৯৯৩ সালের আগে পর্যন্ত ডস ও উইন্ডোজভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের উন্নয়ন করা হয়। আর এ সময় থেকে উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশে সমানভাবে বাংলা ব্যবহার চলতে থাকে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ করতে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ইউনিকোডভিত্তিক সফটওয়্যার হওয়ায় বাংলা কম্পিউটিংয়ে অভ্র শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।
কিন্তু বিজয়ের স্বত্বাধিকারী ও বিসিএস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার দৈনিক জনকণ্ঠে ২০১০ সালের ৪ এপ্রিল ‘সাইবার যুদ্ধের যুগে প্রথম পা। একুশ শতক’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন। নিবন্ধের মূল বক্তব্য ছিল ওই সময় সরকারি অনেক ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। তবে লেখার মধ্যে অভ্র কি–বোর্ড, জাতিসংঘের ইউএনডিপি এবং নির্বাচন কমিশনকে টেনে আনেন। অভ্রকে ‘পাইরেটেড সফটওয়্যার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর বিজয় সফটওয়্যারের পাইরেটেড সংস্করণ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই হ্যাকাররা চরম পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। এ হ্যাকার ও পাইরেটদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির নামও যুক্ত আছে। অভ্র নামক একটি পাইরেটেড বাংলা সফটওয়্যারকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির অবদান সবচেয়ে বেশি।
তাঁর এই লেখার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্র ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। ফেসবুক, ব্লগ ও বিভিন্ন ফোরামে এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। কিছু কিছু সাইট প্রতিবাদে তাদের ব্যানারও পরিবর্তন করে।
কিন্তু মোস্তাফা জব্বার ক্ষান্ত হননি। তিনি কপিরাইট অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন অভ্র সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রন ল্যাবের প্রধান নির্বাহী মেহদী হাসান খানের বিরুদ্ধে। কপিরাইট অফিস মেহদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। পরবর্তীতে মেহদী হাসান খান ও মোস্তাফা জব্বারের মধ্যে সমঝোতা হয়। অভ্র কি–বোর্ড সফটওয়্যার থেকে ইউনিবিজয় লে–আউট সরিয়ে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়নে নির্বাচন কমিশন ‘বাণিজ্যিক বিজয়’–এর পরিবর্তে বিনা মূল্যে অভ্র ব্যবহার করে। বেঁচে যায় রাষ্ট্রের ৫ কোটি টাকা। অনেকে বলেন, অভ্র একটি ইউনিকোড, বিনা মূল্যের ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়া সত্ত্বেও মোস্তাফা জব্বারের এমন আচরণের পেছনে রয়েছে এই প্রকল্প হাতছাড়া হওয়া। নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে বিজয়ের পরিবর্তে অভ্র ব্যবহার করায় প্রায় ৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলেও জনকণ্ঠের ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেন মোস্তাফা জব্বার।
বিজয়–রিদমিক বিতর্ক
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয় বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। এরপর এই অ্যাপটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মোস্তাফা জব্বার। সেই স্ট্যাটাসে এই জাতীয় অ্যাপগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় বাংলা কি–বোর্ড লে–আউট অবৈধভাবে ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে গুগলের পক্ষ থেকে রিদমিক এবং ইউনিবিজয় কি–বোর্ডের ডেভেলপারের কাছে পৃথক ই–মেইল নোটিশ পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, মোস্তাফা জব্বার অ্যাপ দুটির বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়েছেন গুগলের কাছে। আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই গুগল যুক্তরাষ্ট্রের DMCA আইন অনুসারে অ্যাপ দুটি অপসারণ করেছে।
পরে নতুন লে–আউট করে প্লেস্টোরে আবারও রিদমিক কি–বোর্ড প্রকাশ করা হয়।
মূলত অভ্রের বিরুদ্ধে কি–বোর্ডের লে–আউট কপি করার অভিযোগ করে থাকেন মোস্তাফা জব্বার। যদিও বিজয়ের কপিরাইট (১৯৮৮) নাকি পেটেন্ট (২০০৮) কোনটি নিয়ে অভিযোগ তা পরিষ্কার করা হয়নি। বিজয়ের পেটেন্ট দাবি করার বিষয়টি দুর্বল কারণ ২০০৮ নাগাদ এমন প্রচুর পেটেন্ট আছে। বিজয়ের লে–আউট কপিরাইটের বিষয়টিও বিতর্কিত। অনেকে মনে করেন, মুনীর লে–আউটের সঙ্গে বিজয়ের পার্থক্য সামান্যই। অথচ একই যুক্তিতে অভ্রতে ইউনিবিজয় কি–বোর্ড যুক্ত করা হয়েছিল, যেটিতে বিজয়ের লে–আউটের কয়েকটি অক্ষর এদিক–সেদিক করা ছিল। এ ছাড়া ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হওয়ায় এর লে–আউট ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে নেওয়া যায়।

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১ দিন আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
৩ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।
গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।
এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’
এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।
গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।
গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট। এর মাধ্যমে ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া যাবে।
গুগল জানিয়েছে, তারা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল জেমিনি ব্যবহার করে বাগধারা, প্রবাদ–প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি বা স্ল্যাংয়ের মতো সূক্ষ্ম অর্থবোধক বাক্যাংশের অনুবাদ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।
এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমরা টেক্সট অনুবাদের জন্য গুগল ট্রান্সলেটে জেমিনির সবচেয়ে শক্তিশালী অনুবাদ সক্ষমতা যুক্ত করছি। হেডফোনের মাধ্যমে লাইভ স্পিচ–টু–স্পিচ অনুবাদের একটি বেটা অভিজ্ঞতা চালু করছি এবং অনুশীলন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অ্যাপে নতুন ভাষা যুক্ত করছি।’
এর আগে এই সুবিধা শুধু পিক্সেল বাডসের জন্য সীমিত ছিল। তবে নতুন বেটা সংস্করণের মাধ্যমে যেকোনো হেডফোনকেই একমুখী রিয়েল–টাইম অনুবাদ ডিভাইসে রূপান্তর করা যাবে।
গুগল জানিয়েছে, দৈনন্দিন যোগাযোগের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই ফিচারটি কার্যকর একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কথোপকথনের সময় ভাষাগত দূরত্ব ঘোচানো, ভ্রমণের সময় পাবলিক এনাউন্সমেন্ট বোঝা কিংবা বিদেশি ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বা অনলাইন কনটেন্ট অনুসরণের ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে।
গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও বলেন, ‘আপনি যদি ভিন্ন কোনো ভাষায় কথা বলতে চান, বিদেশে অবস্থানকালে কোনো ভাষণ বা বক্তৃতা শুনতে চান, কিংবা অন্য ভাষার টিভি অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এখন শুধু হেডফোন লাগিয়ে ট্রান্সলেট অ্যাপ খুলে লাইভ ট্রান্সলেট-এ ট্যাপ করলেই আপনার পছন্দের ভাষায় রিয়েল–টাইম অনুবাদ শুনতে পারবেন।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে চালু হচ্ছে এই বেটা সংস্করণটি। কোম্পানি জানিয়েছে, ২০২৬ সালে আইওএস এবং আরও বেশি দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি, কথা বলার অনুশীলনের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের সহায়ক পরামর্শ দিতে উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্ট্রিক ট্র্যাকিং ফিচারও চালু করছে গুগল।

তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
৩ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেমাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে
প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।
কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব
প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।
সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি
প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।
ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন এবং উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরির মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ২০২১ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। ৩৫৩ কোটি ৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে সরকারের অর্থায়ন ছিল ৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৫০ শতাংশ। আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বা ৩৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ২ বছর ৬ মাস বৃদ্ধি করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সর্বশেষ একনেক সভায় সময়ের সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আরও ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ৩৫৩ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৫৩১ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা বা ৮১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যে উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। একদিকে ঋণ নিয়ে বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়াতে আবার নতুন করে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ ছাড়া বৈদেশিক ঋণে সরকারের প্রকল্প নেওয়া উচিত নয়। এসব প্রকল্প নেওয়ার আগে সরকারের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত।
তবে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক ‘হিসাবি’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প নিচ্ছে না। তবে যেসব প্রকল্প চলমান, তা শেষ করার জন্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই অবকাঠামোসহ একটি নতুন সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি-২) নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক-১ (এসটিপি-১) সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হবে। নতুন পার্কটি লিড গোল্ড সার্টিফায়েড ভবন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন হাব বাড়ছে
প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে যেখানে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কথা ছিল, সংশোধিত প্রস্তাবে তা বাড়িয়ে ২৪টি করা হয়েছে। এসব হাবে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থ্রিডি প্রিন্টার, সিএনসি মেশিন, আর্ডিনো কিট, রোবোটিক্স ও ড্রোন-সংক্রান্ত সরঞ্জামসহ আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত কমন ল্যাব স্থাপন করা হবে।
কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগে প্রভাব
প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই প্রায় ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্টার্টআপ ও স্কেলআপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির গতি বাড়বে।
সময়-ব্যয় বাড়ানোর যুক্তি
প্রকল্প সংশোধনের পেছনে বেশ কয়েকটি যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ডিপিপি অনুমোদন ও বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি কার্যকরে বিলম্ব, জমি বরাদ্দ ও মামলা জটিলতা, পিডব্লিউডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী ব্যয় সমন্বয়, লিড সার্টিফিকেশন-সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে সময় লাগা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাব ও স্টার্টআপ কর্মসূচি বিস্তৃত করা।
ডিপিপি প্রণয়নের সময় ডলারের মূল্য যেখানে ৮৫ টাকা ছিল, বর্তমানে তা ১২১ টাকার বেশি। ফলে ডলারের বিনিময় হার বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার আলোকে মত দেয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় উদ্ভাবন সংস্কৃতি শক্তিশালী হবে, আইটি ও আইটিইএস খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। তাই একনেক সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নতুন করে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। সময়ও বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি, এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব।’ প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
৩ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১ দিন আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

তখন কম্পিউটারে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সফটওয়্যার বিজয়। কিন্তু ইন্টারনেটে বাংলা লেখার জন্য সেটি কোনো কাজের ছিল না। ইউনিকোড না থাকায় বিজয় ক্রমেই অকেজো হয়ে পড়ছিল। সেই নতুন সময়ের দাবিতেই এল ‘অভ্র’। মেহদী হাসান খান নামের এক তরুণ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করলেন অভ্র সফটওয়্যার।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গুগল ট্রান্সলেটে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট এনেছে গুগল। এই ফিচারে যুক্ত করা হয়েছে রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেটর, যা সরাসরি হেডফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই ফিচারটি ব্যবহার করতে শুধু একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপই যথেষ্ট।
১ দিন আগে
বৈদেশিক ঋণে নেওয়া প্রকল্পের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো অর্ধেক বাকি। এ অবস্থায় আবারও ঋণ করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে আড়াই বছর। এতে খরচ বাড়ছে আরও ৫০ শতাংশ। প্রকল্পটির নাম ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’।
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
৩ দিন আগে