Ajker Patrika

ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার বিচারকার্য আবার শুরু হচ্ছে

ক্রীড়া ডেস্ক    
প্রাচীরে চিত্রকর্মের মাধ্যমে অমর করে রাখা হয়েছে ম্যারাডোনাকে। ছবি: এএফপি
প্রাচীরে চিত্রকর্মের মাধ্যমে অমর করে রাখা হয়েছে ম্যারাডোনাকে। ছবি: এএফপি

আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনাকে ছাড়া কেটে গেছে চার বছরেরও বেশি সময়। ২০২০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। এর ঠিক পরের বছরেই তাঁর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ আনা হয় সাত স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের বিচারকার্য আবার শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। বুয়েনস আইরেসের সান ইসিদ্রোতে চার মাসের সেই বিচারকার্যে পরিবার, চিকিৎসকসহ সাক্ষ্য দেবেন ১০০ ’রও বেশি মানুষ। দোষী সাব্যস্ত হলে সাত স্বাস্থ্যকর্মীর ৮ থেকে ২৫ বছরের জেল হতে পারে।

দীর্ঘ সময় ধরে মাদকে আসক্ত থাকায় মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে ম্যারাডোনার। যে কারণে মৃত্যুর কিছুদিন আগে ছুরি-কাঁচির নিচে যেতে হয় তাঁকে। অস্ত্রোপচারের দুই সপ্তাহ পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বুয়েনস আইরেসে নিজের বাসায় ফেরেন তিনি। কিন্তু ২৫ নভেম্বর ঘুমের মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। তবে আর্জেন্টিনার সরকারি কৌঁসুলির আহ্বানে গঠিত ২০ সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেল জানায়, সঠিক চিকিৎসা ও উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা পেলে ম্যারাডোনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল। তদন্তকারী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, এই ঘটনায় প্রত্যেক অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো না কোনো দায় আছে।

কৌঁসুলিরা ত্রুটিপূর্ণ চিকিৎসার অভিযোগ আনেন নিউরোসার্জন লিওপোলদো লুক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অগুস্তিনা কোসাচোভ, মনোবিদ কার্লোস দিয়াস, চিকিৎসা সমন্বয়কারী নান্সি ফরলিনি, নার্সিং সমন্বয়কারী মারিয়ানো পেরোনি, চিকিৎসক পেদ্রো পাবলো দি স্পানা ও নার্স রিকার্দো আলমিরোর ওপর। আরেকজন নার্স হিসেলা দাহিয়ানা মাদ্রিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে তাঁর বিচারকার্য শুরু হবে আগামী জুলাইয়ে।

অভিযুক্ত সবাই অবশ্য নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করছেন। ম্যারাডোনার মৃত্যুতে তাঁদের কোনো হাত নেই বলেও জানান তারা। কোসাচোভের আইনজীবী ভাদিম মিসান চুক বলেন, ‘আমার মক্কেলের খালাস পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী, তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের দায়িত্বে ছিলেন, শারীরিক নয়।

অন্যদিকে ম্যারাডোনার পরিবারের দাবি, ফাঁস হওয়া অডিও ও লিখিত বার্তাগুলো প্রমাণ করে ম্যারাডোনার জীবন ঝুঁকিতে ছিল। ম্যারাডোনার ছেলে মারিও বৌদ্রি বলেন, ‘বার্তাগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, চিকিৎসক দলের কৌশলই ছিল ম্যারাডোনার মেয়েরা যেন হস্তক্ষেপ না করে। কারণ হস্তক্ষেপ করলেই তারা (চিকিৎসক দল) তাদের অর্থ হারাতো।

ম্যারাডোনার নেতৃত্বেই ১৯৮৬ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে অমর করে রাখতে পুরো দেশ জুড়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য, প্রাচীর ও প্রদর্শনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া বুয়েনস আইরেসের কেন্দ্রে ১ হাজার বর্গ-মিটার জুড়ে ম্যারাডোনার সমাধি সৌধ তৈরি করা হবে। প্রত্যাশা করা সৌধটি দেখতে প্রতি বছর ভিড় করবেন ১০ লাখের বেশি মানুষ, আর্জেন্টিনার নাগরিকদের জন্য সেখানে প্রবেশ উন্মুক্তই থাকবে। এ ব্যাপারে ম্যারাডোনার মেয়ে দালমা ম্যারাডোনা বলেন, ‘আমাদের বাবা মানুষের ভালোবাসার মধ্যে বেঁচে থাকুক, এটাই আমরা চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত