Ajker Patrika

হাইকোর্টকে উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দিতে যাচ্ছে সরকার: রুহিন হোসেন প্রিন্স

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বন্দর রক্ষা ও করিডরবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারে ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিব না’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বন্দর রক্ষা ও করিডরবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারে ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিব না’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আন্দোলন ও হাইকোর্টের বক্তব্য উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দিতে ইউনূস সরকার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

আজ সন্ধ্যায় ‘বন্দর রক্ষা ও করিডরবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারে ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিব না’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এ সময় সামনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানিয়ে সিপিবির সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার এর মধ্যে দাবি না (বন্দর চুক্তি বাতিলের দাবি) মানলে আগামী ৪ ডিসেম্বর যমুনার অভিমুখে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।’ দাবি আদায় না করা পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না বলে জানানো হয় ওই সমাবেশ থেকে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আদালতে একটা মামলা ছিল (বন্দর নিয়ে), সেইখানে আমাদের মাননীয় বিচারপতিরা ওনারা মৌখিকভাবে বলেছেন, নিষ্পত্তি হওয়ার আগে আর কিছু করা যাবে না। অথচ আমাদের আন্দোলন ও হাইকোর্টের বক্তব্য উপেক্ষা করে ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ওই নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল দেওয়ার জন্য ইউনূস সরকার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে। বন্দরের ব্যাপারে লিজ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নাই।’

এখতিয়ার বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার প্রচেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভিযোগ করে প্রিন্স বলেন, ‘২০০৬ সালে নোবেল পাওয়ার পরে ড. ইউনূস দেশে ফিরেই চট্টগ্রাম বন্দর উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আজ ১৯ বছর পরে এসে তিনি বন্দর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তার স্বপ্ন পূরণ করছে। জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির তাঁবেদারি করতেই বন্দর ইজারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আমরা আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ববিরোধী আমাদের জাতীয় সম্পদকে ওই বিদেশিদের হাতে দেব না। সরকার চুক্তি থেকে সরে না আসলে হরতাল, অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করে দাবি আদায় করা হবে।’

ইন্টেরিম সরকারের উপদেষ্টার বাইরে আরও দুজন ব্যক্তি লুতফে সিদ্দিকী ও আশেক চৌধুরী এই বিষয়ে জড়িত বলে উল্লেখ করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘২৫ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়, আইন শাখা ও আমাদের এনআরবি এইখানে চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বন্দর ডিপিকে দেওয়া হবে কি না, তা পর্যালোচনার জন্য তিন-চার দিনের একটি সভা করতে চায়। এই বন্দর যে ডিপিকে দেওয়া হবে—এইটা পর্যালোচনার জন্য। ডিপি ওয়ার্ল্ডের সাথে আমেরিকার নৌবাহিনীর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।’

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে, দরকার হলে ভালো মেশিনারি বা এক্সপার্ট এনে আমাদের নিজস্ব মালিকানায় বন্দর চালানো উচিত।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘চট্টগ্রামের লালদিয়া চর ৩৩ বছর এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য ডেনমার্কের কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার চুক্তি বাতিল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও বে টার্মিনাল ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের ফুসফুস। এটি কোনোভাবেই বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া চলবে না।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বন্দর রক্ষা ও করিডরবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারে ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিব না’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বন্দর রক্ষা ও করিডরবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারে ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দিব না’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘বন্দর ইজারা দেওয়ার চুক্তির শর্ত গোপন রাখা হয়েছে, যা জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে যে নিশ্চয়ই চুক্তির ধারায় কোনো দেশবিরোধী কিছু থাকতে পারে। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তাদের মূল্য দিতে হবে এবং সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে।’ অবিলম্বে জনগণকে অবগত না করে যে চুক্তিটি সম্পাদন করা হয়েছে—তা থেকে সরে আসারও আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু অংশ ইজারা দেওয়া হচ্ছে একটি ডেনমার্কের কোম্পানির কাছে, যার সাথে আমেরিকার যোগ সাজেশ রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সকল আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশ এই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই সংঘটিত হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। দেশের সরকারের নিজস্ব বিনিয়োগে সেই সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে এটি আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সামর্থ্য রয়েছে। এই লাভজনক প্রতিষ্ঠানটিকে বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।’

বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হলে আমেরিকা সেখানে ঘাঁটি গাড়বে বলে মন্তব্য করে রঞ্জন দে বলেন, বিদেশি কোম্পানির কাছে বন্দর তুলে দেওয়া হলে সেখানকার শ্রমিক-কর্মচারীদের জীবন ও জীবিকা হুমকির মধ্যে পড়বে এবং তাঁরা ছাঁটাইয়ের শিকার হবেন। বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়া হলে আমেরিকা সেখানে ঘাঁটি গাড়বে এবং অন্য বিদেশিরাও সেখানে ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. এম এ সাঈদ বলেন, ‘দেশের সকল জাতীয় ও কৌশলগত সম্পদের মালিক দেশের জনগণ। দেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সরকারের নেই। সরকার যে অজুহাতে বন্দর ইজারা দিতে চায়, সেটি যুক্তিযুক্ত নয়। দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি করে বন্দর পরিচালনা করতে হবে। আগামী দিনে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কার্যকরী সভাপতি আনোয়ার হোসেন রেজা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ—বিসিএলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. শাহীন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা. এস এম ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলী— বিসিএলের সভাপতি গৌতম শীলসহ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মশাল মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জিরো পয়েন্ট ঘুরে পুনরায় পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৪
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

হত্যাচেষ্টা, বেআইনি সমাবেশ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানার পৃথক দুই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ও জশিতা ইসলাম তাঁকে জামিন দেন।

আখতার হোসেনের আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেছেন, ‘২০২১ সালে পৃথক দুই থানার মামলায় এনসিপির নেতা আখতার হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে পৃথক দুই আদালত দুই মামলায় তাঁকে জামিন দেন।’

এ বিষয়ে আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আমার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে চারটিতে অব্যাহতি পেয়েছি। অন্য দুটিতে আজকে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছি।’

মামলা দুটির অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। অন্যান্য থানায় আরও তিনটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে চারটি মামলায় তিনি আগেই অব্যাহতি পেয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪০
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফেসবুক
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফেসবুক

জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যকার নতুন রাজনৈতিক জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব থাকলেও তিনি তা গ্রহণ করছেন না।

তাঁর মতে, কোনো নির্দিষ্ট আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নীতি ও আদর্শ (লং স্ট্যান্ডিং পজিশন) ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, নাগরিক কমিটি ও এনসিপি মূলত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতাদের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছিল। এই সহযোদ্ধাদের তিনি বিভিন্ন সময় পলিসিগত সহযোগিতা দিলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি এনসিপির অংশ হচ্ছেন না।

‘আমার রাজনৈতিক অবস্থান’ শীর্ষক মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো

আমার রাজনৈতিক অবস্থান

১. নাগরিক কমিটি ও এনসিপি জুলাইয়ের সম্মুখসারির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল। এ দুটি সংগঠনে আমার জুলাই সহযোদ্ধারা থাকায় গত দেড় বছর আমি চাহিবামাত্র তাদেরকে পরামর্শ, নির্দেশনা এবং পলিসিগত জায়গায় সহযোগিতা করেছি।

২. আমার অবস্থান স্পষ্ট। নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই, সামাজিক ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা, রিকন্সিলিয়েশন, দায়-দরদের সমাজ সহ- অনেক কথাই আমি বলেছি। যেগুলো আমার জুলাই সহযোদ্ধারা উক্ত দুটি সংগঠন থেকে বারবার বলেছেন। কিন্তু, তারা এগুলো ধারণ করতেন? এনসিপিকে একটা বিগ জুলাই আম্ব্রেলা আকারে স্বতন্ত্র উপায়ে দাঁড় করানোর জন্য আমি সকল চেষ্টাই করেছি। কিন্তু, অনেক কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।

. বিদ্যমান বাস্তবতায় আমার জুলাই সহযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান, স্নেহ এবং বন্ধুত্ব মুছে যাবে না। কিন্তু, আমি এ এনসিপির অংশ হচ্ছি না। আমাকে জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়নি, এটা সত্য নয়। কিন্তু ঢাকার কোন একটা আসনে জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার চাইতে আমার লং স্টান্ডিং পজিশন ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

৪. ইতিহাসের এ চলতি পর্বে বাংলাদেশ একটা শীতল যুদ্ধে আছে। এ পর্বে কোন পক্ষ না নিয়ে নিজেদের বক্তব্য ও নীতিতে অটল থাকাই শ্রেয়। বিকল্প তরুণ/ জুলাই শক্তির সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বরং, আমি গত দেড় বছরে যা বলেছি, যে নীতিতে বিশ্বাস রেখেছি, তা অব্যাহত রাখব। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সকল উপায়ে। If you care to join me, you are most welcome.

নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব ও বাস্তব। বিকল্প ও মধ্যপন্থী তরুণ/ জুলাই শক্তির উত্থান অত্যাসন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন নাহিদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীসহ আট ইসলামপন্থী দলের সঙ্গে একজোট হয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ রোববার রাত সোয়া ৮টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করতে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে এবং আধিপত্যবাদী কোনো শক্তি আমাদের গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী অগ্রযাত্রাকে যাতে ঠেকাতে না পারে, এ জন্য বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা জামায়াতে ইসলামী ও তাদের যে সমমনা আট দল রয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের যে নির্বাচনী সমঝোতা, জাতীয় নাগরিক পার্টি তাতে সম্মত হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং এই সমমনা দলের সঙ্গে আমরা একত্রে নির্বাচন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এর আগে আজ বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ যখন জাতীয় জীবনের এক কঠিন বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে, সে সময় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, দুর্নীতিমুক্ত ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে এত দিন আট দল কাজ করে আসছে। তার সঙ্গে আরও দুটি দল সম্পৃক্ত হয়েছে। কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি এবং এনসিপি। আট দল একসঙ্গে ছিল। আর দুটি দল তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৭ ও বগুড়া-৬ আসনের মনোনয়নপত্রে তারেক রহমানের সই

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫০
মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেন তারেক রহমান। ছবি: বিএনপি
মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেন তারেক রহমান। ছবি: বিএনপি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ ও বগুড়া-৬ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট দুই আসনের দলীয় সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে তিনি মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত নেতারা তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানান এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী হতে আজ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে তারেক রহমানের তরফে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। এর আগে তারেক রহমানের তরফে বগুড়া-৬ (সদর) আসনেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

এদিকে, আজ ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) রুহুল আমিন মল্লিক জানান, তারেক রহমানকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। সে হিসেবে গুলশান এলাকার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে ভোটার হিসেবে তারেক রহমানের নাম নিবন্ধন করা হয়েছে।

এর আগে, গতকাল শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে ভোটার নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে গিয়ে আঙুলের ছাপ, আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য দেন। পরে ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে এক দিনের মধ্যেই তাঁর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার দেশে ফেরা তারেক রহমান সেদিন সংবর্ধনা ও বক্তৃতা শেষে মা খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। পরদিন তিনি তাঁর বাবা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর গতকাল ভোটার হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সারার পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি, ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোসহ বেশ কয়েকটি কবর জিয়ারত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত