Ajker Patrika

যুবলীগ চাইলেই কোনো জাতীয় দল নিষিদ্ধ করা যাবে না: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ০৯
যুবলীগ চাইলেই কোনো জাতীয় দল নিষিদ্ধ করা যাবে না: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো চিন্তা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যুবলীগ চাইলেই তো একটা জাতীয় দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না। আজ রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দলের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত ৪৮ জন নারী সংসদ সদস্যের মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুবলীগ আমাদের একটা সংগঠন। তাদের স্বতন্ত্র একটা সত্তা রয়েছে। তারা দাবি করতে পারে। মূল দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ এ ধরনের চিন্তাভাবনা করলে বলতাম। আমাদের কোনো নেতা এ বিষয়টি অবতারণা করেনি। আমাদের উদ্বেগও নেই, এটা নিয়ে কোনো চিন্তাও নেই। ছাত্রলীগের এক নেতা দাঁড়িয়ে বলে গেল—বিএনপিকে নিষিদ্ধ করতে, তাতে কি আমরাও ওর সঙ্গে লাফাব? তারা তাদেরটা বলুক। যুবলীগ যুবলীগের চিন্তা থেকে বলছে, আমরা যুবলীগ চাইলে তো একটা জাতীয় দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না। বিষয়টা তো মূল দল আওয়ামী লীগ এ বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।’ 

যেহেতু সব দল নাই, সংসদ কতটা কার্যকরী হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, সংসদ কেন কার্যকর হবে না? বাধাটা কোথায়? একটা ফ্রি, ফেয়ার নির্বাচন হয়েছে। যেখানে টার্ন আউট ফোরটি ওয়ান প্লাস। পৃথিবীর বহু দেশের নির্বাচনে বাংলাদেশের যে টার্ন আউট সেটা কম কথা বলা হয়, এটার সুযোগ নেই। এখানে ২৮টি দল অংশ নিয়েছে। একটা অপজিশনও আছে। বিরোধী দলের ভূমিকা জাতীয় পার্টি অলরেডি তাদের কার্যক্রম সংসদে শুরু করেছে। 

কাদের বলেন, বিরোধী দল আছে, ‘এমনকি স্বতন্ত্রদের বলা হয়েছে তারা যখন আমাদের নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তখন বলা হয়েছে প্রয়োজনে তারা মনে করলে সরকারের সমালোচনাও করতে পারে। সমালোচনার জন্য স্বতন্ত্ররা আছেন, বিরোধী তো আছেই। তাই সংসদ কার্যকর হওয়ার পথে কোনো অন্তরায় বা বাধা আছে বলে আমরা মনে করি না।’ 

বিএনপি তো বলছে সংসদে কেবল সরকারপন্থীদের আওয়াজ, বিষয়টি সামনে আনলে কাদের বলেন, ‘তাদের আওয়াজ কোথায় থেমে গেছে! আওয়াজ তো তাদেরও ছিল। সে আওয়াজ এখন কোথায়? সে আওয়াজ তো পালিয়েছে। তারা সরকারকে পালাতে বলেছে, এখন নিজেরাই পালিয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে তাদের আওয়াজ তো কাজে দেয়নি। আমরা যা বলেছি আমরা ইলেকশন করব ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন, জনগণ অংশ নেবে, প্রতিহত করার দুঃসাহস কারও নেই, আমরা শেষ পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় আছি। এখনো আমরা সতর্ক পাহারায় আছি, যদি কেউ এই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্রমূলক, সন্ত্রাসমূলক কোনো তৎপরতায় আসে, সেটা আমরা অবশ্যই প্রতিরোধ করব। দেশের জনগণকে নিয়ে সেটা প্রতিহত করব।’ 

বিএনপি আন্দোলনে ডাকের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘এটা আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন। বিএনপির কোমর ভেঙে গেছে আজীবনের জন্য। বাস্তবতা তো তা-ই। এখন তাদের বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের পরে যে তর্জন-গর্জন করেছে—এটা তো বাস্তবে অসার, অন্তঃসারশূন্য। আমরা তো কিছুই দেখছি না। আন্দোলন কাকে বলে, আন্দোলনে পাবলিক থাকতে হবে। নেতা-কর্মী দিয়ে আন্দোলন হবে না। তাদের নেতা-কর্মীরা আন্দোলন করতে পারেনি। বেশি দূর যেতে পারেনি। কারণ, আন্দোলনের বস্তুগত পরিস্থিতি দেশে বিরাজমান ছিল না। এখনো নেই। তাদেরও সাবজেকটিভ প্রিপারেশন ছিল না। সংগঠনগত যে প্রস্তুতি, সে প্রস্তুতিতে তারা নেতিবাচক রাজনীতির দ্বারা তারা ভুল করেছে। ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে।’ 

ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবেন কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই কথাটা প্রকাশ্যে বলে গেছেন যে বিএনপি হচ্ছে কোমর ভাঙা, হাঁটুভাঙা দল। আমি জাস্ট তাঁকে কোট করেছি। কোমর ভাঙার কথা আমি বলিনি, জাফরউল্লাহ বলেছেন।’ 

জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে পারবে—জানতে চাইলে কাদের বলেন, সংসদ চলুক। যখন বাগ্‌বিতণ্ডা হবে, পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা হবে তখন বুঝতে পারবেন। 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) আসেনি কেন? আমরা আসতে দিইনি, এটা হাস্যকর। বিএনপিকে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কারণ, তারা যা মুখে বলছে, তা দেখাতে পারেনি। দেশের মানুষকে তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। মানুষ সম্পৃক্ত হলে আন্দোলন সফল হয়।’ 

নারী আসন: আওয়ামী লীগের ৪৮ জনের মনোনয়নপত্র জমা
দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের ৪৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত দিনে বেলা ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এসব মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সর্বমোট ৪৮ জন সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। এই ৪৮ জনের প্রস্তাবক ও সমর্থক আছেন, যারা জাতীয় সংসদ সদস্য। এখানে আমাদের ১৪ দলের একজন, স্বতন্ত্র ও আমাদের দলের এই ৪৮ জনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।’ 

এ সময় দ্বাদশ সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়নপত্র নিলেন এনসিপির তাজনূভা, ১৮-তে নাসীর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আজ সোমবার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার কার্যালয় থেকে তাজনূভা জাবীন ঢাকা-১৭ ও নাসীরুদ্দীন ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়নপত্র নেন।

তাজনূভা জাবীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি আজকে। আমার জন‍্য দোয়া করবেন আপনারা। আমার দল এনসিপি। আমার দলের মার্কা শাপলা কলি।’

ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে রয়েছে গুলশান, বনানী, বারিধারা, ভাষানটেক, কালাচাঁদপুর, শাহজাদপুর, কড়াইল, মহাখালী ও ক‍্যান্টনমেন্ট। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এস এম খালিকুজ্জামান। বিএনপি এই আসনে এখানো দলীয় প্রার্থী দেয়নি। এই আসনের আরেকজন প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পক্ষে তাঁর দলের নেতা-কর্মীরা উত্তরা আজিমপুর কাঁচাবাজার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এনসিপির মিডিয়া সেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সদস্যসচিব মো. মান্নান তালুকদার (মাহিন), সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম প্রিন্স এবং এনসিপির উত্তরার সাত থানার প্রধান সমন্বয়কারী ও যুগ্ম সমন্বয়কারীরা।

ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত, তুরাগ ও দক্ষিণখান। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মব সহিংসতা গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে: রিজভী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা মব তৈরি করে হামলা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করছে— এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গণতন্ত্রবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে সারা দেশে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে গণতন্ত্র কখনোই শক্তিশালী হবে না। তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করার জন্য একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। এ ধরনের অপচেষ্টাকে কোনোভাবেই সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিদেশের সঙ্গে অসম চুক্তিতে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ কিনে জনগণের অর্থের অপচয় করেছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকাকে নিজের মনে করে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বের প্রশংসা করে রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইশরাক এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই প্রজন্মের নেতা-কর্মীরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবে: জোনায়েদ সাকি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণসংহতি আন্দোলনের (জিএসএ) প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যাবে, গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের দিকে যাবে; তার জন্য বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন অপরিহার্য। যারাই একে বানচাল করতে চেষ্টা করবে, তাদের জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাইয়ের আদর্শে প্রতিহত করবে।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, ময়মনসিংহে শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলা ও লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতে আগুন দিয়ে শিশু আয়েশা আক্তারকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাইয়ে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, তার বিচার করতে হবে। নির্বাচন বানচালের যে তৎপরতা চলছে, সরকারকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার কিংবা অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন জনের ওপর হামলা করেছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সরকারের সমালোচনা করে জোনায়েদ সাকি বলেন, অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সরকার, যারা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করার দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা আজকে অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী নেতৃত্বের নিরাপত্তা দেওয়ার কাজটি করতে পারছে না।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে সাকি বলেন, তারা এখনো দেশকে ধ্বংস করার ক্ষেত্র থেকে নিরস্ত হয়নি। তারা গণতান্ত্রিক উত্তরণকে নস্যাৎ করে দিয়ে, বানচাল করে দিয়ে এই দেশকে আবারও চূড়ান্ত বিপর্যয়ের দিকে নিতে চায়। পতিত ফ্যাসিস্টরা বসে নেই, তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের অর্জনকে ধ্বংস করতে চায়।

দেশে নব্য ফ্যাসিস্টের আগমন ঘটেছে ইঙ্গিত করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্টরা যে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, আজকে তার বিপরীতে আরেক দল নতুন করে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করতে চায় এবং সেইটাকে কি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? এক ফ্যাসিবাদ পাল্টে আরেক ফ্যাসিবাদের ধারা সেখানে জন্ম কিংবা তাদের উত্থানে সহায়তা করছে? আমাদের সতর্ক ও সচেতন হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি গণমাধ্যমের ওপরে হামলাকে গণতন্ত্রের ওপরে হামলা বলে উল্লেখ করেন।

সমাবেশে দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বলতে এই ন্যায়বিচার ও ইনসাফের রাজনৈতিক মতাদর্শকে বুঝেছিলাম। সেই রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমাদের এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটাতে হবে।’

দলের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, ‘যারা পতিত ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসন করতে চায়, তারাই আমাদের নির্বাচনকে বারবার পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জিএসএর রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, দীপক কুমার রায়, আমজাদ হোসেন, অঞ্জন দাস, লুৎফুন্নাহার সুমনা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪০
ডাকসু ভবনের সামনে ‘ডাকসু হামলার ৬ বছর’ উপলক্ষে প্রতিবাদ সভায় নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
ডাকসু ভবনের সামনে ‘ডাকসু হামলার ৬ বছর’ উপলক্ষে প্রতিবাদ সভায় নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকা ২০ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে গানম্যান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ২০ জনের এই তালিকায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের নাম থাকলেও সরকারের দেওয়া গানম্যান প্রত্যাখ্যান করেছেন নুরুল হক নুর।

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে ‘ডাকসু হামলার ৬ বছর’ উপলক্ষে এক প্রতিবাদ সভায় যোগ দিয়ে নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন।

নুর বলেন, ‘যে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনসমক্ষে পোশাক পরিহিত অবস্থায় আমার কার্যালয়ের সামনে হামলা করেছে, সেই হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সরকারের দেওয়া গানম্যান আমি প্রত্যাখ্যান করছি।’

নুর আরও বলেন, ‘একক ব্যক্তিকে গানম্যান দিয়ে গোটা দেশকে নিরাপদ করা সম্ভব নয়। জনগণের নিরাপত্তায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে। শুধু নির্বাচনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ও নিরাপদ ভোটের পরিবেশ তৈরি না হলে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবে না।’

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুর্বৃত্তরা পোশাক পরিহিত অবস্থায় চলতি বছরের ২৯ আগস্ট জনসমক্ষে হামলা চালিয়েছিল উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই হামলার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও এখন পর্যন্ত এই হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত ও বিচার করা হয়নি। এতে বোঝা যায়, সেদিনের হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের মৌন সমর্থন রয়েছে।’

এই ঘটনার জন্য সরকারের দায় রয়েছে জানিয়ে নুর বলেন, ‘হামলার ঘটনার বিচার না হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাসহ বাকি উপদেষ্টাদেরও আমি দায়ী করব।’ তাই গানম্যান প্রত্যাখ্যান করে নিজের ওপর কোনো ধরনের হামলা হলে তার দায় বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিতে হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত