Ajker Patrika

ঢাকা-১০ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন আসিফ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১২
সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আসিফ মাহমুদ। ছবি: ফেসবুক
সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আসিফ মাহমুদ। ছবি: ফেসবুক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

আজ সোমবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিস থেকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন দুই ছাত্রপ্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। এর পর থেকেই তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়।

উপদেষ্টা পদ ছাড়ার পর আসিফ মাহমুদ কোন দল থেকে নির্বাচনে লড়বেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়ে যোগ দেবেন অথবা গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি জোটের সমর্থন নিয়ে নির্বাচন করবেন। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১২ ডিসেম্বর আসিফ মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নয়, বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ঢাকা-১০ আসনে লড়বেন।

ঢাকা-১০ আসনটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় এখানে ত্রিমুখী বা চতুর্মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এই আসনে ইতিমধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন:

বিএনপির দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমকে এই আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জসীম উদ্দিন সরকার।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখন পর্যন্ত এই আসনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পর আসিফ মাহমুদের সমর্থকেরা ধানমন্ডি এলাকায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম এই সমন্বয়কের নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা তরুণ ভোটারদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি করেছে।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৯ ডিসেম্বর, বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, আপিলের দিন ১১ জানুয়ারি, আর আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি।

অবশ্য গতকাল রোববার সংশোধিত তফসিলে রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল করার সময় দুই দিন কমানো হয়েছে। আপিলের সময় ৫-১১ জানুয়ারি পরিবর্তন করে ৫-৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

আপিল নিষ্পত্তির তারিখও দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। ১২–১৮ জানুয়ারির পরিবর্তে ১০-১৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

তফসিলে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন রাখা হয়েছে ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দের দিন ২১ জানুয়ারি। সব প্রক্রিয়া শেষে ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণ হবে।

এবার ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।

এবারের নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি এবার সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার সংশ্লিষ্ট গণভোটও রয়েছে। এ কারণে কিছু ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ (যেখানে ব্যালটে সিল দেওয়া হয়) বাড়াবে ইসি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বরাবরের মতো সাদা রঙের ব্যালট পেপার আর গণভোটের জন্য গোলাপি রঙের ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো–ডেইলি স্টারে হামলার সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্র জড়িত: জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। ছবি: সংগৃহীত
বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্র জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ভন্ডুল ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ ধরনের একটি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়া এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার প্রতিবাদে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানাতে এসে এসব কথা বলেন জামায়াতের এ নেতা।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)।

এই প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা; পেশাজীবী, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক সংগঠন; নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি জানাতে আসেন। প্রতিবাদ সভা শেষে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের পাশের রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন তাঁরা।

জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আমাদের প্রত্যেকের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। কোনো অবস্থায় এটার ওপর হামলা কেউ গ্রহণ করবেন না। আমরা কেউ এটা মেনে নিতে পারি না। এটাই যাতে ফুলস্টপ হয়।’

বিগত সরকারের সময়ে গণমাধ্যমের ওপর হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব অনেক বেশি, তারা সে দায়িত্বটি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা মনে করি, এখানে অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কী করেছে, সেটা খতিয়ে দেখা।’ পতিত স্বৈরাচার তার সব শক্তি নিয়ে এখনো সক্রিয় আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘এই কাজের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, আমাদের প্রত্যেকেরই নিজেদের জন্য, দেশের জন্য, জাতির জন্য, আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য—এটি চিহ্নিত হওয়া উচিত। তাদের আইনের মুখোমুখি করা উচিত। ...এটি কোনো রাজনৈতিক দিক বিবেচনা করলে, শুধু আলোচনা করলেই হবে না।’

গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো। প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে প্রথম আলোর কার্যালয় পুড়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়েও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। সংহতি জানাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে গেলে একই রাতে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নূরুল কবীরকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই হামলার ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ভয়ংকর: নোয়াবের সভায় বক্তারা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়া এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সামনে আজ সোমবার দুপুরে। ছবি: সংগৃহীত
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও আগুন দেওয়া এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সামনে আজ সোমবার দুপুরে। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদপত্রের কার্যালয়ে যে হামলা হয়েছে, এর মাধ্যমে শুধু গণমাধ্যম নয়, গণতন্ত্র, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ওপরও আঘাত এসেছে। এই হামলার ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ছিল ভয়ংকর। দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ‘মব সন্ত্রাসকে’ রুখে দিতে হবে।

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)।

সভায় সূচনা বক্তব্যে সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, পৃথিবীর সব জায়গায় সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব সম্পাদকীয় নীতি থাকে, সে নীতি পছন্দ না হলে গণমাধ্যমে আগুন লাগিয়ে দেওয়া কোনো গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। তারা (হামলাকারীরা) মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে। যখন অফিসে সবাই কাজ করছে, তখন চারপাশ থেকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস আসার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে গোষ্ঠীটি চেয়েছে—মধ্যযুগীয় কায়দায় আগুন চারপাশ থেকে লাগিয়ে যাদের সঙ্গে তাদের মতান্তর, তাদের পুড়িয়ে মারতে।

সভায় দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করাও ছিল।

নোয়াবের সভাপতি দৈনিক সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনা তুলে ধরে বলেন, ‘প্রথম আলোতে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। তখনই ডেইলি স্টার সম্পাদক আশঙ্কা করেছিলেন—এর পরে হামলাকারীরা ডেইলি স্টারে যাবে। তখন তিনি সরকারের এমন কোনো সংস্থা নেই, এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যাকে অনুরোধ, অনুনয়-বিনয় করেননি যে—আপনারা ডেইলি স্টারের সামনে প্রটেকশন দিন। কিন্তু তিনি কোনো সাহায্য বা সাড়া পাননি। পুড়ে যাওয়ার পরে পেয়েছেন।

‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব এই সভার আয়োজন করে। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আজ সোমবার দুপুরে। ছবি: সংগৃহীত
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াব এই সভার আয়োজন করে। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আজ সোমবার দুপুরে। ছবি: সংগৃহীত

এ কে আজাদ সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আরও বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক যখন অসহায়ের মতো নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর সামনে দিয়ে লুটকারীরা কম্পিউটার ও চেয়ার মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে তখন সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, কিন্তু বাহিনীগুলোর কেউ একটা প্রতিবাদ করেনি।

প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানাতে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অত্যন্ত পরিষ্কার, এখানে বলার কিছু নেই। আজকে ডেইলি স্টার নয়, প্রথম আলো নয়, আজকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। আমার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার যে অধিকার, আমার কথা বলার যে অধিকার, তার ওপর আবার আঘাত এসেছে। জুলাই যুদ্ধের ওপর আঘাত এসেছে। কারণ, জুলাই যুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। আজকে সেই জায়গায় আঘাত এসেছে। তাই আমার অনুরোধ, কোনো রাজনৈতিক দল-সংগঠন নয়, সব গণতন্ত্রকামী মানুষের এখন এক হওয়ার সময় এসে গেছে। আমরা যারা অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে চাই, আমরা যারা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতন্ত্রী দেখতে চাই, আজকে তাদের শুধু সচেতন নয়, রুখে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে। আমি আহ্বান জানাব, শুধু একাত্মতা ও সংহতি নয়, সর্বশক্তি দিয়ে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন, এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।’

হামলার পর সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ভয়ংকর ছিল বলে উল্লেখ করেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, মানুষ এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত, তাঁরা সরকারের প্রতি আস্থাহীনতার কথা জানাচ্ছেন।

গণমাধ্যমে যে হামলা হয়েছে, এর সঙ্গে সরকারের ভেতরের একটি অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা শব্দটা ব্যবহার করছি মব ভায়োলেন্স। এই শব্দের সঙ্গে প্রথম দিকে একমত হতাম না বা আমরা এটার বিরোধিতা করতাম। কারণ, আমরা যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, তাদের পক্ষ থেকেই পুরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে প্রথম থেকে বলা হয়েছে মব। ফলে আমরা বলেছি যে, এটা মবোক্রেসি নয়।’

বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। ছবি: সংগৃহীত
বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের মুখোমুখি করতে হবে।

প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে ‘মব ভায়োলেন্সের’ বিরুদ্ধে তাঁদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।

প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী আইরিন খান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ প্রমুখ।

সভা শেষে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের সামনে মানববন্ধন করেন সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের সদস্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সৈয়দ এহসানুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত
সৈয়দ এহসানুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত

নিজের দল বিলুপ্ত করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা। আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই যোগদান অনুষ্ঠান হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল দিয়ে হুদা যোগ দেন। এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন সৈয়দ এহসানুল হুদা।

নবাগতদের অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে আজকে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হলেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে এবং একইসঙ্গে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা কর্মসূচি এবং চেয়ারপাসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা রেখে তারা বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন। আমরা আশা করছি, তাদের এই যোগদান বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করবে।’

বিএনপিতে যোগ দিয়ে সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘বিএনপি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী দল। আমরা এই মুহুর্তে দেশের এই ক্রান্তিকালে গণতন্ত্রের পথে বিএনপিতে যোগ দিলাম।’

এহসানুল হুদা আরও বলেন, ‘আজকে নির্বাচন বানচালের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই মুহুর্তে আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমি আজকে আমার দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করছি। আশা করছি, অতীতে যেভাবে রাজপথে সংগ্রাম করেছি, একটি সুন্দর বাংলাদেশ ৩১ দফার আলোকে বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখেছি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে পারব।’

যোগদানের এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২৭ ডিসেম্বর ভোটার হওয়ার আবেদন করবেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৪
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

২৭ ডিসেম্বর ভোটার হওয়ার আবেদন করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘২৫ তারিখ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার হচ্ছে ২৬ তারিখ। শনিবার ২৭ তারিখ নির্বাচনকালীন এই সময়ে নির্বাচন কমিশন অফিস সব খোলা থাকে। সেই দিনই এই ভোটার হওয়া, আইডি কার্ড বা ভোটার আইডি বা ন্যাশনাল আইডি হওয়া-সংক্রান্ত যা কিছু আছে, তিনি এই ২৭ তারিখে করবেন।’

তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর সাধারণ নিয়মে বা মাঠপর্যায় থেকে ভোটার হওয়ার সুযোগ থাকে না। তখন বিষয়টি চলে যায় পুরোপুরি কমিশনের হাতে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ১১ ডিসেম্বর। ফলে এখন কীভাবে বা কোন পদ্ধতিতে তারেক রহমান ভোটার হবেন, সেটি নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে।

সব ঠিক থাকলে দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর পর ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। তারেক রহমান যেহেতু ঢাকার বাসিন্দা, সে হিসেবে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে তাঁর ভোটার-সংক্রান্ত সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে ২৯ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্টের বাসায় ভোটার হয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনিও তফসিল ঘোষণার পর শেষমুহূর্তে ভোটার হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত