Ajker Patrika

হেফাজতের সঙ্গে বিএনপির কোনো সংযোগ নেই: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
হেফাজতের সঙ্গে বিএনপির কোনো সংযোগ নেই: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে হত্যার বিচার চেয়েছি। আমাদের নৈতিক এ চাওয়াকে সরকার ও কিছু গণমাধ্যম ভিন্নভাবে প্রচার করছে।বলা হচ্ছে হেফাজতের কর্মসূচিতে বিএনপির সমর্থন ছিল। বিএনপির ইন্ধন ও উস্কানিতে হেফাজত কর্মীরা দেশব্যাপি তাণ্ডব চালিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট উত্তর, হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এবং তাদের সাথে আমাদের কোন সংযোগ নেই।   

আজ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার প্রচার চালাচ্ছে আমরা হেফাজতকে সমর্থন ও উস্কানি দিয়েছি। হেফাজতকে উস্কানি দিয়েছে সরকার। তারা বায়তুল মোকাররমে সাধারণ একটি বিক্ষোভ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও পুলিশ তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। হেফাজতের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক নেতা গুলি করেছে, সেই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশও হয়েছে।    

সোমবার ও মঙ্গলবার বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলা, মামলা, গ্রেফতার, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, পুলিশ ও সরকারদলের লোকজন যৌথভাবে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি চলাকালে  পুলিশ ও সরকারদলের লোকেরা আমাদের নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিচার্জ করে গুরুতর আহত করেছে। কোথাও কোথাও দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের দাবি করছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। অথচ ভোটবিহীন সরকার তাদের অনৈতিক ও ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সভা-সমাবেশে হামলা, মামলা, গ্রেফতারসহ দমন, নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন,  করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়নের কোনও লক্ষণ দেখছি না। সরকারের উদ্যোগটা কোথায়? সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ থাকবে, সেটি কোথায়?

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি করোনার এই পরিস্থিতিতে বিএনপির কর্মসূচি পালন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি তো আগেই স্থগিত করেছি। বর্তমানে সাধারণ মানুষের উপর হামলার কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়েছি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, করোনার সংক্রমন বাড়ছে, আমাদের অনেক নেতা কর্মী আক্রান্ত হয়েছে। অল্প বয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছে। ঠিক মতো করোনার টেস্ট হচ্ছে না। আমার ধারণা ১০ শতাংশও করোনা টেষ্ট হচ্ছে না। সরকার কখনই করোনার বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করেনি। সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবের আগেই স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। অবিলম্বে এসব অনুষ্ঠান বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সরকার গত বছর মার্চেও উৎসব পালন বন্ধ করেনি। এবারও তারা উৎসব পালন বন্ধ করেনি। যখন তাদের বিদেশি মেহমান ও মহারথিরা চলে গেছে, তখন করোনার বিষয়টি আবারও সামনে এনেছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ্  প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপি ছাড়লেন কেন্দ্রীয় নেতা, তারেক রহমানকে সমর্থন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মীর আরশাদুল হক। ছবি: সংগৃহীত
মীর আরশাদুল হক। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে অবশেষে নিজ দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারা দেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

তারেক রহমানের ফেরার এই বিশেষ দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছেড়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক। একই সঙ্গে তিনি তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এনসিপি ব্যর্থ হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

মীর আরশাদুল হক এনসিপির কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দল ও বড় অংশের নেতারা ভুল পথে আছেন।’

ফেসবুক পোস্টে আরশাদুল হক লিখেছেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ও জোটের সরকার গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। জুলাই অভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে তারেক রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বক্তব্য পর্যালোচনা করে আমার মনে হয়েছে, সবাইকে ধারণ করে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা ও সক্ষমতা কেবল তিনিই রাখেন।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশ নিয়ে তারেক রহমানের ‘ক্লিয়ার ভিশন’ এবং ‘স্মার্ট অ্যাপ্রোচ’ তাঁকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো হুজুগে প্রভাবিত না হয়ে দেশের সামগ্রিক স্বার্থে তারেক রহমানের জনকল্যাণমূলক ভিশন বাস্তবায়নে সমর্থন জানানো উচিত।’

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন থেকে ফিরে আসার এক বিজয়ের গল্প। দলটির মতে, এটি কেবল একজনের আগমন নয়, বরং নতুন রাজনীতি ও নতুন করে পথচলার এক দৃঢ় সংকল্প। বিমানবন্দরের আশপাশে এবং রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে ভোর থেকেই হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাদের প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাতে সমবেত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঘোড়ার গাড়িতে করে ৩০০ ফুটের দিকে যাত্রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘোড়ার গাড়িতে করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকার ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহর নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে শাহবাগ-বাংলামোটর হয়ে কারওয়ান বাজার থেকে ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ থেকে ৩০০ ফিটের দিকে যাত্রা করতে দেখা গেছে।

ঘোড়ার গাড়ি
ঘোড়ার গাড়ি

আবু নাসের রহমাতুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তারেক রহমান দীর্ঘ বছর পরে দেশে ফিরেছেন এ জন্য আমরা সবচেয়ে খুশি আজকের দিনে। আজ বরিশাল থেকে রওনা হয়েছি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে। ঢাকা থেকে প্রায় তিন শতাধিক রিকশায় করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যাত্রা করেছি।’

লাল মিয়া নামে একজন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বরিশাল থেকে সোজা ঢাকায় এসেছি। পরে আমরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি।’ মো. ইব্রাহিম এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘আমরা অনেক খুশি যে তারেক রহমান আজ দেশে এসেছেন। আমরা ৩০০ ফিটের দিকে রওনা হয়েছি।’

মো. জাকির হোসেন নামে অপর এক বিএনপি কর্মী বলেন, ‘তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাতে বরিশাল থেকে আমরা এসেছি। আবু নাসেরের নেতৃত্বে আমাদের এই যাত্রা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব, তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে সারজিস

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার পথে বাংলাদেশে স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টায় এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান প্রায় দেড় যুগ পর বাংলাদেশে ফিরছেন। স্বৈরাচারের পতন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি, নানা উত্থান-পতন, রাজনৈতিক ক্রমধারার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি আজ বাংলাদেশে আসছেন। আমরা ২৪ এর অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে তাঁকে স্বাগত জানাই।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক লড়াই, আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই থেকে শুরু করে আগামীর কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার পথে বাংলাদেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কাজ করে যাব, এটাই প্রত্যাশা। স্বাগতম।’

১৭ বছরের নির্বাসন জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪৪ মিনিটে বিমান থেকে নামেন তারেক রহমান। এরপর ইমিগ্রেশন পার হয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলে যাবেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালি পায়ে বাগানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারেক রহমান, হাতে নিলেন মাটি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৯
খালি পায়ে বাগানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারেক রহমান, হাতে নিলেন মাটি

বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই জুতা খুলে মাটিতে খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করেছেন তারেক রহমান। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের বাইরের বাগানে তিনি খালি পায়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১২টা ৩১ মিনিটে জুতা-মোজা খুলে মাটিতে দাঁড়ান তারেক রহমান। এরপর ডান হাতে এক টুকরো মাটি তুলে নেন তিনি। এরপর জুতা পায়ে দিয়ে তাঁর জন্য নির্ধারিত বাসে উঠে পূর্বাচলে স্থাপিত সংবর্ধনা মঞ্চের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত