Ajker Patrika

মহান বিজয় দিবস আজ

ছবি: বাসস
ছবি: বাসস

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। সময় বিকেল প্রায় সাড়ে ৪টা। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ দলিলে সই করেন পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। আজ সেই বিজয়ের গৌরবময় দিন।

৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে পাওয়া নতুন দেশে সব বৈষম্যের বিলোপ চেয়েছিল মানুষ। কিন্তু হয়েছে বিপরীত। ১৯৭১ থেকে ২০২৪—অর্থনীতি বড় হয়েছে, সঙ্গে বেড়েছে বৈষম্যও। রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে ৫৩ বছর ধরে চলে আসা বৈষম্য ও বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে আবার একটি অভ্যুত্থান ঘটে দেশে, ছাত্র-জনতা যার নাম দিয়েছে ‘জুলাই বিপ্লব’। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। তারুণ্যের বিজয়গাথা লেখার এই সময়ে আজ দেশবাসী উদ্‌যাপন করবে বিজয়ের ৫৩তম বার্ষিকী। বিজয়ের এই আনন্দের দিনে জাতি পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

শহীদদের স্মরণ আর বিজয়ের আনন্দ উদ্‌যাপনে জাতীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। উৎসবের আবহে লাল-সবুজের বর্ণিল সাজে সেজেছে দেশ। বিজয় দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে বলেছেন, ‘স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। তবে এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনা, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম ও কৃষিবিপ্লবের শুরু হয়। কিন্তু বিজয়ের পাঁচ দশক পার হলেও জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এখনো অর্জিত হয়নি। বারবার আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথচলা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কখনোই থেমে যায়নি।’ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছে, তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতার স্বাদ এবং জাতি হিসেবে নিজস্ব পরিচিতি। লাখ লাখ শহীদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়ে যাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বিজয় দিবস কেবল আমাদের গর্বের উৎস নয়, এটি আমাদের শপথের দিনও। শপথ আমাদের একতাবদ্ধ থাকার, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করার।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করছে। আমাদের দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ১০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম ও পাঁচ টাকা মূল্যমানের একটি ডেটাকার্ড অবমুক্ত করেছেন।

বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনাকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। ঢাকা থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

‘অনুভূতি বদল হয়নি’

বদলে যাওয়া সময়ে এবারের বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হলেও যে উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় বিজয়ের অনুভূতির বদল হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল কথাটা হচ্ছে মানুষে মানুষে অধিকার এবং সুযোগের সাম্য। সেই স্বপ্ন নিয়েই আমরা দীর্ঘকাল সংগ্রাম করেছি। স্বাধীনতা এসেছে দুবার; কিন্তু সাতচল্লিশের স্বাধীনতা তো স্বাধীনতা নয় বলেই বুঝেছি। সে জন্য আমাদের সংগ্রাম ছিল মুক্তির জন্য। মুক্তির মানেই হচ্ছে একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা; আমরা ওই দিকে এগোতে পারিনি। শাসনকর্তা বদল হয়েছে, এ এসেছে, ওই দল গেছে, সামরিক-বেসামরিক, নির্বাচিত-অনির্বাচিত নানান ধরনের শাসক ৫৩ বছরে আসা-যাওয়া করেছে; কিন্তু উন্নতির ধারা ছিল একই, সেটি ছিল পুঁজিবাদীর ধারা। পাকিস্তানেও ওই ধারা চলছিল। এই উন্নতির ফল সকলে পায়নি। শতকরা ২০ জন লাভবান হয়েছেন, ৮০ জন বঞ্চিত হয়েছেন। ওই ৮০ জনই কিন্তু একাত্তরে জনযুদ্ধে বেশি অংশ নিয়েছেন। তাঁদের স্বপ্ন তো সফল হলো না।’

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের মতো এ দেশের শাসকেরাও লুটপাট করে সম্পদ পাচার করেছেন। এই সম্পদ সৃষ্টি করেছেন মেহনতি মানুষ। ফলে দারিদ্র্য ঘোচেনি। পুঁজিবাদী উন্নয়নের যে ফল, তাতে বৈষম্য ও বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পায়। তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতিটা ভিন্ন কিন্তু ধারাবাহিকতা একই। মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা, সেই চেতনা বাস্তবায়িত হয়নি, স্বপ্ন অর্জিত হয়নি। রাজনৈতিক পরিবর্তনটা হলো, রাষ্ট্র ভাঙল-গড়ল; কিন্তু সমাজে কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়নি। মানুষে মানুষে সম্পর্কটা বদল হয়নি, এটিই হচ্ছে দুঃখের বিষয়।’

কর্মসূচি

মহান বিজয় দিবসের প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনৈতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাবেন।

বিজয় দিবসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।

আজ বিকেলে বঙ্গভবনে বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারগুলোকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। সিনেমা হলে বিনা মূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখানো হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী বিজয়মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিএফআই সেলে গুম: হাসিনাসহ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পেছাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টিএফআই সেলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ আগামী ২৩ ডিসেম্বর। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।

এর আগে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে আজ সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে মনসুরুল হক চৌধুরী এই মামলায় শুনানি করতে সময় আবেদন করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে শুনানি করতে আগামীকাল এবং আদেশের জন্য ২৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

এই মামলায় ১৭ আসামির মধ্যে রোববার শুনানির সময় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন–র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এই মামলায় পলাতক রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে, র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) মাধ্যমে গুম–নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জনকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করলেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবী

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫১
পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করলেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরাও ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করছেন।

আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অ্যাপটির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ লাখ ২৩ হাজার ২৩৮ জন পুরুষ ও ৩৪ হাজার ৬১৯ জন নারী রয়েছেন।

প্রবাসীদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩১৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এ ছাড়া কাতারে ৫১ হাজার ৫৮২ জন, ওমানে ৩৭ হাজার ৭৫৫, মালয়েশিয়ায় ৩৫ হাজার ৪৬৭, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৬ হাজার ৪১৮, যুক্তরাষ্ট্রে ২৩ হাজার ৮০২, কুয়েতে ১৯ হাজার ৬৭৯, যুক্তরাজ্যে ১৮ হাজার ৪৭৯, সিঙ্গাপুরে ১৭ হাজার ৫৯, ইতালিতে ১৩ হাজার ৬৯২ ও কানাডায় ১১ হাজার ১১১ জন নিবন্ধন করেছেন।

অপর দিকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেশে অবস্থানরত ৮৩ হাজার ৮২ জন বাংলাদেশি ভোটার ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট এই ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন।

জেলা অনুযায়ী নিবন্ধন: পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ কুমিল্লা জেলায় ৫৬ হাজার ৮৮৯ জন। এ ছাড়া ঢাকা জেলায় ৪৮ হাজার ২৫৪ জন, চট্টগ্রামে ৪৭ হাজার ৩৩৯, নোয়াখালীতে ৩২ হাজার ৭৪৫, সিলেটে ২৩ হাজার ৫৯৫ ও চাঁদপুর ২২ হাজার ৩০৫ ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

নির্বাচনী আসন অনুযায়ী নিবন্ধন: অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফেনী-৩ আসনে ৮ হাজার ৭৯২ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৮ হাজার ৭৫ জন, নোয়াখালী-১ আসনে ৭ হাজার ৭৫৭, কুমিল্লা-১০ আসনে ৭ হাজার ৬৪৩ ও নোয়াখালী-৩ আসনে ৭ হাজার ২৯০ জন ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন।

প্রবাসীদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু: জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারী প্রবাসী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল শনিবার ও শুক্রবার সন্ধ্যায় মোট ১০টি দেশের ৪১ হাজার ৫৪৩ জন প্রবাসী ভোটারের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে বলে বাসসকে নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনবিষয়ক আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু হয়েছে। সেদিন তিন দেশে এবং পরদিন সাত দেশে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

সালীম আহমাদ খান বলেন, আগামী ২১ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হলে অ্যাপের মাধ্যমে অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভোটাররা তা জানতে পারবেন। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটাররা পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে লগইন করে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশিকাতে প্রদত্ত পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক চিহ্ন বা ক্রস চিহ্ন দেবেন।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের কেউ যদি (আগে থেকে প্রার্থীর বিষয় নিশ্চিত হয়ে) প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোট দেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁর ভোট বাতিল হবে না। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন প্রবাসীরা।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এই তিন দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ৮৯২টি, যুক্তরাজ্যে ৫৭৩ ও মালয়েশিয়ায় ৬ হাজার ২৪৬টি পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

অপর দিকে গতকাল সন্ধ্যায় মোট সাতটি দেশে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এই সাত দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৮ হাজার ৪৮০টি, চীনে ৬৮১, কুয়েতে ১ হাজার ৩১০, কাতারে ২ হাজার ৭৩৭, সৌদি আরবে ৭ হাজার ৩৪৩, জাপানে ৫ হাজার ৬০০ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭ হাজার ৬৮১টি।

নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিতদের নিবন্ধন ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বর: জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বার্তায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরে মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।

আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের নিবন্ধন ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর: পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর নিবন্ধন করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে ইসির বার্তায় বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।

ইসির অপর এক বার্তায় বলা হয়, ‘পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা দিন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা দিন। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ছাড়া পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারদের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে না।’

এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও আওতাধীন মাঠপর্যায়ের রাজস্ব খাতের সব কর্মকর্তা/কর্মচারী, যাঁরা সরকারি দায়িত্ব পালনের কারণে নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে (আইসিপিলি) ভোট দিতে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

সরকারি চাকরিজীবীদের নিবন্ধন ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।

এ বিষয়ে ইসির এক বার্তায় বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোটের (আইসিপিভি) মাধ্যমে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন।

পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাগেজ সুরক্ষায় শাহজালালে বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবহার বাড়াল বিমান

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১২
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রীসেবা ও লাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী, নিষিদ্ধ বা অবৈধ দ্রব্য বহনের আশঙ্কা দেখা দিলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশিকালে প্রয়োজনে তালা ভাঙা, চেইন কাটা বা লাগেজের কোনো অংশ কর্তন করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যাত্রী বা এয়ারলাইনসের পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

তবে বাস্তবতায় দেখা যায়, বিদেশ থেকে আগত অনেক যাত্রী এ ধরনের লাগেজ ক্ষতির দায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কিংবা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ওপর আরোপ করে থাকেন। পাশাপাশি কিছু অসাধু চক্রের এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে যাত্রীদের সম্পত্তি সুরক্ষা, লাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা এবং দায়ী স্টেশন বা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আজ রোববার থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের লাগেজ ওঠানামা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার কার্যকর করেছে।

বিমান কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, যাত্রীদের মালপত্র সুরক্ষা জোরদার করতে ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে বিমানের নিজস্ব ফ্লাইটের ব্যাগেজ ডেলিভারি কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের দেহে বডি ওর্ন ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়। এই উদ্যোগে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় বর্তমানে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা গ্রহণকারী সব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনকেও এই ক্যামেরাভিত্তিক নিরাপত্তা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

আজ এই সম্প্রসারিত কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (গ্রাহকসেবা) ও যুগ্মসচিব বদরুল হাসান লিটন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমাদের যাত্রীদের সম্পত্তি ও সেবার গুণগত মান রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বডি ওর্ন ক্যামেরা প্রযুক্তির সম্প্রসারণ লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ের প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে। এটি যাত্রীদের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের কর্মীদের পেশাদারত্বকে আরও উজ্জ্বল করবে।’

বদরুল হাসান বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিমানের সার্বিক যাত্রীসেবার মান আরও উন্নত হবে বলে কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জাতীয় কমিটির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

আজ রোববার সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, রেল কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কক্সবাজারসহ পূর্বাঞ্চর রেলের ছয় রুটে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছে, যা গতকাল শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিভিন্ন রেলসেতুর মাশুল বাড়িয়ে পূর্বাঞ্চল রেলের যাত্রীদের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ উল্লেখ করে নাগরিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ নিয়ে ছয় রুটে গত ১৩ বছরে পাঁচ দফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় আকস্মিক ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এসব রুটের নিয়মিত যাত্রীদের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত