Ajker Patrika

জাতীয় ঐকমত্য গঠনে সংলাপ শুরু

  • প্রথম দিনে এলডিপির সঙ্গে বৈঠক, সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা
  • ঈদের আগে আরও তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশন
  • মতামত জমা দিয়েছে জামায়াত। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেছে দলটি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭: ৩২
আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে। ছবি: সংগৃহীত
আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শুরু হলো।

কমিশন সূত্র বলেছে, তাদের আহ্বানে সাড়া দেওয়া সব দলের সঙ্গে এক বা একাধিকবার সংলাপ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো নিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণা করবে সরকার। এর ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগে সংস্কার না নির্বাচন—এ নিয়ে কমিশন কোনো চাপে নেই। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংলাপ শুরু করলাম। ঈদের আগে আরও দু-একটি দলের সঙ্গে বসার ইচ্ছা আছে। ঈদের পর ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করব। সেখানে প্রতিদিন অন্তত দুটি দলের সঙ্গে বৈঠক করব।’

এদিকে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে গতকাল মতামত দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, শুরুতে ছোট দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হবে। শেষের দিকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বড় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুদক ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল। এগুলোর মধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে ১৬৬টি প্রশ্নের স্প্রেডশিট ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জামায়াতে ইসলামী, এলডিপিসহ ১৬টি দল মতামত জমা দিয়েছে। বিএনপি ও জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আগামী রোববার মতামত জমা দেবে। বিএনপি বেলা ১টায় ও এনসিপি বেলা ২টায় মতামত জমা দেবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব দলের মতামত পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী কমিশন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গতকাল বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তুলতে কমিশন যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেখানে সংস্কার হবে। আর যেখানে ঐকমত্য হবে না, সে বিষয়গুলো নিয়ে দলগুলো নির্বাচনের পর জনগণের কাছে যাবে, পরে সংসদে আলোচনা হবে।’

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এলডিপির সংলাপ শুরু হয় বেলা ৩টার পর, জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে। শুরুতে মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে সূচনা বক্তব্য দেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এরপর কথা বলেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

মাঝে আসরের নামাজের জন্য ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে এই সংলাপ চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। সূত্র জানায়, বৈঠকে সংস্কার কমিশনের প্রায় প্রতিটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা ব্যক্তি হওয়ার প্রস্তাবের পাশাপাশি দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না—এমন প্রস্তাবে এলডিপি সমর্থন জানিয়েছে।

বৈঠকের পর অলি আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মন খুলে আলোচনা করেছেন। তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা তাদের কাজে লাগাতে বলেছেন। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংশোধন অধ্যাদেশের মাধ্যমেই এখন করা যেতে পারে। যেটা পরে করা যাবে, সেটা সংসদের জন্য রেখে দেবে।

অলি আহমদ বলেন, ‘সব সুপারিশের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ দুর্বল ছিল। যত কিছুই করেন না কেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারবেন না, যদি না দুজন লোক কাজ না করেন, একজন ওসি, আরেকজন ইউএনও।’ তিনি জানান, ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে তাঁরা একমত প্রকাশ করেন ১২০টিতে। বাকি ৪২টিতে একমত নন। দুটিতে আংশিক একমত এবং দুটি অস্পষ্ট। সংবিধান সংস্কারসংক্রান্ত ৭০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৫১টিতে এলডিপি একমত, ১৬টিতে একমত নয়, একটিতে আংশিক একমত এবং দুটি প্রস্তাব অস্পষ্ট বলে মনে করে।

সূত্র জানায়, এলডিপি সংসদের মেয়াদ চার বছর করার বিষয়েও একমত প্রকাশ করেছে।

বৈঠকের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঈদের আগে তিনটি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। এর মধ্যে আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় খেলাফত মজলিস ও বেলা দেড়টা থেকে লেবার পার্টি এবং রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংলাপ হবে।

মতামত জমা দিল জামায়াত

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে গতকাল ঐকমত্য কমিশনে জমা দেওয়া মতামতে জামায়াতে ইসলামী সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে। জামায়াতের পক্ষে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ ও প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কমিশনের পক্ষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও মনির হায়দার ছিলেন।

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাবের প্রসঙ্গে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এটি আধুনিক গণতান্ত্রিক বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশে রয়েছে। এর অনেক ব্যাখ্যা আছে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে জামায়াত একমত হলেও বিষয়টি নিয়ে কিছু বক্তব্য তাঁরা দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট স্থাপনের পক্ষে জামায়াত মত দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মামলা পেন্ডিং হয়ে আছে, জনগণ বিচার পাচ্ছে না, একেকটি মামলার বিচার পেতে ১০-২০-৩০ বছর পর্যন্ত মানুষ ঘুরছে।

জামায়াত অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, তাই সরকারের সংস্কার কাজে সহযোগিতা করছে। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে জামায়াত কোনো প্রস্তাব দেয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, মতামতে সেই প্রসঙ্গ ছিল না।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, তাঁদের দল নির্বাচনের দিন, মাস, ঘণ্টা বেঁধে দেয়নি। সময়ের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন নিরপেক্ষ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, অবাধ নির্বাচনের জন্য ১৫ বছর অপেক্ষা করতে পারি। নির্বাচনের জন্য মিনিমাম সংস্কার প্রয়োজন হলে সে জন্য যৌক্তিক সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত।’ জামায়াত বিদ্যমান সংসদেই সংবিধানের পরিবর্তন চায় বলে জানান মিয়া গোলাম পরওয়ার।

আলী রীয়াজ বলেন, আগে সংস্কার না নির্বাচন প্রশ্নে কোনো ধরনের চাপে নেই ঐকমত্য কমিশন। তাঁদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা তা-ই করছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই তাদের অবস্থান বলবে। কিন্তু কমিশন হিসেবে তাঁদের দায়িত্ব সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো তুলে ধরা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটি জায়গায় যাওয়া। সুতরাং, কমিশন চাপে নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হাদি হত্যাকাণ্ড: ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীর দোষ স্বীকার

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তুর ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনজন। একইদিনে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে জব্দ করা কার্তুজ ও বুলেট পরীক্ষার নির্দেশ দেন আদালত।

ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনজনের জবানবন্দি

গতকাল বুধবার সামিয়া, মারিয়া ও সিপুকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তিনজনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আবেদন করেন। পরে আসামি মারিয়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে এবং সামিয়া ও সিপু ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনাঈদের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে তিনজন কী বলেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশ্বস্ত এক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পরে ফয়সাল কি করেছে এবং কি বলেছে সে সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন।

এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর এই তিনজনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর তিনজনকে আবার দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গত ১৪ ডিসেম্বর সামিয়া ও সিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, এ মামলায় গ্রেফতার ফয়সালের মা ও বাবাও স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষা

বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ঘটনাস্থলে জব্দ করা ফায়ার কার্তুজ ও বুলেট সদৃশ বস্তু পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদি ওরফে ওসমান গণি (৩৩) গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটের দিকে পল্টন থানাধীন বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোড সংলগ্ন ডিআর টাওয়ারের সামনে দুষ্কৃতিকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে গত ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে নিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহ বাংলাদেশ বিমান যোগে দেশে এনে ২০ ডিসেম্বর সকালে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

মামলায় ঘটনাস্থল হতে ফায়ার কার্তুজ ও ফায়ার বুলেট সদৃশ বস্তু আলামত জব্দ করা হয়। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আলামতসমূহ ব্যালিস্টিক পরীক্ষা করে বিস্তারিত মতামত প্রদান করার জন্য সিআইডির ব্যালিস্টিক শাখার বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত