Ajker Patrika

পুলিশ ও আদালত ঠিকভাবে কাজ করলে মবের তাণ্ডব কমবে: আসিফ নজরুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ২৬
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: পিআইডি

পুলিশ ও বিচার বিভাগ যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে দেশে মবের (জনতার সহিংসতা) তাণ্ডব কমবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে বিচার বিভাগ, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

কর্মশালায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘পুলিশ ও আদালত যদি সঠিকভাবে কাজ করে, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং মবের তাণ্ডবও কমে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যে রয়েছি। জুলাই-আগস্টে সহস্র হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হাজার হাজার তরুণের অঙ্গহানির ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই এসব ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন। মনে হতে পারে, যেন গাজা স্ট্রিপের মতো পরিস্থিতি চলছে। যেন একধরনের ভিডিও গেম চলছে।’

বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা হুটহাট করে জামিন দেবেন না। জামিন পাওয়ার পর কেউ যদি দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, পালিয়ে যায় বা একই অপরাধ পুনরায় করে, তাহলে সে বিষয়ে বিচারকের বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা উচিত। তবে যাঁরা সত্যিকার অর্থে জামিনের উপযুক্ত, তাঁদেরও যাতে বঞ্চিত হতে না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।’

এই কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে কোনো শয়তান যেন পালাতে না পারে। বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করেছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে দমন করেছে, প্রশাসনের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। এককথায়, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ব্যবহার করেছে।’

তিনি জানান, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে অপতৎপরতায় লিপ্তদের দমনে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’’ চালু করা হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সার্বিক অভিযানের তদারকি করা হবে এবং পুলিশ সদর দপ্তরে স্থাপিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার’-এর মাধ্যমে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আইনজীবীদের বলছি, আপনারা আদালতে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর তারিখ ও সময় সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং প্রসিকিউটিং এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করুন। যাতে কোনো অপরাধী যেন সহজে জামিন না পায়।’

তিনি আরও জানান, ‘মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশ কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনায় সমন্বয় করবেন। একই সঙ্গে সিএমএম, সিজেএম, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করবেন।’

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পুলিশ জনগণের বন্ধু হওয়া উচিত। অতীতে তা হয়নি, তবে এখন আমরা সে চেষ্টাই করছি। মানবাধিকার রক্ষা করেও পুলিশিং করা সম্ভব, সেটির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।’

তিনি বিচার বিভাগের উদ্দেশে বলেন, ‘বারবার আসামিদের রিমান্ডে নেওয়া, নির্যাতন করা এবং রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের শাসনামলে শত শত গুম ও হাজার হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থাকে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।’

কর্মশালায় স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটর, ঢাকা ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

বিহারে ইতিহাস গড়ে বিজেপি জোটের বিপুল জয়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও মহাজোটের ভরাডুবি

প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়

পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য প্রচার, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব

শেরপুর-২ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন পোশাকে মাঠে নেমেছে পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নতুন পোশাকে মাঠে নেমেছে পুলিশ

বাংলাদেশ পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম বা পোশাক মাঠপর্যায়ে ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে আজ শনিবার থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশসহ দেশের সব মহানগর পুলিশ ও বিশেষায়িত ইউনিটের সদস্যরা ‘লোহিত রঙের’ নতুন পোশাক পরেছেন। তবে জেলা ও রেঞ্জ পুলিশ সদস্যরা এখনো নতুন ইউনিফর্ম পাননি; ধাপে ধাপে তাঁদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম উইংয়ের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, মেট্রোপলিটনে ইউনিফর্ম পরিবর্তন শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশ দ্রুতই নতুন পোশাকে রূপান্তরিত হবে। তবে এপিবিএন ও এসপিবিএন আগের পোশাকই ব্যবহার করবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের অভিযোগের পর পুলিশ সংস্কারের দাবি ওঠে। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পোশাক অনুমোদন দেয়। সেই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে পিবিআই, ট্যুরিস্ট পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরাও এই নতুন রঙের পোশাক পরবেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গতকাল থেকে দেশের সব মহানগর পুলিশে নতুন পোশাক চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব সদস্যই নতুন ইউনিফর্ম পাবেন।

এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, পুলিশ, র‍্যাব ও আনসারের জন্য তিন ধরনের নতুন পোশাক চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

তাঁর মতে, পোশাক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাহিনীর সদস্যদের মানসিকতার বদলও আসবে বলে আশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। পুলিশে সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের কাজও চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

বিহারে ইতিহাস গড়ে বিজেপি জোটের বিপুল জয়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও মহাজোটের ভরাডুবি

প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়

পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য প্রচার, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব

শেরপুর-২ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াতসহ ২৪ দলের সঙ্গে রবি ও সোমবার সংলাপে বসবে ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গত বৃস্পতিবার থেকে সংলাপ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপের প্রথম দিন আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সকাল-বিকেল দুই পর্বে ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করে কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল রোববার ১২টি এবং পরশু সোমবার আরও ১২টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।

ইসি জানিয়েছে, আগামীকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।

সূত্র আরও জানায়, পরদিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি। আর বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।

সংলাপের প্রথম দিন যে ১২ দলের সঙ্গে বসেছিল ইসি, সেগুলো হলো—লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

বিহারে ইতিহাস গড়ে বিজেপি জোটের বিপুল জয়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও মহাজোটের ভরাডুবি

প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়

পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য প্রচার, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব

শেরপুর-২ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শতবর্ষী ‘পি এস মাহসুদ’ এখন প্রমোদতরি, ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার ফিরল পর্যটন সেবায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৭
দীর্ঘদিন পর নতুন সাজে যাত্রা শুরু করল প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
দীর্ঘদিন পর নতুন সাজে যাত্রা শুরু করল প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’ অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত হলো। আজ শনিবার সকালে বুড়িগঙ্গার তীরে অনুষ্ঠিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে পুনরায় চালু হতে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী স্টিমারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীসহ সরকারের একাধিক সিনিয়র সচিব ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

উদ্বোধনকালে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ হবে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন। এটি কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক।’

শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) অধীনে থাকা এই শতবর্ষী স্টিমারকে প্রমোদতরি হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার চায় নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, কীভাবে একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ। তিনি নিশ্চিত করেন, পি এস মাহসুদের পাশাপাশি পি এস অস্ট্রিচ, পি এস লেপচা, পি এস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরোনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করাই এর লক্ষ্য।

বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে, ২১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে এটি পর্যটন সার্ভিস হিসেবে নিয়মিত চলাচল শুরু করবে।

শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

স্টিমারটি প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে এক দিন চলবে। প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে ছাড়বে এবং রাতে বরিশাল পৌঁছাবে। আবার শনিবার এটি বরিশাল থেকে ঢাকার পথে ফিরবে। বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগে স্টিমার রাতে চলাচল করলেও এবার দিনের বেলায় চালুর ফলে যাত্রী ও পর্যটকেরা নদী এবং তীরের দৃশ্য উপভোগে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী এনডিসি বলেন, প্যাডেল স্টিমারটি চালু হলে তা দেশ-বিদেশের বহু পর্যটককে আকর্ষণ করবে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, বাংলা গানের পরিবেশনাসহ নানা ব্যবস্থা রাখা হবে।

শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ
শনিবার প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদের নবযাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) জানায়, স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ন রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা এবং ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটকবান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফবোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

বিহারে ইতিহাস গড়ে বিজেপি জোটের বিপুল জয়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও মহাজোটের ভরাডুবি

প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়

পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য প্রচার, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব

শেরপুর-২ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দলগুলো আন্তরিক হলে কাঙ্ক্ষিত ফল মিলতে পারে: ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ০৩
দলগুলো আন্তরিক হলে কাঙ্ক্ষিত 
ফল মিলতে পারে: ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করার মাধ্যমে আমরা একটি ঐতিহাসিক এবং সাংবিধানিক যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক যাত্রায় যে একটি টেকটোনিক পরিবর্তন এসেছে, তার স্বীকৃতি রয়েছে এই আদেশে। এখন আমাদের সামনে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ রয়েছে, যা জুলাই সনদের সংস্কার বাস্তবায়নের পথ দেখাবে। এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।

রাজনৈতিক দলগুলো যদি অর্থবহ সংস্কার আনার প্রতিশ্রুতিতে আন্তরিক হয়, তাহলে এই আদেশ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনের পথ হতে পারে। যদি আদেশের অধীনে অনুষ্ঠিত গণভোটের ফলাফল ইতিবাচক হয়, তাহলে আমরা বৃহৎ আকারের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের আশা করতেই পারি। এ সংস্কারগুলো ক্ষমতার বৃহত্তর প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য আনবে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করবে বলে আশা করি।

জুলাই বিপ্লবের ফলে প্রকাশিত জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই আদেশটি জারি করা হয়েছে। এই আদেশটি যে আইনসংগত এবং বৈধ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিছু আইন বিশেষজ্ঞ ১৯৭২ সালের সংবিধানের টেক্সট থেকে ক্ষমতার উৎস খুঁজছেন। এটি একটি বড় ভুল। ১৯৭২-এর সংবিধানের টেক্সটের বাইরেও যে সাংবিধানিক প্রথা এবং বিধিবিধান বিদ্যমান, তা আমলে নিতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অন্তর্বর্তী সরকারের পরামর্শে জারি করা হয়েছে। অতএব, এই আদেশটি আইনসংগত এবং বৈধ।

যদি এই আদেশের অধীনে গণভোট এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন করতে বাধ্য থাকবে। এই পরিষদের ক্ষমতার উৎসই হবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের বিধানাবলি। আদেশ দ্বারা সৃষ্টি হওয়ায় পরিষদকে আদেশের শর্তাবলি মেনে চলতে হবে।

তবে আমি মনে করি না, সংবিধান সংস্কার পরিষদকে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সংস্কারগুলো কার্যকর করতে বাধ্য করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সম্ভব হবে। তা সত্ত্বেও, যদি গণভোটের ফলাফল ইতিবাচক হয়, তাহলে পরিষদ অবশ্যই সনদ সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটি নৈতিক এবং রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকবে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ একটি আইনি দলিল, যা জনগণের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগে প্রণীত হয়েছে, ফলে এটি আইনগতভাবে বাধ্যকর একটি দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

বিহারে ইতিহাস গড়ে বিজেপি জোটের বিপুল জয়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়েও মহাজোটের ভরাডুবি

প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল, গাংনীতে তোলপাড়

পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য প্রচার, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব

শেরপুর-২ আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন জুলাই যোদ্ধা খোকন চন্দ্র বর্মণ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত