কামরুল হাসান

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না।
টানেলের মুখে আলোর দেখা মেলে ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর সকালে। ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিকের হোস্টেল থেকে গ্রেপ্তার হন আবদুর রহমানের আপন ভাই, জেএমবির সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানি। সানিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাওয়া যায় সেই গুরুত্বপূর্ণ ক্লু—জেএমবির মজলিশে শুরার সদস্য হাফেজ মাহমুদ জানেন আবদুর রহমান কোথায় আছেন। ব্যস, শুরু হয়ে যায় হাফেজ মাহমুদকে পাকড়াওয়ের অভিযান। টানা দুই মাস চেষ্টার পর র্যাবের গোয়েন্দাপ্রধান লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিনের পাতা ফাঁদে পা দেন হাফেজ মাহমুদ। তাঁকে ধরা হয় ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠাগার থেকে।
শুরু হয় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। কিন্তু হাফেজ অটল। শায়খ রহমানের অবস্থান কিছুতেই বলবেন না। একপর্যায়ে শায়খের ফোন নম্বর জানাতে রাজি হন। র্যাবের আইটি শাখার মেজর জোহা খোঁজ নেন, নম্বরটি সিলেটের এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায়। শুরু হয়ে গেল জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে পাকড়াওয়ের অভিযান। মঙ্গলবার, বেলা পড়তে না পড়তেই ১০-১২টি গাড়ির বহর পথের লোকজনকে দু-পাশে সরিয়ে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটতে থাকে সিলেট হাইওয়ে ধরে। গাড়ি থেকে কর্নেল গুলজার আমাকে ফোন করেন। চেনা আওয়াজ : ‘ওস্তাদ, ব্যাগ রেডি করেন। বড় কিছু হবে।’ যেকোনো বড় খবরে এভাবেই তিনি আগাম ক্লু দিয়ে রাখতেন। তাঁর ফোন পেয়ে তৈরি হয়ে থাকি। নতুন অভিযান, নতুন খবরের প্রত্যাশা।
তার আগে বলে রাখি, এই ভয়ংকর জঙ্গি নেতাকে ধরার অভিযানটি ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। অভিযানের আগেও ছিল দীর্ঘ গোয়েন্দা তৎপরতা। গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই অভিযানের পরতে পরতে ছিল চমকপ্রদ সব তথ্য। তবে সেই সব কাহিনি বলার আগে শায়খ আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত তথ্যটা একটু ঝালিয়ে নিতে পারি।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের মূলনীতি ও ধর্মপ্রচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া শায়খ আবদুর রহমানের দিনকাল ভালোই চলছিল। ব্যবসাও করছিলেন বেশ। ১৯৯৮ সালে রিভাইভাল অব ইসলামিক হেরিটেজ সোসাইটির পরিচালক আকরামুজ্জামানের সঙ্গে আলাপের পর তিনি তথাকথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখেন। এ জন্য পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গেও বৈঠক করেন। এরপর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে ছয় সঙ্গী নিয়ে গঠন করেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ—জেএমবি। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারা দেশের ৬৩ জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় তাদের হাতে ৭৩ জন নিহত আর আহত হয় প্রায় ৮০০ লোক। পরে দেশ-বিদেশের চাপে চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ করে।
এবার অভিযানে ফিরে আসি। সিলেটে ততক্ষণে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোমিন সদর দপ্তরের নির্দেশ পেয়ে এমসি কলেজ টাওয়ারের আওতায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলছেন। লে. কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে ৪০ সদস্যের দলটি সিলেটে পৌঁছায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৮টায়। মেজর আতিক, মেজর মানিক, মেজর জাভেদ, মেজর ওয়াসি, ক্যাপ্টেন তানভির ও ক্যাপ্টেন তোফাজ্জলের মতো একঝাঁক সাহসী অফিসার সেই দলে। সবার হাতে ভারী অস্ত্র, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি সবাই।
র্যাবের আড়াই শ সদস্য সিলেট নগরীর টিলাগড় ও শিবগঞ্জ এলাকার ৮ বর্গকিলোমিটারের প্রতিটি সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। রাত ১০টা থেকে শুরু হয় বাড়ি বাড়ি চিরুনি তল্লাশি। কোনো কিছুই যেন তল্লাশি থেকে বাদ না পড়ে। আস্তে আস্তে তল্লাশির পরিধি কমিয়ে এনে টিলাগড়, শাপলাবাগ, কল্যাণপুর, কালশি ও বাজপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীভূত করা হয়।
সবার হাতে হাতে শায়খ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবিসংবলিত লিফলেট। রাত ১২টার দিকে সিলেট নগরী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে টুলটিকর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায় আবদুস সালাম সড়কের ২২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে প্রথম বাধা পায় র্যাব। এক ব্যক্তি ছুরি হাতে তেড়ে এসে বলে : ‘এগোলে খারাপ হবে।’ এরপর যা বোঝার বুঝে যায় সবাই। অভিযান তখন কেন্দ্রীভূত হয় এই বাড়ি ঘিরে। বাড়ির নাম ‘সূর্য্য দীঘল বাড়ী’।
দ্রুত বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। আশপাশের বাড়িতেও অবস্থান নেন অনেকে। নিয়ে আসা হয় ভারী অস্ত্র ও লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট। রাত পৌনে ১টার দিকে মাইকে সূর্য্য দীঘল বাড়ীর লোকজনকে বেরিয়ে আসতে বললেও কেউ সাড়া দেয় না। তাদের নীরবতায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে বাড়ির মালিক লন্ডনপ্রবাসী আবদুল হকের ছোট ভাই মইনুল হককে বাইরে থেকে ডেকে আনা হয়। তিনি মুখে মাইক লাগিয়ে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া হৃদয়ের নাম ধরে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তাতেও কাজ হয় না। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুন নবীকে দিয়ে ডাকানো হয়; কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
রাত ২টার দিকে একবার বাড়ির পেছনে দরজা খোলার শব্দ হয়। র্যাব সদস্যরা সচকিত হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধও হয়ে যায়। রাত ২টা ১০ মিনিটে হঠাৎ করে বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মানুষ ভারী গলায় দোয়া-দরুদ পড়তে শুরু করেন। কর্নেল গুলজার তখন ডাক দেন : ‘আবদুর রহমান বেরিয়ে আসুন।’ বাড়ির ভেতর থেকে ভারী গলার আওয়াজ : ‘ওই কাফের! তোর মুখে আমার নাম মানায় না, আমাকে মুজাহিদ বল।’
বুঝতে বাকি থাকে না, এটাই শায়খ আবদুর রহমানের কণ্ঠ। শেষ হয় প্রথম রাত। পরদিন বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার চেষ্টা। আবার রাত আসে। কথা বললেও আত্মসমর্পণে রাজি হন না শায়খ রহমান। ততক্ষণে ভোরের আলো ফুটে গেছে। সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বাড়ির ভেতরে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরপর চার-পাঁচটা বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত নিয়ে আসা হয় দালান ভাঙার যন্ত্রপাতি। সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙা হয় দক্ষিণের একটি জানালা। বৈদ্যুতিক কাটার এনে ছাদ ফুটো করা হয়। প্রথমে আয়না লাগিয়ে, পরে রশি দিয়ে ক্যামেরা নামিয়ে দেখা হয়—ভেতরে কী আছে। দেখা যায়, একটা বিছানা থেকে তার বেরিয়ে আছে। শুরু হয় হইচই—নিশ্চয়ই সারা বাড়িতে বোমা পাতা আছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা নিয়ে আসেন বড় বড় বড়শি। ফুটো দিয়ে নামিয়ে বিছানা টেনে তুলে দেখেন, সব ভুয়া যন্ত্রপাতিতে সাজানো।
দুপুরের দিকে একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয় বাড়ির ভেতরে। সেই গ্যাসে টিকতে না পেরে বেরিয়ে আসেন শায়খের স্ত্রী নূরজাহান বেগম রূপা, ছেলে নাবিল (১৬), মাহমুদ (১৩), ফুয়াদ (১০) ও দেড় বছরের আহাম্মদ। সিলেটের তখনকার জেলা প্রশাসক এম ফয়সল আলম শায়খের স্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি আপনার স্বামীকে বেরিয়ে আসতে বলেন।’ রূপা বলেন, ‘আমার কথা তিনি শুনবেন না। আসলে উনি কারও কথা শোনেন না।’ জেলা প্রশাসক পীড়াপীড়ি করেন। এবার শায়খের স্ত্রী মুখে মাইক লাগিয়ে বলেন: ‘শুনছেন, ওনারা আপনাকে বের হতে বলছেন, আপনি বের হয়ে আসেন।’ স্ত্রীর কথায়ও কান দেন না শায়খ।
আবার রাত আসে। হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায়। চারদিকে আতরের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। একজন র্যাব সদস্য সে খবর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। তিনি জানান তাঁর ঊর্ধ্বতনকে। সন্দেহ জাগে—শায়খ কি তবে আতর-গোলাপ মেখে আত্মঘাতী হলেন? আলোচনা শুরু হয়, অভিযান ব্যর্থ হবে? শুরু হয় গন্ধের উৎস খোঁজা। দেখা যায়, সিলেটের এক ফটোসাংবাদিকের কানে আতরমাখা তুলা গুঁজে রাখা। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই। ২০০৬ সালের ২ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত হুমকির সুরে কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানান। এখনই বের না হলে অভিযান হবে। এরপর জানালায় এসে উঁকি দেন শায়খ রহমান। উপায় না দেখে হাত উঁচু করে বেরিয়ে আসেন।
শায়খের স্ত্রীকে জানানো হয়, আপনার স্বামী বের হয়ে এসেছেন। স্ত্রী অবাক চোখে তাকিয়ে বলেন : ‘উনি না শহীদ হতে চেয়েছিলেন! কই শহীদ হলেন না যে!’ আবদুর রহমান তাঁর জবানবন্দিতে সে কথার জবাব দেন। বলেছিলেন, তাঁর পরিকল্পনা ছিল একটি বোমা দিয়ে দুই সঙ্গীসহ আত্মঘাতী (ফেদায়ি) হবেন। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের ছোড়া পানিতে সেই বোমা ভিজে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। শেষমেশ বিচারে ফাঁসিতেই প্রাণ দেন শায়খ আবদুর রহমান।
আরও পড়ুন:

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৫ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৭ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৫ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৭ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৭ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৫ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

দুই মাস ধরে চলছিল চোর-পুলিশ খেলা। জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমান তাঁর স্ত্রী আর চার সন্তানকে নিয়ে দিব্যি এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বাঘা বাঘা গোয়েন্দা তাঁর টিকিটিও ছুঁতে পারছিলেন না। অথচ আবদুর রহমানকে ধরা না গেলে জেএমবিকে কোনোভাবে বাগে আনা যাবে না
২৮ আগস্ট ২০২১
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৫ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৭ দিন আগে