Ajker Patrika

ক্ষোভের মুখে দিশেহারা পুলিশ

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৭: ১৭
ক্ষোভের মুখে দিশেহারা পুলিশ

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় মাঠে থাকা পুলিশের অনেক ইউনিট কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। আন্দোলনকারীদের সরানোর পরিবর্তে আত্মরক্ষাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ সদস্যদের। জনরোষে পড়ে দিগ্‌বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন অধিকাংশ সদস্য। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে রায়ট গিয়ার (হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, বুট, লেগগার্ড) পরা অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার পাঠাতে হয়। কোথাও কোথাও আটকে পড়া সদস্যদের উদ্ধারে পাঠানো হয় অতিরিক্ত পুলিশ ও সাঁজোয়া যান।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এখন আলোচনা শুরু হয়েছে দাঙ্গা দমনে পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে। এর কারণ খুঁজতে শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসনও। এর অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজি আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভেবে প্রথমে নমনীয় ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। পরবর্তী সময়ে বিক্ষুব্ধরা বেপরোয়া হয়ে ওঠায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

অবরুদ্ধ হওয়া পুলিশ সদস্যরা ফিরে এসে বলেছেন, এমন ভয়াবহ জনরোষ আগে কখনো দেখেননি তাঁরা। দুই দিকের মানুষের চাপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খেই হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। করণীয় জানতে ঊর্ধ্বতনদের শরণাপন্নও হয়েছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতনেরা মাঠের পরিস্থিতি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তা ছাড়া এমন পরিস্থিতিতে কী করতে হয়, তার কখনো প্রশিক্ষণও পাননি তাঁরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে টানা তিন দিন (বৃহস্পতি, শুক্র, শনিবার) রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসব সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ও পুলিশের থানা, ফাঁড়ি ও কার্যালয়ের ৮১ স্থাপনায় ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। হামলায় ঘটনাস্থলেই দুজনসহ মৃত্যু হয় তিন পুলিশের। আহত তিন শতাধিক।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা বা নানান ইস্যুতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের দায়িত্ব থাকে পুলিশের ওপর। একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে বলা হয়, এই প্রক্রিয়ায় কোনো বিক্ষোভকারী যেন মারাত্মক জখম না হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদও যেন অক্ষুণ্ন থাকে। তবে পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন চাইলে লাঠিপেটা এমনকি গুলিও করার অনুমতি থাকে। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে কী ধরনের অ্যাকশনে যাবে, পুলিশ সদস্যদের এমন বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। এমন অবস্থায় পড়লে উপস্থিত বুদ্ধিতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ।

দাঙ্গা দমনের ব্যর্থতার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজধানীতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কোথাও কোথাও অবস্থান এমন ছিল—সড়কের দুই প্রান্তে বিক্ষোভকারীরা এবং মাঝে পুলিশ। দুই দিক দিয়ে আটকে যায় তারা। কখনো হামলা প্রতিহত করে সামনে এগিয়েছে, আবার কখনো নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। তখন আশপাশে সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর হলেও জনরোষ ঠেলে সেখানে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না তাদের।

ডিএমপির সূত্রটি বলছে, পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। তাদের টার্গেট ছিল পুলিশ। আবার আন্দোলনকারীদের তুলনায় পুলিশ সদস্যদের সংখ্যাও ছিল অনেক কম। মূল সড়কের আশপাশে অলিগলিতে বিক্ষুব্ধরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় পুলিশ অবরুদ্ধ হয়ে যায়। অবরুদ্ধ থাকা এক ইউনিট অন্য ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছিল না।

রামপুরা এলাকায় দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আন্দোলনের শুরুর দিকে ঊর্ধ্বতনদের এবং কন্ট্রোলরুম থেকে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা আসছিল। কিন্তু পরিস্থিতি যখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন ওয়াকিটকিতে শুধু শোনা যাচ্ছিল পাশে হামলা হচ্ছে, অবস্থা ভয়াবহ। মাঠে থাকা সদস্যরা তখন সবাই ঘাবড়ে যান। কী করতে হবে, ঊর্ধ্বতনরাও বলতে পারছিলেন না।

ঢাকা মহানগর পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, একমাত্র গুলি চালিয়ে পুলিশ সদস্যরা বের হতে পারতেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের সামনে শিক্ষার্থীরা থাকায় এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছিল না।

মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিপুলসংখ্যক হামলাকারীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু জীবন বাজি রেখে রাস্তায় পড়ে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।

এদিকে দাঙ্গা দমনে ব্যর্থতা প্রসঙ্গে পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের প্রশিক্ষণ না থাকার বিষয়টিও এখন গুরুত্ব পাচ্ছে।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের প্রশিক্ষণ-১ শাখার অতিরিক্ত ডিআইজি মহিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের নিয়োগের সময় মৌলিক প্রশিক্ষণে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গে কী করণীয়, তা বলা হয়। পুলিশ প্রবিধানও রয়েছে। তবে সেটার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ থাকে না।

অথচ দুই বছর আগে পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জনরোষের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে তাঁরা বিশেষ মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ সেন্টারের প্রশিক্ষণব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে বলা হয়। সঙ্গে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ এক বছর ও বাস্তব প্রশিক্ষণ দুই বছর করার সুপারিশ করা হয়।

এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের যে প্রস্তুতি, দক্ষতা ও কৌশল দরকার, তা আমাদের পুলিশের নেই। উন্নত দেশের পুলিশকে প্রতিটি ঘটনা মোকাবিলার জন্য আলাদা কৌশল শেখানো হয়। কিন্তু আমাদের এখনো ট্র্যাডিশনাল পুলিশিং চলছে, এর উন্নতি দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, সংসদ ভবনে জানাজার প্রস্তুতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

আজ সকালে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে হাদির মরদেহ অ্যাম্বুলেন্স যোগে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। এ সময় পুরো এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহটি পুনরায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চ সূত্রে জানা গেছে, হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মরদেহের গোসল সম্পন্ন করার পর তাঁকে জানাজার জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় নেওয়া হবে। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

জানাজা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ এ বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

আগতদের কোনো ধরনের ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংসদ ভবন ও এর আশপাশ এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

ওসমান হাদির শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজায় অংশ নিতে সংসদ এলাকায় জনস্রোত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
হাদির জানাজায় অংশ নিতে সংসদ এলাকায় ভিড় বাড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা।
হাদির জানাজায় অংশ নিতে সংসদ এলাকায় ভিড় বাড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজা আজ শনিবার বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় অংশ নিতে এরই মধ্যে সংসদ ভবন এলাকায় লোকজন জড়ো হতে শুরু করেছে।

আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় সংসদ এলাকা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়ো হয়েছে। এ সময় অনেককে স্লোগান দিতে দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সেখানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর সকাল সাড়ে ১০টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়। এ সময় সংসদ ভবন চত্বরের দুই গেট দিয়ে সাধারণ মানুষ সারবদ্ধভাবে দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করে।

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করে।

জানাজা উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে ডিএমপি। নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ১ হাজার বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার করবেন বলে জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া পুরো এলাকা সিসিটিভি ও গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

সংসদ ভবন এলাকায় কড়া সতর্কতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংসদ ভবন এলাকায় কড়া সতর্কতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ওসমান হাদির জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হতে পারে বিবেচনা করে ট্রাফিক বিভাগ থেকেও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আবার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ওসমান হাদির জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শনিবার বেলা আড়াইটার পরিবর্তে বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

সংসদ ভবন এলাকায় কড়া সতর্কতায় বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংসদ ভবন এলাকায় কড়া সতর্কতায় বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ওসমান হাদির জানাজায় যাঁরা অংশ নিতে আসবেন, তাঁরা কোনো প্রকার ব‍্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন‍্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে সংসদ ভবন ও এর আশপাশ এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ওসমান হাদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হবে। দাফনের জন্য স্থানটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেখানেও সকাল থেকে লোকজন জড়ো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ায় সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টে রিপোর্ট করা যাবে হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইলে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৮
সোশ্যাল মিডিয়ায় সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টে রিপোর্ট করা যাবে হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইলে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্ত্রাস-সহিংসতার উসকানিমূলক আহ্বান-সংবলিত পোস্টের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইল আইডি চালু করা হয়েছে।

আজ শনিবার থেকে সেখানে রিপোর্ট (অভিযোগ ও তথ্য) করা যাবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপে এবং ই-মেইলে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোতে রিপোর্ট করবে।

যে নম্বর এবং ই-মেইলে রিপোর্ট করা যাবে—

হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: 01308332592,

ই-মেইল: [email protected]

উল্লেখ্য, সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট ‘ডাউন’ করতে অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে রিপোর্ট করতে পারে।

বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়, সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সহিংসতা কিংবা অস্থিতিশীলতা তৈরির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি দেশ এবং নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হতে জনসাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে একাধিক সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে এসব সহিংসতার উসকানি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতায় উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যা ও পরবর্তী সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান অ্যামনেস্টির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৯
হাদিকে হত্যা ও পরবর্তী সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান  অ্যামনেস্টির

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এসব ঘটনায় দ্রুত, পূর্ণাঙ্গ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা ২৬ মিনিটে এক্স হ্যান্ডলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া রিজিওনাল অফিসের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।

পোস্টটিতে মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, হাদি হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়টিতে সহিংসতায় প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট-এর কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে এবং নিউ এজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির হয়রানির শিকার হয়েছেন।

এ ছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়, এসব কর্মকাণ্ডে মানুষ আহত হয়েছেন, সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এমন সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ন্যায্য বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের আশ্রয় না নিয়ে আইনসম্মত ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত