Ajker Patrika

ঘর অন্ধকার করে ঘুমান, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে যাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ঘুমের সময় আলোর সংস্পর্শ কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে। ছবি: পেক্সেলস
ঘুমের সময় আলোর সংস্পর্শ কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে। ছবি: পেক্সেলস

ঘর অন্ধকার না হলে অনেকে ঘুমাতে পারেন না। অনেকের আবার মৃদু আলো জ্বলে উঠলেই ঘুম ভেঙে যায়। ফলে শোয়ার ঘরের ইন্টেরিয়র নিয়ে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। ভাবনা হবে না কেন? নতুন একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ঘুমের সময় আলোর সংস্পর্শ কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে।

বেশির ভাগ মানুষ জানেন, ভালো ঘুমের জন্য অন্ধকার ও শান্ত পরিবেশ দরকার। এটি নিছক প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসা জ্ঞানের কথা নয়। এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখন ভীষণ মজবুত। অন্ধকার পরিবেশে ঘুমের গুরুত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল বিভিন্ন গবেষণা। যেখানে এমন তথ্য একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গবেষকেরা বলছেন, ঘুমের সময় পারিপার্শ্বিক কৃত্রিম আলোর সংস্পর্শ মস্তিষ্কে চাপ তৈরি হয়, যা ধমনিতে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। আর এই ধমনির প্রদাহ বা ব্যথাই ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সায়েন্টিফিক সেশনস ২০২৫-এ এ গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়েছে। যদিও এটি এখনো কোনো পিয়ার-রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। তবে এর প্রাথমিক ফলাফল স্বাস্থ্যের জন্য গভীর অন্ধকার ঘুমের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরছে।

যেভাবে কৃত্রিম আলো হৃদ্‌রোগের জন্ম দিচ্ছে

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের ৪৬৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ২০০৫-০৮ সালের মধ্যে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়। অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের পরিবেশে আলোর মাত্রা পরিমাপ করতে গবেষকেরা স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করেন। ফলাফলে দেখা গেছে, রাতে কৃত্রিম আলোর সংস্পর্শ যত বেড়েছে, পরবর্তী সময়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও তত বেড়েছে। আলোর তীব্রতা বৃদ্ধির পরিমাপকের বিচ্যুতির কারণে পরবর্তী পাঁচ বছরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পরবর্তী ১০ বছরে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে ২২ শতাংশ।

ভালো ঘুমের জন্য অন্ধকার ও শান্ত পরিবেশ দরকার। ছবি: পেক্সেলস
ভালো ঘুমের জন্য অন্ধকার ও শান্ত পরিবেশ দরকার। ছবি: পেক্সেলস

গবেষণাটিতে আরও দেখা যায়, যাঁরা পরিবেশগত বা সামাজিক বিভিন্ন চাপ, যেমন ট্রাফিকের শব্দ বা নিম্ন আয়ের সমস্যা নিয়ে বসবাস করেন, তাঁরা আলোর কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আরও বেশি সংবেদনশীল। সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটির ঘুম বিশেষজ্ঞ জোনাথন সিডেরনায়েস জানান, মানুষ ও প্রাণীদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, কৃত্রিম আলো কেবল বিপাক নয়; বরং প্রদাহকেও প্রভাবিত করে একাধিক স্নায়ু শারীরবৃত্তীয় ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

২০২২ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে অংশগ্রহণকারীরা ঘরের সাধারণ আলোতে ঘুমিয়েছিলেন, তাঁদের হার্ট রেট বেড়ে গিয়েছিল। এমনকি তাঁদের গভীর ঘুম কমে গিয়ে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

হৃদ্‌যন্ত্র ও মস্তিষ্কের যোগসূত্র

হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ ড. জেন মর্গান এই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করেন, ‘প্রদাহ বা ব্যথা হলো চাপের ফল এবং এই প্রদাহই এথেরোস্ক্লেরোসিস বা ধমনি শক্ত হওয়ার প্রাথমিক চালক, যা হৃদ্‌রোগ এবং স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘হৃদয় ও মস্তিষ্ক একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। হৃৎপিণ্ডের ধমনিতে যা ঘটে, মস্তিষ্কের রক্তনালিগুলোতেও একই ঘটনা ঘটে।’

অন্ধকার পরিবেশ শরীরকে মেলাটোনিন তৈরি করার সংকেত দেয় এবং রক্তচাপ কমানোসহ শরীরের প্রক্রিয়াগুলোকে ধীর করে দেয়। রাতে শোয়ার ঘরে যত বেশি সময় ধরে আলো জ্বলে, রক্তচাপের এই স্বাস্থ্যকর পতন তত বেশি বিলম্বিত হয়। ড. মর্গান সতর্ক করে বলেন, ৬ ঘণ্টার কম ঘুমও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। মোবাইল ফোনের স্ক্রিন থেকে আসা নীল আলো ঘুমের বড় বাধা। তেমনই পারিপার্শ্বিক আলোও হৃৎপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে কৃত্রিম আলো এবং এথেরোস্ক্লেরোসিসের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছিল।

সর্বোত্তম ঘুমের পরিবেশ তৈরির উপায়

বিভিন্ন গবেষণা বারবার প্রমাণ করছে, ঘুমের পরিবেশ যত অন্ধকার, স্বাস্থ্যের জন্য ততই মঙ্গলজনক। আপনার ঘুমের পরিবেশকে অনুকূল করতে কিছু টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে।

জানালা ঢেকে দিন: আপনার ঘরে পর্দা বা শেড থাকলে তা শক্তভাবে বন্ধ করুন। যদি তা বাইরের আলো আটকাতে না পারে, তবে ব্ল্যাকআউট পর্দা ব্যবহার করুন। স্বল্প খরচে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়েও জানালা ঢেকে দেওয়া যেতে পারে।

দরজার ফাঁক বন্ধ করুন: শোয়ার ঘরের দরজার নিচে থাকা ফাঁক দিয়েও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আলো প্রবেশ করতে পারে। দরজার ফাঁকে একটি ভাঁজ করা তোয়ালে বা কাপড় গুঁজে দিয়ে অবাঞ্ছিত আলো আটকাতে পারেন।

স্লিপ মাস্ক ব্যবহার করুন: অনেকের কাছে আই মাস্ক ব্যবহার করা আরামদায়ক এবং এটি আলো প্রবেশে কার্যকরভাবে বাধা দিতে পারে।

মোশন-সেন্সিং নাইট লাইট: সব সময় জ্বলে থাকা নাইট লাইট ব্যবহার না করে, শুধু প্রয়োজনের সময় জ্বলে ওঠে এমন মোশন-সেন্সিং নাইট লাইট ব্যবহার করতে পারেন।

সূত্র: হেলথ লাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধুতে বিষ! শত শত বছর ধরে খেয়ে চলেছে মানুষ এই বিশেষ মধু

রজত কান্তি রায়, ঢাকা  
পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। ছবি: সিএনএন

শীতকাল এলে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে গলির মোড়, প্রায় সবখানে মধুর বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। কত রকমের যে মধু হতে পারে, তা না দেখলে বোঝা কঠিন। প্রায় সব মধু বিক্রেতার মধুই শতভাগ ‘পিওর’। কারও কারও মধু তো সুন্দরবনের একমাত্র খাঁটি মধু! কারও মধু আবার সরিষা ফুল থেকে তৈরি! যা হোক, শীত মানে বঙ্গদেশে মধুর বাজারে চলে ভীষণ উত্তেজনা। আর দাম? সে তো আপনারা নিজেরাই জানেন।

আমাদের সবার কাছে প্রায় একই রকম তথ্য আছে, মধু হলো উত্তম মিষ্টিজাতীয় খাবার। তার ওপর আর মিষ্টি নেই! সেসব হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু তথ্য যদি বলে, মধুতেও বিষ থাকে! প্রথমে অবিশ্বাস্য, তারপর খতিয়ে দেখার চেষ্টা করবেন অনেকেই। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। মধুতেও থাকে বিষ। কিংবা মধুও হয় বিষাক্ত। কিন্তু সেটাও খাওয়া হয়। শত শত বছর ধরেই খাওয়া হয়।

যেসব পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রাচুর্য আছে, সেসব জায়গায় ম্যাড হানি উৎপন্ন হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া
যেসব পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রাচুর্য আছে, সেসব জায়গায় ম্যাড হানি উৎপন্ন হয়। ছবি: উইকিপিডিয়া

একটা ছোটগল্প শোনাই। সে বহুকাল আগে, খ্রিষ্টপূর্ব ৪০১ সালের ঘটনা। গ্রিক সেনারা তুরস্কের ট্রাবজোন অঞ্চলে অভিযান চালাল; কিন্তু সেটা ঘটনা নয়। পৃথিবীর ইতিহাসে সে রকম অভিযানের বহু গল্প আছে। এই অভিযান বিখ্যাত হয়ে আছে, সে অঞ্চলের এক বিশেষ মধুর কারণে। গ্রিক সেনারা ট্রাবজোন অঞ্চলে পাওয়া বিশেষ এক মধু খেয়ে বমি করতে শুরু করল। সেনাদের কেউ কেউ এতটাই মাতাল হয়ে পড়ল যে, তাদের মস্তিষ্কে ‘বিভ্রান্তি’ দেখা দিল। কেউ কেউ মৃত মানুষের মতো পড়ে রইল এবং তারপর যা হওয়ার তা-ই হলো, গ্রিকরা পরাজিত হলো। এ ঘটনার কথা লিখেছিলেন ঐতিহাসিক জেনোফন। সেটাই ছিল এ মধুর বিষক্রিয়ার প্রথম লিখিত বিবরণ।

সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু।

সীমিত উৎপাদন

সেই মধুর নাম ইংরেজিতে ‘ম্যাড হানি’ আর তুরস্কের আঞ্চলিক ভাষায় ‘দেলি বাল’। দেলি অর্থ পাগল, আর বাল অর্থ মধু। দুইয়ে মিলে ইংরেজিতে ম্যাড হানি আর বাংলায় পাগলা মধু। পৃথিবীর খুব অল্প জায়গায় এই দেলি বাল কিংবা ম্যাড হানি নামের মধু উৎপাদন হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চল আর নেপালের পূর্ব হিমালয় অঞ্চলের কিছু জায়গায় এই মধু উৎপন্ন হয়। সম্প্রতি সিএনএনের সাংবাদিক মৌরিন ও’হেয়ার এ বিষয়ে একটি লেখা লিখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পৃথিবীর দুটি জায়গায় এই ‘বিরল মধু’ পাওয়া যায়। আবার কিছু সূত্র বলে, এই দুটি জায়গার সঙ্গে জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশীয় দেশগুলোতেও সীমিত পরিমাণে এই মধু উৎপন্ন হয়। মূলত যেসব পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন ফুলের প্রাচুর্য আছে, সেসব জায়গায় ম্যাড হানি উৎপন্ন হয়। স্থানীয় পার্বত্য মৌমাছিরা রডোডেনড্রন ফুলের রস সংগ্রহ করে এই বিশেষ মধু তৈরি করে।

বিষাক্ত কেন

রডোডেনড্রন ফুলের পরাগ রেণু ও নেকটারে থাকে গ্রায়ানটক্সিন নামক এক ধরনের নিউরোটক্সিন। এটি মধুতে সঞ্চিত হয়। এই টক্সিনই ম্যাড হানির রহস্যময় ও বিপজ্জনক সব বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।

তুরস্কের একটি মৌমাছি পালন ঘর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের একটি মৌমাছি পালন ঘর। ছবি: সিএনএন

এ মধুর স্বাদ কেমন

চেখে যেহেতু দেখা হয়নি, তাই নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে মধু যেহেতু, মিষ্টতা কিছু থাকবেই। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ম্যাড হানির স্বাদ তিতা বা টক অর্থাৎ, সাধারণ মধুর চেয়ে ভিন্ন। এর রং গাঢ় বাদামি বা লালচে রং।

এক দারুণ ঐতিহ্য

বিপদ যতই থাক, যারা এ মধু উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত তারা এটি চেখে দেখবে না, তা তো হয় না। ফলে নেপাল ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে এ মধুকে কেন্দ্র করে শত শত বছর ধরে তৈরি হয়েছে ঐতিহ্য।

নেপালের গুরাং সম্প্রদায় ও তুরস্কের কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের স্থানীয় লোকেরা প্রজন্ম ধরে অল্প পরিমাণে ম্যাড হানি ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। তারা এটিকে পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এমনকি যৌনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। তবে এর ব্যবহার সব সময়ই একটি জটিল রীতিনীতি ও পরিমিতিবোধের মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়।

এটাও বলে রাখি, কিছু মানুষ এটিকে ‘হানি হাই’ বা নেশার জন্যও ব্যবহার করে।

পরিমাণের বেশি খেলে কী হতে পারে?

বিপদ আছে। যেকোনো খাবারই পরিমাণের বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এই ম্যাড হানি স্বল্প মাত্রায় খেলেও হতে পারে হালকা ইউফোরিয়া, স্নায়বিক শিথিলতা বা বমি বমি ভাব। আর উচ্চ মাত্রায় খেলে? সে তালিকা বেশ লম্বা।

  • বমি, অতিরিক্ত ঘাম, মাথা ঘোরা।
  • হার্ট রেট ও রক্তচাপ কমে যাওয়া।
  • অস্থিরতা, মাংসপেশির দুর্বলতা।
  • গুরুতর ক্ষেত্রে অ্যারিথমিয়া, শ্বাসকষ্ট, অচেতনতা, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

তবে হ্যাঁ, প্রাকৃতিক এই উত্তেজকের জন্য আছে প্রাকৃতিক চিকিৎসা। জানা যাচ্ছে, সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণগুলো নিজে থেকে কমে যায়। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

বলে রাখা ভালো, এটি বেশির ভাগ দেশে অবৈধ নয়। তবে বিক্রি বা বিপণনে নিয়ন্ত্রণ আছে।

আধুনিক বাণিজ্য ও অপব্যবহার

বিশেষ কিছু অঞ্চলের মানুষদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পরিচালিত জ্ঞানের মাধ্যমে যে মধু একসময় ছিল বিশেষ, সে মধুই এখন ‘অনলাইন পণ্যে’ পরিণত হয়েছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে স্বাভাবিকভাবে। নেপাল ও তুরস্ক থেকে এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘এক্সোটিক হানি’ বা ‘সাইকোঅ্যাকটিভ হানি’ হিসেবে বিক্রি হয়। পর্যটকদের মধ্যে এটি খাওয়া একটি ‘অভিজ্ঞতা’ হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিশেষ করে নেপালের অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে। আর এ চাহিদা বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে ভেজাল ম্যাড হানির পরিমাণ।

বৈচিত্র্যপিয়াসীরা ভেজাল না খেয়ে আসলের সন্ধান করতে পারেন।

সূত্র:

  • এডিশন ডট সিএনএন ডটকম, মৌরিন ও’হেয়ারের লেখা। ৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • The Dangerous Honey of Nepal, BBC, 2019
  • পয়জন ডট ওআরজি
  • জামা নেটওয়ার্ক ডটকম
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে চাদর স্টাইলিং করবেন যেভাবে

বিভাবরী রায়
ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ফ্যাশন ডিজাইনাররা চাদর নকশাদার করে তুলছেন। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন
ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ফ্যাশন ডিজাইনাররা চাদর নকশাদার করে তুলছেন। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

শীত জেঁকে বসেছে। ভারী গরম কাপড় গায়ে না চড়িয়ে বাইরে বের হওয়া কঠিন। তবে চুপি চুপি বলে রাখি, অনলাইন শপিংয়ে যাঁরা পটু, তাঁরা কিন্তু প্রতিবছর নিত্য়নতুন গায়ে চড়ানোর চাদর কিনে ফেলেন। হ্যাঁ, মায়ের বকুনি খাওয়ার ভয়ে হয়তো আলমারিতে বন্দী করে রাখেন। কিন্তু প্রতিবছর এত সুন্দর সুন্দর থিমে চাদর বাজারে আসে, না কিনলেই বরং অপরাধবোধ হয়!

শীতের চাদরের আবেদন সব সময় ছিল। আগে সেগুলো শাড়ি বা সালোয়ার কামিজের সঙ্গে পরতেন মেয়েরা। আর এখন পরছেন জিনস টপসের সঙ্গে। তবে কখন কালার ম্যাচিং এবং কখন কালার কনট্রাস্ট করে পরতে হবে, তা মনে রাখতে হবে। কীভাবে পরবেন, তা নির্ভর করে কোথায় যাচ্ছেন এবং নিজে কতটা ক্যারি করতে পারছেন, তার ওপর। সৌমিক দাস, প্রধান নির্বাহী, রঙ বাংলাদেশ

শীতে স্টাইলিংয়ের জন্য চাদরের তুলনা হয় না। একসময় চাদরের জমিনে ফুটিয়ে তোলা হতো বিভিন্ন নকশা। এখন ক্রেতাদের চাহিদার কথা ভেবে ফ্যাশন ডিজাইনাররাই সেগুলো নকশাদার করে তুলছেন। তৈরি করছেন বিভিন্ন থিমেটিক নকশার চাদরও। নকশাদার ও থিমেটিক এসব চাদর শাড়ি, কুর্তি, টপস, সিঙ্গেল কামিজ, সালোয়ার-কামিজ—সবকিছুর সঙ্গে পরা যায়। কিন্তু কোন পোশাকের সঙ্গে কোন চাদর কীভাবে পরবেন, সেটাও তো জেনে রাখা প্রয়োজন।

শীতে ভ্রমণ, বনভোজন, সকালে রোদ পোহাতে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো চলতেই থাকে। একেক জায়গায় একেকভাবে চাদর পরা জরুরি। অর্থাৎ সব জায়গায় একইভাবে চাদর পরা যাবে না।

শাড়ির সঙ্গে

শাড়ির সঙ্গে চাদর স্টাইলিং করার খুব বেশি উপায় নেই। হয় গায়ে জড়িয়ে পরা, নয়তো এক কাঁধের ওপর ফেলে রাখা। সেই ফেলে রাখা গুছিয়েও হতে পারে আবার ছেড়ে দিয়েও হতে পারে। যে ক্যারিশমা করতে পারেন, তা হলো একরঙা শাড়ির সঙ্গে ছাপা ও জ্যামিতিক প্যাটার্নের উজ্জ্বল রঙের মিলমিশ রয়েছে এমন চাদর পরুন।

শাড়ির সঙ্গে চাদর বাঙালি জীবনের ধ্রুপদি যুগলবন্দী। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন
শাড়ির সঙ্গে চাদর বাঙালি জীবনের ধ্রুপদি যুগলবন্দী। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

লুজ ডেনিম প্যান্টের সঙ্গে

লুজ ডেনিম প্যান্ট এখন বেশ জনপ্রিয়। ডেনিম প্যান্টের ওপর ক্রপ টি-শার্ট পরলেও কিন্তু গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন চাদর। ডেনিমের ওপর জড়িয়ে নিতে পারেন উলের সুতায় বোনা, তসরের কিংবা সিনথেটিক সুতায় বোনা চাদর, সিল্কের চাদর, অ্যান্ডি চাদর অথবা ডুপিয়ান কাপড়ের চাদর। গলায় স্কার্ফের মতো জড়িয়ে হোক বা পুরো গা ঢেকে, দিব্যি বেরিয়ে পরতে পারেন ডেনিমের সঙ্গে চাদর পরে।

কামিজের সঙ্গে

একটু স্টাইলিশভাবে পরতে প্রথমে চাদর গলায় ঝোলান। চাদরের শেষ দুই মাথা একসঙ্গে গিঁট দিয়ে নিন। বড়সড় যে লুপটি তৈরি হলো, তা গলায় পরুন। গিঁটের অংশটি কাঁধের পেছনে থাকবে। এবার টুইস্ট করে দুই বা তিন স্তরে গলায় পরুন এবং প্রয়োজনমতো ছড়িয়ে নিন। যাতে এলোমেলো না হয়ে যায়। সেটা ঠেকাতে গিঁটের সঙ্গে ব্রোচ পিনআপ করে নিতে পারেন।

আরও যেভাবে পরতে পারেন

ডেনিম প্যান্টের ওপর ক্রপ টি-শার্ট পরলেও কিন্তু গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন চাদর। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন
ডেনিম প্যান্টের ওপর ক্রপ টি-শার্ট পরলেও কিন্তু গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন চাদর। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

এলিগ্যান্ট স্টাইলের জন্য

অভিজাত লুক পেতে বেছে নিতে পারেন ইউনিক বো স্টাইল। এ স্টাইলের জন্য পাতলা চাদর বেছে নিতে পারেন। কাঁধের দুই পাশে ঝোলানো চাদরের এক প্রান্ত বড় ও অন্য প্রান্তটি ছোট রাখুন। এবার বড় প্রান্তটির শেষ মাথা থেকে ওপরের দিকে লুপ তৈরি করুন। এরপর লুপের মাঝ বরাবর ধরে অন্য প্রান্ত দিয়ে পেঁচিয়ে টাইট করে নিন।

আউটিংয়ে ঝলমলে দেখাতে

একটু ঝলমলে আউটলুক পেতে উজ্জ্বল রঙের শাল বেছে নিতে পারেন। ওজনে হালকা ও উজ্জ্বল প্রিন্টের চাদর আর কুল টোনের কামিজ বা একরঙা টি-শার্ট চটজলদি অভিজাত লুক দেবে। উজ্জ্বল রঙের প্রিন্টের চাদর সাদামাটা শার্ট বা টপসকেও অভিজাত লুকে বদলে দেয়।

বোহিমিয়ান স্টাইল

বোহিমিয়ান স্টাইলে শাল বা চাদর পরতে গলায় দুই প্যাঁচে জড়িয়ে বাঁ পাশের প্রান্তের এক কোনা ডান দিকে চাদরের গলার অংশের সঙ্গে পিনআপ করে নিন। অন্য প্রান্তটি থাকবে ছড়ানো প্রান্তের নিচে।

সালোয়ার ও কামিজের সঙ্গে চোদর। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন
সালোয়ার ও কামিজের সঙ্গে চোদর। ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

কোথায় পাবেন এসব চাদর

প্রায় সব ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন ধরনের চাদর বিক্রি করে। অনেক অনলাইন পেজও এগুলো বিক্রি করে। কোনো কোনো পেজ পছন্দমতো চাদর তৈরিও করে দেয়। প্রতিটি জেলা শহরের সুপারমার্কেটে বা যেকোনো শপিং মলে খুঁজলে পাওয়া যাবে পছন্দের চাদর।

ছবি সৌজন্য: সাতকাহন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবুজ পৃথিবীর জন্য ২০২৬: নতুন বছরে কিছু পরিবেশবান্ধব সংকল্প নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
২০২৬ সালে সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে জীবনে যোগ করুন কিছু অভ্যাস। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
২০২৬ সালে সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে জীবনে যোগ করুন কিছু অভ্যাস। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

২০২৬ সাল আমাদের দোরগোড়ায়। নতুন বছর মানেই নিজের উন্নতির জন্য নতুন সব পরিকল্পনা। কিন্তু এই বছর ব্যক্তিগত লক্ষ্যের পাশাপাশি আমাদের এই সুন্দর গ্রহটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বও কি আমাদের নয়? জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের এই সময়ে আমাদের ছোট ছোট কিছু অভ্যাসই পারে বড় পরিবর্তন আনতে। ২০২৬ সালে একটি সবুজ ও বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে আপনি কিছু অভ্যাস নিজের জীবনে যোগ করতে পারেন।

বর্জ্য নিয়ে নতুন করে ভাবুন

আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট সমন্বয় বর্জ্য কমাতে বিশাল ভূমিকা রাখে।

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন। ছবি: পেক্সেলস
একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন। ছবি: পেক্সেলস
  • একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ছেড়ে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য বোতল বা পাত্র ব্যবহার শুরু করুন।
  • খাবার সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিকের বদলে কাচ বা ধাতব পাত্র বেছে নিন, যা রাসায়নিকমুক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী।
  • প্লাস্টিক ব্যাগের চাহিদা কমাতে সব সময় সঙ্গে একটি কাপড়ের ব্যাগ রাখুন।
  • বাড়িতে পেপার ন্যাপকিনের বদলে কাপড়ের ন্যাপকিন ব্যবহার করুন। এগুলো বর্জ্য কমানোর পাশাপাশি আপনার ডাইনিংয়ে আভিজাত্য যোগ করবে।
  • মেকআপ তোলা বা ঘর মোছার জন্য ওয়ান-টাইম ওয়াইপস ব্যবহার বন্ধ করুন। এগুলো পচতে ১০০ বছরের বেশি সময় লাগে। এর বদলে সুতি কাপড় বা রিইউজেবল প্যাড ব্যবহার করুন।
  • প্লাস্টিকে মোড়ানো ফল বা সবজি না কিনে আলগা বা কাগজে মোড়ানো পণ্য কিনুন।

যাতায়াতে আনুন পরিবর্তন

স্বল্প দূরত্বের যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায়। ছবি: ফ্রিপিক
স্বল্প দূরত্বের যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায়। ছবি: ফ্রিপিক

যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কার্বন নিঃসরণের অন্যতম প্রধান কারণ। আপনি গাড়ি যত কম চালাবেন, পৃথিবী তত বেশি শ্বাস নিতে পারবে। বাস, ট্রেন বা সাবওয়ে ব্যবহার আপনার কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক কমিয়ে দেয়। ছোট যাত্রায় গাড়ির বদলে বিকল্প পথ বেছে নিলে বায়ুদূষণ কমে, যানজট হ্রাস পায় এবং আপনার ব্যক্তিগত কার্বন ফুটপ্রিন্ট অনেক নিচে নেমে আসে। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। দূরে কোথাও যাওয়ার বদলে নিজের এলাকার আশপাশে ঘুরুন বা বন্ধুর সঙ্গে তাঁর বাড়িতে কিংবা আপনার বাড়িতেই ছুটি কাটান। এই সময়ে দৈনন্দিন বিরক্তিকর কাজগুলো থেকে ছুটি নিয়ে নিজের এলাকার অচেনা জায়গাগুলো ঘুরে দেখুন, স্থানীয় খাবার চেখে দেখুন। এতে একটি দীর্ঘ বিমানযাত্রা বা ক্লান্তিকর সফর থেকে পরিবেশ বেঁচে যাবে। এতে বিমান বা দীর্ঘ সফরের দূষণ কমবে।

খাদ্যাভ্যাসে আনুন টেকসই ধারা

আপনার খাবার প্লেটের সিদ্ধান্তই ঠিক করে দেয় পরিবেশের ভবিষ্যৎ। প্লেটে নিরামিষ বা প্ল্যান্টবেজড রেসিপি, যেমন মসুর ডাল বা কাজু-পান্তা মাংসের তুলনায় অনেক কম কার্বন নিঃসরণ করে। সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুই দিন মাংস ছাড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন। সব সময় স্থানীয় খামারে উৎপাদিত এবং মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার চেষ্টা করুন। প্লাস্টিকে মোড়ানো সবজি এড়িয়ে খোলা সবজি কিনুন। খাবারের অপচয় রোধে আগে থেকেই মিল প্ল্যানিং করুন। এটি আপনাকে বাইরের প্লাস্টিক মোড়ানো খাবারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে।

বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে। ছবি: পেক্সেলস
বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে। ছবি: পেক্সেলস

ঘরে শক্তি সাশ্রয় করুন

বিদ্যুৎ সাশ্রয় আপনার পকেটের পাশাপাশি পৃথিবীরও উপকার করে। অনেক সময় যন্ত্র বন্ধ থাকলেও প্লাগ লাগানো থাকলে বিদ্যুৎ খরচ হয়। কাজ শেষে প্লাগ খুলে রাখুন। হ্যালোজেন বাল্বের বদলে এলইডি ব্যবহার করুন। নতুন কোনো যন্ত্র কেনার আগে সেটির এনার্জি রেটিং দেখে নিন। পুরোনো যন্ত্র বদলে এনার্জি-এফিসিয়েন্ট ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিন কিনুন। স্মার্ট মিটার ব্যবহার করুন, যা আপনার বিদ্যুৎ খরচের ধরন বুঝতে এবং সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে। বাড়িতে সোলার প্যানেল বা এয়ার সোর্স হিট পাম্প লাগানোর কথা ভাবতে পারেন।

পানি সংরক্ষণ ও বনায়ন

পানি জীবন হলেও আমাদের অপচয়ের কারণে এটি ক্রমেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে। লো-ফ্লো ফাউসেট বা শাওয়ার ফিক্সচার ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধোয়ার সময় লোড পূর্ণ হলে তবেই মেশিন চালান। নিজের জানালার পাশে বা বারান্দায় টমেটো বা হার্বস চাষ শুরু করুন। ঘরোয়া উদ্ভিদের কাটিং থেকে নতুন চারা তৈরি করে বন্ধুদের উপহার দিন। বাড়িতে কম্পোস্টিং শুরু করলে তা আপনার গাছের পুষ্টি জোগাবে এবং বর্জ্য কমাবে।

একা লড়াই করার চেয়ে দলগত কাজ বেশি কার্যকর। আপনি চাইলে স্থানীয় কোনো ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। তাদের সঙ্গে এলাকা পরিষ্কার করা বা পরিবেশ সচেতনতামূলক প্রচারণায় অংশ নিন। ২০২৬ সাল হোক আমাদের সচেতনতার বছর। আপনার ছোট একটি পদক্ষেপই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। শুরুটা হোক আজ থেকেই!

সূত্র: ইকোমিনা, গুড এনার্জি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে এই কয়েকটি খাবার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
শীতে ত্বকের যত্নে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
শীতে ত্বকের যত্নে ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

শীতে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব দূর করতে কত কীই-না করি আমরা। যতবার হাত ধোয়া হচ্ছে, ততবারই ময়শ্চারাইজার না মাখলে হাত খসখসে হয়ে উঠছে। ময়শ্চারাইজার মাখার পরও কিছুক্ষণ বাদে বাদে রিঅ্যাপ্লাই করতে হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ঠান্ডা নাকি আরও বাড়বে। ফলে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের চিন্তায় এখনই কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। রূপবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্বকের শুষ্ক ও নির্জীব ভাব দূর করতে বাইরে থেকে যেমন মশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন, তেমনি নিয়মিত কয়েকটি খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে শীতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, নরম ও মসৃণ। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপও পড়বে দেরিতে।

শীতে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায়। বয়স যত বেশি, ত্বকের আর্দ্রতা তত কম থাকে এই ঋতুতে। এ সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে কিছু খাবার। ঘি, আমলকী, বাদাম, টমেটো, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার খেলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন অব্যাহত থাকে। কোলাজেন উৎপাদনও বাড়ে। ফলে ত্বক পরিপুষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জেল্লা ছড়ায়। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং স্বত্বাধিকারী, বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ার

ময়শ্চারাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি যেসব খাবার খাবেন

খাঁটি ঘি

প্রতিদিন অন্তত এক চা-চামচ ঘি খান। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। এগুলো খেলে শরীর ভালো রাখার পাশাপাশি ত্বকও পরিপুষ্ট হবে। ত্বকের প্রাকৃতিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতেও সাহায্য করে ঘি। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে না।

সালাদে টমেটো রাখুন

শীতে বাজারে যে টমেটো পাওয়া যায়, তাতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে বলিরেখা পড়ে। এ ছাড়া এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সহায়তা করে।

শীতে সালাদে রাখুন টমেটো। এ ছাড়াও যেভাবে সম্ভব টমেটো খেতে হবে প্রতিদিন। ছবি: পেক্সেলস
শীতে সালাদে রাখুন টমেটো। এ ছাড়াও যেভাবে সম্ভব টমেটো খেতে হবে প্রতিদিন। ছবি: পেক্সেলস

আমলকী

ত্বক তারুণ্যদীপ্ত রাখে ভিটামিন সি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শীতকালে শরীরে ভিটামিন সি-এর ঘাটতি একাই পূরণ করতে পারে আমলকী। এই ছোট্ট ফল নিয়মিত খেলে তা কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্র ভাব এবং টান টান ভাব বজায় রাখার জন্য এই কোলাজেন বেশি জরুরি।

তিল

এই শীতে তিলের নাড়ু, হালুয়া, ভর্তা তৈরি করে খেতে পারেন। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে ত্বক থাকে কোমল ও উজ্জ্বল। তিলে থাকা জিংক ও স্বাস্থ্যকর চর্বি ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ময়শ্চারাইজড রাখে।

সামুদ্রিক মাছ

সামুদ্রিক মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি ত্বক কোমল ও হাড় মজবুত রাখে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া দরকার। তবে এই মাছ রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করাই ভালো।

কাঠবাদাম ও আখরোট

ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ৬টি ভেজানো কাঠবাদাম খান। এতে ত্বক সুন্দর থাকবে। কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা ত্বকের কোষ ভালো রাখে। কাঠবাদাম ছাড়াও খেতে পারেন আখরোট। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড; যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে, টক্সিনকে ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না।

বিটরুট

বিটরুটের ভিটামিন এ, সি, পটাশিয়াম ও সুপার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে, ত্বকের পোর বা ছিদ্রগুলো মেরামত করে। প্রতিদিন ৫০০ মিলি লিটার বিটরুটের জুস পান করলে বা সালাদ হিসেবে বিটরুট খেলে ত্বক ভালো থাকে।

টক দই

ত্বকের জন্য যত ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার রয়েছে, সেগুলোর মধ্য়ে প্রোবায়োটিকস খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিকস হিসেবে টক দই খুব ভালো ও সহজলভ্য একটি খাবার। এতে রয়েছে পেটের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রে পৌঁছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে ত্বকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় টক দই রাখলে ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় থাকে। ফলে শীতকালে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা নিয়ে বাড়তি ভাবনা থাকে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত