বিবিসি

সমাজে নারীর অগ্রগতি, বিশেষত কর্মক্ষেত্রে তাঁদের উপার্জন বৃদ্ধি পারিবারিক সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ তৈরি করছে। পুরুষই পরিবারে প্রধান উপার্জনকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ধারণার বিপরীতে যখন স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে একধরনের মানসিক চাপ ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, যা তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং পারিবারিক ক্ষমতাকাঠামো ও বৃহত্তর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপরও ফেলছে সুদূরপ্রসারী প্রভাব। সম্প্রতি এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া কয়েকজন পুরুষ তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। ডেভ নামের এক ব্যক্তি বাড়িতে থাকেন এবং সন্তানদের দেখাশোনা করেন। এ ধরনের পুরুষেরা ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ হিসেবে পরিচিত। ডেভ বলেন, আপনার স্ত্রী যখন সব টাকা উপার্জন করছেন, তখন আপনার আত্মসম্মানে কিছুটা আঘাত লাগবে।
টম নামের আরেকজন নিজেকে ‘গাইস গাই’ বা প্রথাগত পুরুষালি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আপনি যখন তাঁদের (বন্ধুদের) বলেন যে আপনি বাড়িতে থাকেন, তখন তাঁরা আপনাকে মেয়েলি স্বভাবের ভাববে। ব্রেন্ডন নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে ‘হাউস বিচ’ (গৃহস্থালি কাজের জন্য অপমানজনক সম্বোধন) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
এই উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, যেসব পুরুষ কর্মজীবী নন এবং যাঁদের স্ত্রী পরিবারে মূল উপার্জনকারী, তাঁদের অনেকে সামাজিক বিচার-বিশ্লেষণের মুখোমুখি হন। কারণ, সমাজে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষদের মূল উপার্জনকারী হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু এখন অনেক নারী তাঁদের স্বামীদের চেয়ে বেশি উপার্জন করছেন। এই পরিবর্তন পারিবারিক শক্তির ভারসাম্য ও সমাজে পুরুষ-নারীর ভূমিকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ছে। কারণ, অর্থের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যখন একজন পুরুষ নিজের স্ত্রী বা সঙ্গীর চেয়ে কম উপার্জন করেন, তখন তিনি সমাজের চাপে নিজের অবস্থান দুর্বল মনে করতে পারেন। এতে মানসিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, এমনকি সম্পর্কেও টানাপোড়েন বাড়তে পারে।
এর আগে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যখন একজন নারী তাঁর সঙ্গীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষের আত্মসম্মান, সুখ ও সম্পর্কের স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়ে। এটি বিশেষত তখনই বেশি হয়, যখন পুরুষটি নিজের কর্মসংস্থান হারিয়ে ঘরে থাকতে বাধ্য হন।
সুইডেনে ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগনির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক সময় সম্পর্কের অসন্তোষেরও কারণ হতে পারে।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ স্ত্রীদের চেয়ে কম আয় করেন, তাঁদের মধ্যে প্রতারণার হারও বেশি, যেন তাঁরা এটা করেই তাঁদের পুরুষত্বকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান।
কাজ না থাকলে পুরুষদের মধ্যে বিষণ্নতার হার নারীদের তুলনায় বেশি থাকে। কারণ, নারীদের ঘরের কাজের বাইরে সামাজিক সম্পর্ক বেশি থাকে। অপরদিকে ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ অর্থাৎ যাঁরা ঘরে থেকে সন্তান পালন করেন, তাঁদের মাঝে একাকিত্ব বেশি। অস্ট্রেলিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হ্যারি বানটন জানান, চাকরি হারানোর পর তিনি অনুভব করেন ‘একজন মানুষ, স্বামী ও বাবা হিসেবে তাঁর মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
কিন্তু কোনো পরিবারে নারীই একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হলে সার্বিকভাবে পরিবারের আয় অনেক সময় কমে যায়। কারণ, নারী-পুরুষের বেতনে এখনো একটি পার্থক্য রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব বাথের সামাজিক নীতি ও বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হেলেন কোয়ালেভেস্কা বলেন, বেশির ভাগ দেশ নারী-পুরুষের সমতার কথা বললেও নারী-পুরুষের বেতন কাঠামোতে যে পার্থক্য, তা দূর করতে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
কর্মক্ষেত্র থেকে পুরুষদের সরে আসা পারিবারিক জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পুরুষেরা যখন কাজ থেকে সরে এসে পরিবারে সময় দেন, তখন সন্তানদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। যুক্তরাজ্যে আজকাল বাবারা সন্তানদের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি সময় কাটান, যা সন্তানদের জন্য উপকারী। এ ছাড়া পিতৃত্বকালীন ছুটি পুরুষদের বিবাহিত জীবনের সন্তুষ্টি বাড়ায় এবং সন্তানদের সঙ্গে তাঁদের বন্ধন মজবুত করে। এটি ভবিষ্যতে শিশুদের মধ্যে লিঙ্গ সমতার ধারণাও তৈরি করে।
যেসব দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটি রয়েছে, সেখানে বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পান। যেমন সুইডেনে ১৯৯৫ সাল থেকে ‘ড্যাডি মান্থ’ চালু হওয়ার পর বাবাদের মধ্যে সন্তানের যত্ন নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এরপর ২০০২ সালে যখন ছুটি বাড়িয়ে দুই মাস করা হয়, তখন সুইডেনের দম্পতিদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কও আগের চেয়ে স্থিতিশীল হয়েছে। বর্তমানে সুইডেনে পিতৃত্বকালীন ছুটি তিন মাস।
তবে বিশ্বব্যাপী নারী-পুরুষের সমতা নিয়ে সচেতনতা বাড়লেও সামাজিক মনোভাব এখনো পুরোপুরি বদলায়নি। কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক হিজুং চুং বলেন, নারীরা এখন পুরুষদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত এবং কিছু ক্ষেত্রে বেশি উপার্জনও করছেন। তবে কিংস কলেজ লন্ডনের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জেন-জিদের (১৮-২৮ বছর) মধ্যে অনেক পুরুষ এখনো মনে করেন, ঘরে সন্তান দেখাশোনার কাজ করলে একজন পুরুষ তাঁর ‘পুরুষত্ব’ হারান। ২৮ শতাংশ জেন-জি পুরুষ এই বক্তব্যে সম্মত, যেখানে নারীদের মধ্যে এ সংখ্যা মাত্র ১৯ শতাংশ।
গবেষকেরা বলছেন, নারীরা আজকাল শিক্ষায় ও কর্মক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু পুরুষ হয়তো মনে করছেন, তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন। এর ফলে সমাজে একধরনের বিভাজন তৈরি হচ্ছে।
রাজনীতিবিদ রোজি ক্যাম্পবেল বলেন, তরুণদের মধ্যে তাঁদের পুরুষত্ব ও নারী-পুরুষ সমতার অর্থ ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে স্কুলপর্যায়ে। তরুণদের সামনে এমন ইতিবাচক পুরুষ আদর্শ রাখা দরকার, যাঁরা দয়া, সহমর্মিতা ও পরিচর্যার কাজকেও পুরুষত্বের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
মোনাশ ইউনিভার্সিটির গবেষক কার্লা এলিয়ট বলেন, যত্ন ও সমানাধিকারের ওপর ভিত্তি করে নতুন পুরুষতান্ত্রিক ধারণাও তৈরি হচ্ছে। তবে এই মানসিকতার প্রসারে পুরুষদের গৃহস্থালির কাজে এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে পিতৃত্বকালীন ছুটির মতো নীতিগুলো পুরুষদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে সাহায্য করতে পারে এবং নারীদের ক্যারিয়ার গড়ায় সহায়ক হতে পারে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা সবাই যদি সমাজে পরস্পরের ভূমিকা নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করি, তবে পুরুষদের আত্মসম্মান বা পুরুষত্বের বিষয়ে ভুল ধারণা ভাঙতে পারে।
যেহেতু নারীদের উপার্জন বাড়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে, তাই পুরুষদের পারিবারিক দায়িত্বে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তবেই গড়ে উঠবে সমতার সমাজ, যেখানে সম্পর্ক আরও সুখকর হবে; নারীরা পেশাগত অগ্রগতি অর্জন করতে পারবেন এবং পুরুষেরা পরিবারের দেখভালেও পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
সূত্র: বিবিসি
মূল লেখা: বিজ্ঞান সাংবাদিক মেলিসা হোগেনবুম, Breadwinners (২০২৫) ও The Motherhood Complex (২০২১) বইয়ের লেখক।

সমাজে নারীর অগ্রগতি, বিশেষত কর্মক্ষেত্রে তাঁদের উপার্জন বৃদ্ধি পারিবারিক সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ তৈরি করছে। পুরুষই পরিবারে প্রধান উপার্জনকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ধারণার বিপরীতে যখন স্ত্রী স্বামীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে একধরনের মানসিক চাপ ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, যা তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এটি শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং পারিবারিক ক্ষমতাকাঠামো ও বৃহত্তর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপরও ফেলছে সুদূরপ্রসারী প্রভাব। সম্প্রতি এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া কয়েকজন পুরুষ তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। ডেভ নামের এক ব্যক্তি বাড়িতে থাকেন এবং সন্তানদের দেখাশোনা করেন। এ ধরনের পুরুষেরা ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ হিসেবে পরিচিত। ডেভ বলেন, আপনার স্ত্রী যখন সব টাকা উপার্জন করছেন, তখন আপনার আত্মসম্মানে কিছুটা আঘাত লাগবে।
টম নামের আরেকজন নিজেকে ‘গাইস গাই’ বা প্রথাগত পুরুষালি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আপনি যখন তাঁদের (বন্ধুদের) বলেন যে আপনি বাড়িতে থাকেন, তখন তাঁরা আপনাকে মেয়েলি স্বভাবের ভাববে। ব্রেন্ডন নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে ‘হাউস বিচ’ (গৃহস্থালি কাজের জন্য অপমানজনক সম্বোধন) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
এই উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, যেসব পুরুষ কর্মজীবী নন এবং যাঁদের স্ত্রী পরিবারে মূল উপার্জনকারী, তাঁদের অনেকে সামাজিক বিচার-বিশ্লেষণের মুখোমুখি হন। কারণ, সমাজে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষদের মূল উপার্জনকারী হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু এখন অনেক নারী তাঁদের স্বামীদের চেয়ে বেশি উপার্জন করছেন। এই পরিবর্তন পারিবারিক শক্তির ভারসাম্য ও সমাজে পুরুষ-নারীর ভূমিকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ছে। কারণ, অর্থের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যখন একজন পুরুষ নিজের স্ত্রী বা সঙ্গীর চেয়ে কম উপার্জন করেন, তখন তিনি সমাজের চাপে নিজের অবস্থান দুর্বল মনে করতে পারেন। এতে মানসিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, এমনকি সম্পর্কেও টানাপোড়েন বাড়তে পারে।
এর আগে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যখন একজন নারী তাঁর সঙ্গীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষের আত্মসম্মান, সুখ ও সম্পর্কের স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়ে। এটি বিশেষত তখনই বেশি হয়, যখন পুরুষটি নিজের কর্মসংস্থান হারিয়ে ঘরে থাকতে বাধ্য হন।
সুইডেনে ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগনির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক সময় সম্পর্কের অসন্তোষেরও কারণ হতে পারে।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ স্ত্রীদের চেয়ে কম আয় করেন, তাঁদের মধ্যে প্রতারণার হারও বেশি, যেন তাঁরা এটা করেই তাঁদের পুরুষত্বকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান।
কাজ না থাকলে পুরুষদের মধ্যে বিষণ্নতার হার নারীদের তুলনায় বেশি থাকে। কারণ, নারীদের ঘরের কাজের বাইরে সামাজিক সম্পর্ক বেশি থাকে। অপরদিকে ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ অর্থাৎ যাঁরা ঘরে থেকে সন্তান পালন করেন, তাঁদের মাঝে একাকিত্ব বেশি। অস্ট্রেলিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হ্যারি বানটন জানান, চাকরি হারানোর পর তিনি অনুভব করেন ‘একজন মানুষ, স্বামী ও বাবা হিসেবে তাঁর মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
কিন্তু কোনো পরিবারে নারীই একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হলে সার্বিকভাবে পরিবারের আয় অনেক সময় কমে যায়। কারণ, নারী-পুরুষের বেতনে এখনো একটি পার্থক্য রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব বাথের সামাজিক নীতি ও বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হেলেন কোয়ালেভেস্কা বলেন, বেশির ভাগ দেশ নারী-পুরুষের সমতার কথা বললেও নারী-পুরুষের বেতন কাঠামোতে যে পার্থক্য, তা দূর করতে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
কর্মক্ষেত্র থেকে পুরুষদের সরে আসা পারিবারিক জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পুরুষেরা যখন কাজ থেকে সরে এসে পরিবারে সময় দেন, তখন সন্তানদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। যুক্তরাজ্যে আজকাল বাবারা সন্তানদের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি সময় কাটান, যা সন্তানদের জন্য উপকারী। এ ছাড়া পিতৃত্বকালীন ছুটি পুরুষদের বিবাহিত জীবনের সন্তুষ্টি বাড়ায় এবং সন্তানদের সঙ্গে তাঁদের বন্ধন মজবুত করে। এটি ভবিষ্যতে শিশুদের মধ্যে লিঙ্গ সমতার ধারণাও তৈরি করে।
যেসব দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটি রয়েছে, সেখানে বাবা-মা সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পান। যেমন সুইডেনে ১৯৯৫ সাল থেকে ‘ড্যাডি মান্থ’ চালু হওয়ার পর বাবাদের মধ্যে সন্তানের যত্ন নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এরপর ২০০২ সালে যখন ছুটি বাড়িয়ে দুই মাস করা হয়, তখন সুইডেনের দম্পতিদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কও আগের চেয়ে স্থিতিশীল হয়েছে। বর্তমানে সুইডেনে পিতৃত্বকালীন ছুটি তিন মাস।
তবে বিশ্বব্যাপী নারী-পুরুষের সমতা নিয়ে সচেতনতা বাড়লেও সামাজিক মনোভাব এখনো পুরোপুরি বদলায়নি। কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক হিজুং চুং বলেন, নারীরা এখন পুরুষদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত এবং কিছু ক্ষেত্রে বেশি উপার্জনও করছেন। তবে কিংস কলেজ লন্ডনের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জেন-জিদের (১৮-২৮ বছর) মধ্যে অনেক পুরুষ এখনো মনে করেন, ঘরে সন্তান দেখাশোনার কাজ করলে একজন পুরুষ তাঁর ‘পুরুষত্ব’ হারান। ২৮ শতাংশ জেন-জি পুরুষ এই বক্তব্যে সম্মত, যেখানে নারীদের মধ্যে এ সংখ্যা মাত্র ১৯ শতাংশ।
গবেষকেরা বলছেন, নারীরা আজকাল শিক্ষায় ও কর্মক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু পুরুষ হয়তো মনে করছেন, তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন। এর ফলে সমাজে একধরনের বিভাজন তৈরি হচ্ছে।
রাজনীতিবিদ রোজি ক্যাম্পবেল বলেন, তরুণদের মধ্যে তাঁদের পুরুষত্ব ও নারী-পুরুষ সমতার অর্থ ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে স্কুলপর্যায়ে। তরুণদের সামনে এমন ইতিবাচক পুরুষ আদর্শ রাখা দরকার, যাঁরা দয়া, সহমর্মিতা ও পরিচর্যার কাজকেও পুরুষত্বের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
মোনাশ ইউনিভার্সিটির গবেষক কার্লা এলিয়ট বলেন, যত্ন ও সমানাধিকারের ওপর ভিত্তি করে নতুন পুরুষতান্ত্রিক ধারণাও তৈরি হচ্ছে। তবে এই মানসিকতার প্রসারে পুরুষদের গৃহস্থালির কাজে এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে পিতৃত্বকালীন ছুটির মতো নীতিগুলো পুরুষদের দায়িত্ব ভাগ করে নিতে সাহায্য করতে পারে এবং নারীদের ক্যারিয়ার গড়ায় সহায়ক হতে পারে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা সবাই যদি সমাজে পরস্পরের ভূমিকা নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করি, তবে পুরুষদের আত্মসম্মান বা পুরুষত্বের বিষয়ে ভুল ধারণা ভাঙতে পারে।
যেহেতু নারীদের উপার্জন বাড়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে, তাই পুরুষদের পারিবারিক দায়িত্বে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। তবেই গড়ে উঠবে সমতার সমাজ, যেখানে সম্পর্ক আরও সুখকর হবে; নারীরা পেশাগত অগ্রগতি অর্জন করতে পারবেন এবং পুরুষেরা পরিবারের দেখভালেও পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
সূত্র: বিবিসি
মূল লেখা: বিজ্ঞান সাংবাদিক মেলিসা হোগেনবুম, Breadwinners (২০২৫) ও The Motherhood Complex (২০২১) বইয়ের লেখক।

ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা
২ ঘণ্টা আগে
বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা।
৪ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
৬ ঘণ্টা আগে
কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা সুবাতাস নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। এটি শুধু সেই ঘরে উপস্থিত মানুষকে আরাম দেয় এমন না। বিষয়টি সরাসরি রোগব্যাধি ও জীবাণুর থাকা না থাকার সঙ্গেও সম্পর্কিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসের একটি প্রাচীন ধারণা থেকে এই বিষয়ে একটা বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। আর সেই ধারণাকে বলা হয় মিয়াজমা তত্ত্ব।
মিয়াজমা তত্ত্ব কী
মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে রোগব্যাধি কোনো জীবাণু থেকে নয়, বরং পচা বা দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস থেকে ছড়ায়। এই তত্ত্ব ১৯০০ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রচলিত ছিল।’ মিয়াজমা’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে। যার অর্থ দূষণ বা কলুষতা। তখনকার মানুষ বিশ্বাস করত যে পচা জৈব পদার্থ, আবর্জনা বা মৃত প্রাণীর পচা গন্ধ থেকে এক ধরনের বিষাক্ত কুয়াশা বা বাতাস তৈরি হয়। এই খারাপ বাতাস বা দুর্গন্ধ যখন মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে, তখন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যেহেতু বিশ্বাস করা হতো যে দুর্গন্ধই রোগ ছড়ায়, তাই মানুষ এর প্রতিকার হিসেবে কিছু ব্যবস্থা নিত। এর জন্য সুগন্ধির ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ভেন্টিলেশনের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করা হয়।
উপাদান ও প্রাচীন বিশ্বাস
প্রাচীন রোমান উৎসব ‘স্যাটারনালিয়া’র সময় কমলার খোসা ও দারুচিনি পোড়ানো হতো। মূল্যবান ফল কমলা ছিল সমৃদ্ধির প্রতীক, আর এর সুগন্ধ ঘরের দুর্গন্ধ ঢেকে দিত দ্রুত। শীতের দিনে ঘরের পরিবেশ আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর করতে আপনিও এই প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। এর জন্য একটি পাত্রে অর্ধেক পানি নিন। তাতে পাতলা করে কাটা কমলালেবু বা লেবু এবং দু-টুকরো দারুচিনি দিন। ২০ মিনিট মাঝারি আঁচে ফুটিয়ে শেষে কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা ওয়েল মিশিয়ে দিন। এই সুগন্ধ আপনার ঘরের পর্দা ও বিছানায় মিশে গিয়ে এক অদ্ভুত উষ্ণতা ছড়িয়ে দেবে। দারুচিনি এবং কমলার তেলের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বাতাসের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমানের এক সেতুবন্ধ তৈরি করবে। এ ছাড়া মিষ্টি ও মসলাযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য ভ্যানিলা, ক্যারামেল এবং মধুর মিশ্রণে তৈরি করে নিতে পারেন সুগন্ধি যা শীতকালে অসম্ভব জনপ্রিয়। এটি কেবল উষ্ণতাই দেয় না, মনে এক ধরনের স্বস্তি আনে।

অস্বস্তিকর গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে
অতীতের ইউরোপে তীব্র শীত থেকে বাঁচতে ঘরের ভেতরে গবাদিপশু রাখা হতো। এতে পশুদের শরীরের তাপে ঘর গরম থাকত ঠিকই, কিন্তু বদ্ধ পরিবেশে তীব্র দুর্গন্ধ তৈরি হতো। তৎকালে চিকিৎসাবিদ্যা মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে এই দুর্গন্ধই হলো সব রোগের মূল কারণ। তাই বাতাসকে ‘শুদ্ধ’ করতে সুগন্ধি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়। ইউরোপিয়ানদের মতো শীত না পড়লেও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বেশ শীতের প্রকোপ খেয়াল করা যায়। এই শীতে মানুষ ঘরের দরজা-জানালা বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখে। আর সেখান থেকেই ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্বস্তি। ঘরে মেহমান আসার আগে যদি বিস্কুট বা কেক তৈরি করেন, তবে সেই মিষ্টি সুগন্ধ পুরো বাড়িতে আভিজাত্যের ছোঁয়া দেবে। এমনই কিছু টিপস থেকে ২০২৬ সালে আপনার প্রিয় ঘরটিকে সব সময় ফ্রেশ রাখতে পারেন।
আর্দ্রতা বা ময়শ্চার নিয়ন্ত্রণ করুন
ঘরের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ হলো আর্দ্রতা। ভেজা তোয়ালে ভালোমতো শুকিয়ে ভাঁজ করুন। ডিশ স্পঞ্জ প্রতি এক-দুই সপ্তাহে বদলে ফেলুন। বাথরুমে কার্পেট বা ম্যাট এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো আর্দ্রতা ধরে রাখে। কার্পেট, সোফার কুশন বা পর্দা দুর্গন্ধের ম্যাগনেট হিসেবে কাজ করে। কার্পেটে বেকিং পাউডার ছিটিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে ভ্যাকিউম করুন। এটি গভীর থেকে দুর্গন্ধ শুষে নেবে। বছরে অন্তত একবার কার্পেট ও সোফা স্টিম ক্লিন করান।

ডাস্টবিন ও পোষা প্রাণীর দিকে খেয়াল রাখুন
বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের ডাস্টবিন বা লিটার বক্সের গন্ধে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই নিয়মিত ডাস্টবিনের ভেতরটা ঢাকনাসহ পরিষ্কার করুন। গন্ধ শুষে নিতে বালতির নিচে কিছুটা ‘কিটি লিটার’ বা বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিতে পারেন। বড় বিনের বদলে ছোট ডাস্টবিন ব্যবহার করুন যাতে প্রতিদিন ময়লা ফেলতে আপনি বাধ্য হন।
ফ্রিজ পরিষ্কারের ম্যাজিক
মাসে অন্তত একবার ফ্রিজের সবকিছু চেক করুন। মেয়াদোত্তীর্ণ সস বা পুরোনো বেঁচে যাওয়া খাবার ফেলে দিন। ফ্রিজের ভেতরটা পরিষ্কার করতে ভিনেগার ও গরম জলের মিশ্রণ ব্যবহার করুন। ফ্রিজের পেছনে একটি তুলার বলে ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট ভিজিয়ে রেখে দিন, এতে চমৎকার সুগন্ধ ছড়াবে।
বাতাস চলাচলের সুযোগ দিন
সবচেয়ে সহজ উপায় হলো জানালা খুলে দেওয়া। শীতের কারণে এখন অনেকেই ঘরের জানালা বন্ধ রাখেন। কিন্তু এতে ঘরের মধ্যে একধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। রান্নার গন্ধ বা ঘরের ভ্যাপসা ভাব কাটাতে জানালা খুলে দিলে ক্রস-ব্রিজ তৈরি হয়, যা নিমেষেই মন ভালো করে দেয়।
গাছ ও ফুলের ব্যবহার
ঘরকে সতেজ রাখতে জেসমিন, রোজ বা ল্যাভেন্ডার গাছ রাখতে পারেন। জানালার পাশে পুদিনা বা রোজমেরি গাছ থাকলে ঘর এমনিতেই ফ্রেশ থাকে।
ড্রেন ও টয়লেট পরিষ্কার
সিঙ্ক বা শাওয়ারের ড্রেনে জমে থাকা চুল বা সাবানের ময়লা থেকে দুর্গন্ধ আসে। মাসে অন্তত দুবার ভিনেগার ও বেকিং সোডা দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করুন। টয়লেটের শুধু প্যান নয়, ট্যাঙ্কের ভেতরের ময়লাও স্ক্রাব করে পরিষ্কার রাখুন।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ, বিজনেস ইনসাইডার, রিয়্যাল সিম্পিল

ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা সুবাতাস নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। এটি শুধু সেই ঘরে উপস্থিত মানুষকে আরাম দেয় এমন না। বিষয়টি সরাসরি রোগব্যাধি ও জীবাণুর থাকা না থাকার সঙ্গেও সম্পর্কিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসের একটি প্রাচীন ধারণা থেকে এই বিষয়ে একটা বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়। আর সেই ধারণাকে বলা হয় মিয়াজমা তত্ত্ব।
মিয়াজমা তত্ত্ব কী
মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে রোগব্যাধি কোনো জীবাণু থেকে নয়, বরং পচা বা দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস থেকে ছড়ায়। এই তত্ত্ব ১৯০০ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রচলিত ছিল।’ মিয়াজমা’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে। যার অর্থ দূষণ বা কলুষতা। তখনকার মানুষ বিশ্বাস করত যে পচা জৈব পদার্থ, আবর্জনা বা মৃত প্রাণীর পচা গন্ধ থেকে এক ধরনের বিষাক্ত কুয়াশা বা বাতাস তৈরি হয়। এই খারাপ বাতাস বা দুর্গন্ধ যখন মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করে, তখন সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যেহেতু বিশ্বাস করা হতো যে দুর্গন্ধই রোগ ছড়ায়, তাই মানুষ এর প্রতিকার হিসেবে কিছু ব্যবস্থা নিত। এর জন্য সুগন্ধির ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও ভেন্টিলেশনের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করা হয়।
উপাদান ও প্রাচীন বিশ্বাস
প্রাচীন রোমান উৎসব ‘স্যাটারনালিয়া’র সময় কমলার খোসা ও দারুচিনি পোড়ানো হতো। মূল্যবান ফল কমলা ছিল সমৃদ্ধির প্রতীক, আর এর সুগন্ধ ঘরের দুর্গন্ধ ঢেকে দিত দ্রুত। শীতের দিনে ঘরের পরিবেশ আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর করতে আপনিও এই প্রাচীন পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। এর জন্য একটি পাত্রে অর্ধেক পানি নিন। তাতে পাতলা করে কাটা কমলালেবু বা লেবু এবং দু-টুকরো দারুচিনি দিন। ২০ মিনিট মাঝারি আঁচে ফুটিয়ে শেষে কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা ওয়েল মিশিয়ে দিন। এই সুগন্ধ আপনার ঘরের পর্দা ও বিছানায় মিশে গিয়ে এক অদ্ভুত উষ্ণতা ছড়িয়ে দেবে। দারুচিনি এবং কমলার তেলের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বাতাসের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমানের এক সেতুবন্ধ তৈরি করবে। এ ছাড়া মিষ্টি ও মসলাযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য ভ্যানিলা, ক্যারামেল এবং মধুর মিশ্রণে তৈরি করে নিতে পারেন সুগন্ধি যা শীতকালে অসম্ভব জনপ্রিয়। এটি কেবল উষ্ণতাই দেয় না, মনে এক ধরনের স্বস্তি আনে।

অস্বস্তিকর গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে
অতীতের ইউরোপে তীব্র শীত থেকে বাঁচতে ঘরের ভেতরে গবাদিপশু রাখা হতো। এতে পশুদের শরীরের তাপে ঘর গরম থাকত ঠিকই, কিন্তু বদ্ধ পরিবেশে তীব্র দুর্গন্ধ তৈরি হতো। তৎকালে চিকিৎসাবিদ্যা মিয়াজমা তত্ত্ব অনুযায়ী বিশ্বাস করা হতো যে এই দুর্গন্ধই হলো সব রোগের মূল কারণ। তাই বাতাসকে ‘শুদ্ধ’ করতে সুগন্ধি ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়। ইউরোপিয়ানদের মতো শীত না পড়লেও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বেশ শীতের প্রকোপ খেয়াল করা যায়। এই শীতে মানুষ ঘরের দরজা-জানালা বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখে। আর সেখান থেকেই ঘরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্বস্তি। ঘরে মেহমান আসার আগে যদি বিস্কুট বা কেক তৈরি করেন, তবে সেই মিষ্টি সুগন্ধ পুরো বাড়িতে আভিজাত্যের ছোঁয়া দেবে। এমনই কিছু টিপস থেকে ২০২৬ সালে আপনার প্রিয় ঘরটিকে সব সময় ফ্রেশ রাখতে পারেন।
আর্দ্রতা বা ময়শ্চার নিয়ন্ত্রণ করুন
ঘরের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ হলো আর্দ্রতা। ভেজা তোয়ালে ভালোমতো শুকিয়ে ভাঁজ করুন। ডিশ স্পঞ্জ প্রতি এক-দুই সপ্তাহে বদলে ফেলুন। বাথরুমে কার্পেট বা ম্যাট এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো আর্দ্রতা ধরে রাখে। কার্পেট, সোফার কুশন বা পর্দা দুর্গন্ধের ম্যাগনেট হিসেবে কাজ করে। কার্পেটে বেকিং পাউডার ছিটিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেখে ভ্যাকিউম করুন। এটি গভীর থেকে দুর্গন্ধ শুষে নেবে। বছরে অন্তত একবার কার্পেট ও সোফা স্টিম ক্লিন করান।

ডাস্টবিন ও পোষা প্রাণীর দিকে খেয়াল রাখুন
বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে তাদের ডাস্টবিন বা লিটার বক্সের গন্ধে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই নিয়মিত ডাস্টবিনের ভেতরটা ঢাকনাসহ পরিষ্কার করুন। গন্ধ শুষে নিতে বালতির নিচে কিছুটা ‘কিটি লিটার’ বা বেকিং সোডা ছিটিয়ে দিতে পারেন। বড় বিনের বদলে ছোট ডাস্টবিন ব্যবহার করুন যাতে প্রতিদিন ময়লা ফেলতে আপনি বাধ্য হন।
ফ্রিজ পরিষ্কারের ম্যাজিক
মাসে অন্তত একবার ফ্রিজের সবকিছু চেক করুন। মেয়াদোত্তীর্ণ সস বা পুরোনো বেঁচে যাওয়া খাবার ফেলে দিন। ফ্রিজের ভেতরটা পরিষ্কার করতে ভিনেগার ও গরম জলের মিশ্রণ ব্যবহার করুন। ফ্রিজের পেছনে একটি তুলার বলে ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট ভিজিয়ে রেখে দিন, এতে চমৎকার সুগন্ধ ছড়াবে।
বাতাস চলাচলের সুযোগ দিন
সবচেয়ে সহজ উপায় হলো জানালা খুলে দেওয়া। শীতের কারণে এখন অনেকেই ঘরের জানালা বন্ধ রাখেন। কিন্তু এতে ঘরের মধ্যে একধরনের অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়। রান্নার গন্ধ বা ঘরের ভ্যাপসা ভাব কাটাতে জানালা খুলে দিলে ক্রস-ব্রিজ তৈরি হয়, যা নিমেষেই মন ভালো করে দেয়।
গাছ ও ফুলের ব্যবহার
ঘরকে সতেজ রাখতে জেসমিন, রোজ বা ল্যাভেন্ডার গাছ রাখতে পারেন। জানালার পাশে পুদিনা বা রোজমেরি গাছ থাকলে ঘর এমনিতেই ফ্রেশ থাকে।
ড্রেন ও টয়লেট পরিষ্কার
সিঙ্ক বা শাওয়ারের ড্রেনে জমে থাকা চুল বা সাবানের ময়লা থেকে দুর্গন্ধ আসে। মাসে অন্তত দুবার ভিনেগার ও বেকিং সোডা দিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করুন। টয়লেটের শুধু প্যান নয়, ট্যাঙ্কের ভেতরের ময়লাও স্ক্রাব করে পরিষ্কার রাখুন।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ, বিজনেস ইনসাইডার, রিয়্যাল সিম্পিল

যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক
২০ মে ২০২৫
বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা।
৪ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
৬ ঘণ্টা আগে
কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা। এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অল্প সময় ধ্যান করলেই মানসিক চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
ধ্যান কী এবং কেন এটি সহজ
অনেকেই মনে করেন ধ্যান মানে কঠিন কিছু। বিশেষ ভঙ্গিতে বসতে হয় বা জটিল নিয়ম মেনে চলতে হয়। আসলে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। ধ্যান খুবই সহজ একটি মানসিক অনুশীলন। ধ্যান বলতে মূলত নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং বর্তমান মুহূর্তে নিজেকে স্থির রাখাকেই বোঝায়। এই সময় কোনো কিছু জোর করে ভাবার দরকার নেই, আবার সব চিন্তা বন্ধ করার চেষ্টাও করতে হয় না। শুধু শান্তভাবে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই ধ্যান শুরু হয়ে যায়। ধ্যান করতে কোনো যন্ত্রপাতি লাগে না, বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হয় না এবং এর জন্য আলাদা কোনো খরচও নেই। বয়স, জায়গা বা সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও কয়েক মিনিট সময় বের করে নেওয়া সম্ভব বলেই ধ্যান আজকের দিনে মানসিক চাপ কমানোর একটি সহজ ও কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কীভাবে উপকার পাওয়া যায়
অনেকে ভাবেন ধ্যান করতে হলে অনেক সময় দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত অল্প সময়ই সবচেয়ে কাজে দেয়। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। ধ্যান আমাদের জীবনের গতি একটু কমিয়ে দেয়। এতে আমরা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাই, চিন্তাগুলো পরিষ্কার করতে পারি এবং মানসিকভাবে নতুন শক্তি ফিরে পাই। এই ছোট বিরতিই মস্তিষ্ককে চাপ সামলাতে সাহায্য করে।

সকালে ধ্যান করলে কেন বেশি লাভ
দিনের শুরুটা যেমন হয়, অনেক সময় পুরো দিনটাই তেমন কাটে। সকালে মাত্র ১০ মিনিট ধ্যান করলে মন শান্ত থাকে এবং অকারণ দুশ্চিন্তা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধ্যানের সময় সচেতনভাবে শ্বাস নেওয়ার ফলে শরীরের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে। এর প্রভাব সারা দিন থাকে। নিয়মিত সকালে ধ্যান করলে ধীরে ধীরে শান্ত থাকা মানুষের স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়।
ধ্যান ও মনোযোগের সম্পর্ক
বর্তমানে অনেকে মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যায় ভোগেন। পড়াশোনা বা কাজে বসলে মন স্থির থাকে না, অল্প সময়ের মধ্যেই চিন্তা অন্যদিকে চলে যায়। নানা দুশ্চিন্তা আর কাজের চাপের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান করলে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখা, চিন্তাভাবনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার অংশ সক্রিয় হয়। এর ফলে বিভ্রান্তি কমে, মাথার ভেতরের অগোছালো চিন্তাগুলো ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে উঠলে কাজে মন বসানো সহজ হয়, দীর্ঘ সময় একাগ্রতা বজায় থাকে এবং কাজের মান ও দক্ষতা দুটোই বাড়ে।
ধ্যান শুরু করবেন কীভাবে
ধ্যান শুরু করতে কোনো বিশেষ জ্ঞান বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। আরাম করে বসে বা শুয়ে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই যথেষ্ট। মনে অন্য চিন্তা এলে বিরক্ত না হয়ে আবার শ্বাসের দিকে মন ফেরাতে হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেই ধীরে ধীরে এর সুফল বোঝা যায়।
ধ্যান কোনো জাদু নয়, আবার জটিল কিছুই নয়। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও প্রতিদিন নিজের জন্য ১০ মিনিট সময় বের করে নেওয়াই হতে পারে মানসিক চাপ কমানো, মন শান্ত রাখা এবং সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে ফেরার একটি সহজ উপায়।
সূত্র: হেলথশট

বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা। এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অল্প সময় ধ্যান করলেই মানসিক চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
ধ্যান কী এবং কেন এটি সহজ
অনেকেই মনে করেন ধ্যান মানে কঠিন কিছু। বিশেষ ভঙ্গিতে বসতে হয় বা জটিল নিয়ম মেনে চলতে হয়। আসলে বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। ধ্যান খুবই সহজ একটি মানসিক অনুশীলন। ধ্যান বলতে মূলত নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং বর্তমান মুহূর্তে নিজেকে স্থির রাখাকেই বোঝায়। এই সময় কোনো কিছু জোর করে ভাবার দরকার নেই, আবার সব চিন্তা বন্ধ করার চেষ্টাও করতে হয় না। শুধু শান্তভাবে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই ধ্যান শুরু হয়ে যায়। ধ্যান করতে কোনো যন্ত্রপাতি লাগে না, বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হয় না এবং এর জন্য আলাদা কোনো খরচও নেই। বয়স, জায়গা বা সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও কয়েক মিনিট সময় বের করে নেওয়া সম্ভব বলেই ধ্যান আজকের দিনে মানসিক চাপ কমানোর একটি সহজ ও কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কীভাবে উপকার পাওয়া যায়
অনেকে ভাবেন ধ্যান করতে হলে অনেক সময় দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত অল্প সময়ই সবচেয়ে কাজে দেয়। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। ধ্যান আমাদের জীবনের গতি একটু কমিয়ে দেয়। এতে আমরা শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাই, চিন্তাগুলো পরিষ্কার করতে পারি এবং মানসিকভাবে নতুন শক্তি ফিরে পাই। এই ছোট বিরতিই মস্তিষ্ককে চাপ সামলাতে সাহায্য করে।

সকালে ধ্যান করলে কেন বেশি লাভ
দিনের শুরুটা যেমন হয়, অনেক সময় পুরো দিনটাই তেমন কাটে। সকালে মাত্র ১০ মিনিট ধ্যান করলে মন শান্ত থাকে এবং অকারণ দুশ্চিন্তা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধ্যানের সময় সচেতনভাবে শ্বাস নেওয়ার ফলে শরীরের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে। এর প্রভাব সারা দিন থাকে। নিয়মিত সকালে ধ্যান করলে ধীরে ধীরে শান্ত থাকা মানুষের স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়।
ধ্যান ও মনোযোগের সম্পর্ক
বর্তমানে অনেকে মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যায় ভোগেন। পড়াশোনা বা কাজে বসলে মন স্থির থাকে না, অল্প সময়ের মধ্যেই চিন্তা অন্যদিকে চলে যায়। নানা দুশ্চিন্তা আর কাজের চাপের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান করলে মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখা, চিন্তাভাবনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার অংশ সক্রিয় হয়। এর ফলে বিভ্রান্তি কমে, মাথার ভেতরের অগোছালো চিন্তাগুলো ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে উঠলে কাজে মন বসানো সহজ হয়, দীর্ঘ সময় একাগ্রতা বজায় থাকে এবং কাজের মান ও দক্ষতা দুটোই বাড়ে।
ধ্যান শুরু করবেন কীভাবে
ধ্যান শুরু করতে কোনো বিশেষ জ্ঞান বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। আরাম করে বসে বা শুয়ে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার দিকে মন দিলেই যথেষ্ট। মনে অন্য চিন্তা এলে বিরক্ত না হয়ে আবার শ্বাসের দিকে মন ফেরাতে হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলেই ধীরে ধীরে এর সুফল বোঝা যায়।
ধ্যান কোনো জাদু নয়, আবার জটিল কিছুই নয়। ব্যস্ত জীবনের মাঝেও প্রতিদিন নিজের জন্য ১০ মিনিট সময় বের করে নেওয়াই হতে পারে মানসিক চাপ কমানো, মন শান্ত রাখা এবং সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনে ফেরার একটি সহজ উপায়।
সূত্র: হেলথশট

যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক
২০ মে ২০২৫
ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
৬ ঘণ্টা আগে
কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
স্ট্রবেরি ২টি, পানি ১/৪ কাপ, লেবুর রস ২ চা চামচ, সোডা ওয়াটার ৩/৪ কাপ, সুগার সিরাপ ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি
স্ট্রবেরি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি গ্লাসে পুদিনা পাতা দিয়ে একটু থেঁত করে নিয়ে এরপর এতে লেবুর রস, ছেঁকে রাখা স্ট্রবেরি জুস এবং সুগার সিরাপ মিশিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে লেবুর টুকরা এবং বরফ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
উপকরণ
স্ট্রবেরি ২টি, পানি ১/৪ কাপ, লেবুর রস ২ চা চামচ, সোডা ওয়াটার ৩/৪ কাপ, সুগার সিরাপ ২ চা চামচ, পুদিনা পাতা ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি
স্ট্রবেরি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে। একটি গ্লাসে পুদিনা পাতা দিয়ে একটু থেঁত করে নিয়ে এরপর এতে লেবুর রস, ছেঁকে রাখা স্ট্রবেরি জুস এবং সুগার সিরাপ মিশিয়ে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে সোডা ওয়াটার মিশিয়ে নিতে হবে। সবশেষে লেবুর টুকরা এবং বরফ দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক
২০ মে ২০২৫
ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা
২ ঘণ্টা আগে
বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা।
৪ ঘণ্টা আগে
কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
এই সমস্যা মানুষ বুঝতে পারে। কেনাকাটা করা ঠিক হচ্ছে না জেনেও নিজেকে থামাতে পারে না। ধীরে ধীরে এতে আর্থিক চাপ, ঋণ আর মানসিক অশান্তি বাড়তে থাকে।
কেনাকাটার আসক্তি আসলে কী?
কিছু কিনলে হঠাৎ আনন্দ অনুভব করেন অনেকে। সেই আনন্দ আবার পেতে বারবার কেনাকাটা করা একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কেউ নির্দিষ্ট জিনিসে আসক্ত হয় যেমন জামাকাপড়, গয়না, মোবাইল বা প্রসাধনী। আবার কেউ যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলে। যেমন খাবার, অপ্রয়োজনীয় জিনিস, এমনকি জমি বা শেয়ারও।
অনেক সময় মানসিক চাপ, দুঃখ, একাকিত্ব বা রাগ থেকে মুক্তি পেতেই মানুষ কেনাকাটার দিকে ঝোঁকে। কিন্তু কেনাকাটার আনন্দটা খুব অল্প সময়ের হয়। পরে আফসোস হয় এবং ঋণের বোঝা বাড়ে।

কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
এই লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন চললে সেটি গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

এর সমাধান কী?
কেনাকাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, জীবনের জন্য কেনাকাটা দরকার। তাই সমাধান হলো নিয়ন্ত্রণ শেখা।
খুব কাজে আসে কাউন্সেলিং বা আচরণগত থেরাপি।
থেরাপির মাধ্যমে মানুষ শেখে—
সহায়তা কোথায় পাওয়া যায়?
অনেক দেশে এবং অনলাইনে কেনাকাটার নেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে অর্থ ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানুষকে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা, বাজেট তৈরি করা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। পাশাপাশি পুনরুদ্ধার প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে একই সমস্যায় ভোগা মানুষ একে অপরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এতে একাকিত্ব কমে এবং মানসিক সাহস পাওয়া যায়। আর যদি ঋণের পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায়, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ঋণ পরামর্শক সংস্থা বা অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে।
ভবিষ্যৎ কী?
যদি সময়মতো সাহায্য নেওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা থেকে বের হওয়া সম্ভব। মাঝেমধ্যে আবার পুরোনো অভ্যাস ফিরে আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক। তবে সঠিক সহায়তা থাকলে আবার নিয়ন্ত্রণে ফেরা যায়।
কেনাকাটার আসক্তি ধীরে ধীরে মানুষকে ঋণ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের দিকে নিয়ে যায়। শুরুতে বিষয়টি তেমন গুরুতর মনে না হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তবে সচেতনতা, পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা এবং প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে আবার সুস্থ, নিয়ন্ত্রিত ও শান্ত জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।
সূত্র: হেলথলাইন

কেনাকাটা করতে সবাই ভালোবাসে। নতুন জামা, দরকারি জিনিস বা পছন্দের কিছু কিনলে মন ভালো হয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কেউ প্রয়োজন না থাকলেও বা টাকা নেই জেনেও বারবার কেনাকাটা করতে থাকে, তখন সেটি আর শখ থাকে না। তখন সেটি কেনাকাটার আসক্তিতে পরিণত হয়।
এই সমস্যা মানুষ বুঝতে পারে। কেনাকাটা করা ঠিক হচ্ছে না জেনেও নিজেকে থামাতে পারে না। ধীরে ধীরে এতে আর্থিক চাপ, ঋণ আর মানসিক অশান্তি বাড়তে থাকে।
কেনাকাটার আসক্তি আসলে কী?
কিছু কিনলে হঠাৎ আনন্দ অনুভব করেন অনেকে। সেই আনন্দ আবার পেতে বারবার কেনাকাটা করা একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। কেউ নির্দিষ্ট জিনিসে আসক্ত হয় যেমন জামাকাপড়, গয়না, মোবাইল বা প্রসাধনী। আবার কেউ যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলে। যেমন খাবার, অপ্রয়োজনীয় জিনিস, এমনকি জমি বা শেয়ারও।
অনেক সময় মানসিক চাপ, দুঃখ, একাকিত্ব বা রাগ থেকে মুক্তি পেতেই মানুষ কেনাকাটার দিকে ঝোঁকে। কিন্তু কেনাকাটার আনন্দটা খুব অল্প সময়ের হয়। পরে আফসোস হয় এবং ঋণের বোঝা বাড়ে।

কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
এই লক্ষণগুলো দীর্ঘদিন চললে সেটি গুরুতর সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

এর সমাধান কী?
কেনাকাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, জীবনের জন্য কেনাকাটা দরকার। তাই সমাধান হলো নিয়ন্ত্রণ শেখা।
খুব কাজে আসে কাউন্সেলিং বা আচরণগত থেরাপি।
থেরাপির মাধ্যমে মানুষ শেখে—
সহায়তা কোথায় পাওয়া যায়?
অনেক দেশে এবং অনলাইনে কেনাকাটার নেশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে অর্থ ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মানুষকে আয়-ব্যয়ের হিসাব করা, বাজেট তৈরি করা এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়। পাশাপাশি পুনরুদ্ধার প্রোগ্রাম রয়েছে, যেখানে একই সমস্যায় ভোগা মানুষ একে অপরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এতে একাকিত্ব কমে এবং মানসিক সাহস পাওয়া যায়। আর যদি ঋণের পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায়, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে ঋণ পরামর্শক সংস্থা বা অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে ওঠে।
ভবিষ্যৎ কী?
যদি সময়মতো সাহায্য নেওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যা থেকে বের হওয়া সম্ভব। মাঝেমধ্যে আবার পুরোনো অভ্যাস ফিরে আসতে পারে, এটা স্বাভাবিক। তবে সঠিক সহায়তা থাকলে আবার নিয়ন্ত্রণে ফেরা যায়।
কেনাকাটার আসক্তি ধীরে ধীরে মানুষকে ঋণ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের দিকে নিয়ে যায়। শুরুতে বিষয়টি তেমন গুরুতর মনে না হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তবে সচেতনতা, পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তা এবং প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে আবার সুস্থ, নিয়ন্ত্রিত ও শান্ত জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।
সূত্র: হেলথলাইন

যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক
২০ মে ২০২৫
ঘরকে পরিপাটি রাখার জন্য বেশ কিছু বিষয়ের ওপরে নজর থাকতে হয়। ধুলা মোছা থেকে শুরু করে জায়গা বুঝে আসবাব রাখা পর্যন্ত সবকিছু। এর সঙ্গে একটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা হলো ঘরের বাতাসে যেন কোনো দুর্গন্ধ না থাকে। আর সে জন্য অনেকে ব্যবহার করেন বিভিন্ন স্প্রে। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরের বাতাসে একটা
২ ঘণ্টা আগে
বর্তমান জীবনে মানসিক চাপ প্রায় সবার নিত্যসঙ্গী। কাজের চাপ, দ্রুত যোগাযোগ, পারিবারিক দায়িত্ব এবং সারাক্ষণ মোবাইল ও স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা। সব মিলিয়ে আমরা অনেক সময় নিজের জন্য এক মুহূর্তও থামতে পারি না। এর ফল হিসেবে দেখা দেয় অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, মনোযোগের অভাব এবং ঘুমের সমস্যা।
৪ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর বরণ করার সময় চলে এসেছে। রাত ১২টার ঘণ্টা জানান দেবে ২০২৬-এর আগমন। বছরের প্রথম দিনে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া তো হবেই। এসব খাবারের পাশাপাশি রাখতে পারেন স্ট্রবেরি দিয়ে তৈরি লাল পানীয়। আপনাদের জন্য স্ট্রবেরি লেমোনেডের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মরিয়ম হোসেন নূপুর।
৬ ঘণ্টা আগে