Ajker Patrika

কেমন আছে সন্তানের মনের বাড়ি? 

মৃত্তিকা পণ্ডিত
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২১, ১১: ১৭
কেমন আছে সন্তানের মনের বাড়ি? 

‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই।’ গল্পের চরিত্র ফটিকের কল্যাণেই রবীন্দ্রনাথ হয়তো এখানে শুধু ছেলেশিশুদের উল্লেখ করে থেমে গেছেন। কিন্তু এই একই বয়সের মেয়েশিশুদের ক্ষেত্রেও তো কথাটা সত্য। এই তেরো বছর বয়স বা ইংরেজি ‘থারটিন’ থেকেই তো শুরু হয় টিনএজ, যা কিনা শেষ হয় গিয়ে উনিশে। এই বয়স একই সঙ্গে দ্বিধার ও প্রাণোচ্ছলতার।

আজকের এই সময় এই টিনএজাররাই সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে। তাদের বাইরের দুনিয়া হঠাৎ করেই সংকুচিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ অনেক দিন হলো। খুলব–খুলছি করেও শেষ পর্যন্ত আর তা খুলছে না। শহর–গ্রামনির্বিশেষে আগের সেই যৌথ পরিবার আর নেই। ফলে উঠতি শিশু–কিশোরদের সঙ্গ পাওয়াটা দিন দিন দুরূহ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় সন্তানের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়াটা ভীষণভাবে দরকার। 

করোনা মহামারির এই সময়ে আপনার আদরের সন্তান ঠিক কেমন আছে, সেই খোঁজ কি আপনি জানেন? বেড়ে ওঠার সময় একটি শিশু নানা ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়। কৈশোরে পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। এই সময়টি ভীষণ জটিল। এই সময়ে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা আমাদের সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনিতেই এই গতিশীল সময়ে শিশু–কিশোরদের মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখাটা ভীষণ কঠিন একটি কাজ। এই বয়সেই নানা দিকে নানা ধরনের ঝোঁক তৈরি হয়। এটা প্রাণশক্তির লক্ষণ। একই সঙ্গে এটি ঝুঁকিও তৈরি করে। কারণ, এই ঝোঁক নেতিবাচক দিকেও হতে পারে। 

মহামারি শুরুর আগে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেওয়া এক তথ্যমতে, কিশোর-কিশোরীদের, বিশেষত বয়ঃসন্ধিতে থাকা শিশুদের চিন্তা-ভাবনার কেন্দ্রে ছিল নিজের একটি আশ্রয় বা ঘর। এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির পদ্ধতি এবং নিজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির বিষয়ে চিন্তা করত এই বয়সীরা। 

এর পর করোনা মহামারি এল। এসব কিশোর-কিশোরী হঠাৎ করেই ঘরবন্দী হয়ে গেল। সবকিছুই ক্রমে বদলে যেতে থাকল। কতটা যোগাযোগে দক্ষ একটি প্রজন্ম এই সময়ে ঘরবন্দী থাকতে থাকতে ক্রমে ঘরকুনো হয়ে উঠছে। তাদের যোগাযোগের ক্ষমতা ক্রমে নষ্ট হচ্ছে।

চাইল্ড অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপিস্ট জেনিফার কোরালি বয়ঃসন্ধিকালের শিশু-কিশোরদের নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে মার্কিন সাময়িকী রিডার্স ডাইজেস্টকে তিনি বলেন, বর্তমানে কিশোর-কিশোরীরা একধরনের অশান্তি ও দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে তাদের ভবিষ্যৎ পঙ্গুত্বের দিকেই যাবে। তারা নতুন কোনো বিষয়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। মিশতে পারার ক্ষমতা ক্রমেই কমে যাচ্ছে তাদের। তিনি বলেন, বাবা–মায়ের সঙ্গে এসব শিশু-কিশোরের যোগাযোগ অনেক কম। নিজেদের একটি গণ্ডির ভেতর আবদ্ধ রাখতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাদের মধ্যে হতাশাও বাড়ছে। অথচ ষাটের দশকে বিষয়গুলো এমন ছিল না। 

অবশ্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও কথাসাহিত্যিক ড. মোহিত কামাল বলেন, টিনএজ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিদ্যমান রাগ, ক্ষোভ কিংবা হতাশা যেমন আছে, তেমনি তা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভবও কিছু না। এ ক্ষেত্রে তিনি অভিভাবকের পাশাপাশি সন্তানের দায়িত্বও মনে করিয়ে দিলেন। তাঁর মতে, কিশোর-কিশোরীদেরও উচিত নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা। তাদেরও বুঝতে হবে, তারা এখন একটি অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। হতাশা, উদ্বেগ তাদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। তাই মনোবল শক্ত করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘মা-বাবার যেমন সন্তানের প্রতি দায়িত্ব আছে, সন্তানেরও কিন্তু তাঁদের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। দুটি বিষয়ই কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ। দুটি বিষয় যদি ব্যালেন্স করে চলা যায় তাহলে শিশু–কিশোরদের মন ভালো থাকবে। তারা এতটা হতাশায় ভুগবে না।’ 

জেনিফার কোরালি নিজ পরিপার্শ্বের বিচারে হয়তো ষাটের দশকের কথা উল্লেখ করেছেন। মার্কিন সমাজের বিচারে তা ঠিক আছে। কিন্তু বাংলাদেশের কথা বিবেচনায় নিলে, এই দুই দশক আগেও তো চিত্রটা এমন ছিল না। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে বড় পরিবারগুলো ভেঙে ছোট ছোট পরিবার তৈরি হচ্ছিল। রাজধানী ঢাকার দিকে ছুটছিল সবাই। এখনো সে ছোটায় কোনো ছেদ পড়েনি। তবে কিছু মূলগত পার্থক্য কিন্তু আছে। সে সময় শহরে শহরে নিউক্লিয়ার পরিবার তৈরি হলেও তার মূলটি কিন্তু ছিল গ্রামের যৌথ সমাজে। আবার সে সময় যে শহরে পাড়ি জমাতেন চাকরিজীবীরা, তা তখনো শহর হয়ে ওঠেনি। শহরের পাড়া–মহল্লায় সবার সঙ্গে সবার দেখা হতো, কথা হতো। ফাঁকা স্থান বা খেলার মাঠ তখনো বিরল হয়নি। ফলে সে অর্থে নিঃসঙ্গতা এই বয়সী শিশু–কিশোরদের সে সময় ছুঁতে পারত না। এখন কিন্তু এই নিঃসঙ্গতা ব্যাপকভাবেই নিজের দখল নিয়েছে। কারণ, বাক্সে বাক্সে বন্দী বাক্স। করোনা এই বন্দিত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলেছে। বর্তমানে বাচ্চাদের মধ্যেও অনেক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। তারা অনেক বেশি কথা বলে বা একদমই চুপ থাকে। তারা অনেক সময় এটাই ভুলে যায় যে তাদের কোনো অভিভাবক রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায়ই দুশ্চিন্তা, হতাশা, এমনকি মনোযোগে ঘাটতির (এডিএইচডি) মতো বিষয়গুলো দেখা দেয়; বিশেষত স্থির হতে না পারা, কোনো কিছু না ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার মতো সমস্যাগুলো আগের তুলনায় বেড়েছে। তারা রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে থাকে, তারপর সারা দিন ঘুমিয়ে কাটায়; যা তাদের মনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের জন্যও ক্ষতিকর।

আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব তো রয়েছেই। এখনকার শিশু-কিশোরেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তারা তাদের না পাওয়া বিষয়গুলো সামনাসামনি বলার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তারা একে অন্যের সমস্যাগুলো মা-বাবার সঙ্গে আলোচনা করার চেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপে বেশি আগ্রহী। এই হতাশা, দুশ্চিন্তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার নেতিবাচক দিকটি হলো এতে করে তাদের হতাশা কিংবা মন খারাপগুলো অন্যদের মনে সংক্রমিত হতে পারে। আবার কিশোর-কিশোরীরা অনলাইন গেমিংয়েও ঝুঁকছে। বাইরের দুনিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, তারা নিজের মতো করে একটি দুনিয়া তৈরি করে নিচ্ছে। এই আসক্তি নিয়ে ইদানীং অনেক কথা হচ্ছে। অনেকগুলো অনলাইন গেম শিশু-কিশোরদের মানসিকভাবে হিংস্র করে তোলে। মনের রাগ, ক্ষোভ, হতাশা আরও বাড়িয়ে তোলে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই শিশু–কিশোরদের গেম আসক্তিতে অভিভাবকদের উদ্বেগ নিয়ে খবর প্রচার হচ্ছে। অনলাইন থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে নানা অনুষ্ঠান ও সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।

মুশকিল হচ্ছে এই করোনা আবার শিক্ষা কার্যক্রমের জন্যই অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ফলে ঘরে বসে থাকাটা শিশুটিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা ডিভাইসেই সময় কাটাচ্ছে বেশি। মা–বাবার পক্ষেও সব সময় সেদিকে নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এই ফাঁকেই তারা ভিডিও গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। কখনো কখনো এই সূত্র ধরে তারা জড়িয়ে পড়ছে বড় কোনো অঘটনের সঙ্গে।

অনলাইন থেকে শিশু–কিশোরদের দূরে রাখার পরামর্শ দিলেন মোহিত কামালও। বললেন, ‘যেহেতু এখন করোনা মহামারির সময়, তাই কিশোর–কিশোরীরা চাইলেই হুটহাট বাইরে বের হতে পারছে না। অনলাইনে বেশি সময় কাটানো যাবে না।’

তাই এ সময়ে তো বটেই, যেকোনো সময়েই এই বয়সী সন্তানের খোঁজ একটু বেশি করেই নিতে হবে মা–বাবাকে। সন্তান হয়তো নিজের খারাপ লাগাগুলো, হতাশাগুলো প্রকাশ করতে পারছে না। মা–বাবাকে এগিয়ে যেতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে শিক্ষকদের। তাদের ভালো লাগা, চাওয়াগুলোর খোঁজ নিতে হবে। তারা যদি এগুলো নিয়ে কথা বলতে পারে, তাহলে এসব হতাশা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

সব থেকে বড় কথা, করোনা মহামারির এই সময়ে সবাই সবকিছু নিয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। আমরা একটি অনিশ্চিত পৃথিবীতে আছি। আমরা কেউই জানি না পৃথিবী কবে শান্ত হবে। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই আমাদের পরের প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে। শুধু শরীর নয়, মনের যত্ন নিতে হবে। নিজেরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে শেখাতে হবে এই যত্ন নেওয়ার কৌশল। সন্তানের মঙ্গলের জন্য, ভালোর জন্য, তাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এই মনের বাড়ির খোঁজ নেওয়াটা ভীষণভাবে জরুরি। এ ক্ষেত্রে সন্তানের ভূমিকাটিও গুরুত্বপূর্ণ। ড. মোহিত কামালের ভাষায়, ‘মা-বাবার যেমন সন্তানের প্রতি দায়িত্ব আছে, সন্তানেরও কিন্তু তাঁদের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। দুটি বিষয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। দুটি বিষয় ব্যালেন্স করে চলা গেলে শিশু–কিশোরদের মন ভালো থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম কেন খাবেন, কতটুকু খাবেন

ফিচার ডেস্ক
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত
এতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার আর জিংক। ছবি: সংগৃহীত

কাজুবাদামকে বলা হয় ‘পুষ্টির ছোট প্যাকেট’। এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকর। এ কারণে যে আপনি মুঠো মুঠো করে সব সময় এটি খেতেই থাকবেন, তা হবে না। নিয়মিত কাজুবাদাম পরিমিত খেতে হবে। এতে আপনি পেতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সুস্থতা। মূলত ব্রাজিলীয় বংশোদ্ভূত এই বৃক্ষজাত বীজ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তার স্বাস্থ্যগুণের জন্য সমাদৃত। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ—কাজুবাদামের আছে বহুমুখী উপকারিতা। এটি নিয়মিত খাওয়ার পেছনে অনেকগুলো স্বাস্থ্যগত কারণ আছে। আবার খাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু সতর্কতাও। তাই নিজের খাবারের তালিকায় কাজুবাদাম রাখার আগে ভালো ও খারাপ দিক জেনে রাখুন।

হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা

কাজুবাদামে রয়েছে প্রচুর অসম্পৃক্ত চর্বি। এটি রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

কাজুবাদাম উচ্চ ক্যালরিযুক্ত হলেও এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এর কারণ হলো, কাজুবাদামের সবটুকু ক্যালরি শরীর শোষণ করতে পারে না। এর ভেতরের আঁশ বা ফাইবার চর্বিকে আটকে ফেলে, যা হজমের সময় শরীরে পুরোপুরি শোষিত হয় না। ফলে এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং আজেবাজে খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য কাজুবাদাম খুবই উপকারী। এতে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোধ করে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশ কাজুবাদাম থেকে গ্রহণ করলে ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা

কাজুবাদাম কপার ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস। এই দুটি খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে অপরিহার্য। এ ছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (পলিফেনল ও ক্যারোটিনয়েড) শরীরের ভেতরের ব্যথা কমাতে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করতে কাজ করে।

হাড় ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য

কাজুবাদামে আছে ভরপুর ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ভিটামিন কে। এগুলো হাড়ের গঠনে ভূমিকা রাখে। এর কপার উপাদান মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ও শক্তি উৎপাদনে সরাসরি সাহায্য করে।

কাঁচা কাজু নিরাপদ কি না

আমরা বাজারে যে কাজুবাদাম কাঁচা হিসেবে কিনি, তা আসলে পুরোপুরি কাঁচা নয়। গাছের তাজা কাজুবাদামের খোসায় ইউরুশিয়াল নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে, যা ত্বকে অ্যালার্জি বা ফোসকা তৈরি করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত করার সময় তাপ দিয়ে এই বিষাক্ত অংশ দূর করা হয়। তাই গাছ থেকে সরাসরি পেড়ে কাজু খাওয়া নিরাপদ নয়।

খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করার সহজ উপায়

কাজুবাদাম খুব সহজে প্রতিদিনের খাবারে যোগ করা যায়। বিকেলের নাশতায় এক মুঠো ভাজা কাজু খেতে পারেন। সালাদ, স্যুপ বা স্ট্যুতে কাজুবাদাম ছড়িয়ে দিলে স্বাদ ও পুষ্টি—দুই-ই বেড়ে যায়। কাজুবাদাম ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে দুধ মুক্ত ক্রিম বা পনির তৈরি করা সম্ভব। টোস্ট বা ওটমিলের সঙ্গে কাজু বাটার ব্যবহার করা যায়।

মনে রাখবেন

পরিমাণ: কাজুবাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর হলেও এতে ক্যালরি বেশি। তাই দিনে ২৮ গ্রাম বা প্রায় ১৮টি বাদাম খাওয়াই যথেষ্ট।

লবণ ও তেল: অতিরিক্ত লবণ বা তেলে ভাজা কাজুর চেয়ে শুকনো ভাজা বা আনসলটেড কাজু বেছে নেওয়া ভালো।

অ্যালার্জি: যাদের কাঠবাদাম বা পেস্তাবাদামে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাজু খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত। শ্বাসকষ্ট বা চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র: হেলথ লাইন, ইভিএন এক্সপ্রেস, ওয়েব মেড

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গরম কড়াইয়ে কেন ঠান্ডা পানি ঢালবেন না

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াইসহ যেকোনো ধাতব হাঁড়িপাতিল কেন বাঁকা হয়ে যায়, জানেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে ধাতব পাত্রে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসের মধ্যে।

চুলা থেকে নামানো গরম কড়াইয়ে হঠাৎ ঠান্ডা পানি ঢাললে যে শব্দ হয়, অনেকের কাছে তা সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সতর্কবার্তা। আপনার কড়াইটি তখন থার্মাল শকের শিকার হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে রান্নার পাত্রের আয়ু কমিয়ে দেয়। অনেক গৃহিণী ও রান্নাপ্রেমী মনে করেন, গরম কাড়াই সরাসরি সিঙ্কে নিয়ে ঠান্ডা পানি ঢাললে পোড়া খাবারের অংশ সহজে উঠে যায়। কিন্তু অল-ক্ল্যাড ও ক্যালফালনের মতো নামকরা কুকওয়্যার ব্রান্ড সতর্ক করে বলছে, এটি কড়াই নষ্ট হওয়ার বড় কারণগুলোর একটি।

থার্মাল শক কীভাবে ক্ষতি করে

ধাতু গরম হলে প্রসারিত হয় এবং ঠান্ডা হলে সংকুচিত হয়। এটি পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম। যখন প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি কড়াই হঠাৎ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে, তখন ধাতব অণুগুলো দ্রুত সংকুচিত হয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনই সৃষ্টি করে থার্মাল শক, যা কড়াইয়ের গঠনকে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া

থার্মাল শকের সবচেয়ে সাধারণ ফল হলো কড়াই বাঁকা হয়ে যাওয়া। হঠাৎ ঠান্ডায় কড়াইয়ের নিচের অংশ সংকুচিত হয়ে ভাঁজ হয়ে যায়। ফলে কড়াই চুলার ওপর ঠিকভাবে বসে না এবং তাপ সমানভাবে ছড়ায় না। এর ফল হিসেবে রান্নার সময় এক পাশে খাবার পুড়ে যায়, অন্য পাশে ঠিকমতো রান্না হয় না।

নন-স্টিক কড়াই বাড়তি ঝুঁকি

নন-স্টিক কড়াইয়ের ক্ষেত্রে থার্মাল শক আরও বেশি ক্ষতিকর। কারণ, প্যানের ধাতু ও নন-স্টিক কোটিংয়ের প্রসারণ ও সংকোচনের হার এক নয়। হঠাৎ ঠান্ডা হলে কোটিং ফেটে যেতে বা উঠে যেতে পারে। এতে প্যানের নন-স্টিক ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কোটিংয়ের ক্ষুদ্র কণা খাবারের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষতিগ্রস্ত নন-স্টিক কোটিং থেকে পিএফএএস জাতীয় ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হতে পারে। যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

ফাটল ধরার ঝুঁকি

কাস্ট আয়রন, স্টোনওয়্যার বা সিরামিক প্যানের ক্ষেত্রে থার্মাল শক কখনো কখনো তাৎক্ষণিক ফাটল ধরাতে পারে। এসব উপাদান স্টেইনলেস স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় বেশি ভঙ্গুর হওয়ায় হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

কড়াই রক্ষা করার নিয়ম

বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়াই ভালো রাখার সহজ নিয়ম হলো ধৈর্য। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে—

রান্না শেষ হলে কড়াইটি চুলার ওপর বা পাশে রেখে স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হতে দিন।

পুরোপুরি ঠান্ডা হলে তারপর ধুয়ে ফেলুন।

তাড়াহুড়া থাকলে ঠান্ডা পানির বদলে গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন, যাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকে।

আরও কিছু সাধারণ ভুল

বিশেষজ্ঞরা আরও কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো—

ঠান্ডা পানিতে লবণ দিলে লবণের কণা তলায় জমে স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে ক্ষুদ্র গর্ত তৈরি করতে পারে। তাই পানি ফুটে ওঠার পর লবণ যোগ করা ভালো।

নন-স্টিক প্যান একটির ওপর আরেকটি রাখলে ওপরের প্যানের তলা নিচের প্যানের কোটিংয়ে আঁচড় ফেলতে পারে।

নন-স্টিক প্যানে ধাতব স্ক্রাবার বা শক্ত ঘষামাজা একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

কাস্ট আয়রন প্যান পরিষ্কারে সাবান কম ব্যবহার করে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত শুকিয়ে হালকা তেল মেখে রাখা ভালো, এতে মরিচা ধরবে না।

রান্নার পাত্রের যত্ন নেওয়া মানে শুধু খরচ বাঁচানো নয়; এটি খাবারের মান, স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে। একটি ভালো পাত্র দীর্ঘদিন ভালো থাকলে সমানভাবে রান্না হয়। খাবার পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষতিকর পদার্থ খাবারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। গরম প্যানে ঠান্ডা পানি ঢালার অভ্যাসটি ত্যাগ করলে কড়াইয়ের গঠন ও কোটিং অক্ষত এবং সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের উপযোগী থাকবে।

সূত্র: হাফ পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ারে অদ্ভুত ট্রেন্ডের জয়জয়কার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিভিন্ন বিখ্যাত অভিধান বেছে নিয়েছে এ বছরের সেরা শব্দগুলো। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
বিভিন্ন বিখ্যাত অভিধান বেছে নিয়েছে এ বছরের সেরা শব্দগুলো। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

২০২৫ সাল প্রায় শেষের পথে। প্রতিবছরের মতো এবারও বিশ্বের খ্যাতনামা অভিধানগুলো তাদের ‘ওয়ার্ড অব দ্য ইয়ার’ বা বছরের সেরা শব্দ ঘোষণা করেছে। তবে এবারের নির্বাচনগুলোতে একটি বিশেষ সুর ফুটে উঠেছে। তা হলো ডিজিটাল জগতের প্রতি ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস ও অনিশ্চয়তা। যেমন একুশ শতকের প্রথম দশকে অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইন্টারনেটের প্রতি প্রবল উৎসাহের কারণে ব্লগ বা টুইটের মতো শব্দগুলো নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু ২০২৫-এর শব্দগুলো বলছে অন্য কথা। এবারের শব্দগুলোতে কৃত্রিমতা, আবেগীয় কারসাজি এবং অদ্ভুত সব ট্রেন্ডের জয়জয়কার।

২০২৫ সালের নির্বাচিত শব্দগুলোর মাধ্যমে মানুষের ডিজিটাল জীবনের একটি বিবর্তনমূলক চিত্র ফুটে উঠেছে। এ বছর এই শব্দগুলো একসঙ্গে বিশ্লেষণ করলে একটি বিশেষ মানসিক অবস্থার খোঁজ পাওয়া যায়। যাকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল নিহিলিজম। ভুল তথ্য, এআই-জেনারেটেড ছবি এবং ষড়যন্ত্রতত্ত্বের এই ভিড়ে মানুষ এখন কাকে বিশ্বাস করবে, তা নিয়ে সন্দিহান। এই অনিশ্চয়তাকে একটি ইমোজি দিয়ে সবচেয়ে ভালো প্রকাশ করা যায়। আর তা হলো ‘কাঁধ ঝাঁকানো’ ইমোজি। অর্থাৎ, ডিজিটাল জীবনের এই অরাজকতায় মানুষ এখন কিছুটা উদাসীন এবং নিরুপায়।

অস্ট্রেলীয় ইংরেজি ভাষার প্রধান নির্দেশিকা ম্যাককুয়ারি ডিকশনারি। ছবি: উইকিপিডিয়া
অস্ট্রেলীয় ইংরেজি ভাষার প্রধান নির্দেশিকা ম্যাককুয়ারি ডিকশনারি। ছবি: উইকিপিডিয়া

ইন্টারনেটের নতুন জঞ্জাল এআই স্লপ

অস্ট্রেলীয় ইংরেজি ভাষার প্রধান নির্দেশিকা ম্যাককুয়ারি ডিকশনারি বছরের সেরা শব্দ হিসেবে বেছে নিয়েছে ‘এআই স্লপ’ শব্দটিকে। এটি মূলত জেনারেটিভ এআই দিয়ে তৈরি নিম্নমানের কনটেন্ট, যা ইন্টারনেটে না চাইতেই আমাদের সামনে চলে আসে। ত্রুটিপূর্ণ এআই ইমেজ থেকে শুরু করে লিঙ্কডইনে দেওয়া অদ্ভুত সব ক্যারিয়ার পরামর্শ সবই এই স্লপের অন্তর্ভুক্ত। এটি শুধু একটি শব্দ নয়, বরং ইন্টারনেটের অর্থহীন তথ্যের ভিড়ে প্রকৃত তথ্য খুঁজে পাওয়ার লড়াইকে ফুটিয়ে তোলে।

প্যারাসোশ্যাল (Parasocial): কৃত্রিম সম্পর্কের মায়া

‘কেমব্রিজ ডিকশনারি’ নির্বাচন করেছে ‘প্যারাসোশ্যাল’ শব্দটি। এটি এমন এক ধরনের মানসিক সম্পর্ক, যেখানে একজন ব্যক্তি কোনো সেলিব্রিটি, কাল্পনিক চরিত্র, এমনকি এআই চ্যাটবটের প্রতি একতরফা টান অনুভব করেন। ১৯৫৬ সালে সমাজবিজ্ঞানীরা শব্দটি তৈরি করলেও ২০২৫ সালে এটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। গায়িকা টেলর সুইফট ও ট্র্যাভিস কেলসের বাগদান নিয়ে ভক্তদের অতি উৎসাহ কিংবা নিঃসঙ্গ মানুষের চ্যাটবটের প্রেমে পড়া—এই ঘটনাগুলো প্যারাস্যোশাল শব্দটির ব্যবহার বাড়ার পেছনে বড় কারণ হিসেবে কাজ করেছে। মানুষ এখন রক্তমাংসের মানুষের চেয়ে স্ক্রিনের ওপারের চরিত্রের সঙ্গে বেশি মানসিক সংযোগ খুঁজছে।

রাগের কারসাজি রেজ বাইট (Rage Bait)

‘অক্সফোর্ড ডিকশনারি’ এ বছর বেছে নিয়েছে ‘রেজ বাইট’ শব্দটি। এটি এমন এক ধরনের কনটেন্টকে বোঝায়, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানুষকে রাগান্বিত বা উত্তেজিত করার জন্য তৈরি করা হয়। মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটে ট্রাফিক বা এনগেজমেন্ট বাড়ানো। ‘অ্যাটেনশন ইকোনমি’ বা মানুষের মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার এই নোংরা কৌশল রাজনৈতিক মেরুকরণকেও ত্বরান্বিত করছে। ২০২৫ সালে এই শব্দের ব্যবহার আগের বছরের তুলনায় তিন গুণ বেড়েছে। এ ঘটনা প্রমাণ করে, আমাদের আবেগ নিয়ে খেলা করার বিষয়টির প্রতি আমরা এখন অনেক বেশি সচেতন।

৬-৭ (6-7): অর্থহীনতার জয়জয়কার

এবার সবচেয়ে অদ্ভুত এবং বিতর্কিত নির্বাচনটি করেছে ‘ডিকশনারি ডট কম’। তারা কোনো শব্দ নয়, বরং সংখ্যাকে বছরের সেরা বলে ঘোষণা করেছে। তারা বেছে নিয়েছে ‘৬-৭’। জেনারেশন আলফার এই স্লাং মূলত অর্থহীন এবং অদ্ভুতুড়ে। র‍্যাপার স্ক্রিলার এর একটি গান থেকে এটি জনপ্রিয় হয়। এটি ব্যবহারের সময় দুই হাত দিয়ে দাঁড়িপাল্লার মতো একটি ভঙ্গি করা হয়। শুধু র‍্যাপার নন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকেও একটি স্কুল এই সাইন পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। মজার ব্যাপার হলো, এই শব্দের কোনো নির্দিষ্ট অর্থ নেই। মূলত কিশোর-কিশোরীরা বড়দের বিভ্রান্ত করতেই এটি বেশি ব্যবহার করে।

ভাইব কোডিং (Vibe Coding): প্রযুক্তির সহজ পাঠ

‘কোলিন্স ডিকশনারি’ বেছে নিয়েছে ‘ভাইব কোডিং’ শব্দটি। এটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে সাধারণ ভাষায় কমান্ড দিয়ে কম্পিউটার কোড লেখানোর পদ্ধতি। ওপেন এআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা আন্দ্রেজ কারপাথি শব্দটি জনপ্রিয় করেন। এর ফলে এখন কোডিংয়ের গভীর জ্ঞান না থাকলেও কেবল ‘ভাইব’ বা অনুভূতির মাধ্যমে সফটওয়্যার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।

সূত্র: টাইমস ম্যাগাজিন, ইভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৮
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসনের পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বৃশ্চিক রাশির জাতক। এই রাশির জাতক-জাতিকাদের জন্য আজসহ আগামী সাত দিন কেবল একটি সপ্তাহ নয়, বরং এটি একটি পুরোদস্তুর ধামাকা বলিউড মসলা মুভি! জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে, একদিকে বড়দিনের আমেজ, অন্যদিকে নতুন বছরের হাতছানি—সব মিলিয়ে গ্রহরা এখন পার্টি মুডে আছে।

মেজাজ ও মানসিক অবস্থা

সপ্তাহের শুরুতেই এই রাশির জাতক-জাতিকার ভেতর ‘শার্লক হোমস’ জেগে উঠবে। আশপাশের লোকজন কেন এত খুশি, কেন এত হাসছে, সবাই কেন এত খাতির করছে—এসব কিছুর পেছনে গভীর গোয়েন্দা নজর রাখবেন। তবে এত সতর্কতার কিছু নেই, অতিরিক্ত গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে আবার ফোনের পাসওয়ার্ড ভুলে যেতে পারেন!

সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বৃশ্চিক রাশির জাতক-জাতিকারা বেশ দার্শনিক হয়ে উঠবেন। মনে হবে, ‘জীবনটা আসলে কী?’ তবে সেই উত্তর পাওয়ার আগেই বিরিয়ানির গন্ধ আপনাকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনবে।

মাস্টারমাইন্ড গেম

এই রাশির জাতক-জাতিকারা যাঁরা রাজনীতির ময়দানের খেলোয়াড়, তাঁরা রীতিমতো ফাটিয়ে দেবেন! সপ্তাহটি তাঁদের জন্য দাবা খেলার মতো। জাতক-জাতিকার প্রতিটি চাল প্রতিপক্ষকে ঘাম ছুটিয়ে দেবে।

জনসভায় আপনার ভাষণ আজ জনতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবে। তবে মাইক চেক করে নেবেন, নতুবা আপনার গোপন কোনো মন্তব্য জনসমক্ষে চলে আসতে পারে। বিরোধী পক্ষ আপনার ছোট কোনো ভুলকে বড় করার জন্য ওত পেতে থাকবে।

এলাকার মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়বে। তবে ছবি তোলার চেয়ে মানুষের কথা শোনায় বেশি মনোযোগ দিন। ভোটাররা আপনার কাছে এই মাহেন্দ্রক্ষণের গিফট হিসেবে এলাকার উন্নয়ন চাইবে।

তবে দলের ভেতরেই ‘মীরজাফর’ চেনার চেষ্টা করুন। কারও হাসিমুখের পেছনে বিষাক্ত কোনো পরিকল্পনা থাকতে পারে।

ক্যারিয়ার ও ব্যবসা

কর্মক্ষেত্রে আপনি আজ বিদ্যুতের গতিতে কাজ করবেন। ডেস্কে কাজের ফাইল পাহাড়ের মতো জমলেও আপনি ইউটিউবে ‘কীভাবে কোটিপতি হওয়া যায়’ তা দেখে সময় কাটাবেন।

আপনার উন্নতি দেখে সহকর্মীদের চোখ টাটাবে। কেউ যদি আপনার কলম বা ফোন চার্জার নিয়ে যায়, বুঝবেন সেটা কেবল চুরি নয়, আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা!

ব্যবসায়ীদের জন্য সময়টা দারুণ। তবে বড় কোনো চুক্তিতে সই করার আগে চশমাটা ভালো করে মুছে নেবেন, যাতে ‘শর্তাবলি’ পরিষ্কার দেখা যায়।

আর্থিক অবস্থা

টাকা আসবে ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা দিয়ে গিফট কিনতে গিয়ে আপনি দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটবেন। লটারির টিকিট কাটলে হয়তো ২০ টাকা জিতবেন, কিন্তু সেই খুশিতে বন্ধুদের ১০০ টাকার মিষ্টি খাইয়ে লস করে ফেলবেন।

রাস্তায় পড়ে থাকা টাকা কুড়াতে যাবেন না, ওটা হয়তো কারোর ‘মানত’ করা পয়সা হতে পারে!

প্রেম ও ভালোবাসা

প্রেমের বাজারে বৃশ্চিক রাশির গ্রাফ এখন ঊর্ধ্বমুখী। স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হবে ঠিকই, কিন্তু সেটা হবে ‘কে রিমোট ধরবে’ বা ‘কে লাইট বন্ধ করবে’ তা নিয়ে। শেষে আপস হবে অনলাইন শপিংয়ের মাধ্যমে।

আর সিঙ্গেলদের ক্ষেত্রে, আপনার পুরোনো কোনো ক্রাশ হঠাৎ করে ইনবক্সে ‘হাই’ পাঠাতে পারে। সাবধান! ওটা হয়তো বিয়ের কার্ড পাঠানোর আগের প্রস্তুতি। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন।

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য নিয়ে আপনার গ্রহরা একটু কানামাছি খেলছে। একদিকে আপনার মন বলবে ‘আরেক পিস কেক খাই’, অন্যদিকে লিভার বলবে ‘দোহাই তোমার, থামো!’

জিম যাওয়ার কথা ভেবে সকালে অ্যালার্ম দেবেন ঠিকই, কিন্তু সেই অ্যালার্ম বন্ধ করে আরও দুই ঘণ্টা ঘুমানোটাই হবে আপনার আসল ব্যায়াম।

ঠান্ডায় আইসক্রিম খেয়ে গলার বারোটা বাজাবেন না।

দিনের বিশেষ পূর্বাভাস (সংক্ষেপে):

২৫ ডিসেম্বর (বড়দিন): উপহার না জুটলেও বাড়িতে ভালো খাবারের যোগ আছে।

২৮ ডিসেম্বর: অফিসের বস বা রাজনৈতিক হাইকমান্ডের সঙ্গে ঝামেলা এড়িয়ে চলুন, না হলে নতুন বছরের ছুটিটা ঘরে বসেই কাটাতে হবে।

৩১ ডিসেম্বর: পার্টিতে নাচতে গিয়ে বা মঞ্চে ভাষণ দিতে গিয়ে যেন পা মচকে না যায়, খেয়াল রাখবেন।

লাইফ হ্যাক

কারোর ব্যক্তিগত চ্যাটে বা লবিংয়ের গোপন নথিতে উঁকি দেবেন না, স্ক্রিনশট ধরা পড়ে গেলে মান-সম্মান পাড়ায় বিলিয়ে দিতে হবে। নেতিবাচকতা কাটাতে পকেটে একটি কালো রুমাল রাখুন এবং প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের উদ্দেশে বলুন—‘আমিই জনগণের প্রিয় নেতা!’

আপনার শুভ সংখ্যা: ০৯, ২১, ৭৭। শুভ রং: গাঢ় লাল বা খয়েরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত