Ajker Patrika

কাফতান কাফতান

রিক্তা রিচি, ঢাকা
কাফতান কাফতান

প্রজাপতি প্রজাপতি 
কোথায় পেলে ভাই 
এমন রঙিন পাখা…

এ গানটি শুনতে শুনতে আমাদের শৈশব কেটেছে। কৈশোরের দিনগুলোতেও ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখতাম, ইশ্‌, যদি প্রজাপ্রতির মতো পাখা থাকত! যদি পরির পিছে পিছে প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াতে পারতাম! ধীরে ধীরে বড় হলাম। একসময় দেখা মিলল কাফতানের। কাফতান আমাদের দেশে জনপ্রিয় হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি। ১৯৭০- এর দশকে আমাদের দেশে কাফতানের প্রচলন লক্ষ করা যায়। তবে সে সময় অতটা জনপ্রিয় ছিল না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ পোশাকটি গ্রহণ করতে শুরু করেন ফ্যাশনসচেতন নারীরা। আমাদের দেশে অনেক পরে কাফতানের প্রচলন লক্ষ করা গেলেও, মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পোশাকের শুরুটা অনেক আগে থেকে।

কাফতান-জাতীয় পোশাকের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় এ ধরনের পোশাকের ব্যবহার দেখা যায়। সে সময় পুরুষদের গায়েও কাফতান শোভা পেত। অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতানরা এমন পোশাক পরতেন। সময় গড়িয়েছে। পোশাকে এসেছে পরিবর্তন। কাট, নকশা, ডিজাইনে এসেছে ভিন্নতা। এখন কাফতান নারীদের পোশাক। নাটক, সিনেমা, মিউজিক ভিডিও সব জায়গায় মডেলের গায়ে কাফতান পরার বিষয়টি লক্ষ করা যায়।

কাফতান আরামদায়ক পোশাক, বিশেষ করে গরমের দিনগুলোতে ঘরে ও বাইরে পরা যায় এটি। একে তো ঢিলেঢালা, অন্যদিকে ফ্যাশনেবলও। ক্লাস, অফিস, বন্ধুদের আড্ডা—সব পরিবেশেই মানিয়ে যায় কাফতান। রাতে ঘুমানো যায় এ পোশাক পরেই।

কাফতানের বিশেষত্ব হলো, এতে আরামদায়ক হাতা থাকে এবং কোমরের দিকে বাঁধার জন্য বেল্ট কিংবা রাবার দিয়ে আটকানো থাকে। কোমরের দিকে রাবার কিংবা বেল্ট থাকে বলেই এটি দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। নিচের দিকে সমান, অসমান অংশ এটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। কিছু কিছু কাফতানের নিচের অংশে থাকে কোনা আকৃতি।

কাফতানের কাটে আছে ভিন্নতা। শোল্ডার কাফতান, কেপ কাফতান, ড্রেপ কাফতান, ড্রেপ কওল কাফতান, সার্কেল কাফতান, ব্যাট উইং, বাটারফ্লাই ইত্যাদি কাট দেওয়া হয়ে থাকে কাফতানে।

নকশা ও ডিজাইন
প্রিন্টের কাফতান, এক রঙের কাপড়ে রঙিন আঁকিবুঁকি করা কাফতান, বাটিক ইত্যাদি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন ফুলের ডিজাইন, লতা-পাতা, জ্যামিতিক ডিজাইন স্থান পেয়েছে কাফতানে।

সারার প্রধান ডিজাইনার শামীম রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে ডিপ নেক কাফতান, ভি গলার স্কয়ার কাফতান, বিচ কাফতান ইত্যাদি আছে। কাপড়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে জর্জেট কাপড়। রঙের ক্ষেত্রে আমরা প্রাধান্য দিয়েছি সবুজ, আকাশি ইত্যাদি রংকে।’ প্রিন্টের কাফতানগুলোই বেশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে বলেও জানান তিনি।

কইন্যার স্বত্বাধিকারী বাধন মাহমুদ বলেন, গরমে পরার জন্য আমরা সুতি কাফতান নিয়ে এসেছি। ডাই করা কাপড় যেমন টাই ডাই, মোম বাটিক করা কাফতান আছে। স্ক্রিনপ্রিন্ট যেমন লালনের মুখাবয়ব, জাত গেল জাত গেল ইত্যাদি রাখার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাফতানগুলোর দাম ৭০০-১০০০ টাকার মধ্যে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে পোশাক তৈরি করি।

ট্রু ট্রিয়েজার বাই তানিশায় প্রিন্টের ও শর্ট কাফতান আছে। প্রতিটি কাফতান অনন্য। জর্জেট, লিনেন, সিল্ক, সুইস কটন, সফট সিল্ক ইত্যাদি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন কাটের কাফতান—জানিয়েছেন ট্রু ট্রিয়েজার বাই তানিশার মডারেটর সাদিয়া সুলতানা।

কাফতান আপনাকে আত্মবিশ্বাসী ও ফ্যাশনেবল করে তুলবে। প্যান্ট, ল্যাগিংস কিংবা জ্যাগিংসের সঙ্গে এ পোশাকটি পরা যায়। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কিংবা সান্ধ্যকালীন যেকোনো পার্টিতে কাফতান পরা যায়। সে ক্ষেত্রে সিল্ক, শিফন, পাতলা ভেলভেটের কাফতান বাছাই করতে হবে। আপনাকে আরও বেশি রুচিশীল করে তুলতে পারে যদি পোশাকটিতে টার্সেল ও লেইসের ব্যবহার থাকে। তাই কেনার আগে ঠিক করে নিন ঘরে, বাইরে নাকি দাওয়াতে পরার জন্য কাফতান কিনবেন।

কোথায় পাওয়া যাবে
পছন্দের কাফতান কেনার জন্য ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া, মৌচাক মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কে ঢুঁ মারতে পারেন। অনলাইন থেকে কেনার জন্য সেইলর, প্রথা, দেশাল, হুর নুসরাত, কইন্যা, ভিয়োলা বাই ফারিহা, গ্রামীণ ইউনিক্লো, ট্রু ট্রিয়েজার বাই তানিশা ইত্যাদি পেজে চোখ রাখুন। ঢাকার বাইরের প্রায় প্রতিটি পোশাকের দোকানে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের কাফতান।

দরদাম
জনপ্রিয় বলেই যে কাফতানের দাম আকাশছোঁয়া, তা নয়। দাম একেবারেই সাধ্যের মধ্যে। কাফতান সাধারণত ৬০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৫০০ টাকা বা তার কিছু বেশি টাকার মধ্যে বিক্রি হয়ে থাকে। কাপড়, কাট ও নকশার ওপর দামের হেরফের হয়।

পছন্দমতো কাফতান বাসায় কিংবা টেইলরের কাছ থেকে বানিয়েও নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আড়াই থেকে তিন গজ কাপড় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাঁচ তারকা হোটেলগুলোর আয়ের উৎস বেড়েছে

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

পাঁচ তারকা হোটেল যে শুধু বিলাসবহুল কক্ষে রাতযাপন থেকে আয় করে, তেমন নয়। আধুনিক বিলাসী পর্যটনশিল্পে টিকে থাকতে হোটেলগুলো তাদের ব্র্যান্ডকে ছড়িয়ে দিচ্ছে নানা খাতে। ব্যক্তিগত জেট ভ্রমণ, হোটেল-ব্র্যান্ডেড ইয়ট, বিলাসবহুল আবাসন, এমনকি সংগীত স্টুডিও কিংবা স্বয়ংসম্পূর্ণ স্টোরেজ সুবিধাও এখন তাদের আয়ের নতুন মাধ্যম।

সম্প্রতি জাপানের উদ্যোক্তা ইউসাকু মায়েজাওয়া টোকিওতে আমান গ্রুপের একটি ব্র্যান্ডেড রেসিডেন্স কিনেছেন বলে জানা গেছে, যার মূল্য প্রায় ৩০ বিলিয়ন ইয়েন। এটি শুধু একটি উদাহরণ। বিশ্বজুড়ে বিলাসী হোটেলগুলো তাদের গ্রাহকদের জন্য আরও ব্যতিক্রমী সেবা বিক্রি করছে।

ধনীদের চাহিদাই বদলে দিচ্ছে ব্যবসার ধরন

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে বড় কারণ হলো ধনীদের সম্পদ দ্রুত বাড়ছে। অক্সফামের গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ প্রতিদিন গড়ে ৩ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড বেড়েছে! ফলে এই শ্রেণির গ্রাহকেরা শুধু থাকার জায়গা নয়, এর সঙ্গে বিশেষ অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত সেবা চাইছেন। ‘বিজনেস ইনসাইডার’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফোর সিজনসের প্রধান নির্বাহী আলেহান্দ্রো রেনাল জানান, যদিও তাঁদের মোট আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে হোটেল ও রিসোর্ট থেকে, তবে ব্যক্তিগত জেট ট্যুরের মতো অতিরিক্ত সেবা ধনী গ্রাহকদের আকর্ষণ আরও বাড়ায়। সঠিকভাবে পরিচালিত হলে একজন অতিধনী অতিথির একবারের সফর হোটেলকক্ষের ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি আয় এনে দিতে পারে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

ব্যক্তিগত জেট ও আকাশপথের ভ্রমণ

ফোর সিজনসের ব্যক্তিগত জেট সেবার মাধ্যমে অতিথিরা বিভিন্ন হোটেলে ভ্রমণ করতে পারেন বিশেষভাবে সাজানো এয়ারবাস বিমানে। এসব ভ্রমণে থাকে বিলাসবহুল আসন, আলাদা শেফ এবং প্রতিটি গন্তব্যের সংস্কৃতি অনুযায়ী বিশেষ আয়োজন। এমন একটি রাতের ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার পাউন্ড, যা একটি হোটেলের সবচেয়ে দামি কক্ষের ভাড়ার তুলনায় অনেক বেশি।

সমুদ্রে বিলাস: হোটেল-ব্র্যান্ডেড ইয়ট

বিলাসী পর্যটকদের কাছে এখন শুধু নৌভ্রমণ নয়, হোটেল-ব্র্যান্ডেড ইয়টে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া নতুন ট্রেন্ড। ফোর সিজনস ও আমান শিগগির নিজেদের ইয়ট সেবা চালু করতে যাচ্ছে। এর আগেই রিটজ কার্লটন তাদের ইয়ট কালেকশন চালু করেছে, যা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

ঘরের ভেতরও হোটেলের ছোঁয়া

শুধু ভ্রমণ বা রাতযাপন নয়, এখন অনেক বিলাসবহুল হোটেল তাদের অভ্যন্তরীণ নকশা ও আসবাবকেও আলাদা ব্যবসা হিসেবে তুলে ধরছে। হোটেলে থাকার সময় অতিথিদের যেসব আসবাব, আলো, পর্দা বা সাজসজ্জা ভালো লাগে, সেগুলোই এখন তারা নিজের ঘরের জন্য কিনে নিতে চাইছেন। এই চাহিদা কাজে লাগিয়ে অনেক হোটেল ব্র্যান্ড তাদের ডিজাইনকে পণ্যে রূপ দিয়েছে। এর সফল উদাহরণ হলো সোহো হাউসের সহযোগী ব্র্যান্ড সোহো হোম। হোটেল ও প্রাইভেট ক্লাবের অভ্যন্তরীণ নকশায় ব্যবহৃত আসবাব ও ডেকর আইটেম এখন সরাসরি বাজারে বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে সোফা, আলো, কার্পেট থেকে শুরু করে টেবিলওয়্যার পর্যন্ত। ফলে যারা সোহো হাউসের পরিবেশ পছন্দ করেন, তাঁরা সেই অভিজ্ঞতা নিজেদের ঘরেও নিয়ে যেতে পারছেন।

ছবি: ফ্রিপিক
ছবি: ফ্রিপিক

হোটেল পণ্যই এখন স্ট্যাটাস

হোটেলের লোগো দেওয়া তোয়ালে, ব্যাগ বা পোশাক এখন ধনীদের কাছে নতুন ফ্যাশন। ফ্রান্সের হোটেল দ্যু ক্যাপ এদেন রকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব অনলাইন স্টোর চালু করেছে। কেউ কেউ আবার হোটেলের নামে তৈরি বিশেষ স্পিডবোট পর্যন্ত কিনছেন।

সামাজিক ক্লাব ও স্থানীয় সদস্যপদ

অনেক বিলাসবহুল হোটেল এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সামাজিক ক্লাব চালু করছে। এর মাধ্যমে হোটেলের বার, রেস্তোরাঁ ও স্পা সব সময় প্রাণবন্ত থাকে, যা আয়ের দ্বিতীয় বড় উৎস। মেক্সিকোর ওয়ানঅ্যান্ডঅনলি পামিলার মতো রিসোর্টে এমন ক্লাব বিনা ফিতেও চালু হয়েছে। যেখানে আয়োজন করা হয় বই পড়ার আসর, বাজার বা মেডিটেশন সেশন।

পাঁচ তারকা হোটেলের ব্যবসা এখন আর শুধু রাতযাপন ‘বিক্রি’র মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আকাশ, সমুদ্র, ঘর আর সামাজিক জীবন—সবখানেই নিজেদের ব্র্যান্ড ছড়িয়ে দিয়ে তারা বিলাসী অভিজ্ঞতাকেই মূল পণ্য হিসেবে তুলে ধরছে। আর সেখানেই লুকিয়ে আছে তাদের আসল আয়।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্রমণে এক ব্যাগে সবকিছু রাখলে বিপদ হতে পারে, দেখে নিন কী করবেন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সব জিনিস এক ব্যাগে না রেখে আলাদা ব্যাগে ভাগ করে নেওয়াই ভ্রমণের জন্য বেশি নিরাপদ ও উপযোগী। ছবি: ফ্রিপিক
সব জিনিস এক ব্যাগে না রেখে আলাদা ব্যাগে ভাগ করে নেওয়াই ভ্রমণের জন্য বেশি নিরাপদ ও উপযোগী। ছবি: ফ্রিপিক

ভ্রমণের সময় অনেকে সব প্রয়োজনীয় জিনিস একটি স্যুটকেসে গুছিয়ে ফেলতে চান। এতে প্যাকিং সহজ মনে হলেও বাস্তবে এমনটা না-ও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সব জিনিস এক ব্যাগে না রেখে আলাদা ব্যাগে ভাগ করে নেওয়াই ভ্রমণের জন্য বেশি নিরাপদ ও উপযোগী; বিশেষ করে ব্যস্ত পর্যটন মৌসুমে বিমানবন্দরে লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে একমাত্র স্যুটকেসটি হারিয়ে গেলে ভ্রমণ আনন্দের বদলে দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে।

কেন আলাদা ব্যাগে জিনিস রাখা জরুরি

যুক্তরাজ্যের বিমানবন্দর শাটল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এসসিএস শফার্স ভ্রমণকারীদের পরামর্শ দিয়েছে, কাপড়, ওষুধ, চার্জারসহ দৈনন্দিন ব্যবহারের জরুরি জিনিসগুলো একটি ব্যাগে না রেখে ছোট ব্যাগ বা একাধিক স্যুটকেসে ভাগ করে রাখা উচিত। এতে লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলেও পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। প্রতিষ্ঠানটির কমার্শিয়াল ডিরেক্টর হ্যাডলি ডায়মন্ড বলেন, ‘সব প্রয়োজনীয় জিনিস এক স্যুটকেসে গুছিয়ে রাখলে সেটি হারালে ভ্রমণকারীরা একসঙ্গে সবকিছু হারানোর ঝুঁকিতে পড়েন; বিশেষ করে পরিবার নিয়ে ভ্রমণ কিংবা সময়সূচিনির্ভর কোনো সফরে গেলে বিষয়টি আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। প্রয়োজনীয় জিনিস আলাদা ব্যাগে ভাগ করে রাখলে যাত্রাপথে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তৈরি হলেও ভ্রমণকারীরা নিজেদের পরিকল্পনা সহজে সামাল দিতে পারেন।’

কীভাবে প্যাক করবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্রমণের আগে প্রথমে প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য জিনিসের একটি তালিকা তৈরি করা উচিত। এরপর সেগুলো গুরুত্ব অনুযায়ী ভাগ করে কিছু জিনিস চেকড ব্যাগেজে এবং কিছু ক্যারি-অন ব্যাগে রাখা নিরাপদ। পরিচয়পত্র, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অন্তত এক সেট কাপড় ক্যারিঅন ব্যাগে রাখলে লাগেজ দেরিতে পৌঁছানো বা হারিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতেও ভ্রমণকারীরা সাময়িকভাবে সমস্যামুক্ত থাকতে পারেন। একই সঙ্গে অন্তর্বাস, চার্জিং ডিভাইসসহ ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিস আলাদা ছোট ব্যাগে গুছিয়ে রাখলে লাগেজের ভেতর জিনিস খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। বিভিন্ন রঙের প্যাকিং কিউব ব্যবহার করলে কাপড় ও আনুষঙ্গিক জিনিস আলাদা করে রাখা যায়, যা সময় ও ঝামেলা কমায়। গন্তব্যে পৌঁছে এসব কিউব সরাসরি হোটেলের ড্রয়ারে রেখে দিলেই দ্রুত গুছিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।

অতিরিক্ত জিনিস নেবেন না

যেসব জিনিস সঙ্গে নিতে ইচ্ছা থাকলেও ভ্রমণের জন্য অপরিহার্য নয়, প্যাকিং শুরুর আগে সেগুলোর একটি আলাদা তালিকা করে নিন। এতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস নেওয়ার প্রবণতা কমে এবং লাগেজের ভারও নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি যাত্রার ঠিক আগে প্রয়োজন হতে পারে এমন কিছু জিনিসের জন্য একটি শেষ মুহূর্তের তালিকা তৈরি করলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফেলে যাওয়ার ঝুঁকিও কমে।

অভিজ্ঞদের পরামর্শ

এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট লরেন গিলফয়েল পরামর্শ দেন, ভ্রমণে এমন পোশাক নিন, যা সহজে মেলানো যায়। যেমন গাঢ় রঙের প্যান্ট, সাদা বা নিরপেক্ষ রঙের টি-শার্ট এবং একটি ডেনিম জ্যাকেট। এগুলো বারবার পরা যায় এবং লাগেজও কম হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও ভ্রমণবিষয়ক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ববি লরি বলেন, ‘কাপড় ভাঁজ না করে রোল করে রাখলে জায়গা বাঁচে, এমনকি সঠিকভাবে করলে কম কুঁচকায়।’

পরিষ্কার ও নোংরা কাপড় আলাদা রাখুন

ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্কটস চিপ ফ্লাইট’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও বিমান বিশেষজ্ঞ স্কট কিজ নোংরা কাপড়ের জন্য আলাদা ভাঁজযোগ্য ব্যাগ সঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এতে পরিষ্কার কাপড় আলাদা থাকে এবং গুছিয়ে রাখা সহজ হয়।

লাগেজ হারালে খুঁজে পাওয়ার উপায়

লাগেজ হারিয়ে গেলে দ্রুত খুঁজে পেতে স্যুটকেসে নাম ও যোগাযোগের তথ্য লেখা স্টিকার বা নোট লাগিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি অ্যাপল এয়ার ট্যাগ বা লাইফ৩৬০-এর টাইল-এর মতো ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহার করলে লাগেজের অবস্থান জানা সহজ হয়।

একটি স্যুটকেসে সবকিছু ভরে ফেলার চেয়ে জিনিসপত্র ভাগ করে রাখা ভ্রমণকে করে তোলে নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত। এ পদ্ধতি সামান্য পরিকল্পনাতেই আপনাকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।

সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আদার কত গুণ, খাওয়ার আগে জেনে নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আদাকে ‘ট্রু ডাবল থ্রেট’ বা দ্বৈত ক্ষমতাসম্পন্ন উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ছবি: ফ্রিপিক
আদাকে ‘ট্রু ডাবল থ্রেট’ বা দ্বৈত ক্ষমতাসম্পন্ন উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ছবি: ফ্রিপিক

অনেকের কাছে হজম সমস্যার ওয়ান-স্টপ সমাধান নাকি আদা। বেকারিগুলোতে এখন জিঞ্জারব্রেড বা জিঞ্জার টোস্ট খদ্দর ধরছে আলাদা করে। এ ছাড়া সকালে অনেকে বুস্টার টনিক হিসেবে খান আদার পানি। এই সাধারণ মূলজাতীয় মসলাটি শত শত বছর ধরে আমাদের রান্নাঘর এবং ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় রান্নায় আদা ছিল একটি অপরিহার্য উপাদান, যা চীন থেকে ভারত পর্যন্ত প্রতিটি পদকে আরও সুস্বাদু করেছে। পরে এটি ইউরোপে পৌঁছায় এবং ভূমধ্যসাগর থেকে ব্রিটেন পর্যন্ত মেনুতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেয়।

আজও আদা রন্ধনশিল্প ও ভেষজ চিকিৎসায় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা একে ‘ট্রু ডাবল থ্রেট’ বা দ্বৈত ক্ষমতাসম্পন্ন উপাদান হিসেবে বিবেচনা করেন। এটি আপনাকে সতেজ করতে পারে, আবার পেটের সমস্যা মেটাতেও সাহায্য করে।

কী লুকিয়ে থাকে আদায়

আমরা বাজার থেকে যে তাজা আদা কিনি, তা হলো জিঞ্জিবার অফিসিনাল নামক সপুষ্পক উদ্ভিদের শিকড়। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। তাজা, শুকনো, গুঁড়া, আচার তৈরি করে বা চা বানিয়ে ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায় এটি। নিকোটিনিক অ্যাসিড, ভালো দৃষ্টিশক্তির জন্য অপরিহার্য ভিটামিন এ এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন সি-সহ আমাদের শরীরের মৌলিক কার্যাবলির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজগুলোর সমাহার রয়েছে এতে। এ ছাড়া এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও কপারের মতো ট্রেস মিনারেল এবং আঁশ আছে। কিন্তু আদার আসল শক্তি লুকিয়ে আছে এর ৪০০টির বেশি সক্রিয় জৈব যৌগের মধ্যে। এগুলোর মধ্যে আছে ৪০টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসবের মধ্যে জিঞ্জেরল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আদার আসল শক্তি লুকিয়ে আছে এর ৪০০টির বেশি সক্রিয় জৈব যৌগের মধ্যে। ছবি: ফ্রিপিক
আদার আসল শক্তি লুকিয়ে আছে এর ৪০০টির বেশি সক্রিয় জৈব যৌগের মধ্যে। ছবি: ফ্রিপিক

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রশিক্ষক গ্রেস উইলিয়ামস বলেন, ‘যদিও আদায় সামান্য পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে, তবে এর আসল ক্ষমতা এর জৈব সক্রিয় যৌগ, বিশেষত জিঞ্জেরলস এবং শোগাওলস থেকে আসে। এই যৌগগুলো বমি ভাব, হজম, প্রদাহ, ব্যথা উপশম, রক্তসঞ্চালন এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে গবেষণামূলকভাবে প্রমাণিত প্রভাব ফেলে।

আদা যেভাবে বমি ভাব নিরাময় করে

বমি ভাব কমাতে আদার সক্রিয় যৌগ জিঞ্জেরলস এবং শোগাওলস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনস নামক অণুগুলোর উৎপাদনকে বাধা দিয়ে বমি ভাব কমায়। এই প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনস হলো সেই অণু, যা পেশি সংকোচন ও ব্যথা সৃষ্টি করে।

কাঁচা আদা শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো। ছবি: ফ্রিপিক
কাঁচা আদা শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো। ছবি: ফ্রিপিক

আইবিএস ক্লিনিকের ট্রেসি র‍্যান্ডেল জানান, প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনস অন্ত্রের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিরক্ষামূলক শ্লেষ্মা তৈরিতে প্রভাব ফেলে এবং পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন এই রাসায়নিক মেসেঞ্জারগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়, তখন আইবিএসের লক্ষণগুলো; যেমন ক্র্যাম্পিং, ব্যথা ও প্রদাহ দেখা দেয়। আদা এই রাসায়নিক মেসেঞ্জারগুলোর ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম। ফলে এটি হজমের সমস্যা সমাধানে এত কার্যকর। এ ছাড়া জিঞ্জেরলস ও শোগাওলস পাকস্থলীর খালি হওয়ার প্রক্রিয়া এবং হজম দ্রুত করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি বমি উদ্দীপক রিসেপ্টরগুলোকে ব্লক করে। স্বস্তির বিষয় হলো, উপকারিতা পেতে খুব বেশি আদা খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।

ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন ওপেন সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রমাণ করেছে, প্রতিদিন ২ হাজার মিলিগ্রাম আদা সেবন করলে বেশ কিছু হজমের সমস্যা উন্নত হতে পারে। এটি বদহজম কমাতে, অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে, কলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে এবং গ্যাস্ট্রিক-সম্পর্কিত সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের পেটের আলসার থেকে রক্ষায় সাহায্য করতে পারে।

আদা খাওয়ার সেরা উপায় কী

কাঁচা, গুঁড়া, পেস্ট, কুচি কিংবা খাদ্যদ্রব্যে মিশিয়ে, এমন বিভিন্নভাবে আদা খাওয়া যায়। কাঁচা আদা সবচেয়ে ভালো। এতে উদ্বায়ী তেলের পরিমাণ বেশি থাকে। তাজা আদা বমি ভাব ও হজমের সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। বমি ভাব ও বদহজমের তীব্র লক্ষণগুলোর ক্ষেত্রে তাজা আদা দ্রুত কাজ করে। কাঁচা আদায় বেশি পরিমাণে জলীয় উপাদান থাকায় এর উদ্বায়ী যৌগগুলো সুরক্ষিত থাকে। আদা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রশংসিত হলেও এটি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে ঠান্ডা লাগা বা ফ্লুর মৌসুমে আদা উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে। আদার চা পান করলে ডিহাইড্রেশন কমে, গলাব্যথা উপশম হয় এবং বমি ভাব কমে। তবে এটি ঠান্ডা লাগা, ফ্লু, আরএসভি বা কোভিড-১৯ প্রতিরোধ বা নিরাময় করে এমন কোনো মানব ট্রায়াল এখনো পাওয়া যায়নি।

আদা এড়িয়ে চলবেন যাঁরা

সাধারণত আদা সবার জন্য নিরাপদ। তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে উচ্চ মাত্রায় আদা গ্রহণ করলে তা রক্ত ​​পাতলা করার ওষুধ বা রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাঁরা আবেগগত বা স্নায়ুতন্ত্রের উচ্চ চাপে আছেন, তাঁদের পরিমিত আদা খাওয়া উচিত। তাঁদের জন্য উচ্চ ঘনত্বের কাঁচা আদা উদ্বেগ বা হজমের জ্বালা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা ভারসাম্য রক্ষার পরিবর্তে বিপরীত ফল দিতে পারে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশি অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন তো

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
জ্যোতিষশাস্ত্র বলে, রাশিভেদে ত্বকে ব্যবহারের উপাদান ভিন্ন হয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
জ্যোতিষশাস্ত্র বলে, রাশিভেদে ত্বকে ব্যবহারের উপাদান ভিন্ন হয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ত্বকের যত্নে কোন উপাদান বেশি কার্যকর, তা নির্ভর করে ত্বকের ধরনের ওপর। রূপ বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলে আসছেন বহুকাল ধরে। কিন্তু জ্যোতিষশাস্ত্র এ কথায় দ্বিমত পোষণ না করলেও এর সঙ্গে একটি কথা ঠিকই যোগ করেছে, তা হলো, রাশিভেদে ত্বকে ব্যবহারের উপাদান ভিন্ন হয়। পৃথিবী সৃষ্টির মৌলিক পাঁচটি উপাদান অর্থাৎ ক্ষিতি বা মাটি, অপ বা পানি, তেজ বা আগুন, মরুত বা বায়ু এবং ব্যোম বা আকাশ—অর্থাৎ স্থান একেকটি রাশির ওপর একেকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন মেষ, সিংহ ও ধনু রাশির ওপর অগ্নির প্রভাব রয়েছে। তাই জ্যোতিষশাস্ত্র মনে করে, এই রাশির জাতক-জাতিকারা যদি ত্বক ঠান্ডা রাখে এমন ভেষজ ব্যবহার করেন, তাহলে উপকার মিলবে।

অন্যদিকে মাটি প্রভাবিত রাশি হলো বৃষ, কন্যা ও মকর। এরা ত্বকে পুষ্টিকর তেল ব্যবহারে সুফল পায় বলে মনে করা হয়। বায়ু প্রভাবিত রাশি তুলা, মিথুন ও কুম্ভ। এদের উচিত ভালো মানের ক্লিনজিং গুণসমৃদ্ধ ভেষজ উপাদান ব্যবহার করা। কর্কট, মীন ও বৃশ্চিক রাশির ত্বকে পানি খুব প্রয়োজনীয় উপাদান বলে মনে করা হয়। তাদের জন্য হাইড্রেটিং সিরামের মতো উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনে নিন, কোন রাশির জন্য কেমন প্রাকৃতিক উপাদান ত্বকের সুফল বয়ে আনে।

মেষ, সিংহ ও ধনু রাশির সংবেদনশীল ত্বকের মানুষদের ব্যবহারের জন্য গোলাপের পাপড়ির মতো শান্ত, হাইড্রেটিং, প্রদাহবিরোধী উপাদানের প্রয়োজন। ছবি: পেক্সেলস
মেষ, সিংহ ও ধনু রাশির সংবেদনশীল ত্বকের মানুষদের ব্যবহারের জন্য গোলাপের পাপড়ির মতো শান্ত, হাইড্রেটিং, প্রদাহবিরোধী উপাদানের প্রয়োজন। ছবি: পেক্সেলস

জ্যোতিষশাস্ত্রের উপাদান অনুসারে

অগ্নি রাশির মানুষদের সেরা উপাদান

মেষ, সিংহ ও ধনু রাশির মানুষদের ত্বক সংবেদনশীল হয়। কারও কারও ত্বকে লালচে ভাব দেখা দেয়। তাঁদের ত্বকে ব্যবহারের জন্য অ্যালোভেরা জেল, ক্যামোমাইল কিংবা গোলাপের পাপড়ির মতো শান্ত, হাইড্রেটিং, প্রদাহবিরোধী উপাদানের প্রয়োজন। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এবার এই প্যাকটি আপনার গাল, গলা ও ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে নিন। পাঁচ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। তারপর আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এ ছাড়া এই কয়েকটি রাশির জন্য আরও একটি ফেসপ্যাক খুব ভালো কাজ করে। সেটি হলো গোলাপের পাপড়ি শুকিয়ে গুঁড়া করে অ্যালোভেরা জেল, মধু বা দুধ মিশিয়ে তৈরি প্যাক। এই প্যাক মুখে লাগানোর পর হালকা শুকিয়ে এলে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। মেষ, সিংহ ও ধনু রাশির মানুষেরা দৈনন্দিন রূপচর্চায় গোলাপজল রাখতে পারেন।

মাটি প্রভাবিত রাশির মানুষদের সেরা উপাদান

বৃষ, কন্যা ও মকর রাশির মানুষদের ত্বকে শিয়া বাটার, জিংক, ভিটামিন ‘ই’ খুব জরুরি উপাদান। তাঁদের ত্বক নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করার প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া আর্দ্রতা লক করে এমন ময়শ্চারাইজার ও সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। এই ত্বকের যত্ন নিতে ঘরোয়া উপায়ে স্ক্র‍্যাব তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। ত্বকের এক্সফোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে কফি ও চিনি। কফির সূক্ষ্ম দানা ও চিনি একসঙ্গে ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি কফির অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ছোট দাগ দূর করে। সমপরিমাণ কফি, চিনি ও সামান্য মধু মিশিয়ে নিন। চাইলে সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস মেশাতে পারেন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট হালকা করে ম্যাসাজ করুন। এরপর ১৫ মিনিট রেখে দিন। শেষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

বায়ু প্রভাবিত রাশির মানুষদের সেরা উপাদান

মিথুন, তুলা ও কুম্ভ রাশির মানুষদের ত্বকের জন্য পটাশিয়াম, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ও ফেসমিস্ট অত্যন্ত জরুরি। এই রাশির মানুষদের জন্য পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফেসপ্যাক জাদুকরী ভূমিকা রাখে। কলা চটকে মধু বা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে এদের ত্বক উজ্জ্বল ও আর্দ্র থাকে। টোনার হিসেবে সামান্য ফিটকিরি গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের বড় হয়ে যাওয়া রোমকূপ ছোট হয় ও ত্বক টান টান থাকে। তা ছাড়া, ত্বকের অতিরিক্ত লোম দূর করতে আদা ও দুধের মিশ্রণ ত্বকে ব্যবহার করলে বাড়তি লোম দূর হয় এবং ত্বকের পটাশিয়ামের ঘাটতিও পূর্ণ হয়।

বায়ু প্রভাবিত রাশির নারী-পুরুষের সেরা উপাদান

কর্কট, বৃশ্চিক ও মীন রাশির মানুষের ত্বক সংবেদনশীল। তাই সম্ভাব্য শুষ্কতা বা প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ত্বকে পানির ভারসাম্য এবং যত্ন প্রয়োজন। এদের ত্বকের জন্য সামুদ্রিক খনিজ, ম্যাংগানিজ ও কোল্ড প্রেসড তেল বেশি জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই রাশির ত্বকের জন্য মুলতানি মাটি খুব ভালো উপাদান হিসেবে বিবেচিত। মুলতানি মাটি ও গোলাপজল দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মেখে রাখুন শুকানো পর্যন্ত। এরপর হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। গোলাপজলের পরিবর্তে মধুও ব্যবহার করতে পারেন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে যা বলল ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

দুই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস-আমান-গয়েশ্বরসহ ৪৫ জনকে অব্যাহতি

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, হেলমেট ও ভুয়া নম্বরপ্লেট উদ্ধার

আমরা চুপ থাকব না, উচিত শিক্ষা দেব—সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাতের হুমকির জবাবে হিমন্ত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত