Ajker Patrika

ধর্মীয় শিক্ষা: শিশুর হৃদয়ে বোনা নৈতিকতার বীজ

কাউসার লাবীব
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ধর্মীয় শিক্ষা: শিশুর হৃদয়ে বোনা নৈতিকতার বীজ

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাদের বেড়ে ওঠার পদ্ধতিই নির্ধারণ করে দেয় আগামীর দিনে জাতি কতটা সুন্দর ও সমৃদ্ধ হবে। যদি তাদের আদর্শ ও নৈতিক গুণাবলিতে গড়ে তোলা যায়, তাহলে তারাই একদিন জাতিকে সঠিক পথ দেখাবে। আর তাদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ধর্মীয় শিক্ষা। এ শিক্ষা শিশুর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তি স্থাপন করে।

ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

ধর্ম মানুষের সঙ্গে তার সৃষ্টিকর্তার পরিচয় করিয়ে দেয়। আমাদের জীবন চলার পথে দিকনির্দেশনা দেয়। ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য চিনিয়ে দেয়। ধর্মীয় শিক্ষা একটি শিশুকে সময়ের পরিবর্তনে নীতিবান মানুষে পরিণত করে। এ কারণেই ইসলামে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার প্রতি বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.) এই বিষয়ে বলেছেন, ‘তোমরা সন্তানদের (শিশুদের) স্নেহ করো, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো এবং তাদের সদাচরণ ও শিষ্টাচার শেখাও।’ (জামে তিরমিজি) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘বাবার পক্ষ থেকে সন্তানের প্রতি সর্বোত্তম উপহার হলো উত্তম শিক্ষা।’ (জামে তিরমিজি)

ইসলামে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব এত বেশি যে এটি মা-বাবার ওপর সন্তানের অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর কিতাব (কোরআন) শেখানো মা-বাবার ওপর সন্তানের অধিকার।’ এই শিক্ষা শুধু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এতে ইমান, আকিদা, আদব-আখলাক, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত এবং দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় দোয়া ও মাসায়েল শেখানো অন্তর্ভুক্ত। এই শিক্ষা সন্তানকে ভবিষ্যৎ জীবনে একজন সৎ, সত্যবাদী এবং দেশ ও জাতির কল্যাণকামী নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।

দ্বীনি শিক্ষা: আত্মার খোরাক

সন্তানকে নৈতিকভাবে গড়ে তোলার জন্য দ্বীনি ইলম বা ধর্মীয় জ্ঞান অপরিহার্য। এটি কেবল পাঠ্য শিক্ষা নয়, বরং এটি জীবনদর্শনের আলো। জ্ঞান ছাড়া আল্লাহ ও রাসুলের সঠিক পরিচয় জানা সম্ভব নয়। এটি মানুষকে পার্থিব লোভ-লালসা থেকে মুক্ত করে এবং পরকালের জীবনের প্রতি সচেতন করে তোলে। পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভুর নামে...’ (সুরা আলাক: ১)। এটি জ্ঞান অর্জনের প্রতি ইসলামের গুরুত্ব প্রমাণ করে।

সন্তানের ধর্মীয় শিক্ষায় বাবার দায়িত্ব

সন্তানের সুষ্ঠু লালন-পালন ও ভরণপোষণের দায়িত্ব বাবার ওপর বর্তায়। তবে এই দায়িত্ব কেবল আর্থিক সহায়তায় সীমাবদ্ধ নয়। সন্তানের মানসিক বিকাশ, শিক্ষাদীক্ষা ও নীতি-নৈতিকতার যত্ন নেওয়াও বাবার প্রধান দায়িত্ব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা লুকমান (আ.), নুহ (আ.), ইবরাহিম (আ.) এবং ইয়াকুব (আ.)-এর মতো মহান নবীদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন—যাঁরা তাঁদের সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিকতার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন।

হজরত লুকমান (আ.) তাঁর সন্তানকে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন, তা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। তিনি প্রথমেই আল্লাহর সঙ্গে শিরক না করতে বলেছেন, যা ইসলামের মৌলিক ভিত্তি। এরপর তিনি পরকালের জবাবদিহির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এবং সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি আরও শিখিয়েছেন, বিপদাপদে ধৈর্য ধরতে এবং অহংকার পরিহার করে বিনয়ী হতে।

হজরত নুহ (আ.) তাঁর অবিশ্বাসী সন্তানকেও শেষ মুহূর্তে আল্লাহর পথে আসার আহ্বান করেছেন। আবার হজরত ইবরাহিম (আ.) নিজের ও সন্তানদের জন্য আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া করেছেন। হজরত ইয়াকুব (আ.) মৃত্যুর আগেও তাঁর সন্তানদের ইমানের ওপর অবিচল থাকার ওয়াদা করিয়েছিলেন। এই ঘটনাগুলো আমাদের শেখায় যে একজন বাবার প্রধান দায়িত্ব হলো সন্তানকে আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলা।

শিক্ষকের ভূমিকায় মা

সন্তানের নৈতিক ও ধর্মীয় চরিত্র গঠনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মা। বলা হয়ে থাকে, মায়ের কোলই সন্তানের প্রথম শিক্ষালয়। একজন দ্বীনদার, পরহেজগার ও দায়িত্বশীল মায়ের তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা সন্তান খুব দ্রুত সচ্চরিত্রবান, ন্যায়পরায়ণ ও জ্ঞানপিপাসু হিসেবে গড়ে ওঠে। ইতিহাসে বহু মহান ব্যক্তির সফলতার পেছনে তাঁদের মায়ের বিস্ময়কর ভূমিকা ছিল।

দায়িত্বে অবহেলা নয়

সন্তানকে ধর্মীয় জ্ঞান দেওয়া যেহেতু মা-বাবার প্রধান দায়িত্ব, তাই এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাঁদের পরকালে জবাবদিহি করতে হবে। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, অধীনদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে।’ (সহিহ বুখারি)। পবিত্র কোরআনেও বলা হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা তাহরিম: ৬)

সন্তানের নৈতিক ভিত্তি গঠনে মা-বাবার ভূমিকা অপরিসীম। শৈশবে পাওয়া শিক্ষা পাথরে খোদাই করা অক্ষরের মতো স্থায়ী হয়। তাই সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে মা-বাবার উচিত তাদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় যত্নবান হওয়া। এতে একদিকে যেমন সন্তানের ইহকাল ও পরকালের জীবন সুন্দর হবে, তেমনি একটি শক্তিশালী ও আদর্শ সমাজও গড়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৯ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০২ মিনিট০৩: ৪৫ মিনিট
আসর০৩: ৪৬ মিনিট০৫: ২১ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৩ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় এক মাসে প্রায় ৭ কোটি মুসল্লির সমাগম

ইসলাম ডেস্ক 
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।

কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের সতর্কবার্তা

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।

পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।

পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত