মাওলানা ইসমাইল নাজিম

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)
মাওলানা ইসমাইল নাজিম

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ করেছেন। ইসলামের পরিভাষায় এসব শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াত বলা হয়। এখানে নবীজীবনের তাৎপর্যপূর্ণ তিন বাইয়াত অনুষ্ঠানের কথা তুলে ধরা হলো।
আকাবার প্রথম শপথ
নবুয়তের একাদশ বছরে ইসলামের দাওয়াত মক্কার চৌহদ্দি পেরিয়ে মদিনায়ও পৌঁছে যায়। সে বছর মদিনা থেকে আসা ৬ জন হজযাত্রী ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরা মহানবী (সা.)-কে কথা দেন, ইয়াসরিবে ফিরে তাঁরা মানুষকে ইসলামের পথে ডাকবেন। পরের বছর হজের মৌসুমে গত বছরের ৬ জনসহ মোট ১২ জন ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন এবং মিনার ময়দানের আকাবা নামের এক সুড়ঙ্গে তাঁর সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর হাতে একটি আনুষ্ঠানিক বাইয়াত তথা শপথ গ্রহণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে একে বাইয়াতুল আকাবা আলা-উলা বা আকাবার প্রথম শপথ বলা হয়।
এই শপথ অনুষ্ঠানে মহানবী (সা.) মদিনার ১২ জন সাহাবির কাছে বেশ কিছু বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। হাদিসে সেই শপথের বাক্যগুলো এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে—‘এসো, আমার কাছে অঙ্গীকার করো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, সন্তানকে হত্যা করবে না, মনগড়া অপবাদ আরোপ করবে না এবং কোনো ভালো কথায় আমাকে অমান্য করবে না। যারা এসব কথা মানবে এবং পূর্ণ করবে, আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের পুরস্কার রয়েছে। যারা এসব কাজে লিপ্ত হবে এবং তার শাস্তি প্রদান করা হয়, তবে সেটা তার মুক্তিলাভের কারণ হবে। আর যদি কেউ এসবে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা গোপন রেখে দেন, তবে তার ব্যাপারটি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে—তিনি শাস্তি দেবেন বা ক্ষমা করবেন।’ (বুখারি)
আকাবার দ্বিতীয় শপথ
আকাবার প্রথম শপথের ফলাফল পরের বছর তথা নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে প্রতিভাত হয়। সেই ১২ জন মুসলমান এবার ৭৫ জনের কাফেলা নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। তখনো মক্কায় ইসলাম প্রচারে বাধাবিপত্তি ছিল। তাই তাঁরা পৌত্তলিক হজযাত্রীদের সঙ্গেই ছিলেন এবং গোপনে নবীজির সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। আগের মতো এবারও তাঁরা আকাবার সুড়ঙ্গে একত্র হতে সম্মত হলেন। রাতের গভীরে অন্যান্য হাজির অজ্ঞাতে সুড়ঙ্গে উপস্থিত হন। নবীজি সেখানে তাশরিফ আনলেন।
এই অনুষ্ঠানে নবীজি তাঁদের কাছ থেকে যে অঙ্গীকার নেন, তা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, জাবির (রা.) বলেন, আমরা আরজ করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমরা আপনার কাছে কোন বিষয়ে শপথ গ্রহণ করব?’ তিনি বললেন, ‘সুখে-দুঃখে সব সময় আনুগত্য করবে, অভাব ও সচ্ছলতায় একইভাবে ব্যয় করবে, ভালো কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলবে, আল্লাহর পথে অটল থাকবে এবং এ ব্যাপারে কারও ভর্ৎসনার পরোয়া করবে না, যখন আমি তোমাদের কাছে হিজরত করব, তখন আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে নিজেদের জানমাল ও সন্তানদের হেফাজত করছ, সেভাবেই আমার হেফাজত করবে। এসব করলে তোমাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’ (ইবনে হিশাম)
মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।
সুরা ফাতহ: ১৮
এই শপথ অনুষ্ঠানকে বাইয়াতুল আকাবা আস-সানিয়া বা আকাবার দ্বিতীয় শপথ বলা হয়। এতে দীর্ঘ আলোচনা এবং নানা নাটকীয়তার অবতারণা হয়েছিল। সবশেষে উপস্থিত আনসার সাহাবি মহানবীর প্রতি কৃত অঙ্গীকার রক্ষার শপথ করেন। এই অনুষ্ঠানে দুজন নারীও উপস্থিত ছিলেন। পুরুষদের সবাই নবীজির হাতে হাত রেখে বাইয়াত গ্রহণ করেন। আর উপস্থিত দুই নারীকে (হাত স্পর্শ না করে) মৌখিকভাবে শপথ পড়ানো হয়। (মুসলিম) শপথ অনুষ্ঠান শেষ হলে নবীজি ১২ জন ব্যক্তিকে তাঁদের নেতা নির্বাচন করেন, যাঁরা মদিনায় গিয়ে ইসলামের কাজে নিজ নিজ সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেবেন। নেতা নির্বাচনের পর তাঁদের কাছ থেকে আবার বিশেষভাবে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়।
বাইয়াতুর রিজওয়ান
ষষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে বাইয়াতুর রিজওয়ান সংগঠিত হয়েছিল। মহানবী (সা.) স্বপ্নের মাধ্যমে ওমরাহ করার ব্যাপারে আদিষ্ট হলে ১ হাজার ৪০০ সাহাবির একটি দল নিয়ে মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। মক্কার অদূরে হুদাইবিয়া এলাকায় গিয়ে যাত্রাবিরতি করেন এবং মক্কার নেতৃত্বে থাকা কুরাইশ সরদারদের কাছে এ ব্যাপারে খবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। কারণ তখনো মুসলমানদের সঙ্গে মক্কার কাফিরদের যুদ্ধাবস্থা ছিল।
নবী (সা.) হজরত ওসমান (রা.)-কে দূত বানিয়ে মক্কায় পাঠান এবং নির্দেশনা দেন, ‘তুমি গিয়ে তাদের বলে দাও—আমরা যুদ্ধ করার জন্য আসিনি; ওমরাহ পালন করার জন্য এসেছি। তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াতও পেশ করো।’ ওসমান (রা.) নবীজির বার্তা নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের পৌঁছে দিলেন। কুরাইশ নেতারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ওসমানকে দীর্ঘসময় মক্কায় আটকে রাখল। এতে হুদাইবিয়ায় অবস্থানরত মুসলমানদের মধ্যে হজরত ওসমান (রা.)-কে শহীদ করে দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা রাসুল (সা.)-এর কানে পৌঁছালে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে যতক্ষণ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ আমরা এ স্থান ত্যাগ করব না।’
এরপর সব সাহাবিকে ডেকে শপথাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলেন যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করবেন না এবং নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করে যুদ্ধে অবিচল থাকবেন। শপথের পর দেখা গেল, ওসমান (রা.) সুস্থভাবে ফিরে এলেন। ফলে আর যুদ্ধের পথে যেতে হলো না।
এই শপথ অনুষ্ঠান হয়েছিল হুদায়বিয়ার একটি গাছের নিচে। সাহাবিদের এভাবে জানের বিনিময়ে শপথ করার ব্যাপারটি মহান আল্লাহর ভীষণ পছন্দ হয়েছিল। তিনি পবিত্র কোরআনে আয়াত নাজিল করলেন এবং বাইয়াতুর রিজওয়ানে অংশ নেওয়া সবার প্রতি তাঁর সন্তুষ্টির ঘোষণা দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করল।’ (সুরা ফাতহ: ১৮)

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত...
১৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
১৬ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ (এনটিকিউবি) পরিচালিত তৃতীয় শ্রেণির ১৯তম সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের পরিচালক মাওলানা কালিমুল্লাহ জামিল হুসাইন।
দেশের মোট ১ হাজার ১২টি কেন্দ্রে গত ২৯ নভেম্বর দেশব্যাপী একযোগে এই সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়ে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। এতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার ৫৩২ এবং পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা কালিমুল্লাহ জামিল হুসাইন বলেন, ‘দেশব্যাপী তরুণ আলেমদের কাছে অনুরোধ করছি, একটি নীরব সাধনায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তা হচ্ছে প্রতিটি গ্রামে-পাড়া-মহল্লায় নূরানি মাদ্রাসা, নূরানি স্কুল, নূরানি মক্তব ও ইসলামিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের প্রতিটি সন্তানের কাছে দ্বীন শেখাকে সহজ থেকে সহজতর করতে হবে।’
পরীক্ষা বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব ইসমাইল বেলায়েত হুসাইন বলেন, ‘শিশুরা কাঁচা মাটির মতো। তাদের যেভাবে গড়ে তুলবেন, তারা সেভাবেই গড়ে উঠবে। আমরা দ্বীন ধর্ম ও মাতৃভূমির ভালোবাসায় সন্তানদের গড়ে তুলি। সুনাগরিক ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তুলতে কাজ করে নূরানী বোর্ড।’
এদিকে অনুষ্ঠানে তরুণদের জন্য ‘শায়খুল কোরআন আল্লামা কারি বেলায়েত হুসাইন (রহ.) স্কলারশিপ’-এরও ঘোষণা দেওয়া হয়। ১০ লাখ টাকা সমমূল্যের এই স্কলারশিপ পাবেন ১০০ তরুণ। মনোনীত ১০০ তরুণ ১০ হাজার টাকা সমমূল্যের নূরানি মুয়াল্লিম প্রশিক্ষণ কোর্সটি বিনা মূল্যে করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবু বকর, মাওলানা তারেক হুসাইনসহ নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ডের কর্মকর্তা ও দায়িত্বশীলেরা।
প্রসঙ্গত, শায়খুল কোরআন আল্লামা কারি বেলায়েত হুসাইন (রহ.) প্রতিষ্ঠিত এই বোর্ডটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলেও শিশু শিক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে এই ধারার হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ (এনটিকিউবি) পরিচালিত তৃতীয় শ্রেণির ১৯তম সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের পরিচালক মাওলানা কালিমুল্লাহ জামিল হুসাইন।
দেশের মোট ১ হাজার ১২টি কেন্দ্রে গত ২৯ নভেম্বর দেশব্যাপী একযোগে এই সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়ে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। এতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজার ৫৩২ এবং পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা কালিমুল্লাহ জামিল হুসাইন বলেন, ‘দেশব্যাপী তরুণ আলেমদের কাছে অনুরোধ করছি, একটি নীরব সাধনায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তা হচ্ছে প্রতিটি গ্রামে-পাড়া-মহল্লায় নূরানি মাদ্রাসা, নূরানি স্কুল, নূরানি মক্তব ও ইসলামিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের প্রতিটি সন্তানের কাছে দ্বীন শেখাকে সহজ থেকে সহজতর করতে হবে।’
পরীক্ষা বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব ইসমাইল বেলায়েত হুসাইন বলেন, ‘শিশুরা কাঁচা মাটির মতো। তাদের যেভাবে গড়ে তুলবেন, তারা সেভাবেই গড়ে উঠবে। আমরা দ্বীন ধর্ম ও মাতৃভূমির ভালোবাসায় সন্তানদের গড়ে তুলি। সুনাগরিক ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তুলতে কাজ করে নূরানী বোর্ড।’
এদিকে অনুষ্ঠানে তরুণদের জন্য ‘শায়খুল কোরআন আল্লামা কারি বেলায়েত হুসাইন (রহ.) স্কলারশিপ’-এরও ঘোষণা দেওয়া হয়। ১০ লাখ টাকা সমমূল্যের এই স্কলারশিপ পাবেন ১০০ তরুণ। মনোনীত ১০০ তরুণ ১০ হাজার টাকা সমমূল্যের নূরানি মুয়াল্লিম প্রশিক্ষণ কোর্সটি বিনা মূল্যে করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবু বকর, মাওলানা তারেক হুসাইনসহ নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ডের কর্মকর্তা ও দায়িত্বশীলেরা।
প্রসঙ্গত, শায়খুল কোরআন আল্লামা কারি বেলায়েত হুসাইন (রহ.) প্রতিষ্ঠিত এই বোর্ডটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরাঞ্চলেও শিশু শিক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে এই ধারার হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিক
১৯ জানুয়ারি ২০২৪
একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত...
১৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
১৬ ঘণ্টা আগেকাউসার লাবীব

একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ওসমান হাদি ছিলেন সবার ছোট। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য আলেম বা দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত, যা ওসমান হাদির চিন্তা ও চরিত্রে এনেছিল দৃঢ় নৈতিক ভিত্তি।
তাঁর বড় ভাই মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক বরিশালের ঐতিহ্যবাহী শরফুদ্দীন আহমেদ সেন্টু জামে মসজিদের খতিব; মেজো ভাই মাওলানা ওমর ফারুক একজন ব্যবসায়ী। তাঁর তিন ভগ্নিপতিও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও ইমামতির সঙ্গে যুক্ত, যাঁরা স্থানীয় পর্যায়ে অত্যন্ত সম্মানিত।
ওসমান হাদির শিক্ষাজীবনের শুরু ঝালকাঠির বিখ্যাত এন এস কামিল মাদ্রাসায়। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী এবং অসাধারণ বক্তা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার স্পৃহা তাঁর মধ্যে কাজ করত শৈশব থেকেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে তাঁর প্রিয় মাদ্রাসার স্মৃতিচারণা করেছিলেন।
ওসমান হাদি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমাকে এটা যদি কেউ জিজ্ঞেস করে—আল্লাহ যদি আমাকে আবারও দুনিয়ায় পাঠায়, আমি কয়টা জিনিস চাইব। আমি প্রথমেই বলব—ইন্টার পর্যন্ত যে মাদ্রাসাটায় পড়েছি, সেই মাদ্রাসায় আবার আমি পড়তে চাইব। বাংলাদেশে এটা কেউ চিন্তাও করতে পারবে না যে মাদ্রাসায় রবীন্দ্রনাথের নাটক মঞ্চস্থ হয়। আমি যখন চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি; তখন ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে অনেকবার বিতর্ক, আবৃত্তি, বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে এসেছি এবং স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা মিলিয়ে আমি অনেকবার ফার্স্ট হয়েছি।’
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা শুধু আমি না, ওই প্রতিষ্ঠানের আমার অনেক ছোট ভাই, বন্ধু জাতীয় পর্যায়ের এমন প্রচুর পুরস্কার পেত। আমাদের এমনভাবে কালচারাল নার্সিং হতো—রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, জারি, ভাটিয়ালি আমরা গাইতাম। যেহেতু মাদ্রাসা, তাই একমাত্র নৃত্যটা হতো না।’
মাদ্রাসার গণ্ডি পেরিয়ে ওসমান হাদি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে (২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ)। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেও তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন। জীবনসংগ্রামে টিকে থাকতে তিনি প্রাইভেট পড়িয়েছেন, সাইফুর’সসহ বিভিন্ন নামী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা তাঁকে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তাঁর সাহসী ভূমিকা এবং পরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে টক শো ও সভা-সমাবেশে তাঁর যুক্তিপূর্ণ ও ঝাঁজালো বক্তব্য তাঁকে অনেক তরুণের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও মৃত্যুর কাছে হার মানেন তিনি। ১৮ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১০টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাত্র এক মাস আগে নভেম্বর মাসে ওসমান হাদি নিজের জীবনের ঝুঁকির কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। দেশি-বিদেশি অসংখ্য নম্বর থেকে আসা প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছিলেন—‘জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে আমি পিছিয়ে যাব না।’

একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ওসমান হাদি ছিলেন সবার ছোট। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য আলেম বা দ্বীনি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত, যা ওসমান হাদির চিন্তা ও চরিত্রে এনেছিল দৃঢ় নৈতিক ভিত্তি।
তাঁর বড় ভাই মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক বরিশালের ঐতিহ্যবাহী শরফুদ্দীন আহমেদ সেন্টু জামে মসজিদের খতিব; মেজো ভাই মাওলানা ওমর ফারুক একজন ব্যবসায়ী। তাঁর তিন ভগ্নিপতিও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও ইমামতির সঙ্গে যুক্ত, যাঁরা স্থানীয় পর্যায়ে অত্যন্ত সম্মানিত।
ওসমান হাদির শিক্ষাজীবনের শুরু ঝালকাঠির বিখ্যাত এন এস কামিল মাদ্রাসায়। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন তুখোড় মেধাবী এবং অসাধারণ বক্তা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার স্পৃহা তাঁর মধ্যে কাজ করত শৈশব থেকেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে তাঁর প্রিয় মাদ্রাসার স্মৃতিচারণা করেছিলেন।
ওসমান হাদি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমাকে এটা যদি কেউ জিজ্ঞেস করে—আল্লাহ যদি আমাকে আবারও দুনিয়ায় পাঠায়, আমি কয়টা জিনিস চাইব। আমি প্রথমেই বলব—ইন্টার পর্যন্ত যে মাদ্রাসাটায় পড়েছি, সেই মাদ্রাসায় আবার আমি পড়তে চাইব। বাংলাদেশে এটা কেউ চিন্তাও করতে পারবে না যে মাদ্রাসায় রবীন্দ্রনাথের নাটক মঞ্চস্থ হয়। আমি যখন চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি; তখন ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে অনেকবার বিতর্ক, আবৃত্তি, বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে এসেছি এবং স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা মিলিয়ে আমি অনেকবার ফার্স্ট হয়েছি।’
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা শুধু আমি না, ওই প্রতিষ্ঠানের আমার অনেক ছোট ভাই, বন্ধু জাতীয় পর্যায়ের এমন প্রচুর পুরস্কার পেত। আমাদের এমনভাবে কালচারাল নার্সিং হতো—রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, জারি, ভাটিয়ালি আমরা গাইতাম। যেহেতু মাদ্রাসা, তাই একমাত্র নৃত্যটা হতো না।’
মাদ্রাসার গণ্ডি পেরিয়ে ওসমান হাদি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে (২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ)। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনেও তিনি মেধার স্বাক্ষর রাখেন। জীবনসংগ্রামে টিকে থাকতে তিনি প্রাইভেট পড়িয়েছেন, সাইফুর’সসহ বিভিন্ন নামী প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা তাঁকে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তাঁর সাহসী ভূমিকা এবং পরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে টক শো ও সভা-সমাবেশে তাঁর যুক্তিপূর্ণ ও ঝাঁজালো বক্তব্য তাঁকে অনেক তরুণের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও মৃত্যুর কাছে হার মানেন তিনি। ১৮ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১০টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার মাত্র এক মাস আগে নভেম্বর মাসে ওসমান হাদি নিজের জীবনের ঝুঁকির কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। দেশি-বিদেশি অসংখ্য নম্বর থেকে আসা প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছিলেন—‘জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ইনসাফের লড়াই থেকে আমি পিছিয়ে যাব না।’

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিক
১৯ জানুয়ারি ২০২৪
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত...
১৪ ঘণ্টা আগে
মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
১৬ ঘণ্টা আগেআবরার নাঈম

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিক
১৯ জানুয়ারি ২০২৪
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক।
৯ ঘণ্টা আগে
মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
১৬ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাদের পূর্ণমাত্রায় বিনিময় দেওয়া হবে। অতঃপর যাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করা হলো এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হলো। কেননা, পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
মৃত্যুর বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যে সবচেয়ে সার্থক ও উত্তম মৃত্যু হলো শহীদি মৃত্যু। তাই প্রত্যেক মুমিনের একান্ত তামান্না থাকে শহীদ হওয়ার। শহীদদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদের তুমি মৃত মনে করো না; বরং তারা তাদের রবের নিকট জীবিত এবং তাদের রিজিক দেওয়া হয়।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬৯)
হজরত আবদুল্লাহ (রা.) এই আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলে নবীজি বলেন, ‘শহীদদের রুহসমূহ সবুজ পাখির উদরে রক্ষিত থাকে, যা আরশের সঙ্গে ঝুলন্ত দীপাধারে বাস করে। জান্নাতের সর্বত্র তারা যেখানে চায় বিচরণ করে এবং পুনরায় সেই দীপাধারগুলোতে ফিরে আসে। একবার তাদের প্রতিপালক তাদের দিকে পরিপূর্ণভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘তোমাদের কি কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে?’’ তারা বিনয়ের সঙ্গে জানাল, ‘‘আমাদের আর কী আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে! আমরা তো জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াচ্ছি।’’ আল্লাহ তাআলা তিনবার এই প্রশ্ন করার পর তারা বুঝতে পারল, আকাঙ্ক্ষার কথা না বললে তারা রেহাই পাচ্ছে না; তখন তারা বলল, ‘‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হয়, যদি আপনি আমাদের রুহগুলোকে আমাদের দেহে ফিরিয়ে দিতেন, তবে আমরা পুনরায় আপনার পথে গিয়ে নিহত (শহীদ) হতে পারতাম।’ আল্লাহ যখন দেখলেন, তাদের আর কোনো অপূর্ণতা নেই, তখন তাদের সেই অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হলো।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৭৭৯)
মৃত্যু আসবেই, তবে সেই মৃত্যু যদি হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং ইমানের ওপর অবিচল থেকে, তবেই তা হবে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।

মৃত্যু এক অনিবার্য ও চিরন্তন সত্য। এই ধরণির ক্ষণস্থায়ী সফর শেষ করে প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর অমীয় স্বাদ গ্রহণ করতে হয় এবং প্রবেশ করতে হয় অনন্তকালের আবাসে। এই চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই, তবে ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যুপরবর্তী জীবনই হলো প্রকৃত জীবনের সূচনা।
পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং কিয়ামতের দিন তাদের পূর্ণমাত্রায় বিনিময় দেওয়া হবে। অতঃপর যাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করা হলো এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হলো। কেননা, পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
মৃত্যুর বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যে সবচেয়ে সার্থক ও উত্তম মৃত্যু হলো শহীদি মৃত্যু। তাই প্রত্যেক মুমিনের একান্ত তামান্না থাকে শহীদ হওয়ার। শহীদদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদের তুমি মৃত মনে করো না; বরং তারা তাদের রবের নিকট জীবিত এবং তাদের রিজিক দেওয়া হয়।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৬৯)
হজরত আবদুল্লাহ (রা.) এই আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলে নবীজি বলেন, ‘শহীদদের রুহসমূহ সবুজ পাখির উদরে রক্ষিত থাকে, যা আরশের সঙ্গে ঝুলন্ত দীপাধারে বাস করে। জান্নাতের সর্বত্র তারা যেখানে চায় বিচরণ করে এবং পুনরায় সেই দীপাধারগুলোতে ফিরে আসে। একবার তাদের প্রতিপালক তাদের দিকে পরিপূর্ণভাবে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘তোমাদের কি কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে?’’ তারা বিনয়ের সঙ্গে জানাল, ‘‘আমাদের আর কী আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে! আমরা তো জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াচ্ছি।’’ আল্লাহ তাআলা তিনবার এই প্রশ্ন করার পর তারা বুঝতে পারল, আকাঙ্ক্ষার কথা না বললে তারা রেহাই পাচ্ছে না; তখন তারা বলল, ‘‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হয়, যদি আপনি আমাদের রুহগুলোকে আমাদের দেহে ফিরিয়ে দিতেন, তবে আমরা পুনরায় আপনার পথে গিয়ে নিহত (শহীদ) হতে পারতাম।’ আল্লাহ যখন দেখলেন, তাদের আর কোনো অপূর্ণতা নেই, তখন তাদের সেই অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হলো।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৭৭৯)
মৃত্যু আসবেই, তবে সেই মৃত্যু যদি হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং ইমানের ওপর অবিচল থেকে, তবেই তা হবে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।

নেতা নির্বাচনের পর শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার এবং দেশের প্রতি জবাবদিহির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। ইসলামে এমন শপথ ও অঙ্গীকার গ্রহণের গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে এমন তিনটি বড় ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি সাহাবিদের বিশেষ দলকে বিশেষ উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিক
১৯ জানুয়ারি ২০২৪
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বোর্ডের মোহাম্মদপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শায়খুল কোরআন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগে
একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারের সন্তান থেকে শুরু করে রাজপথের আপসহীন বক্তা—শরিফ ওসমান হাদির শিকড় প্রোথিত ছিল ধর্মীয় শিক্ষার গভীরে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা প্রয়াত মাওলানা আব্দুল হাদি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ মাদ্রাসাশিক্ষক।
৯ ঘণ্টা আগে
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত...
১৪ ঘণ্টা আগে