Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট’ মাস্ক গভীরভাবে অসুস্থ , দাবি জীবনীকারের

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৬
স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ইলন মাস্ক। ছবি: এএফপি
স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ইলন মাস্ক। ছবি: এএফপি

টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বলে আখ্যা দিয়েছেন তাঁর জীবনীকার সেথ অ্যাব্রামসন। পাশাপাশি তিনি গুরুতর অসুস্থ বলে দাবি করেছেন সেথ। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মাস্কের প্রভাব ও কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্সে’ শেয়ার করা একাধিক পোস্টে অ্যাব্রামসন অভিযোগ করেছেন যে, মাস্ক ‘পাগল হয়ে যাচ্ছেন’।

অ্যাব্রামসন দাবি করেছেন, তিনি গত দুই বছর ধরে মাস্কের আচরণ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। উল্লেখ করেছেন, মাস্ক তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য, মাদক ব্যবহার এবং চাপের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি মাস্কের জীবনীকার, আমি গত দুই বছর ধরে তাঁর অনলাইন আচরণ ট্র্যাক করছি। যেহেতু তিনি মানসিক অসুস্থতা, অতিরিক্ত মাদক সেবন এবং বিধ্বংসী চাপের কথা স্বীকার করেছেন—তাই এটি ভাবাই যুক্তিযুক্ত যে, তিনি গভীরভাবে অসুস্থ। আমেরিকাকে ইলন মাস্কের হাত থেকে রক্ষা করুন।’

সেথ অ্যাব্রামসন উল্লেখ করেছেন, মাস্ক অ্যারোস্পেস বা মহাকাশ গবেষণা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। পাশাপাশি তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন। অ্যাব্রামসন যুক্তি দিয়েছেন, ‘সভ্যতার জন্য অপরিহার্য শিল্পসমূহে মাস্কের নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারে তাঁর অবস্থান জাতীয় স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।’

অ্যাব্রামসন লিখেছেন, ‘তাঁর (মাস্কের) মালিকানাধীন গুরুত্বপূর্ণ শিল্পসমূহ এবং তিনি আসন্ন প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তার পাগলামি ও সহিংসতার উসকানি আমাদের সবার জন্য বিপজ্জনক।’ অ্যাব্রামসন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনকে মাস্কের সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিল এবং সরকারি দায়িত্বে অসাংবিধানিক উপায়ে মাস্ককে নিয়োগের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর মাত্র ১৪ দিন বর্তমান প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিতে পারবে। আমেরিকাকে ইলন মাস্কের হাত থেকে রক্ষা করুন।’

অ্যাব্রামসনের সতর্কতা এক্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ তাঁর উদ্বেগের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং মাস্কের অস্থির আচরণকে সমালোচনা করেছেন। আবার কেউ কেউ মাস্কের দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে কথা বলেছেন। এক ব্যবহারকারী মাস্ককে ‘চিন্তাশীল, মাদকাসক্ত খলনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্য একজন ধারণা করেছেন যে, মাস্ক নিজেকে পশ্চিমা সংস্কৃতির রক্ষক হিসেবে দেখছেন।

মাস্কের মানসিক স্বাস্থ্য এর আগেও জল্পনার বিষয় ছিল। গত বছর সান ফ্রান্সিসকোতে ডেভ চ্যাপেলের এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে তিরস্কারের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময় তিনি ৪৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে টুইটার অধিগ্রহণ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নয়া নিরাপত্তা কৌশল: চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাদ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে জোর যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পশ্চিম গোলার্ধ তথা পুরো আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রাধান্য’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে, চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে তাইওয়ানকে রক্ষা এবং ভারত–প্রশান্ত মহাসাগর এলাকার সুরক্ষায় ভারতকে প্রধান্য দেওয়ার বিষয়টিও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার প্রকাশিত এই ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি বা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল নথিতে চীনে সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার এবং তাইওয়ান দখল করা থেকে চীনকে বিরত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ২০২২ সালে প্রকাশিত এর পূর্ববর্তী নথির মতো নতুন নথিতে চীনের ওপর নজর দেওয়া হয়নি কিংবা বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।

তার বদলে, মার্কিন প্রশাসন হস্তক্ষেপবিরোধী নীতির ওপর জোর দিয়েছে। এটি বহুপাক্ষিকতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি ট্রাম্পের অনীহার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর মৌলিক রাজনৈতিক একক হলো জাতি-রাষ্ট্র এবং এটি ভবিষ্যতেও জাতি-রাষ্ট্রই থাকবে।’

এর আগের দুটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে—যার মধ্যে ট্রাম্পের প্রথম আমলে প্রকাশিত একটিও ছিল—চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতাকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। কিন্তু এই নতুন কৌশলে বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সামনে ও কেন্দ্রে রাখা হয়নি।

তবুও, এই নথিতে এশিয়াতে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতা এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে, এটি বেইজিংয়ের মোকাবিলায় ভারসাম্য তৈরির জন্য এশীয় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে, যেখানে ভারতকে আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক মহাসাগরীয় সুরক্ষায় নয়াদিল্লিকে অবদান রাখতে উৎসাহিত করতে হলে আমাদের অবশ্যই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক (ও অন্যান্য) সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।’

নথিতে তাইওয়ানকে চীনের বলপূর্বক দখল করে নেওয়ার ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই স্ব-শাসিত দ্বীপটি—যা বেইজিং নিজের বলে দাবি করে—কম্পিউটার চিপের অন্যতম প্রধান উৎপাদক। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাইওয়ান দখল করলে চীন এশিয়া প্যাসিফিকের দ্বিতীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশাধিকার পাবে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে এর অবস্থান জোরদার করবে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।

নথিতে বলা হয়েছে, ‘অতএব তাইওয়ান নিয়ে একটি সংঘাত ঠেকানো, আদর্শগতভাবে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার মাধ্যমে, একটি অগ্রাধিকার।’ এই কৌশল সংঘাত এড়াতে এই অঞ্চলের মার্কিন অংশীদারদের তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এমন একটি সামরিক বাহিনী তৈরি করব যা প্রথম দ্বীপপুঞ্জের যেকোনো জায়গায় আগ্রাসন ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম কিন্তু আমেরিকান সামরিক বাহিনী একা এটি করতে পারে না, আর করা উচিতও নয়। আমাদের মিত্রদের সম্মিলিত সুরক্ষার জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে—এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, আরও অনেক বেশি কাজ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসরায়েলকে সরতে বলল কাতার-মিসর-তুরস্ক ও সৌদি, আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪১
মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশ ইসরায়েলকে অতিদ্রুত গাজা থেকে সরে যেতে বলেছে। ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশ ইসরায়েলকে অতিদ্রুত গাজা থেকে সরে যেতে বলেছে। ছবি: সংগৃহীত

গাজার যুদ্ধবিরতির গ্যারান্টার বা জামিনদার কাতার, মিসর ও তুরস্ক ইসরায়েলকে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, এই ভঙ্গুর চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর করতে এই পদক্ষেপগুলো ‘অপরিহার্য’। একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সৌদি আরবও।

গতকাল শনিবার কাতারের রাজধানীতে দোহা ফোরাম সম্মেলনে এক প্যানেল আলোচনায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি জানান, মধ্যস্থতাকারীরা এখন যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। সেখানে এই ব্যবস্থাগুলোর রূপরেখা রয়েছে। ইসরায়েল এবং হামাস এখনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রাথমিক ধাপের পর কীভাবে এগোবে, সে বিষয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছায়নি।

প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরের নির্দিষ্ট ‘হলুদ লাইন’-এর পেছনে সরে গিয়েছিল, আর হামাস তাদের হেফাজতে থাকা জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল এবং একজন ছাড়া মৃত সকল বন্দীর মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে। আল-থানি বলেন, ‘আমরা এখন সংকটাপন্ন মুহূর্তে রয়েছি। এখনো কাজটি সম্পূর্ণ হয়নি। আমরা যা করেছি, তা কেবলই একটি বিরতি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণ হবে না এবং গাজায় স্থিতিশীলতাও ফিরবে না।’

এদিকে শনিবার এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা গাজায় যুদ্ধবিরতির ‘সংজ্ঞা পুনর্বিবেচনা বন্ধ করতে’ এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদিত শর্তাবলি নিয়ে পুনরায় আলোচনা এড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মানাল রাদওয়ান দোহা ফোরামে বলেন, ‘আমরা যা নিয়ে ইতিমধ্যে একমত হয়েছি এবং যা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব হিসেবে জারি হয়েছে এবং সব পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে, তা পুনরায় সংজ্ঞায়িত করা এবং পুনরায় আলোচনার জন্য আমরা উন্মুক্ত হতে পারি না।’

তিনি যোগ করেন, ‘সুতরাং আমরা যুদ্ধবিরতি বলতে কী বুঝি, এমনকি নিরস্ত্রীকরণ বলতে কী বুঝি, গাজা শাসনের জন্য ফিলিস্তিনি নেতৃত্বাধীন প্রক্রিয়া বলতে কী বুঝি—তাতে ফিরে গিয়ে নতুন করে সংজ্ঞা দিতে পারি না।’ রাদওয়ান বলেন, যে মূলনীতি পরিবর্তন করলে অঞ্চলটি ‘অন্য পথে’ চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়, যেখানে সংঘাতের মূল লক্ষ্য থেকে সরে এসে কৌশলগত বিবরণের ওপর মনোযোগ দেওয়া হয়।

রাদওয়ান আরও বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলোর বারবার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে এবং কী, কে, কখন—এই ধরনের বহু বিশদে প্রবেশ করে নিজেদের এমন এক পার্শ্ব পথে নিয়ে যেতে পারি না, যেখানে আমরা সামগ্রিক ও সংঘাতের মূল লক্ষ্য থেকে চোখ সরিয়ে ফেলি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রায় সবাই একমত যে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানই হলো একমাত্র সমাধান। যদি তা-ই হয়, তবে জনগণকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, এই বাস্তবায়ন সম্ভব করতে তারা কী করতে চলেছেন।’

অপর দিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের জন্য ইসরায়েলকে গাজায় তাদের অবস্থানগুলো থেকে সরে আসতে, একটি অন্তর্বর্তী শাসনকাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে এবং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা মিশন মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে মিসর। দোহা ফোরামে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি বলেন, ‘আমাদের যত দ্রুত সম্ভব এই বাহিনীকে মাটিতে মোতায়েন করতে হবে। কারণ, ইসরায়েল একপক্ষীয়ভাবে প্রতিদিন যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে।’

এদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এই সমাবেশে বলেছেন, স্থিতিশীলতা বাহিনী নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে এবং কে এর নেতৃত্ব দেবে এবং কোন কোন দেশ এতে অংশগ্রহণ করবে, সে সংক্রান্ত প্রধান অমীমাংসিত বিষয়গুলো রয়ে গেছে। ফিদানের দেশ তুরস্কও এই যুদ্ধবিরতির আরেক জামিনদার। তিনি বলেন, এই বাহিনীর প্রাথমিক মিশন ‘ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলিদের থেকে আলাদা করা।’ তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এরপর আমরা অন্য সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারি।’

আবদেলাত্তি এতে সম্মত হন এবং যুদ্ধবিরতি ‘যাচাই ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য হলুদ রেখা’ বরাবর এই বাহিনী মোতায়েন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তুরস্ক এই স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, কিন্তু ইসরায়েলি সরকার তাদের অংশগ্রহণের বিরোধিতা করেছে। ফিদান পরে বলেন, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ গাজায় শীর্ষ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়াটিতে নিরস্ত্রীকরণ প্রথম কাজ হতে পারে না। আমাদের বিষয়গুলোকে সঠিক ক্রমে সাজাতে হবে, আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে।’

উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এলাকায় এখনো বোমাবর্ষণ ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটি প্রায় ৬০০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, যাতে ৩৬০ জনের বেশি নিহত ও ৯০০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যা দুই বছরের ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান ঘটায়। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই যুদ্ধে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু এবং প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার লোক আহত হয়েছে।

তথ্যসূত্র: মিডল ইস্ট আই ও মিডল ইস্ট মনিটর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় ইসরায়েলি চর শাবাবকে যেভাবে হত্যা করা হয়, ফিলিস্তিনে উল্লাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৭
ইসরায়েল-সমর্থিত মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল-সমর্থিত মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব। ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-সমর্থিত মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাবের নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার গাজা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে। ত্রাণের বহরে লুটপাট এবং উপত্যকার মানুষের ওপর হামলার অভিযোগে ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ছিলেন ব্যাপক সমালোচিত।

আবু শাবাবের মৃত্যুর খবর ঘোষণার পরপরই গাজা এবং লেবাননের বাসিন্দাদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ, স্লোগান ও আনন্দসূচক গুলির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত অনেকেই তাঁর মৃত্যুকে ‘বিশ্বাসঘাতকের পতন’ এবং ‘সহযোগিতার মডেলের ফাটল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ইয়াসির আবু শাবাবের মৃত্যুর পরিস্থিতি নিয়ে দুটি ভিন্ন রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানায়, গাজার বিভিন্ন গোত্রের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর আবু শাবাব দক্ষিণ ইসরায়েলের সোরোকা মেডিকেল সেন্টারে মারা যান। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরে এই রিপোর্ট অস্বীকার করেছে।

অন্যদিকে তাঁর মিলিশিয়া গোষ্ঠী ‘পপুলার ফোর্সেস’ ফেসবুক পোস্টে জানায়, আবু শাবাব যখন আবু সুনেইমা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করছিলেন, তখনই গুলি করা হয়েছে।

ইয়াসির আবু শাবাব ছিলেন গাজায় ইসরায়েলি দখলদারদের অন্যতম প্রধান সহযোগী। জানা যায়, গত দুই বছরের গণহত্যা যুদ্ধের সময় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা করেন এবং ত্রাণসামগ্রী লুটপাট, ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক ও হামাস যোদ্ধাদের হত্যা বা অপহরণের জন্য দায়ী ছিলেন। এর আগে মাদক-সংক্রান্ত অভিযোগে হামাস তাঁকে কারারুদ্ধ করেছিল।

যে কৌশলে শাবাবকে হত্যা

সূত্রের বরাত দিয়ে মিডলইস্ট আই জানিয়েছে, আবু শাবাবকে হত্যার পরিকল্পনায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন এক তরুণ। তিনি আবু শাবাবের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে পপুলার ফোর্সেসের ভেতর ঢুকে পড়েন। এরপর নিখুঁত পরিকল্পনা করে আবু শাবাবকে তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীসহ হত্যা করেন।

বৃহস্পতিবারের হামলাটি ছিল অতর্কিত। রাফায় আবু শাবাব ও তাঁর বাহিনীর ধারণা ছিল, তাঁদের ওপর কাসাম ব্রিগেডের যেকোনো হামলা বাইরে থেকে হবে। এ কারণে তারা হামলার সময় ইসরায়েলি ট্যাংকের কাছে আশ্রয় নিয়েছিল।

কিন্তু হামলা যে নিজেদের ভেতর থেকে হতে পারে, সেটি তারা সম্ভবত ধারণাও করতে পারেনি। এ কারণে হামাসের পাঠানো হামলাকারী সফল হতে পেরেছেন।

সম্প্রতি আবু শাবাব একটি ভিডিও প্রকাশ করে রাফায় ‘নির্মূল’ অভিযান চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

গাজার দক্ষিণের শহর রাফার যে অঞ্চলগুলো ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেখানে আবু শাবাব ও তাঁর বাহিনী সক্রিয় ছিল। বাহিনীটি মূলত রাফার পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় ছিল। ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গঠনের নামে তারা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নানা দমনমূলক কার্যক্রম চালাত, যেমন ফিলিস্তিনিদের বাড়ি তল্লাশি করত, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বসানো বিস্ফোরক সরঞ্জাম অপসারণ করত, যোদ্ধাদের হত্যা করত এবং অস্ত্র লুট করত।

আবু শাবাব নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। অনেকে এটিকে ‘ঐতিহাসিক বিচার’ বলে অভিহিত করেন এবং তাঁর মৃত্যুকে ফিলিস্তিনিদের জন্য সংহতির বার্তা হিসেবে দেখেন।

একজন ব্যবহারকারী লেখেন, ‘ইয়াসির আবু শাবাবের মতো অনেক বিশ্বাসঘাতক আছে, কিন্তু তাদেরও একই পরিণতি হবে।’ অন্য একজন বলেন, ‘এটাই সব বিশ্বাসঘাতকের প্রাপ্য পরিণতি। সে নিজেকে শয়তানের কাছে বিক্রি করেছিল। আবু শাবাবের স্থান জাহান্নামে।’

ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা তাঁর মৃত্যুকে ইসরায়েলের ‘দালাল-নির্ভর গ্যাং মডেলের পতনের সূচনা’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সশস্ত্র সুরক্ষা দিয়েও ফিলিস্তিনি সমাজের ওপর কোনো ‘সহযোগী নেতা’ চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

প্রখ্যাত লেখক ঘাসান কানাফানির একটি বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করে লেখক ওমর হামাদ লেখেন, ‘যখন আপনি আপনার জন্মভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন, তখন মৃত্যুর দিনে কোনো মাটিই আপনাকে দয়া দেখাবে না; মৃত্যুর মধ্যেও আপনি নির্লিপ্ত থাকবেন।’

মিসরের সাংবাদিক খালেদ মাহমুদ মন্তব্য করেন, ‘সে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে বেঁচে ছিল এবং বিধর্মী হিসেবে মারা গেল...এভাবেই শেষ হলো তথাকথিত ইয়াসির আবু শাবাবের অলীক কিংবদন্তি, যাকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকে আঘাত করার জন্য তৈরি করেছিল।’

বহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এই হত্যাকাণ্ডকে সাংবাদিক ও অ্যাকটিভিস্ট সালেহ আল-জাফারাউয়ির মৃত্যুর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিচার হিসেবে বর্ণনা করেন। সালেহ আল-জাফারাউয়ি গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার ঘটনা নথিভুক্ত করার জন্য পরিচিত ছিলেন এবং তাঁকে অক্টোবরের শুরুতে ইসরায়েলের সহযোগী বন্দুকধারীরা হত্যা করেছিল।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আজ আমরা সালেহ আল-জাফারাউয়ির জন্য ন্যায়বিচার পেলাম।’ আরেকজন বলেন, ‘সালেহ, তোমার প্রতিশোধ নেওয়া হলো, এবং তাদেরও যারা তার এবং তার গ্যাংয়ের হাতে অনাহারে, হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।’

এদিকে হামাস-অধিভুক্ত নিরাপত্তা বাহিনী ‘রাদা’ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে আবু শাবাবের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখে: ‘যেমনটি আমরা বলেছিলাম, ইসরায়েল তোমাকে সুরক্ষা দেবে না।’ হামাসের পক্ষ থেকে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়: ‘বিশ্বাসঘাতক এজেন্ট ইয়াসির আবু শাবাবের যে পরিণতি হয়েছে, তার জনগণ ও জন্মভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দখলদারদের হাতিয়ার হওয়া প্রত্যেকেরই একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা গণহত্যা থেকে মনোযোগ সরাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ইসরায়েল: আল–শারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলি কূটনীতিক দাবি করেছেন সিরিয়ার আল-শারা তাঁর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি কূটনীতিক দাবি করেছেন সিরিয়ার আল-শারা তাঁর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল গাজায় যে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ চালিয়েছে, তা থেকে সবার দৃষ্টি ঘোরাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে। গতকাল শনিবার দোহা ফোরামে সিএনএন-এর ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরের সঙ্গে ‘নিউজমেকার ইন্টারভিউ’তে আলাপকালে আল-শারা এই কথা বলেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আল–শারার মতে, ইসরায়েলি নেতারা তাদের সামরিক পদক্ষেপের ক্ষেত্র বাড়াতে যখন নিরাপত্তা-সংক্রান্ত অজুহাত তুলে ধরেন, তখনই তাঁরা মূলত ‘অন্য দেশগুলোতে সংকট রপ্তানি করেন।’

তিনি বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল) নিজেদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগের দোহাই দিয়ে সবকিছুকে ন্যায্য বলে প্রমাণ করে, এবং ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে টেনে এনে নিজেদের চারপাশের সবকিছুর সঙ্গে তা জুড়ে দেন। ইসরায়েল যেন আজ ভূতের বিরুদ্ধে লড়াই করা এক দেশে পরিণত হয়েছে।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের রেজিম ভেঙে পড়ার পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়াজুড়ে ঘন ঘন বিমান হামলা চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে এবং পাশাপাশি দেশটির দক্ষিণে স্থল অভিযানও চালাচ্ছে। গত মাসে ইসরায়েলি বাহিনী দামেস্কের উপকণ্ঠে বেইত জিন শহরে অন্তত ১৩ জনকে হত্যা করে। এ ছাড়াও, তারা সিরিয়ার ভূখণ্ডের আরও ভেতরে প্রবেশ করে বহু সংখ্যক চেকপয়েন্ট বসিয়েছে। তারা বেআইনিভাবে সিরিয়ার নাগরিকদের ধরে নিয়ে ইসরায়েলে আটকে রেখেছে।

আল-শারা বলেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর জন্য কাজ করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খোলাখুলি বলেছি যে—সিরিয়া হবে স্থিতিশীলতার দেশ, আর আমরা ইসরায়েলসহ অন্য কোথাও সংঘাত রপ্তানি করা দেশ হতে আগ্রহী নই। কিন্তু, এর জবাবে ইসরায়েল আমাদের চরম সহিংসতা দিয়ে বরণ করেছে, আর সিরিয়া আকাশসীমা বিশাল মাত্রায় লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে।’

আল-শারা বলেন, আসাদের পতনের আগে ইসরায়েল যেখানে ছিল, তাদের সেখানেই ফিরে যেতে হবে এবং ১৯৭৪ সালের বিচ্ছেদ চুক্তি বজায় রাখতে হবে। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসের ইয়ুম কিপ্পুরের যুদ্ধের পরে এই চুক্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ইসরায়েল-দখলকৃত গোলান মালভূমিতে জাতিসংঘ-পর্যবেক্ষিত একটি বাফার জোন তৈরি করা হয়েছিল।

আল-শারা বলেন, ‘এই চুক্তি অর্ধ-শতাব্দীর বেশি সময় ধরে টিকে আছে।’ তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এই চুক্তি বদলে দিয়ে নতুন কোনো ব্যবস্থা, যেমন বাফার বা সামরিক-মুক্ত এলাকা তৈরি করার চেষ্টা করলে, তা এই অঞ্চলকে ‘একটি গুরুতর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে’ ঠেলে দিতে পারে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কে সেই এলাকা সুরক্ষিত রাখবে? ইসরায়েল প্রায়শই বলে যে তারা দক্ষিণ সিরিয়া থেকে হামলার শিকার হওয়ার ভয় পায়, কিন্তু সিরিয়ার বাহিনী যদি সেখানে না থাকে, তবে এই বাফার জোন বা এই সামরিক-মুক্ত এলাকাকে রক্ষা করবে কে?’

দেশে নির্বাচন প্রসঙ্গে আল-শারা জোর দিয়ে বলেন, সিরিয়ার অগ্রগতির পথ হলো—ব্যক্তিগত ক্ষমতাকে সংহত করার চেয়ে প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং চলমান রূপান্তরকাল শেষ হওয়ার পরে তিনি নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘সিরিয়া কোনো উপজাতি নয়। সিরিয়া একটি দেশ, সমৃদ্ধ ধারণার দেশ...আমি মনে করি না, এখনই আমরা পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।’

তা সত্ত্বেও আল-শারা বলেন, অস্থায়ী সাংবিধানিক ঘোষণাপত্র সই হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হবে, যা তাঁকে পাঁচ বছরের রূপান্তরকাল ধরে সিরিয়াকে নেতৃত্ব দেওয়ার ম্যান্ডেট দিয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘মানুষের নিজেদের নেতা বেছে নেওয়ার নীতি হলো একটি মৌলিক নীতি...এটি আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে। সঠিকভাবে শাসন করার জন্য শাসকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়, তাই আমরা এইটাতেই বিশ্বাস করি, আর আমার মনে হয় সিরিয়ার জন্য এটাই সঠিক পথ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত