আজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩৪ বছর বয়সী নগুয়েন থান হাই তাঁদেরই একজন, যাঁর শারীরিক অক্ষমতার পেছনে এজেন্ট অরেঞ্জকে দায়ী করা হয়। গুরুতর মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো হাইয়ের জন্য দৈনন্দিন অনেক সাধারণ কাজই দুঃসাধ্য—দা নাং শহরের একটি বিশেষ স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর নীল জামার বোতাম লাগানো, বর্ণমালা শেখা, আঁকা বা সহজ বাক্য গঠন করাও তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য।
হাইয়ের বেড়ে ওঠা দা নাংয়ে—যেখানে মার্কিন বাহিনীর একটি বিমানঘাঁটি ছিল। ওই ঘাঁটি থেকেই যুদ্ধ শেষে মার্কিন সেনারা প্রচুর এজেন্ট অরেঞ্জ ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেই রাসায়নিক মাটি ও পানিতে মিশে আশপাশের গ্রাম ও জনপদের বাসিন্দাদের প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আক্রান্ত করে চলেছে।
ভিয়েতনামজুড়ে মার্কিন বাহিনী ৭ কোটি ২০ লাখ লিটার (১ কোটি ৯০ লাখ গ্যালন) ডিফোলিয়েন্ট (গাছপালা ধ্বংসকারী রাসায়নিক) ছিটিয়েছিল, যার মধ্যে অর্ধেক ছিল এজেন্ট অরেঞ্জ। এতে ছিল ডায়অক্সিন নামের একটি মারাত্মক বিষাক্ত উপাদান, যা ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি এবং পরিবেশগত দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির জন্য দায়ী। আজও প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এই রাসায়নিকের প্রভাবে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
ভিয়েতনাম সরকার যুদ্ধ-উত্তর এই বিষাক্ত রাসায়নিক দূর করতে কয়েক দশক ধরে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র দেরিতে হলেও কিছু সাহায্য দিয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি। এমন প্রেক্ষাপটে ভিয়েতনামে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশি সাহায্য কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই কার্যক্রম থেকে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নিতে পারে।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের দিকে ফিরে তাকাতে চায়নি। ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় ভুলে যেতে চেয়েছিল দেশটি। কিন্তু তারা ভিয়েতনামে রেখে গিয়েছিল ডাইঅক্সিনে দূষিত অসংখ্য ‘হটস্পট’; যার বিস্তার দেশটির ৬৩টি প্রদেশের মধ্যে ৫৮টিতে।
ভিয়েতনামের দাবি, এজেন্ট অরেঞ্জের স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রজন্মের পর প্রজন্মে রয়ে যায়। যারা একবার আক্রান্ত হন, তাঁদের সন্তানেরা এমনকি নাতি-নাতনিরাও মেরুদণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য জন্মগত জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন।
তবে মানবস্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞান এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। কারণ, ২০০৬ সালে যখন ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ শুরু করল, তখন তারা মানবদেহ নয়, বরং পরিবেশ থেকে ডাইঅক্সিন দূর করতে গুরুত্ব দিয়েছিল। এজেন্ট অরেঞ্জ বিষয়ে বই (From Enemies to Partners) লিখেছেন চার্লস বেইলি। তিনি বলেন, ‘এজেন্ট অরেঞ্জের কারণে ঠিক কোন কোন রোগ হচ্ছে, তা নিয়ে এখনো বিজ্ঞানীরা একমত নন।’
ভিয়েতনামে এই বিষে আক্রান্তদের শনাক্ত করা হয় পারিবারিক ইতিহাস, বসবাসের স্থান এবং কিছু নির্দিষ্ট রোগের তালিকা দেখে। বেইলি বলেন, ‘হাইয়ের সমস্যার সঙ্গে এজেন্ট অরেঞ্জ স্প্রের যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
৩৪ বছর বয়সী হাই স্বপ্ন দেখেন তাঁর দাদার মতো একজন সৈনিক হবেন। কিন্তু বছরের পর বছর তিনি ঘরে বন্দী ছিলেন। তাঁর পরিবার কাজ করতে চলে গেলে, তিনি একা বসে থাকতেন। মাত্র পাঁচ বছর হলো তিনি একটি বিশেষ স্কুলে যেতে শুরু করেছেন। হাই বলেন, ‘আমি এখানে খুশি; কারণ, এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে।’ অন্য শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ দরজি কিংবা ধূপকাঠি প্রস্তুতকারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
এজেন্ট অরেঞ্জ শুধু মানুষের শরীর নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশকেও ধ্বংস করেছে। দেশের প্রায় অর্ধেক ম্যানগ্রোভ বনভূমি, যেগুলো উপকূলকে ঝড় থেকে রক্ষা করে, তা ধ্বংস হয়েছে। বহু বন ধ্বংস হয়েছে, মাটি থেকে হারিয়ে গেছে পুষ্টি—বিশেষত যেসব অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ভিয়েতনাম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে ঘিরে দেয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিতে শুরু করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র অনেক বছর এই স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রমাণকে অগ্রাহ্য করে—এমনকি তাদের নিজের ভেটারানদের ক্ষেত্রেও। ১৯৯১ সালে তারা প্রথম স্বীকার করে, কিছু রোগ এজেন্ট অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এরপর থেকে ওই সব রোগে আক্রান্ত মার্কিন সেনাদের ভেটারান সুবিধা দেওয়া শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে তারা ভিয়েতনামে এজেন্ট অরেঞ্জ বা অবিস্ফোরিত বোমা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বসবাসকারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে।
এ ছাড়া যুদ্ধকালীন নিহতদের খোঁজেও দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের নিখোঁজ সেনাদের খোঁজার জন্যও সহায়তা দিয়েছে।
এজেন্ট অরেঞ্জ পরিষ্কার করা ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক। অতিমাত্রায় দূষিত মাটি বড় বড় চুলায় অত্যধিক উত্তপ্ত করতে হয়। এরপর সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম দূষিত মাটি মাটির নিচে চাপা দেওয়া হয়।
তবে এত বছরের কাজের পরও অনেক জায়গা এখনো পরিষ্কার করা যায়নি। দা নাং বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ১১ কোটি ডলারের একটি পরিচ্ছন্নতা প্রকল্প ২০১৮ সালে শেষ করেছে। কিন্তু এখনো ১০টি ফুটবল মাঠের সমান একটি এলাকা মারাত্মকভাবে দূষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
এই যুদ্ধ-উত্তর সহযোগিতাই পরে যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম সম্পর্কে ভিত্তি স্থাপন করে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক মর্যাদা ‘কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভিয়েতনাম।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন ওই বছর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে।’
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা হ্রাস ভিয়েতনামের অনেক প্রকল্প স্থগিত করে দিয়েছে। যদিও অনেক প্রকল্প আবার শুরু হয়েছে, তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ভিয়েতনাম এখন একটি কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে; কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, তাঁরা আর অন্য দেশকে সাহায্য করার সামর্থ্য রাখেন না।
দা নাংয়ের এজেন্ট অরেঞ্জ ভুক্তভোগী সমিতির চেয়ারম্যান নগুয়েন ভ্যান আন বলেন, ‘এই বিষাক্ত রাসায়নিক যারা তৈরি করেছে, সেই কোম্পানি ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে যেসব প্রকল্প বন্ধ হতে পারে, তা যেন অস্থায়ী হয়—এই আশাই তিনি করছেন।
যেহেতু পর্যাপ্ত তথ্য নেই, তাই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না—মানবদেহের জন্য এই বিষ কত দিন পর্যন্ত ক্ষতিকর থাকবে। তবে যত দিন পরিষ্কারকরণ অভিযান চলবে না, তত দিন দূষিত মাটি পানিতে মিশে আরও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিয়েন হোয়া বিমানঘাঁটির ৫ লাখ ঘনমিটার (৬ লাখ ৫০ হাজার ঘন গজ) ডাইঅক্সিন দূষিত মাটি পরিষ্কার করার ১০ বছরের প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। এটি মার্চে এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল, পরে আবার শুরু হয়। কিন্তু বেইলি বলেন, এই প্রকল্পের জন্য ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ অর্থায়ন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ৩ কোটি ডলারের প্রকল্প—উভয়ই অনিশ্চিত।
তিনি বলেন, মার্কিন বাজেট কাটছাঁটের কারণে ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মী এ বছর শেষে ভিয়েতনাম ছেড়ে চলে যাবেন। ফলে প্রকল্পের জন্য যদি অর্থ বরাদ্দ থাকেও, পরিচালনা করার মতো লোক থাকবে না।
বেইলির আশঙ্কা, ‘এর ফলে বিশাল পরিমাণ দূষিত মাটি পড়ে থাকবে। যার মাত্র ৩০ শতাংশ পরিষ্কার হয়েছে—সেটিও অপেক্ষাকৃত কম দূষিত ছিল।’
তিনি আরও জানান, বিয়েন হোয়ার অর্ধেকের কম মাটি এখনো পরিশোধন করা হয়েছে, বাকি অংশ মারাত্মকভাবে দূষিত এবং তা পরিষ্কার করার জন্য এখনো ইনসিনারেটর (বর্জ্য পোড়ানোর চুল্লি) তৈরি হয়নি।
সাবেক মার্কিন সিনেটর প্যাট্রিক লিহির পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন টিম রিজার। তিনি এখন সিনেটর পিটার ওয়েলচের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম এই যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন উত্তরাধিকার এজেন্ট অরেঞ্জ দূর করতে একসঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু এখন ট্রাম্প প্রশাসন অন্ধভাবে সবকিছু বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এক অংশীদারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, বিয়েন হোয়া ও কেন্দ্রীয় ভিয়েতনামে মাইন অপসারণসহ যুদ্ধ-উত্তর প্রকল্পগুলো এখনো ‘সক্রিয় ও চলমান’ রয়েছে। ভবিষ্যতে এগুলো চালু রাখতে কতটুকু সম্পদ লাগবে, তা নির্ধারণে মূল্যায়ন চলছে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের এক সাবেক মার্কিন সৈনিক চাক সিয়ারসি ১৯৯৫ সাল থেকে দেশটিতে মানবিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ বছরের আস্থা খুব সহজে ভেঙে পড়তে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী, তাঁরা নিরপরাধ ভুক্তভোগী। একবার যুদ্ধের দ্বারা, আর এখন প্রকল্প বন্ধ হওয়ার মাধ্যমে আবার।’
তথ্যসূত্র: এপি

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩৪ বছর বয়সী নগুয়েন থান হাই তাঁদেরই একজন, যাঁর শারীরিক অক্ষমতার পেছনে এজেন্ট অরেঞ্জকে দায়ী করা হয়। গুরুতর মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো হাইয়ের জন্য দৈনন্দিন অনেক সাধারণ কাজই দুঃসাধ্য—দা নাং শহরের একটি বিশেষ স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর নীল জামার বোতাম লাগানো, বর্ণমালা শেখা, আঁকা বা সহজ বাক্য গঠন করাও তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য।
হাইয়ের বেড়ে ওঠা দা নাংয়ে—যেখানে মার্কিন বাহিনীর একটি বিমানঘাঁটি ছিল। ওই ঘাঁটি থেকেই যুদ্ধ শেষে মার্কিন সেনারা প্রচুর এজেন্ট অরেঞ্জ ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেই রাসায়নিক মাটি ও পানিতে মিশে আশপাশের গ্রাম ও জনপদের বাসিন্দাদের প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আক্রান্ত করে চলেছে।
ভিয়েতনামজুড়ে মার্কিন বাহিনী ৭ কোটি ২০ লাখ লিটার (১ কোটি ৯০ লাখ গ্যালন) ডিফোলিয়েন্ট (গাছপালা ধ্বংসকারী রাসায়নিক) ছিটিয়েছিল, যার মধ্যে অর্ধেক ছিল এজেন্ট অরেঞ্জ। এতে ছিল ডায়অক্সিন নামের একটি মারাত্মক বিষাক্ত উপাদান, যা ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি এবং পরিবেশগত দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির জন্য দায়ী। আজও প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এই রাসায়নিকের প্রভাবে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
ভিয়েতনাম সরকার যুদ্ধ-উত্তর এই বিষাক্ত রাসায়নিক দূর করতে কয়েক দশক ধরে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র দেরিতে হলেও কিছু সাহায্য দিয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি। এমন প্রেক্ষাপটে ভিয়েতনামে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশি সাহায্য কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই কার্যক্রম থেকে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নিতে পারে।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের দিকে ফিরে তাকাতে চায়নি। ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় ভুলে যেতে চেয়েছিল দেশটি। কিন্তু তারা ভিয়েতনামে রেখে গিয়েছিল ডাইঅক্সিনে দূষিত অসংখ্য ‘হটস্পট’; যার বিস্তার দেশটির ৬৩টি প্রদেশের মধ্যে ৫৮টিতে।
ভিয়েতনামের দাবি, এজেন্ট অরেঞ্জের স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রজন্মের পর প্রজন্মে রয়ে যায়। যারা একবার আক্রান্ত হন, তাঁদের সন্তানেরা এমনকি নাতি-নাতনিরাও মেরুদণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য জন্মগত জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন।
তবে মানবস্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞান এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। কারণ, ২০০৬ সালে যখন ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ শুরু করল, তখন তারা মানবদেহ নয়, বরং পরিবেশ থেকে ডাইঅক্সিন দূর করতে গুরুত্ব দিয়েছিল। এজেন্ট অরেঞ্জ বিষয়ে বই (From Enemies to Partners) লিখেছেন চার্লস বেইলি। তিনি বলেন, ‘এজেন্ট অরেঞ্জের কারণে ঠিক কোন কোন রোগ হচ্ছে, তা নিয়ে এখনো বিজ্ঞানীরা একমত নন।’
ভিয়েতনামে এই বিষে আক্রান্তদের শনাক্ত করা হয় পারিবারিক ইতিহাস, বসবাসের স্থান এবং কিছু নির্দিষ্ট রোগের তালিকা দেখে। বেইলি বলেন, ‘হাইয়ের সমস্যার সঙ্গে এজেন্ট অরেঞ্জ স্প্রের যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
৩৪ বছর বয়সী হাই স্বপ্ন দেখেন তাঁর দাদার মতো একজন সৈনিক হবেন। কিন্তু বছরের পর বছর তিনি ঘরে বন্দী ছিলেন। তাঁর পরিবার কাজ করতে চলে গেলে, তিনি একা বসে থাকতেন। মাত্র পাঁচ বছর হলো তিনি একটি বিশেষ স্কুলে যেতে শুরু করেছেন। হাই বলেন, ‘আমি এখানে খুশি; কারণ, এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে।’ অন্য শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ দরজি কিংবা ধূপকাঠি প্রস্তুতকারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
এজেন্ট অরেঞ্জ শুধু মানুষের শরীর নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশকেও ধ্বংস করেছে। দেশের প্রায় অর্ধেক ম্যানগ্রোভ বনভূমি, যেগুলো উপকূলকে ঝড় থেকে রক্ষা করে, তা ধ্বংস হয়েছে। বহু বন ধ্বংস হয়েছে, মাটি থেকে হারিয়ে গেছে পুষ্টি—বিশেষত যেসব অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ভিয়েতনাম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে ঘিরে দেয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিতে শুরু করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র অনেক বছর এই স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রমাণকে অগ্রাহ্য করে—এমনকি তাদের নিজের ভেটারানদের ক্ষেত্রেও। ১৯৯১ সালে তারা প্রথম স্বীকার করে, কিছু রোগ এজেন্ট অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এরপর থেকে ওই সব রোগে আক্রান্ত মার্কিন সেনাদের ভেটারান সুবিধা দেওয়া শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে তারা ভিয়েতনামে এজেন্ট অরেঞ্জ বা অবিস্ফোরিত বোমা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বসবাসকারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে।
এ ছাড়া যুদ্ধকালীন নিহতদের খোঁজেও দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের নিখোঁজ সেনাদের খোঁজার জন্যও সহায়তা দিয়েছে।
এজেন্ট অরেঞ্জ পরিষ্কার করা ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক। অতিমাত্রায় দূষিত মাটি বড় বড় চুলায় অত্যধিক উত্তপ্ত করতে হয়। এরপর সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম দূষিত মাটি মাটির নিচে চাপা দেওয়া হয়।
তবে এত বছরের কাজের পরও অনেক জায়গা এখনো পরিষ্কার করা যায়নি। দা নাং বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ১১ কোটি ডলারের একটি পরিচ্ছন্নতা প্রকল্প ২০১৮ সালে শেষ করেছে। কিন্তু এখনো ১০টি ফুটবল মাঠের সমান একটি এলাকা মারাত্মকভাবে দূষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
এই যুদ্ধ-উত্তর সহযোগিতাই পরে যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম সম্পর্কে ভিত্তি স্থাপন করে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক মর্যাদা ‘কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভিয়েতনাম।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন ওই বছর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে।’
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা হ্রাস ভিয়েতনামের অনেক প্রকল্প স্থগিত করে দিয়েছে। যদিও অনেক প্রকল্প আবার শুরু হয়েছে, তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ভিয়েতনাম এখন একটি কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে; কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, তাঁরা আর অন্য দেশকে সাহায্য করার সামর্থ্য রাখেন না।
দা নাংয়ের এজেন্ট অরেঞ্জ ভুক্তভোগী সমিতির চেয়ারম্যান নগুয়েন ভ্যান আন বলেন, ‘এই বিষাক্ত রাসায়নিক যারা তৈরি করেছে, সেই কোম্পানি ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে যেসব প্রকল্প বন্ধ হতে পারে, তা যেন অস্থায়ী হয়—এই আশাই তিনি করছেন।
যেহেতু পর্যাপ্ত তথ্য নেই, তাই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না—মানবদেহের জন্য এই বিষ কত দিন পর্যন্ত ক্ষতিকর থাকবে। তবে যত দিন পরিষ্কারকরণ অভিযান চলবে না, তত দিন দূষিত মাটি পানিতে মিশে আরও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিয়েন হোয়া বিমানঘাঁটির ৫ লাখ ঘনমিটার (৬ লাখ ৫০ হাজার ঘন গজ) ডাইঅক্সিন দূষিত মাটি পরিষ্কার করার ১০ বছরের প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। এটি মার্চে এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল, পরে আবার শুরু হয়। কিন্তু বেইলি বলেন, এই প্রকল্পের জন্য ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ অর্থায়ন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ৩ কোটি ডলারের প্রকল্প—উভয়ই অনিশ্চিত।
তিনি বলেন, মার্কিন বাজেট কাটছাঁটের কারণে ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মী এ বছর শেষে ভিয়েতনাম ছেড়ে চলে যাবেন। ফলে প্রকল্পের জন্য যদি অর্থ বরাদ্দ থাকেও, পরিচালনা করার মতো লোক থাকবে না।
বেইলির আশঙ্কা, ‘এর ফলে বিশাল পরিমাণ দূষিত মাটি পড়ে থাকবে। যার মাত্র ৩০ শতাংশ পরিষ্কার হয়েছে—সেটিও অপেক্ষাকৃত কম দূষিত ছিল।’
তিনি আরও জানান, বিয়েন হোয়ার অর্ধেকের কম মাটি এখনো পরিশোধন করা হয়েছে, বাকি অংশ মারাত্মকভাবে দূষিত এবং তা পরিষ্কার করার জন্য এখনো ইনসিনারেটর (বর্জ্য পোড়ানোর চুল্লি) তৈরি হয়নি।
সাবেক মার্কিন সিনেটর প্যাট্রিক লিহির পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন টিম রিজার। তিনি এখন সিনেটর পিটার ওয়েলচের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম এই যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন উত্তরাধিকার এজেন্ট অরেঞ্জ দূর করতে একসঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু এখন ট্রাম্প প্রশাসন অন্ধভাবে সবকিছু বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এক অংশীদারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, বিয়েন হোয়া ও কেন্দ্রীয় ভিয়েতনামে মাইন অপসারণসহ যুদ্ধ-উত্তর প্রকল্পগুলো এখনো ‘সক্রিয় ও চলমান’ রয়েছে। ভবিষ্যতে এগুলো চালু রাখতে কতটুকু সম্পদ লাগবে, তা নির্ধারণে মূল্যায়ন চলছে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের এক সাবেক মার্কিন সৈনিক চাক সিয়ারসি ১৯৯৫ সাল থেকে দেশটিতে মানবিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ বছরের আস্থা খুব সহজে ভেঙে পড়তে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী, তাঁরা নিরপরাধ ভুক্তভোগী। একবার যুদ্ধের দ্বারা, আর এখন প্রকল্প বন্ধ হওয়ার মাধ্যমে আবার।’
তথ্যসূত্র: এপি

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৮ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৮ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৯ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩০ এপ্রিল ২০২৫
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৮ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৯ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩০ এপ্রিল ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৮ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৯ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।
নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।
বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।
এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।
নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।
বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।
এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩০ এপ্রিল ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৮ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৮ ঘণ্টা আগে
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।
দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।
এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।
তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।
ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।
দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।
এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।
তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।
ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
৩০ এপ্রিল ২০২৫
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
৮ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
৮ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)।
৯ ঘণ্টা আগে