Ajker Patrika

অর্ধশতক পরও সক্রিয় ভিয়েতনাম যুদ্ধের এজেন্ট অরেঞ্জ, ক্যানসার-পঙ্গুত্ব থামছে না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ৫৫
৩৪ বছর বয়সী নগুয়েন থান হাই ভিয়েতনাম যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ প্রভাবের শিকার। ছবি: এপি
৩৪ বছর বয়সী নগুয়েন থান হাই ভিয়েতনাম যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ প্রভাবের শিকার। ছবি: এপি

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।

৩৪ বছর বয়সী নগুয়েন থান হাই তাঁদেরই একজন, যাঁর শারীরিক অক্ষমতার পেছনে এজেন্ট অরেঞ্জকে দায়ী করা হয়। গুরুতর মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মানো হাইয়ের জন্য দৈনন্দিন অনেক সাধারণ কাজই দুঃসাধ্য—দা নাং শহরের একটি বিশেষ স্কুলে যাওয়ার জন্য তাঁর নীল জামার বোতাম লাগানো, বর্ণমালা শেখা, আঁকা বা সহজ বাক্য গঠন করাও তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য।

হাইয়ের বেড়ে ওঠা দা নাংয়ে—যেখানে মার্কিন বাহিনীর একটি বিমানঘাঁটি ছিল। ওই ঘাঁটি থেকেই যুদ্ধ শেষে মার্কিন সেনারা প্রচুর এজেন্ট অরেঞ্জ ফেলে রেখে গিয়েছিল। সেই রাসায়নিক মাটি ও পানিতে মিশে আশপাশের গ্রাম ও জনপদের বাসিন্দাদের প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আক্রান্ত করে চলেছে।

ভিয়েতনামজুড়ে মার্কিন বাহিনী ৭ কোটি ২০ লাখ লিটার (১ কোটি ৯০ লাখ গ্যালন) ডিফোলিয়েন্ট (গাছপালা ধ্বংসকারী রাসায়নিক) ছিটিয়েছিল, যার মধ্যে অর্ধেক ছিল এজেন্ট অরেঞ্জ। এতে ছিল ডায়অক্সিন নামের একটি মারাত্মক বিষাক্ত উপাদান, যা ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি এবং পরিবেশগত দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির জন্য দায়ী। আজও প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এই রাসায়নিকের প্রভাবে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।

ভিয়েতনাম সরকার যুদ্ধ-উত্তর এই বিষাক্ত রাসায়নিক দূর করতে কয়েক দশক ধরে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র দেরিতে হলেও কিছু সাহায্য দিয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি। এমন প্রেক্ষাপটে ভিয়েতনামে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশি সাহায্য কাটছাঁটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই কার্যক্রম থেকে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নিতে পারে।

১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়। ছবি: এপি
১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়। ছবি: এপি

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের দিকে ফিরে তাকাতে চায়নি। ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায় ভুলে যেতে চেয়েছিল দেশটি। কিন্তু তারা ভিয়েতনামে রেখে গিয়েছিল ডাইঅক্সিনে দূষিত অসংখ্য ‘হটস্পট’; যার বিস্তার দেশটির ৬৩টি প্রদেশের মধ্যে ৫৮টিতে।

ভিয়েতনামের দাবি, এজেন্ট অরেঞ্জের স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রজন্মের পর প্রজন্মে রয়ে যায়। যারা একবার আক্রান্ত হন, তাঁদের সন্তানেরা এমনকি নাতি-নাতনিরাও মেরুদণ্ড, স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য জন্মগত জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারেন।

তবে মানবস্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞান এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। কারণ, ২০০৬ সালে যখন ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ শুরু করল, তখন তারা মানবদেহ নয়, বরং পরিবেশ থেকে ডাইঅক্সিন দূর করতে গুরুত্ব দিয়েছিল। এজেন্ট অরেঞ্জ বিষয়ে বই (From Enemies to Partners) লিখেছেন চার্লস বেইলি। তিনি বলেন, ‘এজেন্ট অরেঞ্জের কারণে ঠিক কোন কোন রোগ হচ্ছে, তা নিয়ে এখনো বিজ্ঞানীরা একমত নন।’

ভিয়েতনামে এই বিষে আক্রান্তদের শনাক্ত করা হয় পারিবারিক ইতিহাস, বসবাসের স্থান এবং কিছু নির্দিষ্ট রোগের তালিকা দেখে। বেইলি বলেন, ‘হাইয়ের সমস্যার সঙ্গে এজেন্ট অরেঞ্জ স্প্রের যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

৩৪ বছর বয়সী হাই স্বপ্ন দেখেন তাঁর দাদার মতো একজন সৈনিক হবেন। কিন্তু বছরের পর বছর তিনি ঘরে বন্দী ছিলেন। তাঁর পরিবার কাজ করতে চলে গেলে, তিনি একা বসে থাকতেন। মাত্র পাঁচ বছর হলো তিনি একটি বিশেষ স্কুলে যেতে শুরু করেছেন। হাই বলেন, ‘আমি এখানে খুশি; কারণ, এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে।’ অন্য শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ দরজি কিংবা ধূপকাঠি প্রস্তুতকারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

এজেন্ট অরেঞ্জ শুধু মানুষের শরীর নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশকেও ধ্বংস করেছে। দেশের প্রায় অর্ধেক ম্যানগ্রোভ বনভূমি, যেগুলো উপকূলকে ঝড় থেকে রক্ষা করে, তা ধ্বংস হয়েছে। বহু বন ধ্বংস হয়েছে, মাটি থেকে হারিয়ে গেছে পুষ্টি—বিশেষত যেসব অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।

হলুদ পতাকা দিয়ে চিহ্নিত ১০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা এখনো মারাত্মকভাবে দূষিত অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি: এপি
হলুদ পতাকা দিয়ে চিহ্নিত ১০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা এখনো মারাত্মকভাবে দূষিত অবস্থায় পড়ে আছে। ছবি: এপি

যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ভিয়েতনাম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে ঘিরে দেয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিতে শুরু করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র অনেক বছর এই স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রমাণকে অগ্রাহ্য করে—এমনকি তাদের নিজের ভেটারানদের ক্ষেত্রেও। ১৯৯১ সালে তারা প্রথম স্বীকার করে, কিছু রোগ এজেন্ট অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। এরপর থেকে ওই সব রোগে আক্রান্ত মার্কিন সেনাদের ভেটারান সুবিধা দেওয়া শুরু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে তারা ভিয়েতনামে এজেন্ট অরেঞ্জ বা অবিস্ফোরিত বোমা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বসবাসকারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে।

এ ছাড়া যুদ্ধকালীন নিহতদের খোঁজেও দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের নিখোঁজ সেনাদের খোঁজার জন্যও সহায়তা দিয়েছে।

এজেন্ট অরেঞ্জ পরিষ্কার করা ব্যয়বহুল ও বিপজ্জনক। অতিমাত্রায় দূষিত মাটি বড় বড় চুলায় অত্যধিক উত্তপ্ত করতে হয়। এরপর সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম দূষিত মাটি মাটির নিচে চাপা দেওয়া হয়।

তবে এত বছরের কাজের পরও অনেক জায়গা এখনো পরিষ্কার করা যায়নি। দা নাং বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ১১ কোটি ডলারের একটি পরিচ্ছন্নতা প্রকল্প ২০১৮ সালে শেষ করেছে। কিন্তু এখনো ১০টি ফুটবল মাঠের সমান একটি এলাকা মারাত্মকভাবে দূষিত অবস্থায় পড়ে আছে।

এই যুদ্ধ-উত্তর সহযোগিতাই পরে যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম সম্পর্কে ভিত্তি স্থাপন করে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক মর্যাদা ‘কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভিয়েতনাম।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন ওই বছর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে।’

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা হ্রাস ভিয়েতনামের অনেক প্রকল্প স্থগিত করে দিয়েছে। যদিও অনেক প্রকল্প আবার শুরু হয়েছে, তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

ভিয়েতনাম এখন একটি কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে; কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, তাঁরা আর অন্য দেশকে সাহায্য করার সামর্থ্য রাখেন না।

দা নাংয়ের এজেন্ট অরেঞ্জ ভুক্তভোগী সমিতির চেয়ারম্যান নগুয়েন ভ্যান আন বলেন, ‘এই বিষাক্ত রাসায়নিক যারা তৈরি করেছে, সেই কোম্পানি ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ বিষয়ে দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে যেসব প্রকল্প বন্ধ হতে পারে, তা যেন অস্থায়ী হয়—এই আশাই তিনি করছেন।

যেহেতু পর্যাপ্ত তথ্য নেই, তাই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না—মানবদেহের জন্য এই বিষ কত দিন পর্যন্ত ক্ষতিকর থাকবে। তবে যত দিন পরিষ্কারকরণ অভিযান চলবে না, তত দিন দূষিত মাটি পানিতে মিশে আরও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিয়েন হোয়া বিমানঘাঁটির ৫ লাখ ঘনমিটার (৬ লাখ ৫০ হাজার ঘন গজ) ডাইঅক্সিন দূষিত মাটি পরিষ্কার করার ১০ বছরের প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। এটি মার্চে এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল, পরে আবার শুরু হয়। কিন্তু বেইলি বলেন, এই প্রকল্পের জন্য ইউএসএআইডির ভবিষ্যৎ অর্থায়ন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ৩ কোটি ডলারের প্রকল্প—উভয়ই অনিশ্চিত।

তিনি বলেন, মার্কিন বাজেট কাটছাঁটের কারণে ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মী এ বছর শেষে ভিয়েতনাম ছেড়ে চলে যাবেন। ফলে প্রকল্পের জন্য যদি অর্থ বরাদ্দ থাকেও, পরিচালনা করার মতো লোক থাকবে না।

বেইলির আশঙ্কা, ‘এর ফলে বিশাল পরিমাণ দূষিত মাটি পড়ে থাকবে। যার মাত্র ৩০ শতাংশ পরিষ্কার হয়েছে—সেটিও অপেক্ষাকৃত কম দূষিত ছিল।’

তিনি আরও জানান, বিয়েন হোয়ার অর্ধেকের কম মাটি এখনো পরিশোধন করা হয়েছে, বাকি অংশ মারাত্মকভাবে দূষিত এবং তা পরিষ্কার করার জন্য এখনো ইনসিনারেটর (বর্জ্য পোড়ানোর চুল্লি) তৈরি হয়নি।

সাবেক মার্কিন সিনেটর প্যাট্রিক লিহির পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন টিম রিজার। তিনি এখন সিনেটর পিটার ওয়েলচের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম এই যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন উত্তরাধিকার এজেন্ট অরেঞ্জ দূর করতে একসঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু এখন ট্রাম্প প্রশাসন অন্ধভাবে সবকিছু বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এক অংশীদারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, বিয়েন হোয়া ও কেন্দ্রীয় ভিয়েতনামে মাইন অপসারণসহ যুদ্ধ-উত্তর প্রকল্পগুলো এখনো ‘সক্রিয় ও চলমান’ রয়েছে। ভবিষ্যতে এগুলো চালু রাখতে কতটুকু সম্পদ লাগবে, তা নির্ধারণে মূল্যায়ন চলছে।

ভিয়েতনাম যুদ্ধের এক সাবেক মার্কিন সৈনিক চাক সিয়ারসি ১৯৯৫ সাল থেকে দেশটিতে মানবিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ বছরের আস্থা খুব সহজে ভেঙে পড়তে পারে। তাঁর ভাষায়, ‘যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী, তাঁরা নিরপরাধ ভুক্তভোগী। একবার যুদ্ধের দ্বারা, আর এখন প্রকল্প বন্ধ হওয়ার মাধ্যমে আবার।’

তথ্যসূত্র: এপি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানে তুষারপাতে পিচ্ছিল রাস্তায় ৫০টি গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ২

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫১
পরপর অনেকগুলো গাড়ির সংঘর্ষের অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ছবি: সংগৃহীত
পরপর অনেকগুলো গাড়ির সংঘর্ষের অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ছবি: সংগৃহীত

তীব্র তুষারপাত ও পিচ্ছিল রাস্তার কারণে জাপানের মধ্যাঞ্চলে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২ জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছেন। দেশটির কান-এৎসু এক্সপ্রেসওয়েতে অন্তত ৫০টি গাড়ির স্তূপ তৈরি হয়েছে। সংঘর্ষের ফলে বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরে যায়।

স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ২৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টোকিও থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গুনমা প্রিফেকচারের মিনাকামিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে দুটি ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষ হলে পেছনে থাকা গাড়িগুলো একের পর এক ধাক্কা খেতে থাকে। এই চেইন রিঅ্যাকশনের ফলে অন্তত ১০টি গাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাড়ে সাত ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে টোকিওর একজন ৭৭ বছর বয়সী নারী রয়েছেন। এ ছাড়া একটি পুড়ে যাওয়া ট্রাকের চালকের আসন থেকে আরও একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ২৬ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি ২১ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন।

দুর্ঘটনার সময় ওই এলাকায় ভারী তুষারপাতের সতর্কতা জারি ছিল। পুলিশের ধারণা, রাস্তার ওপর বরফ জমে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকগুলো পিছলে যায়। যার ফলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ষাটোর্ধ্ব এক প্রত্যক্ষদর্শী জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে জানান, সংঘর্ষের সময় তিনি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন এবং দেখেন সামনের গাড়িগুলোতে আগুন ধরে গেছে। দ্রুত সেই আগুন অন্যান্য গাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও জানান, তাঁকেসহ প্রায় ৫০ জনকে নিকটবর্তী একটি টোল প্লাজায় সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সেখানে তাঁরা সারা রাত অবস্থান করেন।

দুর্ঘটনার পর এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুড়ে যাওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। রাস্তা পরিচালনাকারী সংস্থা নেক্সকো জানিয়েছে, আগুনের তাপে রাস্তার কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংস্থাটি আপাতত ওই রুট ব্যবহার না করার জন্য ভ্রমণকারীদের সতর্ক করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান, তবে আপত্তি হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্তে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনীতে যোগ দিতে নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে পাকিস্তান। তবে এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে যদি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার শর্ত থাকে, তবে পাকিস্তান তাতে অংশ নেবে না। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এ কথা বলেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেসের ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সাফল্য পর্যালোচনা করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়াজন করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার বলেন, গাজা শান্তি চুক্তির আওতায় ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স’ (আইএসএফ) গঠন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। পাকিস্তান যেকোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে ‘পিস এনফোর্সমেন্ট’ (শান্তি বলবৎকরণ) নয়, বরং ‘পিসকিপিং’ (শান্তি রক্ষা) শব্দ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে।

হামাসকে নিরস্ত্র করা প্রসঙ্গে ইশাক দার স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি এই বাহিনীর ম্যান্ডেটে হামাসকে নিরস্ত্র করার কোনো ভূমিকা থাকে, তবে আমরা তাতে অংশ নেব না। এটি আমাদের কাজ নয়। হামাসকে নিরস্ত্র করার দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সেখানকার স্থানীয় সরকারের।’

ইশাক দার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ভূমিকা শুধু শান্তি বজায় রাখায় সহায়তা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে কাউকে নিরস্ত্র করার কোনো অভিযানে পাকিস্তান তার সৈন্যদের জড়াতে চায় না।’

ইশাক দার জানান, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নীতিগতভাবে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিলেও, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পাকিস্তান এই বাহিনীর ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ (টিওআর) এবং ম্যান্ডেট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রেজল্যুশন পাস হয়। পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দিলেও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত ছিল। ওই পরিকল্পনারই একটি অন্যতম অংশ হলো এই ‘আইএসএফ’ গঠন। এখানে মূলত মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সৈন্যদের প্রাধান্য থাকবে।

ইশাক দার জানান, ইন্দোনেশিয়া এই বাহিনীতে ২০ হাজার সৈন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিলেও তারাও হামাসকে নিরস্ত্র করার বিষয়ে পাকিস্তানের মতোই আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর অধিকারী হওয়ায় গাজা শান্তি মিশনে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ওয়াশিংটনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশের অভ্যন্তরে ধর্মীয় দলগুলোর প্রতিবাদ এবং হামাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এড়াতে পাকিস্তান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই পথে এগোচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইশাক দার দাবি করেন, একসময় পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন’ বলে বিবেচিত হলেও বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দেশটি পুনরায় বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। তিনি জানান, প্রধান বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে পাকিস্তানের নীতিগত ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
রুশ হামলায় রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ঠিক আগে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাতভর চালানো এই হামলায় প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ৪০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে কিয়েভের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলেনস্কি এই হামলাকে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘সরাসরি জবাব’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই তাদের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নজিরবিহীন।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ শনিবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত ছিল। রাজধানী কিয়েভে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলা বিমান হামলার সতর্কতা স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে প্রত্যাহার করা হয়। ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৬ জন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ইউক্রেনারগো জানায়, দেশজুড়ে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। ফলে রাজধানী কিয়েভে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।

এই হামলার প্রভাব ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডেও পড়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে দক্ষিণ-পূর্ব পোল্যান্ডের রেশজো ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে বিমানবন্দর দুটি আবার চালু করা হয়।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি আলোচনার টেবিলে কী আছে

জেলেনস্কি বর্তমানে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টের উদ্দেশে বিমানে রয়েছেন। এক অডিও বার্তায় তিনি জানান, পথে কানাডায় থামবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন।

এর আগে শুক্রবার কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হওয়া ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধ শেষে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হবে।’

জেলেনস্কির মতে, যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কী দিতে প্রস্তুত, কখন দিতে প্রস্তুত এবং কত দিনের জন্য।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বলেছেন, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রই। পলিটিকোকে তিনি বলেন, ‘আমার অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত তাঁর (জেলেনস্কির) কিছুই চূড়ান্ত নয়। দেখা যাক, সে কী নিয়ে আসে।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোববারের বৈঠক ভালো হবে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগির তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও কথা বলতে চান।

দোনেৎস্কের ভবিষ্যৎই এখন মূল প্রশ্ন

মস্কো দাবি করছে, ইউক্রেনকে দোনেৎস্কের একটি বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই অঞ্চল রুশ বাহিনী প্রায় চার বছরের যুদ্ধেও পুরোপুরি দখল করতে পারেনি। অন্যদিকে কিয়েভ চায়, বর্তমান ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ থামানো হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত এক সমঝোতার আওতায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী দোনেৎস্কের কিছু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত ঠিক হয়নি।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি চুক্তিতে বড় ধরনের আঞ্চলিক ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন আসে, তবে তিনি তা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। তবে যুদ্ধের এমন পরিস্থিতিতে গণভোট আয়োজন অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ জানিয়েছেন, কিয়েভের ২০ দফা পরিকল্পনা রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন, তবে শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বা মোড় আসার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। এখন সবার নজর রোববার ফ্লোরিডায় হতে যাওয়া ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুয়াতেমালায় বাস খাদে পড়ে নিহত অন্তত ১৫, আহত ১৯

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।  ছবি: সংগৃহীত
ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

মধ্য আমেরিকার দেশ গুয়াতেমালায় একটি যাত্রীবাহী বাস গভীর খাদে পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ইন্টার-আমেরিকান হাইওয়েতে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও অন্তত ১৯ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র লিয়ান্দ্রো আমাদোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং ১টি শিশু রয়েছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাসটি গুয়াতেমালা সিটি থেকে মেক্সিকো সীমান্তবর্তী সান মার্কোস বিভাগের দিকে যাচ্ছিল। পথে টোটোনিকাপান বিভাগের ১৭২ থেকে ১৭৪ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৭৫ মিটার (২৫০ ফুট) গভীর একটি খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলটি ‘আলাস্কা পিক’ নামে পরিচিত। দুর্গম ভূখণ্ড এবং খাড়া ঢালের কারণে এলাকাটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশা বা যান্ত্রিক ত্রুটি এ দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে, তবে সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।

দেশটির ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার কিছু ছবি শেয়ার করেছে। এতে দেখা যায়, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাসটি থেকে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

আহত ১৯ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কাছের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রিয়জনদের খোঁজে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন স্বজনেরা।

উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের শুরুতেই গুয়াতেমালা সিটির বাইরে একটি বাস খাদে পড়ে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। বছরের শেষ দিকে এসে আবারও একই ধরনের বড় দুর্ঘটনায় দেশটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত