Ajker Patrika

রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদন

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে, তবু ফিরতে পারছে না রোহিঙ্গারা

আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৪৭
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পায়াকতাউ টাউনশিপে জান্তা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যকার তীব্র লড়াইয়ের কারণে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে স্থানীয়রা। ছবি: এএফপি
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পায়াকতাউ টাউনশিপে জান্তা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যকার তীব্র লড়াইয়ের কারণে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে স্থানীয়রা। ছবি: এএফপি

সহিংসতা থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার মিয়ানমারে ফেরার স্বপ্ন এখনো অনিশ্চিত। স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের জন্মভূমি রাখাইনের (পূর্বে আরাকান নামে পরিচিত ছিল) নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরও ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের উদ্বেগ কাটেনি। রেডিও ফ্রি এশিয়াকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চালানো রক্তক্ষয়ী অভিযানের ফলে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। তারা কক্সবাজারের আশপাশে আগে থেকেই বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিলিত হয়। ফলে ওই সময়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি হয়ে যায়।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে ফেরত পাঠানোর জন্য বছরের পর বছর ধরে আলোচনা হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। রোহিঙ্গারা মনে করে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

গত ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপ দখল করে এবং বাংলাদেশ সংলগ্ন সীমান্তেরও নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ ঘটনা রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছিল। তারা ভেবেছিল, তারা হয়তো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নিরাপদে নিজেদের পুরোনো এলাকায় ফিরে যেতে পারবে এবং এএয়ের শাসনামলে পুনর্বাসিত হতে পারবে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে (আরএফএ) জানিয়েছেন, তাঁদের ফেরার সম্ভাবনা এখনো অনিশ্চিত। কারণ, এএ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য কী ব্যবস্থা নেবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তা ছাড়া, রাখাইনের চলমান সংঘর্ষ এবং সামরিক জান্তার বিমান হামলার ঝুঁকির কারণে তাঁরা আরও আতঙ্কিত।

কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী মোহাম্মদ বলেন, ‘এখন যুদ্ধ চলছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়। এমনকি যদি এএ পুরো রাখাইন দখল করে নেয়, তবুও আমাদের ফেরার পথ বহু দূর। কারণ, তারা কোনো বৈধ সরকার নয়।’ বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মতে, গত এক বছরে রাখাইনের সংঘাত ও সহিংসতার কারণে প্রায় ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে জান্তার সম্ভাব্য বিমান হামলার আশঙ্কা। ইউরোপভিত্তিক রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী নায় সান লুইন বলেন, ‘পুনর্বাসন পুরোপুরি এএয়ের ওপর নির্ভরশীল। কারণ, তারা বর্তমানে সেই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে যেখানে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় আছে। তবে জান্তা যদি বিমান হামলা চালায়, তাহলে রোহিঙ্গারা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পুনর্বাসন কার্যক্রম অসম্ভব।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি এবং মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফেরার দাবি জানিয়ে আসছে। গত ২৫ ডিসেম্বর কক্সবাজারে এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের কাছে তাদের দাবির প্রতি সমর্থন চায়।

মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা চাই নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে। এ ছাড়া, আমরা মিয়ানমার এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের কাছে আমাদের চলাফেরার স্বাধীনতা, শিক্ষার অধিকার এবং মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি। এসব দাবির ক্ষেত্রে কোনো আপস হবে না।’

সীমান্তে এএয়ের নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে, যা রোহিঙ্গাদের অনিশ্চয়তার মধ্যেই রেখেছে। গত ২২ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফি আলম সাংবাদিকদের জানান, সীমান্ত বিরোধ মীমাংসার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে ‘সমাধানের পথ খুঁজতে’ অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং জানিয়েছে, তারা আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে কোনো ধরনের ‘সম্পৃক্ততায়’ যাবে না।

তবে এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিক এবং গবেষকেরা বাংলাদেশ সরকারকে সরাসরি এবং কূটনৈতিকভাবে এএয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। সম্পর্কের বর্তমান অবস্থান এখনো অনিশ্চিত।

নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের সাবেক এক জেলা আইন কর্মকর্তা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অনেকাংশে রাখাইন রাজ্যের শাসনব্যবস্থার ওপর নির্ভর করবে। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বর্তমানে কোনো আইনগত কাঠামো নেই। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অপরিহার্য।’

প্রায় ৩০টি আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সংগঠন গত ২৩ ডিসেম্বর আরাকান আর্মিকে (এএ) রাখাইন রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, একটি অন্তর্বর্তী পরামর্শক কমিটি গঠন করতে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের একটি জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এবং এএয়ের যোদ্ধাদের জন্য একটি প্রকাশ্য আচরণবিধি গ্রহণ ও প্রয়োগ করতে আহ্বান জানায়।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখার কাছে মন্তব্য চেয়ে আরএফএ যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।

এদিকে, রাখাইনের পায়াকতাউ টাউনশিপের একটি শিবিরে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা খাদ্যসহায়তা না পাওয়ার কারণে চরম সংকটে রয়েছে। শুক্রবার তারা আরএফএকে জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা কোনো সহায়তা পায়নি।

পায়াকতাউয়ের আহ নউক ইয়ে গ্রামের এক শিবিরের বাসিন্দা জানিয়েছেন, খাদ্যসংকটের কারণে বাস্তুচ্যুতরা চালের পাতলা ভাত খেয়ে বেঁচে আছে। ওই বাসিন্দা বলেন, ‘শিবিরে শুকনো চাল অত্যন্ত জরুরি। কারণ, কিছু বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি অনাহারে ভুগছে। আমাদের কোনো কাজ নেই এবং অন্যদের কাছ থেকে ঋণ করতে বাধ্য হচ্ছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম আমাদের পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলছে।’

শিবিরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে এক গর্ভবতী নারী, এক বৃদ্ধ ও এক শিশু চিকিৎসা, ওষুধের অভাবে এবং অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা রাখাইন রাজ্যে তাদের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ সীমিত করেছে।

এ ছাড়া স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও বাধা দেওয়া হয়েছে। নভেম্বর মাসে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছে, মার্চ ও এপ্রিল মাসে রাখাইন রাজ্যে প্রায় ২০ লাখ মানুষ খাদ্যসংকটে পড়তে পারে, কারণ পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নেই।

রাখাইন রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ও জান্তার মুখপাত্র হ্লা থেইনের কাছে খাদ্যসংকট নিয়ে আরএফএ মন্তব্য চাইলেও শুক্রবার পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছেই, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল-জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ও বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে সেই এলাকার কাছেই, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা ও এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই ঘটনার দায় এড়ানোর উপায় খুঁজতে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখপাত্র ইলাই ফেল্ডস্টাইন গত সোমবার রাতে ইসরায়েলের ‘কান’ নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিস্ফোরক দাবি করেছেন।

গোপন নথি ফাঁসের দায়ে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি হওয়া ফেল্ডস্টাইন এই প্রথম সরাসরি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনলেন।

ইলাই ফেল্ডস্টাইন জানান, ৭ অক্টোবরের সেই রক্তক্ষয়ী হামলার ঠিক পরেই নেতানিয়াহু তাঁকে ‘প্রথম কাজ’ হিসেবে দিয়েছিলেন—কীভাবে জবাবদিহি বা দায়বদ্ধতার প্রশ্ন থেকে রেহাই পাওয়া যায় তার উপায় বের করা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘হামলার পর নেতানিয়াহু আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘এখন কী ধরনের সংবাদ প্রচার হচ্ছে? তারা কি এখনো দায়বদ্ধতার কথা বলছে?’’ তাঁকে তখন বেশ আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল। নেতানিয়াহু চেয়েছিলেন এমন কিছু বলা হোক, যাতে গণমাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে যে ঝড় উঠেছে, তা স্তিমিত হয়ে যায়।’

ফেল্ডস্টাইন আরও দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যেন যেকোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ‘দায়বদ্ধতা’ (Responsibility) শব্দটি ব্যবহার না করা হয়।

তবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এই সাক্ষাৎকারকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। হিব্রু সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং নিজের অপরাধ থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে এক ব্যক্তি এমন ডাহা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

কে এই ইলাই ফেল্ডস্টাইন

ইলাই ফেল্ডস্টাইন নেতানিয়াহুর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি দুটি বড় কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। গোপন নথি ফাঁস—গত আগস্টে গাজায় ছয় জিম্মি নিহতের পর প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে একটি জার্মান সংবাদমাধ্যমে সামরিক গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে তাঁর বিচার চলছে। কাতারগেট স্ক্যান্ডাল—নেতানিয়াহুর হয়ে কাজ করার সময় কাতারের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মধ্যে তিনি একজন।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন অপহৃত হয়। এর জবাবে ইসরায়েলের টানা দুই বছরের যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামরিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়। অনেকে মনে করেন, এই ব্যর্থতার দায় ঠেকানোর জন্য নেতানিয়াহু বরাবরই স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনে বাধা দিয়ে আসছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা ও কনস্যুলার সেবা স্থগিতের সিদ্ধান্তে কলকাতার আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা এখন যথেষ্ট শঙ্কিত। তাই তারা দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ ও যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক, তুলা, সবজি এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়। বিপরীতে সেখান থেকে আমদানিপণ্য হিসেবে আসে প্রক্রিয়াজাত চামড়া। কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্টের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার আঞ্চলিক কমিটির সদস্য জিয়া নাফিস বলেন, ‘প্রতি বছর কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এবং কসবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের মাধ্যমে প্রায় ১২৫ কোটি টাকার প্রক্রিয়াজাত চামড়া আমদানি করা হয়। এই চামড়া মূলত ব্যাগ তৈরির কাজে লাগে। এখানকার চামড়ার চেয়ে গুণগত মান আলাদা এবং দাম কিছুটা সস্তা হওয়ায় আমরা সেখান থেকে আমদানি করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়, তবে আমদানিকারকরা ঠিক তেমনই সমস্যায় পড়বেন, যেমনটা হয়েছিল চীনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সময়।’ নাফিসের মতে, চামড়া একটি প্রাকৃতিক পণ্য, তাই এর মান একেক লটে একেক রকম হয়। আমদানির আগে সরাসরি গিয়ে মান যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। ভিসা না থাকলে সশরীরে পণ্য দেখা সম্ভব হবে না, ফলে পণ্যের গুণগত মান নিয়ে ঝুঁকি থেকে যায়। ব্যবসা সচল রাখতে ভ্রমণ প্রক্রিয়া সহজ করা দরকার।

গত সোমবার নিজ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের মুখে দিল্লির কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আগরতলার মিশন ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত নোটিশও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানির এখন ভরা মৌসুম। ঠিক এই সময়েই এমন স্থগিতাদেশ এল। এক রপ্তানি প্রতিনিধি জানান, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ ঈদ পর্যন্ত পোশাকের চাহিদা খুব বেশি থাকে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৬০ টন পোশাক রপ্তানি হয়।’ তিনি আরও জানান, বর্তমানে ইন্ডিগোর একটি কার্গো ফ্লাইট কলকাতা থেকে ঢাকা শুধু পোশাকই নিয়ে যায়, অথচ এখন আরও কার্গো ফ্লাইটের প্রয়োজন ছিল।

বেঙ্গানি কমোডিটিসের পরিচালক এবং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের সাবেক আঞ্চলিক চেয়ারম্যান বিমল বেঙ্গানি জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি আগে প্রতি মাসে বাংলাদেশে যেতাম। গত এক বছরে একবারও যাইনি। বাণিজ্য অনেক কমে গেছে। আগে প্রতিদিন পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ৬০০ ট্রাক বাংলাদেশে যেত; এখন তা নেমে এসেছে ৮ শতে। সমস্যা মেটানো আর নতুন বাজার খোঁজার জন্য ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করাটা খুব জরুরি।’

বিমল বেঙ্গানি মূলত পোলট্রি ফিড, মসলা এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করেন। তিনি যোগ করেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য গড়ে উঠেছে পারস্পরিক আস্থা ও যোগাযোগের ওপর। আমরা নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগকে সম্মান করি, তবে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত ভিসা সমস্যার সমাধান চাই। ব্যবসায়ী, রোগী এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকা দুই দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিকে কলকাতা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এয়ারলাইনগুলোও চিন্তিত। বাংলাদেশের একটি এয়ারলাইনসের কর্মকর্তা জানান, ‘যাত্রী কমে যাওয়ায় ফ্লাইটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। বর্তমানে যেসব ফ্লাইট চলছে তাতে যাত্রী ভালোই আছে, কিন্তু ভিসার ওপর কড়াকড়ি শুরু হলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত