Ajker Patrika

কোকেন পাচার: ইন্দোনেশিয়ায় ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড পাচ্ছেন ৩ ব্রিটিশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৫, ১৪: ৫০
বাম দিক থেকে—ফিনিয়াস অ্যামব্রোস ফ্লোট, জোনাথন ক্রিস্টোফার কোলিয়ার এবং লিসা এলেন স্টকার। ছবি: এএফপি
বাম দিক থেকে—ফিনিয়াস অ্যামব্রোস ফ্লোট, জোনাথন ক্রিস্টোফার কোলিয়ার এবং লিসা এলেন স্টকার। ছবি: এএফপি

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এক কেজি কোকেন পাচারের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি তিন ব্রিটিশ নাগরিক। ফায়ারিং স্কোয়াডে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো।

মেট্রোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্তরা হলেন—জোনাথন ক্রিস্টোফার কোলিয়ার (২৮), লিসা এলেন স্টকার (২৯) ও ফিনিয়াস অ্যামব্রোস ফ্লোট (৩১)। বালির দেনপাসার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জোনাথন ক্রিস্টোফার ও লিসা এলেনের লাগেজে সন্দেহজনক বস্তু শনাক্ত হলে তৎক্ষণাৎ আটক করা হয়। প্রসিকিউটররা জানান, ক্রিস্টোফারের লাগেজ থেকে ১০টি অ্যাঞ্জেল ডিলাইট পাউডার এবং লিসার ব্যাগ থেকে কোকেন-সমৃদ্ধ ৭টি ডেজার্ট প্যাকেট ধরা পড়ে। সব মিলিয়ে তাঁদের কাছে ছিল মোট ৯৯৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম কোকেন, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০০ কোটি ইন্দোনেশীয় রুপিয়াহ (প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই মাদকের অর্থমূল্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা।

এ ঘটনার দুই দিন পর একটি হোটেলের পার্কিং এলাকায় ছদ্মবেশী ডেলিভারির ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তার করা হয় ফিনিয়াস অ্যামব্রোস ফ্লোটকে। তাঁকে আলাদাভাবে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে, তিনজনেরই মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ায় মাদক চোরাচালানের দায়ে দোষী সাব্যস্তদের কখনো কখনো গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

প্রসিকিউটর আই মাদে দিপা উম্বারা বলেন, এই মাদক যুক্তরাজ্য থেকে ইন্দোনেশিয়ায় আনা হয়। কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁদের ট্রানজিট ছিল। বালির পুলিশ মাদক ইউনিটের উপপরিচালক পনচো ইন্দ্রিয়ো আগে সাংবাদিকদের জানান, এই তিনজন এর আগেও দু’বার বালিতে মাদক পাচার করেছেন। গত দুবার নজর এড়িয়ে গেলেও এবার ধরা পড়েন তাঁরা।

এই তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাঠের পর তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জুন পর্যন্ত মুলতবি রেখেছেন, ওই দিন সাক্ষীদের জবানবন্দি শোনা হবে। আসামি ও তাঁদের আইনজীবীরা গণমাধ্যমে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসন ও সংশোধন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ৫৩০ জন ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থায় রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯৬ জন বিদেশি—এবং বেশির ভাগই মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে দণ্ডিত। ইন্দোনেশিয়ায় সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাইয়ে। ওই সময় একজন স্থানীয় ও তিনজন বিদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

আরেক ব্রিটিশ নাগরিক, ৬৯ বছর বয়সী লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ড, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইন্দোনেশিয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থায় রয়েছেন। তিনিও মাদক পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালে বালির বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন। তাঁর লাগেজ থেকে ৩ দশমিক ৮ কেজি কোকেন পাওয়া গিয়েছিল।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের তথ্যমতে, ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান মাদক চোরাচালান কেন্দ্র। যদিও মাদক ইস্যুতে সবচেয়ে কড়া আইন আছে যে দেশগুলোতে তার মধ্যে ইন্দোনেশিয়া শুরুর দিকেই থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...