Ajker Patrika

ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান না মেয়ে

আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ১০: ৫৬
ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান না মেয়ে

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের ট্রান্সজেন্ডার মেয়ে আইনত তাঁর নাম ও লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। নতুন পরিচয়ের পাশাপাশি বাবার সঙ্গে কোনো সম্পর্কও রাখতে চান না মাস্কের মেয়ে। বিবিসির খবরে এমনটাই জানানো হয়েছে। 

মাস্কের মেয়ে বলেছেন, ‘আমি আমার জন্মদাতা পিতার সঙ্গে কোনো উপায়ে, কোনো কিছুতেই সম্পর্ক রাখতে চাই না।’ 

আদালতে জমা দেওয়া নথি অনুযায়ী, সম্প্রতি ১৮ বছরে পা দিয়েছেন জেভিয়ার আলেক্সান্ডার মাস্ক। নিজের লিঙ্গ পরিচয় পরিবর্তনের যাবতীয় তথ্য জমা করেছেন মাস্কের মেয়ে। নতুন নামের জন্যও রেজিস্ট্রি করেছেন তিনি। 

জানা গেছে, গত এপ্রিলে সান্তা মনিকার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপ্রিম কোর্টে নাম পরিবর্তন এবং নতুন জন্ম সনদের জন্য পিটিশন করেন মাস্কের মেয়ে। 

পিটিশনে জাস্টিন উইলসনের নাম তাঁর মা হিসেবে উল্লেখ করেছেন জেভিয়ার। তিনি বলেন, ‘আমার জন্মসনদে লিঙ্গের জায়গায় পুরুষ উল্লেখ করা রয়েছে, কিন্তু লিঙ্গ পরিবর্তনের পর বর্তমানে আমি একজন নারী। নতুন পরিচয়পত্রে আমি বাবার নাম উল্লেখ চাই না।’ 

২০০৮ সালে এলন মাস্কের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাঁর স্ত্রী জাস্টিন উইলসনের। তারপর থেকে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন জেভিয়ার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাবার সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে তাঁর। 

প্রসঙ্গত, মে মাসেই রিপাবলিকান পার্টির প্রতি নিজের সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন মাস্ক। এই রিপাবলিকানরাই গোটা দেশে ট্রান্সজেন্ডারদের ক্ষমতা সীমিত করার আইন প্রস্তাব করেছিল। 

২০২০ সালেও এলন মাস্ক ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে একটি বিতর্কিত টুইট করেছিলেন। টেসলা সিইও লিখেছিলেন, ‘আমি সম্পূর্ণরূপে ট্রান্সদের সমর্থন করি। কিন্তু, এই সর্বনামগুলো একটি দুঃস্বপ্নের মতো।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার গাজাবাসীর নতুন হুমকি ঘূর্ণিঝড় বায়রন, ঝুঁকিতে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এবার গাজাবাসীর নতুন হুমকি ঘূর্ণিঝড় বায়রন, ঝুঁকিতে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ

ঘূর্ণিঝড় বায়রন গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন দুর্ভোগের হুমকি দিচ্ছে। এই প্রচণ্ড শীতকালীন ঝড় অবরুদ্ধ অঞ্চলটিতে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে, যার ফলে প্লাবিত তাঁবু থেকে পরিবারগুলো সাহায্যের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছে এবং শত শত মানুষ শুকনো আশ্রয়ের সন্ধানে তাদের আশ্রয়স্থল ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা বুধবার সতর্ক করে বলেন যে—পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত এই ঝড় আকস্মিক বন্যা, তীব্র বাতাস এবং শিলাবৃষ্টির কারণ হতে পারে। ইসরায়েলের দুই বছর ধরে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যার কারণে মানবিক সংকটের কবলে থাকা এই অঞ্চলে এই ধরনের পরিস্থিতি ব্যাপক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেখানে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ তাঁবু, অস্থায়ী কাঠামো বা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে বসবাস করছে।

মানবিক কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁবু এবং পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা মেরামতের সরঞ্জাম প্রবেশের ওপর ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে গাজার এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি অত্যন্ত দুর্বল। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য নেতানিয়াহু সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

দক্ষিণের রাফা শহরে, ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, তাদের দলগুলো ইতোমধ্যেই বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পগুলো থেকে সাহায্যের জন্য জরুরি কল পেয়েছে। পরিবারগুলো ‘প্রবল বৃষ্টির কারণে তাঁবু প্লাবিত হওয়া এবং ভেতরে আটকা পড়ার’ খবর দিয়েছে।

উদ্ধারকারী সংস্থাটি টেলিগ্রামে বলেছে, ‘সীমিত সম্পদ এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব সত্ত্বেও, আমাদের দলগুলো দুর্দশাগ্রস্তদের কাছে পৌঁছাতে এবং সহায়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এবং আল জাজিরার যাচাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিরা তাঁবুর চারপাশে কোদাল দিয়ে পরিখা খনন করছে, যাতে জল ঢুকে তাঁবুগুলো প্লাবিত হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।

gaza-flood-2

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের (ওসি এইচএ) হিসাব অনুসারে, ৭৬১টি বাস্তুচ্যুত আশ্রয়স্থলে থাকা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

কার্যালয়টি জানিয়েছে, এর আগেও সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে ২০০টিরও বেশি জায়গায় বন্যার খবর রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। এর আগের ঝড়গুলো বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থলগুলোকে পয়ঃনিষ্কাশন ও কঠিন বর্জ্য দ্বারা দূষিত করেছে, পরিবারগুলোর তাঁবু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এবং তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে।

গাজা শহর থেকে আল–জাজিরার তারেক আবু আজ্জুম জানিয়েছেন, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়েছে যে—উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত গাজার জনগণের জন্য বিধ্বংসী পরিণতি বয়ে আনতে পারে। বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পগুলো যে অনুর্বর, খোলা জায়গায় তৈরি করা হয়েছে, তা বন্যায় অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, মানুষের জন্য উপলব্ধ তাঁবুগুলো সাধারণত দুর্বল এবং প্রায়শই ছেঁড়া থাকে, যা প্রবল বৃষ্টি থেকে সামান্যই সুরক্ষা দেয়। এই বৃষ্টিতে পরিবারগুলোর অবশিষ্ট সম্পত্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমুদ্রে মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

মার্কিন সামরিক বাহিনী ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদকবাহী সন্দেহে বিভিন্ন নৌযানে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩টি নৌযানে ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে এসব হামলায় অন্তত পাঁচজন প্রথম বিস্ফোরণে বেঁচে গিয়ে পানিতে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ভাগ্য নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

সিএনএন জানিয়েছে, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মার্কিন বাহিনী প্রথম হামলাটি চালায় গত ২ সেপ্টেম্বর। ওই হামলায় একটি নৌযান ধ্বংস হলেও দুই ব্যক্তি জীবিত ছিলেন। পানিতে সাঁতার কাটছিলেন তাঁরা। কিন্তু এরপরই দ্বিতীয় আরেকটি হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র ও অসহায় ওই দুজনকে হত্যা করা হয়। এ ক্ষেত্রে মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছে—ডুবন্ত নৌযানে মাদক থাকতে পারে, যা উদ্ধার হলে আবার পাচারে ব্যবহার হতো। এই যুক্তিতেই দ্বিতীয়বার হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান সেই সময়ের জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল ফ্রাঙ্ক ‘মিচ’ ব্রাডলি।

এদিকে অসহায় ও নিরস্ত্র দুজনকে দ্বিতীয় আঘাতে হত্যার ঘটনাটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সমালোচনা করছেন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, যোদ্ধা বা শত্রু যদি আহত বা আত্মসমর্পণকারী অবস্থায় থাকে, তাহলে তাকে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

আবার, গত ১৬ অক্টোবর ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবাহী একটি সাবমেরিনে হামলার পর দুজনকে জীবিতকে উদ্ধার করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে তাদের ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে—এই দুজনকে প্রথমে এল সালভাদরের কুখ্যাত মেগা-প্রিজনে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন পেন্টাগনের আইন উপদেষ্টারা, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি না হয়। পররাষ্ট্র দপ্তর সেই প্রস্তাব তীব্রভাবে বাতিল করে।

গত ২৭ অক্টোবরের আরেক হামলায় মৃতদেহের মধ্যে একজন জীবিত থাকতে পারে—এমন বার্তা পেয়ে ম্যাক্সিকান নৌবাহিনী অনুসন্ধান শুরু করে। তবে কেউ উদ্ধার হয়নি বলা হলেও এখন তাকে মৃত হিসেবেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে—একই ধরনের পরিস্থিতিতে কেন ভিন্ন আচরণ? প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে—নীতি বদলায়নি, পরিস্থিতি বদলেছে। তবে সমালোচকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই অভিযানের বৈধতা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি।

হামলার গতি এখন কমে গেলেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ জানিয়েছেন—মাদকবাহী নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযান ‘মাত্র শুরু হয়েছে’।

এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও সামরিক কৌশল—সবকিছুই নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরওয়েতে থেকেও মাচাদো নোবেল শান্তি পুরস্কার নিতে গেলেন না যে কারণে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: এএফপি
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: এএফপি

ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো নরওয়ের রাজধানী অসলোতেই ছিলেন। তবু নোবেল শান্তি পুরস্কার নেওয়ার জন্য অসলো সিটি হলের অনুষ্ঠানে যাননি। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।

৫৮ বছর বয়সী মাচাদোর আজ বুধবার নরওয়ের রাজপরিবার ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন নেতার উপস্থিতিতে পুরস্কার নেওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই ও ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়াও উপস্থিত ছিলেন।

ভেন্তে ভেনেজুয়েলা দলের এই নেতা গত অক্টোবর শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। নোবেল কমিটি তাঁর ভূমিকা ও গণতন্ত্রের প্রতি ‘অটল’ সমর্থনের জন্য তাঁকে সম্মানিত করে।

ডানপন্থী নানা মতাদর্শে বিশ্বাসী মাচাদো এ পুরস্কারের একটি অংশ উৎসর্গ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, পুরস্কারটি তাঁরই প্রাপ্য ছিল এবং না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

নোবেল ইনস্টিটিউট জানায়, ‘যদিও অনুষ্ঠানে তিনি পৌঁছাতে পারবেন না, তবে মাচাদো নিরাপদ আছেন এবং অসলোতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টিয়ান বার্গ হারপভিকেন এএফপিকে জানান, তিনি আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালের কোনো এক সময়ে অসলো পৌঁছাতে পারেন। অনুষ্ঠানে তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তাঁর মেয়ে আনা কোরিনা সোসা মাচাদো।

ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত এক অডিওবার্তায় মাচাদো বলেন, ‘আমি অসলোতে থাকব, পথে আছি।’

এ ঘোষণা পুরো বিষয়টিকে আরও নাটকীয় করে তুলেছে, কারণ, এর আগে ইনস্টিটিউট জানিয়েছিল, মাচাদোর অবস্থান অজানা। তাঁর অনুপস্থিতির কারণে আগের দিনের নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনও বাতিল করা হয়।

মাচাদোর ওপর এক দশকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং তিনি এক বছরের বেশি সময় ধরে লুকিয়ে আছেন।

ডানপন্থী কঠোর অবস্থানের সঙ্গে সমন্বয়

মাচাদো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। সমালোচকদের মতে, বিষয়টি লাতিন আমেরিকার অন্ধকার অতীত ফিরিয়ে আনছে।

বিশেষ করে, ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলজুড়ে স্বৈরশাসকদের সমর্থন দিয়েছিল। বিভিন্ন লাতিন দেশে অভ্যুত্থান এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করেছিল। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা হয়।

মাচাদো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হস্তক্ষেপকে সমর্থন করায় ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করে ভেনেজুয়েলা সরকার। তিনি ওই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। মাচাদোর দাবি, মাদুরো নির্বাচনে জালিয়াতি করেছেন।

অক্টোবর মাসে নোবেল পাওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ইসরায়েলের পক্ষেও সমর্থন জানান—গাজায় চলমান গণহত্যার মধ্যেই।

মাচাদো আগেও বলেছেন, তাঁর রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলে ভেনেজুয়েলার দূতাবাস ইসরায়েলের জেরুজালেমে স্থানান্তর করবেন, যেমনটি ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে করেছিলেন। লাতিন আমেরিকার আরও কিছু ডানপন্থী নেতা, যেমন আর্জেন্টিনার মিলেই ও ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো একই অবস্থান নিয়েছিলেন।

মাচাদো আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছেন ট্রাম্পপন্থী ‘কট্টোর ডানপন্থী’ মহলের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, মাদুরোর সরকার অপরাধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

গত কয়েক মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবিয়ান ও লাতিন আমেরিকার প্রশান্ত উপকূলে কথিত মাদকবাহী জাহাজে ২০টির বেশি সামরিক হামলা চালিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন, মার্কিন ডেমোক্র্যাট নেতা ও কিছু লাতিন দেশ এই হামলাকে বেআইনি এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিনা বিচারে হত্যার অভিযোগে নিন্দা করেছে।

হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরো বলেছেন, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিপুল তেলসম্পদের দখলের জন্য ‘ক্ষমতার পালাবদল’ করতে চাইছেন। তিনি এমন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অঙ্গীকার করেছেন।

রয়টার্সের দেখা নথি ও সূত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আকাশ বা স্থল হামলার ক্ষেত্রে ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী গেরিলা কৌশলে প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলে মোবাইল নিষিদ্ধের এক বছর পর কী ফল পেল নিউজিল্যান্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে এবং শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা কমাতে ২০২৪ সালের এপ্রিলে বিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নিউজিল্যান্ড সরকার। তবে এক বছর পর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে।

ওই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনায় মনোযোগী হয় এবং প্রযুক্তিজনিত বিভ্রান্তি কমে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাকসন ঘোষণা করেছিলেন—শিশুদের শেখার পরিবেশ আরও ভালো করতেই এই উদ্যোগ। বিশ্বের আরও অনেক দেশ—যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্যও এমন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে।

তবে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রত্যাশিত ফল সব সময় মিলছে না। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় পাওয়া গেছে—কঠোর নিষেধাজ্ঞা আর শিথিল নীতিমালার স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের ফলাফল বা মানসিক স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই।

নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে গবেষকেরা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৭৭ জন শিক্ষার্থীর মতামত নিয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ বলেছে, নিষেধাজ্ঞা তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করেছে এবং সামাজিক মাধ্যম থেকে বিরত রেখেছে। একজন মন্তব্য করেছে, ‘তা না হলে তো সারা দিন ফোনেই কেটে যাবে, যা মানসিকভাবে ভালো নয়।’

তবে অন্যদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। কেউ কেউ জানিয়েছে, পরিবার বা অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তারা উদ্বেগে থাকে। অনেকের অভিযোগ—নীতিমালা সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করা হয় না। কিছু শিক্ষক নিজেরা ফোন ব্যবহার করলেও শিক্ষার্থীদের নিষেধ করা হয়, যা তাদের কাছে অন্যায্য মনে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই গোপনে ফোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

আরও একটি অভিযোগ হলো—নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি। কেউ কেউ বলেছে—‘বড়রা শুধু নিষেধ করে, যেন এতে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

এদিকে, প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প পথও খুঁজে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। যেমন অকল্যান্ডের একটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা ফোনের পরিবর্তে ওয়াকি-টকি ব্যবহার শুরু করেছে।

গবেষকেরা বলছেন—সামগ্রিকভাবে ফোন নিষিদ্ধের পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও দায়িত্বশীলভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা শেখানোই বেশি কার্যকর হতে পারে। খাবার বিরতি বা ক্লাসের বাইরে ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া এবং শিক্ষকদেরও স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল অভ্যাসে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গবেষণাটির সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ বলছে—শিক্ষার্থীরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং সমস্যা সমাধানকারীও। তাই নিষেধাজ্ঞার বদলে তাদের যুক্ত করে বাস্তবসম্মত নীতিমালা তৈরি করাই হবে অধিক কার্যকর পথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত