Ajker Patrika

জাতিসংঘে ইসরায়েলকে তুলোধুনো করলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট, মাথায় চুমু দিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫৫
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলকে তুলোধুনো করে ভাষণ দেওয়ার পর তাঁর কপালে চুমু দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলকে তুলোধুনো করে ভাষণ দেওয়ার পর তাঁর কপালে চুমু দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক দুর্দান্ত সংহতির মুহূর্ত দেখা গেল। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন নিয়ে তীব্র ভাষায় বক্তব্য দেওয়ার পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা তাঁকে আলিঙ্গন করেন এবং মাথায় চুমু দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নিজের বক্তব্যে পেত্রো ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ইসরায়েলিদের ‘নাৎসি’ আখ্যা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তোলেন। পেত্রো প্রস্তাব দেন, এশিয়ার দেশগুলোর নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সামরিক জোট গড়ে তুলে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসরায়েলে অস্ত্রবাহী জাহাজ পাঠানো বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।

পেত্রো তাঁর ভাষণে বলেন, ‘ভদ্রমহোদয়গণ, কোনো জাতিই শ্রেষ্ঠ নয়। ঈশ্বরের মনোনীত জাতি বলেও কিছু নেই। সেটা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল—যে জাতিই হোক না কেন। কেবল অজ্ঞও ডানপন্থী ধর্মান্ধরা এমনটা ভাবতে পারে। আসলে ঈশ্বরের মনোনীত জাতি হলো পুরো মানবজাতি।’

এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বকে আক্রমণ করে বলেন, তারা অভিবাসনকে অজুহাত হিসেবে তুলে ধরে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কিছুই করে না, অথচ এই সংকট প্রতিদিন জীবনের ওপর আঘাত হানছে। তারা অভিবাসনকে কাজে লাগায় শ্বেতাঙ্গ আর বৃদ্ধদের ভোট পাওয়ার জন্য, কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে এ নিয়ে নীরব থাকে।

জাতিসংঘ বিষয়ে পেত্রো বলেন, জাতিসংঘকে এখনই বদলাতে হবে। একটি পরিবর্তিত ও মানবিক জাতিসংঘকে অবশ্যই আগে গাজায় গণহত্যা থামাতে হবে।

এরপর ভাষণ শেষ হলে পেত্রোকে আলিঙ্গন করে তাঁর মাথায় চুমু দেন লুলা। তাঁর এই অঙ্গভঙ্গি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দ্রুতই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও জাতিসংঘের কূটনীতিকেরা একে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। অনেকে এটিকে পেত্রোর বক্তব্যের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন হিসেবেও দেখেন।

গাজার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পেত্রো ইসরায়েলের কড়া সমালোচক। জাতিসংঘে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি নাৎসি জার্মানির প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের নাম টেনে আনেন। পেত্রোর দাবি, আজকের বিশ্বে গাজার খবর প্রচারে যেন গোয়েবলস নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, আজকের সবচেয়ে বড় ইহুদিবিদ্বেষ হলো ‘হিটলারের গণহত্যার পুনরাবৃত্তি করা, তবে এবার তা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে’।

পেত্রোর এসব বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদি সংগঠনগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা নাৎসি তুলনা ও এ ধরনের ভাষাকে নিন্দা করেছে। শুধু কথায় নয়, পেত্রোর অবস্থান কলম্বিয়ার নীতিতেও প্রতিফলিত হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে পেত্রো ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নাৎসি বলে তুলনা করার পর ইসরায়েল কলম্বিয়ায় নিরাপত্তা সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধ করে। পরে কলম্বিয়াও ইসরায়েলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনা পুরোপুরি স্থগিত করে।

এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে পেত্রো ঘোষণা দেন, কলম্বিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। তিনি ইসরায়েলি নেতৃত্বকে ‘গণহত্যাকারী’ আখ্যায়িত করেন। এ ছাড়া কলম্বিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় অংশ নিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আবেদন করেছে।

জাতিসংঘে লুলার প্রকাশ্য সমর্থনের পর গাজা ইস্যুতে কূটনৈতিক অঙ্গনে লাতিন আমেরিকার ঐক্য এখন নতুন এক প্রতীকী চিত্র পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মার্কিন এফ–৩৫ পেয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক সৌদি আরব, আবদার ইসরায়েলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের আবদার, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ–৩৫ পেয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক সৌদি আরব। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের আবদার, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ–৩৫ পেয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক সৌদি আরব। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সৌদি আরবের এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিরোধিতা করছে না। তবে দেশটি আবদার, এই চুক্তি রিয়াদের সঙ্গে তেল আবিবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তে করুক যুক্তরাষ্ট্র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে এফ–৩৫ ক্রয়ের চুক্তি, মার্কিন-সৌদি নিরাপত্তা চুক্তি এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা হবে এই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয়। তবে লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, এই সফরে সৌদি–ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ আলোচনার সম্ভাবনা কম।

গত মাসে ট্রাম্প সৌদি যুবরাজকে ফোনে বলেন, গাজা যুদ্ধ শেষ হওয়ায় তিনি আশা করছেন সৌদি আরব ধীরে ধীরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে এগোবে। এরপর, গত শুক্রবার ট্রাম্প ওয়াশিংটন থেকে ফ্লোরিডায় যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এমবিএসের সঙ্গে সৌদি–ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আশা করছি, সৌদি আরব অচিরেই আব্রাহাম চুক্তির সঙ্গে যুক্ত হবে।’ ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি নিয়ে ভাবছেন, যার মধ্যে এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রিও অন্তর্ভুক্ত।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, তারা সৌদি আরবের এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিরোধিতা করছে না। তবে তারা এই চুক্তিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করার শর্ত হিসেবে দেখতে চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, ‘আমরা ট্রাম্প প্রশাসনকে জানিয়েছি, সৌদি আরবকে এফ–৩৫ সরবরাহ করা সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের শর্তে হতে হবে।’

অপর ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো কূটনৈতিক ফলাফল ছাড়া সৌদি আরবকে এফ–৩৫ দেয়, তাহলে সেটি ‘ভুল এবং প্রতিক্রিয়াশীল হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তুরস্ককে এফ–৩৫ দেওয়ার কঠোর বিরোধিতা করি, কিন্তু সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এমন অস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের ততটা উদ্বেগ নেই—যদি এই চুক্তি আব্রাহাম চুক্তির অংশ হিসেবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ হয়, যেমনটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে রয়েছে।’

ইসরায়েল বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ যার কাছে এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান আছে। সৌদি আরবকে এই যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হলে আঞ্চলিক সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তিত হবে এবং ইসরায়েলি সামরিক সুবিধার উপর এর প্রভাব পড়বে।

২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল সম্মত হয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে পারবে, তবে কয়েকটি নিরাপত্তা নিশ্চয়তার শর্তে। তবে বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিমানের ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার দাবি থাকায় চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয়নি।

যদি সৌদি আরবের সঙ্গে এফ-৩৫ চুক্তি হয়, ইসরায়েল সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনুরূপ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইবে। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, মূল উদ্বেগ হলো—সৌদি আরব ইসরায়েলের তুলনায় অনেক কাছাকাছি। তিনি বলেন, ‘এফ–৩৫ যুদ্ধবিমানের সৌদি আরব থেকে ইসরায়েলে পৌঁছানো মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার।’

ইসরায়েল সম্ভবত এটাও চাইবে যে, সৌদি আরবকে সরবরাহ করা কোনো এফ-৩৫ পশ্চিম সৌদি আরবের কোনো বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হবে না। মার্কিন কর্মকর্তারা সৌদি প্রশাসনকে জানিয়েছে—তারা আশা করছে এই ইস্যুতে কিছু অগ্রগতি হবে ট্রাম্প-এমবিএসের বৈঠকের সময়। যদিও তারা স্বীকার করছে, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে ফারাক এখনো অনেক বেশি।

মূল ফারাকটি সৌদি আরবের একটি দাবি নিয়ে। সেটি হলো—ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘একটি বিশ্বাসযোগ্য, অপরিবর্তনীয় এবং কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য পথে’ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। নেতানিয়াহু এ পর্যন্ত তা অস্বীকার করেছেন।

দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন তারা আশা করছেন ট্রাম্প এমবিএসের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর দাবিগুলো নরম করার জন্য চাপ দেবেন এবং বৈঠকটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি আলোচনা শুরু করবে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে। এসব আলোচনা আগামী মাসগুলোতে বাস্তব রূপ নিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মধ্যপ্রাচ্যে ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ জানালেন জ্যোতির্বিদেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩১
ঈদের নামাজ শেষে আলিঙ্গন করছে দুই শিশু। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঈদের নামাজ শেষে আলিঙ্গন করছে দুই শিশু। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুসলমান পবিত্র মাস রমজান শুরু হতে পারে আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি। আর এবার রমজান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সে হিসাবে মুসলমানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে ২০ মার্চ। এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বরাত দিয়ে এমনটিই জানিয়েছে গালফ নিউজ।

জ্যোতির্বিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতর আগামী ২০ মার্চ, শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে পারে। আমিরাত জ্যোতির্বিদ্যা সমিতির (এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি) চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান এই পূর্বাভাস দিয়েছেন।

আল জারওয়ান জানিয়েছেন, ১৪৪৭ হিজরি সালের রমজান মাস শুরু হওয়ার চাঁদ ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার দেখা যেতে পারে। তবে ওই সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার পরিস্থিতি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এই হিসাব অনুযায়ী, রমজান মাস সম্ভবত ১৯ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে এবং ত্রিশ দিন স্থায়ী হতে পারে।

যদি জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনা অনুযায়ী রমজান মাস পূর্ণ ৩০ দিন স্থায়ী হয়, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুমোদিত ছুটির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেখানকার বাসিন্দারা একটি দীর্ঘ ছুটি পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ১৯ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে ২২ মার্চ রোববার পর্যন্ত মোট চার দিনের সাপ্তাহিক ছুটি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং কর্মস্থল শুরু হবে পরের সোমবার।

যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব ওপরে উল্লেখিত তারিখ নির্দেশ করছে, তবে ইসলামি ক্যালেন্ডারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবের চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণ সংশ্লিষ্ট দেশের চাঁদ দেখা কমিটি নিকটবর্তী সময়ে পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নির্ধারণ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেক্সিকোতে জেন-জি বিক্ষোভ, পুলিশের বলপ্রয়োগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ২১
মেক্সিকো সিটিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। ছবি: এএফপি
মেক্সিকো সিটিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। ছবি: এএফপি

মেক্সিকোজুড়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান অপরাধ, দুর্নীতি আর আইনের শাসনের অভাবের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের আয়োজন করেন জেনারেশন জেডের তরুণেরা। এই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে বল প্রয়োগ করেছে পুলিশ। খবর আল জাজিরার

স্থানীয় সময় গতকাল শনিবারের মিছিলে বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশ নেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রবীণ কর্মী ছাড়াও অংশ নেন মিচোয়াকান রাজ্যের নিহত মেয়র কার্লোস মানসোর সমর্থকেরা। চলতি মাসের শুরুর দিকে ডে অব দ্য ডেড উৎসবের এক জনসমাগমে তাঁকে গুলিতে হত্যা করা হয়।

মেক্সিকো সিটিতে মুখোশধারী কয়েকজন বিক্ষোভকারী জাতীয় প্রাসাদের চারপাশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেললে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ওই প্রাসাদেই থাকেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।

মেক্সিকো সিটির জননিরাপত্তা সচিব পাবলো ভাসকেস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘটনাটিতে ১০০ পুলিশ আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জনকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। আরও ২০ জন সাধারণ মানুষও আহত হয়েছে বলে ভাসকেস স্থানীয় গণমাধ্যম মিলেনিওকে জানান। তিনি বলেন, ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আরও ২০ জনকে প্রশাসনিক অপরাধের কারণে আটক দেখানো হয়েছে।

মেক্সিকোর দৈনিক এল ইউনিভার্সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা জাতীয় প্রাসাদের সীমানায় ঢুকে পড়লে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং পাথর নিক্ষেপ করে। পত্রিকাটি আরও জানিয়েছে, পুলিশ কয়েক মিনিট ধরে জোকালো প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর এলাকা খালি করে দেয় এবং শেষ দলটিকেও ছত্রভঙ্গ করে।

বিক্ষোভের আয়োজন করে ‘জেনারেশন জেড মেক্সিকো’ নামে একটি গোষ্ঠী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো তাদের ‘ঘোষণাপত্রে’ বলা হয়, তারা দলনিরপেক্ষ এবং সহিংসতা, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে অতিষ্ঠ মেক্সিকোর তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিসেন্তে ফক্স এবং ধনকুবের রিকার্দো সালিনাস প্লিয়েগো বিক্ষোভের পক্ষে প্রকাশ্যে বার্তা দেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের অভিযোগ, ডানপন্থী দলগুলো জেন-জি আন্দোলনে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বট ব্যবহার করে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেখাচ্ছে।

এই বছর এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশেও জেন জেড প্রজন্ম বৈষম্য, গণতান্ত্রিক পশ্চাৎপসারণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সেপ্টেম্বরে নেপালে জেন-জি আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন। মাদাগাস্কারেও একই মাসে বড় বিক্ষোভ হয়। পানির সংকট ও বিদ্যুতের স্থায়ী ঘাটতিতে ক্ষোভ থেকে শুরু হওয়া ওই আন্দোলন সরকারের বৃহত্তর ব্যর্থতা ও দুর্নীতি উন্মোচন করে দেয়। সপ্তাহজুড়ে অস্থিরতার পর সরকার ভেঙে যায়, প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়ে পালান এবং নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানে আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত অন্তত ৭

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানের হায়দরাবাদ এলাকায় একটি আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের হায়দরাবাদ এলাকায় একটি আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হায়দরাবাদের লতিফাবাদ এলাকার এক আতশবাজির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় আহত ছয়জন এখনো চিকিৎসাধীন। গতকাল শনিবার গভীর রাতে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের।

বিস্ফোরণের পরপরই লতিফাবাদ সহকারী কমিশনার সাউদ লুন্দ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত দুজন মারা গেছেন। চার-পাঁচ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’ পরে উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও চারটি মরদেহ বের করেন। এতে মৃতের সংখ্যা প্রথমে ছয়ে পৌঁছায়। সর্বশেষ আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করায় তা বেড়ে সাত হয়েছে।

হায়দরাবাদের মেয়র কাশিফ আলী শোরো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘অবৈধ কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এর আগে সাউদ লুন্দ জানান, ওই বাড়িতে লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে আতশবাজি তৈরি করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘যে কক্ষে আতশবাজি বানানো হচ্ছিল, বিস্ফোরণে সেই ঘরটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো ঘরটি এবং সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে, কয়েকজন শিশুসহ বেশ কয়েকজন ভেতরে কাজ করছিল। আমাদের দল তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।’

বিস্ফোরণের পরই আগুন ধরে যায় এবং ভবনের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পরপরই সেই ঘরসহ পাশের অন্যান্য অংশেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দল এখনো আগুন নেভানোর কাজ করছে।

এদিকে, সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর মুখপাত্র। মুখ্যমন্ত্রী কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কেও অডিট করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ বলেছেন, বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবহেলা বরদাশত করা হবে না।

এ ধরনের আরেকটি বিস্ফোরণ এর আগে চলতি বছরের আগস্টে করাচির সাদ্দারে একটি আতশবাজির গুদামে হয়েছিল। ওই ঘটনায় ছয়জন নিহত হন, আরও কয়েকজন আহত হন। দোতলা ভবনটিতে আতশবাজির গুদামের পাশাপাশি চিকিৎসাসামগ্রীর দোকানও ছিল।

এফআইআরে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা বিপুল পরিমাণ আতশবাজি এলোমেলোভাবে ও কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়াই মজুত করেছিলেন। তাদের অবহেলা ও বেপরোয়া আচরণের কারণেই মূল্যবান জীবনহানি, আহত হওয়ার ঘটনা এবং বড় ধরনের সম্পদহানি ঘটে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের একজন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। আরেকজন, যিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, বিস্ফোরণের পর গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত