Ajker Patrika

বিল গেটস করোনাভাইরাস তৈরি করেছেন?

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩: ০১
বিল গেটস করোনাভাইরাস তৈরি করেছেন?

২০১৫ সালের মার্চ মাস। কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে টেড (টেকনোলজি, এন্টারটেইনমেন্ট, ডিজাইন) কনফারেন্সে হাজির হয়ে বিল গেটস এক চরম হুঁশিয়ারি দিলেন।

সম্মেলনে তিনি বললেন, ‘বিশ্বে পরবর্তী মহামারির জন্য আমরা প্রস্তুত নই’। বিশ্বের কাছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভালোভাবে প্রস্তুত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন বিল গেটস। তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী কয়েক দশকের মধ্যে এক কোটি মানুষ মারা যাবে। কোনও মিসাইল নয়, জীবাণুই মারবে। যা যুদ্ধের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক হবে’।

তার এই দূরদর্শী বক্তব্য সেসময় বিবিসিসহ কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রচার পেয়েছিল। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ তার কথার খুব একটা গুরুত্ব দেননি।

কিন্তু নভেল করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর তার সেই বক্তৃতা বারবার শুনছে মানুষ। বিল গেটস কী বলেছেন সেটিতে নয়, কেন তিনি এমনটি বলেছিলেন, সে বিষয়েই বেশিরভাগ মানুষের আগ্রহ।

বিল গেটসকে নিয়ে নানা বিতর্ক আছে। অনেকের অভিযোগ, বিল গেটস আসলে বিশ্বের এলিট বা সুবিধাভোগী শ্রেণীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য কিছু মানুষের বিশ্বাস, বিল গেটস আসলে পৃথিবীকে জনশূন্য করার চেষ্টা করছেন।

আবার অন্য একদল আছেন, যাদের অভিযোগ, বিল গেটস টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করছেন। কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে অভিযোগ তুলছেন, বিল গেটস টিকার নামে সব মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দিতে চান।

যড়যন্ত্র তত্ত্বের শুরু যেভাবে
রোরি স্মিথ ‘ফার্স্ট ড্রাফট নিউজ’ নামের একটি ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী ওয়েবসাইটে কাজ করেন। তিনি বলছেন, বিল গেটসকে নিয়ে বহু রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো হয়েছে।

করোনাভাইরাসের সঙ্গে বিল গেটসকে জড়িয়ে যেসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো হয়েছে, সেগুলো শুধু গতবছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তিন মাসে টেলিভিশন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তত ১২ লাখবার উল্লেখ করা হয়েছে। এই সমীক্ষাটি চালিয়েছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং জিগনাল ল্যাবস।

এরকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সাধারণত ফেসবুক গ্রুপে ছড়ানো হয়, এরপর সেগুলো শেয়ার হয় লাখ লাখবার।

ফার্স্ট ড্রাফট নিউজ দেখেছে, চীনা শর্ট ভিডিও শেয়ারিং সাইট টিকটক এ ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের নতুন আখড়া হয়ে উঠেছে।

বিল গেটসকে নিয়ে বেশকিছু আজগুবি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব চালু আছে। এ নিয়ে বিবিসির অ্যান্টি-ডিসইনফরমেশন বা ভুয়া তথ্যবিরোধী টিম একটি অনুসন্ধান চালিয়েছে।

টিকা নিয়ে পরীক্ষা ও আফ্রিকায় মৃত্যু
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন আফ্রিকা এবং ভারতে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে। এর ফলে সেখানে হাজার হাজার শিশু হয় মারা গেছে, নয়তো অপূরণীয় শারীরিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। একটি পোস্টে তো এমন দাবিও করা হয়েছে যে, এ কারণে ভারতে বিল গেটসের বিচার চলছে।

টিকার নামে গর্ভপাতের ওষুধ
কেনিয়ায় তিনি ধনুষ্টঙ্কারের এমন টিকা চালু করেছেন যার ভেতরে আসলে আছে গর্ভপাতের ওষুধ।

বিশ্বকে মানবশূন্য করতে চাইছেন গেটস
‘দ্য নিউ আমেরিকান ম্যাগাজিন‌’ বলে একটি ওয়েবসাইটের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এখানেও সেই একই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব- বিল গেটস টিকা আর গর্ভপাতের মাধ্যমে বিশ্বকে মানবশূন্য করতে চাইছেন। এটিতে আবার বিল গেটসের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গাঁটছড়া আছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ভিডিও শেয়ার হয়েছে সাড়ে ছয় হাজারবার এবং দুই লাখবারের বেশি এটি দেখা হয়েছে।

মার্কিন নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন বিল গেটস টিকার মাধ্যমে মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢোকাতে চান।মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকাতে চান
বেশ কিছু ভিডিওতে অভিযোগ করা হচ্ছে, বিল গেটস কোভিড টিকার মাধ্যমে মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢোকাতে চান। ইউটিউবে এমন ভিডিও লাখ লাখ শেয়ার হয়েছে।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ব্যাখ্যা
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস, নিজের এবং স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বের জনস্বাস্থ্যের জন্য শত শত কোটি ডলার ঢেলেছেন। এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে কোভিড-১৯ ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলেন?

ইউনিভার্সিটি অব মায়ামির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক জোসেফ উসিনস্কি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সম্পর্কে বেশ কিছু বই লিখেছেন। তার মতে, বিল গেটস ধনী এবং বিখ্যাত বলেই ষড়যন্ত্রকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।

অনেকের অভিযোগ, বিল গেটস আসলে বিশ্বের এলিট বা সুবিধাভোগী শ্রেণীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন।‘বেশিরভাগ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আসলে ক্ষমতাবান লোকদের নিয়েই, তাদের বিরুদ্ধে মারাত্মক কোনো কিছুর অভিযোগ আনা হয়‌’, বলছেন তিনি।

‘আর ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো প্রায় একই রকম, শুধু নামগুলো বদলে যায়। বিল গেটসের আগে ছিল জর্জ সোরোস, কিংবা রথচাইল্ডস বা রকেফেলারদের নাম’। যোগ করেন অধ্যাপক উসিনস্কি।

বেশিরভাগ ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মৃত্যু ঘটে আসলে খুব বেশি ডালপালা গজাবার আগেই। তবে কিছু টিকে থাকে। সাধারণত যেসব তত্ত্বে ভিলেনরা থাকে খুব বড় কেউ এবং যে ইস্যুতে মানুষের খুব বেশি আগ্রহ থাকে, সেরকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বেশ দীর্ঘায়ু পায়।

জোসেফ উসিনস্কি বলেন, ‘ধনী লোকজন এবং বড় করপোরেশনগুলোর বিরুদ্ধে মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের এই যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, এর কারণ এরকম আশংকা আমাদের মধ্যে আছে। এরকম ভয় বা আশংকা আসলে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের এক বিরাট মশলা’।

জোসেফ উসিনস্কি মনে করেন, এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। কিন্তু তারপরও মানুষ এগুলো বিশ্বাস করতে পছন্দ করে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক চতুর্থাংশ মানুষ এবং ৪৪ শতাংশ রিপাবলিকান বিশ্বাস করে, বিল গেটস কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহার করে মানুষের ত্বকের নিচে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দিতে চান। এই জরিপটি চালিয়েছিল ইয়াহু নিউজ এবং ইউগভ।

বিল গেটসকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেক ব্যঙ্গাত্মক ছবিও ছড়িয়েছে।যেমন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গত বছর একটি গবেষণার জন্য তহবিল দিয়েছিল, যেটি চালিয়েছিল ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। কোনো রোগীর টিকা নেওয়ার রেকর্ড বা ইতিহাস বিশেষ কোনো রঙের প্যাটার্নের মধ্যে সংরক্ষণ করা যায় কিনা, সেটা দেখা ছিল এই গবেষণার লক্ষ্য। খালি চোখে এটি দেখা যাবে না এবং এটি টিকা দেওয়ার সময়ই মানুষের ত্বকের নিচে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বের শুরুটা কীভাবে তা অনুমান করা কঠিন। কিন্তু এরকম আজগুবি তত্ত্ব বহু মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি ইন্টারনেট অনেক সহজ করে দিয়েছে।

উসিনস্কির মতে, ইন্টারনেট যুগের আগে এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তাদের নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের বদৌলতে ভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তার মানুষ, ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দ্রুত এসব ছড়িয়ে যাচ্ছে। কাজেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এখন ইন্টারনেটের আগের জমানার চেয়ে অনেক বেশি মূলধারায় চলে আসার সুযোগ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিশ্ব মহামারির সময় আরও বেশি বাড়ছে। কারণ মানুষ এখন মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেক বেশি নাজুক অবস্থায় আছে।

তার মতে, মানুষ এরকম সংকটের সময় সবার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কোনো কিছুর অর্থ বোঝার চেষ্টা করে।

উসিনস্কি বলেন, ‘যে কোনো তথ্য পেলেই আমরা তার মানে বোঝার চেষ্টা করি। আর তখনই শুরু হয় গুজব ছড়ানোর কাজ। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তখন এই শূন্যস্থান পূরণ করতে থাকে, বিশেষ করে বিল গেটস জাতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় এ পর্যন্ত ৩০ কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। এর মধ্যে বিপুল অর্থ ছাড় করা হয়েছে।

বিল গেটসকে নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব! ফ্যাক্ট নাকি গুজব?বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন কী বলছে?
এক বিবৃতিতে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বলেছে, আমাদের সম্পর্কে অনলাইনে যেসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে এবং এর ফলে জনস্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হতে পারে সেটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

‘এরকম একটা সময়, যখন বিশ্ব এক অভূতপূর্ব স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক সংকটের মুখে, তখন কিছু লোক যে এভাবে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তা খুবই পীড়াদায়ক। অথচ এখন আমাদের সবার উচিত মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য সহযোগিতা করা। কোভিড-১৯–এর বিস্তার ঠেকাতে যে ভালো কাজটা এখন আমরা সবাই করতে পারি তা হলো সঠিক তথ্য প্রচার করা’।

বিল গেটস বলেন, তাকে ঘিরে যে এতসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো হচ্ছে সেটি জেনে তিনি বিস্মিত।

‘এরকম পাগলামি যে চলছে, তা আসলেই যন্ত্রণাদায়ক। আমরা যখন টিকা তৈরি করবো, আমরা চাই মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগ মানুষ এই টিকা নিক। এখন যদি তারা এরকম একটা ষড়যন্ত্রের কথা শোনে এবং লোকে টিকা নিতে না চায় তখন তো এই রোগে মানুষের মৃত্যু অব্যাহত থাকবে’।

‘আমি একরকম বিস্মিত যে, এসব আমাকে ঘিরেই বলা হচ্ছে। আমরা তো কেবল অর্থ দিচ্ছি, চেক লিখছি... হ্যাঁ, আমরা চাই শিশুদের যেন রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করা যায়। কিন্তু এর সঙ্গে তো মাইক্রোচিপ বা সেরকম কিছুর সম্পর্ক নেই। এসব শুনলে মাঝে-মাঝে হাসি পায়’, বলেন গেটস।

বিল গেটস এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডেরেক মুলারের অত্যন্ত জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল ‘ভেরিটাসিয়াম (Veritasium)–এ উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, আমার কথা মিলে গেল বলে কোনও সুখানুভূতি নেই আমার। আমার কি আরও প্ররোচিত করা উচিত ছিল?’ মুলার জানতে চেয়েছিলেন যে, কী করে মহামারির ব্যাপারে বিল গেটস এত নিশ্চিত ছিলেন? মাইক্রোসফট প্রধান বলেন, ‘নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি ভাইরাস রয়েছে। সেগুলো একের পর এক আসবে। শ্বাসযন্ত্রের রোগগুলো অত্যন্ত ভয়ের। কারণ সংক্রমিত হওয়ার পরেও মানুষ উড়োজাহাজ কিংবা বাসে চড়ে, চলাফেরা করে। যেখানে ইবোলার মতো ভাইরাস সংক্রমণ হলে হাসপাতালেই কাটাতে হয় অধিকাংশ সময়।’

মুলার ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের ব্যাপারে আলোকপাত করতে বললে বিল গেটস বলেন, এর একটি জলবায়ু পরিবর্তন। এটিতে প্রতি বছর মৃতের সংখ্যা বাড়বে। মহামারিজনিত মৃত্যুর চেয়েও মারাত্মক হবে। অন্যটি ‘বায়ো-টেরোরিজম’। যে ক্ষতি করতে চাইবে, সে নিজের খরচে কোনো ভাইরাস তৈরি করবে। যার ফল মহামারির থেকেও ভয়ঙ্কর হবে।

বিল গেটস স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ফের ভয়ঙ্কর মহামারি আসবে। সেটিতে প্রতিরোধ করার মতো ক্ষমতা মানুষের থাকবে না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত