Ajker Patrika

গোখাদ্যের দুর্মূল্যে গরু বিক্রি

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১৬: ৪৬
গোখাদ্যের দুর্মূল্যে গরু বিক্রি

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মূল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পশুখাদ্যের দাম। এতে করে আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে না পেরে গঙ্গাচড়ার খামারিরা ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছেন। ইতিমধ্যে অনেকে খামার থেকে গরু বিক্রি করে দিয়েছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গঙ্গাচড়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬৮৫ গরুর খামার রয়েছে।

খামারিরা বলছেন, তাঁরা ভেবেছিলেন সামনের কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি করে মোটামুটি ভালো লাভ করা যাবে। কিন্তু এখন লাভ তো দূরের কথা, উল্টো কপালে লোকসানের চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের ভাই ভাই মোড়ের খামারি জাহিদুল ইসলাম লেবু জানান, তাঁর খামারে ফ্রিজিয়ান জাতের ছয়টি গাভি ছিল। এগুলোকে খাওয়াতে প্রতি মাসে তাঁর খরচ হতো ৩৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে দুধ বিক্রি করে প্রতি মাসে পেতেন ৪০ হাজার টাকা। গত মাসে খাওয়ানোর পেছনে খরচ হয়েছে সব মিলিয়ে ৫৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ তিনি এক মাসে লোকসান গুনছেন ১৫ হাজার টাকার মতো। এমন অবস্থায় পড়ে তিনি গাভিগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

কথা হয় একই এলাকার খামারি শফিকুল ইসলাম বাবলুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে ২১টি গরু রয়েছে। ভেবেছিলাম এবার কোরবানির ঈদে গরুগুলো বিক্রি করব, কিন্তু খাবারের দামের কারণে ঈদের আগেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’

গজঘণ্টা ইউনিয়নের রওশানুল ইসলামের খামারে বর্তমানে সাতটি গরু রয়েছে। তিনি বলেন, ‘গত বছর করোনা মহামারির কারণে বিক্রি করতে না পারায় এবার ঈদে বিক্রি করব বলে রেখে দিয়েছিলাম। তবে খাবারের দামের কারণে কিছুদিন আগে একটি গরু এলাকায় জবাই করে বিক্রি করেছি। সেই দিন আমার একটি গরুতে লস হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। যে হারে খাদ্যের দাম বাড়ছে, কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গ্রামে যাঁরা খামারি রয়েছেন, তাঁরা বেশির ভাগই শিক্ষিত বেকার যুবক। তাঁরা চাকরির পেছনে না ছুটে গরু, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষসহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। এখন হঠাৎ করে এভাবে যদি পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খামারগুলো বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে গ্রামে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়বে। সরকারের উচিত খামারিদের পশুখাদ্যের ওপর ভর্তুকি দেওয়া।

গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের পশুখাদ্যের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে।

গঙ্গাচড়া বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া জানান, তাঁরা কিছুদিন আগে যে ফিডের বস্তা ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছেন তা এখন ২ হাজার ১০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া প্রতি বস্তা ভুসির দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা, খুদ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও ধানের কুঁড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকায় পৌঁছেছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জোবাইদুল কবীর বলেন, ‘আমরা খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে তাঁরা দানাদার খাবার না খাইয়ে গরুকে উন্নত জাতের ঘাস চাষ এবং সাইলেস তৈরি করে খাওয়ায়। তাহলে গরু পালনে অনেক খরচ কমে আসবে, তাঁরা লাভবান হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত