আমানুল্লাহ ফেরদৌস

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে, তা ভাবার সময় এসেছে। কারও মানসিকতায় পরিবর্তন আনার জন্য উগ্র ও ফ্যাসিবাদীপ্রবণতা সুফল দেয় বলে মনে হয় না।
আমাদের শিকল ভাঙার সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। প্রায় আট যুগ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হুগলি জেলে বসে গেয়ে উঠেছিলেন ‘এই শিকল-পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল…’। ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে, কবি প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতা অর্জনে কারাবরণ করে শিকল পরার ভীতি দূর করাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
তাঁর আহ্বানে কয় কোটি ভারতীয় ইংরেজদের বিরোধিতা করে শিকল পরে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন? দলে দলে মানুষ কারাবরণ করবে, এটা প্রত্যাশিত নয়। নেতাজি সুভাষ বসুর আহ্বানে শতকোটি বৃহত্তর ভারতবাসীর কয়েক কোটিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেনি। ইংরেজদের তাড়ানোর জন্য তাদের সহযোগিতা নিয়ে কেন কংগ্রেস বা মুসলিম লীগের মতো দল গঠন করতে হলো? ভাবতে হবে সেটাও। কৈবর্ত, পীর-মাশায়েখ, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সূর্য সেনদের বিদ্রোহে ইংরেজরা নাস্তানাবুদ হয়েছে। কিন্তু ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত বা আমজনতা ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে দলে দলে যোগ না দিয়ে তাদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের সহযোগিতাই করে গেছে।
‘চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…’ এই রণসংগীত শুনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সবাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের সেই বিখ্যাত জ্বালাময়ী ভাষণ শুনে বাঙালি প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধার সংখ্যা লাখ ছাড়ায়নি। মাত্র ৯১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা (বর্তমানে সেই সংখ্যা ২ লাখ প্লাস-মাইনাসে গিয়ে পৌঁছেছে) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এটাই স্বাভাবিক। পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন সবাই। কিন্তু পরিবর্তনকে সংগঠিত করতে অল্পসংখ্যক মানুষই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
পাঞ্জাব রেজিমেন্টের যে কয়েক হাজার পাকিস্তানি সৈন্য বর্বরতা চালিয়েছে, তাদের হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়া যেত যদি এ দেশের এক কোটি লোক রাস্তায় নেমে আসত। রাস্তায় নামা তো দূরের কথা, বরং আমরা দরজা-জানালা বন্ধ করে তামাশা দেখেছি। রেডিও শুনে শুনে সময় পার করেছি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছি, সরকারের চাকরি করে বেতন নিয়েছি, কয়জন আমলা আকবর আলি খানের মতো, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বা এইচ টি ইমামের মতো বিদ্রোহ করেছেন? বা সিভিলিয়ান থেকে কয়জন আর সাদেক হোসেন খোকা বা কাদের সিদ্দিকী হতে পেরেছেন? কয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কয়জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, লইয়ার, সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? সে সময় দালালের সংখ্যাও ছিল অনেক। এই রাজাকার গোষ্ঠীই পথ দেখিয়ে মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করিয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করিয়েছে। এ রকম সংকটময় মুহূর্তেও বাম-ডানের বুদ্ধিজীবীরা অনেকেই ঘরেই বসে ছিলেন। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া! ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে কয় লাখ বাড়িতে দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল? হ্যাঁ, এ দেশের মায়েরা তাঁদের সাধ্যমতো মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়ে-পরিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
প্রশ্ন হলো, ভারতবর্ষে শিকল ভাঙার গান কেন ব্যর্থ হয়ে যায় বারবার? স্বাধীনতা চেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি বা অর্জন করেছি। বুঝলাম আমরা ইংরেজদের তাড়িয়েছি, পাঞ্জাবিদের তাড়িয়েছি কিন্তু শিকল যেটা আমাদের পায়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেই শিকল থেকে মুক্তি আমরা পাচ্ছি না কেন? ৭৫ বছর আগে ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরেও পুরো ভারতবর্ষ কেন আজও দারিদ্র্যের অভিশাপমুক্ত হতে পারছে না? ভারতে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক শাসনের পরও কেন এখন হিন্দুত্ববাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে? বাংলাদেশেও কেন ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বহাল রাখা সম্ভব হচ্ছে না? কেন ধর্মীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে?
এই অঞ্চলে রাজা আসে, রাজা যায় কিন্তু উপরিকাঠামোর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না কেন? এর ব্যাখ্যা নির্মোহভাবে খুঁজতে হবে। উত্তর কিছুটা যুক্তিসংগতভাবে দিয়ে গেছেন কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্স ভেবার, কার্ট উইফোগেল, চার্লস মেটকাফ, হামজা আলাভি, ইরফান হাবিব, আর কে মুখার্জি, নাজমুল করিম, আহমদ ছফা, এমনকি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসও।
উৎপাদনপদ্ধতির সেই সব চিন্তাধারা (ডিসকোর্স) আলোচনা না করে বয়স্ক মানুষদের ব্যক্তিগত অঙ্গে যতই বল ছোড়া হোক না কেন, মেয়েরা দশবার বিশ্বকাপ জিতুক না কেন, ইরানের মেয়েরা যতই তাদের হিজাব পুড়িয়ে দিক না কেন, নারীবাদী বলি, মুক্তমনা বলি, শাহবাগি বলি আর যতই তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বা বাম ঘরানার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন পোস্ট দিন না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না; বরং এসব করে সমাজবিজ্ঞানের ‘আদারিং’ তত্ত্বটিকে আরও জোরালো করা হচ্ছে। কিছু উগ্রপন্থীকে বোঝাতে গিয়ে কোটি কোটি বয়স্ক মানুষকে অপমান করা হচ্ছে, তাদের মনোজগতে পরিবর্তন আনার জন্য যুক্তি দিয়ে বোঝানোর পরিবর্তে একধরনের হাস্যকর পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে। এসব করে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে আমাদের অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নারী ও মেয়েশিশুদের উন্নয়নে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কিন্তু পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অনন্য সফলতা এখন পর্যন্ত
দেখাতে পেরেছে।
তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কিছু কিছু আচরণ আসলে উগ্রবাদী ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষেই যায়। এসব আচরণের বিরুদ্ধে তারাও তাদের ডিসকোর্স বানাবে এবং একদিন যদি ইরানের মতো খোমেনিতন্ত্র এখানেও চালু করতে চায়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না, যারা স্লোগান তুলেছিল ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ তারা কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়নি। তাদের রাতারাতি আধুনিক বানানোও সম্ভব হবে না। সমাজে সবার জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, পড়ালেখা শেখাতে হবে, মানুষের সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নতুবা তারা তাহেরী-আহমুদুল্লাহ-ইব্রাহিম হুজুর বা শিশুবক্তার ওয়াজ শুনতে যাবেই। পীরের আস্তানায় গিয়ে মনটাকে শান্ত করতে চাইতেই পারে।
পাঠ্যপুস্তক করতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। একমুখী পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের স্তরে স্তরে সুশাসন দৃশ্যমান হতে হবে। সমাজের মৌলকাঠামোতে হাত দিতে হবে। এসব ব্যাপারে কথা না বলে ‘ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুন’ তত্ত্ব আওড়ালে সুফল কিছু পাওয়া যাবে না।
চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করতে পারবে না; বরং এতে তারা আরও শক্তিশালী হবে! বিশ্ব ইতিহাস তার প্রমাণ! চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে বা বয়স্ক মানুষের পেছনে বল মেরে রেনেসাঁ আসেনি, গির্জার কর্তৃত্ব বিলোপ হয়নি, জারের শাসন ভেঙে পড়েনি কিংবা সামাজিক ইতিহাসে আদিম সাম্যবাদ-দাসপ্রথা-সামন্ততন্ত্রের গর্ভে পুঁজিবাদের বিকাশ হয়নি! সমাজবিজ্ঞানের সমাজ বিবর্তনের ধারাবাহিক ইতিহাসটা ভালো করে পাঠ করতে হবে সবাইকে। বাংলাদেশের নারী-পুরুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাক, সব দেশের নারীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার পাক, এই প্রত্যাশা করি।
লেখক: অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে, তা ভাবার সময় এসেছে। কারও মানসিকতায় পরিবর্তন আনার জন্য উগ্র ও ফ্যাসিবাদীপ্রবণতা সুফল দেয় বলে মনে হয় না।
আমাদের শিকল ভাঙার সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। প্রায় আট যুগ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হুগলি জেলে বসে গেয়ে উঠেছিলেন ‘এই শিকল-পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল…’। ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে, কবি প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতা অর্জনে কারাবরণ করে শিকল পরার ভীতি দূর করাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
তাঁর আহ্বানে কয় কোটি ভারতীয় ইংরেজদের বিরোধিতা করে শিকল পরে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন? দলে দলে মানুষ কারাবরণ করবে, এটা প্রত্যাশিত নয়। নেতাজি সুভাষ বসুর আহ্বানে শতকোটি বৃহত্তর ভারতবাসীর কয়েক কোটিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেনি। ইংরেজদের তাড়ানোর জন্য তাদের সহযোগিতা নিয়ে কেন কংগ্রেস বা মুসলিম লীগের মতো দল গঠন করতে হলো? ভাবতে হবে সেটাও। কৈবর্ত, পীর-মাশায়েখ, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সূর্য সেনদের বিদ্রোহে ইংরেজরা নাস্তানাবুদ হয়েছে। কিন্তু ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত বা আমজনতা ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে দলে দলে যোগ না দিয়ে তাদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের সহযোগিতাই করে গেছে।
‘চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…’ এই রণসংগীত শুনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সবাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের সেই বিখ্যাত জ্বালাময়ী ভাষণ শুনে বাঙালি প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধার সংখ্যা লাখ ছাড়ায়নি। মাত্র ৯১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা (বর্তমানে সেই সংখ্যা ২ লাখ প্লাস-মাইনাসে গিয়ে পৌঁছেছে) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এটাই স্বাভাবিক। পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন সবাই। কিন্তু পরিবর্তনকে সংগঠিত করতে অল্পসংখ্যক মানুষই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
পাঞ্জাব রেজিমেন্টের যে কয়েক হাজার পাকিস্তানি সৈন্য বর্বরতা চালিয়েছে, তাদের হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়া যেত যদি এ দেশের এক কোটি লোক রাস্তায় নেমে আসত। রাস্তায় নামা তো দূরের কথা, বরং আমরা দরজা-জানালা বন্ধ করে তামাশা দেখেছি। রেডিও শুনে শুনে সময় পার করেছি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছি, সরকারের চাকরি করে বেতন নিয়েছি, কয়জন আমলা আকবর আলি খানের মতো, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বা এইচ টি ইমামের মতো বিদ্রোহ করেছেন? বা সিভিলিয়ান থেকে কয়জন আর সাদেক হোসেন খোকা বা কাদের সিদ্দিকী হতে পেরেছেন? কয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কয়জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, লইয়ার, সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? সে সময় দালালের সংখ্যাও ছিল অনেক। এই রাজাকার গোষ্ঠীই পথ দেখিয়ে মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করিয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করিয়েছে। এ রকম সংকটময় মুহূর্তেও বাম-ডানের বুদ্ধিজীবীরা অনেকেই ঘরেই বসে ছিলেন। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া! ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে কয় লাখ বাড়িতে দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল? হ্যাঁ, এ দেশের মায়েরা তাঁদের সাধ্যমতো মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়ে-পরিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
প্রশ্ন হলো, ভারতবর্ষে শিকল ভাঙার গান কেন ব্যর্থ হয়ে যায় বারবার? স্বাধীনতা চেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি বা অর্জন করেছি। বুঝলাম আমরা ইংরেজদের তাড়িয়েছি, পাঞ্জাবিদের তাড়িয়েছি কিন্তু শিকল যেটা আমাদের পায়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেই শিকল থেকে মুক্তি আমরা পাচ্ছি না কেন? ৭৫ বছর আগে ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরেও পুরো ভারতবর্ষ কেন আজও দারিদ্র্যের অভিশাপমুক্ত হতে পারছে না? ভারতে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক শাসনের পরও কেন এখন হিন্দুত্ববাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে? বাংলাদেশেও কেন ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বহাল রাখা সম্ভব হচ্ছে না? কেন ধর্মীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে?
এই অঞ্চলে রাজা আসে, রাজা যায় কিন্তু উপরিকাঠামোর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না কেন? এর ব্যাখ্যা নির্মোহভাবে খুঁজতে হবে। উত্তর কিছুটা যুক্তিসংগতভাবে দিয়ে গেছেন কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্স ভেবার, কার্ট উইফোগেল, চার্লস মেটকাফ, হামজা আলাভি, ইরফান হাবিব, আর কে মুখার্জি, নাজমুল করিম, আহমদ ছফা, এমনকি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসও।
উৎপাদনপদ্ধতির সেই সব চিন্তাধারা (ডিসকোর্স) আলোচনা না করে বয়স্ক মানুষদের ব্যক্তিগত অঙ্গে যতই বল ছোড়া হোক না কেন, মেয়েরা দশবার বিশ্বকাপ জিতুক না কেন, ইরানের মেয়েরা যতই তাদের হিজাব পুড়িয়ে দিক না কেন, নারীবাদী বলি, মুক্তমনা বলি, শাহবাগি বলি আর যতই তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বা বাম ঘরানার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন পোস্ট দিন না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না; বরং এসব করে সমাজবিজ্ঞানের ‘আদারিং’ তত্ত্বটিকে আরও জোরালো করা হচ্ছে। কিছু উগ্রপন্থীকে বোঝাতে গিয়ে কোটি কোটি বয়স্ক মানুষকে অপমান করা হচ্ছে, তাদের মনোজগতে পরিবর্তন আনার জন্য যুক্তি দিয়ে বোঝানোর পরিবর্তে একধরনের হাস্যকর পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে। এসব করে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে আমাদের অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নারী ও মেয়েশিশুদের উন্নয়নে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কিন্তু পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অনন্য সফলতা এখন পর্যন্ত
দেখাতে পেরেছে।
তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কিছু কিছু আচরণ আসলে উগ্রবাদী ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষেই যায়। এসব আচরণের বিরুদ্ধে তারাও তাদের ডিসকোর্স বানাবে এবং একদিন যদি ইরানের মতো খোমেনিতন্ত্র এখানেও চালু করতে চায়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না, যারা স্লোগান তুলেছিল ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ তারা কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়নি। তাদের রাতারাতি আধুনিক বানানোও সম্ভব হবে না। সমাজে সবার জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, পড়ালেখা শেখাতে হবে, মানুষের সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নতুবা তারা তাহেরী-আহমুদুল্লাহ-ইব্রাহিম হুজুর বা শিশুবক্তার ওয়াজ শুনতে যাবেই। পীরের আস্তানায় গিয়ে মনটাকে শান্ত করতে চাইতেই পারে।
পাঠ্যপুস্তক করতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। একমুখী পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের স্তরে স্তরে সুশাসন দৃশ্যমান হতে হবে। সমাজের মৌলকাঠামোতে হাত দিতে হবে। এসব ব্যাপারে কথা না বলে ‘ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুন’ তত্ত্ব আওড়ালে সুফল কিছু পাওয়া যাবে না।
চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করতে পারবে না; বরং এতে তারা আরও শক্তিশালী হবে! বিশ্ব ইতিহাস তার প্রমাণ! চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে বা বয়স্ক মানুষের পেছনে বল মেরে রেনেসাঁ আসেনি, গির্জার কর্তৃত্ব বিলোপ হয়নি, জারের শাসন ভেঙে পড়েনি কিংবা সামাজিক ইতিহাসে আদিম সাম্যবাদ-দাসপ্রথা-সামন্ততন্ত্রের গর্ভে পুঁজিবাদের বিকাশ হয়নি! সমাজবিজ্ঞানের সমাজ বিবর্তনের ধারাবাহিক ইতিহাসটা ভালো করে পাঠ করতে হবে সবাইকে। বাংলাদেশের নারী-পুরুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাক, সব দেশের নারীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার পাক, এই প্রত্যাশা করি।
লেখক: অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আমানুল্লাহ ফেরদৌস

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে, তা ভাবার সময় এসেছে। কারও মানসিকতায় পরিবর্তন আনার জন্য উগ্র ও ফ্যাসিবাদীপ্রবণতা সুফল দেয় বলে মনে হয় না।
আমাদের শিকল ভাঙার সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। প্রায় আট যুগ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হুগলি জেলে বসে গেয়ে উঠেছিলেন ‘এই শিকল-পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল…’। ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে, কবি প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতা অর্জনে কারাবরণ করে শিকল পরার ভীতি দূর করাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
তাঁর আহ্বানে কয় কোটি ভারতীয় ইংরেজদের বিরোধিতা করে শিকল পরে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন? দলে দলে মানুষ কারাবরণ করবে, এটা প্রত্যাশিত নয়। নেতাজি সুভাষ বসুর আহ্বানে শতকোটি বৃহত্তর ভারতবাসীর কয়েক কোটিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেনি। ইংরেজদের তাড়ানোর জন্য তাদের সহযোগিতা নিয়ে কেন কংগ্রেস বা মুসলিম লীগের মতো দল গঠন করতে হলো? ভাবতে হবে সেটাও। কৈবর্ত, পীর-মাশায়েখ, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সূর্য সেনদের বিদ্রোহে ইংরেজরা নাস্তানাবুদ হয়েছে। কিন্তু ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত বা আমজনতা ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে দলে দলে যোগ না দিয়ে তাদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের সহযোগিতাই করে গেছে।
‘চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…’ এই রণসংগীত শুনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সবাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের সেই বিখ্যাত জ্বালাময়ী ভাষণ শুনে বাঙালি প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধার সংখ্যা লাখ ছাড়ায়নি। মাত্র ৯১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা (বর্তমানে সেই সংখ্যা ২ লাখ প্লাস-মাইনাসে গিয়ে পৌঁছেছে) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এটাই স্বাভাবিক। পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন সবাই। কিন্তু পরিবর্তনকে সংগঠিত করতে অল্পসংখ্যক মানুষই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
পাঞ্জাব রেজিমেন্টের যে কয়েক হাজার পাকিস্তানি সৈন্য বর্বরতা চালিয়েছে, তাদের হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়া যেত যদি এ দেশের এক কোটি লোক রাস্তায় নেমে আসত। রাস্তায় নামা তো দূরের কথা, বরং আমরা দরজা-জানালা বন্ধ করে তামাশা দেখেছি। রেডিও শুনে শুনে সময় পার করেছি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছি, সরকারের চাকরি করে বেতন নিয়েছি, কয়জন আমলা আকবর আলি খানের মতো, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বা এইচ টি ইমামের মতো বিদ্রোহ করেছেন? বা সিভিলিয়ান থেকে কয়জন আর সাদেক হোসেন খোকা বা কাদের সিদ্দিকী হতে পেরেছেন? কয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কয়জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, লইয়ার, সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? সে সময় দালালের সংখ্যাও ছিল অনেক। এই রাজাকার গোষ্ঠীই পথ দেখিয়ে মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করিয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করিয়েছে। এ রকম সংকটময় মুহূর্তেও বাম-ডানের বুদ্ধিজীবীরা অনেকেই ঘরেই বসে ছিলেন। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া! ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে কয় লাখ বাড়িতে দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল? হ্যাঁ, এ দেশের মায়েরা তাঁদের সাধ্যমতো মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়ে-পরিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
প্রশ্ন হলো, ভারতবর্ষে শিকল ভাঙার গান কেন ব্যর্থ হয়ে যায় বারবার? স্বাধীনতা চেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি বা অর্জন করেছি। বুঝলাম আমরা ইংরেজদের তাড়িয়েছি, পাঞ্জাবিদের তাড়িয়েছি কিন্তু শিকল যেটা আমাদের পায়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেই শিকল থেকে মুক্তি আমরা পাচ্ছি না কেন? ৭৫ বছর আগে ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরেও পুরো ভারতবর্ষ কেন আজও দারিদ্র্যের অভিশাপমুক্ত হতে পারছে না? ভারতে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক শাসনের পরও কেন এখন হিন্দুত্ববাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে? বাংলাদেশেও কেন ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বহাল রাখা সম্ভব হচ্ছে না? কেন ধর্মীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে?
এই অঞ্চলে রাজা আসে, রাজা যায় কিন্তু উপরিকাঠামোর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না কেন? এর ব্যাখ্যা নির্মোহভাবে খুঁজতে হবে। উত্তর কিছুটা যুক্তিসংগতভাবে দিয়ে গেছেন কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্স ভেবার, কার্ট উইফোগেল, চার্লস মেটকাফ, হামজা আলাভি, ইরফান হাবিব, আর কে মুখার্জি, নাজমুল করিম, আহমদ ছফা, এমনকি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসও।
উৎপাদনপদ্ধতির সেই সব চিন্তাধারা (ডিসকোর্স) আলোচনা না করে বয়স্ক মানুষদের ব্যক্তিগত অঙ্গে যতই বল ছোড়া হোক না কেন, মেয়েরা দশবার বিশ্বকাপ জিতুক না কেন, ইরানের মেয়েরা যতই তাদের হিজাব পুড়িয়ে দিক না কেন, নারীবাদী বলি, মুক্তমনা বলি, শাহবাগি বলি আর যতই তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বা বাম ঘরানার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন পোস্ট দিন না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না; বরং এসব করে সমাজবিজ্ঞানের ‘আদারিং’ তত্ত্বটিকে আরও জোরালো করা হচ্ছে। কিছু উগ্রপন্থীকে বোঝাতে গিয়ে কোটি কোটি বয়স্ক মানুষকে অপমান করা হচ্ছে, তাদের মনোজগতে পরিবর্তন আনার জন্য যুক্তি দিয়ে বোঝানোর পরিবর্তে একধরনের হাস্যকর পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে। এসব করে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে আমাদের অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নারী ও মেয়েশিশুদের উন্নয়নে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কিন্তু পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অনন্য সফলতা এখন পর্যন্ত
দেখাতে পেরেছে।
তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কিছু কিছু আচরণ আসলে উগ্রবাদী ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষেই যায়। এসব আচরণের বিরুদ্ধে তারাও তাদের ডিসকোর্স বানাবে এবং একদিন যদি ইরানের মতো খোমেনিতন্ত্র এখানেও চালু করতে চায়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না, যারা স্লোগান তুলেছিল ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ তারা কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়নি। তাদের রাতারাতি আধুনিক বানানোও সম্ভব হবে না। সমাজে সবার জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, পড়ালেখা শেখাতে হবে, মানুষের সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নতুবা তারা তাহেরী-আহমুদুল্লাহ-ইব্রাহিম হুজুর বা শিশুবক্তার ওয়াজ শুনতে যাবেই। পীরের আস্তানায় গিয়ে মনটাকে শান্ত করতে চাইতেই পারে।
পাঠ্যপুস্তক করতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। একমুখী পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের স্তরে স্তরে সুশাসন দৃশ্যমান হতে হবে। সমাজের মৌলকাঠামোতে হাত দিতে হবে। এসব ব্যাপারে কথা না বলে ‘ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুন’ তত্ত্ব আওড়ালে সুফল কিছু পাওয়া যাবে না।
চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করতে পারবে না; বরং এতে তারা আরও শক্তিশালী হবে! বিশ্ব ইতিহাস তার প্রমাণ! চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে বা বয়স্ক মানুষের পেছনে বল মেরে রেনেসাঁ আসেনি, গির্জার কর্তৃত্ব বিলোপ হয়নি, জারের শাসন ভেঙে পড়েনি কিংবা সামাজিক ইতিহাসে আদিম সাম্যবাদ-দাসপ্রথা-সামন্ততন্ত্রের গর্ভে পুঁজিবাদের বিকাশ হয়নি! সমাজবিজ্ঞানের সমাজ বিবর্তনের ধারাবাহিক ইতিহাসটা ভালো করে পাঠ করতে হবে সবাইকে। বাংলাদেশের নারী-পুরুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাক, সব দেশের নারীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার পাক, এই প্রত্যাশা করি।
লেখক: অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে, তা ভাবার সময় এসেছে। কারও মানসিকতায় পরিবর্তন আনার জন্য উগ্র ও ফ্যাসিবাদীপ্রবণতা সুফল দেয় বলে মনে হয় না।
আমাদের শিকল ভাঙার সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। প্রায় আট যুগ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হুগলি জেলে বসে গেয়ে উঠেছিলেন ‘এই শিকল-পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল। এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল…’। ‘শিকল-পরা ছল’ বলতে, কবি প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় স্বাধীনতাকামীদের স্বাধীনতা অর্জনে কারাবরণ করে শিকল পরার ভীতি দূর করাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
তাঁর আহ্বানে কয় কোটি ভারতীয় ইংরেজদের বিরোধিতা করে শিকল পরে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন? দলে দলে মানুষ কারাবরণ করবে, এটা প্রত্যাশিত নয়। নেতাজি সুভাষ বসুর আহ্বানে শতকোটি বৃহত্তর ভারতবাসীর কয়েক কোটিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেনি। ইংরেজদের তাড়ানোর জন্য তাদের সহযোগিতা নিয়ে কেন কংগ্রেস বা মুসলিম লীগের মতো দল গঠন করতে হলো? ভাবতে হবে সেটাও। কৈবর্ত, পীর-মাশায়েখ, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সূর্য সেনদের বিদ্রোহে ইংরেজরা নাস্তানাবুদ হয়েছে। কিন্তু ভারতের সাধারণ মধ্যবিত্ত বা আমজনতা ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে দলে দলে যোগ না দিয়ে তাদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের সহযোগিতাই করে গেছে।
‘চল চল চল, ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…’ এই রণসংগীত শুনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালির সবাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের সেই বিখ্যাত জ্বালাময়ী ভাষণ শুনে বাঙালি প্রতিরোধযুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেও সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া যোদ্ধার সংখ্যা লাখ ছাড়ায়নি। মাত্র ৯১ হাজার মুক্তিযোদ্ধা (বর্তমানে সেই সংখ্যা ২ লাখ প্লাস-মাইনাসে গিয়ে পৌঁছেছে) মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এটাই স্বাভাবিক। পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন সবাই। কিন্তু পরিবর্তনকে সংগঠিত করতে অল্পসংখ্যক মানুষই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
পাঞ্জাব রেজিমেন্টের যে কয়েক হাজার পাকিস্তানি সৈন্য বর্বরতা চালিয়েছে, তাদের হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়া যেত যদি এ দেশের এক কোটি লোক রাস্তায় নেমে আসত। রাস্তায় নামা তো দূরের কথা, বরং আমরা দরজা-জানালা বন্ধ করে তামাশা দেখেছি। রেডিও শুনে শুনে সময় পার করেছি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়েছি, সরকারের চাকরি করে বেতন নিয়েছি, কয়জন আমলা আকবর আলি খানের মতো, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বা এইচ টি ইমামের মতো বিদ্রোহ করেছেন? বা সিভিলিয়ান থেকে কয়জন আর সাদেক হোসেন খোকা বা কাদের সিদ্দিকী হতে পেরেছেন? কয়জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কয়জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, লইয়ার, সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? সে সময় দালালের সংখ্যাও ছিল অনেক। এই রাজাকার গোষ্ঠীই পথ দেখিয়ে মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করিয়েছে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করিয়েছে। এ রকম সংকটময় মুহূর্তেও বাম-ডানের বুদ্ধিজীবীরা অনেকেই ঘরেই বসে ছিলেন। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া! ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে কয় লাখ বাড়িতে দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল? হ্যাঁ, এ দেশের মায়েরা তাঁদের সাধ্যমতো মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়ে-পরিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
প্রশ্ন হলো, ভারতবর্ষে শিকল ভাঙার গান কেন ব্যর্থ হয়ে যায় বারবার? স্বাধীনতা চেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি বা অর্জন করেছি। বুঝলাম আমরা ইংরেজদের তাড়িয়েছি, পাঞ্জাবিদের তাড়িয়েছি কিন্তু শিকল যেটা আমাদের পায়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, সেই শিকল থেকে মুক্তি আমরা পাচ্ছি না কেন? ৭৫ বছর আগে ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরেও পুরো ভারতবর্ষ কেন আজও দারিদ্র্যের অভিশাপমুক্ত হতে পারছে না? ভারতে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক শাসনের পরও কেন এখন হিন্দুত্ববাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে? বাংলাদেশেও কেন ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বহাল রাখা সম্ভব হচ্ছে না? কেন ধর্মীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে?
এই অঞ্চলে রাজা আসে, রাজা যায় কিন্তু উপরিকাঠামোর কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না কেন? এর ব্যাখ্যা নির্মোহভাবে খুঁজতে হবে। উত্তর কিছুটা যুক্তিসংগতভাবে দিয়ে গেছেন কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্স ভেবার, কার্ট উইফোগেল, চার্লস মেটকাফ, হামজা আলাভি, ইরফান হাবিব, আর কে মুখার্জি, নাজমুল করিম, আহমদ ছফা, এমনকি আখতারুজ্জামান ইলিয়াসও।
উৎপাদনপদ্ধতির সেই সব চিন্তাধারা (ডিসকোর্স) আলোচনা না করে বয়স্ক মানুষদের ব্যক্তিগত অঙ্গে যতই বল ছোড়া হোক না কেন, মেয়েরা দশবার বিশ্বকাপ জিতুক না কেন, ইরানের মেয়েরা যতই তাদের হিজাব পুড়িয়ে দিক না কেন, নারীবাদী বলি, মুক্তমনা বলি, শাহবাগি বলি আর যতই তথাকথিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বা বাম ঘরানার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন পোস্ট দিন না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না; বরং এসব করে সমাজবিজ্ঞানের ‘আদারিং’ তত্ত্বটিকে আরও জোরালো করা হচ্ছে। কিছু উগ্রপন্থীকে বোঝাতে গিয়ে কোটি কোটি বয়স্ক মানুষকে অপমান করা হচ্ছে, তাদের মনোজগতে পরিবর্তন আনার জন্য যুক্তি দিয়ে বোঝানোর পরিবর্তে একধরনের হাস্যকর পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে। এসব করে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে আমাদের অর্জনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নারী ও মেয়েশিশুদের উন্নয়নে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কিন্তু পুরো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অনন্য সফলতা এখন পর্যন্ত
দেখাতে পেরেছে।
তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কিছু কিছু আচরণ আসলে উগ্রবাদী ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষেই যায়। এসব আচরণের বিরুদ্ধে তারাও তাদের ডিসকোর্স বানাবে এবং একদিন যদি ইরানের মতো খোমেনিতন্ত্র এখানেও চালু করতে চায়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না, যারা স্লোগান তুলেছিল ‘আমরা হব তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ তারা কিন্তু দেশ ছেড়ে চলে যায়নি। তাদের রাতারাতি আধুনিক বানানোও সম্ভব হবে না। সমাজে সবার জন্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, পড়ালেখা শেখাতে হবে, মানুষের সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, নতুবা তারা তাহেরী-আহমুদুল্লাহ-ইব্রাহিম হুজুর বা শিশুবক্তার ওয়াজ শুনতে যাবেই। পীরের আস্তানায় গিয়ে মনটাকে শান্ত করতে চাইতেই পারে।
পাঠ্যপুস্তক করতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী। একমুখী পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে, সমাজ ও রাষ্ট্রের স্তরে স্তরে সুশাসন দৃশ্যমান হতে হবে। সমাজের মৌলকাঠামোতে হাত দিতে হবে। এসব ব্যাপারে কথা না বলে ‘ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুন’ তত্ত্ব আওড়ালে সুফল কিছু পাওয়া যাবে না।
চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে বিতাড়িত করতে পারবে না; বরং এতে তারা আরও শক্তিশালী হবে! বিশ্ব ইতিহাস তার প্রমাণ! চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে বা বয়স্ক মানুষের পেছনে বল মেরে রেনেসাঁ আসেনি, গির্জার কর্তৃত্ব বিলোপ হয়নি, জারের শাসন ভেঙে পড়েনি কিংবা সামাজিক ইতিহাসে আদিম সাম্যবাদ-দাসপ্রথা-সামন্ততন্ত্রের গর্ভে পুঁজিবাদের বিকাশ হয়নি! সমাজবিজ্ঞানের সমাজ বিবর্তনের ধারাবাহিক ইতিহাসটা ভালো করে পাঠ করতে হবে সবাইকে। বাংলাদেশের নারী-পুরুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাক, সব দেশের নারীরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার পাক, এই প্রত্যাশা করি।
লেখক: অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে...
০৪ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে...
০৪ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে...
০৪ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ভারতীয় উপমহাদেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা কয়েক শতক ধরে শিকল ভাঙার জন্য একদম উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। এই শিকল ভাঙতে গিয়ে এমন কিছু করা ঠিক হবে না,যা অন্যদের অসম্মানিত করে। কুরুচিপূর্ণ কার্টুন এঁকে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে শিকল ভাঙা কতটা সহজ হবে...
০৪ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫