হুসাইন আহমদ

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর থেকে ‘ফরেন এয়ার ক্যারিয়ার পারমিট’ পেতে সম্প্রতি আবেদনও করেছে বিমান। তবে এই অনুমোদন পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হলে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
বিমান নিউইয়র্কে সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট। লোকসানের কারণে এই পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ফ্লাইট চালু করা হলেও বিমানকে সপ্তাহে প্রায় সোয়া ১১ কোটি বা বছরে ৫৮৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হবে বলে বিমানের আবেদনের নথি থেকেই জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আয়-ব্যয়ের হিসাব চূড়ান্ত নয়। ফ্লাইট যখন চালু হবে, তখন পরিস্থিতি পাল্টাবে। যেসব বিষয় ধরে এই হিসাব করা হয়েছে, তার অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। যখনকার তেলের হিসাব করা হয়েছে, তখন দাম অনেক বেশি ছিল, ডলারের বিনিময় হারও ছিল উচ্চ। তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়েও খরচে পরিবর্তন আসার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুরো নিখুঁতভাবে আবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এই বছরের জুলাই মাসের ব্লক আওয়ার, তেলের দাম, মুদ্রার বিনিময় হারসহ যেসব তথ্যের ভিত্তিতে ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে, তা বাস্তবে পাল্টে যাবে বলে বিমানের নথিতে দাবি করা হয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দর হয়ে জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে চলাচল করবে বিমানের ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজে ২৯৮ জন যাত্রী এবং ১ হাজার ৫০০ কেজি মালপত্র বহন করা যাবে। পারমিটের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিমানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জনসন, রজার্স অ্যান্ড ক্লিফটন এলএলপি আবেদন জমা দিয়েছে।
বিমানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই রুটে রাউন্ড ট্রিপে যাত্রী ধরা হয়েছে ৪৭৬ জন, ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ ডলার। এর সঙ্গে কার্গো ও বাড়তি ব্যাগেজের আয় ধরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট থেকে সপ্তাহে মোট রাজস্ব আয় হবে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ২৪ ডলার। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিমানের লোকসান হবে ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৯ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১০ ডলার, অর্থাৎ ৫৮৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি।
লোকসানের কারণে বন্ধ হওয়ার আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান মোট ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। তাতে মোট ১১ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী, অর্থাৎ প্রতি ফ্লাইটে গড়ে ১৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়।
বিশ্বের দীর্ঘতম এই আকাশপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার, যা পেরোতে লাগে ৩৪ ঘণ্টা। বিমান চলাচলবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সিম্পল ফ্লাইংয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিমানের এ ফ্লাইটটি জ্বালানি নেওয়া এবং ক্রু পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দরে বিরতি দেবে।
বিমানের নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ এখন এফএএ ক্যাটাগরি-২-এ আছে, অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচলের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হয়নি। এফএএ পরিদর্শকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেবিচক এখনো আইসিএওর মানদণ্ড অনুযায়ী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে বিমান মনে করে, এফএএ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ক্যাটাগরি-১ নিশ্চিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের (ডিওটি) কাছ থেকে পারমিট পাওয়া যাবে।
বেবিচকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। বেবিচকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে এফএএর সঙ্গে কাজ করছে বেবিচক। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এটা মিলতে পারে। তিনি জানান, ক্যাটাগরি-১ পাওয়ার জন্য এফএএর নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বেবিচককে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বোয়িং। এই কোম্পানি ৫০০ ঘণ্টার পরামর্শ দিচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিল। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, এফএএর নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্রধারী কোনো দেশ থেকে ‘ওয়েট লিজ’ বা স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমান ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।
সংস্থাটি ‘ড্রাই লিজ’ বা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া আনে। যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। পরে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমান ভাড়ার চেষ্টা করা হলেও সফলতা আসেনি। এ কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রুটে টিকিট ছেড়েও পরে ফেরত নিতে বাধ্য হয় বিমান।
বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারিগরি কমিটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তদন্ত করেছে। কিছু উপদেশও দিয়ে গেছে। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বেবিচক।
বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, ফ্লাইট সুরক্ষায় সমস্যা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য তিনটি ধাপ আছে। প্রথমে পরিবহন বিভাগে আবেদন; দ্বিতীয়ত, এফএএর কাছ থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া এবং সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের (টিএসএ) ছাড়পত্র লাগবে।
বিমানের নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চলছে। এফএএর অনুমতি পেলে নিয়ম অনুযায়ী, ফ্লাইট পরিচালনার অন্তত ৯০ দিন আগে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা কর্মসূচি জমা দেওয়া হবে।
আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী বলেন, এর মধ্যে টিএসএ পরিদর্শন শেষে ভালো বলে মূল্যায়ন করেছে। টিএসএর নিরীক্ষায় বিমানও যুক্ত ছিল। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। টিএসএ থেকে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট বিষয়ে ১০ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পূরণ করে টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।
এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক না হলেও সরকার মর্যাদার প্রশ্নে উদ্যোগটি নিতে চায় বলে এরোটাইম ডট এরোর এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কথা তুলে ধরে দুই দেশের নাগরিকদের সুবিধা বিবেচনায় ‘জনস্বার্থে’ ঢাকা এবং নিউইয়র্ক, নেওয়ার্ক ও নিউ জার্সির মধ্যে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করার কথা বিমানের নথিতে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে বিমানের এই উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিমানের সাবেক এমডি কাজী ওয়াহিদুল আলম। এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাজার যাচাই না করে বিমান এই উদ্যোগ নিয়েছে। এটা না করে বড় এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে কোডশেয়ার বা পার্টনারশিপ করা যেত। অর্থাৎ চুক্তির আওতায় বিমানের কোড ও টিকিটধারী হিসেবে অন্য এয়ারলাইনসে যাত্রী পরিবহন করা যেত।’
বিমান পারমিটের জন্য আবেদন করলেও এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন বলে ওয়াহিদুল আলম মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে স্বায়ত্তশাসিত হতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, রেগুলেটর ক্যান নট বি অপারেটর, এয়ারপোর্টের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেবিচকই এয়ারপোর্ট চালায়।’

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর থেকে ‘ফরেন এয়ার ক্যারিয়ার পারমিট’ পেতে সম্প্রতি আবেদনও করেছে বিমান। তবে এই অনুমোদন পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হলে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
বিমান নিউইয়র্কে সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট। লোকসানের কারণে এই পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ফ্লাইট চালু করা হলেও বিমানকে সপ্তাহে প্রায় সোয়া ১১ কোটি বা বছরে ৫৮৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হবে বলে বিমানের আবেদনের নথি থেকেই জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আয়-ব্যয়ের হিসাব চূড়ান্ত নয়। ফ্লাইট যখন চালু হবে, তখন পরিস্থিতি পাল্টাবে। যেসব বিষয় ধরে এই হিসাব করা হয়েছে, তার অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। যখনকার তেলের হিসাব করা হয়েছে, তখন দাম অনেক বেশি ছিল, ডলারের বিনিময় হারও ছিল উচ্চ। তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়েও খরচে পরিবর্তন আসার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুরো নিখুঁতভাবে আবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এই বছরের জুলাই মাসের ব্লক আওয়ার, তেলের দাম, মুদ্রার বিনিময় হারসহ যেসব তথ্যের ভিত্তিতে ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে, তা বাস্তবে পাল্টে যাবে বলে বিমানের নথিতে দাবি করা হয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দর হয়ে জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে চলাচল করবে বিমানের ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজে ২৯৮ জন যাত্রী এবং ১ হাজার ৫০০ কেজি মালপত্র বহন করা যাবে। পারমিটের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিমানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জনসন, রজার্স অ্যান্ড ক্লিফটন এলএলপি আবেদন জমা দিয়েছে।
বিমানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই রুটে রাউন্ড ট্রিপে যাত্রী ধরা হয়েছে ৪৭৬ জন, ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ ডলার। এর সঙ্গে কার্গো ও বাড়তি ব্যাগেজের আয় ধরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট থেকে সপ্তাহে মোট রাজস্ব আয় হবে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ২৪ ডলার। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিমানের লোকসান হবে ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৯ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১০ ডলার, অর্থাৎ ৫৮৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি।
লোকসানের কারণে বন্ধ হওয়ার আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান মোট ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। তাতে মোট ১১ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী, অর্থাৎ প্রতি ফ্লাইটে গড়ে ১৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়।
বিশ্বের দীর্ঘতম এই আকাশপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার, যা পেরোতে লাগে ৩৪ ঘণ্টা। বিমান চলাচলবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সিম্পল ফ্লাইংয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিমানের এ ফ্লাইটটি জ্বালানি নেওয়া এবং ক্রু পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দরে বিরতি দেবে।
বিমানের নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ এখন এফএএ ক্যাটাগরি-২-এ আছে, অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচলের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হয়নি। এফএএ পরিদর্শকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেবিচক এখনো আইসিএওর মানদণ্ড অনুযায়ী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে বিমান মনে করে, এফএএ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ক্যাটাগরি-১ নিশ্চিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের (ডিওটি) কাছ থেকে পারমিট পাওয়া যাবে।
বেবিচকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। বেবিচকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে এফএএর সঙ্গে কাজ করছে বেবিচক। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এটা মিলতে পারে। তিনি জানান, ক্যাটাগরি-১ পাওয়ার জন্য এফএএর নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বেবিচককে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বোয়িং। এই কোম্পানি ৫০০ ঘণ্টার পরামর্শ দিচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিল। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, এফএএর নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্রধারী কোনো দেশ থেকে ‘ওয়েট লিজ’ বা স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমান ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।
সংস্থাটি ‘ড্রাই লিজ’ বা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া আনে। যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। পরে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমান ভাড়ার চেষ্টা করা হলেও সফলতা আসেনি। এ কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রুটে টিকিট ছেড়েও পরে ফেরত নিতে বাধ্য হয় বিমান।
বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারিগরি কমিটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তদন্ত করেছে। কিছু উপদেশও দিয়ে গেছে। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বেবিচক।
বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, ফ্লাইট সুরক্ষায় সমস্যা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য তিনটি ধাপ আছে। প্রথমে পরিবহন বিভাগে আবেদন; দ্বিতীয়ত, এফএএর কাছ থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া এবং সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের (টিএসএ) ছাড়পত্র লাগবে।
বিমানের নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চলছে। এফএএর অনুমতি পেলে নিয়ম অনুযায়ী, ফ্লাইট পরিচালনার অন্তত ৯০ দিন আগে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা কর্মসূচি জমা দেওয়া হবে।
আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী বলেন, এর মধ্যে টিএসএ পরিদর্শন শেষে ভালো বলে মূল্যায়ন করেছে। টিএসএর নিরীক্ষায় বিমানও যুক্ত ছিল। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। টিএসএ থেকে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট বিষয়ে ১০ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পূরণ করে টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।
এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক না হলেও সরকার মর্যাদার প্রশ্নে উদ্যোগটি নিতে চায় বলে এরোটাইম ডট এরোর এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কথা তুলে ধরে দুই দেশের নাগরিকদের সুবিধা বিবেচনায় ‘জনস্বার্থে’ ঢাকা এবং নিউইয়র্ক, নেওয়ার্ক ও নিউ জার্সির মধ্যে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করার কথা বিমানের নথিতে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে বিমানের এই উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিমানের সাবেক এমডি কাজী ওয়াহিদুল আলম। এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাজার যাচাই না করে বিমান এই উদ্যোগ নিয়েছে। এটা না করে বড় এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে কোডশেয়ার বা পার্টনারশিপ করা যেত। অর্থাৎ চুক্তির আওতায় বিমানের কোড ও টিকিটধারী হিসেবে অন্য এয়ারলাইনসে যাত্রী পরিবহন করা যেত।’
বিমান পারমিটের জন্য আবেদন করলেও এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন বলে ওয়াহিদুল আলম মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে স্বায়ত্তশাসিত হতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, রেগুলেটর ক্যান নট বি অপারেটর, এয়ারপোর্টের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেবিচকই এয়ারপোর্ট চালায়।’
হুসাইন আহমদ

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর থেকে ‘ফরেন এয়ার ক্যারিয়ার পারমিট’ পেতে সম্প্রতি আবেদনও করেছে বিমান। তবে এই অনুমোদন পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হলে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
বিমান নিউইয়র্কে সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট। লোকসানের কারণে এই পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ফ্লাইট চালু করা হলেও বিমানকে সপ্তাহে প্রায় সোয়া ১১ কোটি বা বছরে ৫৮৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হবে বলে বিমানের আবেদনের নথি থেকেই জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আয়-ব্যয়ের হিসাব চূড়ান্ত নয়। ফ্লাইট যখন চালু হবে, তখন পরিস্থিতি পাল্টাবে। যেসব বিষয় ধরে এই হিসাব করা হয়েছে, তার অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। যখনকার তেলের হিসাব করা হয়েছে, তখন দাম অনেক বেশি ছিল, ডলারের বিনিময় হারও ছিল উচ্চ। তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়েও খরচে পরিবর্তন আসার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুরো নিখুঁতভাবে আবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এই বছরের জুলাই মাসের ব্লক আওয়ার, তেলের দাম, মুদ্রার বিনিময় হারসহ যেসব তথ্যের ভিত্তিতে ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে, তা বাস্তবে পাল্টে যাবে বলে বিমানের নথিতে দাবি করা হয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দর হয়ে জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে চলাচল করবে বিমানের ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজে ২৯৮ জন যাত্রী এবং ১ হাজার ৫০০ কেজি মালপত্র বহন করা যাবে। পারমিটের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিমানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জনসন, রজার্স অ্যান্ড ক্লিফটন এলএলপি আবেদন জমা দিয়েছে।
বিমানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই রুটে রাউন্ড ট্রিপে যাত্রী ধরা হয়েছে ৪৭৬ জন, ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ ডলার। এর সঙ্গে কার্গো ও বাড়তি ব্যাগেজের আয় ধরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট থেকে সপ্তাহে মোট রাজস্ব আয় হবে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ২৪ ডলার। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিমানের লোকসান হবে ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৯ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১০ ডলার, অর্থাৎ ৫৮৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি।
লোকসানের কারণে বন্ধ হওয়ার আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান মোট ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। তাতে মোট ১১ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী, অর্থাৎ প্রতি ফ্লাইটে গড়ে ১৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়।
বিশ্বের দীর্ঘতম এই আকাশপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার, যা পেরোতে লাগে ৩৪ ঘণ্টা। বিমান চলাচলবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সিম্পল ফ্লাইংয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিমানের এ ফ্লাইটটি জ্বালানি নেওয়া এবং ক্রু পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দরে বিরতি দেবে।
বিমানের নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ এখন এফএএ ক্যাটাগরি-২-এ আছে, অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচলের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হয়নি। এফএএ পরিদর্শকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেবিচক এখনো আইসিএওর মানদণ্ড অনুযায়ী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে বিমান মনে করে, এফএএ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ক্যাটাগরি-১ নিশ্চিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের (ডিওটি) কাছ থেকে পারমিট পাওয়া যাবে।
বেবিচকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। বেবিচকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে এফএএর সঙ্গে কাজ করছে বেবিচক। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এটা মিলতে পারে। তিনি জানান, ক্যাটাগরি-১ পাওয়ার জন্য এফএএর নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বেবিচককে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বোয়িং। এই কোম্পানি ৫০০ ঘণ্টার পরামর্শ দিচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিল। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, এফএএর নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্রধারী কোনো দেশ থেকে ‘ওয়েট লিজ’ বা স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমান ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।
সংস্থাটি ‘ড্রাই লিজ’ বা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া আনে। যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। পরে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমান ভাড়ার চেষ্টা করা হলেও সফলতা আসেনি। এ কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রুটে টিকিট ছেড়েও পরে ফেরত নিতে বাধ্য হয় বিমান।
বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারিগরি কমিটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তদন্ত করেছে। কিছু উপদেশও দিয়ে গেছে। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বেবিচক।
বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, ফ্লাইট সুরক্ষায় সমস্যা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য তিনটি ধাপ আছে। প্রথমে পরিবহন বিভাগে আবেদন; দ্বিতীয়ত, এফএএর কাছ থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া এবং সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের (টিএসএ) ছাড়পত্র লাগবে।
বিমানের নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চলছে। এফএএর অনুমতি পেলে নিয়ম অনুযায়ী, ফ্লাইট পরিচালনার অন্তত ৯০ দিন আগে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা কর্মসূচি জমা দেওয়া হবে।
আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী বলেন, এর মধ্যে টিএসএ পরিদর্শন শেষে ভালো বলে মূল্যায়ন করেছে। টিএসএর নিরীক্ষায় বিমানও যুক্ত ছিল। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। টিএসএ থেকে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট বিষয়ে ১০ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পূরণ করে টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।
এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক না হলেও সরকার মর্যাদার প্রশ্নে উদ্যোগটি নিতে চায় বলে এরোটাইম ডট এরোর এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কথা তুলে ধরে দুই দেশের নাগরিকদের সুবিধা বিবেচনায় ‘জনস্বার্থে’ ঢাকা এবং নিউইয়র্ক, নেওয়ার্ক ও নিউ জার্সির মধ্যে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করার কথা বিমানের নথিতে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে বিমানের এই উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিমানের সাবেক এমডি কাজী ওয়াহিদুল আলম। এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাজার যাচাই না করে বিমান এই উদ্যোগ নিয়েছে। এটা না করে বড় এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে কোডশেয়ার বা পার্টনারশিপ করা যেত। অর্থাৎ চুক্তির আওতায় বিমানের কোড ও টিকিটধারী হিসেবে অন্য এয়ারলাইনসে যাত্রী পরিবহন করা যেত।’
বিমান পারমিটের জন্য আবেদন করলেও এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন বলে ওয়াহিদুল আলম মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে স্বায়ত্তশাসিত হতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, রেগুলেটর ক্যান নট বি অপারেটর, এয়ারপোর্টের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেবিচকই এয়ারপোর্ট চালায়।’

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর থেকে ‘ফরেন এয়ার ক্যারিয়ার পারমিট’ পেতে সম্প্রতি আবেদনও করেছে বিমান। তবে এই অনুমোদন পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হলে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
বিমান নিউইয়র্কে সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট। লোকসানের কারণে এই পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ফ্লাইট চালু করা হলেও বিমানকে সপ্তাহে প্রায় সোয়া ১১ কোটি বা বছরে ৫৮৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হবে বলে বিমানের আবেদনের নথি থেকেই জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আয়-ব্যয়ের হিসাব চূড়ান্ত নয়। ফ্লাইট যখন চালু হবে, তখন পরিস্থিতি পাল্টাবে। যেসব বিষয় ধরে এই হিসাব করা হয়েছে, তার অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। যখনকার তেলের হিসাব করা হয়েছে, তখন দাম অনেক বেশি ছিল, ডলারের বিনিময় হারও ছিল উচ্চ। তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়েও খরচে পরিবর্তন আসার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুরো নিখুঁতভাবে আবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এই বছরের জুলাই মাসের ব্লক আওয়ার, তেলের দাম, মুদ্রার বিনিময় হারসহ যেসব তথ্যের ভিত্তিতে ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে, তা বাস্তবে পাল্টে যাবে বলে বিমানের নথিতে দাবি করা হয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দর হয়ে জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে চলাচল করবে বিমানের ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজে ২৯৮ জন যাত্রী এবং ১ হাজার ৫০০ কেজি মালপত্র বহন করা যাবে। পারমিটের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিমানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জনসন, রজার্স অ্যান্ড ক্লিফটন এলএলপি আবেদন জমা দিয়েছে।
বিমানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই রুটে রাউন্ড ট্রিপে যাত্রী ধরা হয়েছে ৪৭৬ জন, ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ ডলার। এর সঙ্গে কার্গো ও বাড়তি ব্যাগেজের আয় ধরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট থেকে সপ্তাহে মোট রাজস্ব আয় হবে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ২৪ ডলার। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিমানের লোকসান হবে ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৯ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১০ ডলার, অর্থাৎ ৫৮৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি।
লোকসানের কারণে বন্ধ হওয়ার আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান মোট ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। তাতে মোট ১১ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী, অর্থাৎ প্রতি ফ্লাইটে গড়ে ১৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়।
বিশ্বের দীর্ঘতম এই আকাশপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার, যা পেরোতে লাগে ৩৪ ঘণ্টা। বিমান চলাচলবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সিম্পল ফ্লাইংয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিমানের এ ফ্লাইটটি জ্বালানি নেওয়া এবং ক্রু পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দরে বিরতি দেবে।
বিমানের নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ এখন এফএএ ক্যাটাগরি-২-এ আছে, অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচলের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হয়নি। এফএএ পরিদর্শকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেবিচক এখনো আইসিএওর মানদণ্ড অনুযায়ী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে বিমান মনে করে, এফএএ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ক্যাটাগরি-১ নিশ্চিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের (ডিওটি) কাছ থেকে পারমিট পাওয়া যাবে।
বেবিচকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। বেবিচকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে এফএএর সঙ্গে কাজ করছে বেবিচক। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এটা মিলতে পারে। তিনি জানান, ক্যাটাগরি-১ পাওয়ার জন্য এফএএর নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বেবিচককে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বোয়িং। এই কোম্পানি ৫০০ ঘণ্টার পরামর্শ দিচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিল। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, এফএএর নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্রধারী কোনো দেশ থেকে ‘ওয়েট লিজ’ বা স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমান ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।
সংস্থাটি ‘ড্রাই লিজ’ বা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া আনে। যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। পরে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমান ভাড়ার চেষ্টা করা হলেও সফলতা আসেনি। এ কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রুটে টিকিট ছেড়েও পরে ফেরত নিতে বাধ্য হয় বিমান।
বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারিগরি কমিটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তদন্ত করেছে। কিছু উপদেশও দিয়ে গেছে। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বেবিচক।
বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, ফ্লাইট সুরক্ষায় সমস্যা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য তিনটি ধাপ আছে। প্রথমে পরিবহন বিভাগে আবেদন; দ্বিতীয়ত, এফএএর কাছ থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া এবং সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের (টিএসএ) ছাড়পত্র লাগবে।
বিমানের নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চলছে। এফএএর অনুমতি পেলে নিয়ম অনুযায়ী, ফ্লাইট পরিচালনার অন্তত ৯০ দিন আগে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা কর্মসূচি জমা দেওয়া হবে।
আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী বলেন, এর মধ্যে টিএসএ পরিদর্শন শেষে ভালো বলে মূল্যায়ন করেছে। টিএসএর নিরীক্ষায় বিমানও যুক্ত ছিল। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। টিএসএ থেকে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট বিষয়ে ১০ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পূরণ করে টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।
এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক না হলেও সরকার মর্যাদার প্রশ্নে উদ্যোগটি নিতে চায় বলে এরোটাইম ডট এরোর এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কথা তুলে ধরে দুই দেশের নাগরিকদের সুবিধা বিবেচনায় ‘জনস্বার্থে’ ঢাকা এবং নিউইয়র্ক, নেওয়ার্ক ও নিউ জার্সির মধ্যে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করার কথা বিমানের নথিতে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে বিমানের এই উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিমানের সাবেক এমডি কাজী ওয়াহিদুল আলম। এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাজার যাচাই না করে বিমান এই উদ্যোগ নিয়েছে। এটা না করে বড় এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে কোডশেয়ার বা পার্টনারশিপ করা যেত। অর্থাৎ চুক্তির আওতায় বিমানের কোড ও টিকিটধারী হিসেবে অন্য এয়ারলাইনসে যাত্রী পরিবহন করা যেত।’
বিমান পারমিটের জন্য আবেদন করলেও এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন বলে ওয়াহিদুল আলম মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে স্বায়ত্তশাসিত হতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, রেগুলেটর ক্যান নট বি অপারেটর, এয়ারপোর্টের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেবিচকই এয়ারপোর্ট চালায়।’

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৩ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসানের হিসাব ধরা হয়েছে। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৩ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসানের হিসাব ধরা হয়েছে। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৬ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১৭ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসানের হিসাব ধরা হয়েছে। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৩ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এতে সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসানের হিসাব ধরা হয়েছে। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৩ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১৭ ঘণ্টা আগে