Ajker Patrika

সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েও ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালাতে চায় বিমান

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৫
সপ্তাহে সোয়া ১১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েও ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালাতে চায় বিমান

১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে আবার ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। নিজস্ব দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজ দিয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ফ্লাইট চালাতে চায় রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থা। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর থেকে ‘ফরেন এয়ার ক্যারিয়ার পারমিট’ পেতে সম্প্রতি আবেদনও করেছে বিমান। তবে এই অনুমোদন পাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পেতে হবে। বেসামরিক বিমান চলাচলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হলে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়। 

বিমান নিউইয়র্কে সবশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল ২০০৬ সালের ৫ আগস্ট। লোকসানের কারণে এই পথে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুনরায় ফ্লাইট চালু করা হলেও বিমানকে সপ্তাহে প্রায় সোয়া ১১ কোটি বা বছরে ৫৮৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিতে হবে বলে বিমানের আবেদনের নথি থেকেই জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আয়-ব্যয়ের হিসাব চূড়ান্ত নয়। ফ্লাইট যখন চালু হবে, তখন পরিস্থিতি পাল্টাবে। যেসব বিষয় ধরে এই হিসাব করা হয়েছে, তার অনেক কিছু পাল্টে যেতে পারে। যখনকার তেলের হিসাব করা হয়েছে, তখন দাম অনেক বেশি ছিল, ডলারের বিনিময় হারও ছিল উচ্চ। তা ছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়েও খরচে পরিবর্তন আসার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞ দিয়ে পুরো নিখুঁতভাবে আবেদন তৈরি করা হয়েছে। 

এই বছরের জুলাই মাসের ব্লক আওয়ার, তেলের দাম, মুদ্রার বিনিময় হারসহ যেসব তথ্যের ভিত্তিতে ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে, তা বাস্তবে পাল্টে যাবে বলে বিমানের নথিতে দাবি করা হয়েছে। 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দর হয়ে জন এফ কেনেডি (জেএফকে) বিমানবন্দরে চলাচল করবে বিমানের ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজে ২৯৮ জন যাত্রী এবং ১ হাজার ৫০০ কেজি মালপত্র বহন করা যাবে। পারমিটের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিমানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জনসন, রজার্স অ্যান্ড ক্লিফটন এলএলপি আবেদন জমা দিয়েছে। 

বিমানের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই রুটে রাউন্ড ট্রিপে যাত্রী ধরা হয়েছে ৪৭৬ জন, ভাড়া পড়বে প্রায় ৮০০ ডলার। এর সঙ্গে কার্গো ও বাড়তি ব্যাগেজের আয় ধরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুট থেকে সপ্তাহে মোট রাজস্ব আয় হবে ২১ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ ডলার। সব মিলিয়ে ব্যয় হবে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ২৪ ডলার। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে বিমানের লোকসান হবে ১০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৯ ডলার বা প্রায় ১১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১০ ডলার, অর্থাৎ ৫৮৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বেশি। 

লোকসানের কারণে বন্ধ হওয়ার আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান মোট ৭৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। তাতে মোট ১১ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী, অর্থাৎ প্রতি ফ্লাইটে গড়ে ১৪৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়। 

বিশ্বের দীর্ঘতম এই আকাশপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ হাজার ৬৮১ কিলোমিটার, যা পেরোতে লাগে ৩৪ ঘণ্টা। বিমান চলাচলবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল সিম্পল ফ্লাইংয়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিমানের এ ফ্লাইটটি জ্বালানি নেওয়া এবং ক্রু পরিবর্তনের জন্য তুরস্কের ইজমির বিমানবন্দরে বিরতি দেবে।  

বিমানের নথি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ এখন এফএএ ক্যাটাগরি-২-এ আছে, অর্থাৎ বেসামরিক বিমান চলাচলের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএওর সব মানদণ্ড পূরণ হয়নি। এফএএ পরিদর্শকদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেবিচক এখনো আইসিএওর মানদণ্ড অনুযায়ী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে বিমান মনে করে, এফএএ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে ক্যাটাগরি-১ নিশ্চিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিভাগের (ডিওটি) কাছ থেকে পারমিট পাওয়া যাবে। 

বেবিচকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। বেবিচকের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে এফএএর সঙ্গে কাজ করছে বেবিচক। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে যেকোনো সময় এটা মিলতে পারে। তিনি জানান, ক্যাটাগরি-১ পাওয়ার জন্য এফএএর নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে বেবিচককে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বোয়িং। এই কোম্পানি ৫০০ ঘণ্টার পরামর্শ দিচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। 

এর আগে ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিল। ওই সমঝোতা অনুযায়ী, এফএএর নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্রধারী কোনো দেশ থেকে ‘ওয়েট লিজ’ বা স্বল্পমেয়াদি পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া করে ফ্লাইট চালুর সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বিমান ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। 

সংস্থাটি ‘ড্রাই লিজ’ বা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিতে মিসরের ইজিপ্টএয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া আনে। যুক্তরাষ্ট্র তা গ্রহণ করেনি। পরে ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমান ভাড়ার চেষ্টা করা হলেও সফলতা আসেনি। এ কারণে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ রুটে টিকিট ছেড়েও পরে ফেরত নিতে বাধ্য হয় বিমান। 

বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারিগরি কমিটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তদন্ত করেছে। কিছু উপদেশও দিয়ে গেছে। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বেবিচক। 

বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, ফ্লাইট সুরক্ষায় সমস্যা হলেও নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য তিনটি ধাপ আছে। প্রথমে পরিবহন বিভাগে আবেদন; দ্বিতীয়ত, এফএএর কাছ থেকে ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া এবং সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের (টিএসএ) ছাড়পত্র লাগবে। 

বিমানের নথিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের মানদণ্ড অনুযায়ী নিরাপত্তা অর্জনের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চলছে। এফএএর অনুমতি পেলে নিয়ম অনুযায়ী, ফ্লাইট পরিচালনার অন্তত ৯০ দিন আগে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা কর্মসূচি জমা দেওয়া হবে। 

আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী বলেন, এর মধ্যে টিএসএ পরিদর্শন শেষে ভালো বলে মূল্যায়ন করেছে। টিএসএর নিরীক্ষায় বিমানও যুক্ত ছিল। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর সঙ্গে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। টিএসএ থেকে নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট বিষয়ে ১০ ধরনের পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পূরণ করে টার্মিনাল তৈরি হচ্ছে।

এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক না হলেও সরকার মর্যাদার প্রশ্নে উদ্যোগটি নিতে চায় বলে এরোটাইম ডট এরোর এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। সরাসরি ফ্লাইট না থাকার কথা তুলে ধরে দুই দেশের নাগরিকদের সুবিধা বিবেচনায় ‘জনস্বার্থে’ ঢাকা এবং নিউইয়র্ক, নেওয়ার্ক ও নিউ জার্সির মধ্যে এই ফ্লাইটের পরিকল্পনা করার কথা বিমানের নথিতে তুলে ধরা হয়েছে।   

তবে বিমানের এই উদ্যোগকে ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখছেন বিমানের সাবেক এমডি কাজী ওয়াহিদুল আলম। এই বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাজার যাচাই না করে বিমান এই উদ্যোগ নিয়েছে। এটা না করে বড় এয়ারলাইনসগুলোর সঙ্গে কোডশেয়ার বা পার্টনারশিপ করা যেত। অর্থাৎ চুক্তির আওতায় বিমানের কোড ও টিকিটধারী হিসেবে অন্য এয়ারলাইনসে যাত্রী পরিবহন করা যেত।’

বিমান পারমিটের জন্য আবেদন করলেও এফএএর ক্যাটাগরি-১ ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন বলে ওয়াহিদুল আলম মনে করেন। তিনি বলেন, ‘এর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে স্বায়ত্তশাসিত হতে হবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, রেগুলেটর ক্যান নট বি অপারেটর, এয়ারপোর্টের জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বেবিচকই এয়ারপোর্ট চালায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ষষ্ঠবারের মতো এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেল ডিবিএল গ্রুপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছে বহুমুখী শিল্পগোষ্ঠী ডিবিএল গ্রুপ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছে বহুমুখী শিল্পগোষ্ঠী ডিবিএল গ্রুপ। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রপ্তানি বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়নে অবদানের জন্য সম্প্রতি ‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছে বহুমুখী শিল্পগোষ্ঠী ডিবিএল গ্রুপ। এর মাধ্যমে ষষ্ঠবারের মতো সম্মানজনক অ্যাওয়ার্ড অর্জন করল গ্রুপটি।

এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন।

ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. জব্বার বলেন, ‘এই পুরস্কার একবার জেতা একটি বিশেষ বিষয়। কিন্তু ছয়বার এই পুরস্কার অর্জন করা এবং বাংলাদেশের একমাত্র শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে এই গৌরব ধরে রাখার মধ্য দিয়ে বোঝা যায় যে, ধারাবাহিকতা, সততা এবং উদ্ভাবনই হলো সত্যিকারের রপ্তানি শ্রেষ্ঠত্বের মূল স্তম্ভ। এই স্বীকৃতি ডিবিএল পরিবারের প্রতিটি সদস্য এবং আমাদের অংশীদারদের প্রাপ্য।’

বিশ্বব্যাপী পোশাক সংগ্রহের হাব হিসেবে অবস্থান সুসংহত করছে বাংলাদেশ। আর এর মধ্যে অগ্রণী অবস্থানে রয়েছে ডিবিএল গ্রুপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও কমেছে পেঁয়াজ আলু ও সবজির দাম

  • পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম নামল ৪২ টাকা কেজি
  • ডিম, মুরগি ও ডালের দাম আগের মতোই
  • চালের দাম কমলেও আশানুরূপ নয়, বলছেন ক্রেতা
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ০৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশি নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ ও আমদানির বাড়তে থাকায় আরও কমেছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৮-২৫ টাকা। শুধু পেঁয়াজই নয়, চলতি সপ্তাহে আলু, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ শীতকালীন সবজির দামও আরেকটু কমেছে। এ ছাড়া চাল, ডাল, ডিম, মুরগি ও অন্যান্য মুদিপণ্য আগের দামেই স্থির রয়েছে।

তবে দাম কমে বাজারে স্বস্তি এলেও তথ্য বলছে অধিকাংশ সবজির দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখনো বেশি রয়েছে। এ ছাড়া আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম যতটা কমা প্রয়োজন, ততটা কমেনি বলে মনে করছেন ক্রেতারা।

এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আলুর বাজার। সাধারণত অন্যান্য বছর এই সময় আলুর দাম ৫০ টাকার ওপরে থাকে। কিন্তু চলতি বছর ২৫ টাকা কেজিতে নেমেছে।

সবজিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও চালের দাম নিয়ে এখনো অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, দাম কমলেও এখনো অনেক বেশি রয়েছে।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি শ্যামবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪২ থেকে ৪৭ টাকা কেজি; এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০-৬৫ টাকা। এ ছাড়া আমদানির পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০-৭২ টাকা।

শ্যামবাজারের মেসার্স আনোয়ার বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী মো. রঞ্জু শেখ বলেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেছে। এতে দাম খুব দ্রুত নামছে। নতুন, পুরোনো ও আমদানির মিলে এখন তিন ধরনের পেঁয়াজই রয়েছে বাজারে। চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ায় পেঁয়াজের বেচাকেনা খুব কম।

পাইকারিতে কমে আসায় খুচরাতেও দাম কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজারে খুচরায় দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৮৫-৯০ টাকা। আমদানির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯৫-১০০ টাকা।

বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের (ডিএএম) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় নতুন আলু বাজারে তেমন ছিল না। পুরোনো আলুই বিক্রি হয়েছে ৫০-৭০ টাকা কেজি।

রাজধানীর বাজারগুলোয় গতকাল বেগুন বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ টাকা। ডিএএম বলছে, গত বছর এই সময় বেগুনের দাম ছিল ৩০-৬০ টাকা কেজি।

বাজারে শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৭০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৭০ টাকা কেজি। গত বছর এই সময় শিমের দাম ছিল ৩০-৮০ টাকা।

বাজারে প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫-৪০ টাকা। গত বছর কপি একই দামে বিক্রি হতে দেখা গিয়েছিল।

বাজারে শীতের সবজি মুলা প্রতি কেজি ২০ টাকা, সপ্তাহখানেক আগে মুলা বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকায়। গত বছর এই সময় মুলার দাম নেমেছিল ১৫ টাকা কেজিতে।

শীতের সবজির মধ্যে টমেটোর দাম কিছুটা বেড়েছে গত এক সপ্তাহে। বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ টাকা।

কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০-১০০ টাকা, দেড় থেকে দুই সপ্তাহ আগে যা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা নূর নবী বলেন, গত বছর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দেশে পরিস্থিতি ছিল একটু অস্থির। এতে সরবরাহব্যবস্থাও ভালো ছিল না। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থাও কিছুটা খারাপ ছিল। এতে সবজির চাহিদাও কম ছিল। ফলে দামও কম ছিল। এ বছর সে রকম পরিস্থিতি নেই।

সবজিতে দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকলেও ডিম, মুরগি, চালসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে।

বাজারে ডিমের দাম আরও কমে প্রতিটি ৮ টাকা ৩৩ পয়সা থেকে ৯ টাকা ১৭ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে; যা গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত ছিল। গত বছর একই সময় প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছিল ১০ টাকা ৮৪ পয়সা থেকে ১১ টাকা ৬৭ পয়সা।

ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহেও এই দামেই বিক্রি হয়েছিল।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও বাজার তথ্য বলছে, খুচরা বাজারে গুটি, স্বর্ণাসহ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। তবে এই দামও বেশি বলছে ক্রেতারা। যদিও গত বছর একই সময় মোটা চাল ছিল ৫২-৫৮ টাকা।

বিআর-২৮, বিআর-২৯, পাইজামসহ মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা গত বছর ছিল ৬০-৬৫ টাকা। কাটারি, শম্পা কাটারি, জিরাশাইলসহ সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৯০ টাকা কেজি, যা গত বছর একই সময় ছিল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা।

মালিবাগ বাজারের ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, মাঝারি মানের এক কেজি সরু চাল কিনতে এখনো ৭০-৭৫ টাকা লাগছে। আমনের এই ভরা মৌসুমে এটা অনেক বেশি। চালের দাম আরও কমে আসা উচিত। প্রতিবেশী দেশগুলোতে চালের দাম অনেক কম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের ই-রিটার্ন দাখিলে এনবিআরের হেল্প ডেস্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের সুবিধার্থে ছুটির দিনে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সহজীকরণে এনবিআরের উদ্যোগে ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের সহযোগিতায় ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটস্থ কার্যালয়ে ‘হেল্পডেস্ক’ চালু করা হয়েছে।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এ ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের হেল্পডেস্ক থেকে আগামী শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আকাশপথে পণ্য পরিবহনে অফডক চান ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১০
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা

আকাশপথে আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার দুর্বলতা নতুন করে সামনে এনেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড। ওই ঘটনায় কয়েক দিনের জন্য কার্গো কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। এই প্রেক্ষাপটে আকাশপথে পণ্য পরিবহনকে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সংকটসহনীয় করতে বিমানবন্দরের বাইরে অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো ব্যবস্থা চালুর দাবি জোরালো হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো অপারেশন চালু না হলে যেকোনো সংকটে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

অফডক হলো বন্দর বা বিমানবন্দরের মূল এলাকার বাইরে অবস্থিত এমন নির্ধারিত স্থাপনা, যেখানে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের খালাস, সংরক্ষণ, পরীক্ষা ও হ্যান্ডলিং করা হয়। সহজভাবে বলা যায়, বন্দরের ভেতরে সব কাজ না করে বন্দরের বাইরে আলাদা জায়গায় কার্গোর কাজ করা, এটাই অফডক।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মতো আকাশপথেও অফডক ব্যবস্থা চালু করা যায় বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং সেবা মূলত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা খুবই সীমিত। অনেক সময় পণ্য খালাসে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়। এতে রপ্তানি ও আমদানি উভয় ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন।

অফডক চালু হলে এ ধরনের জটিলতা থাকবে না জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এতে পণ্য খালাস দ্রুত হবে এবং সামগ্রিকভাবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সহজ ও গতিশীল হবে।

অফডক দরকার কেন

সংশ্লিষ্টরা জানান, অফডক ব্যবস্থা চালু হলে বেসরকারি উদ্যোগে একাধিক অপারেটর থাকবে। ফলে কার্গো আমদানি-রপ্তানি পরিবহনে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং, স্ক্যানিং চার্জসহ অন্যান্য ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে সেবার মানও বাড়বে।

তথ্যমতে, বর্তমানে আকাশপথে প্রতি কেজি পণ্য রপ্তানিতে প্রায় ২৬ টাকা সার্ভিস চার্জ নেয় বিমান বাংলাদেশ ও সিভিল এভিয়েশন। একই সেবা পেতে ব্যাংককে প্রতি কেজিতে ৬.৪২ টাকা, কলকাতায় ৪.৮৮ টাকা এবং দিল্লিতে ৬.১০ টাকা দিতে হয়। এতে করে আকাশপথে পণ্য পরিবহন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেশে এয়ার কার্গো অপারেশনে অফডক পদ্ধতি চালু হলে অধিকতর কার্গো নিরাপত্তার সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ইলেকট্রনিক কার্গো ট্র্যাকিং সিস্টেম (ইসিটিএস) চালু হবে। ফলে সহজে কার্গোর অবস্থান জানা যাবে। দ্রুত পণ্য খালাসে সুবিধা পাবে এবং জট কমবে। ওষুধের কাঁচামাল, জরুরি গার্মেন্টস পণ্যের নমুনাসহ আনুষঙ্গিক পণ্য সহজে পরিবহন করা যাবে। এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ত্বরান্বিত হবে।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। বিশ্বের অনেক দেশে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন সিঙ্গাপুর, দুবাই, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, জাপান, ভারত, হংকং, ইউএসএ। সেখানে এই ব্যবস্থার ফলে কার্গো পরিবহনে সময়ের সাশ্রয় ও পণ্য খালাসে জটিলতা নেই বললেই চলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে এবং তা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের ব্যবস্থা ঢাকার বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় চালু করা গেলে আকাশপথে পণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে।

এদিকে এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন চেয়ে ২৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, ঢাকা বিমানবন্দর এবং এর আশপাশে অফডক সুবিধা চালু হলে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং রপ্তানির গতি বাড়বে। তবে অফডকের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কম খরচে ভালো সেবা নিশ্চিত করতে স্পষ্ট শর্ত থাকা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তাই অফডক ব্যবস্থায় বিমানের সঙ্গে সমন্বয় ও চুক্তির বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্ট থাকা জরুরি।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, অফডক চালু হলে ডিএইচএল বা ফেডেক্সের মতো কুরিয়ার কোম্পানিগুলো বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার পরে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে সরাসরি ডেলিভারি করতে পারবে। তখন আর বিমানের ওপর নির্ভর করতে হবে না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ‘এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস ডেলিভারি’ বিষয়ক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ—বিডা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে এয়ার কার্গো কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কাস্টমস ও মূল্য সংযোজন কর বিভাগ থেকে ‘এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) স্থাপন, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, তদারকি ও কাস্টমস নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২৫ ’-এর খসড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে।

এয়ার কার্গো অপারেটর’স স্টেশন নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত