Ajker Patrika

যুক্তরাজ্যে প্রতি সেকেন্ডে ডাস্টবিনে যায় ১৩টি ভেপ, বাড়ছে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারী

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৮
২০২৫ সালের জুন থেকে যুক্তরাজ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। ছবি: পিক্সাবে
২০২৫ সালের জুন থেকে যুক্তরাজ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। ছবি: পিক্সাবে

২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ধূমপানমুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ সরকারের এক কর্মকর্তা। এদিকে গবেষণায় জানা গেল, দেশটিতে প্রতি সেকেন্ডে ১৩টি ভেপ (ইলেকট্রনিক সিগারেট) ফেলে দেওয়া হয়—যা প্রতিদিনের হিসাবে ১০ লাখেরও বেশি। গবেষণাটিতে বলা হয়, এটি ‘পরিবেশগত দুঃস্বপ্ন’–এর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

আজ সোমবার দ্য গার্ডিয়ানের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষণার তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণাটি থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যে বিগ পাফ ভেপের ব্যবহার বেড়ে গেছে। আকারে বড় এই ভেপগুলোর প্রতিটি ছয় হাজার পাফ পর্যন্ত ধারণ করতে পারে। একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপ গড়ে ৬০০ পাফ ধারণ করে। পাফ বলতে সিগারেটের মতো একবার টানা বোঝায়।

পরিবেশ সংরক্ষণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ম্যাটেরিয়াল ফোকাস ইলেকট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পুনর্ব্যবহার যোগ্যতা নিয়ে কাজ করে। এ প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান অপিনিয়াম এই গবেষণাটি করেছিল। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি সপ্তাহে বিগ পাফ ক্যাটাগরির ৩০ লাখ কেনা হচ্ছে। আর সপ্তাহে ৮২ লাখ ভেপ ফেলে দেওয়া বা ভুলভাবে রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে।

পরিবেশগত ক্ষতি এবং শিশুদের মধ্যে এটির ব্যাপক ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে ২০২৫ সালের জুন থেকে যুক্তরাজ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। দেশটিতে শিশুদের বিনা মূল্যে ভেপের নমুনা দেওয়ার মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। এ কারণে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে সরকার। বলা হচ্ছে, শুধু পুনরায় চার্জ করা যায় এমন বা রিফিলযোগ্য কার্টিজযুক্ত ভেপ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে।

তবে সব ধরনের ভেপেই লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি থাকে। এটি ভেঙে ফেললে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এটি ফেলে দেওয়ার পর অন্যান্য বর্জ্যের সঙ্গে মিলে বর্জ্যবাহী ট্রাক বা রিসাইক্লিং সেন্টারে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে এ ধরনের আগুনের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। গত বছর ২০২২ সালের তুলনায় এ ধরনের ঘটনা ৭১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

পরিবেশবিদেরা বলছেন, এই একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপগুলো অপচয় বাড়ায় এবং বাস্তুসংস্থানের জন্য ক্ষতিকর। এগুলোতে লিথিয়াম ও তামার মতো মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান থাকে। এগুলো শেষ পর্যন্ত বর্জ্যের সঙ্গে ফেলে দেওয়া হয়।

ম্যাটেরিয়াল ফোকাস এক হিসাবে দেখিয়েছে, প্রতিবছর ফেলে দেওয়া ভেপগুলো দিয়ে ১০ হাজার ১২৭টি বৈদ্যুতিক যানবাহন চালানোর প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করতে পারত। এই ভেপগুলো প্রায়ই যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হয়, যা বন্য প্রাণীর জন্য বিষাক্ত।

গবেষণায় সুপারিশ করা হয়, ভেপগুলো দোকানে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। লাইসেন্সের মাধ্যমে ভেপ বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ম্যাটেরিয়াল ফোকাসের নির্বাহী পরিচালক স্কট বাটলার বলেন, ‘ভেপ উৎপাদকেরা একবার ব্যবহৃত ভেপ নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চূড়ান্তভাবে সৃজনশীল করে তুলছে। বর্তমান নিষেধাজ্ঞা সবচেয়ে পরিবেশগতভাবে অপচয়মূলক পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নেবে। তবে নতুন পণ্যের ক্রমবর্ধমান প্রবাহ মোকাবিলার জন্য আরও নমনীয় আইন প্রয়োজন হতে পারে।’

বাটলার বলেন, ‘যেভাবে একটি ভেপ কেনা সহজ, ঠিক সেভাবে তা রিসাইকেল করাও সহজ হওয়া উচিত। ভেপ ব্যবহারকারীদের দাবি এটা হওয়া উচিত যে তারা যেখানে ভেপ কিনছে সেখানে রিসাইক্লিং পয়েন্টও রাখা হোক। ভেপ বিক্রেতাদের জন্য এটি আইনি বাধ্যবাধকতা হওয়া উচিত।’

ম্যাটেরিয়াল ফোকাসের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘আরও বেশিসংখ্যক সহজলভ্য এবং দৃশ্যমান ভেপ রিসাইকেল ড্রপ-অফ পয়েন্ট প্রয়োজন। আমাদের খুচরা বিক্রেতা ও উৎপাদকদের যথাযথ রিসাইক্লিং সমাধানগুলোর জন্য অর্থায়ন করতে হবে যাতে উপাদান পুনরুদ্ধার ও অগ্নি-ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা যায়। যুক্তরাজ্যের দোকানে, পার্কে, অফিসের কাছাকাছি, বার ও পাব, এবং স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি সহজলভ্য রিসাইক্লিং ড্রপ–অফ পয়েন্ট প্রয়োজন।’

যেকোনো ইলেকট্রনিক পণ্য যেগুলোর প্লাগ, ব্যাটারি বা ধাতব তার রয়েছে, সেগুলো কখনোই সাধারণ বর্জ্যে ফেলা উচিত নয় এবং ন্যূনতম হলেও রিসাইকেল করা উচিত বলে মনে করেন বাটলার।

এর আগে গত জুলাই মাসে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে চলতি বছরের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য ভেপ বিক্রি নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কাউন্সিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ, রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঘ মাস আসতে এখনো অনেক বাকি। আজ সোমবার কেবল ১৪ পৌষ। তবে এখনই হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। আজ সকাল ৬টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাতে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আজ সকাল ৯টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকালে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১৩, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৬, সিলেটে ১৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭ এবং খুলনা ও বরিশালে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুয়াশার কারণে দেশজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

এ ছাড়া সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় শীত আরও বেড়েছে, পড়বে ঘন কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় শীত যেন আরও জেঁকে বসেছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ সোমবার একই সময়ে সেটি কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, কুয়াশায় ব্যাহত চলাচল

  • দক্ষিণের পথে লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা।
  • কুয়াশায় ব্যাহত সড়ক ও বিমান যোগাযোগও।
  • বাগেরহাটে শীতের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু।
  • রাতের তাপমাত্রা আরেকটু কমতে পারে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায় ‘শৈত্যপ্রবাহ’ না চললেও গতকাল রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশ তীব্র শীতে কাবু ছিল। বরং ঠান্ডার কামড়ের জোর আরও কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গসহ দেশের অনেক এলাকাতেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। চলতে পারে ঘন কুয়াশার ভোগান্তিও। তবে কয়েক দিন পরই নতুন বছরের শুরুতে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিকলী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তারুজ্জামান ফারুক জানিয়েছেন, গতকাল সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামা মানে রীতিমতো হাড়কাঁপানো শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবারসহ আগামী চার দিন সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদর অব্যাহত থাকতে পারে।

লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়।

কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌযোগাযোগের পাশাপাশি বিমান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকালও ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত একাধিক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট দেরিতে অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। তবে কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয়নি।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ গতকাল দুপুরের দিকে বলেন, ‘ভোরে রানওয়ের দৃশ্যমানতা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। তবে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ফ্লাইট অপারেশন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে’।

বাগেরহাটে বৃদ্ধের মৃত্যু

বাগেরহাটের চিতলমারীতে শীতের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে বৈদ্যনাথ মণ্ডল (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। বৈদ্যনাথ চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতী গ্রামের মুকুন্দলাল মণ্ডলের ছেলে।

এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়ে গত চার দিনে মোট ৫৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

উত্তরে জীবন বিপর্যস্ত

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কুয়াশার জন্য মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। হিমালয়ের পাদদেশের কাছাকাছি হওয়ায় বরাবরই উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে সে অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গত দুই দিনে এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন ১৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার ও গতকাল দুপুর ১২টার আগে বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি।

দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, এটি চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির ছিল। এটি চলতি মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মধ্য পৌষে এসে সারা দেশে শীত যেন জেঁকে বসেছে। গতকালের তুলনায় আজ রোববার তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে। এর সঙ্গে পড়বে ঘন কুয়াশা।

আজ বেলা ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় ছিল ১৪ দশমিক ৩।

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সকালে তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী, রংপুর, বরিশালে ১৩; ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৩, সিলেটে ১৪ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬, খুলনায় ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও আবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

সারা দেশে আজ রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

২৯ ডিসেম্বরও পরিস্থিতির পরিবর্তন তেমন হবে না উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, ৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এদিন রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত