Ajker Patrika

ঝড়-বন্যা থেকে রেহাই পেতে যা করেন ফিলিপাইনের আদিবাসীরা

আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭: ০১
ঝড়-বন্যা থেকে রেহাই পেতে যা করেন ফিলিপাইনের আদিবাসীরা

ফিলিপাইনের জলাভূমি অঞ্চলে বাস মানোবো আদিবাসীদের। প্রতিবছর কয়েক ডজন ঝড়-বন্যার মুখোমুখি হয় তারা। কিন্তু দক্ষতার সঙ্গে এ ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো সামলেও নেয়। কিন্তু কী কৌশল ব্যবহার করে সফল হচ্ছে মানোবোরা? এখান থেকে কী অন্যদেরও শেখার কিছু আছে? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন অবলম্বনে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে এ লেখাটিতে।

দক্ষিণ ফিলিপাইনের মানোবো আদিবাসীদের একজন দলনেত্রী মারিতেস বাবানতোর মনের পর্দায় এখনো উজ্জ্বল ২০১২ সালে তাঁদের গ্রামে আঘাত হানা টাইফুনের স্মৃতি।

নদী, হ্রদ আর জলা নিয়ে গঠিত আগুসান মার্শল্যান্ডে বাবানতো এবং তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেদের বাস। ওই সময় প্রবল বৃষ্টিতে জলাভূমির পানির উচ্চতা বেড়ে যায় ১০ মিটার (৩৩ ফুট)। অর্থাৎ একটি তিনতলা দালানের সমান। তবে গ্রামবাসীর বাড়িগুলো এই পরিস্থিতিতেও জলের ওপর ভেসে থাকে। প্রাচীন পন্থাই তাদের বাঁচিয়ে দিল ডুবে যাওয়া থেকে।

‘আমাদের সম্প্রদায়ের লোকেরা কখনো এমন ঝড় দেখিনি। বাতাসের গর্জন ছিল প্রচণ্ড। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল। বেশি নিরাপত্তার আশায় সবাইকে ভাসমান হলের মধ্যে জড়ো করেছিলাম আমরা।’ বলেন মারিতেস বাবানতো।

বারোতো নামে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী ক্যানু বা নৌকা চালাচ্ছেন এক মানাবো নারী।টাইফুন বোফা কিংবা টাইফুন পাবলো নামে পরিচিত প্রবল ওই ঝড়ে দুই হাজারের মানুষের প্রাণ যাওয়ার পাশাপাশি অবকাঠামোসহ বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হয় ফিলিপাইন। কিন্তু বাবানতো এবং তাঁর প্রতিবেশীরা ঝড়ের পরে আবিষ্কার করেন তাঁদের ঘরগুলো অক্ষত আছে। স্বাভাবিক ঝড়-বন্যা মোকাবিলায় ভাসমান প্ল্যাটফর্ম বা মাচার ওপর তৈরি করা হয় এগুলো। তাঁদের কৌশল এমনকি প্রবল শক্তিশালী টাইফুনের বিরুদ্ধেও কাজে লেগে যায়।

মানোবোদের ভাসমান বাড়িসহ অন্য উদ্ভাবন এবং অনুশীলন তাদের ডাঙা ও জলের রাজ্যের মিশ্রণে গড়ে ওঠা আশ্চর্য এক অঞ্চলে বাস করতে সহায়তা করে। গবেষকদের এর প্রতি আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। অন্য সম্প্রদায়ের জন্যও বৈরী আবহাওয়ায় মানিয়ে নিতে এবং এর জন্য প্রস্তুতি নিতে এটা গুরুত্বপূর্ণ পাঠ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন তাঁরা।

আগুসান মার্শল্যান্ডে ভাসমান একটি বাড়ি।আগুসান মার্শল্যান্ডে ২ লাখ ৯০ হাজারের মতো মানোবোর বাস। জলাভূমি আর জলকে ঘিরেই আবর্তিত হয় তাদের জীবন। এখানে কোনো রাস্তা নেই। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি কিংবা জায়গার মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করছে নদী আর হ্রদ।

বাবানতোর দিন শুরু হয় বারোতো নামে পরিচিত তাদের ঐতিহ্যবাহী ক্যানু বা নৌকা নিয়ে যাত্রার মাধ্যমে। একটার পর একটা বাড়ি, আদিবাসীদের একত্রিত হওয়ার হল, স্কুল, উপাসনালয়, পশুর খোঁয়াড়কে পাশ কাটিয়ে নৌকা চালান তিনি। আর তার পেরিয়ে আসা প্রতিটি কাঠামোই ভাসমান। নৌকাতে চেপেই নিজের হাঁস, মুরগি ও শূকরের ছোট খোঁয়াড়গুলোয় যান খাবার দিতে। ভাগনে ও ভাগনিদের তাঁদের ছোট ছোট বারাতোতে চাপিয়ে পাঠান স্কুলে।

এ ধরনের জলা জায়গায় বসবাস করা সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য বন্যা একটি অতি স্বাভাবিক ঘটনা। বৃষ্টির মৌসুমে ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পানির উচ্চতা যায় বেড়ে। এদিকে শুকনো মৌসুমে পানির উচ্চতা কমে যায়। পানির এই ওঠানামার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে বানানো ভেলার মতো প্ল্যাটফর্ম বা মঞ্চের ওপর নিজেদের একতলা বা দোতলা ঘরগুলো তৈরি করে মানোবোরা। এই মঞ্চগুলো ভেসে থাকে, সেই সূত্রে ভেসে থাকে ঘরগুলিও।

বারোতো নৌকা চালানোর দক্ষ মানাবো শিশুরাও।প্ল্যাটফর্ম বা মঞ্চগুলো ভারী দড়ি ও লতা ব্যবহার করে বাংকাল নামের একধরনের গাছের চারপাশে নোঙর করা হয়। জলাভূমির এ ধরনের গাছগুলো বন্যা উপদ্রুত এসব হ্রদ ও জলার মাঝখানে জন্মে।

বাবানতো জানান, নিয়মিত বন্যার চেয়ে বরং ক্রমেই বাড়তে থাকা বাতাসের গতি নিয়ে বেশি আতঙ্কে থাকেন। বন্যার একটি উপকারও তাঁর চোখে পড়ে, ‘পানি যত বেশি থাকে, তত বেশি মাছ আমরা ধরতে পারি।’

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঝড় ও বন্যাকে আরও তীব্র, শক্তিশালী এবং নিয়মিত ঘটনায় পরিণত করেছে। সে ক্ষেত্রে ভাসমান বাড়ির সম্ভাব্য সুবিধাগুলো এগুলোর উদ্ভাবক সম্প্রদায়টির বাইরে অন্যদেরও মনোযোগ আকর্ষণ করছে। এমন ভাসমান বাড়ি বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দ্বীপদেশগুলোতে হুমকির মুখে থাকা শহরের বাসিন্দাদের জন্য একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাম তেলের চাহিদার আগুসান মার্শল্যান্ডের নতুন নতুন এলাকায় বাগান করা হচ্ছে।ফিলিপাইনের স্থপতি ও নগর নকশা গবেষক ফ্রান্সিসকা মেজিয়া চাকরি করেন নেদারল্যান্ডসের ডেলফট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে। তাঁর মতে, বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব মোকাবিলা করার পদ্ধতি খুঁজে বের করতে মানোবোর মতো আদিবাসীদের সংস্কৃতির দিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে। তবে তিনি এটাও মনে করিয়ে দেন, ভাসমান বাড়িগুলোর মতো আদিবাসী উদ্ভাবনগুলোর সঙ্গে তাদের প্রকৃতি এবং জমির সংরক্ষণের বিষয়টি জড়িত। কাজেই গোটা বিষয়টি উপলব্ধি করাটাই এ ক্ষেত্রে জরুরি।

ফিলিপাইনের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ মিন্দানাওয়ের কেন্দ্রে জলাভূমি, পিটল্যান্ড ও ৫৯টি হ্রদের সমন্বয়ে ১৪ হাজার ৮০০ হেক্টরের আগুসান মার্শল্যান্ড বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের অবস্থান। আর এখানে বাস ভাসমান এই বসতির।

মানোবো এবং জলাভূমির অন্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে মাছ ধরা হলো জীবিকার প্রধান উৎস। এখানকার বাস্তুতন্ত্র এবং এতে তাদের নিজস্ব জায়গাকে সম্মান জানানো আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক অনুশীলনও এর সঙ্গে জড়িত। তারা গান ও প্রার্থনার মাধ্যমে তাদের চারপাশের জলাভূমির প্রাণীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করে।

বাড়ি, স্কুল, উপাসনালয় সবকিছুই তৈরি হয় ভেসে থাকতে সক্ষম এমন প্ল্যাটফর্ম বা মাচার ওপরে।‘আমাদের পূর্বপুরুষ, আত্মা ও দেবতাদের মতোই লোনা পানির কুমির, মিঠা পানির মাছ এবং পরিযায়ী পাখিরা জলাভূমির আদি বাসিন্দা। তারা এই জলের ওপর নির্ভর করে।’ বলেন বেনোনি হ্রদের গভীরে অবস্থিত বসতির মানোবো গোত্র প্রধান দাতু দুরাঙ্গো।

তাদের বাড়িঘর ঝড় ও বন্যা প্রতিরোধ করলেও মানোবোরা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিস্তৃত পরিণতির বাইরে নয়। গবেষকেরা দীর্ঘায়িত খরার মতো হুমকির কথা বলেছেন। যেমন পাম তেলের চাহিদার কারণে পিটল্যান্ডগুলো (গাছপালা পচে মাটির সঙ্গে মিশে যে গাঢ় বাদামি জমি তৈরি হয়) বাগানে পরিণত হয়েছে। কাঠ চোরাচালান বিপন্ন এবং স্থানীয় গাছকে হুমকির সম্মুখীন করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে মানোবোরা, যাদের গোটা অস্তিত্ব পানির ওপর নির্ভরশীল, আরেকটি হুমকির মুখে পড়েছে। সেটি বছরের কখনো কখনো পানির স্বল্পতা।

উচ্চ তাপের কারণে সৃষ্ট খরায় আশপাশের ভাসমান আবাসস্থল এবং মূলভূমির বিভিন্ন বাজার, খামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলপথে চলাচলে সমস্যায় পড়ছে।

আগুসান জলাভূমির পানলাবুহাস হ্রদের মানাবো বসতির ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে গোত্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন দাতু বয়েস রেয়েজ। তিনি মানোবো ছাড়া অন্যদেরও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে যত্নবান হওয়ার এবং এটি আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোর ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা উপলব্ধির চেষ্টা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি মনে করিয়ে দেন, অন্যরা যে ঘরগুলো তৈরি করে তা এখনো একই মাটি, গাছ ও জল থেকে আসে। ‘যদি আমরা পানিকে রক্ষা করার উপায় খুঁজে বের করি, তাহলে এটিও আমাদের সাহায্য করার উপায় খুঁজে নেবে। এটিই এর প্রকৃতি।’ বলেন তিনি, ‘কারণ জলাভূমিটির নামের অর্থ এটাই, আগুসান মানে যেখানে জল প্রবাহিত হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বায়ুমান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে মিশরের কায়রো।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৫৪।

ঢাকার বেশকিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— দক্ষিণ পল্লবী (৩০২), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (২৭৯), ইস্টার্ন হাউজিং (২৬৭), কল্যাণপুর (২৬৬) ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২৩৯)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কায়রো। শহরটির একিউআই স্কোর ৩৪৬। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৬৪, খুব অস্বাস্থ্যকর), পাকিস্তানের করাচি (২০৬, খুব অস্বাস্থ্যকর) ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইরানের তেহরান (১৭১, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার তাপমাত্রা কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা আজ মঙ্গলবার সামান্য কমেছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ সোমবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৩২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ২৭৪, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (২৩৫), ভারতের কলকাতা (২১০) ও ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৯১)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, দক্ষিণ পল্লবী, ইস্টার্ন হাউজিং, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, শান্তা ফোরাম, পেয়ারাবাগ রেল লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভোরবেলা কিছুটা কুয়াশা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে গতকালের চেয়ে কিছুটা বেশি শীত পড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত