Ajker Patrika

ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসে এবার কী হবে? 

আশিকুর রিমেল, ঢাকা
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১২: ০৮
ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসে এবার কী হবে? 

গত শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বজুড়ে নতুন দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় দর্শকদের। সেই নয়া দুনিয়ার নাম ছিল ‘ম্যাট্রিক্স’। রূপালি পর্দায় এক কল্পিত দুনিয়ার বিস্তার শুরু হয়েছিল সে সময়, যা দর্শক জনপ্রিয়তায় শীর্ষে উঠেছিল। রাতারাতি তারকা খ্যাতি পেয়ে গিয়েছিল নিও-ট্রিনিটি-মরফিয়াস-ওরাকল নামের চরিত্রগুলো। আর চোখধাঁধানো অ্যাকশন তো ছিলই। 

তবে ক্রিয়েটরের সঙ্গে নিওর দেখা-সাক্ষাতের পর মনে হয়েছিল ম্যাট্রিক্সের দুনিয়ায় হয়তো ইতি টানা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর আবার ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া হাজির হচ্ছে দর্শকদের সামনে। নতুন পর্বের নাম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনস’। নতুন পর্বে কী হতে পারে, তা নিয়ে ম্যাট্রিক্স ফ্র্যাঞ্চাইজির ভক্তদের কৌতূহলের শেষ নেই। চলুন এবার সেই কৌতূহল মেটাতে চষে আসা যাক ম্যাট্রিক্সের দুনিয়া।       

‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ নিয়ে কিছু কথা  

বিষ্ময়কর এই পৃথিবীতে মানুষ শ্রেষ্ঠ প্রাণী, যারা দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীতে রাজত্ব করে আসছে। প্রতিনিয়ত একেকটি বিস্ময়কর সৃষ্টির সুবাদে সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে জীবনযাপন। প্রায়শই মেলে চমকানো খবর। নতুন করে আশা, শঙ্কা, আনন্দ, উত্তেজনার জন্ম দেয়। ঠিক এমন প্রেক্ষাপটের চিত্রনাট্যেই ম্যাট্রিক্সের আবির্ভাব। মানুষের কাছে যা কিছু বাস্তব, সেই ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’। একদল মানুষ এই বাস্তবতাকে একটি ‘সিস্টেম’ হিসেবে আবিষ্কার করে। তারা জেনে যায়, বাস্তব নামে যে জীবন পৃথিবীর মানুষ যাপন করছে, তা একটা ‘ছক’ মাত্র। মানবজাতিকে ‘দাস’ বানিয়ে রাখা হয়েছে। তারা জানল, চেনা পৃথিবী বিংশ শতাব্দীতেই ধ্বংস হয়ে গেছে। এর পর থেকেই মানুষ যা কিছু বাস্তব হিসেবে দেখছে, যা কিছুর সঙ্গে আছে, তা কেবল মানুষের মস্তিষ্কে ঢোকানো কিছু প্রোগ্রাম! 

দ্য ম্যাট্রিক্স রিলোডেড, ক্যাপ-২০০৩ সালে মুক্তি ‘দ্য ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’-এর পোস্টারদ্য ম্যাট্রিক্সে এই প্রশ্নও অবশ্য সবার ছিল না। বাস্তব ও কল্পনা নিয়ে প্রতিনিয়তই তৈরি হতো সংশয়। যে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া চলমান সমস্ত বিষয়ের মধ্যেই একটা কোথাও সমস্যা খুঁজে পায়, একটা ধারাবাহিকতা খুঁজে পায় এবং তার মধ্যে এমন কিছু অনুভূতি কাজ করে, যার নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কিন্তু সেসব ঘটে চলেছে অবিরাম। সিনেমায় এমন ব্যক্তিরা দুটি দলে থেকে চিহ্নিত হয়। একদিকে সিস্টেমের পরিচালনাকারী একটি দল, অন্যদিকে আছে সিস্টেম থেকে সবশেষ মানবগোষ্ঠীকে রক্ষার চেষ্টায় থাকা একটি দল। 

এমনই একটি চরিত্র অ্যান্ডারসন। একটি প্রসিদ্ধ সফটওয়্যার কোম্পানিতে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করে সে। ব্যক্তিগত জীবনে সে একজন ‘হ্যাকার’। যেখানে ‘নিও’ নামেই তার পরিচিতি। কিছু প্রশ্ন, প্রচলিত ধারণার ওপর অবিশ্বাস, অচেনা কিছু অনুভূতির সমন্বয়ে সেই স্বপ্ন ও বাস্তবের সঙ্গে নিজের অস্তিত্বকে গুলিয়ে ফেলতে থাকে। সিনেমার গল্প অনুযায়ী এই সময়ের জন্য নিও সেই ব্যক্তি, যার ম্যাট্রিক্সের গোড়া পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তার ওপর এই বিশ্বাস রাখে ‘মরফিয়াস’। সে নিজেও ম্যাট্রিক্সের ভেতরে ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে ওই সিস্টেম থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার একটি দল রয়েছে, যারা ওই সিস্টেম থেকে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে এবং সার্বক্ষণিক ম্যাট্রিক্সে নজর রাখে। সিস্টেমের বিরোধিতা করার কারণে তারা বিদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত। নিও তার জানার অদম্য আগ্রহ থেকে যুক্ত হয়ে পড়ে এই দলের সঙ্গে। এদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয় সিস্টেমের প্রতিনিধি ‘এজেন্ট স্মিথ’ নামের চরিত্রটির। 

নিওর অজানা একে একে দূর করতে থাকে মরফিয়াস। তবে তার আগে মরফিয়াস ‘নীল’ ও ‘লাল’ রঙের দুটো বড়ি নিওর সামনে দেয়। বেছে নিতে বলে যেকোনো একটি। নীল রঙের বড়িটা তাকে তার যাপিত জীবনে ফিয়িয়ে নিয়ে যাবে। অন্যদিকে লাল বড়িটি তাকে নিয়ে যাবে অজানা এক বাস্তবতার দিকে। 

নিও বেছে নেয় লাল বড়ি। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার অজানার পথে যাত্রা। ‘সিস্টেম’ ও এর কাজের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে নিওর। দেখতে থাকে বিস্ময়কর সবকিছু, ঘটতে থাকে অবিশ্বাস্য সব বিষয়। একপর্যায়ে নিজের মৃত্যুর ধারণাকেও ছাপিয়ে যায় নিও। 

নিওর অজেয় হয়ে ওঠার যাত্রায় যুক্ত হয় ট্রিনিটি ও ওরাকল। ছবিতে ওরাকলের ভবিষ্যদ্বাণী মূল সূত্র হিসেবে উঠে আসে। 

আমেরিকান নির্মাতা লানা ও লিলি ওয়াচোস্কি নির্মিত ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ চলচ্চিত্রটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়। মুক্তির কিছুদিনের মধ্যে ৬ কোটি ৩ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত সিনেমাটি আয় করে সাড়ে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর ঠিক চার বছরের মাথায়, ২০০৩ সালে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’ নামের আরো দুটি সিকুয়্যাল মুক্তি পায়। আলোচক-সমালোচকেরা এই সিনেমাকে একেকটি তত্ত্বের আলোকে দেখেছেন, কেউ কেউ তুলে ধরেছেন এর দার্শনিক ভিত্তি। এই সিনেমা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। 

একই বছর মুক্তি ম্যাট্রিক্স ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’ ও ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’

‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এর চরিত্রগুলো সিরিজটির পরবর্তী ছবিগুলোতে আরও পরিণত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ‘ম্যাট্রিক্স রিলোডেড’-এ ওরাকলের ভূমিকা তুলনামূলক বেশি প্রাধান্য পেয়েছে প্রথম পর্বের তুলনায়। সিস্টেমের নিরাপত্তার প্রধান ভূমিকায় থাকা ‘এজেন্ট স্মিথ’ নিজেই সিস্টেমকে ধ্বংষ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। দ্বন্দ্ব অন্য মাত্রায় রূপ নেয়। 
 
দ্য ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন, ক্যাপ-২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশন’-এর পোস্টার‘ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশন’-এ নিও পৌঁছে যায় এই সিস্টেমের ‘ক্রিয়েটর’ কাছে। ওরাকলের নির্দেশনা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এই পর্বে। এদিকে ভারতীয় উপমাহাদেশের এক দম্পতি ও ‘সতী’ নামে তাদের একটি শিশুকন্যা পরিস্থিতি আরও রহস্যময় করে তোলে। ওদিকে প্রেমিকা ট্রিনিটির মৃত্যু নিওকে একগুঁয়ে করে তোলে। অবশেষে ক্রিয়েটরের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে নিও। ওরাকল ও ক্রিয়েটরের মধ্যকার সম্পর্ক ও তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব দর্শকদেরও বৈপ্লবিক বিস্ময়ের দিকেই নিয়ে যায়। 

কী অপেক্ষা করছে ‘ম্যাট্রিক্স রেজারেশনসে’?

ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলার মুক্তি পায় গত ৯ সেপ্টেম্বর। এ বছরের ২২ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। 

ট্রেলার মুক্তির জন্য আয়োজিত মঞ্চে এবার ভক্তদের দাঁড় করানো হয়েছিল ‘নিও’ চরিত্রে। প্রথম ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এ নিও যেমন ক্যাপসুলটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরবর্তী অজানাকে জানার জীবন বেছে নিয়েছিল, তেমনি দর্শকদেরও ট্রেলার দেখার নির্বাচন করা হয় এই লাল ও নীল ক্যাপসুল দিয়ে।
 
সিনেমার অন্যতম চরিত্র আব্দুল মাতিনের কণ্ঠে দর্শক-ভক্তরা জানতে পেরেছেন, ‘বর্তমান সময়েই আমাদের বেশি ভরসা। এর বাইরে কিছু নেই।’ এ থেকে কিছু আন্দাজ করা যায়? 

ম্যাট্রিক্স রেজারেকশনসের ট্রেলারেও গুরুত্ব পেয়েছে ক্যাপসুল নেওয়ার বিষয়টি। দেখা গেছে, সিরিজের প্রথম পর্বের মতোই ‘হোয়াইট র‍্যাবিট’ ট্যাটু। তবে কি নতুন করে গল্পটা গোড়া থেকে শুরু হতে যাচ্ছে? 

বলিউড তারকা প্রিয়াংকা চোপড়াকেও দেখা গেছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির আগের পর্বেই সতীকে দেখেছে দর্শক। এই পর্বে সতীর চরিত্রে প্রিয়াঙ্কাকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনাও বাদ দেওয়া যায় না। 

নিও চরিত্রে যথারীতি আছেন কিয়ানু রিভস। এই ট্রিলজি সিরিজের আগের পর্বগুলোতে নিও চরিত্রটি ছিল অনুসন্ধিৎসু। তবে এই কনক্লুশন পর্বের ট্রেলারে নিওর চোখে জিজ্ঞাসার বদলে হতাশা দেখা যায়। যে কিনা বাস্তব জীবনকে খুঁজে পেতে শরণাপন্ন হয়েছে চিকিৎসকের। 

এদিকে নিল প্যাট্রিক্সকে একজন এনালিস্ট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। সেই সঙ্গে ট্রিনিটি হিসেবে দেখা যাবে ক্যারি অ্যানি মসকেই। যদিও ম্যাট্রিক্স রিভল্যুশনে মরে যেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। ম্যাট্রিক্স ট্রিলজির আসন্ন পর্বে ট্রিনিটি তাই একটি চমক হিসেবে এসেছে দর্শকদের কাছে। মরফিয়াস চরিত্রে লরেন্স ফিশবার্নের বদলে দেখা যাবে ইয়াহিয়া আব্দুল মাতিনকে। 

ম্যাট্রিক্সের নতুন পর্বে নিও-ট্রিনিটির ভাগ্যে আসলে কী হবে, তা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহের শেষ নেই। সেই প্রশ্নের উত্তর এখন হয়তো অনুমান করা যেতে পারে, কিন্তু নিশ্চিত হতে আর কটা দিন সবুর যে করতেই হয়! 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিল্পকলায় নাট্যতীর্থের আয়োজনে ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শিল্পকলায় নাট্যতীর্থের আয়োজনে ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’

আজ থেকে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে নাট্যতীর্থ আয়োজিত ‘নবীন প্রবীণ নাট্যমেলা’ শীর্ষক আট দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবে প্রদর্শিত হবে আট দলের আটটি নাটক। ১৯ থেকে ২৬ ডিসেম্বর প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দেখা যাবে নাটকগুলো। উৎসবে ছয়জন নাট্যব্যক্তিত্বকে দেওয়া হবে নাট্যবন্ধু সম্মাননা।

উৎসব শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৬টায়। উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ। সভাপতিত্ব করবেন নাট্যতীর্থের দলপ্রধান ও নাট্যমেলার আহ্বায়ক তপন হাফিজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হবে তীরন্দাজ রেপার্টারির প্রযোজনা দীপক সুমনের নির্দেশিত ‘কণ্ঠনালীতে সূর্য’।

আগামীকাল শনিবার মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের ‘রাঢ়াঙ’। রচনা ও নির্দেশনায় মামুনুর রশীদ। এদিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্যজন সামিনা লুৎফা নিত্রা। সম্মাননা পদক দেওয়া হবে অধ্যাপক আবদুস সেলিমকে।

২১ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে বাতিঘরের প্রযোজনা ‘প্যারাবোলা’, নির্দেশনায় মুক্তনীল। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্যজন আফজাল হোসেন ও সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন শাহীন খান।

২২ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে বহুবচনের প্রযোজনা আরহাম আলো নির্দেশিত ‘অনিকেত সন্ধ্যা’। এদিন সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন সামিউন জাহান দোলা।

২৩ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে নাট্যতীর্থের প্রযোজনা ‘জুলিয়াস সিজার’, নির্দেশনায় তপন হাফিজ। সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন বাপ্পাদিত্য চৌধুরী। ২৪ ডিসেম্বর প্রদর্শিত হবে ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের প্রযোজনা গোলাম সরোয়ার নির্দেশিত ‘ঘর জামাই’। সম্মাননা দেওয়া হবে খন্দকার সাইফুল ইসলাম নিপুকে।

২৫ ডিসেম্বর মঞ্চস্থ হবে পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) প্রযোজনা ‘আলিবাবা এবং চল্লিশ চোর’। নির্দেশনা সুদীপ চক্রবর্তী। সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন মাহফুজা হিলালী। নাটক প্রদর্শনীর আগে এদিন বিকেল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ‘প্রবীণের ঐতিহ্যালোকে নবীনের শিল্পযাত্রা’ শীর্ষক সেমিনার।

২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে নাট্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে নাট্যতীর্থের কর্মীদের মধ্য নির্বাচিত নাট্যকর্মীকে দেওয়া হবে ‘নাট্যতীর্থ সর্বোচ্চ উপস্থিতি সম্মাননা পদক’। সমাপনী অনুষ্ঠানের পর মঞ্চস্থ হবে আবদুল্লাহ আল-মামুন নির্দেশিত থিয়েটার প্রযোজনা ‘মেরাজ ফকিরের মা’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘রাক্ষস’-এর গল্প বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে সুস্মিতাকে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

মেহেদী হাসান হৃদয়ের ‘রাক্ষস’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ের। এ মাসের শুরুতেই শোনা গিয়েছিল এমন খবর। জানা গিয়েছিল দেশের বাইরে রাক্ষস সিনেমার দ্বিতীয় লটের শুটিংয়ে যোগ দেবেন তিনি। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে গত বুধবার বিএফডিসিতে রাক্ষস সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় উপস্থিত হলেন নায়িকা। জানালেন রাক্ষসের গল্পই তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে রাক্ষস সিনেমায় যুক্ত হওয়ার কারণ জানিয়ে সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্মাতা হৃদয়ের কাছ থেকে গল্পটা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। গল্পের জন্যই এ সিনেমায় যুক্ত হওয়া। কারণ এই গল্পে নায়িকার অনেক কিছু করার আছে। চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে নিজের ২০০ ভাগ দিয়ে চেষ্টা করব।’

প্রথমবার ঢাকাই সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি ভীষণ এক্সাইটেড, এই প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছি, সিনেমায় অভিনয় করছি। এই দিনটা আমার কাছে ভীষণ স্পেশাল। অনেকবার সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভালো একটি টিমের সঙ্গে প্রথমবার বাংলাদেশি সিনেমায় অভিনয় করতে চলেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।’

ঢাকাই সিনেমায় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং মনে করলেও সবার সহায়তায় সেই চ্যালেঞ্জকে জয় করতে চান সুস্মিতা। পেতে চান বাংলাদেশের দর্শকদের ভালোবাসা। সুস্মিতা বলেন, ‘যখন সিনেমায় নাম লেখাই তখন কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কাউকেও চিনতাম না। অডিশন দিয়ে অনেক কষ্ট করে সিনেমায় এসেছি। ওটাও যেমন আমার জন্য কঠিন ছিল, তেমনি এই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রথম কাজটা চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু এখানে এসে টিমের সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জটা উতরে যেতে পারব। তাঁরা একবারের জন্য আমাকে মনে করতে দিচ্ছে না যে আমি অন্য দেশ থেকে এসেছি। আমি এ দেশের দর্শকদের ভালোবাসা নিতে এসেছি, আশা করছি অনেক ভালোবাসা পাব।’

ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছেন সুস্মিতা। পড়াশোনায়ও ছিলেন খুব ভালো। তাই পরিবারের চাওয়া ছিল আগে পড়াশোনা শেষ হবে, তারপর অন্য কাজ। মা-বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন সুস্মিতা। পড়াশোনা শেষে বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরিও পেয়েছিলেন। কিন্তু চাকরিটা করা হয়নি। তিনি হেঁটেছেন ছোটবেলার স্বপ্নের দিকে, অভিনেত্রী হতে।

২০২১ সালে ‘প্রেম টেম’ সিনেমা দিয়ে টালিউডে অভিষেক হয় সুস্মিতার। এরপর কাজ করেছেন ‘চেঙ্গিজ’, ‘মানুষ’সহ একাধিক সিনেমায়। এবার নাম লেখালেন ঢাকাই সিনেমায়। রুপালি পর্দায় নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুস্মিতা বলেন, ‘প্রেম টেম সিনেমার সুস্মিতা আর রাক্ষসের সুস্মিতার মধ্যে অনেক পার্থক্য। চার বছর হয়ে গেছে প্রেম টেম সিনেমার। এই সময়ে অনেক ম্যাচিউরিটি এসেছে আমার কাজে, ব্যক্তিত্বে। আশা করছি পর্দায় সেটা বুঝতে পারবেন সবাই।’

রাক্ষস সিনেমায় সুস্মিতার বিপরীতে আছেন সিয়াম আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় সিনেমার অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে ভয়ংকর এক সিয়ামকে দেখা গেল। ফ্লোরের চারদিকে রক্তের ছোপ, রক্তমাখা সাদা স্যুট পরা সিয়ামের এক হাতে চায়নিজ কুড়াল অন্য হাতে পিস্তল। কামড়ে ধরে আছেন একটি গোলাপ। হাতের অস্ত্র উঁচিয়ে বাথটাবে পড়ে থাকা একটি মৃত বাঘের দিকে গুলি ছুড়লেন।

টিজার দেখে বোঝাই যাচ্ছে বরবাদ সিনেমার মতো রাক্ষসেও ভরপুর অ্যাকশন, ভায়োলেন্স দেখাবেন নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয়। নির্মাতা জানালেন, এ সিনেমায় একটি প্রেমের গল্প আছে, যে প্রেমের কারণে সিয়াম অভিনীত চরিত্রটি রাক্ষস হয়ে ওঠে। এতে আরও অভিনয় করছেন বাপ্পারাজ, আলীরাজ প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রিয়েল অ্যানার্জি প্রোডাকশনের ব্যানারে। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে শুটিং। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের রোজার ঈদে মুক্তি পাবে রাক্ষস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় দুই কনসার্টে গাইলেন আতিফ আসলাম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এ মাসে ঢাকায় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী আতিফ আসলামের দুটি কনসার্টের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে শঙ্কা জেগেছিল অনুমতি নিয়ে। স্থগিত হওয়ার শঙ্কা আছে জেনে দুটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে যৌথভাবে ১৩ ডিসেম্বর একটি কনসার্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেইন স্টেজ ও স্পিরিটস অব জুলাই। তাতেও হয়নি শেষরক্ষা। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাতিল করা হয় সেই কনসার্ট। তবে কনসার্ট বাতিল হলেও ঢাকায় এসেছেন আতিফ আসলাম। একের পর এক প্রাইভেট কনসার্টে গান শোনাচ্ছেন তিনি।

গতকাল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) আয়োজিত ‘মিউজিক বিয়ন্ড বাউন্ডারিজ’ শীর্ষক কনসার্টে গান শোনান আতিফ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এ কনসার্টে প্রবেশের সুযোগ ছিল শুধু এআইইউবির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের। বহিরাগতদের প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি।

আতিফের কনসার্ট ঘিরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল এআইইউবিতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কনসার্ট দেখতে মাঠে প্রবেশ করতে ছিল দীর্ঘ লাইন। বেলা ২টায় অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারিত হলেও সকাল থেকেই কনসার্টের স্থলে ভিড় করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তিল ধরার জায়গা ছিল না মাঠে। আতিফও নিরাশ করেননি তাঁদের। গেয়ে শোনান তাঁর জনপ্রিয় গানগুলো। আতিফের আগে এই কনসার্টে গান শোনান দেশের সংগীতশিল্পী মিনার রহমান।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য ফাইনাল নোট’ শিরোনামের আরেকটি কনসার্টে গান শোনান আতিফ আসলাম। ওই কনসার্টে শুধু গুলশান ক্লাবের সদস্যরাই আমন্ত্রিত ছিলেন। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকায় আতিফের ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্রিকেট খেলায় মেতেছেন তিনি।

এর আগে পাকিস্তানের আলী আজমত ও ব্যান্ড কাভিশের কনসার্ট বাতিল হলেও তাঁরাও বাংলাদেশে এসেছিলেন। শোনা গেছে, তাঁরাও ঢাকায় একাধিক প্রাইভেট কনসার্টে পারফর্ম করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের ওটিটি: ‘সাবা’সহ মুক্তির তালিকায় যেসব সিনেমা-সিরিজ

প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য দর্শকদের নজর থাকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এ সপ্তাহেও মুক্তি পাচ্ছে নানা দেশের, নানা ভাষার কনটেন্ট। বাছাই করা এমন কিছু কনটেন্টের খোঁজ থাকছে এ প্রতিবেদনে।

বিনোদন ডেস্ক
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মিসেস দেশপান্ডে সিরিজে মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সাবা (বাংলা সিনেমা)

  • মুক্তি: হইচই (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মেহজাবীন চৌধুরী, মোস্তফা মনওয়ার, রোকেয়া প্রাচী
  • গল্পসংক্ষেপ: মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সাবা। বাবা গত হয়েছে। মা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন মেয়ে সাবা। পরিবার আর মায়ের সেবায় নিজের ক্যারিয়ার গুছিয়ে উঠতে পারেনি সাবা। অর্থের টানাটানিতে দিনরাত এক করে মাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা তার।

রাত আকেলি হ্যায়: দ্য বানসাল মার্ডারস (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী, রাধিকা আপ্তে, চিত্রাঙ্গদা সিং
  • গল্পসংক্ষেপ: ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া ক্রাইম থ্রিলার ‘রাত আকেলি হ্যায়’ সিনেমার সিকুয়েল এটি। ইন্সপেক্টর জটিল যাদব এবার ফিরছে নতুন মামলা নিয়ে। কানপুরের ধনী ও প্রভাবশালী বানসাল পরিবারে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব পড়ে জটিল যাদবের ওপর। ঘটনার অন্তরালের লোভ, বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রের জাল উন্মোচন করে সে।

মিসেস দেশপান্ডে (হিন্দি সিরিজ)

  • মুক্তি: জিওহটস্টার (১৯ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: মাধুরী দীক্ষিত, প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি, সিদ্ধার্থ চান্দেকর
  • গল্পসংক্ষেপ: ফরাসি থ্রিলার ‘লা ম্যান্টে’র অনুপ্রেরণায় তৈরি এ সিরিজে মাধুরীকে দেখা যাবে একজন সিরিয়াল কিলারের চরিত্রে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছর সাজা হয় মিসেস দেশপান্ডের। তার খুন করার ধরন কপি করছে আরেকজন। তাকে ধরতে পুলিশ সহায়তা নেয় মিসেস দেশপান্ডের।

এমিলি ইন প্যারিস সিজন ৫ (ইংরেজি সিরিজ)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (১৮ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: লিলি কুপার, ফিলিপাইন লেরয়-বিউলিউ, অ্যাশলে পার্ক
  • গল্পসংক্ষেপ: চতুর্থ সিজনে এমিলি কুপারের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে অনেক কিছু অমীমাংসিত ছিল। সেসব প্রশ্ন ও কৌতূহল নিয়েই শুরু হচ্ছে পঞ্চম সিজন। এবার শুধু প্যারিসে নয়, এমিলির জার্নি বিস্তৃত হবে রোম শহরেও।

থাম্মা (হিন্দি সিনেমা)

  • মুক্তি: প্রাইম ভিডিও (১৬ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: আয়ুষ্মান খুরানা, রাশমিকা মান্দানা, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী
  • গল্পসংক্ষেপ: ভৌতিক গল্পের এ সিনেমার শুরুতে পাহাড়ে ট্রেকিংয়ে গিয়ে বিপদে পড়ে অলোক নামের এক সাংবাদিক। পথ ভুলে পৌঁছায় এমন এক ডেরায়, যেখানে অতিপ্রাকৃত শক্তির বাস। সেখানেই অলোকের দেখা হয় মানুষরূপী এ প্রেতাত্মার সঙ্গে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত