Ajker Patrika

স্বস্তি পেলেন পরী

স্বস্তি পেলেন পরী

ঢাকা: ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে, চালানো হয়েছে শারীরিক নির্যাতন। ফেসবুকে এমন ভয়ংকর অভিযোগ জানালেন পরীমণি। রবিবার (১৩ জুন) রাত সোয়া ৮টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এ তথ্য প্রকাশ করেন পরীমণি। বিচার চেয়ে আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’ এরপর তিনি নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন।

ফোনের ওপাশে পরী
ফেসবুক স্ট্যাটাসের পেছনের ঘটনার সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হয় পরীমণির সঙ্গে। তিনি কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলেন, ‘আমি নায়িকা বলে কি এমন ঘটনা স্বাভাবিক? আমি এর বিচার চাই। ১০ জুন থেকে আমি ট্রমার মধ্যে আছি। শতবার চেষ্টা করেছি ভুলতে। চেষ্টা করেছি বিচার পাওয়ার জন্য। কিন্তু সবখানে নীরবতা। বিচারের আশ্বাস আর পাই না। তাই বাধ্য হয়ে এই পোস্ট দিয়েছি। আমি সাংবাদিকদের পাশে চাই। আমার বাসায় আসবেন দয়া করে। সবকিছু বলবো। তবে আমার শেষ ভরসা আপনারাই (মিডিয়া)। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

চারদিন পর ঘটনা প্রকাশ্যে
পরীমণি বলেন, “আমাকে সবাই আশার আলো দেখিয়েছে। সবাই মাথায় হাত বুলিয়ি বলেছে ‘আচ্ছা দেখতিছি দেখতিছি’ কিন্তু কেউ কিছু করেনি। এই চারদিন ধরে আমি ঘুমাতে পারছি না, খেতে পারছি না। সবার নীরবতার কারণে নিজেই সব প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিই। আমি ভিক্টিম, আমার ওপর অন্যায় হয়েছে। আমি বিচার চাই।’ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের কাছে বিষয়টি নিয়ে গেলে তিনিও ‘দেখতেছি, দেখতেছি’ করে এড়িয়ে যান বলে পরীমণির অভিযোগ।

পরীমণিনিজ বাসায় বললেন সবিস্তারে
পরীর অভিযোগ, তাঁর ওপর সেদিন রাতে নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছেন নাসির ইউ মাহমুদ নামের এক ব্যবসায়ী। যিনি উত্তরা ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে ঢাকা বোট ক্লাবের এন্টারটেইনমেন্ট এন্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি পদে আছেন। তিনি দুজনের নাম প্রকাশ করে জানান, অন্যজন তার (পরীমণি) কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী। পরীমণি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাছির ইউ মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। সেসময় নাছির ইউ মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বেশ ক’দিন ধরেই এই বৈঠকের কথা চলছিল। কিন্তু আমি আগ্রহ পাচ্ছিলাম না। পরে অমির অনুরোধে সেদিন রাতে আমি বৈঠকে যাই। যাওয়ার পর যা ঘটেছে সেটা আর বলে বোঝাতে পারবো না। সেদিন রাতে আমাকে পানীয়র সঙ্গে কিছু একটা খাওয়ানো হয়েছিল। কারণ, প্রচণ্ড অস্থির আর অস্বস্তি ফিল করছিলাম’। নাসির ইউ মাহমুদ তাকে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেন এবং মুখের ভেতর জোর করে মদের বোতল ঢুকিয়ে দেন। এতে তার দাঁতে আঘাত লাগে এবং কিছু মদ গলায় যায়। এতে তার গলা ও বুক জ্বলে। তিনি তখনই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরীমণি ও তার সঙ্গে থাকা জেমী তখন চিৎকার ও কান্না শুরু করলে তাদের ধর্ষণ করার হুমকি দেওয়া হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়।

শিল্পী সমিতির ভূমিকা
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, গত বৃহস্পতিবার পরীমণি তাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন এবং পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি পরীমণিকে রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছিলেন, স্থানীয় থানায় নিয়ে যেতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু পরীমণি তাকে বলেছিল যে পুলিশ তার কথা শুনছে না। ধর্ষণচেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার পরও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কেন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখালেন না- জানতে চাইলে জায়েদ খান বলেন, “শিল্পী সমিতি কি কোনো আদালত? ‘আমি তাকে শিল্পী সমিতিতে একটা লিখিত দিতে বললাম। বললাম যে আইজিপি রাজশাহীতে গেছেন। উনি ফিরুক, তারপরে রোববার দেখা হতে পারে। পরীমণি থানা পুলিশের কাছে যেতে চাচ্ছিলেন না।’ আমি আমার মতো চেষ্টা করছি যেন ন্যায় বিচার হয়। এর মানে এই নয় যে আমি যখন যা ইচ্ছে তাই করতে পারবো।

পরীমণিহতে পারেন খুন
পরীমণি বলেন, ‘আমি যদি মরে যাই সেটা হত্যা হবে, আত্মহত্যা নয়। কারণ, আমি আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে নই। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই। এর বিচার দেখে মরতে চাই। আর যদি আমাকে কেউ হত্যা করে, তখন আপনাদের কাছে সেই বিচারের ভার দিয়ে গেলাম। আবারও বলছি, আজ যদি আমি মরে যাই, তো সেটি আত্মহত্যা হবে না। ধরে নেবেন আমাকে হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মেয়ে হিসেবে গত ৪ দিন ধরে অনেকের দারে দারে ঘুরেছি, কেউ সহযোগিতা করেনি।

পুলিশের হস্তক্ষেপ
পরীমণি ও তাঁর স্বজনেরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলার সময় বারবারই ঘটনার রাতে বনানী থানায় গিয়ে সহায়তা না পাওয়ার কথা বলেছেন। পরীমণি অভিযোগ নিয়ে বনানী থানায় গেলে তাকে ‘অসংলগ্ন আচরণ’ করতে দেখে প্রথমেই রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশের একটি দল। সে রাতে পরীকে পরামর্শ দেওয়া হয়, সুস্থ হয়ে পরদিন তিনি যেন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে পরদিন আর থানায় যাননি তিনি। এমনটাই ভাষ্য পুলিশের। তবে সংবাদ সম্মেলনের পর মধ্যরাতে তার বাসায় উপস্থিত হন রূপনগর থানার ওসি আরিফুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। পরীমণির বাসায় গিয়ে তার কাছ থেকে পুলিশ বিস্তারিত শুনেছে ও বক্তব্য নিয়েছে।

পরীমণিপুলিশি পাহারা
পরীমণি সংবাদ সম্মেলনে বারবারই বলছিলেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। অসহায়ের মতো বলেছিলেন, ‘আমাকে একা রেখে যাবেন না। আমি ভরসা পাচ্ছি না। আমি বাঁচতে চাই।’

তাঁর আশঙ্কা, তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। সংবাদ সম্মেলনের সময় পরীমণির বাসায় ছিলেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরে আজম মিয়া। ঢালিউডের নায়িকা পরীমনির এইসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বাসার সামনে বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা।

গ্রেপ্তার ও স্বস্তি
গতকাল সোমবার সকালে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমণি। মামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির ছাড়াও তাঁর বন্ধু অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এই ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পরীমণি। তিনি বলেন, ‘স্বস্তিতে শ্বাস নিতে পারছি। ভরসা পাচ্ছি বিচার হবে। নিশ্চিন্ত হলাম যে বিচার পাব। প্রমাণ হচ্ছে এই দেশটা কোনো ধর্ষকের না।’

পরীমণিপ্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ
আসামীদের গ্রেপ্তারের পর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরী। সেখানে লেখেন-

আমার বিশ্বাস আমার আস্থা ভুল ছিলো না। আইন সবার উপরে। শুধু সেই সঠিক জায়গায় পৌঁছানটাই যত কষ্ট! আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,সকল সাংবাদিক,সকল সহকর্মী এবং দেশের মানুষ যারা আমার এই দুঃসময়ে আমার পাশে ছিলেন,আছেন আমি সবার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ। আপনারাই আমার সাহস।

আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন আমার চাওয়া আসামীরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। কোনভাবেই যেন এই ধরনের লোকেরা আর কোন মেয়েকে এভাবে নির্যাতন অপমান করার সাহস না পায়। আমি হার মানবনা। আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি এই দেশের আশীর্বাদ। আপনি মা। আপনি মমতার আঁচলে জড়িয়ে রাখেন আপনার সকল সন্তানকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রটারড্যাম উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’ সিনেমার

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির। রইদ পরিচালনা করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, মাস্টার সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে গত নভেম্বরে দেশের হলে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ তাওকীর ইসলামের ‘দেলুপি’।

‘হাওয়া’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় মেজবাউর রহমান সুমনের। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন তিনি। তিন বছর পর তিনি নিয়ে আসছেন দ্বিতীয় সিনেমা রইদ। গত বছর রইদ সিনেমার শুটিং শুরু করেছিলেন সুমন। এতে অভিনয় করছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান, নাজিফা তুষি, গাজী রাকায়েতসহ অনেকে। নির্মাতা জানিয়েছিলেন, সিনেমার বিস্তারিত জানানো হবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে। অবশেষে গতকাল এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো রইদ সিনেমার। এই সিনেমার প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে রটারড্যাম উৎসবে। এরপর মুক্তি দেওয়া হবে দেশের হলে।

রইদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে টাইগার প্রতিযোগিতা (মূল প্রতিযোগিতা) বিভাগে। নির্মাতা জানান, এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা রটারড্যামের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে আমন্ত্রণ পেয়েছে। এই বিভাগে রইদসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১২টি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। এই সিনেমাগুলো থেকে নির্বাচকেরা বাছাই করবেন উৎসবের সেরা সিনেমা।

রইদ সিনেমার গল্প নিয়ে সুমন বলেন, ‘সাধু, তার পাগল স্ত্রী এবং তাদের বাড়ির পাশের তালগাছকে ঘিরে আবর্তিত এই গল্পে আমরা আদতে আদম ও হাওয়ার আদিম আখ্যানকেই খোঁজার চেষ্টা করেছি। আমরা সেই হাজার বছরের পুরোনো আখ্যানকে বর্তমানে পুনর্নির্মাণ করেছি, তবে সময়ের বর্তমানে নয়, বরং অনুভূতির বর্তমানে। এই সিনেমার প্রতিটি স্তরে জড়িয়ে আছে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের দেখা গ্রামীণ বাংলার আবহ।’

মোস্তাফিজ নূর ইমরান ও নাজিফা তুষি। ছবি: সংগৃহীত
মোস্তাফিজ নূর ইমরান ও নাজিফা তুষি। ছবি: সংগৃহীত

রইদের গল্প লিখেছেন মেজবাউর রহমান সুমন ও সেলিনা বানু মনি। চিত্রনাট্য করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, জাহিন ফারুক আমিন, সিদ্দিক আহমেদ ও সুকর্ণ শাহেদ ধীমান। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে বঙ্গ, সহপ্রযোজনায় আছে ফেসকার্ড প্রোডাকশন।

এদিকে রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানায় রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বানিয়েছেন মাস্টার। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। সিনেমাটি প্রতিযোগিতা করবে রটারড্যাম উৎসবের বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন বিভাগে

গল্পে দেখা যাবে, জহির আহমেদ নামের এক শিক্ষক সমাজসেবায় এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয়। ওই এলাকার উপজেলা নির্বাচনের সময় প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তখন শিক্ষক জহির আহমেদকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় এলাকাবাসী। সবার অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়ে যায় জহির। ভোটে জয় পেয়ে চেয়ারম্যানও হয়। উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বদলে যায় ওই শিক্ষকের জীবন। জহির আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। আরও আছেন আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, শরিফ সিরাজ প্রমুখ।

এদিকে রটারড্যাম উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে দেলুপি। অভিনয় করেছেন স্থানীয়রা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায় সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেব্রুয়ারিতে আরিফিন শুভর ‘জ্যাজ সিটি’, দেখা যাবে ৩ ভাষায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘জ্যাজ সিটি’ সিরিজে শুভ। ছবি: সংগৃহীত
‘জ্যাজ সিটি’ সিরিজে শুভ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে জ্যাজ সিটি, দেখা যাবে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়।

জ্যাজ সিটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক সেন। সর্বশেষ তিনি যুক্ত ছিলেন গত বছর মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় হিন্দি সিরিজ ‘জুবিলি’র সঙ্গে। বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সৌমিক। প্রেক্ষাপট ছিল চল্লিশের দশকের শেষের দিকের মুম্বাই শহর ও বলিউডের শুরুর দিকের ঘটনা। জুবিলির মতো নতুন এ সিরিজেও সৌমিক পর্দায় তুলে ধরেছেন পুরোনো প্রেক্ষাপট।

২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের হিন্দি ভাষার ট্রেলারে দেখা গেল, ১৯৭০-৭১ সালের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট। রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গও। সেই সময়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বই মোটাদাগে তুলে ধরা হয়েছে এতে। ট্রেলার দেখে সহজেই আন্দাজ করা গেল, জ্যাজ সিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রেই আছেন শুভ। তাঁর চরিত্রের নাম জিমি রয়। ট্রেলারে শুভকে হিন্দি ভাষাতেও কথা বলতে শোনা যায়, যা তিনি নিজেই ডাবিং করেছেন। শুভর বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্রকে। এ ছাড়া আরও আছেন কলকাতা ও হিন্দি সিনেমার একাধিক অভিনেতা।

জ্যাজ সিটি পশ্চিমবঙ্গে আরিফিন শুভর তৃতীয় ওয়েব কনটেন্ট। এর আগে তিনি অভিনয় করেছেন অরিন্দম শীলের ‘উনিশে এপ্রিল’ ও রাহুল মুখার্জির ‘লহু’তে। উনিশে এপ্রিল আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে লহু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে ‘পাওমুম পার্বণ’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে ‘পাওমুম পার্বণ’

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই আয়োজন ম্রো ভাষা, শিল্পকলা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আদিবাসী শিশুদের সৃজনশীল কাজ প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।

লামায় অবস্থিত পাওমুম থারক্লা একটি সম্প্রদায়নির্ভর বিদ্যালয়, যা গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ম্রো ভাষা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং শিশু শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেক শিশুর জন্য এটিই পাহাড়ের বাইরে জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা।

উৎসবে শিশুদের তৈরি শিল্পকর্ম, বাঁশের কারুশিল্প, ফটোগ্রাফি, বুননের প্রদর্শনী, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং লাইভ পারফরম্যান্স যেমন ম্রো নৃত্য, গান ও ঐতিহ্যবাহী প্লাং বাঁশি উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন কর্মশালা, গাইডেড ট্যুর এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

পাওমুম থারক্লার সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি শুরু হয়েছিল একটি ছোট বাঁশের ঝুপড়িতে, মাত্র কয়েকটি শিশু নিয়ে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার কাজ করে যাচ্ছি। পাওমুম পার্বণ ২০২৫ শিশুদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ, যাতে তারা পাহাড়ের বাইরে নিজেকে তুলে ধরতে পারে। আমরা সব অংশীদারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই যাত্রাকে সম্ভব করেছেন।’

প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (রোববার বন্ধ) চলবে এই আয়োজন। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। দর্শকেরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি শিশু ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে ম্রো জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মঞ্চে আসছে ফারুক আহমেদ নির্দেশিত প্রথম নাটক ‘রঙমহাল’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ। আগামীকাল রাজধানীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতির মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে তাঁর নির্দেশিত ‘রঙমহাল’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। এটি ঢাকা থিয়েটারের ৫৪তম প্রযোজনা।

রঙমহাল নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবাইয়াৎ আহমেদ। মঞ্চ পরিকল্পনায় আছেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসরিন নাহার, ফারজানা চুমকি, অনিকেত ইসলাম, তৌকির আলম, রতন, বাদলসহ অনেকে।

মহড়াকক্ষে নাটকের মঞ্চ পরিকল্পক আফজাল হোসেনের সঙ্গে নির্দেশক ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
মহড়াকক্ষে নাটকের মঞ্চ পরিকল্পক আফজাল হোসেনের সঙ্গে নির্দেশক ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রঙমহাল নিয়ে নির্দেশক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘খুব ভালো একটা গল্প দেখা যাবে এই নাটকে। একবাক্যে যদি বলি, এটি সমাজের রূপ ও অরূপের আখ্যান। আমি রঙমহাল নাটকটিকে মোরাল প্লে হিসেবে অভিহিত করব। নৈতিক মূল্যবোধের নাটক। দর্শক এ কথার বিচার করবেন। আশা করছি নতুন ও পুরোনোর সম্মিলিত প্রয়াসে রঙমহাল হয়ে উঠবে সাম্প্রতিক সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা।’

নির্দেশনায় আসতে এত সময় নেওয়ার কারণ জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে হলের নাট্যসম্পাদক ছিলাম। বেশ কয়েকটি নাটক নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে ঢাকা থিয়েটারে এই প্রথম। ঢাকা থিয়েটারে অনেক বড় ও গুণী নির্দেশক ছিলেন এবং আছেন। বাচ্চু ভাই, জামিল ভাই, ফরীদি ভাইয়ের মতো মানুষ এখানে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁদের অসাধারণ সব নাটকে অভিনয় করেছেন গুণী শিল্পীরা। তা ছাড়া ব্যক্তিগত কারণে অনেক দিন সরাসরি থিয়েটার করতে পারিনি। সমস্ত ধাপ পেরিয়ে এখন নাটক নির্দেশনা দিচ্ছি, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত