Ajker Patrika

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: ‘স্কুলিং কাঠামো’ বাতিল চাইল তিতুমীর শিক্ষার্থীদের একাংশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
স্কুলিং কাঠামো’ বাতিল চেয়ে তিতুমীর শিক্ষার্থীদের একাংশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত
স্কুলিং কাঠামো’ বাতিল চেয়ে তিতুমীর শিক্ষার্থীদের একাংশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং কাঠামো’ বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ। একই সঙ্গে কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি তাদের।

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, ‘গুরুত্বসহকারে একটি কথা উল্লেখ করছি। আমরা সবাই সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি চাই। আমরা কেউই তার বিরোধিতা করছি না। আমরা বিরোধিতা করছি স্কুলিং কাঠামোর।’

ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম যখন চলছে, তখন এর আশু কাঠামো নিয়ে কলেজগুলোর শিক্ষকেরা ও শিক্ষার্থীদের কয়েকটি অংশ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।

‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারা দেশের সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

আর কলেজগুলোর বর্তমান শিক্ষার্থীদের একাংশ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনি কাঠামো দ্রুত নিশ্চিত করার পক্ষে অবস্থান নিয়ে দ্রুততম সময়ে অধ্যাদেশ জারির দাবি জানিয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে বলছে, স্কুলিং কাঠামোতে কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য বজায় থাকবে না।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, কলেজগুলোয় উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সাতটি কলেজের দেড় হাজার পদ ক্যাডারের বাইরে চলে যাবে বলে শঙ্কায় আছেন। পদ খালি থাকার শর্তে পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষা ক্যাডারে দেড় হাজার পদ একেবার বের হয়ে গেলে পদোন্নতি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

নতুন হতে যাওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ে যখন এমন পরিস্থিতি, তখন অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জনের বার্তা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও মন্ত্রণালয় বলছে, অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করা ‘সময়সাপেক্ষ’।

অধ্যাদেশের খসড়ার প্রস্তাবনাগুলোর সমালোচনা করে সানজিদা আক্তার বলেন, খসড়ায় উল্লেখ ছিল রাজধানীর স্বনামধন্য সাতটি কলেজের স্বতন্ত্র অবস্থা বিলীন করে দিয়ে একেকটি কলেজকে একটি একটি করে স্কুল তৈরি করে দেওয়া হবে এবং কলেজগুলোর বিভাগ সংখ্যা হ্রাস করা হবে এবং ধর্মীয় শিক্ষা তুলে নেওয়া হবে। অর্থাৎ কলেজগুলোকে করা হবে হাইব্রিড সিস্টেমের কলেজ।

সানজিদা আক্তার আরও বলেন, ‘খসড়ার বিরুদ্ধে তিতুমীরসহ অন্য ছয়টি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আমরা কৃতিত্বের সঙ্গে প্রমাণ করে এসেছি, আমরা স্কুলিং কাঠামো মেনে নেব না এবং এই স্কুলিং কাঠামোর বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। এতে করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির খসড়াটি আটকে যায়। পরে শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রতিটি কলেজের স্ব্যতন্ত্র্য রক্ষার, বিভাগ সংখ্যা না কমানো এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা না কমানোর দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।’

সাতটি কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই চাই তিতুমীরসহ বাকি ৬টি কলেজকে স্বতন্ত্র অবস্থায় রেখে আপনারা নতুন কাঠামো প্রণয়ন করে ২৪-২৫ সেশনকে দ্রুত থেকে দ্রুততর সময়ের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’

তিনি পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো তিতুমীর কলেজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা, কলেজের কোনো বিভাগ বিলুপ্ত না করা, শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস না করা, তিতুমীর কলেজের একাডেমিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশটি বাতিল, নিরপেক্ষ এবং বাস্তব জ্ঞানসম্পূর্ণ শিক্ষাবিদ ও অংশীজনদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রূপরেখা তৈরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: লিখিত অংশে চাই বাড়তি গুরুত্ব

সামিহা সিরাজী লাজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দেওয়া ‘কনসেশন’ হিসেবে। ফাইল ছবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দেওয়া ‘কনসেশন’ হিসেবে। ফাইল ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুনদের কলতানে মুখর হবে ঢাবি। প্রিয় ক্যাম্পাসে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে ভর্তি-ইচ্ছুকদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখা চলবে না। তবে যার যতটুকুই প্রস্তুতি হয়েছে, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিটা সবার জন্যই ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অন্যান্য অংশের পাশাপাশি লিখিত অংশে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে।

বাংলা

পাঠ্যবইয়ের ওপরে বিশেষ গুরুত্ব দাও (বিশেষত, কবি পরিচিতি, সাল, জন্মতারিখ, শব্দের অর্থ, লেখকের নাটক, উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ)। বাংলায় মুখস্থ অংশের ওপর নজর দাও। সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা—এগুলোয় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন সলভ করো বেশি পরিমাণে। দৈনিক রুটিন মেনে পড়ার পাশাপাশি বিগত বছরের বাংলা প্রশ্নমালা এবং টপিকগুলো যাচাই করে নিতে পার।

বহুনির্বাচনী প্রশ্নের পাশাপাশি লিখিত বাংলা অংশে ভালো করতে বাসায় লেখার এবং সময়মাফিক লেখা শেষ করার গুরুত্ব অপরিসীম, যা তোমাকে ভর্তিযুদ্ধে বাকিদের থেকে বহুগুণ এগিয়ে রাখবে। প্রচলিত গাইডবই থেকে বেরিয়ে সৃজশীলতা কাজে লাগাও। প্রতিদিন লেখার চর্চা অব্যাহত রাখতে পার; অনলাইন-অফলাইন বিভিন্ন কোচিংয়ে শেষ সময়ের পরীক্ষা এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ইংরেজি

পাঠ্যবইয়ে প্রতি চ্যাপ্টারের সব টপিকের ওপর গুরুত্ব দাও। সাম্প্রতিক সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাঠ্যবই ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে থাকে। গ্রামার অংশের জন্য ভালো মানের বই থেকে প্রশ্ন সলভ করো। মুখস্থ অংশের রিভিশন প্রতিদিন দিতে হবে। এ ছাড়াও, সামারি রাইটিং, থিম রাইটিং, কবিতার ভাবার্থ—এগুলো লেখার অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ।

লিখিত ইংরেজি অংশের জন্য ইংরেজি পত্রিকার সম্পাদকীয় পার্ট বরাবরই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন সময় মেনে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং প্র্যাকটিস করা জরুরি। সমসাময়িক যেকোনো বিষয়ের ওপর প্যারাগ্রাফ, বাক্যগঠন শিখতে হবে। সময়মতো লেখা শেষ করা এবং সহজ-সাবলীল লেখা পরীক্ষার খাতায় মার্ক বেশি পাওয়ার হাতিয়ার।

সাধারণ জ্ঞান

সাধারণ জ্ঞানের (ইতিহাস, পৌরনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল, রাজনীতি, খেলাধুলা, সমসাময়িক, নোবেল পুরস্কার, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, দেশ-বিদেশের অ্যাওয়ার্ড, জুলাই অভ্যুত্থান) বিভিন্ন টপিকের মধ্যে এ বছরের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর ওপর পূর্ণ মনোযোগ দাও। দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, জনপদ, পটভূমি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। জাতিসংঘ ও এর অঙ্গসংগঠন, কার্যাবলি, চুক্তি, প্রণালি, সভ্যতা, মহাদেশ, নদ-নদী—এগুলো শেষ সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বোপরি এটুকু মনে রাখতে হবে, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনাই পারে তোমাদেরকে আকাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দিতে। সামান্য ভুল তোমাকে নিয়ে যেতে পারে শত শত পরীক্ষার্থীদের পেছনে। তাই সময় নিয়ে পরীক্ষার জন্য বের হও, আগের রাতে প্রবেশপত্রসহ দরকারি সবকিছু গুছিয়ে রাখ, নিজেকে সুস্থ রাখ এবং শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিকে করো আরও শাণিত ও সুশৃঙ্খল। নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলে পূর্ণ উদ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে যাও।

এক্সাম হলে ঘড়ির দিকে লক্ষ রেখ, সঠিক বিষয়ে প্রশ্নের বৃত্ত ভরাট করো। বিজয়ের গৌরবে তোমাদের সবার সঙ্গে দেখা হোক ঢাবির এই বিশাল ক্যাম্পাসে—শুভকামনা রইল তোমাদের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫১
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

কাতার বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তির আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বৃত্তির আওতায় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কোর্স ইংরেজি ভাষায় পাঠদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বৃত্তিটি ২০২৬ সালের জন্য প্রযোজ্য।

কাতার বিশ্ববিদ্যালয় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা কাতারের রাজধানী দোহার উত্তরাংশে অবস্থিত। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ গবেষণা, উদ্ভাবন ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আধুনিক গবেষণাগার, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক এবং বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাতার বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুতই বিশ্বের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

সুযোগ-সুবিধা

বৃত্তির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা কোর্সের সম্পূর্ণ টিউশন ফি থেকে অব্যাহতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা, পাঠ্যবইয়ের ফি মওকুফ এবং বছরে একবার দেশে যাতায়াতের রাউন্ড-ট্রিপ বিমান টিকিটের সুবিধা পাবেন। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বৃত্তি চালু রয়েছে। পাশাপাশি নন-কম্পিটিটিভ বৃত্তির আওতায় রয়েছে জিসিসি রাষ্ট্রগুলোর দূতাবাস বৃত্তি, জিসিসি কাতারি সার্টিফিকেট স্কলারশিপ।

আবেদনের যোগ্যতা

আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতার শর্ত তুলনামূলকভাবে সহজ। এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে জাতীয়তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আবেদনকারীর অবশ্যই স্বীকৃত কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। এমন যোগ্যতাসম্পন্ন বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার দরজা উন্মুক্ত।

পিএইচডিতে আবেদনের যোগ্যতা

পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য কাতার বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট ও মানসম্পন্ন ভর্তির যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে। আবেদনকারীকে অবশ্যই স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর বা তার ঊর্ধ্বতন ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। ন্যূনতম সিজিপিএ-৩ থাকতে হবে। পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত সব পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য জিআরই, জিম্যাটের মতো আন্তর্জাতিক মানের মানসম্মত টেস্ট স্কোর বাধ্যতামূলক।

স্নাতকোত্তরে আবেদনের যোগ্যতা

স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রেও কাতার বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করেছে সুস্পষ্ট ও প্রতিযোগিতামূলক কিছু শর্ত। আবেদনকারীকে অবশ্যই স্বীকৃত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা তার ঊর্ধ্বতন ডিগ্রি অর্জন করতে হবে এবং ন্যূনতম সিজিপিএ-২.৮ থাকতে হবে। তবে বিভাগ ও কলেজভেদে ভিন্ন ভিন্ন অতিরিক্ত যোগ্যতা ও শর্ত থাকতে পারে, যা প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট অনুষদ বা বিভাগের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে বিস্তারিতভাবে যাচাই করে নিতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার পরিসর বিস্তৃত ও বহুমাত্রিক। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস, কলেজ অব এডুকেশন, কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং, কলেজ অব ল, কলেজ অব মেডিসিন, কলেজ অব ফার্মেসি, কলেজ অব শরিয়া অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং কলেজ অব হেলথ সায়েন্সেসের মতো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একাধিক অনুষদ।

আবেদনের পদ্ধতি

আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারের ‘বদলি কৌশলে’ পিছু হটলেন শিক্ষকেরা

  • ৩ নেতাসহ ৪৩ শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে বদলি
  • এগুলো হয়রানিমূলক বদলি বলে অভিযোগ শিক্ষক নেতাদের
  • কর্মবিরতি স্থগিতের ঘোষণা, বার্ষিক পরীক্ষা কাল থেকে
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। পাশাপাশি তাঁরা আগামীকাল রোববার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দুটি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের হয়রানিমূলক বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষক নেতারা জানান, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তিন নেতাসহ ৪৩ সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা হয়রানিমূলক বলে অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, রেওয়াজ না থাকলেও হয়রানি করতে নিজ জেলার বাইরে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৩ সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

খায়রুন নাহার বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ (কারণ দর্শানো) ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে। কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না, তাঁদেরও বদলি করা হয়েছে।’

দাবি বাস্তবায়নে সরকারের দেওয়া আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অনুসারীরা গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। এর আগে সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।

কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকেরা আন্দোলন শুরু করেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।

গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। সে সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন।

১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকার আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে মুখোমুখি শিক্ষক-অভিভাবকেরা

  • পিরোজপুর, পাবনায় শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের সংঘর্ষ।
  • অনেক জায়গায় স্কুলের তালা ভেঙে পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
  • শিক্ষকনেতাদের বদলি। প্রতিবাদে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলনের জেরে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গতকাল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।

এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’

এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।

বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।

একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।

জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’

সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’

দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।

সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত