Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি নিয়ে সাত কলেজে তীব্র অসন্তোষ

ইলিয়াস শান্ত
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি নিয়ে সাত কলেজে তীব্র অসন্তোষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজে শিক্ষক সংকট, শ্রেণিকক্ষ সংকট, গবেষণার সুযোগ না থাকা, ফল প্রকাশে বিলম্ব ও সার্টিফিকেট জটিলতাসহ নানা ধরনের সমস্যা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধিভুক্তির পর থেকে এসব সমস্যা লেগেই আছে। এসব সমস্যা সমাধানে ও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে প্রায়ই রাজপথে দেখা যায় কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্থবির শিক্ষা কার্যক্রমে যা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা এমন অসন্তোষ থেকে তারা এবার অধিভুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছেন।

সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা ‘সাত কলেজ সংস্কার চাই’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে তারা কলেজগুলোর সমস্যার চিত্র তুলে ধরছেন। গ্রুপের কিছু কিছু পোস্টে দেখা গেছে, সমস্যার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সমাধানের রোডম্যাপও উল্লেখ করছেন। সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি একটি বড় অংশের শিক্ষার্থী ওই গ্রুপে সরাসরি সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, অধিভুক্তি বাতিলের পর সাত কলেজ নিয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

প্রান্ত নামে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাবি নিজেদের অধিভুক্ত করলেও তারা সাত কলেজকে বিবেচনা করেছে সবসময়ই অর্থ উপর্জানের মাধ্যম হিসেবে। শিক্ষাগত মানোন্নয়ন তো ঘটেইনি, বরং নিত্য নতুন প্রতিবন্ধকতা আর ভুতুড়ে নিয়মনীতির ভেতর অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কলেজগুলোতে। অধিভুক্তকরণের সাত বছরে এসে ঢাবির অর্জন বলতে বিস্তর বৈষম্য সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না।’

সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের চলমান অসন্তোষ নিয়ে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অডিটোরিয়ামে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে কলেজটির শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। প্রান্ত বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশকে যখন বৈষম্যমুক্ত করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, তখন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজেও সংস্কার প্রয়োজন। সাত সরকারি কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘সাত কলেজের সংস্কার’ বিষয়ক ওই মতবিনিময় সভায় সংস্কার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় উঠে আসে সাত কলেজে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বৈষম্য ও প্রতিবন্ধকতার কথা।’

২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ কমাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে সভা হয়। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কলেজগুলোকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে একমত হন।

এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয় রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ। ওইদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দফতর সংলগ্ন লাউঞ্জে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সাতটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। কলেজগুলো হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে আছে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল, টেক্সটাইল এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ। ১৩৪টি কলেজের মতোই চলার কথা ছিল নতুন যুক্ত হওয়া অধিভুক্ত সাত কলেজের। অধিভুক্ত অন্যান্য কলেজের মতো নতুন সংযোজিত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা পাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট। তবে সার্টিফিকেটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে অধিভুক্ত স্ব-স্ব কলেজের ও বিভাগের নাম। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটে হল ও বিভাগের নাম উল্লেখ থাকে। সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা বলছেন, অধিভুক্তির পরিচয় মিললেও বস্তুত তারা অধিকারহীন। তারা বৈষম্যের শিকার।

সাত কলেজে অসন্তোষ কী নিয়ে
ঢাকা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আব্দুর রহমান বলেন, ঢাবির শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন। কিন্তু সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের এ সুযোগ নেই। স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় রয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। ঢাবি শিক্ষার্থীরা সরাসরি পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক পাচ্ছেন, সেখানে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকই পাচ্ছেন না। ঢাবি শিক্ষার্থীরা গবেষণার অফুরন্ত সুযোগ পাচ্ছেন, অন্যদিকে সাত কলেজে শ্রেণিকক্ষেরই তীব্র সংকট। ঢাবি শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হলেও সাত কলেজের সুনির্দিষ্ট কোনো অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার নেই। 

অসন্তোষের দীর্ঘ চিত্র তুলে ধরে আব্দুর রহমান বলেন, ঢাবির ২০২২-২৩ সেশনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এমনকি কিছুদিনের মধ্যে হয়ত ফলও প্রকাশ হবে। অথচ সাত কলেজের ২২-২৩ সেশনের এখনো পরীক্ষায়ই হয়নি। প্রত্যেক সেশনের একই অবস্থা। খোঁজ নিলে দেখা যাবে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ সিলেবাস কভার করার মতো পর্যাপ্ত ক্লাস পায়নি। সাত কলেজে ক্লাস নেয় বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক। আর প্রশ্ন করেন ঢাবির পিএইচডির শিক্ষক, খাতাও তারা দেখেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মূল্যায়ন যথাযথভাবে বিকশিত হচ্ছে না। সাত কলেজে কোনোরকম পরীক্ষা হলেও ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়। বিগত বছরগুলোতে দেখা, গেছে ঢাবি ৬-৭ মাস পর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। সাত কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোয় চরম দৈন্যদশা অবস্থা বিরাজ করছে। এখানে ব্যবহারিক ক্লাস করার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই।

সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের প্রস্তাব
শিক্ষার্থীদের আলোচনার মধ্যে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে নতুন একটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেছেন, ঢাকার বড় বড় ৭টি কলেজ এবং আরও কিছু কলেজ নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বা পশ্চিমবাংলার কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে একটি collegiate university-তে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। এই ৭টি কলেজের আরও কয়েকটি কলেজে নিয়ে এর একটিকে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবন হিসাবে বানিয়ে বাকি কলেজগুলোকে এর অনুমোদিত কলেজে পরিণত করা। কলেজগুলোতে কেবল ৩-৪ বছরের অনার্স পড়াবে। সেখানে থাকবে না উচ্চ মাধ্যমিক বা ডিগ্রি পাসকোর্স। এই অনুমোদিত কলেজে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের মত।

শিক্ষকের যোগ্যতা ও কলেজগুলোর ডিগ্রি নিয়ে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতা হবে পিএইচডি। যেখানে এই অনুমোদিত কলেজের শিক্ষকদের সবারও ন্যূনতম পিএইচডি থাকা উচিত। ৪ বছরের অনার্সই হবে টার্মিনাল ডিগ্রি। এরপর পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে লিমিটেড সিটের জন্য ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মাস্টার্সে ভর্তি হবে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত কেবল ৭ কলেজের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ক্যাম্পাসেই মাস্টার্স পড়ানো হবে।

তীব্র অসন্তোষ নিয়ে রোববার সংবাদ সম্মেলন
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘আগামীকাল রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দেশের উচ্চশিক্ষার সূচনালগ্নে অবদান রাখা সরকারি সাত কলেজ সংস্কারের অভিপ্রায়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একান্তই কাম্য। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের নিজ ক্যাম্পাসের উন্নয়নে সংস্কার কার্যক্রমে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি।’ আগামীকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা কলেজে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হবে।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে এখনো স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। সরকারের পতনের সঙ্গে অন্যান্য খাতের মতো ভেঙে পড়েছে শিক্ষাখাতও। প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন হয়েছে ভিসি-প্রোভিসি, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজে সে ধারাবাহিকতায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ঢাবির নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সাত কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সাত কলেজের এক অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তারা এখনো চিঠি না পেলেও মুখে মুখে এ বৈঠকের কথা শুনেছেন। ঢাবির সঙ্গে প্রথম বৈঠকে তারা শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয়টি ঢাবি প্রশাসনের সামনে তুলে ধরবেন।

প্রশাসন কী বলছে
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ‍উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও তার পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। মুঠোফোনে প্রতিক্রিয়া না জানালেও পরে তিনি ক্ষুদেবার্তায় তার অফিসে গিয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে আমাদের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। চাইলেই একেবারে সবকিছু রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। পরিবর্তনের জন্য আলোচনা করতে হবে। দুপক্ষকে কথা বলতে হবে, পক্ষগুলোকে একে অপরের কথা শুনতে হবে। আমরা শুনেছি, শিক্ষার্থীরা আগামীকাল একটা সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন, তারা তাদের কথাগুলো বলুক। আমরা তাদের কথা শুনতে চাই। এরপর প্রয়োজনে আমরা নিজেরা আবার আলোচনা করে সমস্যাগুলোর কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবগত করবো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: কাল ভোট, নিরাপত্তা জোরদার

  • ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ।
  • ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি।
  • মোট ভোটার ১৬ হাজার ৪৪৫ জন।
  • কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে প্রার্থী ১৮৭।
সোহানুর রহমান, জবি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জকসু নির্বাচন উপলক্ষে ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি এবং কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে জগন্নাথ কলেজে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর এটিই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, জকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৪৪৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৮ হাজার ৪৭৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১৭০ জন। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থী ১৮৭ জন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের জন্য ভোটকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। ৩৯ কেন্দ্রের ১৭৮ বুথে ভোট গ্রহণ হবে। ব্যালট পেপার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ চলাকালে প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ টিম দায়িত্ব পালন করবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সামগ্রিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আইনশৃঙ্খলাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বাহিনী আজ থেকে ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সক্রিয় থাকবে। কমিশন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, যেকোনো সমস্যা সমাধানে নিরাপত্তাব্যবস্থা কঠোর অবস্থানে থাকবে।’

নির্বাচনকে ঘিরে গতকাল শেষ দিনের মতো প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। দিনভর ক্যাম্পাসে প্রার্থীদের গণসংযোগ, মতবিনিময় ও ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লক্ষ করা গেছে।

ছাত্রশিবির-সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটি ফেয়ার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোট গণনায় যেন বিলম্ব না হয়, সেই দাবিও থাকবে। সব মিলিয়ে আশা করি, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ক্যাম্পাসে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।’

ছাত্রদল-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও এই ধারা অব্যাহত থাকত। এখন আমাদের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আশা করি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থেকে এবং কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে।’

জাতীয় ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমরা হতাশ। তাদের প্রতিটি কার্যক্রম বিতর্কিত, তাই কোনো আশা রাখছি না। তবে শিক্ষার্থীদের থেকে আমাদের একটাই আশা, ক্যাম্পাসের জন্য যারা কাজ করবে, সে রকম প্রতিনিধি বাছাই করতে তারা ভোটকেন্দ্রে এসে নিরাপদে ভোট দিতে পারুক।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট-সমর্থিত মওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী গৌরব ভৌমিক বলেন, ‘প্রচারণার মধ্য দিয়ে আমরা অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের থেকে আশাবাদী। তবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কিছু সংশয় আছে। সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লাবণী আক্তার কবিতা বলেন, ‘আশা করি, নির্বাচিত প্রার্থীরা দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’

নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে প্রবেশসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি জানান, ‘কেবল অনুমোদিত ব্যক্তি, ভোটার, শিক্ষক এবং নির্বাচনের কাজে বিশেষভাবে অনুমোদিত ব্যক্তিরাই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এ জন্য নির্ধারিত পরিচয়পত্র বহন বাধ্যতামূলক। পরিচয়পত্র সংগ্রহের বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর বুটেক্সে প্রথম সমাবর্তন

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো সমাবর্তন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

সমাবর্তনে মোট ৪,১২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬০ জন মাস্টার্স, ১৯৪ জন এমবিএ এবং বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজসমূহ থেকে ১,২৫০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৪১ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, "আজকের এই সমাবর্তন শুধু বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নয়, দেশের বস্ত্রশিল্পের গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিপক্কতার সাক্ষী হচ্ছি, যা অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলছে। এটি কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়; বরং ভবিষ্যতের আরও অসংখ্য তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।"

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, "আমাদের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশ আসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল পণ্য থেকে। এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই মনে রাখতে হবে—দেশ ও জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। চলার পথ সহজ নয়; সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে মনে রেখো, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও কাজের প্রভাব শুধু নিজেই নয়, পরিবার, সমাজ এবং দেশের ওপরও পড়বে।"

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে এশীয় এই উপমহাদেশ বস্ত্রশিল্পে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। ঢাকার মসলিন ছিল বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট তুলা বস্ত্র—যার কোমলতা ও মান আজও অতুলনীয়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাত বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে গড়ে ওঠা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে এবং দেশসেবার সুযোগ তৈরি করবে। এই সমাবর্তন শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের অনুষ্ঠান নয়—এটি আরও বড় একটি উত্তরাধিকার বহনের আনুষ্ঠানিক সূচনা।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, "মোট ৪,১২৬ জন গ্র্যাজুয়েট আজ তাদের ডিগ্রি গ্রহণ করছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সকল গ্র্যাজুয়েট দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে অবদান রেখে আসছে। এর পাশাপাশি ২৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখেছেন। আজকের এই সমাবর্তন শুধু একটি অর্জন নয়, বরং দায়িত্ব ও অঙ্গীকারের সূচনা। সততা, অধ্যবসায় এবং শিক্ষার ধারাবাহিক চর্চাকে জীবন ও কর্মের মূলমন্ত্র হিসেবে ধারণ করে নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সমাজ, দেশ ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।"

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্য জানুয়ারির আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই পৌঁছাবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত ‘নতুন পাঠ্যবইয়ের সফট কপি অনলাইনে আপলোডকরণ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন বা পিডিএফ কপি প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুরু হবে। তার আগেই অলমোস্ট হান্ড্রেড পার্সেন্ট (প্রায় শতভাগ) বই পৌঁছে যাবে।

আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের সবাই সব বিষয়ের নতুন পাঠ্যবই হাতে পাবে না বলে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।

এর সমালোচনা করে সি আর আবরার বলেন, ‘এখানে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট (প্রতিবেদন) হয়েছে, যথার্থ রিপোর্ট হয়েছে। আবার কিছু কিছু রিপোর্ট আমি বলব, সেগুলো খুব যে একটা সৎ উদ্দেশ্যে হয়েছিল, সেটা না।’

নতুন বই নিয়ে অভিযোগের জবাব শিক্ষা প্রশাসন কাজের মাধ্যমে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের স্বার্থগোষ্ঠী এখানে কাজ করেছে এবং আমরা এখানে সেগুলো সয়েছি। এগুলো আমরা কোশ্চেন করিনি, কনটেস্ট করিনি। আমরা মনে করেছি, শেষ বিচারে আমরা কতটুকু নির্ভুল ও মানসম্পন্ন বই দিতে পারব, দ্যাট উইল বি আলটিমেট টেস্ট।’

বই ছাপানোর সময় বেশি লাগার কারণও অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করেন সি আর আবরার।

বিভিন্ন প্রেসে অভিযান চালিয়ে ‘মানহীন’ বই ধ্বংস করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে যেন কোনো ভুল না থাকে, এ জন্য রিটেন্ডার করতে হয়েছে। বিভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনা ছিল, সেগুলো আমাদের নিরসন করতে হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

কক্সবাজারের সোনারপাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে সম্প্রতি এক বর্ণাঢ্য ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে মোট ৫০০ জন দৌড়বিদ এই আয়োজনে অংশ নেন।

ভোর ৬টায় উখিয়ার সোনারপাড়া বিচ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দৌড়টি শেষ হয় সকাল ৭টায় তারকা মানের হোটেল অর্কিড ব্লুতে। পুরুষ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন মোহাম্মদ সায়েদ (০১৫৯), প্রথম রানারআপ তারেক (০৪৫৬) এবং দ্বিতীয় রানারআপ আশিক (০১৬০)। নারীদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন বিদেশি প্রতিযোগী জোহানা (০২৩৯), প্রথম রানারআপ আভা (০০৬৫) এবং দ্বিতীয় রানারআপ কুজো (০০৮৭)।

ম্যারাথন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিঘর ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা এ এইচ সেলিম উল্লাহ, প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার, উখিয়া শাখার সভাপতি পিএম মোবারক, ইনস্টিটিউশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের সিডিসিও শাইফুল ইসলাম শিহাব, উবায়েদ উল্লাহ শুভ, শাকিবুল ইসলাম, সাইয়েদ মোবারক, মেহেদী হাসান, শাহরিয়ার তানভীর রিফাত, আর জে রাফি, আবুল কাশেমসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার বলেন, ‘বিপুল সাড়া পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।’

ম্যারাথনের সমাপ্তির পর অংশগ্রহণকারীরা আরও এরূপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। আয়োজকেরা জানান, আগামী বছরও তাঁরা একটি নতুন ম্যারাথন আয়োজনের চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

সমঝোতায় পৌঁছেছি, আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব: নাহিদ ইসলাম

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত