ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট। এই রূপান্তর শুধু নামেই নয়; বরং দেশের প্রযুক্তি, কৃষি ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়েছে। একসময় হাতে গোনা শ্রেণিকক্ষ দিয়ে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ দেশে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকৌশলে নেতৃত্বের অবস্থানে। সময়ের প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রীয় নীতির ধারাবাহিকতায় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কলেজ থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকায় কারিগরি শিক্ষার সূচনা হয়েছিল একটি ছোট্ট সার্ভে স্কুল দিয়ে। ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এটির নাম ছিল ঢাকা সার্ভে স্কুল। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার ভিত্তি। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ১৯৬২ সালে প্রথম পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নামে। আজ বুয়েট শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি দেশের প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন ও আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার শীর্ষ কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম (বিআইটি চট্টগ্রাম) হলো আজকের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। পরে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। চুয়েটও একাধিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। ১৯৮৬ সালে কলেজ নাম বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তর লাভ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রতিষ্ঠান।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে যাত্রা শুরু করে ‘খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’। পরে আরও মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনায় রূপান্তরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিআইটি থেকে উন্নীত করে একই সঙ্গে নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটিকে রূপান্তর করা হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষার এক শতাব্দীর ইতিহাস। ১৯২১ সালে ঔপনিবেশিক শাসনামলে টেক্সটাইল কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ঢাকার নারিন্দায় একটি তাঁত স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।
তখন এর নাম ছিল ইস্ট বেঙ্গল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি প্রোগ্রাম করে প্রতিষ্ঠানটি। তখন এর নামকরণ করা হয় কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রাহ্ম আন্দোলনের নেতা দীননাথ সেন, ব্রজসুন্দর মিত্র প্রমুখের চেষ্টায় ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
ব্রাহ্ম স্কুল প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যে স্কুলটি আর্থিক সংকটে পড়ে। ফলে স্কুলটি টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ভার তুলে দেওয়া হয় বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর হাতে। তিনি তাঁর বাবার নামে স্কুলের নামকরণ করেন ‘জগন্নাথ স্কুল’। স্কুলের অবস্থা ভালো হওয়ায় ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ স্কুলকে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে রূপান্তর করা হয়। ক্রমান্বয়ে ১৯০৮ সালে জগন্নাথ কলেজ প্রথম শ্রেণির কলেজে রূপান্তরিত হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫’ পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদিত হয়।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি শিক্ষার প্রাচীনতম নামগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠা দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট একটি। ১৯৪৭ সালে এটি ‘পূর্ব পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ নাম ধারণ করে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবিতে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তখন এটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৮০ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রতিষ্ঠার পরের বছর এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ডিইসি)। তখন প্রতিষ্ঠানটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অধ্যাদেশের অধীনে স্বায়ত্তশাসন পেয়ে নতুন পরিচয় পায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ঢাকা (বিআইটিডি)। ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তরিত হয়।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৪ সালে রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে আজকের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। এরপর কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), রাজশাহীতে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইনস্টিটিউটটিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) হিসেবে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকারের স্বায়ত্তশাসিত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যা ‘রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৩’-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাবিপ্রবির যাত্রা শুরু ১৯৭৯ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট হিসেবে, যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০০১ সালের ৮ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আক্তার বানু বলেন, সময় এবং যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তরগুলো হয়েছে। দেশীয় শিক্ষার প্রসারে এটাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে হবে। একাডেমিয়া ও এডুকেশনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এ পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শত বছর আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আজকের দিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুফল পাচ্ছেন। এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানের আরও উন্নয়ন দরকার। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে এসে এমন আর কোনো প্রতিষ্ঠানের রূপান্তর প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটা সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছে, তারা বিবেচনা করবে।

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট। এই রূপান্তর শুধু নামেই নয়; বরং দেশের প্রযুক্তি, কৃষি ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়েছে। একসময় হাতে গোনা শ্রেণিকক্ষ দিয়ে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ দেশে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকৌশলে নেতৃত্বের অবস্থানে। সময়ের প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রীয় নীতির ধারাবাহিকতায় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কলেজ থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকায় কারিগরি শিক্ষার সূচনা হয়েছিল একটি ছোট্ট সার্ভে স্কুল দিয়ে। ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এটির নাম ছিল ঢাকা সার্ভে স্কুল। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার ভিত্তি। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ১৯৬২ সালে প্রথম পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নামে। আজ বুয়েট শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি দেশের প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন ও আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার শীর্ষ কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম (বিআইটি চট্টগ্রাম) হলো আজকের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। পরে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। চুয়েটও একাধিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। ১৯৮৬ সালে কলেজ নাম বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তর লাভ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রতিষ্ঠান।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে যাত্রা শুরু করে ‘খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’। পরে আরও মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনায় রূপান্তরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিআইটি থেকে উন্নীত করে একই সঙ্গে নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটিকে রূপান্তর করা হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষার এক শতাব্দীর ইতিহাস। ১৯২১ সালে ঔপনিবেশিক শাসনামলে টেক্সটাইল কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ঢাকার নারিন্দায় একটি তাঁত স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।
তখন এর নাম ছিল ইস্ট বেঙ্গল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি প্রোগ্রাম করে প্রতিষ্ঠানটি। তখন এর নামকরণ করা হয় কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রাহ্ম আন্দোলনের নেতা দীননাথ সেন, ব্রজসুন্দর মিত্র প্রমুখের চেষ্টায় ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
ব্রাহ্ম স্কুল প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যে স্কুলটি আর্থিক সংকটে পড়ে। ফলে স্কুলটি টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ভার তুলে দেওয়া হয় বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর হাতে। তিনি তাঁর বাবার নামে স্কুলের নামকরণ করেন ‘জগন্নাথ স্কুল’। স্কুলের অবস্থা ভালো হওয়ায় ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ স্কুলকে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে রূপান্তর করা হয়। ক্রমান্বয়ে ১৯০৮ সালে জগন্নাথ কলেজ প্রথম শ্রেণির কলেজে রূপান্তরিত হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫’ পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদিত হয়।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি শিক্ষার প্রাচীনতম নামগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠা দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট একটি। ১৯৪৭ সালে এটি ‘পূর্ব পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ নাম ধারণ করে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবিতে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তখন এটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৮০ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রতিষ্ঠার পরের বছর এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ডিইসি)। তখন প্রতিষ্ঠানটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অধ্যাদেশের অধীনে স্বায়ত্তশাসন পেয়ে নতুন পরিচয় পায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ঢাকা (বিআইটিডি)। ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তরিত হয়।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৪ সালে রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে আজকের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। এরপর কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), রাজশাহীতে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইনস্টিটিউটটিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) হিসেবে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকারের স্বায়ত্তশাসিত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যা ‘রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৩’-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাবিপ্রবির যাত্রা শুরু ১৯৭৯ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট হিসেবে, যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০০১ সালের ৮ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আক্তার বানু বলেন, সময় এবং যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তরগুলো হয়েছে। দেশীয় শিক্ষার প্রসারে এটাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে হবে। একাডেমিয়া ও এডুকেশনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এ পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শত বছর আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আজকের দিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুফল পাচ্ছেন। এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানের আরও উন্নয়ন দরকার। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে এসে এমন আর কোনো প্রতিষ্ঠানের রূপান্তর প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটা সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছে, তারা বিবেচনা করবে।
ইলিয়াস শান্ত, ঢাকা

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট। এই রূপান্তর শুধু নামেই নয়; বরং দেশের প্রযুক্তি, কৃষি ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়েছে। একসময় হাতে গোনা শ্রেণিকক্ষ দিয়ে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ দেশে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকৌশলে নেতৃত্বের অবস্থানে। সময়ের প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রীয় নীতির ধারাবাহিকতায় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কলেজ থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকায় কারিগরি শিক্ষার সূচনা হয়েছিল একটি ছোট্ট সার্ভে স্কুল দিয়ে। ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এটির নাম ছিল ঢাকা সার্ভে স্কুল। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার ভিত্তি। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ১৯৬২ সালে প্রথম পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নামে। আজ বুয়েট শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি দেশের প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন ও আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার শীর্ষ কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম (বিআইটি চট্টগ্রাম) হলো আজকের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। পরে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। চুয়েটও একাধিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। ১৯৮৬ সালে কলেজ নাম বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তর লাভ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রতিষ্ঠান।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে যাত্রা শুরু করে ‘খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’। পরে আরও মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনায় রূপান্তরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিআইটি থেকে উন্নীত করে একই সঙ্গে নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটিকে রূপান্তর করা হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষার এক শতাব্দীর ইতিহাস। ১৯২১ সালে ঔপনিবেশিক শাসনামলে টেক্সটাইল কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ঢাকার নারিন্দায় একটি তাঁত স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।
তখন এর নাম ছিল ইস্ট বেঙ্গল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি প্রোগ্রাম করে প্রতিষ্ঠানটি। তখন এর নামকরণ করা হয় কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রাহ্ম আন্দোলনের নেতা দীননাথ সেন, ব্রজসুন্দর মিত্র প্রমুখের চেষ্টায় ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
ব্রাহ্ম স্কুল প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যে স্কুলটি আর্থিক সংকটে পড়ে। ফলে স্কুলটি টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ভার তুলে দেওয়া হয় বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর হাতে। তিনি তাঁর বাবার নামে স্কুলের নামকরণ করেন ‘জগন্নাথ স্কুল’। স্কুলের অবস্থা ভালো হওয়ায় ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ স্কুলকে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে রূপান্তর করা হয়। ক্রমান্বয়ে ১৯০৮ সালে জগন্নাথ কলেজ প্রথম শ্রেণির কলেজে রূপান্তরিত হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫’ পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদিত হয়।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি শিক্ষার প্রাচীনতম নামগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠা দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট একটি। ১৯৪৭ সালে এটি ‘পূর্ব পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ নাম ধারণ করে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবিতে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তখন এটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৮০ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রতিষ্ঠার পরের বছর এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ডিইসি)। তখন প্রতিষ্ঠানটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অধ্যাদেশের অধীনে স্বায়ত্তশাসন পেয়ে নতুন পরিচয় পায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ঢাকা (বিআইটিডি)। ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তরিত হয়।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৪ সালে রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে আজকের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। এরপর কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), রাজশাহীতে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইনস্টিটিউটটিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) হিসেবে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকারের স্বায়ত্তশাসিত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যা ‘রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৩’-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাবিপ্রবির যাত্রা শুরু ১৯৭৯ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট হিসেবে, যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০০১ সালের ৮ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আক্তার বানু বলেন, সময় এবং যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তরগুলো হয়েছে। দেশীয় শিক্ষার প্রসারে এটাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে হবে। একাডেমিয়া ও এডুকেশনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এ পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শত বছর আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আজকের দিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুফল পাচ্ছেন। এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানের আরও উন্নয়ন দরকার। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে এসে এমন আর কোনো প্রতিষ্ঠানের রূপান্তর প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটা সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছে, তারা বিবেচনা করবে।

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট। এই রূপান্তর শুধু নামেই নয়; বরং দেশের প্রযুক্তি, কৃষি ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়েছে। একসময় হাতে গোনা শ্রেণিকক্ষ দিয়ে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ দেশে গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকৌশলে নেতৃত্বের অবস্থানে। সময়ের প্রয়োজনে বা রাষ্ট্রীয় নীতির ধারাবাহিকতায় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কলেজ থেকে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া এমন ১০টি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকায় কারিগরি শিক্ষার সূচনা হয়েছিল একটি ছোট্ট সার্ভে স্কুল দিয়ে। ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এটির নাম ছিল ঢাকা সার্ভে স্কুল। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে দেশের প্রকৌশল শিক্ষার ভিত্তি। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় আহসানউল্লাহ কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ১৯৬২ সালে প্রথম পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নামে। আজ বুয়েট শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি দেশের প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন ও আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার শীর্ষ কেন্দ্র।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চট্টগ্রাম (বিআইটি চট্টগ্রাম) হলো আজকের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। পরে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। চুয়েটও একাধিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। ১৯৮৬ সালে কলেজ নাম বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তর লাভ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রতিষ্ঠান।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের অধীনে যাত্রা শুরু করে ‘খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’। পরে আরও মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনায় রূপান্তরিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিআইটি থেকে উন্নীত করে একই সঙ্গে নাম পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটিকে রূপান্তর করা হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষার এক শতাব্দীর ইতিহাস। ১৯২১ সালে ঔপনিবেশিক শাসনামলে টেক্সটাইল কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ঢাকার নারিন্দায় একটি তাঁত স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।
তখন এর নাম ছিল ইস্ট বেঙ্গল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। পরবর্তী সময়ে ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টেক্সটাইল প্রযুক্তিতে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি প্রোগ্রাম করে প্রতিষ্ঠানটি। তখন এর নামকরণ করা হয় কলেজ অব টেক্সটাইল টেকনোলজি। সর্বশেষ ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রাহ্ম আন্দোলনের নেতা দীননাথ সেন, ব্রজসুন্দর মিত্র প্রমুখের চেষ্টায় ১৮৫৮ সালে ব্রাহ্ম স্কুল নামে আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
ব্রাহ্ম স্কুল প্রতিষ্ঠার এক দশকের মধ্যে স্কুলটি আর্থিক সংকটে পড়ে। ফলে স্কুলটি টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৮৭২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ভার তুলে দেওয়া হয় বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরীর হাতে। তিনি তাঁর বাবার নামে স্কুলের নামকরণ করেন ‘জগন্নাথ স্কুল’। স্কুলের অবস্থা ভালো হওয়ায় ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ স্কুলকে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে রূপান্তর করা হয়। ক্রমান্বয়ে ১৯০৮ সালে জগন্নাথ কলেজ প্রথম শ্রেণির কলেজে রূপান্তরিত হয়। পর্যায়ক্রমে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫’ পাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অনুমোদিত হয়।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি শিক্ষার প্রাচীনতম নামগুলোর মধ্যে ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠা দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট একটি। ১৯৪৭ সালে এটি ‘পূর্ব পাকিস্তান অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ নাম ধারণ করে। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম বাকৃবিতে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানকে ইনস্টিটিউট থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তখন এটি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় এবং ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ‘পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তব রূপ লাভ করে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৮০ সালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রতিষ্ঠার পরের বছর এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ডিইসি)। তখন প্রতিষ্ঠানটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অধ্যাদেশের অধীনে স্বায়ত্তশাসন পেয়ে নতুন পরিচয় পায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ঢাকা (বিআইটিডি)। ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তরিত হয়।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৬৪ সালে রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে আজকের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। এরপর কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), রাজশাহীতে রূপান্তরিত করা হয়। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইনস্টিটিউটটিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) হিসেবে উন্নীত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকারের স্বায়ত্তশাসিত সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যা ‘রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৩’-এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাবিপ্রবির যাত্রা শুরু ১৯৭৯ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট হিসেবে, যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত ছিল। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০০১ সালের ৮ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আক্তার বানু বলেন, সময় এবং যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তরগুলো হয়েছে। দেশীয় শিক্ষার প্রসারে এটাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে হবে। একাডেমিয়া ও এডুকেশনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এ পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শত বছর আগে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো আজকের দিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুফল পাচ্ছেন। এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানের আরও উন্নয়ন দরকার। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো দরকার। এ ছাড়া বর্তমান সময়ে এসে এমন আর কোনো প্রতিষ্ঠানের রূপান্তর প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেটা সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছে, তারা বিবেচনা করবে।

মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ।
১ ঘণ্টা আগে
ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
২ ঘণ্টা আগে
আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—
৩ ঘণ্টা আগেক্যাম্পাস ডেস্ক

মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন, কালচার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন বাংলাদেশের মেয়ে শাহনীরা আলম স্বজনী।
দেশে শাহনীরা আলম স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে প্রায় সাত বছর দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যম পেশায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কাজের বেশ অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন আর ভ্রমণে আগ্রহের কারণেই তিনি অস্ট্রিয়াকে বেছে নেন।
পছন্দের বিষয়ের খোঁজখবর
বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো টিউশন ফি। শাহনীরারও তা ছিল। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের খোঁজ নেওয়ার পর তিনি দেখেন, ফি অনেক সময় পড়াশোনার পথে বড় বাধা। তাই তিনি খোঁজখবর নেওয়ার একপর্যায়ে জানতে পারেন, অস্ট্রিয়ার প্রায় সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি নেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপের বাইরের কিছু দেশও এই সুবিধা পাচ্ছে। এরপর তিনি নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজতে থাকেন এবং ভর্তি হন।
আবেদনপ্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র
অস্ট্রিয়ার আবেদনপ্রক্রিয়া কিছুটা আলাদা। সাধারণত বাংলাদেশে সার্টিফিকেট বা ট্রান্সক্রিপ্ট সত্যায়িত করলেই চলে। কিন্তু অস্ট্রিয়ার ক্ষেত্রে, স্নাতকের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টকে অস্ট্রিয়ার এম্বাসি থেকে সত্যায়িত করতে হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত অস্ট্রিয়ার কনসুলেট অফিসে এই কাজ করা যায়। খরচ প্রায় ৭৫ হাজার টাকা এবং সময় লাগে আড়াই থেকে তিন মাস।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অস্ট্রিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ইনটেক থাকে—সামার ও উইন্টার। স্নাতকোত্তরে পড়তে চাইলে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.৫ থাকা আবশ্যক। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৭ পর্যন্ত স্কোর চায়। আবেদন সাধারণত অনলাইনে করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট কুরিয়ারে পাঠাতে হয়।
শাহনীরার বিষয়
দেশে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করায় তিনি এই বিষয়ে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গে যখন বিষয়টি দেখি এবং তাদের কারিকুলাম পর্যালোচনা করি, তখন থেকে আমার আগ্রহ তৈরি হয়। অস্ট্রিয়ায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে হলে ব্যাচেলরের বিষয় সম্পর্কিত থাকা জরুরি।’
ভাষা দক্ষতায় গুরুত্ব
অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রভাষা জার্মান। দীর্ঘ মেয়াদে এখানে অবস্থান করতে হলে জার্মান ভাষায় দক্ষ হওয়া অপরিহার্য। তবে ইংরেজি দক্ষতা থাকলেও দৈনন্দিন জীবন এবং চাকরির ক্ষেত্রে সেটি পর্যাপ্ত নয়।
বাসাভাড়া ও দৈনন্দিন খরচ
শাহনীরা জানালেন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্ভর করে আপনি কোন শহরে থাকেন, তার ওপর। সালজবুর্গে গড়ে বাসাভাড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ ইউরো; ইনস্যুরেন্স ৮০ ইউরো; পরিবহন ২৫ থেকে ৩৫ ইউরো; খাবার খরচ ৫০ থেকে ১০০ ইউরো।
পার্টটাইম কাজের সুযোগ
শিক্ষার্থীদের এখানে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে জার্মান ভাষায় যদি আপনি দক্ষ হন, তাহলে কাজের সুযোগ আরও ভালো। রেস্টুরেন্ট বা অন্যান্য দক্ষতা থাকলেও কাজ পাওয়া সম্ভব।
পড়াশোনার পর কাজ ও স্থায়ী বসবাস
শাহনীরা আলম স্বজনী বলেন, অস্ট্রিয়ায় নির্দিষ্ট সময় থাকার পর কিছু শর্ত পূরণ করে স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।
শাহনীরা আলমের পরামর্শ হলো, বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অস্ট্রিয়ায় স্নাতকোত্তর করা সম্ভব নয়। তাই প্রথমে দেখুন আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদন করার সুযোগ আছে কি না। যাঁরা দীর্ঘ মেয়াদে কাজ কিংবা বসবাস করতে চান, তাঁদের জার্মান ভাষায় অবশ্যই দক্ষ হতে হবে।’

মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন, কালচার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন বাংলাদেশের মেয়ে শাহনীরা আলম স্বজনী।
দেশে শাহনীরা আলম স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিষয়ে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে প্রায় সাত বছর দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যম পেশায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কাজের বেশ অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন আর ভ্রমণে আগ্রহের কারণেই তিনি অস্ট্রিয়াকে বেছে নেন।
পছন্দের বিষয়ের খোঁজখবর
বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো টিউশন ফি। শাহনীরারও তা ছিল। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের খোঁজ নেওয়ার পর তিনি দেখেন, ফি অনেক সময় পড়াশোনার পথে বড় বাধা। তাই তিনি খোঁজখবর নেওয়ার একপর্যায়ে জানতে পারেন, অস্ট্রিয়ার প্রায় সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি নেই। শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপের বাইরের কিছু দেশও এই সুবিধা পাচ্ছে। এরপর তিনি নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজতে থাকেন এবং ভর্তি হন।
আবেদনপ্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র
অস্ট্রিয়ার আবেদনপ্রক্রিয়া কিছুটা আলাদা। সাধারণত বাংলাদেশে সার্টিফিকেট বা ট্রান্সক্রিপ্ট সত্যায়িত করলেই চলে। কিন্তু অস্ট্রিয়ার ক্ষেত্রে, স্নাতকের সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টকে অস্ট্রিয়ার এম্বাসি থেকে সত্যায়িত করতে হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত অস্ট্রিয়ার কনসুলেট অফিসে এই কাজ করা যায়। খরচ প্রায় ৭৫ হাজার টাকা এবং সময় লাগে আড়াই থেকে তিন মাস।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অস্ট্রিয়ার বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ইনটেক থাকে—সামার ও উইন্টার। স্নাতকোত্তরে পড়তে চাইলে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.৫ থাকা আবশ্যক। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৭ পর্যন্ত স্কোর চায়। আবেদন সাধারণত অনলাইনে করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে ডকুমেন্ট কুরিয়ারে পাঠাতে হয়।
শাহনীরার বিষয়
দেশে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করায় তিনি এই বিষয়ে আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গে যখন বিষয়টি দেখি এবং তাদের কারিকুলাম পর্যালোচনা করি, তখন থেকে আমার আগ্রহ তৈরি হয়। অস্ট্রিয়ায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে হলে ব্যাচেলরের বিষয় সম্পর্কিত থাকা জরুরি।’
ভাষা দক্ষতায় গুরুত্ব
অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রভাষা জার্মান। দীর্ঘ মেয়াদে এখানে অবস্থান করতে হলে জার্মান ভাষায় দক্ষ হওয়া অপরিহার্য। তবে ইংরেজি দক্ষতা থাকলেও দৈনন্দিন জীবন এবং চাকরির ক্ষেত্রে সেটি পর্যাপ্ত নয়।
বাসাভাড়া ও দৈনন্দিন খরচ
শাহনীরা জানালেন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্ভর করে আপনি কোন শহরে থাকেন, তার ওপর। সালজবুর্গে গড়ে বাসাভাড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ ইউরো; ইনস্যুরেন্স ৮০ ইউরো; পরিবহন ২৫ থেকে ৩৫ ইউরো; খাবার খরচ ৫০ থেকে ১০০ ইউরো।
পার্টটাইম কাজের সুযোগ
শিক্ষার্থীদের এখানে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে জার্মান ভাষায় যদি আপনি দক্ষ হন, তাহলে কাজের সুযোগ আরও ভালো। রেস্টুরেন্ট বা অন্যান্য দক্ষতা থাকলেও কাজ পাওয়া সম্ভব।
পড়াশোনার পর কাজ ও স্থায়ী বসবাস
শাহনীরা আলম স্বজনী বলেন, অস্ট্রিয়ায় নির্দিষ্ট সময় থাকার পর কিছু শর্ত পূরণ করে স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।
শাহনীরা আলমের পরামর্শ হলো, বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অস্ট্রিয়ায় স্নাতকোত্তর করা সম্ভব নয়। তাই প্রথমে দেখুন আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবেদন করার সুযোগ আছে কি না। যাঁরা দীর্ঘ মেয়াদে কাজ কিংবা বসবাস করতে চান, তাঁদের জার্মান ভাষায় অবশ্যই দক্ষ হতে হবে।’

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট।
০৯ নভেম্বর ২০২৫
ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
২ ঘণ্টা আগে
আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—
৩ ঘণ্টা আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে। একান্নবর্তী পরিবারে বসবাস। তবে পরিবারের কেউই ফটোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত নন।
ফেসবুকে ফটোগ্রাফারের ছবি দেখে অনুপ্রাণিত হন শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত। প্রথমে ছবি তুলতেন নকিয়া বাটন ফোন দিয়ে। পরে হাতে আসে নকিয়া লুমিয়া। নিজের কাজ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেন।
কওমি মাদ্রাসায় পড়ার সময় ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। তাই ছবি তুলতে হতো গোপনে। পরিবারের কেউ ছবি তোলা পছন্দ করতেন না; কিন্তু শাহরিয়ার থেমে থাকেননি। ধৈর্য ধরে এগিয়ে গেছেন। এখন তাঁর ছবির প্রশংসা করা হয়। এক্সিবিশনে ডাক পান। প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জেতেন।
রাঙামাটি, কক্সবাজার, সিলেট, পাবনাসহ দেশের অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে ছবি তুলেছেন তিনি। শাহরিয়ার গ্রাম, প্রকৃতি, নদী ও মানুষের জীবনকে বেশি তুলে ধরেন। তিনি এখন ছবি তোলেন পোকো এক্স থ্রি দিয়ে। এর আগে নকিয়া লুমিয়া, আইফোন৪, রেডমি নোট, ভিভো এস১ প্রো দিয়ে ছবি তুলেছেন। ক্যামেরা কেনার চেষ্টা করেছিলেন; যদিও অর্থের অভাবে তা পারেননি। মাঝেমধ্যে অন্য ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরা বা ড্রোন ব্যবহার করে ছবি তুলেছেন।
শান্ত মূলত নিজ অধ্যয়নেই ফটোগ্রাফি শিখেছেন। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন দিনের একটি বেসিক কোর্সও সম্পন্ন করেছেন তিনি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ঘর যেমনই হোক শিক্ষার আলো ঘরকে আলোকিত করবেই’ (ফেব্রুয়ারি ২০২১)। এই ছবি তাঁকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন ও আনওয়াইন্ড মাইন্ড এক্সিবিশনে প্রথম পুরস্কার পান। ভাঙা ঘরে শিশু পড়ছে—মুহূর্তটি ধারণ করতে তিনি গাছে উঠেও ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করেননি। ‘অন দ্য ওয়ে টু সেলিং ডার্কনেস’ (২৯ অক্টোবর ২০২১)। ছবিটি ২০২৪ সালে ইরানের কাফ ফটো কনটেস্টে ফাইনালিস্ট হয়। প্রচণ্ড রোদে উত্তপ্ত বালুচরে দাঁড়িয়ে তিনি নদীর পারের গ্রামের অনন্য দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন।

ফটোগ্রাফির পথে নানা চ্যালেঞ্জ ছিল। মাদ্রাসায় সীমিত সময়ে ছবি তুলতে হতো। একবার পুলিশ তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করতে চাইলে তিনি পরিচয় দিয়ে রক্ষা পান। অনেক সময় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে কোনো ছবি না পেয়ে ফিরতে হয়েছে; কিন্তু এসব কষ্ট কখনো তাঁকে দমাতে পারেনি।

২০২০-২৫ পর্যন্ত তিনি ৭০টির বেশি পুরস্কার জিতেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অনারেবল ম্যানশন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিবিশন ২০২৫; ফাইনালিস্ট, কাফ ফটো কনটেস্ট, ইরান ২০২৪; উইনার, আনওয়াইন্ড মাইন্ড ফটোগ্রাফি অ্যান্ড আর্ট এক্সিবিশন ২০২৪; উইনার, সামার ফটোগ্রাফি কনটেস্ট অ্যান্ড এক্সিবিশন ২০২৪, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; উইনার, ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফটো কনটেস্ট ২০২৩, ভারত।

ছবি বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি বন্যাদুর্গত মানুষকেও সহায়তা করেছেন। গত বছর ফেনীর বন্যায় ফেসবুকে ছবি বিক্রি করে পুরো টাকাই দান করে দিয়েছেন।

শাহরিয়ারের লক্ষ্য, যে পেশাতেই যান, ফটোগ্রাফি যেন তাঁর সঙ্গী থাকে। এখনো পড়াশোনার চাপ থাকায় ভ্রমণ কম। ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি জেলা ঘুরে ছবি তোলার ইচ্ছা। সুযোগ হলে বিদেশেও যেতে চান। মানুষের সামনে প্রকৃতি, মানুষ ও জীবনের সৌন্দর্য তুলে ধরাই তাঁর স্বপ্ন।

ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে। একান্নবর্তী পরিবারে বসবাস। তবে পরিবারের কেউই ফটোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত নন।
ফেসবুকে ফটোগ্রাফারের ছবি দেখে অনুপ্রাণিত হন শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত। প্রথমে ছবি তুলতেন নকিয়া বাটন ফোন দিয়ে। পরে হাতে আসে নকিয়া লুমিয়া। নিজের কাজ আরও উন্নত করার চেষ্টা করেন।
কওমি মাদ্রাসায় পড়ার সময় ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। তাই ছবি তুলতে হতো গোপনে। পরিবারের কেউ ছবি তোলা পছন্দ করতেন না; কিন্তু শাহরিয়ার থেমে থাকেননি। ধৈর্য ধরে এগিয়ে গেছেন। এখন তাঁর ছবির প্রশংসা করা হয়। এক্সিবিশনে ডাক পান। প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জেতেন।
রাঙামাটি, কক্সবাজার, সিলেট, পাবনাসহ দেশের অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে ছবি তুলেছেন তিনি। শাহরিয়ার গ্রাম, প্রকৃতি, নদী ও মানুষের জীবনকে বেশি তুলে ধরেন। তিনি এখন ছবি তোলেন পোকো এক্স থ্রি দিয়ে। এর আগে নকিয়া লুমিয়া, আইফোন৪, রেডমি নোট, ভিভো এস১ প্রো দিয়ে ছবি তুলেছেন। ক্যামেরা কেনার চেষ্টা করেছিলেন; যদিও অর্থের অভাবে তা পারেননি। মাঝেমধ্যে অন্য ফটোগ্রাফারদের ক্যামেরা বা ড্রোন ব্যবহার করে ছবি তুলেছেন।
শান্ত মূলত নিজ অধ্যয়নেই ফটোগ্রাফি শিখেছেন। একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন দিনের একটি বেসিক কোর্সও সম্পন্ন করেছেন তিনি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ঘর যেমনই হোক শিক্ষার আলো ঘরকে আলোকিত করবেই’ (ফেব্রুয়ারি ২০২১)। এই ছবি তাঁকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন ও আনওয়াইন্ড মাইন্ড এক্সিবিশনে প্রথম পুরস্কার পান। ভাঙা ঘরে শিশু পড়ছে—মুহূর্তটি ধারণ করতে তিনি গাছে উঠেও ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করেননি। ‘অন দ্য ওয়ে টু সেলিং ডার্কনেস’ (২৯ অক্টোবর ২০২১)। ছবিটি ২০২৪ সালে ইরানের কাফ ফটো কনটেস্টে ফাইনালিস্ট হয়। প্রচণ্ড রোদে উত্তপ্ত বালুচরে দাঁড়িয়ে তিনি নদীর পারের গ্রামের অনন্য দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন।

ফটোগ্রাফির পথে নানা চ্যালেঞ্জ ছিল। মাদ্রাসায় সীমিত সময়ে ছবি তুলতে হতো। একবার পুলিশ তাঁর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করতে চাইলে তিনি পরিচয় দিয়ে রক্ষা পান। অনেক সময় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে কোনো ছবি না পেয়ে ফিরতে হয়েছে; কিন্তু এসব কষ্ট কখনো তাঁকে দমাতে পারেনি।

২০২০-২৫ পর্যন্ত তিনি ৭০টির বেশি পুরস্কার জিতেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অনারেবল ম্যানশন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিবিশন ২০২৫; ফাইনালিস্ট, কাফ ফটো কনটেস্ট, ইরান ২০২৪; উইনার, আনওয়াইন্ড মাইন্ড ফটোগ্রাফি অ্যান্ড আর্ট এক্সিবিশন ২০২৪; উইনার, সামার ফটোগ্রাফি কনটেস্ট অ্যান্ড এক্সিবিশন ২০২৪, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; উইনার, ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফটো কনটেস্ট ২০২৩, ভারত।

ছবি বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি বন্যাদুর্গত মানুষকেও সহায়তা করেছেন। গত বছর ফেনীর বন্যায় ফেসবুকে ছবি বিক্রি করে পুরো টাকাই দান করে দিয়েছেন।

শাহরিয়ারের লক্ষ্য, যে পেশাতেই যান, ফটোগ্রাফি যেন তাঁর সঙ্গী থাকে। এখনো পড়াশোনার চাপ থাকায় ভ্রমণ কম। ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি জেলা ঘুরে ছবি তোলার ইচ্ছা। সুযোগ হলে বিদেশেও যেতে চান। মানুষের সামনে প্রকৃতি, মানুষ ও জীবনের সৌন্দর্য তুলে ধরাই তাঁর স্বপ্ন।

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট।
০৯ নভেম্বর ২০২৫
মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
২ ঘণ্টা আগে
আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—
৩ ঘণ্টা আগেক্যাম্পাস ডেস্ক

রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
দিনব্যাপী এই উৎসব চলে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। চাকরিপ্রত্যাশীরা দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পাবেন।
এ বছর প্রায় ১৩০টি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২০০-এর বেশি শূন্য পদে নিয়োগ দেবে। আইইউবিএটির শিক্ষার্থী ও স্নাতকেরা সরাসরি এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে সিভি জমা, প্রাথমিক বাছাই এবং সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য এটি অনন্য এক সুযোগ। তাঁরা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, যোগ্যতা এবং ক্যারিয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনা পাবেন।
দিনব্যাপী আয়োজনে ১০টি ক্যারিয়ার সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো পরিচালনা করবেন অভিজ্ঞ এইচআর পেশাজীবীরা।
এ ছাড়া শীর্ষ করপোরেট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে একটি প্যানেল ডিসকাশনও অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে আইইউবিএটি প্লেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই অফিস। শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে নিরলসভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে।

রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
দিনব্যাপী এই উৎসব চলে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। চাকরিপ্রত্যাশীরা দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে তাঁদের স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পাবেন।
এ বছর প্রায় ১৩০টি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২০০-এর বেশি শূন্য পদে নিয়োগ দেবে। আইইউবিএটির শিক্ষার্থী ও স্নাতকেরা সরাসরি এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে সিভি জমা, প্রাথমিক বাছাই এবং সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য এটি অনন্য এক সুযোগ। তাঁরা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, যোগ্যতা এবং ক্যারিয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনা পাবেন।
দিনব্যাপী আয়োজনে ১০টি ক্যারিয়ার সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো পরিচালনা করবেন অভিজ্ঞ এইচআর পেশাজীবীরা।
এ ছাড়া শীর্ষ করপোরেট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে একটি প্যানেল ডিসকাশনও অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে আইইউবিএটি প্লেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই অফিস। শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে নিরলসভাবে তারা কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট।
০৯ নভেম্বর ২০২৫
মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ।
১ ঘণ্টা আগে
ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে।
১ ঘণ্টা আগে
আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—
৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষা ডেস্ক

আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই
আরও পড়ুন:

আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন আরও ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই
আরও পড়ুন:

দেশের উচ্চশিক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে, এগুলোর বেশ কয়েকটির শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ। কোনোটি শুরু হয়েছিল স্কুল হিসেবে, কোনোটি কলেজ। সময়ের স্রোতে বদলে গেছে সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম, কাঠামো ও মর্যাদা। কিন্তু শিক্ষার মূল শিকড় থেকে গেছে অটুট।
০৯ নভেম্বর ২০২৫
মধ্য ইউরোপের একটি দেশ অস্ট্রিয়া। পাহাড়, নদী, বন ও প্রকৃতির মিশ্রণের এ দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বমানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিস লদরন ইউনিভার্সিটি অব সালজবুর্গ।
১ ঘণ্টা আগে
ছোটবেলা থেকে প্রকৃতি তাঁকে মুগ্ধ করত। নদী, খাল, গাছগাছালি আর গ্রামের জীবন তাঁকে বারবার টেনে নিত। সেই টানই তাঁকে ফটোগ্রাফির পথে নিয়ে যায়। শাহরিয়ার হোসাইন শান্ত বর্তমানে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জামালপুর সদরে।
১ ঘণ্টা আগে
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) গতকাল ৬ ডিসেম্বর আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী আয়োজন ‘ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
২ ঘণ্টা আগে