Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক তৈরিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এক যুগ পূর্ণ হতে চলেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; বরং বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি কেন্দ্রীয় কাঠামোয় এনে নৈতিকতা, জ্ঞান ও গবেষণার পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াস। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এই প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক ও টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে নিরলস কাজ করছেন। তিনি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. আশিকুর রহমান

মো. আশিকুর রহমান

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা অনেক প্রত্যাশা আর স্বপ্ন নিয়ে শুরু হয়েছিল। আপনি প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে এসেছেন প্রায় ১০ মাস হলো। কীভাবে দেখছেন।

নিঃসন্দেহে আমার জীবনের অন্যতম বড় দায়িত্ব। ২০১৩ সালে যখন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাস হয়, তখনই স্পষ্ট হয়েছিল যে দেশের মানুষ; বিশেষ করে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা এ ধরনের একটি কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপেক্ষায় ছিলেন বহু বছর ধরে।

আমি ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দিই এবং সেদিন থেকে বিশ্বাস করি, এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়; বরং এটি জাতিগত ও ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষার একটি বড় দায়িত্ব।

এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে কী কী বড় পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করেন।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে স্বীকৃতিতে। আগে আলিয়া মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে একটি সুনির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় মানদণ্ড ছিল না। এখন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সেই মানদণ্ড স্থাপন করতে পারছে। দেশের প্রায় ১ হাজার ৫০০ আলিয়া মাদ্রাসা এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। এর মাধ্যমে আমরা পাঠ্যক্রম, পরীক্ষানীতি, সনদ প্রদান, গবেষণা এবং শিক্ষক উন্নয়নে এক অভিন্ন কাঠামো তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি ইসলামী শিক্ষা এবং আরবি ভাষার আধুনিকায়নেও আমরা কাজ করছি। বৃহৎ পরিসরে

গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী দিনে অনেক জার্নাল বের করার ইচ্ছা রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু প্রবন্ধ জমা হয়েছে। দেশ-বিদেশের ভালো মানের অনেক গবেষক আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। এমফিল-পিএইচডি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এ জন্য নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আপনি বলেছিলেন, আলিয়া মাদ্রাসাশিক্ষা একটি আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা। এ বিষয়ে একটু বিস্তারিত বলবেন।

অবশ্যই। আলিয়া মাদ্রাসাশিক্ষা শুধু ধর্মীয় জ্ঞান নয়, এতে যুক্ত আছে বিজ্ঞান, সাহিত্য, সমাজবিজ্ঞানসহ নানা বিষয়। একে অনেকে ভুল করে কেবল ধর্মীয় শিক্ষা ভাবেন, অথচ এখানে শিক্ষার্থীরা আল-কোরআনের পাশাপাশি গণিত, ইংরেজি, তথ্যপ্রযুক্তি পর্যন্ত শিখছেন। এটি একধরনের ইন্টিগ্রেটেড শিক্ষাব্যবস্থা, যেখানে ধর্ম ও দুনিয়ার জ্ঞান একসঙ্গে চলতে পারে। যাঁরা যুগে যুগে আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন, তাঁরা আমাদের সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থায় অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। আমরা তাঁদের গর্বের সঙ্গে স্মরণ করি।

নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে আলিয়া শিক্ষা কতটা কার্যকর।

মানবজীবনের পরিপূর্ণ বিকাশে কেবল দক্ষতা নয়, দরকার নৈতিক ভিত্তিও। দুর্নীতি, অসহিষ্ণুতা, মিথ্যাচার—এসব তখনই কমবে, যখন আমাদের শিক্ষার ভেতর নৈতিকতা ও আদর্শ থাকবে। এই জায়গায় আলিয়া মাদ্রাসাশিক্ষা অপরিহার্য। কারণ, এটি একজন শিক্ষার্থীকে আল্লাহভীতি, মানবিকতা, দায়িত্ববোধ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সেই মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক তৈরিতে বিশেষভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় চ্যালেঞ্জগুলো কী।

প্রথমত, আমাদের শুরুর দিকে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ছিল, যা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছি। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাক্রম আধুনিকীকরণ এবং তা বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন, যা আমরা প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তৈরি করছি। তৃতীয়ত, সমাজের কিছু অংশে এখনো আলিয়া মাদ্রাসাশিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। তাই আমাদের একটা বড় দায়িত্ব হলো, সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং আলিয়া শিক্ষার সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরা।

আপনার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী।

আমাদের লক্ষ্য খুব পরিষ্কার—আন্তর্জাতিক মানের ইসলামি গবেষণাকেন্দ্র গড়ে তোলা, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের জন্য একটি বিশ্বমানের একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করা। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঘাটারচর ও মধ্যেরচর এলাকায় ১৭ একর জমিতে নির্মিত হবে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস। ৩ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত হবে আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট। সৌদি আরবের অর্থায়নে এই ইনস্টিটিউট নির্মিত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় একদিন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গর্ব হয়ে দাঁড়াবে।

সবশেষে, আপনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে কী বার্তা দিতে চান।

আমি সবাইকে বলব, এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সবার। দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ নিয়ে আমরা যদি একতাবদ্ধ হই, তাহলে শুধু শিক্ষা নয়, পুরো সমাজেই পরিবর্তন আনতে পারব। ন্যায়ের পথে, সততার সঙ্গে, আল্লাহর প্রতি ভয় রেখে কাজ করলে কোনো বাধা আর বাধা থাকে না। আমাদের ইতিহাস গৌরবময়—এখন সময় এসেছে সেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনার।

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনাকেও ধন্যবাদ। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন, যেন সত্যিকারের আলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনে প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৪ দফা দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৪
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা চার প্যানেলেসহ স্বতন্ত্র পদপ্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপাচার্য বরাবর সম্মিলিতভাবে এ দাবি জানান তাঁরা। ‎

‎এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ ‎বলেন, ‘আমরা প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জকসু নির্বাচনকে ঘিরে সম্মিলিতভাবে চার দফা মৌখিক দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে সবগুলো পূরণ করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।’ ‎

‎সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমর্থিত মওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী গৌরব ভৌমিক বলেন, ‘আমরা যে দাবি জানিয়েছি, তা অবশ্যই পূরণ করা লাগবে—এটা আমাদের অধিকার।’ ‎

এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পরপরই ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন চালান তাঁরা। ‎

‎শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে আবারও সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়। সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ ‎

‎চার দফা দাবি হলো—জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সদস্য পদত্যাগ করতে পারবেন না। নির্বাচন শেষে যেসব সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন স্থগিতের পেছনে কোনো দলীয় বা রাজনৈতিক চাপ ছিল কি না, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: জকসু নির্বাচন পিছিয়ে ৬ জানুয়ারি

জবি প্রতিনিধি‎
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এই ভোট গ্রহণ সাত দিন পেছাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‎‎আজ ‎মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎

‎তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে আজ সকালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন উপাচার্য ড. মো. রেজাউল করিম। এতে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীরা তফসিল অনুযায়ী আজই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।

‎শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডাকা হয়।

সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫০
খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় এ দিন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জুনিয়র বৃত্তির বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষাটি আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শোক এবং বুধবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বুধবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ওই পরীক্ষা আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।’

পরীক্ষা স্থগিত ও নতুন তারিখ ঘোষণা দিয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলো বিজ্ঞপ্তি জারি করছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ভিত্তিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রোববার বাংলা, সোমবার ইংরেজি, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবারের বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৫ জানুয়ারি।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত বিষয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা হলে বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা হবে একসঙ্গে।

বৃত্তি পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ৪০০। বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ১০০, গণিতে ১০০, বিজ্ঞানে ৫০ এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষা হবে ৩ ঘণ্টা সময়ে।

এ পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ‘ট্যালেন্টপুল’ কোটায় ও ‘সাধারণ’ কোটায় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচন স্থগিত, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পর উপাচার্যের ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে এ উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

‎আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এদিন সকাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তবে ভোটের অনিশ্চয়তায় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন তাঁরা।

‎গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, জীবনের প্রথম ভোট দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে সেই সুযোগ আর হলো না। জানি না কবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এজন্যই বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

‎সমাজকর্ম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মায়িশা ফাহমিদা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে এক ধরনের ভিন্ন অনুভূতি কাজ করছিল। কিন্তু যা প্রশাসন করল, তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ভোট যেহেতু হবে না, তাই ক্যাম্পাসে থাকার আর কোনো মনমানসিকতা নেই এ কারণেই চলে যাচ্ছি। ‎

‎এর আগে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় জকসু নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। আজ সকাল সোয়া ৯টায় নির্বাচন স্থগিতের এ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে।

‎‎তবে এ ঘোষণার পর ভিসি ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেন প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিসি ভবন ঘেরাও করে নির্বাচন আদায়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত