Ajker Patrika

জনপ্রিয়তা না কৌশল—আলোচনায় ডাকসুতে শিবিরের বিজয়

সেলিনা আক্তার, ঢাকা
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ১২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতার পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। যে ডাকসুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলের ছাত্রসংগঠনের কখনো ঠাঁই হয়নি, সেই ডাকসুই এখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রায় দখলে চলে গেল। ভিপিসহ বেশির ভাগ পদে জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠনটি। অন্যদিকে নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পরের নির্বাচনে ডাকসুতে ছাত্রদল জয়ী হয়েছিল, বিএনপির সেই ছাত্রসংগঠনটির এবার ভরাডুবি হলো।

৯ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে ডাকসুর ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতে জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে কেউই জয় পায়নি। এ ফল নিয়েই এখন চলছে আলোচনা। কেউ কেউ শিবিরের এমন ফল নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেও অনেকেই এমনটা আন্দাজ করেছিলেন।

তাঁরা বলছেন, রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস থেকে না হলেও ক্যাম্পাসে দখলদারত্বের অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিকল্প হিসেবে শিবিরের প্রার্থীদের প্রতি অনেকে আস্থা রাখতে চেয়েছেন। নিয়মিত কৌশল ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে শিবির দৃশ্যত শিক্ষার্থীদের বড় অংশকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘ভালো বোঝাপড়া’ থাকায় তারা বড় বাড়তি সুবিধা পেয়েছে।

অন্যদিকে ছাত্রদলের ভরাডুবির পেছনে দেরিতে প্যানেল ঘোষণা, প্রচারে নতুনত্বের অভাব, সমন্বয়হীনতা ও কৌশলের অভাব দেখছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকে। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে হল পর্যায়ে কমিটি করাকে কার‍ণ হিসেবে দেখাতে চান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকসু নির্বাচন আদৌ হবে কি না বা কবে হবে, সেই পালস ছাত্রদল ঠিকমতো ধরতে পারেনি। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের বোঝাপড়া ভালো থাকায় তারা সব তথ্য আগেভাগে জানতে পেরেছে এবং সেভাবেই তাদের পরিকল্পনা সাজানোর সুযোগ পেয়েছে। এর ফলে ডাকসু নির্বাচনে আগেই ছাত্রদল থেকে এগিয়ে ছিল শিবির।

ছাত্রদলের ভরাডুবির কারণ সম্পর্কে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন মিয়া বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রদল শুধু ক্রেডিট নেওয়ার রাজনীতি করেছে। বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে যে চাঁদাবাজি ও সহিংসতার অভিযোগ উঠছে, তার প্রভাব পড়েছে ডাকসু নির্বাচনে।

মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম মনে করেন, হল পর্যায়ে ছাত্রদলের সংগঠন গোছানোর তৎপরতাকে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেয়নি। তাঁর মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে হল পর্যায়ে রাজনীতি বন্ধে জনমত তৈরি হয়েছে।

নাইম ইসলাম বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর আমরা চেয়েছিলাম, হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকুক। কিন্তু সরকার পতনের পর ছাত্রদল হল কমিটি দিয়ে আবার দখলদারত্বের রাজনীতি শুরু করে। তাদের কর্মীরা ভিন্নমতাবলম্বীদের হুমকি দেয়।’

তবে ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ‘তড়িঘড়ি’ করে ডাকসু নির্বাচনের আয়োজনকে দায়ী করেছেন। আজকের পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ‘পূর্ণ প্রস্তুতি’ ছাত্রদলের ছিল না। নির্বাচনে যাওয়া নিয়েও ‘সিদ্ধান্তহীনতায়’ ছিলেন তাঁরা। তা ছাড়া ‘ছাত্রদলকে হারাতে কারসাজি’ পরাজয়ের অন্যতম কারণ।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণায় শিবির থেকে বহুগুণে পিছিয়ে ছিল ছাত্রদল। অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর ছাত্রদলের ‌‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস’ এবং গত এক বছরে ক্যাম্পাসে সংগঠনটির সার্বিক অবস্থান নির্বাচনে তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

ডাকসুতে শিবিরের উত্থানের কারণ

স্বাধীনতার পর ডাকসু নির্বাচনে যেখানে কখনো কোনো প্যানেল নিয়েই দাঁড়াতে পারেনি, সেখানে এবার পূর্ণ প্যানেল ঘোষণা করে ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির। এর জন্য প্যানেলে বৈচিত্র্য রাখা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক মাত্রায় প্রচার কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার কৌশলকে তাদের জয়ের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা।

তাঁদের মতে, এসব কৌশলের কারণে ভোটের মাঠে আর সব সংগঠন থেকে এগিয়ে ছিল ছাত্রশিবির।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসে শিবিরের অ্যাপ্রোচ আমাদের কাছে ভালো লেগেছে। তারা হলগুলোতে পানির ফিল্টার বসিয়েছে, টিএসসিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লিখন প্রতিযোগিতা, সায়েন্স ফেস্ট করেছে; যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নজর কাড়ে। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর ছাত্রদলের এমন কোনো কার্যক্রমই চোখে পড়েনি।’

রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী রৌদমিলা ইসলাম বলেন, ‘শিবির ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রেখেছে। সবার জন্য কাজ করেছে। আমরা সচরাচর দেখেছি, বিরোধীপক্ষকে দমনের চেষ্টা রাজনীতির অংশ। কিন্তু শিবির যখন প্রতিরোধ পর্ষদের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসুর খোঁজ নিতে হাসপাতালে গেল, তখন তা একধরনের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহম্মেদ বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা প্যারাডাইম শিফট হয়েছে। দায় চাপানোর রাজনীতি এখন আর আমরা চাই না। শিবিরকে ইশতেহার দেখে নয়; বরং দায় না চাপানোর আচরণ দেখে অনেকে ভোট দিয়েছে।’

সামানিয়া জান্নাতি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মনে ভয় ছিল, ছাত্রদল ছাত্রলীগের মতো ক্যাম্পাসে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করবে কি না। সেই ভয় থেকেই বিকল্প হিসেবে আমরা শিবিরকে ভোট দিয়েছি। গত এক বছরে ছাত্রদলের কর্মকাণ্ডও খুব সমালোচিত ছিল।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, গত দুই দশকে ধারাবাহিকভাবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। ধীরে ধীরে এই হার বাড়ছে। ঢাবির বেশির ভাগ মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর ভোট পেয়েছে শিবির।

জয় পেতে কী করেছে শিবির

গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরু করে শিবির। শুরুতেই তারা পরিকল্পনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সাংগঠনিকভাবে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বিভিন্ন হলে পানির ফিল্টার বসানো, হলের গার্ড রুমে সাইকেলের পাম্পার রাখা, বিনা মূল্যে জরুরি ওষুধ সরবরাহ, কোরবানির ঈদে হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের জন্য কোরবানি ফেস্টের আয়োজন।

এর বাইরে কোচিং সেন্টার, ছাত্রদের মেস ও হলে হলে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালায় শিবির। এ ছাড়া ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে অনলাইনেও প্রচার চালায় তারা।

এ ছাড়া আগের রেওয়াজ থেকে সরে এসে ডাকসুতে নিজেদের প্যানেলে নারী ও অমুসলিম শিক্ষার্থীকে প্রার্থী হিসেবে রাখায় অনেকের কাছে তাদের প্যানেলকে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। এ ছাড়া প্যানেলের নারী প্রার্থীদের মিডিয়ার সামনে আনাকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন অনেকে।

ডাকসুতে শিবির প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্যপদে নির্বাচিত মো. মিফতাহুল হোসাইন আল মারুফ বলেন, ‌‘আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করেছি। হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করেছি, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছি। অভ্যুত্থানের আগেও এসব কাজ করেছি। কিন্তু আগের সরকারের আমলে প্রকাশ্যে এসব করতে পারিনি। আমরা কোনো ট্যাগিংয়ের রাজনীতি করিনি। আমাদের আচার-আচরণ শিক্ষার্থীরা জানে। হয়তো এ জন্যই আমাদের বিকল্প হিসেবে দেখেছে।’

কৌশলগত পরিকল্পনাই শিবিরের বড় জয়ের মূল কারণ বলে মনে করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ঢাবিতে শিবিরের দীর্ঘদিনের গ্রাউন্ড আছে। তারা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল কাজে লাগিয়েছে। হলের সমস্যা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে সরাসরি অংশ নিয়েছে। কাজ করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে; যা শিক্ষার্থীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, শিবিরকে বেছে নেওয়ার পেছনে ছাত্রদের মন জয় করার বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কথাবার্তায় সাবলীলতা আছে, স্বাভাবিকতা আছে, কোনো হিরোইজম নেই। তাদের যোগাযোগের দক্ষতা, ইশতেহার ও কথার সঙ্গে কাজের মিল ছাত্ররা হয়তো ভালোভাবে নিয়েছেন। আবার শিবির বারবার জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা টেনে আনতে পেরেছে। এসব বিষয়ে ছাত্রদল বা অন্য সংগঠনগুলো পিছিয়ে ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত