Ajker Patrika

তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি

নাজমুল ইসলাম
তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি

সারাক্ষণ টই টই, সারাক্ষণ চঞ্চল। এই খেলে তো, ওই প্রশ্ন ছোড়ে। আর এত এত প্রশ্ন যে, মাথা ঘুরে ওঠে। এ তো যেকোনো শিশুরই বৈশিষ্ট্য। শিশুমাত্রই চঞ্চল, একজোড়া ঝকঝকে চোখ। শিশুদের এই চাঞ্চল্য নিয়ে অভিভাবকদের প্রায়ই কপাল কুঁচকে চিন্তা করতে দেখা যায়। চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষকদের কপালেও। কীভাবে তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়—সে ভাবনাই দখল নিয়ে নেয় অধিকাংশের মনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর চেপে বসে এক জগদ্দল পাথর। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দময়। 

আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে লীলা মজুমদার তক সাহিত্যিকেরা শিশু শিক্ষা নিয়ে বিস্তর লিখেছেন। নিজেদের সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তাঁরা শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার নানা উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। আজও শিক্ষাবিদেরা বারবার বলছেন, শিক্ষা হতে হবে আনন্দময়। কিন্তু বিশেষত এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুদের জন্য আনন্দময় শিক্ষার ব্যবস্থা এখনো অধরাই থেকে গেছে। শিশুদের এই আনন্দময় শিক্ষার প্রসঙ্গ নিয়েই চমৎকার একটি শিশুপাঠ্য বই তোত্তোচান। 

মূল বইটি জাপানি ভাষায় লিখিত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ–Totto-Chan: The little girl at the window; অনুবাদক ডরোথি ব্রিটন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৈতী রহমান। এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো একজন ভালো শিক্ষকের প্রভাবে শিশুদের বদলে যাওয়া জীবন। সে জীবন আনন্দময়, মধুর। 

অনুবাদক চৈতী রহমান বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর শিক্ষাজীবন হবার কথা আনন্দময় ও ভয়ভীতিহীন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে দেশভেদে শিশুর ইশকুল–ভাগ্য ভিন্নরকম। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পরপরই পাচ্ছে মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসিখুশি আনন্দ উৎসব আর নিরাপত্তা।...দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ সব ইশকুলে যাচ্ছে কেবলমাত্র এইজন্য যে শিক্ষা তাদের একটা চাকরি জুটিয়ে দেবে।’ 

এই আনন্দ আর নিরানন্দের শিক্ষার মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা কেবল শিশুরাই অনুভব করতে পারে। ছোট শিশু তোত্তোচানের কাছে একটা বিদ্যালয় ছিল আনন্দের আধার, কিন্তু অন্যটি তেমন ছিল না। বইয়ের মূল চরিত্র তোত্তোচান আসলে বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। একটি বিদ্যালয় তার শৈশবকে কীভাবে পাল্টে দিয়েছে, তাই বর্ণিত হয়েছে এই বইয়ে। আনন্দমুখর বিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়েই বইটি লিখেছেন। সেই স্মৃতি তাঁর কাছে এখনো জীবন্ত। 

বইয়ে ঢোকার আগে একটু তাকানো যাক তেৎসুকো কুরোয়ানাগির দিকে। তেৎসুকো কুরোয়ানাগির জন্ম টোকিওতে ১৯৩৩ সালে। অপেরা সংগীতের পাঠ নিলেও পরে হয়ে ওঠেন জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। একাধারে সংগীত, অভিনয় ও উপস্থাপনায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে জাপানের প্রথম নিয়মিত টক শো উপস্থাপনা করতে শুরু করেন, যা ছিল দৈনিক। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও জনপ্রিয়। তোত্তোচান বলা যায় তেৎসুকোর শৈশবের এক সাহিত্যিক নির্মাণ। 

বইয়ের প্রথম দিকে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণিতে তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এডিসনের হাতে একটা চিঠি দিয়ে তার মাকে দিতে বললেন। তার মা চিঠি পড়লেন। চিঠি পড়ে তাঁর চোখ বেয়ে পানি পড়লে লাগল। চিঠিতে লেখা ছিল—‘আপনার ছেলে স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন, আমরা আপনার ছেলেকে পড়াতে পারব না। তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ 

কিন্তু টমাস আলভা এডিসনের মা শুনিয়ে শুনিয়ে চিঠি পড়লেন এভাবে—‘আপনার ছেলে খুবই মেধাবী। তাকে ভালোভাবে পড়ানোর মতো শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। তাকে ভালো কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন বলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া সেই এডিসন পরে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী হন। পরিণত বয়সে একদিন টমাস আলভা এডিসন সেই চিঠিটি দেখতে পান; তখন তাঁর মা জীবিত ছিলেন না। চিঠি খুলতেই তাঁর চোখে জল আসে। তখন টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, ‘আমার এই সাফল্যের পেছনে আছে আমার মায়ের অবদান।’ 

একই কথা বলেছেন তোত্তোচান বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল, সে কথা তার মা তখন বলেনি। বলেছেন, তার বয়স কুড়ি অতিক্রম করার পর। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে লেখক তেৎসুকো লিখেছেন, ‘মা যদি বহিষ্কারের পরপরই সেই ছোট্ট আমাকে বলতেন, “এখন কী হবে? এই স্কুল থেকে তো তোমাকে বহিষ্কার করল। অন্য স্কুল থেকেও যদি করে তখন কী হবে? আর কোনো স্কুল তোমাকে ভর্তি নেবে না। ” তাহলে আমি এত আনন্দ নিয়ে স্কুলের জ্যান্ত গাছের গুঁড়িঅলা ফটক পেরোতে পারতাম না। আমি ভীরু, মার খাওয়া জন্তুর মতন ভয়ে ভয়ে হাঁটতাম। আমি রেলগাড়ি ক্লাসঘর দেখে উচ্ছ্বসিত হতাম না। কোনো কিছুই আমাকে আনন্দ দিত না। আমি হয়ে যেতাম নিষ্প্রাণ, হীনম্মন্য, নির্জীব। আমার মা কত বুদ্ধিমান যে, তিনি তার শিশুর আনন্দময় শৈশব নষ্ট করতে চাননি। এমন মা আমাকে মানুষ করেছেন, তা আমার সৌভাগ্যই বটে!’ 

তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে কী কী বলতে চাও তুমি? যা কিছু বলতে ইচ্ছা হয় আমাকে বলতে পার।’ এই প্রশ্নের উত্তরে তোত্তোচান চার ঘণ্টা কথা বলেছিল। তার কাছে এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তার কথা এত মনোযোগ দিয়ে আর কেউ কখনো শোনেনি। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হলে তাদের মনোজগৎ বুঝতে হয়। তাদের আগ্রহের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হয়। তোমার রোল কত, পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে—এসব প্রশ্ন শিশুদের কাছে অবান্তর। এসব অবান্তর প্রশ্ন করা বয়স্ক প্রাণীগুলো শিশুদের জীবন দুঃসহ করে তোলে। আর তোত্তোচানের এই প্রধান শিক্ষকের অবস্থান ছিল বিপরীত মেরুতে। তাই তো তোত্তোচানসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিশুরা তাদের প্রধান শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করত। 

প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের দিকেও নজর রাখেন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আমিষ ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের এই মেনু অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। সেটা তিনি করেছিলেন সুন্দর একটি প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। হলঘরে বসে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার সময় সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন—‘সবাই সমুদ্দুরের কিছু আর পাহাড় থেকে কিছু এনেছ?’ সবাই উত্তরে বলে, ‘এনেছি’। তোত্তোচানের এই অভিজ্ঞতা হওয়ার পর সেও টিফিনে সমুদ্র আর পাহাড়ের কিছু আনার জন্য অস্থির হয়ে যায়। এখানে সমুদ্র ও পাহাড়ের কিছু বলতে সমুদ্র ও পাহাড়ে প্রাপ্ত মানুষের খাদ্যদ্রব্যকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ শিশু শাক–সবজি খেতে চায় না। তার একটি কারণ হতে পারে হয়তো শিশুদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি না, যেমনটা তোত্তোচানের প্রধান শিক্ষক পেরেছিলেন। 

পুথিগত বিদ্যা যদি বাস্তবে প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে সেই বিদ্যার মূল্য কোথায়? তোত্তোচানদের এই নতুন বিদ্যালয় তাদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিয়েছিল। বিদ্যালয় থেকে কখনো তারা চলে যেত নদীর পাড়ে, কখনো সরষে খেতে। শিক্ষিকা (বিদ্যালয়ের অন্য নারী শিক্ষক) তাদের পুংকেশর ও গর্ভকেশরের গল্প বলতেন। নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হতো। এর আনন্দ শিশুদের কাছে নিরবধি সমুদ্রের মতো। শিশুদের মাঠে নিয়ে শেখানো হতো জমি চাষের কৌশল। 

প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তেও উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য রেলের নতুন একটা কামরায় পাঠাগার করলেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছামতো যেকোনো বই পড়তে পারত। তিনি শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘যখন ইচ্ছা তোমরা এখানে এসে বই পড়তে পারবে। বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। তবে পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তার এ কথা খুব উত্তেজনা তৈরি করছিল শিশুদের মধ্যে। শিশুরা তখনই বই পড়ার জন্য চেঁচাতে শুরু করল। 

অনেক শিশু জন্মের সময় কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলি। এসব শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়, যদি তার চারপাশের মানুষ তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। আবার এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিশু বড় প্রকৌশলী হতে পারে, যদি তাকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কেউ থাকে, পরিবেশ যদি তার অনুকূল হয়। যেমনটা হয়েছিলেন আকিরা তাকাহাশি। তিনি একজন বড় মাপের প্রকৌশলী হয়েছিলেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে কোবাইয়াশি মহাশয় এমন এক খেলার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা আকিরা তাকাহাশির জন্য অনুকূল ছিল। সেই খেলায় তাকাহাশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এটা তাকাহাশির জন্য কতটা আনন্দের ছিল, তা নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের এই উৎসাহ, উদ্দীপনাই হয়তো তাকাহাশিকে বিশাল স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করেছিল। 

বইয়ের শেষ হয় কিছুটা বিষাদের মধ্য দিয়ে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অজস্র বোমার আঘাতে তাদের সেই আনন্দমুখর স্কুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে অবশ্য কোবাইয়াশি মহাশয় সেই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। তবে সেই কাজ তিনি পুরোপুরি সমাপ্ত করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। 

তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
ইংরেজি থেকে অনুবাদক: চৈতী রহমান
মূল লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
প্রকাশনী: দুন্দুভি
বইয়ের মূল্য: ২৫০ টাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৪
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান শাখার প্রথম বর্ষের আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধা, শরিফ ওসমান হাদি ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন করা হবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাহসী জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি এবং ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সকল জুলাই যোদ্ধা ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর শনিবার অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র‍্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। যা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষার্থীসহ আবশ্যিক ও নৈর্বাচনিক বিষয় ও বিষয়গুলো এক থেকে চার বিষয়ে ২০২৫ সালে অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিষয় ও বিষয়গুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবরে সাদা কাগজে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে।

আরও বলা হয়, বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আরও বলা হয়, বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি (চতুর্থ বিষয় ছাড়া) ২ হাজার ৪৩৫ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জ হিসেবে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে।কোনো শিক্ষার্থীর নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিইউবিটিতে চতুর্থবারের মতো ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট’ আয়োজিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) স্থায়ী ক্যাম্পাসের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা রিজিওনাল কনটেস্ট ২০২৫’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন পোর্টাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার সাংবাদিকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যা ‘প্রোগ্রামিংয়ের অলিম্পিক’ খ্যাত—আইসিপিসির এই রিজিওনাল পর্বটি ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বিইউবিটি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার গৌরব অর্জন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিইউবিটির উপাচার্য ড. এ বি এম শওকত আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের এবং এই আয়োজনের গর্বিত স্পনসরদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য হলো সারা দেশ থেকে বাংলাদেশের সেরা প্রোগ্রামারদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেওয়া।’

শওকত আলী আরও জানান, এবারের আয়োজনে সারা বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। মোট ৩১৩টি টিমের ৯৩৯ জন মেধাবী প্রোগ্রামার এই চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন, যা বাংলাদেশে আইসিপিসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য মো. শামসুল হুদা এফসিএ।

এ ছাড়া সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তুলে ধরেন আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর আরসিডি (RCD) এবং বিইউবিটির সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান এবং আইসিপিসি এশিয়া ঢাকা সাইট ২০২৫-এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ও এনএসইউর ইসিই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল লায়েস এম এস হক।

এ সময় মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস বিচারক (২০০৩-২০১৮) শাহরিয়ার মঞ্জুর এবং বিইউবিটির প্রকৌশল ও ফলিতবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউবিটির সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: তিন দিনেও প্রকাশ করা হয়নি ব্যালট নম্বর, প্রচারে নেমে বিপাকে প্রার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের ‎আসন্ন নির্বাচনে ক্যাম্পাসে প্রচার শুরু হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে। তফসিল অনুযায়ী টানা ১৩ দিন চলবে এই প্রচার। তবে প্রচার শুরুর পর তিন দিন পার হলেও প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা।

‎‎তফসিল সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর। প্রচারণার ১৩ দিন সময়ের ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচারণায় বাধার অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা।

‎‎শিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেল’ থেকে ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যালট নম্বর না থাকায় প্রচার ও পেপার ছাপাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নাম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

‎ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল’ থেকে জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ব্যালট নম্বর প্রকাশ না করায় প্রচার ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে নির্বাচন কমিশনের অদক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রমাণিত হয়। দ্রুত ব্যালট নম্বর প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

‎স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা দায়িত্বহীন। প্রার্থিতা ও আচরণবিধি-সংক্রান্ত অভিযোগে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি ব্যালট নম্বর না দেওয়ায় প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা কোনো পক্ষকে সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

‎‎এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। প্রার্থীদের নাম সংশোধনের জন্য আমাদের কাছে আবেদন এসেছে অনেকগুলো। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নাম সংশোধন বা নিকনেম রাখার জন্য কাজ করছি। ফলে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’

‎এর আগে ৪ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেই তফসিল অনুযায়ী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন হয়। নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, ১৪ ডিসেম্বর প্রত্যাহারকৃত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর, ভোট গণনা ৩০ ডিসেম্বর (ভোট গ্রহণ শেষে) এবং ফলাফল ঘোষণা ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত