নাজমুল ইসলাম

সারাক্ষণ টই টই, সারাক্ষণ চঞ্চল। এই খেলে তো, ওই প্রশ্ন ছোড়ে। আর এত এত প্রশ্ন যে, মাথা ঘুরে ওঠে। এ তো যেকোনো শিশুরই বৈশিষ্ট্য। শিশুমাত্রই চঞ্চল, একজোড়া ঝকঝকে চোখ। শিশুদের এই চাঞ্চল্য নিয়ে অভিভাবকদের প্রায়ই কপাল কুঁচকে চিন্তা করতে দেখা যায়। চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষকদের কপালেও। কীভাবে তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়—সে ভাবনাই দখল নিয়ে নেয় অধিকাংশের মনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর চেপে বসে এক জগদ্দল পাথর। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দময়।
আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে লীলা মজুমদার তক সাহিত্যিকেরা শিশু শিক্ষা নিয়ে বিস্তর লিখেছেন। নিজেদের সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তাঁরা শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার নানা উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। আজও শিক্ষাবিদেরা বারবার বলছেন, শিক্ষা হতে হবে আনন্দময়। কিন্তু বিশেষত এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুদের জন্য আনন্দময় শিক্ষার ব্যবস্থা এখনো অধরাই থেকে গেছে। শিশুদের এই আনন্দময় শিক্ষার প্রসঙ্গ নিয়েই চমৎকার একটি শিশুপাঠ্য বই তোত্তোচান।
মূল বইটি জাপানি ভাষায় লিখিত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ–Totto-Chan: The little girl at the window; অনুবাদক ডরোথি ব্রিটন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৈতী রহমান। এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো একজন ভালো শিক্ষকের প্রভাবে শিশুদের বদলে যাওয়া জীবন। সে জীবন আনন্দময়, মধুর।
অনুবাদক চৈতী রহমান বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর শিক্ষাজীবন হবার কথা আনন্দময় ও ভয়ভীতিহীন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে দেশভেদে শিশুর ইশকুল–ভাগ্য ভিন্নরকম। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পরপরই পাচ্ছে মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসিখুশি আনন্দ উৎসব আর নিরাপত্তা।...দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ সব ইশকুলে যাচ্ছে কেবলমাত্র এইজন্য যে শিক্ষা তাদের একটা চাকরি জুটিয়ে দেবে।’
এই আনন্দ আর নিরানন্দের শিক্ষার মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা কেবল শিশুরাই অনুভব করতে পারে। ছোট শিশু তোত্তোচানের কাছে একটা বিদ্যালয় ছিল আনন্দের আধার, কিন্তু অন্যটি তেমন ছিল না। বইয়ের মূল চরিত্র তোত্তোচান আসলে বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। একটি বিদ্যালয় তার শৈশবকে কীভাবে পাল্টে দিয়েছে, তাই বর্ণিত হয়েছে এই বইয়ে। আনন্দমুখর বিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়েই বইটি লিখেছেন। সেই স্মৃতি তাঁর কাছে এখনো জীবন্ত।
বইয়ে ঢোকার আগে একটু তাকানো যাক তেৎসুকো কুরোয়ানাগির দিকে। তেৎসুকো কুরোয়ানাগির জন্ম টোকিওতে ১৯৩৩ সালে। অপেরা সংগীতের পাঠ নিলেও পরে হয়ে ওঠেন জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। একাধারে সংগীত, অভিনয় ও উপস্থাপনায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে জাপানের প্রথম নিয়মিত টক শো উপস্থাপনা করতে শুরু করেন, যা ছিল দৈনিক। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও জনপ্রিয়। তোত্তোচান বলা যায় তেৎসুকোর শৈশবের এক সাহিত্যিক নির্মাণ।
বইয়ের প্রথম দিকে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণিতে তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এডিসনের হাতে একটা চিঠি দিয়ে তার মাকে দিতে বললেন। তার মা চিঠি পড়লেন। চিঠি পড়ে তাঁর চোখ বেয়ে পানি পড়লে লাগল। চিঠিতে লেখা ছিল—‘আপনার ছেলে স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন, আমরা আপনার ছেলেকে পড়াতে পারব না। তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’
কিন্তু টমাস আলভা এডিসনের মা শুনিয়ে শুনিয়ে চিঠি পড়লেন এভাবে—‘আপনার ছেলে খুবই মেধাবী। তাকে ভালোভাবে পড়ানোর মতো শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। তাকে ভালো কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন বলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া সেই এডিসন পরে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী হন। পরিণত বয়সে একদিন টমাস আলভা এডিসন সেই চিঠিটি দেখতে পান; তখন তাঁর মা জীবিত ছিলেন না। চিঠি খুলতেই তাঁর চোখে জল আসে। তখন টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, ‘আমার এই সাফল্যের পেছনে আছে আমার মায়ের অবদান।’
একই কথা বলেছেন তোত্তোচান বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল, সে কথা তার মা তখন বলেনি। বলেছেন, তার বয়স কুড়ি অতিক্রম করার পর। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে লেখক তেৎসুকো লিখেছেন, ‘মা যদি বহিষ্কারের পরপরই সেই ছোট্ট আমাকে বলতেন, “এখন কী হবে? এই স্কুল থেকে তো তোমাকে বহিষ্কার করল। অন্য স্কুল থেকেও যদি করে তখন কী হবে? আর কোনো স্কুল তোমাকে ভর্তি নেবে না। ” তাহলে আমি এত আনন্দ নিয়ে স্কুলের জ্যান্ত গাছের গুঁড়িঅলা ফটক পেরোতে পারতাম না। আমি ভীরু, মার খাওয়া জন্তুর মতন ভয়ে ভয়ে হাঁটতাম। আমি রেলগাড়ি ক্লাসঘর দেখে উচ্ছ্বসিত হতাম না। কোনো কিছুই আমাকে আনন্দ দিত না। আমি হয়ে যেতাম নিষ্প্রাণ, হীনম্মন্য, নির্জীব। আমার মা কত বুদ্ধিমান যে, তিনি তার শিশুর আনন্দময় শৈশব নষ্ট করতে চাননি। এমন মা আমাকে মানুষ করেছেন, তা আমার সৌভাগ্যই বটে!’
তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে কী কী বলতে চাও তুমি? যা কিছু বলতে ইচ্ছা হয় আমাকে বলতে পার।’ এই প্রশ্নের উত্তরে তোত্তোচান চার ঘণ্টা কথা বলেছিল। তার কাছে এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তার কথা এত মনোযোগ দিয়ে আর কেউ কখনো শোনেনি। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হলে তাদের মনোজগৎ বুঝতে হয়। তাদের আগ্রহের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হয়। তোমার রোল কত, পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে—এসব প্রশ্ন শিশুদের কাছে অবান্তর। এসব অবান্তর প্রশ্ন করা বয়স্ক প্রাণীগুলো শিশুদের জীবন দুঃসহ করে তোলে। আর তোত্তোচানের এই প্রধান শিক্ষকের অবস্থান ছিল বিপরীত মেরুতে। তাই তো তোত্তোচানসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিশুরা তাদের প্রধান শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করত।
প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের দিকেও নজর রাখেন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আমিষ ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের এই মেনু অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। সেটা তিনি করেছিলেন সুন্দর একটি প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। হলঘরে বসে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার সময় সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন—‘সবাই সমুদ্দুরের কিছু আর পাহাড় থেকে কিছু এনেছ?’ সবাই উত্তরে বলে, ‘এনেছি’। তোত্তোচানের এই অভিজ্ঞতা হওয়ার পর সেও টিফিনে সমুদ্র আর পাহাড়ের কিছু আনার জন্য অস্থির হয়ে যায়। এখানে সমুদ্র ও পাহাড়ের কিছু বলতে সমুদ্র ও পাহাড়ে প্রাপ্ত মানুষের খাদ্যদ্রব্যকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ শিশু শাক–সবজি খেতে চায় না। তার একটি কারণ হতে পারে হয়তো শিশুদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি না, যেমনটা তোত্তোচানের প্রধান শিক্ষক পেরেছিলেন।
পুথিগত বিদ্যা যদি বাস্তবে প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে সেই বিদ্যার মূল্য কোথায়? তোত্তোচানদের এই নতুন বিদ্যালয় তাদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিয়েছিল। বিদ্যালয় থেকে কখনো তারা চলে যেত নদীর পাড়ে, কখনো সরষে খেতে। শিক্ষিকা (বিদ্যালয়ের অন্য নারী শিক্ষক) তাদের পুংকেশর ও গর্ভকেশরের গল্প বলতেন। নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হতো। এর আনন্দ শিশুদের কাছে নিরবধি সমুদ্রের মতো। শিশুদের মাঠে নিয়ে শেখানো হতো জমি চাষের কৌশল।
প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তেও উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য রেলের নতুন একটা কামরায় পাঠাগার করলেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছামতো যেকোনো বই পড়তে পারত। তিনি শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘যখন ইচ্ছা তোমরা এখানে এসে বই পড়তে পারবে। বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। তবে পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তার এ কথা খুব উত্তেজনা তৈরি করছিল শিশুদের মধ্যে। শিশুরা তখনই বই পড়ার জন্য চেঁচাতে শুরু করল।
অনেক শিশু জন্মের সময় কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলি। এসব শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়, যদি তার চারপাশের মানুষ তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। আবার এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিশু বড় প্রকৌশলী হতে পারে, যদি তাকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কেউ থাকে, পরিবেশ যদি তার অনুকূল হয়। যেমনটা হয়েছিলেন আকিরা তাকাহাশি। তিনি একজন বড় মাপের প্রকৌশলী হয়েছিলেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে কোবাইয়াশি মহাশয় এমন এক খেলার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা আকিরা তাকাহাশির জন্য অনুকূল ছিল। সেই খেলায় তাকাহাশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এটা তাকাহাশির জন্য কতটা আনন্দের ছিল, তা নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের এই উৎসাহ, উদ্দীপনাই হয়তো তাকাহাশিকে বিশাল স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বইয়ের শেষ হয় কিছুটা বিষাদের মধ্য দিয়ে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অজস্র বোমার আঘাতে তাদের সেই আনন্দমুখর স্কুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে অবশ্য কোবাইয়াশি মহাশয় সেই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। তবে সেই কাজ তিনি পুরোপুরি সমাপ্ত করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
ইংরেজি থেকে অনুবাদক: চৈতী রহমান
মূল লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
প্রকাশনী: দুন্দুভি
বইয়ের মূল্য: ২৫০ টাকা

সারাক্ষণ টই টই, সারাক্ষণ চঞ্চল। এই খেলে তো, ওই প্রশ্ন ছোড়ে। আর এত এত প্রশ্ন যে, মাথা ঘুরে ওঠে। এ তো যেকোনো শিশুরই বৈশিষ্ট্য। শিশুমাত্রই চঞ্চল, একজোড়া ঝকঝকে চোখ। শিশুদের এই চাঞ্চল্য নিয়ে অভিভাবকদের প্রায়ই কপাল কুঁচকে চিন্তা করতে দেখা যায়। চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষকদের কপালেও। কীভাবে তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়—সে ভাবনাই দখল নিয়ে নেয় অধিকাংশের মনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর চেপে বসে এক জগদ্দল পাথর। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দময়।
আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে লীলা মজুমদার তক সাহিত্যিকেরা শিশু শিক্ষা নিয়ে বিস্তর লিখেছেন। নিজেদের সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তাঁরা শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার নানা উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। আজও শিক্ষাবিদেরা বারবার বলছেন, শিক্ষা হতে হবে আনন্দময়। কিন্তু বিশেষত এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুদের জন্য আনন্দময় শিক্ষার ব্যবস্থা এখনো অধরাই থেকে গেছে। শিশুদের এই আনন্দময় শিক্ষার প্রসঙ্গ নিয়েই চমৎকার একটি শিশুপাঠ্য বই তোত্তোচান।
মূল বইটি জাপানি ভাষায় লিখিত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ–Totto-Chan: The little girl at the window; অনুবাদক ডরোথি ব্রিটন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৈতী রহমান। এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো একজন ভালো শিক্ষকের প্রভাবে শিশুদের বদলে যাওয়া জীবন। সে জীবন আনন্দময়, মধুর।
অনুবাদক চৈতী রহমান বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর শিক্ষাজীবন হবার কথা আনন্দময় ও ভয়ভীতিহীন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে দেশভেদে শিশুর ইশকুল–ভাগ্য ভিন্নরকম। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পরপরই পাচ্ছে মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসিখুশি আনন্দ উৎসব আর নিরাপত্তা।...দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ সব ইশকুলে যাচ্ছে কেবলমাত্র এইজন্য যে শিক্ষা তাদের একটা চাকরি জুটিয়ে দেবে।’
এই আনন্দ আর নিরানন্দের শিক্ষার মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা কেবল শিশুরাই অনুভব করতে পারে। ছোট শিশু তোত্তোচানের কাছে একটা বিদ্যালয় ছিল আনন্দের আধার, কিন্তু অন্যটি তেমন ছিল না। বইয়ের মূল চরিত্র তোত্তোচান আসলে বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। একটি বিদ্যালয় তার শৈশবকে কীভাবে পাল্টে দিয়েছে, তাই বর্ণিত হয়েছে এই বইয়ে। আনন্দমুখর বিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়েই বইটি লিখেছেন। সেই স্মৃতি তাঁর কাছে এখনো জীবন্ত।
বইয়ে ঢোকার আগে একটু তাকানো যাক তেৎসুকো কুরোয়ানাগির দিকে। তেৎসুকো কুরোয়ানাগির জন্ম টোকিওতে ১৯৩৩ সালে। অপেরা সংগীতের পাঠ নিলেও পরে হয়ে ওঠেন জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। একাধারে সংগীত, অভিনয় ও উপস্থাপনায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে জাপানের প্রথম নিয়মিত টক শো উপস্থাপনা করতে শুরু করেন, যা ছিল দৈনিক। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও জনপ্রিয়। তোত্তোচান বলা যায় তেৎসুকোর শৈশবের এক সাহিত্যিক নির্মাণ।
বইয়ের প্রথম দিকে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণিতে তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এডিসনের হাতে একটা চিঠি দিয়ে তার মাকে দিতে বললেন। তার মা চিঠি পড়লেন। চিঠি পড়ে তাঁর চোখ বেয়ে পানি পড়লে লাগল। চিঠিতে লেখা ছিল—‘আপনার ছেলে স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন, আমরা আপনার ছেলেকে পড়াতে পারব না। তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’
কিন্তু টমাস আলভা এডিসনের মা শুনিয়ে শুনিয়ে চিঠি পড়লেন এভাবে—‘আপনার ছেলে খুবই মেধাবী। তাকে ভালোভাবে পড়ানোর মতো শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। তাকে ভালো কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন বলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া সেই এডিসন পরে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী হন। পরিণত বয়সে একদিন টমাস আলভা এডিসন সেই চিঠিটি দেখতে পান; তখন তাঁর মা জীবিত ছিলেন না। চিঠি খুলতেই তাঁর চোখে জল আসে। তখন টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, ‘আমার এই সাফল্যের পেছনে আছে আমার মায়ের অবদান।’
একই কথা বলেছেন তোত্তোচান বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল, সে কথা তার মা তখন বলেনি। বলেছেন, তার বয়স কুড়ি অতিক্রম করার পর। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে লেখক তেৎসুকো লিখেছেন, ‘মা যদি বহিষ্কারের পরপরই সেই ছোট্ট আমাকে বলতেন, “এখন কী হবে? এই স্কুল থেকে তো তোমাকে বহিষ্কার করল। অন্য স্কুল থেকেও যদি করে তখন কী হবে? আর কোনো স্কুল তোমাকে ভর্তি নেবে না। ” তাহলে আমি এত আনন্দ নিয়ে স্কুলের জ্যান্ত গাছের গুঁড়িঅলা ফটক পেরোতে পারতাম না। আমি ভীরু, মার খাওয়া জন্তুর মতন ভয়ে ভয়ে হাঁটতাম। আমি রেলগাড়ি ক্লাসঘর দেখে উচ্ছ্বসিত হতাম না। কোনো কিছুই আমাকে আনন্দ দিত না। আমি হয়ে যেতাম নিষ্প্রাণ, হীনম্মন্য, নির্জীব। আমার মা কত বুদ্ধিমান যে, তিনি তার শিশুর আনন্দময় শৈশব নষ্ট করতে চাননি। এমন মা আমাকে মানুষ করেছেন, তা আমার সৌভাগ্যই বটে!’
তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে কী কী বলতে চাও তুমি? যা কিছু বলতে ইচ্ছা হয় আমাকে বলতে পার।’ এই প্রশ্নের উত্তরে তোত্তোচান চার ঘণ্টা কথা বলেছিল। তার কাছে এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তার কথা এত মনোযোগ দিয়ে আর কেউ কখনো শোনেনি। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হলে তাদের মনোজগৎ বুঝতে হয়। তাদের আগ্রহের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হয়। তোমার রোল কত, পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে—এসব প্রশ্ন শিশুদের কাছে অবান্তর। এসব অবান্তর প্রশ্ন করা বয়স্ক প্রাণীগুলো শিশুদের জীবন দুঃসহ করে তোলে। আর তোত্তোচানের এই প্রধান শিক্ষকের অবস্থান ছিল বিপরীত মেরুতে। তাই তো তোত্তোচানসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিশুরা তাদের প্রধান শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করত।
প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের দিকেও নজর রাখেন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আমিষ ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের এই মেনু অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। সেটা তিনি করেছিলেন সুন্দর একটি প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। হলঘরে বসে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার সময় সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন—‘সবাই সমুদ্দুরের কিছু আর পাহাড় থেকে কিছু এনেছ?’ সবাই উত্তরে বলে, ‘এনেছি’। তোত্তোচানের এই অভিজ্ঞতা হওয়ার পর সেও টিফিনে সমুদ্র আর পাহাড়ের কিছু আনার জন্য অস্থির হয়ে যায়। এখানে সমুদ্র ও পাহাড়ের কিছু বলতে সমুদ্র ও পাহাড়ে প্রাপ্ত মানুষের খাদ্যদ্রব্যকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ শিশু শাক–সবজি খেতে চায় না। তার একটি কারণ হতে পারে হয়তো শিশুদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি না, যেমনটা তোত্তোচানের প্রধান শিক্ষক পেরেছিলেন।
পুথিগত বিদ্যা যদি বাস্তবে প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে সেই বিদ্যার মূল্য কোথায়? তোত্তোচানদের এই নতুন বিদ্যালয় তাদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিয়েছিল। বিদ্যালয় থেকে কখনো তারা চলে যেত নদীর পাড়ে, কখনো সরষে খেতে। শিক্ষিকা (বিদ্যালয়ের অন্য নারী শিক্ষক) তাদের পুংকেশর ও গর্ভকেশরের গল্প বলতেন। নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হতো। এর আনন্দ শিশুদের কাছে নিরবধি সমুদ্রের মতো। শিশুদের মাঠে নিয়ে শেখানো হতো জমি চাষের কৌশল।
প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তেও উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য রেলের নতুন একটা কামরায় পাঠাগার করলেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছামতো যেকোনো বই পড়তে পারত। তিনি শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘যখন ইচ্ছা তোমরা এখানে এসে বই পড়তে পারবে। বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। তবে পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তার এ কথা খুব উত্তেজনা তৈরি করছিল শিশুদের মধ্যে। শিশুরা তখনই বই পড়ার জন্য চেঁচাতে শুরু করল।
অনেক শিশু জন্মের সময় কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলি। এসব শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়, যদি তার চারপাশের মানুষ তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। আবার এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিশু বড় প্রকৌশলী হতে পারে, যদি তাকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কেউ থাকে, পরিবেশ যদি তার অনুকূল হয়। যেমনটা হয়েছিলেন আকিরা তাকাহাশি। তিনি একজন বড় মাপের প্রকৌশলী হয়েছিলেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে কোবাইয়াশি মহাশয় এমন এক খেলার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা আকিরা তাকাহাশির জন্য অনুকূল ছিল। সেই খেলায় তাকাহাশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এটা তাকাহাশির জন্য কতটা আনন্দের ছিল, তা নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের এই উৎসাহ, উদ্দীপনাই হয়তো তাকাহাশিকে বিশাল স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বইয়ের শেষ হয় কিছুটা বিষাদের মধ্য দিয়ে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অজস্র বোমার আঘাতে তাদের সেই আনন্দমুখর স্কুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে অবশ্য কোবাইয়াশি মহাশয় সেই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। তবে সেই কাজ তিনি পুরোপুরি সমাপ্ত করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
ইংরেজি থেকে অনুবাদক: চৈতী রহমান
মূল লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
প্রকাশনী: দুন্দুভি
বইয়ের মূল্য: ২৫০ টাকা
নাজমুল ইসলাম

সারাক্ষণ টই টই, সারাক্ষণ চঞ্চল। এই খেলে তো, ওই প্রশ্ন ছোড়ে। আর এত এত প্রশ্ন যে, মাথা ঘুরে ওঠে। এ তো যেকোনো শিশুরই বৈশিষ্ট্য। শিশুমাত্রই চঞ্চল, একজোড়া ঝকঝকে চোখ। শিশুদের এই চাঞ্চল্য নিয়ে অভিভাবকদের প্রায়ই কপাল কুঁচকে চিন্তা করতে দেখা যায়। চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষকদের কপালেও। কীভাবে তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়—সে ভাবনাই দখল নিয়ে নেয় অধিকাংশের মনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর চেপে বসে এক জগদ্দল পাথর। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দময়।
আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে লীলা মজুমদার তক সাহিত্যিকেরা শিশু শিক্ষা নিয়ে বিস্তর লিখেছেন। নিজেদের সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তাঁরা শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার নানা উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। আজও শিক্ষাবিদেরা বারবার বলছেন, শিক্ষা হতে হবে আনন্দময়। কিন্তু বিশেষত এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুদের জন্য আনন্দময় শিক্ষার ব্যবস্থা এখনো অধরাই থেকে গেছে। শিশুদের এই আনন্দময় শিক্ষার প্রসঙ্গ নিয়েই চমৎকার একটি শিশুপাঠ্য বই তোত্তোচান।
মূল বইটি জাপানি ভাষায় লিখিত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ–Totto-Chan: The little girl at the window; অনুবাদক ডরোথি ব্রিটন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৈতী রহমান। এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো একজন ভালো শিক্ষকের প্রভাবে শিশুদের বদলে যাওয়া জীবন। সে জীবন আনন্দময়, মধুর।
অনুবাদক চৈতী রহমান বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর শিক্ষাজীবন হবার কথা আনন্দময় ও ভয়ভীতিহীন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে দেশভেদে শিশুর ইশকুল–ভাগ্য ভিন্নরকম। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পরপরই পাচ্ছে মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসিখুশি আনন্দ উৎসব আর নিরাপত্তা।...দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ সব ইশকুলে যাচ্ছে কেবলমাত্র এইজন্য যে শিক্ষা তাদের একটা চাকরি জুটিয়ে দেবে।’
এই আনন্দ আর নিরানন্দের শিক্ষার মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা কেবল শিশুরাই অনুভব করতে পারে। ছোট শিশু তোত্তোচানের কাছে একটা বিদ্যালয় ছিল আনন্দের আধার, কিন্তু অন্যটি তেমন ছিল না। বইয়ের মূল চরিত্র তোত্তোচান আসলে বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। একটি বিদ্যালয় তার শৈশবকে কীভাবে পাল্টে দিয়েছে, তাই বর্ণিত হয়েছে এই বইয়ে। আনন্দমুখর বিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়েই বইটি লিখেছেন। সেই স্মৃতি তাঁর কাছে এখনো জীবন্ত।
বইয়ে ঢোকার আগে একটু তাকানো যাক তেৎসুকো কুরোয়ানাগির দিকে। তেৎসুকো কুরোয়ানাগির জন্ম টোকিওতে ১৯৩৩ সালে। অপেরা সংগীতের পাঠ নিলেও পরে হয়ে ওঠেন জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। একাধারে সংগীত, অভিনয় ও উপস্থাপনায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে জাপানের প্রথম নিয়মিত টক শো উপস্থাপনা করতে শুরু করেন, যা ছিল দৈনিক। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও জনপ্রিয়। তোত্তোচান বলা যায় তেৎসুকোর শৈশবের এক সাহিত্যিক নির্মাণ।
বইয়ের প্রথম দিকে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণিতে তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এডিসনের হাতে একটা চিঠি দিয়ে তার মাকে দিতে বললেন। তার মা চিঠি পড়লেন। চিঠি পড়ে তাঁর চোখ বেয়ে পানি পড়লে লাগল। চিঠিতে লেখা ছিল—‘আপনার ছেলে স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন, আমরা আপনার ছেলেকে পড়াতে পারব না। তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’
কিন্তু টমাস আলভা এডিসনের মা শুনিয়ে শুনিয়ে চিঠি পড়লেন এভাবে—‘আপনার ছেলে খুবই মেধাবী। তাকে ভালোভাবে পড়ানোর মতো শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। তাকে ভালো কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন বলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া সেই এডিসন পরে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী হন। পরিণত বয়সে একদিন টমাস আলভা এডিসন সেই চিঠিটি দেখতে পান; তখন তাঁর মা জীবিত ছিলেন না। চিঠি খুলতেই তাঁর চোখে জল আসে। তখন টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, ‘আমার এই সাফল্যের পেছনে আছে আমার মায়ের অবদান।’
একই কথা বলেছেন তোত্তোচান বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল, সে কথা তার মা তখন বলেনি। বলেছেন, তার বয়স কুড়ি অতিক্রম করার পর। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে লেখক তেৎসুকো লিখেছেন, ‘মা যদি বহিষ্কারের পরপরই সেই ছোট্ট আমাকে বলতেন, “এখন কী হবে? এই স্কুল থেকে তো তোমাকে বহিষ্কার করল। অন্য স্কুল থেকেও যদি করে তখন কী হবে? আর কোনো স্কুল তোমাকে ভর্তি নেবে না। ” তাহলে আমি এত আনন্দ নিয়ে স্কুলের জ্যান্ত গাছের গুঁড়িঅলা ফটক পেরোতে পারতাম না। আমি ভীরু, মার খাওয়া জন্তুর মতন ভয়ে ভয়ে হাঁটতাম। আমি রেলগাড়ি ক্লাসঘর দেখে উচ্ছ্বসিত হতাম না। কোনো কিছুই আমাকে আনন্দ দিত না। আমি হয়ে যেতাম নিষ্প্রাণ, হীনম্মন্য, নির্জীব। আমার মা কত বুদ্ধিমান যে, তিনি তার শিশুর আনন্দময় শৈশব নষ্ট করতে চাননি। এমন মা আমাকে মানুষ করেছেন, তা আমার সৌভাগ্যই বটে!’
তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে কী কী বলতে চাও তুমি? যা কিছু বলতে ইচ্ছা হয় আমাকে বলতে পার।’ এই প্রশ্নের উত্তরে তোত্তোচান চার ঘণ্টা কথা বলেছিল। তার কাছে এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তার কথা এত মনোযোগ দিয়ে আর কেউ কখনো শোনেনি। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হলে তাদের মনোজগৎ বুঝতে হয়। তাদের আগ্রহের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হয়। তোমার রোল কত, পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে—এসব প্রশ্ন শিশুদের কাছে অবান্তর। এসব অবান্তর প্রশ্ন করা বয়স্ক প্রাণীগুলো শিশুদের জীবন দুঃসহ করে তোলে। আর তোত্তোচানের এই প্রধান শিক্ষকের অবস্থান ছিল বিপরীত মেরুতে। তাই তো তোত্তোচানসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিশুরা তাদের প্রধান শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করত।
প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের দিকেও নজর রাখেন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আমিষ ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের এই মেনু অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। সেটা তিনি করেছিলেন সুন্দর একটি প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। হলঘরে বসে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার সময় সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন—‘সবাই সমুদ্দুরের কিছু আর পাহাড় থেকে কিছু এনেছ?’ সবাই উত্তরে বলে, ‘এনেছি’। তোত্তোচানের এই অভিজ্ঞতা হওয়ার পর সেও টিফিনে সমুদ্র আর পাহাড়ের কিছু আনার জন্য অস্থির হয়ে যায়। এখানে সমুদ্র ও পাহাড়ের কিছু বলতে সমুদ্র ও পাহাড়ে প্রাপ্ত মানুষের খাদ্যদ্রব্যকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ শিশু শাক–সবজি খেতে চায় না। তার একটি কারণ হতে পারে হয়তো শিশুদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি না, যেমনটা তোত্তোচানের প্রধান শিক্ষক পেরেছিলেন।
পুথিগত বিদ্যা যদি বাস্তবে প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে সেই বিদ্যার মূল্য কোথায়? তোত্তোচানদের এই নতুন বিদ্যালয় তাদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিয়েছিল। বিদ্যালয় থেকে কখনো তারা চলে যেত নদীর পাড়ে, কখনো সরষে খেতে। শিক্ষিকা (বিদ্যালয়ের অন্য নারী শিক্ষক) তাদের পুংকেশর ও গর্ভকেশরের গল্প বলতেন। নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হতো। এর আনন্দ শিশুদের কাছে নিরবধি সমুদ্রের মতো। শিশুদের মাঠে নিয়ে শেখানো হতো জমি চাষের কৌশল।
প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তেও উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য রেলের নতুন একটা কামরায় পাঠাগার করলেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছামতো যেকোনো বই পড়তে পারত। তিনি শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘যখন ইচ্ছা তোমরা এখানে এসে বই পড়তে পারবে। বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। তবে পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তার এ কথা খুব উত্তেজনা তৈরি করছিল শিশুদের মধ্যে। শিশুরা তখনই বই পড়ার জন্য চেঁচাতে শুরু করল।
অনেক শিশু জন্মের সময় কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলি। এসব শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়, যদি তার চারপাশের মানুষ তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। আবার এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিশু বড় প্রকৌশলী হতে পারে, যদি তাকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কেউ থাকে, পরিবেশ যদি তার অনুকূল হয়। যেমনটা হয়েছিলেন আকিরা তাকাহাশি। তিনি একজন বড় মাপের প্রকৌশলী হয়েছিলেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে কোবাইয়াশি মহাশয় এমন এক খেলার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা আকিরা তাকাহাশির জন্য অনুকূল ছিল। সেই খেলায় তাকাহাশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এটা তাকাহাশির জন্য কতটা আনন্দের ছিল, তা নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের এই উৎসাহ, উদ্দীপনাই হয়তো তাকাহাশিকে বিশাল স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বইয়ের শেষ হয় কিছুটা বিষাদের মধ্য দিয়ে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অজস্র বোমার আঘাতে তাদের সেই আনন্দমুখর স্কুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে অবশ্য কোবাইয়াশি মহাশয় সেই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। তবে সেই কাজ তিনি পুরোপুরি সমাপ্ত করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
ইংরেজি থেকে অনুবাদক: চৈতী রহমান
মূল লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
প্রকাশনী: দুন্দুভি
বইয়ের মূল্য: ২৫০ টাকা

সারাক্ষণ টই টই, সারাক্ষণ চঞ্চল। এই খেলে তো, ওই প্রশ্ন ছোড়ে। আর এত এত প্রশ্ন যে, মাথা ঘুরে ওঠে। এ তো যেকোনো শিশুরই বৈশিষ্ট্য। শিশুমাত্রই চঞ্চল, একজোড়া ঝকঝকে চোখ। শিশুদের এই চাঞ্চল্য নিয়ে অভিভাবকদের প্রায়ই কপাল কুঁচকে চিন্তা করতে দেখা যায়। চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষকদের কপালেও। কীভাবে তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা যায়—সে ভাবনাই দখল নিয়ে নেয় অধিকাংশের মনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর চেপে বসে এক জগদ্দল পাথর। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দময়।
আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে লীলা মজুমদার তক সাহিত্যিকেরা শিশু শিক্ষা নিয়ে বিস্তর লিখেছেন। নিজেদের সাহিত্যের মধ্য দিয়ে তাঁরা শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার নানা উদাহরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। আজও শিক্ষাবিদেরা বারবার বলছেন, শিক্ষা হতে হবে আনন্দময়। কিন্তু বিশেষত এশিয়ার দেশগুলোতে শিশুদের জন্য আনন্দময় শিক্ষার ব্যবস্থা এখনো অধরাই থেকে গেছে। শিশুদের এই আনন্দময় শিক্ষার প্রসঙ্গ নিয়েই চমৎকার একটি শিশুপাঠ্য বই তোত্তোচান।
মূল বইটি জাপানি ভাষায় লিখিত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ–Totto-Chan: The little girl at the window; অনুবাদক ডরোথি ব্রিটন। বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন চৈতী রহমান। এর মূল উপজীব্য বিষয় হলো একজন ভালো শিক্ষকের প্রভাবে শিশুদের বদলে যাওয়া জীবন। সে জীবন আনন্দময়, মধুর।
অনুবাদক চৈতী রহমান বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুর শিক্ষাজীবন হবার কথা আনন্দময় ও ভয়ভীতিহীন। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে দেশভেদে শিশুর ইশকুল–ভাগ্য ভিন্নরকম। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার শিশুরা জন্মের পরপরই পাচ্ছে মানবিক শিক্ষাব্যবস্থা, হাসিখুশি আনন্দ উৎসব আর নিরাপত্তা।...দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিরানন্দ সব ইশকুলে যাচ্ছে কেবলমাত্র এইজন্য যে শিক্ষা তাদের একটা চাকরি জুটিয়ে দেবে।’
এই আনন্দ আর নিরানন্দের শিক্ষার মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা কেবল শিশুরাই অনুভব করতে পারে। ছোট শিশু তোত্তোচানের কাছে একটা বিদ্যালয় ছিল আনন্দের আধার, কিন্তু অন্যটি তেমন ছিল না। বইয়ের মূল চরিত্র তোত্তোচান আসলে বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। একটি বিদ্যালয় তার শৈশবকে কীভাবে পাল্টে দিয়েছে, তাই বর্ণিত হয়েছে এই বইয়ে। আনন্দমুখর বিদ্যালয়ের স্মৃতি নিয়েই বইটি লিখেছেন। সেই স্মৃতি তাঁর কাছে এখনো জীবন্ত।
বইয়ে ঢোকার আগে একটু তাকানো যাক তেৎসুকো কুরোয়ানাগির দিকে। তেৎসুকো কুরোয়ানাগির জন্ম টোকিওতে ১৯৩৩ সালে। অপেরা সংগীতের পাঠ নিলেও পরে হয়ে ওঠেন জাপানের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। একাধারে সংগীত, অভিনয় ও উপস্থাপনায় নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। ১৯৭৫ সাল থেকে জাপানের প্রথম নিয়মিত টক শো উপস্থাপনা করতে শুরু করেন, যা ছিল দৈনিক। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও জনপ্রিয়। তোত্তোচান বলা যায় তেৎসুকোর শৈশবের এক সাহিত্যিক নির্মাণ।
বইয়ের প্রথম দিকে দেখা যায়, প্রথম শ্রেণিতে তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এডিসনের হাতে একটা চিঠি দিয়ে তার মাকে দিতে বললেন। তার মা চিঠি পড়লেন। চিঠি পড়ে তাঁর চোখ বেয়ে পানি পড়লে লাগল। চিঠিতে লেখা ছিল—‘আপনার ছেলে স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন, আমরা আপনার ছেলেকে পড়াতে পারব না। তাকে অন্য কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’
কিন্তু টমাস আলভা এডিসনের মা শুনিয়ে শুনিয়ে চিঠি পড়লেন এভাবে—‘আপনার ছেলে খুবই মেধাবী। তাকে ভালোভাবে পড়ানোর মতো শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে নেই। তাকে ভালো কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে ভর্তি করুন।’ স্থূল বুদ্ধিসম্পন্ন বলে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হওয়া সেই এডিসন পরে জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী হন। পরিণত বয়সে একদিন টমাস আলভা এডিসন সেই চিঠিটি দেখতে পান; তখন তাঁর মা জীবিত ছিলেন না। চিঠি খুলতেই তাঁর চোখে জল আসে। তখন টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, ‘আমার এই সাফল্যের পেছনে আছে আমার মায়ের অবদান।’
একই কথা বলেছেন তোত্তোচান বইয়ের লেখক তেৎসুকো কুরোয়ানাগি। তোত্তোচান বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছিল, সে কথা তার মা তখন বলেনি। বলেছেন, তার বয়স কুড়ি অতিক্রম করার পর। বইয়ের পরিশিষ্ট অংশে লেখক তেৎসুকো লিখেছেন, ‘মা যদি বহিষ্কারের পরপরই সেই ছোট্ট আমাকে বলতেন, “এখন কী হবে? এই স্কুল থেকে তো তোমাকে বহিষ্কার করল। অন্য স্কুল থেকেও যদি করে তখন কী হবে? আর কোনো স্কুল তোমাকে ভর্তি নেবে না। ” তাহলে আমি এত আনন্দ নিয়ে স্কুলের জ্যান্ত গাছের গুঁড়িঅলা ফটক পেরোতে পারতাম না। আমি ভীরু, মার খাওয়া জন্তুর মতন ভয়ে ভয়ে হাঁটতাম। আমি রেলগাড়ি ক্লাসঘর দেখে উচ্ছ্বসিত হতাম না। কোনো কিছুই আমাকে আনন্দ দিত না। আমি হয়ে যেতাম নিষ্প্রাণ, হীনম্মন্য, নির্জীব। আমার মা কত বুদ্ধিমান যে, তিনি তার শিশুর আনন্দময় শৈশব নষ্ট করতে চাননি। এমন মা আমাকে মানুষ করেছেন, তা আমার সৌভাগ্যই বটে!’
তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে কী কী বলতে চাও তুমি? যা কিছু বলতে ইচ্ছা হয় আমাকে বলতে পার।’ এই প্রশ্নের উত্তরে তোত্তোচান চার ঘণ্টা কথা বলেছিল। তার কাছে এমন সুযোগ আর কখনো আসেনি। তার কথা এত মনোযোগ দিয়ে আর কেউ কখনো শোনেনি। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে হলে তাদের মনোজগৎ বুঝতে হয়। তাদের আগ্রহের জায়গা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হয়। তোমার রোল কত, পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছ, বড় হয়ে ডাক্তার হবে না ইঞ্জিনিয়ার হবে—এসব প্রশ্ন শিশুদের কাছে অবান্তর। এসব অবান্তর প্রশ্ন করা বয়স্ক প্রাণীগুলো শিশুদের জীবন দুঃসহ করে তোলে। আর তোত্তোচানের এই প্রধান শিক্ষকের অবস্থান ছিল বিপরীত মেরুতে। তাই তো তোত্তোচানসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিশুরা তাদের প্রধান শিক্ষককে খুব বেশি পছন্দ করত।
প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের দিকেও নজর রাখেন। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত আমিষ ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের এই মেনু অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। সেটা তিনি করেছিলেন সুন্দর একটি প্রশ্ন উত্থাপনের মধ্য দিয়ে। হলঘরে বসে সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার সময় সবাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি প্রশ্ন করেন—‘সবাই সমুদ্দুরের কিছু আর পাহাড় থেকে কিছু এনেছ?’ সবাই উত্তরে বলে, ‘এনেছি’। তোত্তোচানের এই অভিজ্ঞতা হওয়ার পর সেও টিফিনে সমুদ্র আর পাহাড়ের কিছু আনার জন্য অস্থির হয়ে যায়। এখানে সমুদ্র ও পাহাড়ের কিছু বলতে সমুদ্র ও পাহাড়ে প্রাপ্ত মানুষের খাদ্যদ্রব্যকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে শহরের অধিকাংশ শিশু শাক–সবজি খেতে চায় না। তার একটি কারণ হতে পারে হয়তো শিশুদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি না, যেমনটা তোত্তোচানের প্রধান শিক্ষক পেরেছিলেন।
পুথিগত বিদ্যা যদি বাস্তবে প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে সেই বিদ্যার মূল্য কোথায়? তোত্তোচানদের এই নতুন বিদ্যালয় তাদের পুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি বাস্তব অভিজ্ঞতার সুযোগ করে দিয়েছিল। বিদ্যালয় থেকে কখনো তারা চলে যেত নদীর পাড়ে, কখনো সরষে খেতে। শিক্ষিকা (বিদ্যালয়ের অন্য নারী শিক্ষক) তাদের পুংকেশর ও গর্ভকেশরের গল্প বলতেন। নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে রাত কাটানোর সুযোগ দেওয়া হতো। এর আনন্দ শিশুদের কাছে নিরবধি সমুদ্রের মতো। শিশুদের মাঠে নিয়ে শেখানো হতো জমি চাষের কৌশল।
প্রধান শিক্ষক কোবাইয়াশি মহাশয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তেও উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য রেলের নতুন একটা কামরায় পাঠাগার করলেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছামতো যেকোনো বই পড়তে পারত। তিনি শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘যখন ইচ্ছা তোমরা এখানে এসে বই পড়তে পারবে। বই বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে। তবে পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ তার এ কথা খুব উত্তেজনা তৈরি করছিল শিশুদের মধ্যে। শিশুরা তখনই বই পড়ার জন্য চেঁচাতে শুরু করল।
অনেক শিশু জন্মের সময় কিছু ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলি। এসব শিশুর মধ্যে হীনম্মন্যতা তৈরি হয়, যদি তার চারপাশের মানুষ তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। আবার এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোনো শিশু বড় প্রকৌশলী হতে পারে, যদি তাকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কেউ থাকে, পরিবেশ যদি তার অনুকূল হয়। যেমনটা হয়েছিলেন আকিরা তাকাহাশি। তিনি একজন বড় মাপের প্রকৌশলী হয়েছিলেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে কোবাইয়াশি মহাশয় এমন এক খেলার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা আকিরা তাকাহাশির জন্য অনুকূল ছিল। সেই খেলায় তাকাহাশি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এটা তাকাহাশির জন্য কতটা আনন্দের ছিল, তা নিশ্চয়ই আর বলতে হবে না। প্রধান শিক্ষকের এই উৎসাহ, উদ্দীপনাই হয়তো তাকাহাশিকে বিশাল স্বপ্ন দেখতে ও তা বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করেছিল।
বইয়ের শেষ হয় কিছুটা বিষাদের মধ্য দিয়ে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অজস্র বোমার আঘাতে তাদের সেই আনন্দমুখর স্কুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে অবশ্য কোবাইয়াশি মহাশয় সেই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। তবে সেই কাজ তিনি পুরোপুরি সমাপ্ত করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
তোত্তোচান: জানালার ধারে ছোট্ট মেয়েটি
ইংরেজি থেকে অনুবাদক: চৈতী রহমান
মূল লেখক: তেৎসুকো কুরোয়ানাগি
প্রকাশনী: দুন্দুভি
বইয়ের মূল্য: ২৫০ টাকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১২ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’
এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।
বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।
জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।
সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। এ ছাড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জামালপুর সদর, শেরপুরের শ্রীবরদী, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়ার পরও কোনো কাজ না হওয়ায় গতকাল শিক্ষকনেতা মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, খাইরুন নাহার লিপিসহ একাধিক শিক্ষককে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ও আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন শিক্ষকনেতারা। গতকাল রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাঁদের বৈঠক চলছিল।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি রাত ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছি, তাঁদের হয়রানি করার জন্য ঢালাওভাবে বদলি করা হচ্ছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে বৈঠক করছি। আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’
এদিকে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির কারণে দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন অভিভাবকেরা।
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় পরীক্ষা না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকদের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক শিক্ষক। এ ছাড়াও অনেক জায়গায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষার দায়িত্ব নিলেন অভিভাবকেরা।
বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে গতকাল পিরোজপুরের নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে শিক্ষকেরা আন্দোলন করতে গেলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দুই দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি করার জেরে পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় এক অভিভাবকের ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন এক সহকারী শিক্ষক। রাজিব সরকার নামের ওই শিক্ষক বনওয়ারিনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জানান, যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন রাজিব ও তাঁর সহকর্মীরা। অভিভাবক পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের মারধর করেন। এতে সহকারী শিক্ষক রাজিবের মাথা ফেটে গেছে। তাঁর মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
এ ছাড়াও কোনো কোনো জায়গায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা তালা ভেঙে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উপজেলার ১৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র দু-তিনটি ছাড়া কোনোটিতেই হয়নি পরীক্ষা। গতকাল সকালে সহকারী শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা নিতে বাধা দেন এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলের ফটক থেকে ফিরিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন স্কুলের কক্ষে তালা মেরে তাঁরা উপজেলা চত্বরে সমাবেশে যোগ দেন। উপজেলার ষাটমা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেন অভিভাবকেরা।
একইভাবে কুষ্টিয়া শহরতলির ১৮ নম্বর লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। প্রশ্ন বিতরণ, খাতা সংগ্রহ, শৃঙ্খলা রক্ষা সবকিছুই সামলান তাঁরা। একপর্যায়ে অভিভাবকদের তীব্র চাপ ও বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ে তালা ভেঙে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকেরা। কোনো কোনো জায়গায় উপজেলা প্রশাসন এ কাজে সহযোগিতা করে।
জামালপুরের গুয়াবাড়ীয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক রেনুকা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সারা বছরের পর এই বার্ষিক পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকি। যখন বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তখন সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এটা কোনো শিক্ষকের কাজ হতে পারে? তাঁদের এই কর্মবিরতি অন্য সময়ও করতে পারতেন। তাই আমরা সব অভিভাবক মিলে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পে-কমিশনের সুপারিশ লাগবে। সেটিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের অপেক্ষা করা দরকার ছিল।’
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন গত ৮ নভেম্বর। এই আন্দোলনে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষকেরা। পরদিন ৯ নভেম্বর থেকে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিন (১০ নভেম্বর) সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড নির্ধারণের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা।
সরকারের এই আশ্বাসের পর নভেম্বরের শেষ নাগাদ সহকারী শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় নতুন করে গত ৩০ নভেম্বর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষকেরা।

তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে ক
২৪ জুলাই ২০২১
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।
২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘এ-১’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২৫০, ‘এ-২’ (আর্কিটেকচার) ফি ১ হাজার ৪০০ এবং ‘বি’ (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ইউনিটের আবেদন ফি ১ হাজার ২০০ টাকা।
২০২৪ অথবা ২০২৫ সালের এইচএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা আলিমবা ডিপ্লোমা ইন কমার্স বা সমমান, ২০২২ অথবা ২০২৩ সালের এসএসসি (সাধারণ বা কারিগরি) বা দাখিল বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের প্রক্রিয়া শেষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৪ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদন করার নিয়ম, বিস্তারিত তথ্য, আবেদন ফি এবং জমা দেওয়ার পদ্ধতি ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট-এর ভর্তি নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।

তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে ক
২৪ জুলাই ২০২১
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১২ ঘণ্টা আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়। আজ থাকছে ব্যাংকে নিয়মিত ব্যবহৃত এমন ১০টি ইংরেজি বাক্য। চলুন শিখে নিই—

তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে ক
২৪ জুলাই ২০২১
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১২ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন।
১ দিন আগেশিক্ষা ডেস্ক

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।
সুযোগ-সুবিধা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ
বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

চীনের সিকিউইউ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। বৃত্তিটি ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য। চংকিং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ গবেষণাবান্ধব ও সমৃদ্ধ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ১৯২৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক ক্যাম্পাস, অত্যাধুনিক ল্যাব-সুবিধা, আন্তর্জাতিক বিনিময় কর্মসূচি এবং বৈশ্বিক মানের গবেষণা সুযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বজুড়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করে।
সুযোগ-সুবিধা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিটি সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিটিতে আবেদন করতে কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। ক্যাম্পাসের ভেতরে বিনা মূল্যে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়। জীবনযাপনের ব্যয় হিসেবে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ৩ হাজার আর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৩ হাজার চায়নিজ ইউয়ান দেওয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
আবেদনকারীর অবশ্যই চীনের নাগরিকত্ব থাকা যাবে না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। একাডেমিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে। আর পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য থাকতে হবে মাস্টার্স ডিগ্রি এবং বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৪০ বছর। ভাষাগত দক্ষতার ক্ষেত্রেও নির্ধারিত মানদণ্ড রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
প্রথমে প্রয়োজন হবে ‘চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ অ্যাপলিকেশন ফরম, বিস্তারিত সিভি, নোটারাইজড করা সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি), রিচার্জ প্রপোজাল এবং দুজন অধ্যাপকের পক্ষ থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার। নন-ক্রিমিনাল সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ
বিশ্ববিদ্যালয়টি ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনে রয়েছে মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান থেকে শুরু করে অর্থনীতি, ভাষা, সাংবাদিকতা, আইন, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞানসহ বিস্তৃত বিষয়ের সমাহার। পাশাপাশি ফ্যাকাল্টি অব দ্য বিল্ড এনভায়রনমেন্টের শিক্ষার্থীদের জন্য আর্কিটেকচার, আরবান প্ল্যানিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিবেশবিজ্ঞান এবং রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্টের মতো পেশাদারি ক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধিশালী বিভিন্ন বিষয়।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

তোত্তোচান নতুন স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলটি তার বেশ পছন্দ হয়। রেলগাড়ির ছয়টি কামরা দিয়ে বানানো হয়েছে স্কুলটি। রেলগাড়ির এই স্কুল তোত্তোচানের কাছে আনন্দের উৎস ছিল। এই আনন্দসীমা অতিক্রম করে যখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা হয়। প্রধান শিক্ষক তোত্তোচানকে বলেন, ‘বলো দেখি তোত্তোচান নিজের সম্পর্কে ক
২৪ জুলাই ২০২১
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন সহকারী শিক্ষকেরা। পরীক্ষা বন্ধ রাখায় শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে আন্দোলন করায় পিরোজপুর, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা...
১২ ঘণ্টা আগে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১ দিন আগে
ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে আগ্রহীদের শুধু আর্থিক জ্ঞানই নয়, প্রয়োজনীয় ইংরেজি জানাও জরুরি। নিয়মিত ব্যবহৃত ইংরেজি জানা থাকলে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়। গ্রাহকদেরও কিছু সাধারণ ব্যাংকিং ইংরেজি জানা থাকলে সুবিধা হয়।
১ দিন আগে